নিরামিষভোজী ও প্রোটিন - ধর্ম্মতত্ত্ব

ধর্ম্মতত্ত্ব

ধর্ম বিষয়ে জ্ঞান, ধর্ম গ্রন্থ কি , হিন্দু মুসলমান সম্প্রদায়, ইসলাম খ্রীষ্ট মত বিষয়ে তত্ত্ব ও সনাতন ধর্ম নিয়ে আলোচনা

धर्म मानव मात्र का एक है, मानवों के धर्म अलग अलग नहीं होते-Theology

সাম্প্রতিক প্রবন্ধ

Post Top Ad

স্বাগতম

27 December, 2021

নিরামিষভোজী ও প্রোটিন

 একজন প্রাপ্ত বয়স্ক মানুষের সারাদিনে ৫৫ গ্রাম আমিষের দরকার হয়। শরীরের পেশীগুলোকে নিয়মিত পর্যাপ্ত পরিমানে প্রোটিন অর্থাৎ আমিষ আমাদের দিতে হয়। আমেরিকাতেও এখন ৪০ লাখ লোক নিরামিষভোজী। কিছু কিছু নিরামিষ খাবার আছে যেগুলোতে আমিষের পরিমান বেশী। নিরামিষ খাওয়ারে সবথেকে বড় সুবিধা হলো কোলেষ্টেরল কম, চর্বি কম, ফলে হার্টের রোগের ঝুঁকি কম, টাইপ ২ ডায়াবেদটিসের ঝুঁকিওকম থাকে।

নিরামিষভোজী ও প্রোটিন

কাঠবাদাম, পেস্তা, কিশমিশ, ওয়ালনাট ইত্যাদি আমিষে ভরপুর এতে আনস্যাচুরেইটেড চর্বি থাকে। প্রতিদিন একমঠ বাদাম খেলে আপনি নিশ্চিত ভাবে শরীরের জন্য প্রতিদিনের প্রয়োজনীয় আঁশ, ভিটামিন, আয়রন এবং আমিষের চাহিদা পূরণ করতে পারবেন।

হ্যাচিং এগ বিষয়ে পিডিএফ পডুন

প্রোটিন একটি পুষ্টিকর উপাদান যা আমাদের দেহের সঠিক বৃদ্ধি, বিকাশ এবং গঠনের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। প্রোটিনের অভাব পেশী দুর্বল করে তোলে এবং আমাদের দেহ সঠিকভাবে কাজ করতে সক্ষম হয় না, প্রোটিন আমাদের শরীরের কোষ গঠনে সাহায্য করে। ওয়ার্ল্ড হেলথ অর্গানাইজেশন অনুযায়ী প্রতিটি মানুষের তার ওজন অনুযায়ী প্রোটিনের প্রয়োজন হয়। যদি আপনার ওজন 50 কেজি হয় তবে আপনার কেবল 50 গ্রাম প্রোটিনের প্রয়োজন হবে। যদি প্রোটিনের অভাব হয়, তবে শরীর অসুস্থ হয়ে যায়। যদি আপনার শরীরে পর্যাপ্ত পরিমাণে প্রোটিন না থাকে, তবে আপনার পেশী বৃদ্ধি না হওয়ায় আপনার দেহ ভালভাবে বৃদ্ধি হতে সক্ষম হয় না, আপনার উচ্চতাও ভাল বৃদ্ধি পায় না, আপনার চুল প্রচুর পড়তে শুরু করে। শারীরিক ও মানসিক বিকাশের জন্য আপনার ডায়েটে প্রতিদিন প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া অত্যন্ত জরুরি। দুধ এবং দুগ্ধজাত পণ্য : দুধ, দই, পনির এবং যা কিছু দুধ থেকে তৈরি হয়, এতে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন থাকে । 

মসুর ডাল এক ধরণের প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার:

এগুলিতে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার, ম্যাগনেসিয়াম, পটাসিয়াম, আয়রন, ফোলেট, তামা, ম্যাঙ্গানিজ এবং অন্যান্য বিভিন্ন পুষ্টি উপাদান রয়েছে। মসুর ডাল উদ্ভিদ-ভিত্তিক প্রোটিনের বিশ্বের সেরা উত্সগুলির মধ্যে রয়েছে এবং তারা নিরামিষাশীদের  জন্য সেরা পছন্দ। প্রোটিন সামগ্রী: 31% ক্যালোরি। এক কাপ (198 গ্রাম) সিদ্ধ মসুর ডাল 18 গ্রাম প্রোটিন এবং 230 ক্যালোরি শক্তি আছে।

