ভবিষ্যপুরাণ ও মুহাম্মদ - ধর্ম্মতত্ত্ব

ধর্ম্মতত্ত্ব

ধর্ম বিষয়ে জ্ঞান, ধর্ম গ্রন্থ কি , হিন্দু মুসলমান সম্প্রদায়, ইসলাম খ্রীষ্ট মত বিষয়ে তত্ত্ব ও সনাতন ধর্ম নিয়ে আলোচনা

धर्म मानव मात्र का एक है, मानवों के धर्म अलग अलग नहीं होते-Theology

সাম্প্রতিক প্রবন্ধ

Post Top Ad

স্বাগতম

07 October, 2021

ভবিষ্যপুরাণ ও মুহাম্মদ

 আমাদের প্রিয় মুসলিম ভাই-বোনেরা অর্থাত্ ভন্ড জাকিরের অনুসারীরা দাবী করে থাকেন যে,

ভবিষ্যপুরাণে ও কল্কিপুরানে নাকি মুহাম্মদের উল্লেখ রয়েছে।আমিও তাদের সাথে একমত।ভবিষ্য পুরাণে মুহাম্মদের উল্লেখ না থাকলেও মহামদের কথা অবশ্যই উল্লেখ রয়েছে,তবে তর্কের খাতিরে ধরে নিলাম মহামদ নামক মানুষটিই হলো মুহাম্মদ।

তবে লেখাটা কি আছে সেটা তো নিশ্চয়ই দেখতে হবে তাই না?

আসুন এক নজর দেখে নিই,ভবিষ্য পুরাণ কি বলছে মুহাম্মদ সম্পর্কে:-
“এতস্মিন্নন্তিবে সেত্দচ্ছ আচার্যেন সমন্বিতঃ।
মহামদ ইতিখ্যাতঃ শিষ্যশাখা সমন্বিত।।"
"নৃপশ্চৈব মহাদেবং মরুস্থল
নিবাসিম্ম।
চন্দনাদিভির ভ্যর্চ্য তুষ্টাব মনসাহরম্নমস্তে গিরি জানাথ মরুস্থল নিবাসিনে।
ক্রিপুবাসুরনাশায় বহুমায়া প্রবর্তিনে॥"
(ভবিষ্যপুরাণ ৩:৩:৩)

"তম্মান্মুসলবন্তো হি জাতয়ো
ধর্ম্ম দূষকাঃ।
ইতি পৈশাচধমশ্চ ভবিষ্যতি ময়াকৃতঃ। ”
(ভবিষ্যপুরাণ শ্লোকঃ ১০-২৭।)

অর্থাৎ, মুহাম্মদকে ভবিষ্য পুরাণ -এ (৩:৩:৫-২৭) মহামদ নামে অভিহিত করা হয়।এই অংশে তাঁকে আরব -সঞ্জাত বলে অভিহিত করে পিশাচধর্মের প্রবক্তা ধর্মদুষ্ক (ধর্মদূষণকারী) বলে উল্লেখ করা হয়েছে এবং মুসলমান নামে দূষিত সমাজের প্রবর্তনকারী বলা হয়েছে। এতে উল্লেখ করা রয়েছে, মুহাম্মদ ছিল মহাদেব অর্থাৎ শিব কর্তৃক নিহত পিশাচ ত্রিপুরা অর্থাৎ ত্রিপুরাসুরের অবতার।

Note:-আমরা জানি যে, প্রতিটি অসুরই ছিল এক একটি অসুরের অবতার।অর্থাৎ,পরিশেষে একথা স্পষ্ট যে মুহাম্মদ ছিল একজন অসুরের অবতার।যে কিনা পৃর্বে মহাদেব (শিব) কর্তৃক বধ হয়েছিল।

Note:-এখন মুসলিমদের উচিত তাদের স্বীকার করা যে যেমন কর্ম করবে সেই হিসেবে মানুষকে পুনরায় পৃথিবীতে জন্ম নিতে হবে।যদি তাদের কিতাবে এমন কিছু না থাকে তাহলে যাতে তারা নিজেদের কিতাবে তা সংশোধন করে নেয়।

কল্কি পুরাণ-২/৪ অনুসারে ভগবান্ বিষ্ণু স্বয়ং শম্ভল নামক গ্রামে বিষ্ণুযশা নামক ব্রাহ্মণের গৃহে সুমতি নামক ব্রাহ্মণকন্যার গর্ভে আবির্ভূত হবেন।

Note:-বেদ মতে ঈশ্বরের গুণকারী নামের মধ্যে একটি হলো বিষ্ণু যার অর্থ প্রতিপালক।কিন্তু দুঃখের বিষয় হলেও সত্য এই যে ঈশ্বর জন্ম মৃত্যুর বাইরে।এবার আসা যাক পুরাণ মতে,পুরাণ অনুযায়ী ঈশ্বর জন্ম নেয় অবতার হয়ে।তাহলে মুসলিমরা স্বীকার এটাও করে নিক যে তাদের মুহাম্মদ আল্লাহর অবতার বা আল্লাহর মানব জন্ম।এবং তাদের উচিত হবে তারা যেনো দ্রুত তাদের কালিমা_ই শাহাদাতে আবদুহু ওয়া রাসূলুহু শব্দটি বর্জন করুক,কারণ এখানে মুহাম্মদকে আল্লাহর বান্দা ও রসূল বলা হয়েছে।

এছাড়া ব্রাহ্মণ তাকে বলে যে বেদ পড়ে,বেদ পড়ায়,যজ্ঞ করে,যজ্ঞ করায়,দান করে ও দান গ্রহণ করে অর্থাৎ যে ধার্মিক ব্যক্তি এই ছয়টি কাজ করবে তাকে ব্রাহ্মণ বলা হবে(মনুস্মৃতি,বিশুদ্ধ শ্লোক-1:87)।এখন প্রশ্ন উঠে মুহাম্মদের পিতা এই কাজ গুলি করতো কিনা তা মুসলিম সমাজ ভালো জানবে।

কল্কিপুরাণ-২/৬ অনুসারে কল্কির স্ত্রী হবেন পদ্মা যিনি সিংহলে(শ্রীলঙ্কা) বৃহদ্রথের ঘরে কৌমুদীনামক মহিষীর গর্ভে জন্মগ্রহণ করবেন।

