শ্রাদ্ধকর্ম - ধর্ম্মতত্ত্ব

ধর্ম্মতত্ত্ব

ধর্ম বিষয়ে জ্ঞান, ধর্ম গ্রন্থ কি , হিন্দু মুসলমান সম্প্রদায়, ইসলাম খ্রীষ্ট মত বিষয়ে তত্ত্ব ও সনাতন ধর্ম নিয়ে আলোচনা

धर्म मानव मात्र का एक है, मानवों के धर्म अलग अलग नहीं होते-Theology

সাম্প্রতিক প্রবন্ধ

Post Top Ad

স্বাগতম

21 November, 2021

শ্রাদ্ধকর্ম

 বৈদিক অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া শ্রাদ্ধকর্ম ক্রিয়াযোগ 

অন্ত + ইষ্টি = অন্ত্যেষ্টি ; "অন্ত" মানে শেষ  ; "ইষ্টি" মানে যজ্ঞ বা শুভ কর্ম , অর্থাৎ "অন্ত্যেষ্টি" হলো জীবনের "শেষ যজ্ঞ" । মানব জীবনের ষোড়শ সংস্কারের মধ্যে অন্তিম সংস্কার হল অন্ত্যেষ্টি ক্রিয়া ।

কোনো মানুষ মারা গেলে আমরা যখন তাঁর মৃতদেহকে সৎকার করি , সেটাকে শাস্ত্রীয় ভাষায় 'অন্ত্যেষ্টি ক্রিয়া' বলে । মানব জীবনের ষোড়শ সংস্কারের মধ্যে এটাই অন্তিম সংস্কার । এরপরে মৃত শরীরের জন্য আর অন্য কোনো কর্ম নেই । একেই আবার কেউ কেউ "নরমেধ"  "পুরুষযাগ" , "পুরুষমেধ" , "শেষযজ্ঞ" , "নরযাগ" সৎকার কর্ম বলে থাকেন ।

আবার মনুস্মৃতিতে ২/১৬ শ্লোকে বলছে -

"নিষেকাদিশ্মশানান্তো মন্ত্রৈর্যস্যোদিতো বিধিঃ"

অর্থঃ মানব শরীরের আরম্ভে ঋতু কর্ম এবং অন্তে শ্মশানে সৎকার , অন্তষ্টি , নরমেধ যজ্ঞ অর্থাৎ মৃতক কর্ম হয়ে থাকে ।

প্রাচীন দর্শন অনুযায়ী বিশ্বচরাচর তথা আমাদের দেহও পাঁচটি ভূত বা উপাদান দ্বারা তৈরি । একে 'পঞ্চভূত' বলে । এগুলো হলো - ক্ষিতি (মাটি) , অপ (জল) , তেজ (আগুন) , মরুৎ (বাতাস) , ব্যোম (আকাশ বা শূন্যস্থান) । তাই যারা বলেন 'মাটির দেহ' কিংবা দেহ শুধু মাটি দিয়ে তৈরি , তাই একে মাটির সাথেই মিশিয়ে দেয়া উচিৎ , তাদের এই ধারণা অবশ্যই ভুল । বাস্তবে দেহ পাঁচটি উপাদানের সমষ্টি ।

তাই শবদাহ করার মাধ্যমে এই মনুষ্য দেহকে ৫টি উপাদানেই মিশিয়ে দেয়া হয় । অনেক সময় আমরা একটা প্রচলিত কথা বলে থাকি যে - লোকটা তো মরে "ভূত" হয়ে গেছে । প্রকৃতপক্ষে "ভূত" বলতে পঞ্চভূতে লীন হওয়ার কথা বোঝানো হয়েছে । 

যজুর্বেদের ৪০/১৫ মন্ত্রে বলছে - "ভস্মান্তংSশরীরম" অর্থাৎ , "শরীর ভস্মেই অন্ত হয়"।

এই  মন্ত্র থেকে স্পষ্ট হয় যে - অন্তোষ্টিক্রিয়া ব্যতীত পৃথক কোনো কর্ম মৃতকের জন্য দ্বিতীয়বার কর্তব্য নয় ।

ক্রিয়াযোগ কিঃ-

মৃত ব্যক্তির আত্মার শান্তি ও সদ্গতি জন্য শ্রাদ্ধ ক্রিয়াযোগ করা হয়। হিন্দুধর্ম অনুসারে পারমার্থিক মাঙ্গলিক ক্রিয়া যোগকে বিবেচনা করা হয় এক একটা ব্রত হিসেবে। অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া ও শ্রাদ্ধ হল ব্যক্তির কল্যাণের উদ্দেশ্যে এক মাঙ্গলিক ক্রিয়া। 'অন্ত অর্থ শেষ এবং ইষ্টি অর্থ যজ্ঞ বা সংস্কার। জীবন শেষে কোন ব্যক্তির অন্তিম যজ্ঞ বা সংস্কারই হল অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া।