 যাঁরা মাছ-মাংস কম খান বা নিরামিষাশী, তাঁদের জন্য প্রোটিনের বিকল্প উৎসগুলো রয়েছে। যেকোনো ধরনের ডাল ও বীজজাতীয় খাবারে প্রোটিন থাকে। আধা কাপ রান্না ছোলায় পাওয়া যাবে ৭ গ্রাম প্রোটিন, আধা কাপ মসুর ডালে ৯ গ্রাম। শিমের বিচি, মটরশুঁটিও প্রোটিনের চমৎকার উৎস। সঙ্গে বাড়তি পাওনা এগুলোর মধ্যে আছে প্রচুর আঁশ, ভিটামিন বি ও আয়রন। 

বাদামও প্রোটিনের উৎস হিসেবে খুব ভালো। ২০টা আমন্ড বা কাঠবাদামে পাবেন প্রায় ৪ গ্রাম এবং একই পরিমাণ কাজুবাদাম থেকে ৬ গ্রাম প্রোটিন। এই খাবারে আরও পাবেন উপকারী চর্বি (ওমেগা ফ্যাট) এবং আঁশ। তবে বাদাম লবণ ছাড়া খাওয়া ভালো। 

সয়াবিন: এতে ‘স্যাচুরেটেড ফ্যাট’য়ের মাত্রা কম। ভিটামিন সি, প্রোটিন ও ‘ফোলাট’য়ের মাত্রা বেশি। ক্যালসিয়াম, ভোজ্য আঁশ, লৌহ, ম্যাগনেশিয়াম, ফসফরাস এবং পটামিয়ামেরও উৎকৃষ্ট উৎস সয়াবিন। এক বাটি রান্না করা সয়াবিন দিতে পারে ২৮ গ্রাম প্রোটিন।


টক দই: ‘ফ্লেইবার’ নেই এমন দইতে অসংখ্য পুষ্টিকর উপাদান থাকে। স্ন্যাকস হিসেবে এটি অতুলনীয়। কারণ তা অনেকক্ষণ পেট ভরা রাখে। এক বাটি টক দইতে প্রায় ১২ থেকে ১৭.৩ গ্রাম প্রোটিন থাকে।

চালকুমড়ার বীজ: প্রোটিনসমৃদ্ধ খাবারের তালিকায় বীজজাতীয় খাবার থাকবে না তা হতে পারে না। চালকুমড়ার বীজ যদিও এর উচ্চমাত্রার ম্যাগনেসিয়ামের জন্য পরিচিত, তবে এতে প্রোটিনও আছে প্রচুর পরিমাণে। ৩০ গ্রাম চালকুমড়ার বীজ থেকে মিলবে প্রায় ৯ গ্রাম প্রোটিন।


ছোলা: লৌহ, ফসফেট, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, দস্তা, ভিটামিন কে এগুলোর সবগুলোই আছে ছোলাতে। আর এক কাপ ছোলা থেকে পাবেন প্রায় ১২ গ্রাম প্রোটিন। সিদ্ধ, রান্না এমনকি কাঁচাও খেতে পারেন এটি।


ছানা: ক্যালরি কম কিন্তু প্রোটিন বেশি দুধ থেকে তৈরি ছানাতে। শরীরের জন্য উপকারী নানান পুষ্টি উপাদানে ভরপুর। খুব সহজেই বাসায় তৈরি করা যায়। ১০০ গ্রাম ছানাতে থাকতে পারে ২৩ গ্রাম পর্যন্ত প্রোটিন।


এডামামে বিন্স: পরিপক্ক অবস্থায় এই ‘এডামামে বিনস’কেই বলা হয় সয়াবিন। প্রোটিন ও শরীরের জন্য প্রয়োজনীয় সবগুলো অ্যামিনো অ্যাসিড মেলে এই বীজ থেকে। ম্যাগনেসিয়ামেরও এক আদর্শ উৎস এটি যা কর্মশক্তি উৎপাদন ও পেশি গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করে। প্রায় ৯ গ্রাম প্রোটিন মিলবে মাত্র আধা কাপ ‘এডামামে বিনস’ থেকে।


