কাফের কারা ? - ধর্ম্মতত্ত্ব

ধর্ম্মতত্ত্ব

ধর্ম বিষয়ে জ্ঞান, ধর্ম গ্রন্থ কি , হিন্দু মুসলমান সম্প্রদায়, ইসলাম খ্রীষ্ট মত বিষয়ে তত্ত্ব ও সনাতন ধর্ম নিয়ে আলোচনা

धर्म मानव मात्र का एक है, मानवों के धर्म अलग अलग नहीं होते-Theology

সাম্প্রতিক প্রবন্ধ

Post Top Ad

স্বাগতম

07 November, 2021

কাফের কারা ?

 কোরানে কাফের শব্দটি শত শত বার ব্যবহার হয়েছে, কাফেরদের নির্বিচারে হত্যা করতে বলা হয়েছে, তাদের গর্দানে আঘাত করতে বলা হয়েছে। সুরা-৪৭, আয়াত-৪।

তাদের ডান হাত ও বাম পা কিংবা বাম হাত ও ডান পা কেটে ফেলতে বলা হয়েছে। সুরা-৫, আয়াত-৩৩।

প্রশ্ন হল কারা এই কাফের ? তাদের জন্য হাজার রকম নিশংস শাস্তির ব্যবস্থাইবা কেন? আজকালকার দূর্বুধিজীবিরা বোঝাতে চান কাফের মানে পাপী, অন্যায়কারী বা অবিশ্বাশী। সুতরাং পাপীকে শাস্তী দিলে আর কি খারাপ ? কিন্তু কাফের শব্দের আসল মানে হল যে কোরান মানে না অর্থাৎ সমস্ত অমুসলমান।  কাফের শব্দের এই অর্থ কোরানেই পরিষ্কার করে বলা আছে।(সুরা-৫, আয়াত-৪৪) সুতরান হিন্দু, খ্রীষ্ঠান, ইহুদী, বৌদ্ধ, শিখ, জৈন, পার্সী সবাই কাফের এবং মুসলমানের কাছে বধযোগ্য। কাফের আবার দুই রকম, খ্রীষ্ঠান-ইহুদি প্রভৃতি যারা মূর্তি পূজা করে না তারা অপেক্ষাকৃত ভাল কাফের। এরা জিজিয়া কর দিয়ে বাচলেও বাচতে পারে। কিন্তু হিন্দুরা যারা মূর্তিপূজা করে তারা নিকৃষ্টতম, ইসলামের চোখে তাদের বাচবার কোন অধিকারই নেই। সুরা-৪ আয়াত ১১৬ তে আছে। কোরান পড়লে তা পরিষ্কার হয়ে যাবে।

কাফের কারা ?

কোরানের বাংলা অনুবাদেও অনেক আরবী শব্দ ব্যবহার করা হয়। সুরা-৯ তওবা, আয়াত-৫।

"অতপর নিষিদ্ধ মাস অতিবাহিত হলে অংশীবাধীদের যেখানে পাবে বধ করবে, তাদের বন্ধী করবে, অবরোধ করবে এবং প্রত্যেক ঘাটিতে তাদের জন্য ওত পেতে থাকবে। কিন্তু যদি তারা তওবা বা অনুসূচনা করে, যথাযথ নামাজ পড়ে যাকাত অথবা দান দেয় তবে তাদের পথ চেড়ে দেবে। নিশ্চয় আল্লাহ ক্ষমাশীল ও পরম দয়ালু।' কোরানের এই আয়াতটি খুব তার্তপর্যপূর্ণ, কোরানের প্রতিটি বানী আল্লার চিরন্তন আদেশ কেবল একটা উক্তি মাত্র নয়। মুসলমানরা বেশিরভাগ ক্ষত্রেই আরবী কোরান পড়ে কিংবা আরবি পড়তে না পারলেও আরবী কোরানের মূল ভাব ও বক্তব্য তারা মাদ্রাসায় বা বাবা ঠাকুরদার কাছে মুখে শুনে শুনে শুনে রপ্ত করে নেয়। সেই জন্য যখনি কোন কোরান বাংলায় ইংরেজী প্রভৃতি ভাষায় তারা অনুবাদ করে তখন অনুবাদটি এমন ভাবে করে যাতে অমুসল্মানরা তা পড়লেও তার প্রকৃত মানে ঠিকমত বুঝতে না পারে। এর জন্য আরা কোরানের কয়েকটা দরকারি শব্দের মানে ঘোলাটে করে দেয়। যেমন কাফের শব্দের মানে কিভাবে বিকৃত করা হয়েছে তা আগেই বলেছি। এই আয়াতটির মধ্যে মারতে কাটতে বন্ধী করতে বলা হচ্ছে অংশীবাধীদের।

