বৃক্ষাদি জন্মকে অনুশয়ী জন্ম কহে, [ন কিঞ্চিদপ্যনুশয়িনঃ।। সাংখ্য ৫।১২৫] পাষাণ কল্প স্থাবর জন্ম। ইহা পরমাত্মার অদ্ভূত নিয়ম। যেমন কোন জমি সম্পূর্ণ উর্ব্বরতা শক্তি
শুন্য হইলে তাহারে পুনঃ পুণঃ সারাদি দেওয়া সত্বেও কৃষক কোন ফসল উৎপন্ন করিতে না পারায় তাহাকে কিছু কাল যাবৎ পতিত অবস্থায় রাখে এবং তারপর বায়ু, রৌদ্র, বৃষ্টির জলকণা ও চন্দ্রের জ্যোৎস্না প্রভৃতির
সংযোগে তাহার পুনরায় উর্বরতা শক্তি লাভ হয়, ও তাহা চাষাবাদের উপযোগী হিয়া পসল উৎপন্ন করে, সেইরূপ যখন মনুষ্য অত্যধিক অন্যায় কর্ম্ম- বিশেষ করিয়া বুদ্ধি মন ও ইন্দ্রিয়াদি সূক্ষ্ম করণের দ্বরা ও শারীরিক যন্ত্রদ্বরা অত্যধিক অন্যায় কর্ম্ম করিয়া তাহার স্থূল ও সূক্ষ্ম সমস্ত ভোগের করণাদি অকর্মণ্য করিয়া পেলে তখন পতিত জমির মত তাহাকে নিস্ক্রিয় অবস্থায় ফেলিয়া রাখিবার প্রয়োজন হয় বলিয়া পরম কারুণিক পরমেশ্বর তাহার শোধনার্থ তাহাকে ভোগের ইন্দ্রিয়দি ও শারীরিক করণাদি অর্থাৎ স্থূল ও সূক্ষ্ম যন্ত্রাদি হইতে বঞ্চিত করিয়া পাষাণকল্প স্থাবর জন্ম দান করেন। উক্ত জীবাত্মা বহুকালাবধি ইন্দ্রিয়াদি বিবর্জিত অবস্থায় ভোগ হিতে বঞ্চিত থাকিবার করাণ তাহার সেই জগণ্য ভোগস্পূহা ক্ষীণ হইয়া যায় এবং ঐ সমস্ত কুসংস্কার চাপা পড়িলে তাহার পূর্ব পূর্ব অন্যান্য কর্মসলস্কার প্রাদুর্ভূত হিয়া থাকে এবং জীবাত্মা সেই সমস্ত কর্ম সংস্কার অনুযায়ী শরীর লাভ করিয়া পুনরায় কর্ম করিবার ও ভোগ করিবার শক্তি লাভ করে। সেই জন্য স্থাবর জন্ম বা বৃক্ষ জন্মের প্রয়োজন হইয়া থাকে। ইহা দ্বরা মনুষ্যের অহিংসালব্ধ অদুষ্ট সাত্ত্বিক আহারেরও সিদ্ধি হইয়া থাকে এবং বৃক্ষস্থ জীবের অজ্ঞাতে তাহার স্থাবর শরীরের দ্বারা মনুষ্যের প্রয়োজন সিদ্ধ হইয়া থাকে।
No comments:
Post a Comment
ধন্যবাদ