মসুর ডাল: উদ্ভিজ্জ প্রোটিনের শ্রেষ্ঠ উৎস মসুর ডাল। আছে আঁশ এবং সাহায্য করে ওজন কমাতে। এক কাপ মসুর ডাল রান্না করে খেলে পেতে পারেন ১৪ থেকে ১৬ গ্রাম প্রোটিন।


কাঠবাদামের মাখন: ৫০ গ্রাম কাঠবাদামের মাখনে প্রোটিন থাকে প্রায় ১০ গ্রাম। ‘পিনাট বাটার’ বা চিনাবাদামের মাখনের তুলনায় ‘আমন্ড বাটার’ বা কাঠবাদামের মাখন বেশি স্বাস্থ্যকর।

অন্যান্য উচ্চ প্রোটিন 

China Seeds, flex seeds

ডিম সম্বন্ধে কিছু তথ্যঃ

ডিম গঠন প্রক্রিয়া

মুরগির বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ডিম্বাশয়ের ডিম্বাণুগুলো আকারে বড় হতে থাকে। ডিম্বাণুগুলোর ভেতরে আস্তে আস্তে কুসুম জমা হয়ে পূর্ণাঙ্গ কুসুমে পরিণত হয়। এক একটি কুসুম ভাইটালিন মেমব্রেন নামক এক প্রকার পাতলা পর্দা দ্বারা আবৃত থাকে। বোঁটার সাহায্যে ডিম্বাশয়ের সঙ্গে ঝুলানো থাকে। মুরগি যখন বয়স্কা হয় তখন কয়েকটি ডিম্বাণু পর পর শীঘ্র বড় হয়ে পূর্ণ কুসুমে পরিণত হয়। কুসুমের পূর্ণতার পর থলির শিরা উপশিরা বিহীন নির্দিষ্ট স্থানে ফাটল ধরার পরে ঐ স্থান দিয়ে বের হয়ে আসে। এই প্রক্রিয়াকে কুসুমক্ষরণ (ovulation) বলে। ডিম্বাশয় নালির প্রথম ভাগ এই নির্গত কুসুমটিকে ধরে ফেলে এবং পরে ডিম্বাশয় নালির বাকি অংশগুলোর মধ্য দিয়ে অগ্রসর হয়। নিষিক্তকরণের পরক্ষণ থেকেই কোষের সংখ্যা বাড়তে থাকে। মুরগির দলে মোরগ না রাখলেও ডিম পাড়ার কোন ব্যাঘাত বা ডিমের সংখ্যার তারতম্য হয় না, কুসুমটি নিষিক্তকরণ হোক তা না হোক উহা যখন ডিম্বাশয়নালির বাকি অংশ দিয়ে আস্তে আস্তে অগ্রসর হয় তখন ওটা ডিমের সাদা অংশ, খোসার পর্দা, খোসা ইত্যাদি সংগ্রহ করে পূর্ণাঙ্গ ডিমে পরিণত হয়। ওভাবে পূর্ণ ডিমটি তৈরি হতে ২৪-২৫ ঘণ্টা সময় লাগে। একটি ডিম কুসুম, ভ্রƒণ, ঘন সাদা অংশ, পাতলা সাদা অংশ, চ্যালেজা, খোসার আবরণ, বায়ুকোষ ও খোসা নিয়ে গঠিত। সম্পূর্ণ ডিমটার আছে জল ৬৩.৬%, আমিষ-১২.৮৩, খনিজ ১০.৭০, স্নেহ ১০৬ খনিজ পদার্থ এবং ভিটামিন। এ জন্য ডিমকে Nature’s multivitamin বলে। একটি সাধারণ মুরগির ডিমে প্রোটিন আছে প্রায় ছয় গ্রাম, যাতে রয়েছে মানবদেহের জন্য অত্যাবশ্যকীয় নয়টি অ্যামিনো অ্যাসিড।  ডিমের সাদা অংশে ৬গ্রাম প্রটিন ও হলুদ অংশে ৬গ্রাম প্রটিন রয়েছে। ডিমে ক্যালসিয়াম রয়েছে।