Note:-এখন প্রশ্ন উঠে মুহাম্মদের কোন স্ত্রীর নাম পদ্মা ও তিনি সিংহল নিবাসী এবং তার কোন শশুরের নাম বৃহদ্রত ও তার কোন শাশুড়ির নাম কৌমুদী?হয় মুসলিম আলিম উলেমারা এই তথ্য দিক নইলে দ্রুত কোনো সীরাতের কিতাবে এই তথ্য প্রবেশ করিয়ে ফেলুক,কারণ হিন্দুরা তো আরবি পড়তে পারে না তাই কেউ ধরতেও পারবে না।

কল্কিপুরাণ ২/১৫ অনুসারে কল্কি বৈশাখ মাসের শুক্লপক্ষীয় দ্বাদশীতে পরমেশ্বর বিষ্ণু জন্মগ্রহণ করবেন। পিতা মাতা তাকে দেখে খুব আনন্দিত হবেন।

Note:-পুরাণ অনুযায়ী আমরা দেখতে পাচ্ছি কল্কির জন্ম বৈশাখ মাসের শুক্লপক্ষের দ্বাদশী তিথিতে কিন্তু আমরা জানি মুহাম্মদের জন্ম নিয়ে দ্বিমত রয়েছে কারুর কারুর মতে নবম রবিউল আবার কারুর কারুর মতে দ্বাদশ রবিউল।আরও পুরাণ বলে জন্মের সময় তার মাতা পিতা তাকে দেখে খুশি হবেন কিন্তু আমরা জানি মুহাম্মদের পিতা তার জন্মের পূর্বেই মারা যান এবং তাকে জন্মের সময় তার মাতা ও ঠাকুরদা খুব খুশি হয়েছিলেন।তার মানে কি মুহাম্মদের পিতা তেমন কেউ ছিলো যিনি লুকিয়ে লুকিয়ে তার পুত্রকে দেখে খুশি হয়েছিলো।মুসলিম আলিম সমাজ এই ব্যাপারে ভালো বলতে পারবে কেননা অনেকের মতে নাকি তিনি তার পিতার মৃত্যুর আড়াই বছর পর জন্ম নিয়ে ছিলেন।

কল্কিপুরাণ ২/২৩ অনুসারে মা সুমতি পরমেশ্বর বিষ্ণুকে কল্কিরূপে পেয়ে ব্রাহ্মণগণকে আহ্বানপূর্বক গোদান করেছিলেন।
Note:-মহম্মদের মা আমেনা কি গোদান করেছিলেন?

কল্কিপুরাণ -২/২৪ মতে পিতা বিষ্ণুযশা ঋক্, সাম, যজুর্বেদী প্রধান প্রধান ব্রাহ্মণ দিয়ে নামকরণ করবেন।

Note:-মহম্মদের পিতা তো তার জন্মের আগেই মারা যায়।তাছাড়া মুহাম্মদের নামকরণ করেছিলেন তার কাফের চাচা আবু তালেব ইবনে আব্দুল মুত্তালিব।তাহলে কি সেই কাফেরের দেওয়া নাম আজও কালিমা বহন করে চলেছে?কিন্তু প্রশ্ন ওঠে আবু তালেব কখন ঋক সাম যজুর বেদ হিব্স করেছিলো?

কল্কিপুরাণ-২/৩১ অনুসারে কল্কির পূর্বে তাঁর তিন বড় ভাই জন্মগ্রহণ করবেন। তাঁদের নাম কবি, প্রাজ্ঞ ও সুমন্ত্র।

Note:-মহম্মদের কি কোন আপন ভাই ছিল?নাকি আব্দুলার সহিত আমিনার বিয়ের পূর্বে তার মাতা আমিনা কোনো রূপ পরকীয়াতে লিপ্ত ছিলো নাকি আব্দুল্লার সহিত তার দ্বিতীয় বিবাহ।এক্ষেতে মুসলিম আলিম সমাজের দৃষ্টিপাত আশা করবো।

কল্কিপুরাণ-২/৩৫ অনুসারে কল্কির পিতা স্বয়ং তাঁকে উপনয়ন প্রদান করে গায়ত্রীমন্ত্রে দীক্ষিত করবেন।

Note:-যদিও আগে বলেছি উনার পিতা মৃত যদি ধরে নিই যে তার আসল পিতা জীবিত ছিলো তাহলে কি সে মুহাম্মদকে গায়েত্রী মন্ত্রে দীক্ষা দিয়েছিলো?যদি তাই হয় তাহলে কালিমা পড়ে মুসলিম সমাজ কেনো গুমরাহীর দিকে এগিয়ে চলেছে তাদের তো তাদের নবীর সুন্নত পালন করা কর্তব্য।

কল্কিপুরাণ-২/৪৮ অনুসারে তিনি পিতা এবং ব্রাহ্মণ কর্তৃক উপনয়ন গ্রহণের পর গুরুকূলে শিক্ষা লাভ করবেন।

Note:-মহম্মদ তো নিরক্ষর ছিল। তাহলে তিনি কীভাবে কল্কি হন?

৩/১-২ অনুসারে পরশুরাম তাঁকে নিজ আশ্রমে এনে অধ্যয়ন করান।

Note:-মুহাম্মদ যদি পড়াশোনা জানতো তাহলে মুহাম্মদ সেই সত্য জানতো কিন্তু আল্লাহ কিরূপ কুরআনে বলে ফেললো যে সে নিরক্ষর।নাকি আল্লাহও তাকিয়া করতে পছন্দ করে ?

কল্কিপুরাণ-৩/৫ অনুসারে কল্কিদেব পরশুরামের নিকট বেদ অধ্যয়ন আরম্ভ করলেন।

Note:-অনেকে বলে মুহাম্মদ কুরআনের হাফেজ কিন্তু পুরানের মুহাম্মদ তো দেখছি বেদের হাফেজি করবে।

কল্কিপুরাণ-৩/৯ অনুসারে তিনি শিবের কাছ থেকে অস্ত্র লাভ করবেন এবং তারপর সিংহলের পদ্মা নামক কুমারীকে বিবাহ করবেন।

Note:-মহম্মদের স্ত্রীর নাম কি পদ্মা ছিল নাকি? আর মহম্মদের প্রথম স্ত্রী খাদিজা তো কুমারী ছিলেন না বরং ডবল সেঞ্চুরি করে এসেছিলো এছাড়া মহম্মদের তুলনায় বয়স্ক ছিলেন।

কল্কিপুরাণ-৩/১৩ অনুসারে কল্কিদেব শিবের পূজা করবেন। মহাম্মদ কি শিবের পূজা করবেন?

