ঈশ্বর নিরাকার - ধর্ম্মতত্ত্ব

ধর্ম্মতত্ত্ব

ধর্ম বিষয়ে জ্ঞান, ধর্ম গ্রন্থ কি , হিন্দু মুসলমান সম্প্রদায়, ইসলাম খ্রীষ্ট মত বিষয়ে তত্ত্ব ও সনাতন ধর্ম নিয়ে আলোচনা

धर्म मानव मात्र का एक है, मानवों के धर्म अलग अलग नहीं होते-Theology

সাম্প্রতিক প্রবন্ধ

Post Top Ad

স্বাগতম

07 November, 2021

ঈশ্বর নিরাকার

অসতো মা সদ্গময় তমসো মা জ্যোতির্গময়

মৃত্যোর্মা অমৃতং গময় ওম্ শান্তিঃ শান্তিঃ শান্তিঃ[বৃহদারণ্যক উপনিষদ ১।৩।২৮]

-অসত্য থেকে আমাকে সত্যে নিয়ে যাও, অন্ধকার থেকে আমাকে আলোতে নিয়ে যাও, মৃত্যু থেকে আমাকে অমৃতে নিয়ে যাও।।

ঋগ্বেদ ৯।৮৬।২৬ যারা পরমাত্মার আজ্ঞা মেনে চলে, পরমাত্মা তাদের সকল পথ সহজ করে দেন।।

সংস্কার মুক্ত মনে বিবেকের সাথে বিচার পূর্বক বুঝে দেখায় মনুষ্য মাত্রের কর্ত্তব্য।

ধর্মের বিষয়ে বেদ মূখ্য প্রমান মনুঃ২/১৩


👉পরমাত্মার কোন প্রতিকৃতি বা মূর্তি নাই[যজুর্বেদ, ৩২/৩]।

ন তস্য প্রতিমা অস্তি যস্য নাম মহদ্ যশঃ।

হিরণ্যগর্ভ ইত্যেষ মা মা হিংসীদিত্যেষা যস্মান্ন জাত ইত্যেষঃ।।যজুর্বেদ, ৩২/৩

অনুবাদ: মহতী কীর্তিতেই যাঁহার নামের স্মরণ হয়, যাঁহার গর্ভে জ্যোতিষ্কমণ্ডলী স্থান পাইয়াছে বলিয়া প্রত্যক্ষ, আমাকে তোমা হইতে বিমুখ করিও না- এইরূপ ভাবে যাঁহার উপাসনা বিধেয় সেই পরমাত্মার কোন প্রতিকৃতি বা মূর্তি নাই।

👉ঈশ্বরের অবতার হয় না[যজুর্বেদ ৩২।৩]।


👉শ্বেতাশ্বতর-৪/১৯:-এই ব্রহ্মকে কেউ উপর থেকে উপলব্ধি করতে পারে না, ব্রহ্মের  কোনো মূর্তি নেই।

👉ঈশ্বরের জন্ম হয় না, তাঁর কোন কর্ত্তা নেই (ব্রহ্মসূত্র ২/২/৩৯)

👉যজুর্বেদ ৫/৩৩ ঈশ্বর জন্মগ্রহণ করেন না 

👉স পর্য্যগাচ্ছুক্রমকায়ম ব্রনম স্নাবিরং শুদ্ধম্ পাপ বিদ্ধম কর্বিমনীষী পরিভূ স্বয়ম্ভূর্যাথা তথ্যতোহর্থানব্যদধাচ্ছা শ্বতীভ্যঃ সমাভ্যঃ।। (যজুর্বেদ ৪০/৮)

সরলার্থঃ পরমাত্মা সর্বব্যাপক, সর্বশক্তিমান, শরীর রহিত,রোগ রহিত,জন্ম রহিত,শুদ্ধ, নিষ্পাপ, সর্বজ্ঞ,অন্তর্যামী, দুষ্টের দমন কর্তা ও অনাদি।তিনি তাহার শাশ্বত প্রজা জীবের জন্য যথাযথ ফলের বিধান করেন।

👉শরীরধারী জীব ব্রহ্ম নয়। কারণ ব্রহ্মের গুণ-কর্ম-স্বভাব জীবে ঘটে না, ব্রহ্ম ব্যাপক জীব ব্যাপ্য তাই দুই এক নয়।
#যজুর্বেদ অধ্যায় ৪০, মন্ত্র ৯

👉যা চক্ষু দ্বারা দেখা যায়না, কিন্তু যার দ্বারা চক্ষু দেখতে পায়, তাকেই ব্রহ্ম বলে যান, তারই উপাসনা কর। আর যা ব্রহ্ম হতে ভিন্ন সূর্য-অগ্নি আদি জড় পদার্থ আছে, তাদের উপাসনা করো না।-কেন উপনিষদ ১/৬