নিষিক্ত ডিম পুরুষ প্রাণীর শুক্রাণু ডিমে প্রবেশ করতে হবে, না হলে তা নিষিক্ত হবে না। ডিম নিষিক্ত কিনা বুঝতে মুরগির দেশ বিচার না করে তার সঙ্গ বিচার করতে হবে। ডিম পড়েছে যেই মুরগি, তার সঙ্গী মোরগ যদি কেউ থেকে থাকে তাহলে ডিমগুলো নিষিক্ত হওয়ার সম্ভাবনা আছে। যদি আশে পাশে কোন মোরগ না থাকে তাহলে নিষিক্ত হবার সম্ভাবনা নাই। তবে যদি মুরগির খামারের মালিক করে কৃত্রিম ভাবে নিষেক করিয়ে থাকে, তাহলে আলাদা কথা। এরকম করা হতে পারে যদি মুরগির ডিম থেকে বাচ্চা ফুটানোর চিন্তা থাকে। অনিষিক্ত ডিম (অর্থাৎ যে ডিমে বাচ্চা হবে না) মুরগি যখন প্রজনন ছাড়া ডিম দেয় সেটা হলো অনিষিক্ত ডিম। বিজ্ঞানীরা বলেছেন, দোকানে এবং বাজারে যে ডিম পাওয়া যায় সেটা হলো অনিষিক্ত ডিম। মুরগির যখন ৬ মাস বয়স থাকে তখন তারা প্রত্যেকদিন ডিম দেয়। মুরগির জাতের উপর নির্ভর করে একটি মুরগি পাঁচ থেকে সাত মাস বয়সের মধ্যে ডিম পাড়াতে শুরু করবে। ডিম পাড়ার ফ্রিকোয়েন্সি বিভিন্ন প্রজাতির বিভিন্ন প্রকারে, মোল্টিংয়ের সাথে এবং বয়সের সাথে পরিবর্তিত হয়, তবে ডিম উৎপাদনের জন্য ব্যবহৃত বেশিরভাগ বংশবৃদ্ধি প্রতি এক থেকে দু'দিন পরে একটি ডিম দেয়।

মরোগ ও মুরগী যখন যৌন মিলন করে তখন ডিমটা নিষিক্ত হয়। মুরগির দেহের ভেতরে। ডিম নিষিক্ত হয়না, ডিম্বানু নামের কোষটা নিষিক্ত হয়। পরে সেই কোষটাই বড় হয়ে পরিনতি লাভ করে ডিমের রূপ পায়। নিষিক্ত হোক বা না হোক, ডিম্বানুটা এক সময় ডিমে পরিনত হবে। আমরা যেটাকে ডিম বলি, সেই জিনিসের চারপাশে ক্যালসিয়ামের খোলস, খোলসের ভেতর আরেকটা আবরন। একে নিষিক্ত করতে হলে এইসব ভেদ করে শুক্রানু প্রবেশ করতে হবে।

বিজ্ঞানীরা ব্যাখ্যা করেছেন যে ডিমের তিনটি অংশ যেমন, এগ সেল, এগ ওয়াইট, ডিমের কুসুম। কুসুমে রয়েছে ফ্যাট, কোলেস্টেরল এবং প্রোটিন। সাদা অংশে রয়েছে প্রোটিন। বিজ্ঞানীরা বলছেন, প্রতিদিন আমরা যে ডিম খাই সেটা সম্পূর্ণরূপে বিকশিত হয় না এবং কোনও ভ্রূণ নয়। বাজারে খাওয়ার জন্য যে ডিম বিক্রি হয় তা অনিষিক্ত। তাই এই ডিম খেলে জীবহত্যার দায়ে দুষ্ট হওয়ার কোনও সম্ভাবনা নেই। কিন্তু সেটা তো গেল মুরগি বা পাখির ডিমের ক্ষেত্রে । মাছের ডিমে সেই যুক্তি খাটবে না ।

কীভাবে মুরগির ডিম নিষিক্ত হয় ? এই ভিডিওতে আমি মুরগির ভিতরে ডিম কারখানার প্রতিটি ধাপ ব্যাখ্যা দেখুন

বেশিরভাগ পাখি ও সরীসৃপে ডিম হল নিষিক্ত ডিম্বাণুর মাধ্যমে সৃষ্ট জাইগোট। ডিম্বস্ফোটোনের জন্যে ডিমের ভেতর যথাযথ তাপমাত্রা বজায় রাখার ব্যবস্থা থাকে এবং ভ্রূণের প্রয়োজনীয় পুষ্টি ও নিরাপত্তাও ডিম সরবরাহ করে। ভ্রূণ পরিণতি লাভ করার পর ডিম ফুটে বেরিয়ে আসে। বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধক টীকা প্রস্তুত করতেও ডিমের শ্বেতাংশ ব্যবহার করা হতে পারে, যেমন ইনফ্লুয়েঞ্জা টীকা।