শ্রাদ্ধ কিঃ-

শ্রাদ্ধ হিন্দু শাস্ত্রানুযায়ী পিতৃপুরুষের আত্মার শান্তির উদ্দেশে এবং তাদের আশীর্বাদ কামনায় দান-ধ্যান ও অতিথিভোজন অনুষ্ঠান। সাধারণত মৃত ব্যক্তির সন্তান কিংবা আত্যীয়-স্বজনরা এ অনুষ্ঠান পালন করে থাকে।

শ্রাদ্ধের প্রকারভেদঃ-

শ্রাদ্ধ প্রধানত তিন প্রকারঃ- আদ্যশ্রাদ্ধ, আভু্যদয়িক বা বৃদ্ধিশ্রাদ্ধ ও সপিণ্ডীকরণ। আদ্যশ্রাদ্ধ অশৌচান্তে মৃত ব্যক্তির উদ্দেশে করণীয়। বর্ণভেদে ব্যক্তির মৃত্যুদিবসের ১১, ১৫ অথবা ৩০ দিন পরে এটি অনুষ্ঠিত হয়। মৃত ব্যক্তির পরিবারের লোকজন এ-কদিন ফলমূল, নিরামিষ এবং লবণ ছাড়া আতপ চালের ভাত খায়। শ্রাদ্ধের আগের দিন মৃত ব্যক্তির পুত্ররা মাথার চুল ফেলে দেয় এবং শাস্ত্রীয় নিয়ম-কানুনসমূহ পালন করে। শ্রাদ্ধের দিন সামর্থ্য অনুযায়ী আত্মীয়-স্বজনসহ পাড়া-প্রতিবেশীদের নিমন্ত্রণ করে খাওয়ায়। বর্তমানে আর্থ-সামাজিক পরিবর্তনের কারণে সেই মানসিকতার পরিবর্তন ঘটেছে। শ্রাদ্ধ উপলক্ষে ব্রাহ্মণ ও আত্মীয়-স্বজনদের নানারকম দান-ধ্যানও করা হয়।

উপনয়ন, বিবাহ ইত্যাদি শুভ কাজের পূর্বে পিতৃপুরুষের আশীর্বাদ কামনায় যে শ্রাদ্ধ করা হয়, তার নাম আভু্যদয়িক বা বৃদ্ধিশ্রাদ্ধ। আর সপিণ্ডীকরণ শ্রাদ্ধ হলো যা ব্যক্তির মৃত্যুর এক বছর পরে করা হয়। এ তিনটি ছাড়া আরও কয়েক প্রকার শ্রাদ্ধ আছে। যেমন, মহালয়া প্রভৃতি বিশেষ হিন্দু আচার উপলক্ষে এবং বিশেষ তিথিতে কারও মৃত্যু হলে তার উদ্দেশে যে শ্রাদ্ধ করা হয় তার নাম পার্বণশ্রাদ্ধ। পার্বণশ্রাদ্ধে সাধারণত পিতৃপক্ষের তিন পুরুষ ও মাতৃপক্ষের তিন পুরুষের উদ্দেশ্যে পিণ্ড দান করা হয়। এক সঙ্গে একজন মৃত ব্যক্তির উদ্দেশে যে শ্রাদ্ধ করা হয় তার নাম একোদ্দিষ্ট শ্রাদ্ধ। অম্বষ্টকা নামেও এক প্রকার শ্রাদ্ধ আছে; তবে এর প্রচলন কম। হিন্দুদের অন্যতম প্রধান তীর্থস্থান গয়ায় বিষ্ণুপাদপদ্ম শ্রাদ্ধ করা প্রশস্ত। অনেক ধনী ব্যক্তি পিতা-মাতার শ্রাদ্ধ গয়াধামে গিয়ে করে থাকেন। শ্রাদ্ধ বিষয়ে শূলপাণির শ্রাদ্ধবিবেক ও রঘুনন্দনের শ্রাদ্ধতত্ত্ব বঙ্গদেশে অতি প্রামাণ্য গ্রন্থরূপে বিবেচিত হয়।

শ্রাদ্ধের গুরুত্বঃ-

পিতৃপক্ষে পুত্র কর্তৃক শ্রাদ্ধানুষ্ঠান হিন্দুধর্মে অবশ্য করণীয় একটি অনুষ্ঠান। এই অনুষ্ঠানের ফলেই মৃতের আত্মা স্বর্গে প্রবেশাধিকার পান। এই প্রসঙ্গে গরুড় পুরাণ গ্রন্থে বলা হয়েছে, "পুত্র বিনা মুক্তি নাই। ধর্মগ্রন্থে গৃহস্থদের দেব, ভূত ও অতিথিদের সঙ্গে পিতৃতর্পণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। মার্কণ্ডেয় পুরাণ গ্রন্থে বলা হয়েছে, পিতৃগণ শ্রাদ্ধে তুষ্ট হলে স্বাস্থ্য, ধন, জ্ঞান ও দীর্ঘায়ু এবং পরিশেষে উত্তরপুরুষকে স্বর্গ ও মোক্ষ প্রদান করেন।