👉মুণ্ডক-৩/১/৮ পরমাত্মা নিরাকার, তাই চোখ তাঁকে দেখতে পায় না এবং তিনি অতি নিকটে, তাই চোখ দেখতে পায় না। 

👉সেই ব্রহ্ম নিরাকার, নিরাকার এবং অসীম হয়েও অতীন্দ্রিয় [কেনউপনিষদ ১/৩]।

👉কেবল জগদীশ্বরের পূজা করা উচিৎ [সামবেদ ২০৩]

👉ব্রহ্মা ব্যতীত কোন ধর্ম নেই। প্রশ্ন-জড় পদার্থে যে জড়তা আছে তাও ব্রহ্মার কারণে [ব্রহ্মসূত্র 2/1/36]।


👉অর্থব্বেদ-৯/৫/১  মনুষ্য পরুষার্থ দ্বারা নিজের আত্মাকে অজ্ঞান হইতে সরিয়ে সচ্চিদানন্দ স্বরূপ পরমেশ্বরকে  উপভোগ করুন। 

অশরীরম্ শরীরেষ্বনবস্থেষ্ববস্থিতম্।
মহান্তম্ বিভূমাত্মানম্ মত্বা ধীরো ন শোচতি।।
👉 কঠোপনিষদ ১/২/২২
#ভাবার্থঃ যিনি অশরীর (শরীর রহিত) হয়েও শরীর ধারীদের মধ্যে বিদ্যমান, অস্থির পদার্থে যিনি স্থির রূপে বর্তমান, এই মহান পরমাত্মা কে জেনে জ্ঞানী পুরুষরা শোক রহিত হয়ে যায়।

👉পরমেশ্বর এর রূপ নেই তার একটা প্রমান দিলাম বেদ থেকে --
তং শগ্মাসো অরুষাসো অশ্বা বৃহস্পতি সহবাহো বহন্তি। সহশ্চিদ্যস্য নীডবৎসধস্থং ন রূপমরুষং বসানাঃ।। 
-(ঋক ৭/৯৭/৬)

পদার্থঃ- (তম্) সেই ( বৃহস্পতিম্) পরমাত্মা যে (সধস্থম্) জীবের অত্যান্ত সন্নিহিত ( নভঃ) এবং অাকাশের ন্যায় সর্বব্যাপক (ন,রূপম্) যাহার কোন রূপ নাই সেই ( অরুষম্) সর্বব্যাপক পরমাত্মাকে ( বসানাঃ) বিষয় করেই ( শগ্মাসঃ) অানন্দের অনুভবকারী ( অরুষাসঃ) পরমাত্মাপরায়ণ ( অশ্বাঃ) শীঘ্রগতিশীল ( সহবাহঃ) পরমাত্মায় জোড়নেবালী ইন্দ্রিয়বৃত্তি ( বহন্তি) সেই পরমাত্মাকে প্রাপ্ত করায়, যে পরমাত্মা ( সহঃ, চিত্) বলস্বরূপ এবং ( যস্য, নীডবত্) যাহার নীড় অর্থাৎ গৃহ সমান এই ব্রহ্মান্ড।।