Note:-অর্থাৎ মুহাম্মদ কি বেদের সেই শিবের উপাসনা করে যিনি কোনো ফেরেস্তার মুখাপেক্ষী নয় বা যার নিজ কর্মে কোনো ফেরেস্তার সহযোগিতার দরকার পড়ে না।নাকি পুরানের শিব লিঙ্গের উপাসনা করতেন অৰ্থাৎ তিনি মুশরিক ছিলেন নাকি?আলিম সমাজ কি জাতির কাছে কিছু লুকোচ্ছে ? জাতি সত্য জানতে চায়।

কল্কিপুরাণ-৩/২৫ অনুসারে শিব ও পার্বতী উভয়ে কল্কির প্রতি সন্তুষ্ট হয়ে একটি দ্রুতগামী অশ্ব এবং একটি শুক পাখী দিবেন।

Note:-আমরা জানি মুহাম্মদের একটি ঘোড়া ছিলো যার নাম যুলজানা যদিও কল্কি অবতারের ঘোড়ার নাম সেটি নেই, কিন্তু তার কি এমন কোনো আজ্ঞাবাহী পাখি ছিলো যার দ্বারা সে বার্তা প্রেরণ করতো ? ঠিক যেমন গুরু গোবিন্দ সিং করতো ?

কল্কিপুরাণ ৪/১৯ মতে কল্কি উপদেশ দিচ্ছেন, ব্রাহ্মণেরা ভস্ম, মৃত্তিকা, চন্দন প্রভৃতি দ্বারা তিলক ধারণ করবেন। তাঁদের ললাট হতে শিখা পর্যন্ত ত্রিপুণ্ড তিলক ধারণ করবেন।

Note:-মহম্মদের অনুসারীরা কি এখন তিলক গ্রহণ করবেন তো? মাথায় শিখা রাখবেন তো?
Note:-কল্কিপুরাণ ও ভবিষ্যপুরাণ ছাড়া আরও অনেক পুরাণ আছে যেখানে আরও কিছু অবতারের কথা জানা যায়।তাদের মধ্যে একটি অবতার হলো বরাহ অবতার অর্থাৎ শুকর অবতার।এখন প্রশ্ন মুহাম্মদ যদি সত্যি কল্কি অবতার মুহাম্মদ হয় তাহলে বরাহ বা শুকরটা কে,হজরত ইব্রাহিম নাকি হজরত ইসমাইল?মুফাস্সীরে কুরআন ও শাইখুল হাদিসগণ অবশ্যই আমাদের তথ্যটি দিয়ে সাহায্য করবেন আমরা আপনাদের অপেক্ষারত।
আশা করি সঠিক তথ্যটা সবাই জানতে পেরেছেন।
দুইযুগের(কলিযুগ এবং সত্যযুগের) সন্ধিক্ষণে ভগবান কল্কি অবতার রুপে বিষ্ণুযশ নামক ব্যক্তির পুত্র হিসেবে জন্ম গ্রহণ করবেন। ঐ সময় পৃথিবীর প্রায় সমস্ত শাসক অধঃপতিত হয়ে  লুটেরা ও ডাকাতের পর্যায়ে নেমে যাবে।”- ভাগবতপুরাণ-১/৩/২৫

1ভাগবত পুরান এবং বিষ্ণু পুরাণ অনুযায়ী কল্কি অবতার এবং তার স্ত্রী নিরামিষভোজী ছিলেন।নবী মুহম্মদ ও তার স্ত্রী নিরামিষাশী ছিলেন কি?
2ইসলামিক ইতিহাস থেকে যানা যায় মুহাম্মদ ধ্যান করেছিলেন হেরা পর্বতের গুহায় আর কল্কি অবতারও আর পুরাণ অনুযায়ী কল্কি অবতার ধ্যান করবেন হিমালয় পর্বতের পাদদেশে।
3কল্কি পুরান এ বলা আছে কল্কি অবতার এর পিতা ও মাতা উভয়েই তাঁর জন্মের সময় জীবিত থাকবেন।বলা হচ্ছে দদাস্তু পুত্রং পিতরো হৃষ্ট (কল্কি পুরান ১.২.১৫) অর্থাৎ কল্কির জন্মতে তাঁর পিতা অত্যন্ত হৃষ্ট হলেন। এছাড়া কল্কি পুরাণ ১৩.১৭(২.৬.১৭) অনুযায়ী কল্কি অবতারের পিতা-মাতা উভয়েই তাঁর বিয়ের পরেও জীবিত ছিলেন। অথচ আমরা জানি যে নবী মুহম্মদ এর পিতা তার জন্মের আগেই মৃত্যুবরন করেন এবং মাতা তার বাল্যকালেই মারা যান।
4পুরাণ অনুযায়ী কল্কি মাতা সুমতির ৪র্থ সন্তান রুপে ঈশ্বর পৃথিবীতে আসবেন এর পূর্বে মাতা সুমতি কবি,প্রজ্ঞা ও সুমন্ত্র নমে ৩ সন্তানর জন্ম দিবেন।অপরদিকে ইসলামি ইতিহাস থেকে আমরা পাই যে মাতা আমিনা শুধুমাত্র ইসলামের নবীকেই একমাত্র সন্তান হিসেবে জন্ম দিয়েছিলেন।
5কল্কি পুরান এর অষ্টম অধ্যয় এর ২৩-২৫ নং শ্লোক এ লেখা হয়েছে বাল্য বয়সে কল্কির উপনয়ন হবে, কল্কিকে তার গুরু পরশুরামদ চারবেদ এবং ছয় বেদাঙ্গে সুশিক্ষিত করবেন।এখন কথা হল মুহম্মদ কি চারবেদ বা ছয় বেদাঙ্গ শিখেছিলেন অথবা তার কি উপনয়ন হয়েছিল?
6 নবী মুহাম্মদ এর প্রথম স্ত্রী খাদিজার গর্ভেই তার ৬ সন্তান হয় যার মাঝে দুই পুত্র এবং প্রথম পুত্র কাসিম ১ বছর বয়সেই মারা যায়।অপরদিকে কল্কি পুরাণ ১৩.৩৬ মতে কল্কি অবতারের সন্তান ২ টি,২ টি ই পুত্র সন্তান।তাঁদের নাম জয় এবং বিজয়। পৌরাণিক বিশ্বাস অনুযায়ী তারা অনেক বড় বীর এবং অনেক যুদ্ধে অংশ গ্রহন করবেন।$$$$=>আপনাদের নবির মৃত্যু প্রায় 1400 আগে হয়েছে অন্যদিকে কল্কি অবতারের জন্ম গ্রহণ করতে এখনও 427000 বছর বাকি ।
ম্লেচ্ছ বা অনার্যদের গুরু মুহাম্মদ নামে খ্যাত যার বহু শিষ্য আছে, তিনি মরুভূমিতে নিবাসকারী মহাদেবের(শিব) বন্দনা করে তাকে তুষ্ট করেছেন। সেই একই মরুভূমিতে উপস্থিৎ হয়ে ভোজরাজা এবার প্রার্থনা করছেন- হে মরুবাসী গিরিজানাথ( মহাদেব বা শিব- অন্য একটা নাম), বহু মায়া প্রদর্শনকারী ত্রিপুর অসুরকে আপনি ধ্বংস করেছেন, ম্লেচ্ছ ধর্মকে গুপ্ত করে নিজে সচ্চিদানন্দ রূপে বিরাজ করছেন। আমি আপনার সেবক, আপনারই শরণ( আশ্রয়) কামনা করছি।