বাৎসরিক শ্রাদ্ধানুষ্ঠানে যাঁরা অপারগ, তাঁরা সর্বপিতৃ অমাবস্যা পালন করে পিতৃদায় থেকে মুক্ত হতে পারেন। শর্মার মতে, শ্রাদ্ধ বংশের প্রধান ধর্মানুষ্ঠান। এই অনুষ্ঠানে পূর্ববর্তী তিন পুরুষের উদ্দেশ্যে পিণ্ড ও জল প্রদান করা হয়, তাঁদের নাম উচ্চারণ করা হয় এবং গোত্রের পিতাকে স্মরণ করা হয়। এই কারণে একজন ব্যক্তির পক্ষে বংশের ছয় প্রজন্মের নাম স্মরণ রাখা সম্ভব হয় এবং এর ফলে বংশের বন্ধন দৃঢ় হয়। ড্রেক্সেল বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরাতাত্ত্বিক উষা মেননের মতেও, পিতৃপক্ষ বংশের বিভিন্ন প্রজন্মের মধ্যে সম্পর্ককে সুদৃঢ় করে। এই পক্ষে বংশের বর্তমান প্রজন্ম পূর্বপুরুষের নাম স্মরণ করে তাঁদের শ্রদ্ধা নিবেদন করে। পিতৃপুরুষের ঋণ হিন্দুধর্মে পিতৃমাতৃঋণ অথবা গুরুঋণের সমান গুরুত্বপূর্ণ।

কিংবদন্তিঃ-

হিন্দু পুরাণ অনুযায়ী, জীবিত ব্যক্তির পূর্বের তিন পুরুষ পর্যন্ত পিতৃলোকে বাস করেন। এই লোক স্বর্গ ও মর্ত্যের মাঝামাঝি স্থানে অবস্থিত। পিতৃলোকের শাসক মৃত্যুদেবতা যম। তিনিই সদ্যমৃত ব্যক্তির আত্মাকে মর্ত্য থেকে পিতৃলোকে নিয়ে যান। পরবর্তী প্রজন্মের একজনের মৃত্যু হলে পূর্ববর্তী প্রজন্মের একজন পিতৃলোক ছেড়ে স্বর্গে গমন করেন এবং পরমাত্মায় (ঈশ্বর) লীন হন এবং এই প্রক্রিয়ায় তিনি শ্রাদ্ধানুষ্ঠানের উর্ধ্বে উঠে যান। এই কারণে, কেবলমাত্র জীবিত ব্যক্তির পূর্ববর্তী তিন প্রজন্মেরই শ্রাদ্ধানুষ্ঠান হয়ে থাকে। এবং এই শ্রাদ্ধানুষ্ঠানে যম একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।

হিন্দু মহাকাব্য (যা হিন্দু শাস্ত্রের মধ্যে ইতিহাস নামে পরিচিত) অনুযায়ী, সূর্য কন্যারাশিতে প্রবেশ করলে পিতৃপক্ষ সূচিত হয়। লোকবিশ্বাস অনুযায়ী, এই সময় পূর্বপুরুষগণ পিতৃলোক পরিত্যাগ করে তাঁদের উত্তরপুরুষদের গৃহে অবস্থান করেন। এর পর সূর্য বৃশ্চিক রাশিতে প্রবেশ করলে, তাঁরা পুনরায় পিতৃলোকে ফিরে যান। পিতৃগণের অবস্থানের প্রথম পক্ষে হিন্দুদের পিতৃপুরুষগণের উদ্দেশ্যে তর্পণাদি করতে হয়।

মহালয়া পক্ষের পনেরোটি তিথির নাম হল প্রতিপদ, দ্বিতীয়া, তৃতীয়া, চতুর্থী, পঞ্চমী, ষষ্ঠী, সপ্তমী, অষ্টমী, নবমী, দশমী, একাদশী, দ্বাদশী, ত্রয়োদশী, চতুর্দশী ও অমাবস্যা। হিন্দু বিশ্বাস অনুযায়ী, যে ব্যক্তি তর্পণে ইচ্ছুক হন, তাঁকে তাঁর পিতার মৃত্যুর তিথিতে তর্পণ করতে হয়।

হিন্দু সমাজের অন্যতম একটি আচার হল মৃত মানুষের শ্রাদ্ধকর্ম। প্রচলিত ধারনা অনুযায়ী 'পিতর' শব্দটি মৃত পিতা, মাতা, পিতামহ ও প্রপিতামহকে বোঝানো হয়। পৌরানিক ধারনা অনুযায়ী মৃত্যুর পর শ্রাদ্ধকর্ম করে পিতরদের খাদ্য দান করে তাদের তৃপ্ত করতে হয় এবং এতে পিতরদের পাপ ও মোচন হয়। 

