প্রমাণ - ধর্ম্মতত্ত্ব

ধর্ম্মতত্ত্ব

ধর্ম বিষয়ে জ্ঞান, ধর্ম গ্রন্থ কি , হিন্দু মুসলমান সম্প্রদায়, ইসলাম খ্রীষ্ট মত বিষয়ে তত্ত্ব ও সনাতন ধর্ম নিয়ে আলোচনা

धर्म मानव मात्र का एक है, मानवों के धर्म अलग अलग नहीं होते-Theology

সাম্প্রতিক প্রবন্ধ

Post Top Ad

স্বাগতম

21 November, 2021

প্রমাণ

 মহর্ষি গৌতমের মতে প্রমাণ, প্রমেয়, সংশয়, প্রয়োজন, দৃষ্টান্ত, সিদ্ধান্ত, অবয়ব, তর্ক, নির্ণয়, বাদ, জল্প, বিতন্ডা, হেত্বাভাস, ছল, জাতি ও নিগ্রহস্থান এই ষোলটি পদার্থের যথাযথ জ্ঞান হইলেই মুক্তিলাভ হইয়া থাকে।

প্রমাণঃ যাহা দ্বারা বিষয়ের যথার্থ জ্ঞান জন্মে, তাকে "প্রমাণ" বলে। ইহা চারিভাগে বিভক্ত-প্রত্যক্ষ, অনুমান, উপমান ও শব্দ। এই চারি প্রকার প্রমাণের মধ্যে প্রত্যক্ষই প্রধান, অপর তিনটি প্রমাণ প্রত্যক্ষের উপর নির্ভর করে।

প্রত্যক্ষঃ চক্ষু,ঘ্রাণ, রসনা,শ্রোত্র, ত্বক ও মন এই ছয়টির নাম ইন্দ্রিয়। মনে রাখতে হবে চোখ কান প্রভৃতিকে যেরূপ দেখিতেছি, তাহাই ইন্দ্রিয় নহয়, এই গুলি ইন্দ্রিয়ের আশ্রয়মাত্র। ইহাদেরই মধ্যে এমন কিছু আছে, যাদের নাম ইন্দ্রিয়।

প্রমাণ


মন ব্যতীত অপর পাঁচটিকে বহিরিন্দ্রিয় বলে, মন অন্তরিন্দ্রিয়। কোনও দৃশ্য় বস্তুর সহিত যখন চক্ষুরিন্দ্রিয়ের সম্বন্ধ ঘটে, তখনই চাক্ষুষ প্রত্যক্ষ উৎপন্ন হয়। এইরূপ বিভিন্ন বিষয়ের প্রত্যক্ষ করিয়া থাকি। যদি আমাদের ইন্দ্রিয়ে দোষ থাকে তাহলে প্রত্যক্ষ ভুল হইবে। কমলারোগগ্রস্থ ব্যক্তি সাদা রংএর শঙ্খকেও হরিদ্রাভ দেখিয়া থাকেন। যে বস্তুটি দেখিতেছি বা যে শব্দ শুনিতেছি, তাহার সহিত তোক বা কানের নিশ্চয়ি একটি সম্বন্ধ ঘটিতেছে এবং এই দ,শ্য বা শ্রব্য বিষয়ের একটি জ্ঞানও জন্মিতেছে। এই সম্বন্ধ এবং জ্ঞান উভয়ই প্রত্যক্ষ প্রমাণ

ইন্দ্রিয়ের সম্বন্ধ হইলেই জ্ঞান হয়, সুতরাং জ্ঞানকে দার্শনিকগণ ইন্দ্রিয়সম্বন্ধের ফলরূপে কীর্ত্তন করিয়া থাকেন। আর ঐ জ্ঞান হিতেও একটি ফল উৎপন্ন হয়।

-কেহ কেহ বলিয়া থাকেন, শুধু ইন্দ্রিয়ই প্রতক্য প্রমাণ, আর ইন্দ্রিয়ের সহিত বিষয়ের সম্বন্ধ হিলে "ইহা রস", "ইহা রূপ" এইভাবের যে জ্ঞান হয়, তাহাই প্রত্যক্ষ প্রমাণের ফল বা প্রমিতি