 (ভবিষ্য পুরান,অধ্যায়-৩, শ্লোক-৫-৮) 

উক্ত শ্লোক থেকে দেখা যাচ্ছে  মরূভূমির কথিত মুহাম্মদ মহাদেব বা শিবের আরাধনা করছে, এবং ভোজ রাজাও সেই একই মহাদেব বা শিবের আরাধনা করছে। এবার এর পরের ঘটনা দেখা যাক —   

সুতজী বললেন: 
প্রার্থনা শুনে শিব বললেন- ভোজরাজ, তুমি মহাকালেশ্বর নামক ভূমির ভাহিকা নামক দেশে যাও, কারন এই অঞ্চলটা ম্লেচ্ছদের দ্বারা পাপে পূর্ণ হয়ে চলেছে।এই দেশে আর্য ধর্ম বিনষ্ট হয়েছে। সেখানে বালি নামক দৈত্যের আদেশে ত্রিপুরা নামক এক মায়াময়ী অসুরের পূনর্জন্ম হয়েছে যাকে আমি আগে ধ্বংস করে ভস্মে পরিনত করেছিলাম। সে দৈত্যদের শৌর্য বীর্য ও প্রভাব বিস্তার করার জন্যে জন্ম গ্রহন করেছে। তার নাম মোহামাদা। সেই মোহামাদা পৈশাচিক কাজ কারবার করতেই অভ্যস্থ। তাই রাজা , তুমি এই পিশাচের অঞ্চলে থেকো না। আমার আশীর্বাদে তুমি শুদ্ধ থাকবে।  

সুতজী বললেন: 
এটা শুনে ভোজরাজ সেখান থেকে নিজ রাজ্যের দিকে রওনা দিলেন। আর মোহামাডা তার শিষ্য সমেত সিন্ধু নদীর তীরে আসলেন। মোহামাডা ছিলেন মায়া বা ছলনার ওস্তাদ , খুবই ভদ্রতার ভাব করে রাজাকে বললেন , ওহে রাজা , আপনার আরাধ্য দেবতা( শিব) আমার সেবক। আপনি দেখুন , আপনার দেবতা আমার খাবারের উচ্ছিষ্ট ভক্ষন করছে। এটা দেখে রাজা বিস্মিত হলেন এবং বিভ্রান্ত হয়ে মোহামাডার ম্লেচ্ছ ধর্মে দীক্ষিত হওয়ার চিন্তা করছিলেন। 
সুতজী বললেন: 

এই সময় কালিদাস তার জ্ঞান দ্বারা মোহামাডার মায়া বা ছলনা ধরে ফেললেন, ভীষণ ক্রুদ্ধ হয়ে মোহামাডাকে বললেন- দুরাচার ! তুই ছলনার দ্বারা রাজাকে বিভ্রান্ত করছিস ? আমি তোকে হত্যা করব। তুই ভাহিকার সব চাইতে ঘৃণ্য একজন।  
সুতজী বললেন: 

এটা বলার পর পরই কালিদাস নাভারন মন্ত্র উচ্চারন করতে লাগলেন। দশ হাজার বার এই মন্ত্র উচ্চারন করার পর তার দেহে অমিত তেজের উদ্ভব ঘটল , আর সেই তেজ মোহামাডাকে ভস্মীভুত করে ফেলল। আর মোহামাডা পরিনত হলো ম্লেচ্ছদের দেবতা। এরপর তার সব শিষ্যরা সবাই ভীষন ভয় পেয়ে গেল , তারা তাদের ওস্তাদ মোহামাডার দেহাবশেষ বয়ে নিয়ে ফিরে গেল এবং তা মাটির নীচে পুতে রাখল। তারা সবাই একেবারে শান্ত হয়ে গেল। অত:পর সেই জায়গার নাম হলো মদিনা পুর , যা তাদের পবিত্র স্থান। 
সুতজী বললেন : 

গভীর রাতে , সেই পিশাচ দেবতা মায়ার রূপে ভোজ রাজার কাছে উপস্থিৎ হয়ে বললেন – 

আপনার আর্য ধর্ম সকল ধর্মের সেরা। আমি শুধুমাত্র “ইসা” এর নির্দেশে আমার ধর্ম প্রচার করছি। আমার ধর্ম এরকম – আমার ধর্মে যারা থাকবে , তাদের লিঙ্গ চ্ছেদ করতে হবে , মাথায় কোন শিখা থাকবে না , তারা উচ্চৈস্বরে কথা বলবে , চিৎকার চেচামেচি করবে , সর্ব ভূক হবে। তারা কুলহীন হয়ে প্রানীর মাংস আহার করবে , নুড়ি পাথর( মুসালা) দিয়ে তারা নিজেদেরকে শৌচ করবে ( ঢিলা কুলুপ), সেই কারনে তাদের নাম হবে মুসলমান। যারাই এই ধর্মে থাকবে , তারা সব শুদ্ধ ধর্মকেই কলুষিত করবে। আর এই পৈশাচিক ধর্মই আমি প্রচার করব ও প্রসার ঘটাব। 