পিতর শব্দের অর্থ কি?পিতর- পালনকর্তা (নিরুক্ত ৪.২১) এ বলা আছে।

পিতর- জ্ঞানীজন (ঋগবেদ ১০.১২.১২) ইত্যাদি।

শরীরকৃত প্রাণদাতা য়স্য চান্নানি ভূন্জতে।

ক্রমেণৈতে এয়োবপ্যুক্ত পিতরো ধর্ম ধর্ম শাসনে

(মহাভারত আদিপর্ব ৭২.১৫)

অনুবাদঃ- যে গর্ভধারনের দ্বারা শরীর নির্মান করে, যে অভয়দান করে প্রাণীদের রক্ষা করে, যার অন্ন ভোজন করা হয়, ধর্মশাস্ত্রে সেই জীব কে পিতর বলা হয়েছে।

জনিতা চোপনেতা চ য়স্ত বিদ্যাং প্রয়চ্ছন্তি।

অন্নদাতা ভয়ত্রাতা পঞ্চেতে পিতরঃস্মৃতাঃ।।

(চাণক্য ৫.২২)

অনুবাদঃ- পিতা-আচার্য, অধ্যাপক, অন্নদাতা এবং ভয় ত্রান কর্তা, এদেরকে পিতর বলে।

মানী বধী পিতরঃ মীত মাতরম্

(যজুর্বেদ ১৬.১৫)

অনুবাদঃ- আমাদের পিতা মাতেক বধ করো না। এখানে পিতর শব্দ জীবিত পিতা-মাতা অর্থে প্রয়োগ করা হয়েছে।

শতমিন্ত শরদো অগ্নিদেবা য়াত্র নশ্চক্রাজরসন্তনূনাম।

পুত্রাসোয়ত্র পিতরো ভবন্তি মানো মধ্যারোরিষতায়ুর্গন্তোঃ।।

অনুবাদঃ- পিতা মাতার বৃদ্ধ বয়সে যখন পুত্র পিতর হয়ে যাবে, তখন পর্যন্ত যেন তাদের আয়ু নাশ না হয়।

পুত্র পিতর হয়ে যাবে অর্থ হলঃ- পুত্র যখন 'পিতা' এর ন্যয় বা ভরনপোষনকারী হয়ে যাবে।

গৃহণাং হি পিতরঃ ঈশতে-অর্থাত্ বাড়ির স্বামীই (কর্তা) পিতর (শতপথ ব্রাহ্মন ২.৬.১.৪০)

দেবা বা এতে পিতরঃ- বিদ্বানেরাই পিতর (গোপথ ব্রাহ্মন ৩.১.২৪)

জ্যষ্ঠো ভ্রাতা পিতা বাপিয়শ্চ বিদ্যাং প্রয়চ্ছতি এয়স্তে পিতরোজ্ঞেয়ঃ ধর্মে চ পথিবর্তিনঃ।।

(বাল্মিকী রামায়ন)

ধর্ম পথে চলে এমন বড় ভাই, পিতা ও বিদ্যা প্রদান কর্তা, এই তিনকে পিতর বলা উচিত।

শ্রাদ্ধ শব্দের অর্থ "শ্রদ্ধা করা" যা জীবিত ব্যক্তি বা পিতরকে করা হয়, মৃত ব্যক্তিকে নয়। মৃত ব্যক্তির প্রতি স্বজনদের আবেগকে পূঁজি করে পুরোহিতদের অবৈধ অর্থ উপার্জনের পন্থা ই হল বর্তমান হিন্দু সমাজের শ্রাদ্ধকর্মের বাস্তবতা।

পিতা বা মাতার, পুত্র বা কন্যা মৃত্যুর পরে বৈদিক মতে কি করনীয় তা ও বলা হয়েছে।

বৈদিক অন্ত্যেষ্টিক্রিয়াঃ-বায়ুরনিলমম্রতামথেদম ভস্মান্তঃ শরীরম।

(যজুর্বেদ ৪০.১৫)ভাষ্য-মৃত্যুর পর শাস্ত্র সম্মত ভাবে পবিত্র বেদমন্ত্রে দাহ করাই প্রধান ধর্ম।

শরীরের অন্তিম সংস্কারকে অন্ত্যেষ্টি কর্ম বলে।ইহার পরে ঐ শরীরের জন্য আর কোনও সংস্কার নাই। ইহাকে নরমেধ, পুরুষমেধ,ব্যাগ ও পুরুষযাগও বলে।

