ঋষিঃ- প্রজাপতিঃ। দেবতা-পরমাত্মা। ছন্দঃ-নিচৃৎত্রিষ্টুপ্। স্বরঃ-ধৈবতঃ।
য আত্মদা বলদা যস্য বিশ্ব উপাসতে প্রশিষং যস্য দেবাঃ।
যস্য চ্ছায়মৃতং যস্য মৃত্যঃ কস্মৈ দেবায হবিষা বিধেম।।-[যজুর্বেদ ২৫।১৩]
ভাবার্থঃ যিনি আত্মবল ও দেববলের দাতা, যাঁহার শাসনকে বিদ্বানেরা প্রশংসা করেন, যাঁহার আশ্রয়ই অমৃত ও যাঁহার বিয়োগই মৃত্যু, আমাদের সেই সুখস্বরূপ সৃষ্টিকর্তা পরমাত্মায় আত্মসমর্পণ করিয়া স্তুতি ও উপাসনা করা উচিৎ।।
ব্যাখ্যাঃ- হে মানব ! যে পরমাত্মা আমাদের সকলকে " আত্মদাঃ" আত্মশক্তি দান করেন, তথা আত্মজ্ঞানাদির দাতা, জীবের প্রাণদাতা, "বলদাঃ" ত্রিবিধ বল, প্রথমতঃ- মান-বিজ্ঞান বল; দ্বিতীয়তঃ- ইন্দ্রিয় বল, অর্থাৎ শ্রোত্রাদির স্বস্থতা তেজাবৃদ্ধি, তৃতীয়তঃ-শরীর মহাপুষ্টি, দৃঢ়াঙ্গতা এবং বীর্যাদি বৃদ্ধি, এই ত্রিবিধ বলদাতা। যাহা "প্রশিষম্" অনুশাসনকে (শিক্ষা মর্যাদাকে) বিদ্যান্ ব্যক্তিগণ যথাযথভাবে মান্য করেন। সমস্ত প্রাণী এবং অপ্রাণী, জড়-চেতন, বিদ্যান্ ও মূর্খ, প্রভৃতি কেহই সেই পরমাত্মার নিয়মে উল্লঙ্ঘন করিতে পারে না।
অর্থাৎ শ্রোত্র দ্বারা শ্রবণ, চক্ষু দ্বারা দর্শন, ইহাদের বিপরীত কর্ম কেহ করিতে পারে না। যাহার ছায়া-আশ্রয়ই অমৃত, বিজ্ঞানী ব্যক্তিদের মোক্ষ ধাম বলা হয়, যাহার ছায়াহীনতা বা আশ্রয়হীনতা (অকৃপা) দুষ্টজনের পক্ষে বারংবার জন্ম মৃত্যুরূপ মহাক্লেশ দায়ক। এস, আমরা সকলে মিলিয়া তাঁহার প্রতি প্রেম বিশ্বাস (ভক্তি) সহকারে শ্রদ্ধা করি। আমরা কখনও যেন তাঁহাকে ত্যাগ করিয়া অপর কাহাকেও উপাস্য বলিয়া মান্য না করি। তিনিই যে আমাদের সুখ দান করেন, ইহাতে কোন সন্দেহ নাই।।
No comments:
Post a Comment
ধন্যবাদ