মোটামুটি এই হলো ভবিষ্য পুরানের কাহিনী। এখন এই কাহিনীর মোহামাডা যদি মুহাম্মদ হয়, সেটাই যদি মুসলমানরা দাবী করে , তাহলে তাদের একই সাথে বোঝা উচিত এখানে মুহাম্মদকে কি হিসাবে চিহ্নিত করা হচ্ছে। পরিস্কার ভাষায় মুহাম্মদকে বলা হচ্ছে একটা দুরাত্মা পিশাচ। এখন দুরাত্মা ও পিশাচ যে কি জিনিস, সবাই তা জানে। সুতরাং ভবিষ্য পুরানের মতে- ইসলাম হচ্ছে একটা অপশক্তির পৈশাচিক ধর্ম। তার মানে যারাই এই ইসলাম অনুসরন করবে , তারা হবে দুরাত্মা , পিশাচ , দুষ্ট, অসভ্য , বর্বর শ্রেনীর মানুষ।  এখন জাকির নায়েক বা এই ধরনের শঠ ও ভন্ড লোকজন যদি পিশাচ শব্দের অর্থ করে মহান আত্মা আর পৈশাচিক ধর্মের অর্থ করে মহান ধর্ম তাহলে বুঝতে হবে মুসলমানরা সত্যি সত্যিই একটা অন্ধকার জগতে বাস করে। তারপর বলছে ঈশা- এর নির্দেশেই নাকি মুহাম্মদ এই পৈশাচিক ধর্ম প্রচার করছে। সেটা কি মুসলমানরা গ্রহন করবে ?তাছাড়া মুহাম্মদ সিন্ধু নদীর তীরে এসেছিল , সেটাও কি তারা বিশ্বাস করে ? সর্বোপরি , মুহাম্মদ যে শিবের পুজা করত , সেটা কি মুসলমানরা মানবে ?  উক্ত পুরানে বলা হচ্ছে মোহামাডা ও ভোজরাজ উভয়ই শিবের পুজা করত। 

এখানে একটা বিষয় জানা দরকার , তা হলো হিন্দু সনাতন ধর্মের বিধানে – শিবকে যেমন ভাল মানুষরা পুজা করে তেমনি কিন্তু ভুত প্রেত পিশাচ ইত্যাদি অপ আত্মারাও পুজা করে থাকে। তারা যার যার স্বার্থ সিদ্ধির জন্যেই এই পুজা করে থাকে।  সুতরাং মুসলমানরা যদি সত্যি সত্যি ভবিষ্য পুরানের এই মোহামাডাকে তাদের নবী মুহাম্মদ হিসাবে বিশ্বাস করে , তাহলে আজকেই তাদেরকে এই পৈশাচিক বর্বর ইসলাম ধর্ম ত্যাগ করে সভ্য মানুষ হিসাবে পরিচিত হওয়া কি উচিত নয় ? 

পুরাণ কী?

বৈদিক মানত্যা হিসাবে ব্রাহ্মণ গ্রন্থ পুরাণ
 মোট ১৯টি পূর্ণাকার ব্রাহ্মণ অদ্যাবধি বিদ্যমান: এগুলির মধ্যে দুটি ঋগ্বেদ, ছয়টি যজুর্বেদ, দশটি সামবেদ ও একটি অথর্ববেদের সঙ্গে যুক্ত।  শতপথ ব্রাহ্মণ, গোপথ ব্রাহ্মণ, ঐতরেয় ব্রাহ্মণ, বা অশ্বলয়ন ব্রাহ্মণ ( ঋগ্বৈদিক ব্রাহ্মণ ), তাণ্ড্য মহাব্রাহ্মণ বা পঞ্চবিংশ ব্রাহ্মণ (সামবেদের ব্রাহ্মণ ), জৈমিনীয় উপনিষদ্ ব্রাহ্মণ বা তলবকার উপনিষদ্ ব্রাহ্মণ (সামবেদের ব্রাহ্মণ), গোপথ ব্রাহ্মণ 
(অথর্ববেদের  ব্রাহ্মণ গ্রন্থ ),ব্রাহ্মণ সাহিত্যের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ও বহু গবেষিত হচ্ছে শুক্ল যজুর্বেদের শতপথ ব্রাহ্মণ। এর রচয়িতা হিসেবে দুজনের নাম পাওয়া যায়, শাণ্ডিল্য ও যাজ্ঞবল্ক্য।  
প্রচলিত পুরাণ সমূহের সাথে বেদ,উপনিষদের বিরোধী সাংঘর্ষিকতার বিষয় নিয়ে প্রশ্ন উঠলে, পৌরাণিক বন্ধু গণ কোন উপায় না পেয়ে অথর্ব্ববেদ এবং ছান্দোগ্য উপনিষদ থেকে নিন্মক্ত রেফারেন্স দিয়ে বলে; দেখুন বেদ, উপনিষদ ও পুরাণ কে স্বীকার করেছে। এটা কে কি বলবেন?

পুরাণের পিডিএফ সমূহঃ
পদ্মপুরাণ
মহাভাগবত পুরাণ
নারসিংহ পুরাণ
মার্কেন্ডয় পুরাণ
মৎস পুরাণ
শ্রীশ্রী গায়মাহাত্ম্য স্কন্দ পুরাণ


❏ ইতিহাসস্য চ বৈ পুরাণস্য চ গাথানং চ
নারশংসীনাং চ প্রিয় ধাম ভবতি য এবং বেদ।।
(অথর্ববেদ ১৫/৬/১১-১২)
তিনি অনুসরন করেন ইতিহাস, পুরান (জ্ঞান ও কর্মের প্রাচীন গল্প) গাথাসমূহ (উদযাপনের কবিতা) এবং নারাশংসীদের ৷ যিনি এটি জানেন ইতিহাস, পুরাণ ও গাথাসমূহ তার প্রিয় হয়, গভীরভাবে অধ্যয়ন করেন ৷

ভবিষ্য পুরাণের সময়কাল

ভবিষ্য পুরাণের লেখার কোন নির্দিষ্ট সময়কালই নেই। ভবিষ্য পুরাণের কিছু অংশ খ্রিস্টপূর্ব পঞ্চম শতকে রচিত। এবং এই রচনাকালের ব্যাপ্তি বিষয়ে একজন বিখ্যাত বিশেষজ্ঞ মরিজ উইন্টারনিৎজ এর মতে, উদ্ধৃতি হিসেবে গৃহীত লেখ ও পুরাণ উভয় ক্ষেত্রে উল্লিখিত এই শ্লোকগুলি সম্ভবত ধর্মরাষ্ট্রসমূহের পূর্ববর্তী এবং তাই এগুলির ভিত্তিতে কোনো কালানুক্রমিক তালিকা প্রস্তুত সম্ভব নয়। আরেকজন বিখ্যাত বিশেষজ্ঞ Alf Hiltebeitel এর মতে, খ্রিষ্ঠপূর্ব ৫০০ থেকে শুরু করে উনবিংশ শতাব্দীর মধ্যভাগ পর্যন্ত ভবিষ্য পুরাণ লিখিত এবং পরিমার্জিত হয়েছে। অর্থাৎ, এটি কোন ঐশ্বরিক অবিকৃত গ্রন্থ নয়, বহুল পরিমার্জিত এবং নতুন নতুন বিষয় যুক্তকরণের মাধ্যমেই আজকে যেই ভবিষ্য পুরাণ পাওয়া যাচ্ছে সেটি।