ডিম নষ্ট হওয়ার কারণঃ

ডিমের মোটা মাথাটায় কিছুটা জায়গা জুড়ে বাতাস থাকে। এই বাতাসে অক্সিজেন কমে কার্বন ডাই-অক্সাইড বেড়ে গেলেই ডিম পচে যায়। আরেকটি কারণ হলো- ডিমের খোসায় অজস্র ফুটা থাকে, ঐ ফুটা দিয়ে যেমন বাতাস ঢোকে, বাতাসের সঙ্গে জীবাণু ঢুকে যায়। ঐ জীবাণুই ডিমকে পচিয়ে দেয়। ডিমের টাটকাভাব পরিবেশের উপর নির্ভর করে ঠাÐায় যেমন টাটকা থাকে, গরমে তাড়াতাড়ি নষ্ট হয়।

শুধু যে উদ্ভিদজাত আহার নিরামিষ হবে এই ধারনা টা ভুল, রসুন ও পেঁয়াজ যা ওই ব্যাক্তিদের ভাষাতে আমিষ কিন্তু যুক্তি ও প্রমান সাপেক্ষে ইহা অর্ধ-আমিষ । প্রাচীন আয়ুর্বেদ এর জ্ঞানের অনুসারে বৈদিক ঋষিরা আহার কে তিন ভাগে ভাগ করেন সাত্ত্বিক, রাজসিক ,তামসিক। ভিটামিন বি১২ কিন্তু এনিমেল প্রডিউস করেনা, এটি আসে মুলত ব্যাকটেরিয়া থেকে। অর্থাৎ আপনি ভিটামিন বি১২ পাবেন “মিডেলম্যান” ছাড়া। ভিটামিন বি-১২ আর ওমেগা ৩ এর ঘাটতি পূরনের জন্য খাবারে ফ্লাক্সসিড, চিয়া সিড; আর ঋতুভেদে সবুজ সবজি, আম আর ফুলকপি রাখা উচিত।  শাকাহার ভোজনের মাধ্যমে সবধরনের প্রয়োজনীয় পুষ্টি পাওয়া সম্ভব, কারণ মানুষ যখন সৃষ্টি হয়েছিল তখন গাছের ফল ও পাতাই খেত, এইজন্য মানুষের পৌষ্টিকতন্ত্র পুরোপুরি বাঘ বা সিংহের মত মাংশ নির্ভর নয়। মানুষ পরবর্তীকালে মাংসে অভ্যস্ত হয়। তবে শাকাহার ভোজনের পুষ্টির জন্য খরচ বেশি পড়ে, কারণ বিভিন্নরকম খাবার যেমন দুধ, ঘি, ফল, শাকসব্জি, সয়াবিন, ডাল নিয়মিত খেতে হবে, আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের কর্ণেল ইউনিভার্সিটির করা একটি বৈজ্ঞানিক গবেষণায় দেখা গেছে যেসব মানুষেরা হাজার হাজার বছর ধরে বংশানুক্রমে উদ্ভিদজাত খাবার খেয়ে আসছে (ভারতীয় জৈন ও ব্রাহ্মণ সম্প্রদায়) তাদের কোন অসুবিধা হয় না, কারণ তাদের শরীরে জেনেটিক পরিবর্তন ঘটে গেছে! এই প্রসঙ্গে বলা যায় যে ভারতের জৈন মতালম্বীরা প্রায় ১০,০০০ বছর ধরে উদ্ভিদজাত ভোজনে অভ্যস্ত এবং এরাই ভারতের ধনীতম ও সর্বোচ্চ শিক্ষিত সম্প্রদায়। তবে যারা বংশানুক্রমে প্রাণীজ ডিম ও মাংশ খেয়ে আসছে তারা প্রয়োজনীয় পুষ্টিকর খাবার খেতে অপারগ হলে অপুষ্টির শিকার হবে। নিরামিষ ভোজনের মাধ্যমে ওমেগা-3 পেতে হলে মাছের সাবসটিতিউড হিসেবে সোয়াবিন এবং সয়াবিন অয়ল নেওয়াটা বিশেষ প্রয়োজন।