ন তস্য প্রতিমা অস্তি য়স্য নাম মহদ্যশঃ।
হিরণ্যগর্ভ ইত্যেব মা মা হিংসীদিত্যেবা য়স্মান্ন জাত ইত্যের্ষঃ।। (যজু০ ৩২/৩)
পদার্থঃ (য়স্য) যাহার (মহত্) মহান (নাম) প্রসিদ্ধ (য়শঃ) যশ আছে, (তস্য) ওই পরমাত্মার কোন (প্রতি-মা) প্রতিমা অথবা উপমা (ন অস্তি) নেই। (হিরণ্য-গর্ভ ইতি এবঃ) 'হিরণ্যগর্ভ' আদি মন্ত্রের দ্বারা তথা, (মা মা হিংসীত্ ইতি এষা)
'মা মা হিসীত্' এই মন্ত্রদ্বারা, আর
(য়স্মাত্ ন জাতঃ ইতি এষঃ) 'য়স্মান্ন জাত' এই মন্ত্রদ্বারা তাহার বর্ণন হয়।।৩।।
ভাবার্থঃ উক্ত মন্ত্রের দ্বারা যাহার মহান প্রসিদ্ধ যশের গায়ন হয় ওই আত্মার কোন প্রতিমা অথবা উপমা হয় না।।৩।। ভাষ্যঃ পণ্ডিত দামোদর সাতবলেকর
আসুন অমরকোষ আর বৈদিককোষ প্রতিমা শব্দ নিয়ে কি বলে-
তাই আসুন (প্রতিমা) শব্দের অর্থ
(অমরকোষে ২/১০/৩৫)
প্রতিমানং প্রতিবিম্বং প্রতিমাপ্রতিয়াতনা প্রতিচ্ছায়া।।৩৫।।
প্রতিকৃতিরর্চা পুংসি প্রতিনিধি-
প্রতিমা অর্থাৎ ছবির নাম।।৮।।
১. প্রতিমান। ২. প্রতিবিম্ব। ৩. প্রতিমা। ৪. প্রতিছবি। ৫. প্রতিছায়া।।৩৫।।
৬. প্রতিকৃতি। ৭. অর্চা। ৮. প্রতিনিধি।
.................................................................................
আর ( বৈদিককোষ; পৃষ্টাঃ ৬৪১) দেখে আসি-
প্রতিমা প্রতিমীয়নোত পরিমীয়ন্তে সর্ব পদার্থা য়য়া সা
ভা০-পরিমাণসাধন পদার্থতোলনার্থম্ (বস্তু) ১৫ ৬৫
প্রতিমীয়তে য়য়া তৎপরিমাপক সদৃশ তোলনসাধন প্রতিকৃতিরাকৃতির্বা ৩২ ৩
প্রতিগোয়তে য়য়া ক্রিয়ায়া সা ১৪ ১৮
পরিমাণ, সাদৃস্য বা মূর্তি স০ প্র০ ৪৩২, ৩২ ৩
প্রতিনিধি প্রতিকৃতি, প্রতিমান তোলনসাধন, পরিমাণ, মূর্ত্যাদিকল্পনম্
ঋ০ ভূ০ ৩০০, ৩২ ৩, প্রতিমীয়তেহনয়া সা (য়য়া পরিমাণ ক্রিয়তো)
ঋ০ ভূ০ ১৪৭, ঋ০ ৮ ৭ ১৮০ ৩
................................................................................
অনেক নামের দ্বারা এক ঈশ্বরের বোধ হয়-
ইন্দ্রং মিত্রং বরুণমগ্নিমাহুরথো দিব্যঃ স সুপর্ণো গরুত্মান্।
একং সদ্বিপ্রা বহুধা বদন্ত্যগ্নিং য়মং মাতরিশ্বানমাহুঃ।।
(ঋ০ ১।১৬৪।৪৬; অথর্ব০ ৯।১০।২৮; নিরু০ ৭।১৮, ১৪।১; ঋগ্বেধা০ ১।২৫।৭; বৃহদেবতা ৪।৪২)
'একই সৎ স্বরূপ পরমাত্মাকে জ্ঞানীলোক অনেক প্রকারে ডেকে থাকেন। ইন্দ্র, মিত্র, বরুণ, অগ্নি, দিব্য, সুপর্ণ, উরুত্মান, সৎ, যম, মাতরিশ্বা আদি নামের দ্বারা একই পরমাত্মার বর্ণন করেন।'
অথর্ববেদে ঈশ্বরের একত্বার নিশ্চয়তা-
'সে দ্বিতীয়, তৃতীয়, চতুর্থ, পঞ্চাম, ষষ্ঠ, সপ্তম, অষ্টম, নবম, দশম আদি অনন্ত সংখ্যা দ্বারা বলা হয়নি। এই সম্পূর্ণ জগত তাহাতে নিঃশেষ হয়ে যায়। অর্থাৎ তাহার মধ্যে। সে সহন শক্তিদ্বারা যুক্ত অর্থাৎ অত্যন্ত বলবান। সে একই। কেবল একই। নিশ্চয়ই একই। সব তেজস্বী পদার্থ ইহাতে কেবল এক বানিয়ে রাখে।' (অথর্ব০ ১৩।৪।১৬-২১)
বৈ-মানরস্য প্রতিমোপরি দ্যোর্য়াবদ্রোদসী বিবাদে অগ্নিঃ।
(অথর্বঃ ৮।৯।৬)
' (বৈশ্বা-নরস্য) বিশ্বের নেতা ঈশ্বরের