সেই সাথে, এই বিষয়ের স্বনামধন্য বিশেষজ্ঞ Alf Hiltebeitel গবেষণা করে দেখিয়েছেন, লিখিত শ্লোকগুলোর অনেকাংশই রচনা হয়েছিল একদমই সাম্প্রতিক সময়ে। কারণ সেই শ্লোকগুলোর বাক্যগঠন অতীতের বাক্য গঠনের থেকে আলাদা। এর অর্থ হচ্ছে, ভবিষ্য পুরাণে অত্যন্ত চাতুর্য্যের সাথে বর্তমান সময়ের ঘটে যাওয়া কিছু ঘটনা অতীতের লেখা ভবিষ্যতবানী হিসেবে যুক্ত করা হয়েছে। কিন্তু সেগুলো আসলে অতীতে লিখিত নয়, বর্তমান সময়েই লিখিত।

এ কে রামানুজন একে ” যথাযথভাবে হালনাগাদকৃত ভবিষ্য পুরাণ” বলে মন্তব্য করে বলেছেন, এইগ্রন্থে খ্রিস্ট, মুসা ও রানি ভিক্টোরিয়ার উল্লেখ পাওয়া গেছে। একে তিনি এই বলে ব্যাখ্যা করেন যে: চতুর বক্তব্য ও অনুশাসন প্রয়োগ করার প্রচেষ্টার পরও বলতেই হয় যে পুরাণগুলি মুক্ত ব্যবস্থার অন্তর্গত। ভবিষ্যোত্তর পুরাণ মুখ্যত কিছু কিংবদন্তি ও লোককথা সম্বলিত ধর্মীয় রীতিনীতির হাতবই।
রাজেন্দ্র হাজরা একে “বিভিন্ন সূত্র থেকে গৃহীত একটি অসংবদ্ধ উপাদানসংগ্রহ” বলে উল্লেখ করেছেন।

ভবিষ্য পুরাণে আর কাদের নাম রয়েছে?

সবচাইতে মজার বিষয় হচ্ছে, ভবিষ্য পুরাণে যেই অংশে মহম্মদের কথা বলা আছে, সেখানে ঈশ্বরপুত্র যীশু, ভারতের রাণী ভিক্টোরিয়া, সম্রাট আকবর, এমনকি, হিটলারের কথাও বর্ণিত আছে। আপনি কী তাহলে ঈশ্বরপুত্র যীশুর দাবিটিও মেনে নিচ্ছেন? বা হিটলারকে নবী মানবেন?

বিষয়টি সহজ করে বোঝাচ্ছি। ধরুন, আমি এখন একটি ভবিষ্যত বাণী করলাম, যে ১৯০০-১৯৫০ সালের মধ্যে দু’টি বিশ্বযুদ্ধ হবে। কথাটি লিখে মাটির নিচে পুতে দিলাম, এবং কয়েক বছর পরে সেগুলো মাটি থেকে তুলে বলতে লাগলাম, এই কথাগুলো খ্রিস্টপূর্ব ৫০০ সালে লিখিত। কিন্তু কথাগুলোর বাক্যগঠন এবং রচনার ধারা লক্ষ্য করলেই বোঝা যাবে, সেগুলো আসলে আমি সাম্প্রতিক সময়েই লিখেছি। এবং এগুলো অতীতে লিখিত ভবিষ্যত বাণী হিসেবে উপস্থাপন করতে চাচ্ছি।

মরিজ উইন্টারনিৎজ এর মতে, ভবিষ্য পুরাণ শিরোনামে যেসব পুথি আমাদের হস্তগত হয়েছে, তা নিঃসন্দেহে আপস্তম্বীয় ধর্মসূত্র গ্রন্থে উদ্ধৃত প্রাচীন কীর্তি নয়। আপস্তম্বীয় ধর্মসূত্র-এ একটি উদ্ধৃতি ভবিষ্য পুরাণ -এর নামাঙ্কিত; কিন্তু উক্ত পুরাণের প্রাপ্ত কোনো পাঠে তা পাওয়া যায় না। ভবিষ্য পুরাণ অনুসারে এই গ্রন্থের পাঁচটি পার্বন বা খণ্ড। কিন্তু প্রাপ্ত পাঠভিত্তিক মুদ্রিত সংস্করণে চারটি খণ্ড দেখা যায় ( ব্রাহ্ম , মধ্যমা , মধ্যমা , ও উত্তর)। এই চারটি খণ্ড বিষয়গতভাবে পৃথক ও ভিন্ন ভিন্ন সময়কালে রচিত।
Alf Hiltebeitel তার Rethinking India’s Oral and Classical Epics গ্রন্থে পরিষ্কারভাবেই বলেছেন, this part (যেই অংশে মুহাম্মদের কথা আছে, প্রতিসর্গপর্বন) of the Bhavisya Purana was mostly likely composed in the 19th century.

ভবিষ্য পুরাণে মুহাম্মদের কথা অতীতকালে লিখিত কেন?

এবারে আসুন আরেকটি মজার বিষয় লক্ষ্য করি। আপনি যদি ভবিষ্য পুরাণের কিছু অংশ পড়ে থাকেন, পড়লেই দেখবেন, এটি ভবিষ্যতের নানা কথা বর্ণনা করেছে। এবং বর্ণনার সময়, টেন্স হিসেবে ফিউচার টেন্স ব্যবহার করা হয়েছে। কিন্তু ভবিষ্য পুরাণের প্রতিসর্গপর্বন অংশটুকু পড়লেই, মজার বিষয় দেখবেন, মুহাম্মদের বর্ণনা অংশে, সেখানে ব্যবহৃত হয়েছে পাস্ট টেন্স। অর্থাৎ অতীত কালের বিবরণ। মজার না বিষয়টি? কেউ ভবিষ্যতবাণী করলে কোন টেন্সে লেখে? অতীত কাল হিসেবে বর্ণনা করে বুঝি?

ভবিষ্য পুরাণে মুহাম্মদের সুনাম নাকি দুর্নাম করা হয়েছে?