ভস্মান্ত শরীরম্।। যজুর্বেদ-৪০।১৫ 

নিষেকাদিশ্মাশানান্তো মন্ত্রৈর্য়স্যোদিতো বিধিঃ।।মনু-২।১৬ 

মৃত্যুর সময় করনীয়ঃ- কোন ব্যক্তির মৃত্যুর সময় উপস্থিত হলে ঐ ব্যক্তিকে প্রান ত্যগের স্থান থেকে সরানো যাবে না। শান্ত ও স্থিরভাবে প্রানত্যগ করবে। মৃত্যুর সময় কানে কোন পৌরানিক নাম প্রদান, টানা হেচড়া করা, বুকের উপর কোন ধর্ম বই রাখা, চিত্কার করা, ঢোল, করতাল বা বাদ্যযন্ত্র বাজানো, নোংরা বিছানায় রাখা, কপালে বা শরীরে তিলক মাখানো কর্তব্য নহে। মৃত্যুর পর মৃত শরীরকে যত্নের সাথে একটি পরিস্কার স্থানে উত্তর দিকে মাথা ও দক্ষিন দিকে পদদ্বয় রেখে শুদ্ধ বিছানায় চিত করে শোয়াতে হবে। দুই চোখ, মুখ খোলা থাকলে বন্ধ করে দিতে হয়। দুই কান এবং দুই নাকের ছিদ্র তুলার সঙ্গে কর্পুর মিশিয়ে গুজে দিতে হয়। মৃত পুরুষকে পুরুষগন শুদ্ধ জলে স্নান করতে হয়। এবং মৃত মহিলাকে মহিলাগন স্নান করতে হয়। শুদ্ধ জলে নিম পাতা অথবা কুলপাতা মিশিয়ে জল ফুটিয়ে নিয়ে সেই জল কুসুম কুসুম গরম হলে সেই জল দ্বারা মৃতকের শরীর সাবান সহযোগে স্নান করাতে হয়। স্নান শেষে নতুন পরিস্কার বস্ত্র পড়াতে হয়। শশ্মানে নেয়ার আগে পরিবারের সবাই মৃত ব্যক্তির নিকট দাড়াবে এবং ঈশ্বরের উদ্দ্যেশ্যে প্রার্থনা করে বেদ মন্ত্রের শান্তি পাঠে করতে হয় এবং শান্তভাবে পবিত্র বেদের গায়ত্রী মন্ত্র অর্থসহ পড়তে পড়তে নীরবে মৃতকসহ চিতা এলাকায় যেতে হয়।

গ্রহনযোগ্য নয়ঃ-

শশ্মানে নেয়ার সময় ঢোল বাজানো, লম্ফ-ঝম্প, নিশান পোতা, খই বা পয়সা ছড়ানো, চিত্কার করা মোটেই গ্রহনযোগ্য নয়। চিতা এলাকায় বিড়ি, সিগারেট, গাজা, ভাং, মদ্যপান, মাদক গ্রহন, চিত্কার, কোলাহল, জোরেশোরে গান বাজনো করা যাবে না।

প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদিঃ- বেল, আম, ডুমুর, তেতুঁল, শমী, পলাশ প্রভৃতি মোটা শুকনা কাঠ যা মৃত ব্যক্তির ওজনের অন্তত ৭গুন। বেশিও দেয়া যেতে পারে। এছাড়া হোমযজ্ঞের জন্য প্রয়োজনীয় দ্রব্য যথা দুটি মাটির কলসি, একটি কোদাল, একটি কুড়াল, একটি দা, একটি প্রদীপ এবং সত্কার্যে চিতায় অগ্নি প্রবেশ করানোর জন্য পলতা, কর্পুর এবং পাঁচ থেকে পনের কেজি পর্যন্ত ধুপ বা ধুনা।

চিতায় অগ্নি প্রদান-

মুখাগ্নি করার সময় নিম্নোক্ত বেদ মন্ত্র পাঠ করা হয়-

"ওম্ কৃত্বা দুস্কৃতং কর্মং জানতা বাপ্যজানতা মৃত্যুকালবশং প্রাপ্য নবং পঞ্চত্বমাগতম।

দহেযং সর্বগাত্রানি দিব্যান্ লোকান্ স গচ্চতু।।"

অর্থাৎ কোনো ব্যক্তির মৃত্যুর পর তার আত্মার কল্যাণ কামনায় "দিব্যান্ লোকান্ স গচ্চতু" বলা উচিৎ।