বস্তুর লৌকিক প্রত্যক্ষের বেলায় প্রত্যক্ষরূপ জ্ঞানের আশ্রয় জীবাত্মা মনের সহিত সংযুক্ত হয়, এই সংযোগ সকল প্রত্যক্ষের বেলাই সাধারণ কারণ। অনেক সময় দেখায়ায়, নিকট দিয়া কেহ চলিয়া গেল, অথবা একটা বড়ো শব্দ হইল, কিন্তু আমরা দেখি নাই বা শুনি নাই, সম্পূর্ণ উদাসীন ছিলাম।

তাহার কারণ, মনোযোগের অভাব। আত্মার সহিত সংযুক্ত মন যদি প্রত্যক্ষের জনক চক্ষুরাদি ইন্দ্রিয়বিশেষের সহিত যুক্ত হয় এবং সেই যুক্ত ইন্দ্রিয় যদি দৃশ্যাদি বিষয় বিশেষের সহিত যুক্ত হয়, তাহা হইলে নিশ্চয়ই জ্ঞান উৎপন্ন হিবে। সমস্ত কারণের মধ্যে বিচ্ছেদহীন যোগ থাকা চাই, কোথাও এই শৃঙ্খলের বিচ্ছেদ ঘটিলে প্রত্যক্ষ হইবে না।

প্রত্যক্ষের আরও অনেক কারণ আছে, কিন্তু দৃশ্যদি বিষয়ের সহিত ইন্দ্রিয়ের সম্বন্ধকেই প্রধান কারণ বলিতে হয়। প্রত্যক্ষের বেলায় ইন্দ্রিয়ের সম্বন্ধ ছয় প্রকার-সংযোগ, সংযুক্ত-সমবায়, সংযুক্তসমবেতসমবায়, সমবায়, সমবেতসমবায়, বিশেষ্য বিশেষণভাব বা বিশেষণতা। [এই সম্বন্ধের অপর নাম "স্বরূপ"।]

চক্ষুরিন্দ্রিয় তেজঃপদার্থ, প্রদীপের ন্যায় চক্ষুরও প্রভা আছে। চক্ষুর প্রভা বা রশ্মিপদার্থের সহিত দৃশ্য বস্তুটি সংযুক্ত হিলে চাক্ষুষ প্রত্যক্ষ হইয়া থাকে। চক্ষু ব্যতীত অপর বহিরিন্দ্রিয়গুলি বহির্গত হয় না,স্বস্থানে থাকিয়াই তাহারা প্রত্যক্ষের বিষয়ের সহিত সম্বন্ধ হয়। চক্ষুরিন্দ্রিয়ের দ্বারা ঘটাদি দ্রব্য, ঘটত্ব, ঘটের রূপ প্রভৃতির প্রত্যক্ষ জন্মে। ঘটের প্রত্যক্ষে সংযোগই সম্বন্ধ।

কিন্তু ঘটস্থিত রূপাদির প্রত্যক্ষে "সংযুক্তসমবায়" এবং রূপাদিগত শুক্লত্বাদির প্রত্যক্ষে "সংযুক্তসমবেতসমবায়" নামক সম্বন্ধ স্বীকৃত হইয়াছে। মনের দ্বারা আমরা আপন-আপন সুখদুঃখের প্রতক্ষ করিয়া থাকি, তাহাতেও সংযুক্তসমবায়ই সম্বন্ধ। মন জীবাত্মার সহিত সংযুক্ত হয় এবং সেই জীবাত্মাতে সমবায় সম্বন্ধে (নিত্যসম্বন্ধে) সুখ-দুঃখ অবস্থিত। ন্যায়মতে শ্রবণেন্দ্রিয় নিত্যপদার্থ-আকাশস্বরূপ।

আকাশেই শব্দ উৎপন্ন হয়, আকাশেই থাকে, আকাশের সহিত শব্দের সম্বন্ধ-"সমবায়"

চলবে..

No comments:

Post a Comment

ধন্যবাদ

বৈশিষ্ট্যযুক্ত পোস্ট

অথর্ববেদ ২/১৩/৪

  ह्यश्मा॑न॒मा ति॒ष्ठाश्मा॑ भवतु ते त॒नूः। कृ॒ण्वन्तु॒ विश्वे॑ दे॒वा आयु॑ष्टे श॒रदः॑ श॒तम् ॥ ত্রহ্যশ্মানমা তিষ্ঠাশ্মা ভবতুতে তনূঃ। কৃণ্বন্তু...

Post Top Ad

ধন্যবাদ