আসুন এবারে আপনাকে ভবিষ্য পুরাণে মুহাম্মদ সম্পর্কিত অংশটুকু বাঙলায় অনুবাদ করে দিচ্ছি। আপনি নিজেই পড়ে আমাকে বলবেন, ভবিষ্য পুরাণকে আপনি রেফারেন্স হিসেবে ব্যবহার করবেন কিনা। কারণ সেটা আপনি করতে চাইলে, মুহাম্মদকে একটি ইবলিশি বা দানবীয় বা অসুরীয় ধর্মের প্রতিষ্ঠাতা হিসেবেই আপনাকে মানতে হবে।

ইসলাম সম্পর্কিত ভবিষ্যদ্বাণী (প্রতিসর্গ পর্ব তৃতীয় অংশ থেকে)
শ্রী সুতা গোস্বামী বলেন: রাজা শালীবন রাজবংশের মধ্যে, দশজন রাজা ছিলেন যারা ৫০০ বছরেরও বেশি সময় ধরে শাসন করার পর স্বর্গীয় গ্রহগুলিতে গিয়েছিলেন। তারপর ধীরে ধীরে পৃথিবীতে নৈতিকতা ভূলণ্ঠিত হতে লেগেছিল। সেই সময়ে ভোজরাজা ছিলেন পৃথিবীর রাজাদের দশম জন। তিনি যখন দেখলেন যে পৃথিবীতে নৈতিকতা ভূলণ্ঠিত হচ্ছিল তখন তিনি কালিদাসের দশ হাজার সৈন্যবাহিনী দিয়ে তার দেশের চারিপাশের সব দিক জয় করলেন। তিনি সিন্ধুর নদী পার হলেন এবং গান্ধারা, ম্লেচ্ছ, শক, কাশ্মীর, নওড়া ও শঠের উপর জয়ী হন। তিনি তাদের শাস্তি দিয়েছিলেন এবং বিপুল পরিমাণ অর্থ সংগ্রহ করেছিলেন। তারপর রাজা মহমদদ (মুহম্মদ), ম্লেচ্ছ ধর্মের প্রবক্তা, এবং যিনি মরুভূমিতে ছিলেন, তাকে নিয়ে এবং মহাদেব শিবের অনুসারিদের সাথে গেলেন। তিনি গঙ্গা পানি দিয়ে মহাদেব শিবকে ধৌত করেছিলেন এবং মনপ্রাণ দিয়ে উপাসনা করেছিলেন পঞ্চগভ্য (দুধ, ঘি, দই, গরু এবং গোমূত্র) দিয়ে এবং চন্দনচোপড় ইত্যাদি দিয়ে। তারপরে তিনি প্রার্থণা অর্পণ করে তাকে খুশী করেন।
শ্রী সুতা গোস্বামী বলেন: তার প্রার্থণা শুনে, মহাদেব শিব বললেনঃ হে রাজা ভোজরাজ, তোমাকে মহাকক্ষ্ম নামক স্থানে যেতে হবে। সেই স্থানটিকে বহিকা বলা হয় এবং এখন ম্লেচ্ছদের দ্বারা দূষিত হচ্ছে। সেই ভয়ঙ্কর দেশে আর ধর্ম (ধর্ম বলতে এখানে হিন্দু ধর্ম বোঝানো হচ্ছে) বলে কিছু নেই।
অতীতে একসময় ত্রিপুরা নামক একটি দানবের আবির্ভাব ঘটেছিল, যাকে আমি ইতিমধ্যেই পুড়িয়ে ছাই করেছিলাম। কিন্তু সে আবার বালির আদেশে ফিরে এসেছে। তার কোন সৃষ্টি নেই এবং সে আমার কাছ থেকে একটি বর লাভ করেছে। তার নাম মহাওদা এবং তার কর্ম একটি দানবের মতো। অতএব, হে রাজা, ঐ অশুভ দানবের দেশে যেও না। আমার দয়া দ্বারা আপনার বুদ্ধি শুদ্ধ করা হবে।
এইসব শুনে রাজা ভোজরাজ তার দেশে ফিরে আসেন এবং মহমমদ তাদের এগিয়ে দিতে সিন্ধু নদীর তীর পর্যন্ত এসেছিলেন। তিনি (মহম্মদ) মায়া (ইল্যুশন) প্রসারিত করতে সিদ্ধহস্ত ছিলেন, এবং খুব আনন্দের সাথে রাজাকে বললেন, ” হে মহারাজ, আপনার ঈশ্বর আমার দাস হয়েছেন। শুধু দেখুন, আপনার ঈশ্বর আমার অবশিষ্টাংশ খাবে, তাই আমি আপনাকে দেখাবো।” তার সম্মুখে এইসব দেখে রাজা বিস্মিত হলেন। তারপর রাগে ক্ষিপ্ত হয়ে কালিদাস মহমমদকে ধমক দিয়ে বললেন, “হে বদমাশ, তুমি রাজাকে বিদ্রূপ করার জন্য মায়াজ্বাল তৈরি করছো, আমি তোমাকে মেরে ফেলব, তুমি নিকৃষ্টতম …”
(…)
সেই শহরটি তীর্থযাত্রীদের কাছে তীর্থস্থান হিসাবে পরিচিত ছিল, একটি জায়গা যা ছিল মদিনা এবং উম্মত্ততা থেকে মুক্ত। একটি দানব সাথে নিয়ে মোহমায়া সৃষ্টিতে পারঙ্গম মহমমদ রাজা ভোজরাজের সামনে রাতে হাজির হলো এবং বললো: হে রাজা, আপনার ধর্ম অবশ্যই সব ধর্মের মধ্যে শ্রেষ্ঠ ধর্ম। তারপরেও আমি আমার প্রভুর নির্দেশ মোতাবেক একটি ভয়ঙ্কর এবং অসুরীয় ধর্ম স্থাপন করতে যাচ্ছি। আমার অনুসারিদের লক্ষণ হবে যে, তারা প্রথমে তাদের যৌনাঙ্গ কেটে ফেলবে, কোন শিখা থাকবে না, তবে দাড়ি থাকবে, তারা পাপাত্মা হবে, প্রচুর হট্টোগোল করবে এবং সব খাবে। তারা কোন শুদ্ধ নিয়মনীতিহীন ভাবে প্রাণী হত্যা করে খাবে। ইহাই আমার অভিপ্রায়। আপনি যেমন কুশার সাহায্যে সব পরিশুদ্ধ করেন, তারাও মুশাল্লা বা মশলা দিয়ে শুদ্ধকর্মের কাজ করবে। অতএব, তারা মুসলমান হিসাবে পরিচিত করা হবে, যাদেরকে ধর্মদুষণকারী বলা হবে। এইভাবে আমি একটি অসুরীয়/ ইবলিশি ধর্ম প্রতিষ্ঠা করবো।
এই সব শুনে শুনে রাজা তার প্রাসাদে ফিরে আসেন এবং সেই পাপাত্মা তার জায়গায় ফিরে গেল।

ভোজরাজা কে ছিলেন??