স হল উভয়লিঙ্গ

সঃ হল পুংলিঙ্গ

সা হল স্ত্রীলিঙ্গ

প্রজ্জ্বলনের আগে মৃতদেহকে সাতবার প্রদক্ষিণ করে মুখাগ্নি করা হয়।

কার্পাস তুলা অথবা নতুন কাপড় দ্বারা পলতা তৈরী করে অথবা মশাল তৈরী করে ঘি এবং কর্পুর মিশিয়ে ঘৃতের প্রদীপ হতে অগ্নি গ্রহন করে মৃত ব্যক্তির মাথায় নিম্নভাগ হতে পদদ্বয়ের নিম্নভাগে নিম্নের মন্ত্রে আহুতি প্রদান করবে। সন্তান না থাকলে স্ত্রী, ভাই, বোন, নিজের বংশের লোক, শ্বশুরের বংশের লোক অথবা অন্য আত্মীয় চিতায় অগ্নি প্রদান করতে পারবে। যে কোন ভাবে মৃত ব্যক্তির (স্বাভাবিক মূত্যু, আত্মহত্যা, জলেডোবা, আগুনেপোড়া, দুর্ঘটনায় মৃত) অবশ্যই দাহ্য কার্য বা সত্কার হয়। একমাত্র গর্ভপাতকৃত সন্তান এবং ৩ বছর বয়স পর্যন্ত সন্তানকে মাটিতে প্রথিত করতে হবে। এর পর বেদমন্ত্রে আহুতি দেয়া শুরু করতে হয়। সত্কার বা দাহকার্যে অংশগ্রহনকারী ব্যক্তিগন স্নান করে শুদ্ধবস্ত্র পরে প্রয়োজনে আচমন করে পবিত্র ভাবে দাহ কার্যে অংশগ্রহন করবেন। দাহকার্য শেষে যদি শরীরে ময়লা লাগে তবে স্নান করতে হয় তবে অবশ্যই অশৌচ হয়েছে মনে করে স্নান করা যাবেনা। প্রানত্যগের স্থানে স্বস্তিবাচন, শান্তিপ্রকরন এবং হোমযজ্ঞ করতে হয়। মুখে অগ্নি প্রদান, উলঙ্গ করে দাহ করা। প্রতি মৃত্যুবার্ষীকিতে হোমযজ্ঞ, ধর্মানুষ্ঠান, অনাথ আশ্রমে দান, বিদ্যালয় বা ধর্মচর্চা কেন্দ্র স্থাপন ইত্যাদি করা যেতে পারে। সবসময় মনে রাখতে হবে যে মহাশত্রু হলেও মৃত ব্যক্তির সত্কারে সাহায্য করা উচিত।

বৃহদারন্যক উপনিষদ এ বলা হয়েছে-

এতদ বৈ পরমং তপো যত্

প্রেতমপ্লবভ্যা দধতি

(বৃহদারন্যক উপ. ৫.১১.১)

অর্থাৎ মৃতদেহ কাঁধে বহন করা এবং তা দাহ করা সর্বোচ্চ তপস্যা।

মহর্ষি গৌতম তাঁর ন্যয়সুত্রে

"শরীর দাহে পাতকাভাবাৎ"

"অর্থাৎ- মৃতদেহ দাহ করলে শরীরে কোন পাপ বা অশৌচ দোষ লাগেনা।"

(ন্যয়সুত্র ৩/১/৪)

বলে রাখা ভালো দাহ করে বা দাহস্থানে গিয়ে শরীরে ময়লা লাগে তাই স্নান করা উচিত। কিন্তু শরীর অপবিত্র হয়েছে ভেবে স্নান করা উচিত নয়।

দেখুন কেন এই অশৌচ মানা হয়ঃ—

অশৌচ হলো  সংস্কার অশৌচ শব্দের অর্থ হল শুচিতা বা পবিত্রতার অভাব। মাতা পিতা বা জ্ঞাতিবর্গের মৃত্যুতে হিন্দুরা অশৌচ করে৷ অর্থ্যৎ প্রিয়জনের মৃত্যুতে কঠোর ব্রহ্মচর্য পালন করে শ্রাদ্ধের উপযুক্ততা অর্জনই অশৌচ ৷ 

গচ্ছস্ব পিতৃভিঃ সং য়মেনেষ্টাপূর্ত্তেন পরমে ব্যোমন্। হিত্বায়াবদ্যং পুনরস্তমেহি সং গচ্ছস্ব তন্বা সুবর্চাঃ।"

ঋগবেদ ১০/১৪/৮ 

হে মৃত জীব! তুমি মুক্ত হইয়া পরমলোকে পিতৃপুরুষ, বিদ্বান মুক্তাত্মা ও পরমাত্মার সহিত মিলিত হও। মুক্তিকাল সমাপ্ত হইলে পাপ পরিত্যাগ করিয়া পুনরায় এই সংসারে আগমন করো এবং নতূন শরীরের সংযোগ লাভ কর।।

প্রেহি প্রেহি পথিভিঃ পূর্ব্যেভির্য়ত্রা নঃ পূর্বে পিতরঃ পরেয়ুঃ। 

উভা রাজানা স্বধয়া মদন্তা য়মং পশ্যাসি বরুণং চ দেবং।"

ঋগবেদ ১০.১৪.৭

সরলার্থ- হে মৃত জীব! যে পথে আমাদের পূজ্য পিতৃপুরুষগণ (বিদ্যান পুরুষেরা) গিয়েছেন, তুমিও সেই পথে গমন করো এবং গমন করে প্রসন্নভাবে মুক্ত জীবাত্মা ও ঈশ্বর উভয়কে দেখো।