এই অংশীবাদী কারা ? অংশীবাধী কথাটা মূল আরবি মুশরিক শব্দের অনুবাদ। মুশরিক শব্দের সোজা মানে হল পৌত্তলিক অর্থাৎ যারা মূর্তি পূজা করে। যেমন হিন্দুরা। যারা ভিবিন্ন মূর্তিকে ভগবানের অংশ হিসাবে পূজা করে । তারাই হল অংশীবাদী।

যাতে সরল অবোধ হিন্দুরা বুঝতে না পারে কোরানে তাদেরকেই বধ করতে বন্ধী করতে বলা হচ্ছে তাই সুচতুর কোরান অনুবাদক পোত্তলিক কথাটি না বলে ঘুরিয়ে অংশীবাদী বলে হিন্দুদের বোকা বানাবার চেষ্টা করছে।


আচ্ছা এবার দেখা যাক কি করলে পৌত্তলিকদের চেড়ে দেওয়া হবে? তওবা করলে, জাকাত দিলে এবং নামাজ পড়লে। এখানে বাংলা অনুবাদেও সুচুতুরভাবে আরবী শব্দ ব্যবহার করা হয়েছে যাতে বাঙ্গালী হিন্দুরা এর কোন মানে বুঝতে না পারে। তোওবা কথাটির আক্ষরিক অর্থ হল অনুশোচনা করা। কিন্তু এর প্রকৃত ইসলামী তার্তপর্য হল অনুশোচনা করা মানে পৌত্তলিক ব্যক্তির মুসলমান না হবার জন্য অনুশোচনা করা অর্থাৎ সোজা কথায় মুসলমান হওয়া। কিন্তু কেউ যদি কেবল মুখে বলে হ্যা আমি মুসলমান হলাম। তাহলেই কিন্তু তাকে ছেড়ে দেওয়া হবেনা। তাকে মুসলমানদের মত যথাযতভাবে নামাজ পড়তে হবে এবং জাকাত অর্থাৎ অর্থ দান করতে হবে। এর ও তার্থপর্য গভীর। যাকাত কথার আক্ষরিক অর্থ দান হলেও এর একটা বিশেষ ইসলামী মানে আছে, এটা কিন্তু সেচ্ছাকৃত দান নয়। প্রত্যেক মুসলমানের ধর্মের জন্য প্রদেয় বাধ্যতামূলক অনুদান যা মুহাম্মদ নিজে বা তার পরবর্তী স্থলাবিসিক্ত খলিফা পাবেন। এই অর্থ ব্যয় করা হবে অমুসলমানকে ইসলামে ধর্মান্তরিত করার জন্য এবং অমুসলমানদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার জন্য। সুরা-৯, আয়াত-৬০ এ আছে।

বর্তমানে যাবতীয় সন্ত্রাসবাদী কাজের অর্থই আসছে ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের দেওয়া যাকাতের টাকা থেকে। বড় বড় শেখ যেহাদের জন্য শত শত কোটি টাকা-দাউদ ইব্রাহিম, লাদেন প্রভৃত যেহাদিকে দান করছে। অর্থাৎ যে অমুসলমানরা মুসলমান হয়েছে বলে দাবী করবে যে যে সত্যিই ইসলামের অনুরাগী হয়েছে তা বোঝাতেই তাকে এই দান দিতে হবে। অর্থাত আন্তরিকভাবে মুসলমান না হলে পৌত্তলিকদের বধ করা হবে। অর্থাৎ বোঝা যায় হয় মুসলমান হও নয় মরো। এটাই অমুসলমানদের প্রতি ইসলামের বানী।