(প্রতিমা) প্রতিমা এমনই হয়, যে (য়াবত্ দ্যোঃ) তেমন দ্যুলোকে উপরে থাকে, যেমন (রোদসী) উপরে নিয়ে আর নিম্নস্থ আকাশে (অগ্নিঃ) অগ্নিই (বি-ববাধে) অন্তর বানায়।' যথা-
য়স্মান্ন ঋতে বিজয়ন্তে জনাসো য়ং য়ুদ্ধয়মানা অবসে হবন্তে।।
য়ো বিশ্বস্য প্রতিমানং বভূব য়ো অচ্যুতচ্যুত্ স জনাস ইন্দ্রঃ।।
(ঋ০ ২।১২।৯; অথর্ব০ ২০।৩৪।৯)
'হে (জনাসঃ) মনুষ্য ! (য়স্মাত্ ঋতে) যাহাকে ছেড়ে (জনাসঃ) মনুষ্য (ন বিজয়ন্তে) বিজয়কে প্রাপ্ত হতে পারে না, আর (য়ুদ্ধমানাঃ) লড়াইকারী (অবসে)
রক্ষণের জন্য (য়ং হবন্তে) যাহার প্রার্থনা করতে হয়। আর যে (প্রতিমানম্) বিশ্বের প্রতিমা (বভূব) হয় আর যে (অচ্যুত-চ্যুত্) স্বয়ং না নড়াচড়া করে আর অন্যকে নাড়ায় (স ইন্দ্রঃ) সে ইন্দ্র অর্থাৎ সব জগতের এক রাজা।' ভাষ্যঃ পণ্ডিত দামোদর সাতবলেকর
এই দুই মন্ত্রে জগতের বরাবর ওই পরমাত্মার প্রতিমা, এরূপ বলেছে।
এই আকাশ অনন্ত। যে প্রকার আকাশের কোন সীমা নেই ওই প্রকার পরমেশ্বরেরও কোন অন্ত নেই। এই কথা উক্ত দুই মন্ত্রে বলা হয়েছে।
এখন আসি যজুর্বেদের নিম্ন মন্ত্র-
ও৩ম্ খং ব্রহ্ম।। (যজু০ ৪০। ১৭)
' (ও৩ম্ ব্রহ্ম) সবার রক্ষাকারী ব্রহ্ম (খং) আকাশের সমান ব্যাপ্ত।'
এই মন্ত্রের ভাব উক্ত অর্থের দুই মন্ত্রের সমান।
তাই আরো দেখুন-
ত্বং ভুবঃ প্রতিমানং পৃথিব্যাঃ।। (ঋ০ ১।৫২।১৩)
'তুমি পৃথিবী থেকে উল্টো প্রমাণ রাখেন।' অর্থাৎ পৃথিবী ছোট আর তুমি মহান। যথা-
সূ ভূমিং বিশ্বতো বৃত্বাহত্যতিষ্ঠদ্দশাংগুলম্।
( ঋ০ ১০।৯০।১; আরণ্য স০ ৪।২; অথর্ব০ ১৯।৬।১; যজু০ ৩১।১; তৈ০ আরণ্য০ ৩।১২।১)
'সে পরমাত্মা পৃথিবীকে (বিশ্বতঃ) চারিদিক থেকে (বৃত্বা) ঘিরে
(দশাংগুলং) দশ আঙ্গুলের সমান ছোট বিশ্বকে (অতি অতিষ্ঠত্) বিশ্বের বাহিরেও আছে অথবা বিশ্বের উপর শাসন করেন।'
এই মন্ত্রে উক্ত আশায় অনেক স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে। তথা আরো মন্ত্র দেখুন-
ন হীন্বমস্য প্রতিমানস্যত্যন্তর্জাতেষূত য়ে জনিত্বাঃ। (ঋ০ ৪।১৮।৪)
' (অস্য ন) নিশ্চয়ই ইহার (জাতেষু অন্তঃ) বানানো পদার্থের অন্তর (উত) আর (য়ে জনিত্বাঃ) যে বানানোকারী হয় তাহার মধ্যে কোন (প্রতিমানম্) তুলনা, প্রতিমা
(ন অস্তি) হয় না।, যথা-
এই প্রকার প্রতিমা আর প্রতিমান শব্দের প্রয়োগ বেদ মন্ত্রে এসেছে, ইহার নিম্ন লিখিত অর্থ-'প্রতি-মা' র অর্থ-বানানোকারী প্রতিমা, সাদৃশ্য, উপমা, প্রতিবিম্ব, মাপ, তোলা, বিস্তার, বরাবর, 'প্রতি-মান' এর অর্থ-নমুনা সাদৃশ্য, তোলা, ওজন, মাপ, প্রতিবিম্ব, বিপরীত, শত্রু এই বিবিধ অর্থ দেখে তথা মন্ত্রের সংবন্ধ দেখে, উক্ত মন্ত্রের অর্থ বিচার করা উচিত।
কিং সময় ঋধক্ কৃণবদ্ য়ংসহপ্রে মাসো জভার শরদশ্চ পূর্বীঃ।
নহী ধ্বস্ত প্রতিমানমত্ত্য ন্তর্জাতেষূতে য়ে জনিত্বা।।৪।।
প্র তুবিদ্যুম্নস্য স্থবিরস্য ঘৃষ্বের্দিবো ররপ্শে মহিমা পৃথিব্যাঃ।
নাস্য শত্রুর্ন প্রতিমাননস্তি ন প্রতিষ্ঠিঃ পুরুমায়স্য সহ্যোঃ।।১২।।
(ঋ০ ৪/১৮/৪; ৬।১৮।১২)