সনাতনীদের গর্ভধারণ থেকে শ্মশান পর্যন্ত বৈদিক সংস্কার ১৬ টি। মহর্ষি মনু (মনুস্মৃতি ২/১৬) বেদ দ্বারা এই ১৬ সংস্কার (যজুর্বেদ ৮/৩৩) নির্দেশিত বলেছেন। এগুলোকে একত্রে ষোড়শ সংস্কার বলা হয়। একজন ব্যক্তির উত্তম পরিবার ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মের স্বার্থে বাধ্যতামূলকভাবে এই ষোড়শ সংস্কার পালন করা উচিত ।
👉 ১.গর্ভাধানঃ গর্ভধারণ অর্থাৎ গর্ভাশয়ে বীর্যস্থাপন-স্থিরীকরণ যে ক্রিয়া দ্বারা হয় তাহাকে গর্ভাধান বলে। যার বীজ ও ক্ষেত্র উত্তম তার যেমন উত্তম ফসল উৎপন্ন হয়, তেমনই বলবান স্ত্রী - পুরুষের সন্তানও উত্তম হয়। এজন্য পূর্ণ যৌবন অবধি ব্রহ্মচর্য পালনের পর সমাবর্তনের মাধ্যমে গৃহস্থ জীবনে প্রবেশের বিধান রয়েছে।
অথর্ববেদ (৬/৮১/২)
👉 ২. পুংসবনঃ পত্নী গর্ভবতী হয়েছেন জানার পর দ্বিতীয় বা তৃতীয় মাসে সুস্থ সন্তান কামনায় পুংসবন অনুষ্ঠানের আয়োজন করে যজ্ঞ করা হয়। এই অনুষ্ঠান মূলত গর্ভাবস্থায় প্রসূতির সুস্থতার জন্য এবং সন্তান ঠিকভাবে ভূমিষ্ঠ হবার জন্য করা হয়।
(অথর্ববেদ ৩/২৩/৬)
👉 ৩. সীমান্তোন্নয়নঃ এই সংস্কার দ্বারা গর্ভধারিণী স্ত্রীর মন আনন্দিত হয় এবং শরীর আরোগ্য লাভ করে। গর্ভমাস হতে চতুর্থ মাসে এ সংস্কার করতে হয়।
(ঋগ্বেদ ২/৩২/৪)
👉 ৪. জাতকর্মঃ সন্তান প্রসবের সময় মন্ত্র জপ; মন্ত্র উচ্চারণপূর্বক নাভিচ্ছেদন, শিশুর যত্ন বিষয়ক কর্মসমূহকে জাতকর্ম সংস্কার বলা হয়।
(ঋগ্বেদ ৫/৭৮/৯)
👉 ৫. নামকরণঃ সন্তান জন্ম হওয়ার একাদশ তম দিনে আত্মীয় পরিজন ও পরিবারের ব্যক্তিদের সঙ্গে করে সন্তানের নাম রাখার সংস্কারকে নামকরণ সংস্কার বলে।
(যজুর্বেদ ৭/২৯)
👉 ৬. নিষ্ক্রমণঃ ঘরের বাইরে শুদ্ধ বায়ুপূর্ণ স্থানে সন্তানকে ভ্রমণ করানোর সংস্কারকে নিষ্ক্রমণ বলে। যে সময় ভাল মনে হবে, সে সময়েই ভ্রমণ করানো যাবে। চতুর্থ মাসে বা এর পরে ভ্রমণ করাতে হবে।
(অথর্ববেদ ৮/২/১৪)
👉 ৭. অন্নপ্রাশনঃ যখন শিশু অন্ন জাতীয় খাদ্যাদি হজম করার উপযুক্ত শক্তি লাভ করবে, তখন মুখে অন্ন দেওয়াই অন্নপ্রাশন সংস্কার।
(অথর্ববেদ ৮/২/১৯)
👉 ৮. চূড়াকর্মঃ শিশুর মস্তক মুণ্ডন অর্থাৎ মাথার চুল ফেলে দেওয়ার প্রক্রিয়াকে চূড়াকর্ম সংস্কার। ১ বছর বা ৩ বছর বয়সে এই সংস্কার পালন করতে হয়।
(অথর্ববেদ ৬/৬৮/৩)
👉 ৯. কর্ণবেধঃ শিশুর জন্মের তৃতীয় বা পঞ্চম বর্ষে নাক ও কান ছিদ্র করাকে কর্ণবেধ বলা হয়। এই সংস্কার এখন প্রায় বিলুপ্ত বলা যায়। আমাদের এই সংস্কার গুলোর রক্ষা করা ও পালন করা উচিৎ।
(অথর্ববেদ ৬/১৪১/২)