কাফের কারা, কুরআন কি বলে এ বিষয়ে।

যে ব্যক্তি আল্লাহর, তাঁর মালাইকা/ফেরেশতাগণের, তাঁর রাসূলগণের, জিবরাঈলের এবং মিকাঈলের শত্রু, নিশ্চয়ই আল্লাহ এরূপ কাফিরদের শত্রু। [কুরআন ২।৯৮] বিচার করে দেখুন এদের কে মানে আর কারা মানে না।

কোরানের অনুবাদেও অজস্র আরবী শব্দ ব্যবহার করার ফলেই সাধারন হিন্দুরা কোরান পড়লেও এর আসল মানে কিছুই বুঝতে পারেনা। এই আয়াতটিতে নিষিদ্ধ মাসের কথা বলা আছে। এর মানে হলো ইসলামের আগের যুগ থেকে আরবে চারটি মাসকে চিহ্নিত করা হয়েছিলো যেই সময় যুদ্ধ বিগ্রহ বা রক্তপাত নিষিদ্ধ থাকবে। সেই জন্য নিষিদ্ধ মাসগুলো পার হয়ে গেলে তারপর পৌত্তলিকদের যেখানে সেখানে হত্যা করতে বলা হয়েছে। কিন্তু একবার মোহাম্মদের কিছু অনুগামী এই নিষিদ্ধ মাসেই বেশ কিছু পৌত্তলিক আরবকে সম্পূর্ণ বিনা দোষে হত্যা করে বসে। তাই নিয়ে সারা আরবময় মোহাম্মদের নিন্দা তীব্র হয়ে উঠে। তখন মোহাম্মদের সন্মান বাচাতে আল্লাহ একটি আয়াত পাঠিয়ে দিলেন।


"পবিত্র মাসে অর্থাৎ নিষিদ্ধ মাসে যুদ্ধ করা সম্পর্কে লোকে অর্থাৎ অমুসলমানরা তোমাকে অর্থাৎ মুসলমানদের জিজ্ঞাসা করে বলো- সেই সময় যুদ্ধ করা ভীষন অন্যায় কিন্তু আল্লাহর পথে বাধাদান করা, আল্লাহকে অস্বীকার করা, কাবা শরীফে উপাসনায় বাধা দেওয়া, এবং সেখানকার অধিবাসীদের সেখান থেকে বহিস্কার করা আল্লাহর নিকট তদপেক্ষা অধিক অন্যায় এবং বিদ্রহ, হত্যা অপেক্ষা ভীষনতর অন্যায়। (সুরা-২ বাকারা, আয়াত-২১৭, কোরানশরীফ)


মোহাম্মদের অনুগামীরা যাদেরকে হত্যা করেছিলো তারা এইসব কাজের কিছুই করেনি, নিজের মনে বানিজ্য করতে যাচ্ছিলো, কিন্তু তারা ছিলো অমুসলমান পৌত্তলিক। অর্থাৎ পৌত্তলিক হওয়াটাকেই বলা হচ্ছে আল্লাহর পথে বাধা দেওয়া। বিদ্রাহ কথাটি লক্ষ করুন, আরবী ফেতনা শব্দের অনুবাদে এখানে বিদ্রহ কথাটা ব্যবহার করা হয়েছে, এটা কোরান অনুবাদের জোচ্ছুরির একটি প্রক্ৃষ্ঠ উদহারন। কারন ফেতনা শব্দের আসল মানে আল্লার পথ না মানা, অর্থাৎ সোজা বাংলায় ইসলাম না মানা। এই অর্থটি মেসকাত শরীফ হাদিসে, এবং বুখারী হাদিসে খুব পরিষ্কার করে বলা আছে। এই আয়াতটির অর্থ দাড়ালো- ইসলাম কবুল না করাটা হত্যার থেকেও অনেক খারাপ। অতএব মোহাম্মদের অনুগামীরা বীনা প্ররোচনায় পৌত্তলিক আরবদের নিষিদ্ধ মাসেই হত্যা করে কোন অন্যায় করেনী। এর তার্তপর্য্য কিন্তু গভীর। অর্থাৎ যে চারটে মাস পৌত্তলিকদের হত্যা করা থেকে অব্যহতি দেওয়া হয়েছিলো, সেই চার মাসের মধ্যেও পৌত্তলিকদের হত্যা করলে কোন দোষ নেই।