পদার্থঃ (য়) যাহার (সহস্রং মাসঃ পূর্বী শরদঃ চ) হাজার মাসের আর অনেক বর্ষ পর্যন্ত (জভার) ভরণপোষণ করেন, (সঃ) সে
(ঋধক্ কিং কৃণবত্) বিরুদ্ধ কর্ম কে করবে?
(য়ে জনিত্বাঃ) যে উৎপন্নকারী তাহার আর (গাতেষু) উৎপন্ন হওয়ার (অন্তঃ) মাধ্যমে (অস্য প্রতিমানম্ নহি) এই ইন্দ্রের কোন উপমা নেই।।৪।।
ভাবার্থঃ যাহার অনেক মাসের আর বর্ষ পর্যন্ত ভরণপোষণ করেন, সে নিজের পোষণকরীর কোন কার্য কে করবে? অর্থাৎ কেউ করবে না। উৎপন্নকারী আর উৎপন্ন হওয়ার মধ্যে এই ইন্দ্রের সমান কেউ নেই।।৪।।
পদার্থঃ (তুবি-দ্যু-ম্নস্য) অত্যন্ত তেজস্বী (স্থবিরস্যা) স্থির আর (ঘৃষ্বেঃ) দুষ্টতাকে চূর্ণকারী ঈশ্বরের (মহিমা)
মহত্তা দ্যুলোক আর পৃথিবীর মর্যাদার থেকেও বাহিরে (ররশ্পে) বিস্তার। (ন অস্য শত্রুঃ) এই ঈশ্বরের কোন শত্রু নেই (ন অস্য প্রতিমানম্) না ইহার কোন প্রতিমা আছে। (পুরু-মায়স্য) অনন্ত জ্ঞানবান
(সহ্যোঃ) আর সহন শক্তিবান বলবান ঈশ্বরকে ছেড়ে আর (প্রতিষ্ঠিঃ) আশ্রয় হয় না। অর্থাৎ সেই এক সবার আশ্রয়।।১২।।
ভাবার্থঃ তেজস্বী শ্রেষ্ঠ শত্রুনাশক বীরের মহিমা পৃথিবী থেকে আর দ্যুলোক থেকেও মহান। অনেক প্রজ্ঞাবান আর শত্রুনাশক বীরের কোন শত্রু হয় না। অধিক কুশল আর শান্তি, সুখ, দানকারী বীরের জন্য তুলনা হয় না।।১২।।
ভাষ্যঃ পণ্ডিত দামোদর সাতবলেকর
এখন আসি প্রতিমানম্ শব্দের কি অর্থ করেছেন বৈদিককোষ
বৈদিককোষ প্রতিমানম্; পৃষ্টা ৬৪১।
পরিমাণসাধনানম্ ৪ ১৮ ৪ সাদৃশ্য পরিগান বা ১ ৩২ ৩ রামন্তাত্ প্রতিমীয়তে
পরিণীয়তে প্রতিক্রিয়তে গেন তত্ (স্ব-সুখমন্তরিক্ষ বা) ১ ৫২ ১২
প্রতিমীয়তে য়ত্ (জগত্) ১ ১০২ ৮ অতিসমর্থানামুপমা ১ ১০২ ৬
পরিমাণসাধক (ইন্দ্র=পরমেশ্বরী বিদ্যুদ্বা) ২ ১২.৯
পরিমাণসাধকম্ (জ্ঞানম্) ৩ ৩১ ৮ প্রতিমান অর্থাৎ পরিমাণের কর্তা (ঈশ্বর) আর্যাভি০ ১ ১৩,
ঋ০ ১ ৪.১৪ ১২, [প্রতি+মাঙ্মানে (জু০) ধাতো করণে ল্যুট্]
তাই সামবেদও ঘোষণা করছেন-
মা চিদন্যদ্ বি শংসত সখায়ো মা রিষণ্যত।
ইন্দ্রমিত্স্তোতা বৃষণং সাচ সুতে মুহুরুক্থা চ শংসত।।১০।।
সামবেদ ২৪২
পদার্থঃ হে (সখায়ঃ) মিত্র! তুমি (অন্যত্) দ্বিতীয় কোন বস্তু পাথরের মূর্তি, নদী, পর্বত ইদিকে (মা চিত্) না কখনো (বি শংসত) উপাস্য রূপে পূজা করো, (মা রিষণ্যত) যে উপাসনীয় নয় তাহার উপাসনা করে হানি প্রাপ্ত করো না। (সুতে) জ্ঞান, কর্ম আর ভক্তির রস নিষ্পাদিত হয়ে (সচা) সাথে মিলে (বৃষণম্) সুখবর্ধক (ইন্দ্রম্ ইত্) পরমেশ্বরেরই (স্তোত) স্তুতি-উপাসনা করো আর (শংসত) গান করো।।১০।।
ভাবার্থঃ পরিবার, সমাজ, রাষ্ট্র আর জগতে যে সম্মানের যোগ্য তাহাকে সম্মান তো করাই উচিত, কিন্তু তাহাদের মধ্য থেকে কাউকে পরমেশ্বরের রূপে পূজা করা উচিত নয়, না নদী, বৃক্ষ, পর্বত আদি জড় পদার্থকে পূজা করা উচিত নয়। ইন্দ্র আদি নামের দ্বারা বেদের মধ্যে প্রসিদ্ধ সুখবর্ষী এক জগদীশ্বরই পুনঃ-পুনঃ স্তুতি, প্রার্থনা, অর্চনা আর উপাসনা করার যোগ্য।।১০।।
ভাষ্যঃ আচার্য ড. রামনাথ বেদালঙ্কার বিদ্যামার্তণ্ড