👉 ১০. উপনয়নঃ যে সংস্কার দ্বারা শিষ্যকে গুরুর সাহচর্যে শিক্ষাগ্রহণ করে বিদ্বান ব্যক্তিতে পরিণত হতে নিয়ে যাওয়া হয় তার নাম “উপনয়ন”। এই সংস্কারের মাধ্যমে গুরু তার শিষ্যকে যজ্ঞোপবীত দিয়ে দীক্ষিত করেন। উপনয়ন বর্তমানে কেবল এক বর্ণের জন্য প্রচলিত থাকলেও বৈদিক কর্মগত বর্ণব্যবস্থা অনুযায়ী এটি আবশ্যিক সংস্কার যা নারী পুরুষ, বর্ণ নির্বিশেষে বাধ্যতামূলক। উপনয়নের স্বীকৃতির মাধ্যমেই মানব দ্বিজত্ব লাভ করে ও শাস্ত্রচর্চাদি কর্মে অধিকার লাভ করে।
(অথর্ববেদ ১১/৫/৩)
👉 ১১. বেদারম্ভঃ গায়ত্রী মন্ত্র থেকে শুরু করে চারবেদ অধ্যয়নের জন্য যে নিয়ম-ধারণ করতে হয়, তাকে বেদারম্ভ সংস্কার বলে। যেদিন উপনয়ন হয় সেদিনই এই সংস্কার করতে পারে। অথবা ১ বছরের মধ্য করতে হয়।
(অথর্ববেদ ১১/৫/২৪)
👉 ১২. সমাবর্তনঃ শাস্ত্র অধ্যয়ন ও শিক্ষা সমাপ্ত হলে গুরুগৃহ থেকে গৃহে ফিরে গৃহস্থাশ্রম গ্রহণের জন্য সমাবর্তন সংস্কার পালন করা হয়। বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতেও এমন অনুষ্ঠান প্রচলিত রয়েছে।
(ঋগ্বেদ ৩/৮/৪)
👉 ১৩. বিবাহঃ সমাবর্তনের পর গৃহাশ্রমের জন্য শুভ গুণ কর্ম ও স্বভাবের দিক দিয়ে সকলদিক দিয়ে তুল্য ও প্রীতিযুক্ত হয়ে স্ত্রী পুরুষের মধ্যে সম্বন্ধ স্থাপনই বিবাহ সংস্কার। বিয়ের পর গৃহাশ্রমে ইহলৌকিক ও পারলৌকিক সুখ লাভের জন্য নিজের সামর্থ্য অনুযায়ী পরোপকার করা, ঈশ্বর উপাসনা ও গৃহকর্ম করা, সত্যধর্মে একনিষ্ঠ হওয়া এবং ধর্মানুসারে চলা কর্তব্য।
(অথর্ববেদ ১১/৫/১৮)
👉 ১৪. বানপ্রস্থঃ বিবাহের পরে ধর্মানুসারে সন্তান প্রাপ্তি সহ সংসারের কাজ শেষ করে মহাত্মাগণের সহিত যোগাভ্যাস, শাস্ত্র আলোচনা ও পরমাত্মার সাক্ষাৎ লাভের প্রযত্ন করাকে বানপ্রস্থ সংস্কার বা গৃহাশ্রমসংস্কার বলে।
(ঋগ্বেদ ১০/১৪৬/৫)
👉 ১৫. সন্ন্যাসঃ সংসারের মায়া মোহত্যাগ ও পক্ষপাত ত্যাগ করে, বৈরাগ্যবান হয়ে পরোপকারের জন্য ও সমাজের কল্যাণের জন্য পরিভ্রমণ করা সন্ন্যাস সংস্কার।
(ঋগ্বেদ ৯/১১৩/৪)
👉 ১৬. অন্ত্যেষ্টিক্রিয়াঃ মৃত্যুর পর দাহকার্য সম্পাদন করা অর্থাৎ অন্তিম সংস্কারকে অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া বলে। অন্ত্যেষ্টিই শেষ সংস্কার। এরপর শরীরের জন্য অন্য কোনো সংস্কারই অবশিষ্ট থাকে না। এর নাম নরমেধ, পুরুষমেধ, নর যাগ ও পুরুষ যাগ। শ্মশান ভূমিতে জ্বলন্ত চিতায় সমিধা, সুগন্ধি, রোগনাশক ওষধি এবং ঘৃত আহুতি দ্বারা মৃত শরীরকে ভস্মীভূত করাই অন্ত্যেষ্টি। জীব তার কৃত কর্মের ফল নিজেই ভোগ করে। বংশধরদের শ্রাদ্ধাদি কোনো কার্যই তাকে সাহায্য করতে পারে না।
(যজুর্বেদ ৪০/১৫)

ওম্ শান্তিঃ শান্তিঃ শান্তিঃ

No comments:

Post a Comment

ধন্যবাদ

বৈশিষ্ট্যযুক্ত পোস্ট

যজুর্বেদ অধ্যায় ১২

  ॥ ও৩ম্ ॥ অথ দ্বাদশাऽধ্যায়ারম্ভঃ ও৩ম্ বিশ্বা॑নি দেব সবিতর্দুরি॒তানি॒ পরা॑ সুব । য়দ্ভ॒দ্রং তন্ন॒ऽআ সু॑ব ॥ য়জুঃ৩০.৩ ॥ তত্রাদৌ বিদ্বদ্গুণানাহ ...

Post Top Ad

ধন্যবাদ