এই কারনেই মোহাম্মদের জীবনীর বা সিরাতুন্নবীর সাথে মিলিয়ে মিলিয়ে কোরান না পড়লে এর আসল মানে অমুসলমানদের কাছে পরিষ্কার হবে না।

অনেক মেকী সেকুলার দূর্বুদ্ধীজীবীরা কোরানের একটা লাইনও না পড়েই বলবেন কোরানের এরকম ব্যখ্যা ঠিক নয়। ঠিক ব্যখ্যাটা যে কি সেটা কিন্তু তারা কোনদিনও বলতে পারবেন না। কারন এর অন্য কোন ব্যখ্যা হয়না। তাছাড়া আমরা কোরানের কোন ব্যখ্যা দেবার চেষ্টাই করছি না, কেবল কোরন কে উদৃত করে তাতে কি লেখা আছে তাই বোঝার চেষ্টা করছি।


মুসলমানদের প্রায় দেখা যায় রাস্তাঘাট অবোরোধ করে নামাজ পড়তে কিন্তু এর প্রক্ৃত তার্তপর্য হিন্দুদের অজানা। যদিও তারা হাজার বছর ধরে মুসলমানদের রাস্তা অবরোধ করে নামাজ পড়ার দৃশ্য দেখে আসছে। মুহাম্মদ নিজে সম্পূর্ণ নিরক্ষর ছিলেন, আরবের বেশিরভাগ লোক ই তখন নিরক্ষর ছিলো। তিনি ভাবলেন পৃথিবীতে অনেক ধর্মগ্রন্থই তো লেখা হয়েছে, কিন্তু খুব কম লোক ই সেসব পড়ে, তাচাড়া নিরক্ষর লোকেরা পড়বেই বা কিকরে, তাহলে কোরানের বানী মানুষকে জানাবার উপায়টা কি হবে ? তখনি প্রবর্তন করলেন নামাজের। প্রত্যেক নামাজে কোরানের খানিকটা পাঠ করা হয়, পরবর্তী নামাজে তারপর থেকে আরেকটু পাঠ করা হয়, এভাবে ক্রমাগত নামাজের দ্বারাই সম্পূর্ন কোরানটি নিরক্ষর মুসলমানকেও জানিয়ে দেবার ব্যবস্থা হল। তাছাড়া দিনে পাচ বার করে নামাজ পড়ার ফলে মুসলমানদের মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্ক যেমন বাড়বে, ব্যায়ামও হবে আবার ধর্ম ছাড়া অন্য কিছু ভাবভারও সময় থাকবেনা। নামাজের পর ইমাম একট ভাষন দেন, তাতে কোরান ও হাদিসের ব্যখ্যা দিয়ে মুসলমানদের জেহাদের উদ্ভুদ্ধ করা হয়। এই ভাষন বা মগজ দোলাইকে বলে খুতবা।


পৃথিবীর ভিবিন্ন দরকারি ঘটনা বা কখন দাঙ্গা করতে হবে সে সবই খুতবার সময় বলে দেওয়া হয়। অবশ্য যেহাদে অংশ নেবার সময় নামাজ স্থগিত রাখা যাবে। 

No comments:

Post a Comment

ধন্যবাদ

বৈশিষ্ট্যযুক্ত পোস্ট

যজুর্বেদ অধ্যায় ১২

  ॥ ও৩ম্ ॥ অথ দ্বাদশাऽধ্যায়ারম্ভঃ ও৩ম্ বিশ্বা॑নি দেব সবিতর্দুরি॒তানি॒ পরা॑ সুব । য়দ্ভ॒দ্রং তন্ন॒ऽআ সু॑ব ॥ য়জুঃ৩০.৩ ॥ তত্রাদৌ বিদ্বদ্গুণানাহ ...

Post Top Ad

ধন্যবাদ