#ভগবতপুরান ১০/৮৪/১৩ (কাঠ মাটি পাথরে ভক্তি রাখলে পশু)

#ব্রহ্মবৈ পুঃ ৮৮/২৮ (গোপীদের স্তনে পা ঘষা)

#ব্রহ্মঃ পুঃ ৭২/৫৯-৬৬ কৃষ্ণের কুব্জাকে ধর্ষণ করে মেরে দেওয়া

#ভাগবত পুঃ ১০/২৯-৪৩-৪৮ কৃষ্ণ গোপিদের সাথে কামক্রিড়া

#ভাগবত পুঃ ১০/৮২/১৬ (নারীরা একে অপর কে আলিঙ্গন ও মিলিত হওয়া)

#ভবিষ্যপুরাণ প্রতিসর্গপর্ব ৪/১৭/৬৭-৭৫ (শিবলিঙ্গমাহাত্ব্য অনুসূআকে শিবের ধর্ষণ )

#ভাগবত ৩/২০/২৩ ব্রহ্মার পঁদ দিয়ে অসুরের জন্ম

#ভাগবত পুঃ ৮/১২-৩২-৩৩ শিবের বির্ষপাতে সোনার খনি

#ব্রহ্ম বৈ পুঃ কৃষ্ণ জন্ম খন্ড ৩ (কৃষ্ণ লম্পট)

#ব্রঃ বৈঃ পুঃ প্রকৃতিখন্ড ৫৪ অধ্যায় ৪৫-৪৯ নং শ্লোক (ব্রাহ্মনদের গরু খাওয়া)

#ভবিষ্যঃ পুঃ ব্রহ্মপর্ব ২৫ অধ্যায় ৪-১০ নং শ্লোক (লিঙ্গের অগ্রভাগ উচু ও সিগ্ধ হলে স্ত্রীর প্রিয় হয় ও ধর রক্ষা হয়)

# ভবিষ্যঃ পুঃ ২৫/২ (লিঙ্গের শিরা মোটা হলে সে দারিদ্র হয়)।


গীতা ২/২৭ যার জন্ম আছে তার মৃত্যুও আছে..

গীতা ৪/৫ এবং ৪/৬ আমার বহু জন্ম অতিত হয়েছে

গীতা ১৭/১৮-১৯ তামসীক পূজা

গীতা ১৭/২৩-২৪ ও৩ম্ তৎ সৎ ব্রহ্মের নাম

গীতা ৩/১৫ বেদ পরমেশ্বর থেকে প্রকাশিত

গীতা ১৮/৪৬ কৃষ্ণ নিজেই আবার ঈশ্বররের কথা বলেছেন..

গীতা ১৮/৬২ তাঁর কৃপায় পরমগতি লাভ করবে.. কার কৃপায় ?

তাঁর শরনাগত হও কার..?

"শূদ্রো ব্রাহ্মণতামেতি ব্ৰাহ্মণশ্চৈতি শূদ্ৰতাম্ ।
ক্ষত্রিয়াজ্জাতমেবস্তু বিদ্যাৎ বৈশ্যাওথৈব চ।।"
(মনুসংহিতা ১০/৬৫)
অর্থাৎ শূদ্র ব্রাহ্মণ হয়, ব্রাহ্মণ শূদ্র হয়। ক্ষত্রিয় থেকে বৈশ্য এবং বৈশ্য থেকেও শূদ্র হয়।
"য়স্ত শূদ্রো দমে সত্যে ধর্ম্মে চ মততোখিতাঃ ।
তং ব্রাহ্মণমহং মন্যে বৃত্তেণ হি ভবদ্ দ্বিজঃ।।"
(মহাঃ বনঃ অঃ ২১৫।১৩)