এবারে আসুন মূল আলাপে। ভোজরাজা(সর্বপ্রথম জন) সম্পর্কে আমরা যা জানি, তা হচ্ছে, উনি শাসন করেছেন ১০১০ থে ১০৫৫ সাল পর্যন্ত। মুহাম্মদের জন্মকাল হচ্ছে ৫৭০ থেকে ৬৩২ খ্রিষ্টাব্দ। দুইজনার দেখাসাক্ষাত হয়েছে বা মিল মহব্বত হয়েছে, এরকম কল্পনা শুধু পাগলের মাথায় আসতে পারে। তারপরে লক্ষ্য করুন,  এখানে হযরত মুহাম্মদ পুরো ঘটনাটি সম্পর্কে পাস্ট টেন্সে ভবিষ্যত বাণী করা হয়েছে যে, সে একটি অসুরীয় ধর্ম প্রতিষ্ঠা করবেন। আপনি বা আপনারা যারা ভবিষ্য পুরাণে মুহাম্মদের নাম আছে জেনেই ধেই ধেই করে নৃত্য শুরু করেছেন, ভবিষ্য পুরাণের রেফারেন্স ধরে মুহাম্মদকে সত্য প্রতিষ্ঠিত করতে নেমেছেন, তাদের মত কাঠ বলদ মনে হয় আর কেউ নেই। কারণ, আপনারা আসলে মুহাম্মদের পেছনে আইক্কাওয়ালা বাঁশ দেয়ার উদ্দেশ্যেই, মুহাম্মদকে অসুরীয় ধর্মের প্রবর্তক, এই বক্তব্য প্রচার করছেন।

Statue of Raja Bhoja
ভোজরাজা

মূল ভবিষ্য পরাণের অনুবাদ

মূল ভবিষ্য পুরান গ্রন্থটি এখানে যুক্ত করা হলো। বইটির ৩৭৬ পৃষ্ঠা থেকে মূল বইয়ের পাতাগুলো তুলে দেয়া হলো আগ্রহী পাঠকের জন্য। বইটির ডাউনলোড লিঙ্ক নিচে পেয়ে যাবেন।

ভবিষ্য পুরাণে
ভবিষ্য পুরাণে
ভবিষ্য পুরাণে
ভবিষ্য পুরাণে
ভবিষ্য পুরাণে
ভবিষ্য পুরাণে
মহামদ পৈশাচ ধর্ম পালন করবে
ভবিষ্য পুরাণে

উপসংহার

হিন্দু ধর্মগুরুরা কী উদ্দেশ্যে মুহাম্মদের কথা ভবিষ্য পুরাণে বর্ণিত আছে, এরকম দাবী করেন, তার উদ্দেশ্য হচ্ছেঃ
১. এতে তাদের ধর্মগ্রন্থ কতটা অলৌকিক তা প্রমাণ হয়।
২. এতে তাদের ধর্মের ভিত মজবুত হয়।
৩. এতে মুহাম্মদকে একটি অসুরীয় বা রাক্ষসের ধর্ম, বা দানবীয় ধর্ম হিসেবে প্রতিষ্ঠা করা যায়।
৪. এতে মুসলমানদেরকে অসুরের উপাসক, এবং ঘৃণিত সম্প্রদায় হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করে তাদের বিরুদ্ধে সাম্প্রদায়িক উষ্কানি দেয়া যায়।

হিন্দুরা নাহয় এইকাজ করে যাচ্ছে, তার কারণ বোধগম্য, আপনি মুসলমান হয়ে ভবিষ্য পুরাণকে রেফারেন্স ধরে নিচ্ছেন কোন বুদ্ধিতে? মুমিন হয়েছেন ভাল কথা, তাই বলে কী জ্ঞানবুদ্ধি কিছুই থাকতে নেই? এরকম বেয়াকুব কীভাবে হন আপনারা?

মুমিনঃ আপনাদের সাথে যুক্তি দিয়া লাভ নাই। কারণ আপনারা যুক্তি বুঝেন না। আল্লাহ আপনাদের অন্তরে মোহর মেরে বন্ধ করে দিয়েছেন। আপনাদের মত লোকদের সাথে তর্ক করে সময় নষ্ট করতে চাই না।
– আচ্ছা ঠিক আছে। আল্লাহ আপনাকে হেদায়ের দান করুক। আমিন।

প্রয়োজনীয় রেফারেন্সঃ

১। Alf Hiltebeitel এর লেখা Rethinking India’s Oral and Classical Epics University of Chicago Press. pp. 217–218. ISBN 978-0-226-34050-0. আগ্রহী পাঠকের জন্য বইটির ডাউনলোড লিঙ্কও দেয়া হলো।

২। পুরাণ সংকলন, ইংরেজিতে। ইসলাম সম্পর্কিত অংশটুকু ৪৮৩ নং পৃষ্ঠায় দেখুন।

৩। মহর্ষি কৃষদ্বৈপায়ন বেদব্যাস বিরচিতম ভবিষ্য পুরান। শ্রীমৎ স্বামী পরমাত্মানন্দনাথ ভৈরব (গিরি) কৃত অনুবাদ এবং সম্পাদনা।  বিশেষ কৃতজ্ঞতাঃ বইটি স্ক্যান করে দিয়েছেন বিশ্ব ব্যাপারী ভাই।

1 comment:

  1. লেখককে বলছি ভালো করে তথ্য দিয়ে লিখতে

    ReplyDelete

ধন্যবাদ

বৈশিষ্ট্যযুক্ত পোস্ট

ব্রহ্মচর্যের সাধনা ভোজন

  নবম ভাগ ভোজন ভূমিকা - "ধর্মার্থকামমোক্ষাণামারোগ্যম্ মূলমুত্তমম্" . ধর্ম-অর্থ-কাম আর মোক্ষ এই পুরুষার্থচতুষ্টয় হল মানব জীবনের উ...

Post Top Ad

ধন্যবাদ