অর্থাৎ - যে শূদ্র দম, সত্য ও ধর্মে সর্বদা উন্নতি করে তাকে আমি ব্রাহ্মণ মানি কেননা আচার থেকে দ্বিজ হয়।
জন্ম থেকে সকলেই শূদ্র, সংস্কারের মাধ্যমে দ্বিজ-আখ্যা লাভ করে,বেদপাঠীকে বিপ্র এবং ব্রহ্মকে যে জানে তাকে ব্রাহ্মণ বলা হয়।

"বাহুবৈ বলং বাহুবৈ বীর্য্যম্"(শতপথ ব্রাহ্মণ 6/3/2/35)। বল বীর্যের নাম বাহু।

কঠ উপনিষদের ঋষি বলেছেন -
"অণোরণীয়ান্ মহতো মহীয়ান্"
(কঠ০ উপ০ ২|২০)
অর্থাৎ - সেই পরমাত্মা হলেন সূক্ষ্ম থেকে সূক্ষ্ম আর মহান থেকে মহান্। এই কারণে তিনি হচ্ছেন সর্বব্যাপক।

য়জুর্বেদ বলছে -
ইশাবাস্যমিদ্ঁ সর্বম্ য়ত্কিঞ্চ জগত্যাম্ জগত্"
(য়জু০ ৪০|১)

অর্থাৎ - সেই ঈশ্বর এই সম্পূর্ণ জগতের মধ্যে ব্যাপ্ত হয়ে তাকে আচ্ছাদিত করে আছেন। এইভাবে সেই ঈশ্বর সর্বব্যাপক সিদ্ধ হল। সেটা একদেশী কখনও হতে পারবে না।

ঊর্জা ও বলের মতো গুণ কোনো সাকার পদার্থের মধ্যেই হয় না। এই সংসারে সাকার পদার্থের মধ্যে যেসব বল বা ঊর্জা দেখা যায়, তা আসলে সেই সাকার পদার্থের ভিতর বিদ্যমান অন্য নিরাকার পদার্থেরই হয়। বিভিন্ন বিশাল বা লঘু যন্ত্রের মধ্যে বিদ্যুৎ, যা নিরাকারই হয়, আদির বল বিদ্যমান থাকে। প্রাণীদের শরীরের মধ্যে চেতন জীবাত্মারও বল কাজ করে। নিরাকার বিদ্যুৎ আদি পদার্থের মধ্যে চেতন পরম তত্ত্ব ঈশ্বরের বল কাজ করে, এটা আমি পূর্বেই বলেছি। যে ঈশ্বর তত্ত্ব প্রত্যেক সূক্ষ্ম ও স্থূল পদার্থের মধ্যে ব্যাপ্ত হয়ে তাদের বল ও ঊর্জা প্রদান করছে, সেটা কেবল নিরাকারই হতে পারে, সাকার কখনও নয়।

•••পঞ্চাবয়ব দ্বারা ঈশ্বরের সিদ্ধি•••

মহর্ষি গৌতম কোনো সিদ্ধান্তের (Theory) নিরূপণের উপায়ে পাঁচটা অবয়ব বলেছেন -

"প্রতিজ্ঞাহেতূদাহরণোপনয়নিগমনান্যাবয়বাঃ"
(ন্যায়দর্শন 1.1.32)
অর্থাৎ - এই পাঁচটা অবয়ব হল এইরকম -

(১) প্রতিজ্ঞা= গতি হল অনিত্য।
(২) হেতু= কারণ আমরা এটাকে উৎপন্ন ও নষ্ট হতে দেখি।
(৩) উদাহরণ= যেরকম সংসারের মধ্যে জড় পদার্থ বা চেতন প্রাণীদের দ্বারা নানা প্রকারের গতি উৎপন্ন হতে দেখা যায়, তার সঙ্গে সেই গতির বিরামও চেতন দ্বারা হতে দেখা যায়।
(৪) উপনয়= সেই ভাবে অন্য গতিও হল অনিত্য।
(৫) নিগমন= সব দৃষ্ট বা অদৃষ্ট গতি হল অনিত্য।

গতির অনিত্যতার সিদ্ধির সঙ্গে এই প্রকার গতির পিছনে চেতন কর্তার অস্তিত্বের সিদ্ধি করে -

(১) প্রতিজ্ঞা= গতি মূলত চেতনের বল দ্বারা উৎপন্ন ও নিয়ন্ত্রিত হয়।
(২) হেতু= আমরা জগতের মধ্যে বিভিন্ন গতিকে বিভিন্ন প্রাণীর দ্বারা উৎপন্ন ও নিয়ন্ত্রিত হতে দেখি।
(৩) উদাহরণ= যেরকম আমরা স্বয়ং নানা গতিকে উৎপন্ন ও নিয়ন্ত্রণ করে থাকি।
(৪) উপনয়= সেইভাবে অন্য গতি, যাদের কোনো প্রেরক ও নিয়ন্ত্রক সাক্ষাৎ দেখা যায় না, সেগুলোও কোনো অদৃষ্ট চেতন তত্ত্ব (ঈশ্বর আদি) দ্বারা নিয়ন্ত্রিত ও প্রেরিত হয়।
(৫) নিগমন= সব প্রকারের গতিকে উৎপন্ন, প্রেরিত ও নিয়ন্ত্রণকারী কোনো না কোনো চেতন তত্ত্ব (ঈশ্বর অথবা জীব) অবশ্যই হয় অর্থাৎ বিনা চেতন গতি উৎপন্ন, নিয়ন্ত্রিত ও সঞ্চালিত হতে পারবে না।

এই ভাবে বলের বিষয়ে বিচার করা যাক -

(১) প্রতিজ্ঞা= প্রত্যেক বলের পিছনে চেতন তত্ত্বের ভূমিকা আছে।
(২) হেতু= কারণ আমরা চেতন প্রাণীর মধ্যে বলের উপস্থিতি দেখি।
(৩) উদাহরণ= যেরকম সংসারের মধ্যে আমরা নানা ক্রিয়ার মধ্যে নিজের বলের ব্যবহার করে থাকি।
(৪) উপনয়= সেইভাবে সৃষ্টির মধ্যে যে বিভিন্ন প্রকারের বল দেখা যায়, সেইসবের মধ্যে কোনো অদৃষ্ট চেতনের ভূমিকা থাকে।
(৫) নিগমন= প্রত্যেক বলের পিছনে কোনো না কোনো চেতনের (ঈশ্বর অথবা জীব) মূল ভূমিকা অবশ্যই থাকে কিংবা সেই বল ওই চেতনেরই হয়। জড় পদার্থের মধ্যে নিজের কোনো বল থাকে না।

এখন বুদ্ধিগম্য কাজের মধ্যে চেতন তত্ত্বের ভূমিকার উপর বিচার করা যাক -

(১) প্রতিজ্ঞা= প্রত্যেক বুদ্ধিগম্য, ব্যবস্থিত রচনার পিছনে চেতন তত্ত্বের ভূমিকা থাকে।
(২) হেতু= কারণ আমরা চেতন প্রাণীদের দ্বারা বুদ্ধিগম্য কাজ করতে দেখি।
(৩) উদাহরণ= যেরকম আমরা আমাদের বুদ্ধির দ্বারা নানা প্রকারের কাজকে সিদ্ধ করি।
(৪) উপনয়= সেইভাবে সৃষ্টির মধ্যে বিভিন্ন বুদ্ধিগম্য রচনার পিছনে ঈশ্বর রূপী অদৃষ্ট চেতনের ভূমিকা থাকে।
(৫) নিগমন= সবপ্রকারের বুদ্ধিগম্য রচনার কিংবা সম্পূর্ণ সৃষ্টির প্রত্যেক ক্রিয়ার পিছনে চেতন তত্ত্বের অনিবার্য ভূমিকা থাকে।

এইভাবে সংযোগজন্য পদার্থের অনাদি ও অনন্ত না হওয়ার সঙ্গে-সঙ্গে বিভিন্ন গতি, বল ও বুদ্ধিমত্তাপূর্ণ রচনার পিছনে চেতন তত্ত্বের অনিবার্য ভূমিকা থাকে। কিছু কাজের মধ্যে জীব রূপী চেতনের ভূমিকা থাকে। এই কারণে মহর্ষি বেদব্যাস জী লিখেছেন "সা চ প্রশাসনাত্" (ব্র০সূ০ 1.3.11) অর্থাৎ এই সম্পূর্ণ সৃষ্টির নানা ক্রিয়াগুলো সেই ব্রহ্মের প্রশাসন দ্বারাই সম্পন্ন হয়।

No comments:

Post a Comment

ধন্যবাদ

বৈশিষ্ট্যযুক্ত পোস্ট

যজুর্বেদ অধ্যায় ১২

  ॥ ও৩ম্ ॥ অথ দ্বাদশাऽধ্যায়ারম্ভঃ ও৩ম্ বিশ্বা॑নি দেব সবিতর্দুরি॒তানি॒ পরা॑ সুব । য়দ্ভ॒দ্রং তন্ন॒ऽআ সু॑ব ॥ য়জুঃ৩০.৩ ॥ তত্রাদৌ বিদ্বদ্গুণানাহ ...

Post Top Ad

ধন্যবাদ