১. সম্পূর্ণ নিরামিষভোজী অর্থাৎ যাঁরা মাছ, মাংস, দুধ, ডিম কোনোটাই খান না।

২. ল্যাকাটা নিরামিষভোজী অর্থাৎ যাঁরা দুধ খান, অন্য কোনো প্রাণিজ প্রোটিন খান না।

৩. ওভোল্যাকাটা নিরামিষভোজী অর্থাৎ যাঁরা ডিম ও দুধ খান, অন্য কোনো প্রোটিন খান না।

খাবারে প্রোটিনের চাহিদা পূরণের জন্য নিচের বিষয়গুলো খেয়াল রাখতে হবে—

* সবজিতে ডাল ব্যবহার করে খাওয়া

* টক দই, মাওয়া, দুধ ইত্যাদি প্রোটিনজাতীয় খাবার রান্নায় ব্যবহার করা।

* খাবারে ভেজিটেবল অয়েল বা ঘি দিয়ে বাগার দেওয়া।

* যাঁরা ডিম খান, তাঁদের মেনুতে দৈনিক একটা কুসুমসহ ডিম অবশ্যই খেতে হবে।

* কিছু কিছু সবজিতে একটু বেশি মাত্রায় প্রোটিন থাকে। যেমন পালংশাক, ব্রকোলি, অঙ্কুরিত ছোলা, মাশরুম, মটরশুঁটি, কাঁঠালের বিচি, ভুট্টা ইত্যাদি খাওয়া।

যাঁরা দুধ পান করেন, তাঁরা তাঁদের খাবারের মেনুতে দই, দুধ, ছানা, পনির, লাচ্ছি ইত্যাদি হিসাব করে খেলে ভালো মাত্রার প্রোটিন পাওয়া যাবে।

খাবার পদে সয়া থাকলে ভালো মাত্রার প্রোটিন পাওয়া সম্ভব। যাঁরা দুধ বা ডিম কোনোটাই খাবে না, তাঁদের খাবারে  দৈনিক পাঁচমিশালি ডাল, টফু, সয়া প্রোটিন, মাশরুম অবশ্যই রাখতে হবে।

প্রোটিন শরীরের জন্য প্রয়োজনীয়। তাই একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের প্রতি কেজি ওজনের বিপরীতে দৈনিক কমপক্ষে ১ গ্রাম প্রোটিন গ্রহণের প্রয়োজন হয়। 

শুকনা ফল ও বাদাম: কাঠবাদাম, পেস্তা, কিশমিশ, ওয়ালনাট ইত্যাদি আমিষে ভরপুর। বীজজাতীয় খাবার যেমন তিসিও অনেক উপকারী কারণ এতে থাকে আনস্যাচুরেইটেড চর্বি।


প্রতিদিন একমুঠ বাদাম বা বীজ খেলে নিশ্চিত হবে শরীরের জন্য প্রতিদিনের প্রয়োজনীয় আঁশ, ভিটামিন, আমিষ এবং আয়রন। 

ডিম ও দুগ্ধজাত খাবার: ডিম ও দুধ থেকে তৈরি খাবারে মিলবে আমিষ। যা মাংসবিহীন খাদ্যাভ্যাসে পাওয়া সম্ভব নয়। দুধ ও দুগ্ধজাত খাবারে আরও থাকে ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন ডি।


ডাল: নিরামিষ খাদ্যাভ্যাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হল মটরশুঁটি, শিমের দানা, ডাল ইত্যাদি। এগুলো আমিষের একটি ভালো উৎস। পাশাপাশি শরীরের প্রয়োজনীয় আঁশ, ভিটামিন ও খনিজও থাকে।


শস্যজাতীয় খাবার: কার্বোহাইড্রেটের একটি গুরুত্বপূর্ণ উৎস শষ্যজাতীয় খাবার। দস্তা, কর্পূর, লৌহ ইত্যাদি প্রয়োজনীয় খনিজের অভাবও মেটায় এই খাবারগুলো। এজন্য যব, সম্পূর্ণ গমের তৈরি রুটি, পাস্তা, বাদামি চাল ইত্যাদি খেতে পারেন।


ফল ও সবজি: ভিটামিন, খনিজ ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে ভরপূর থাকে ফল ও সবজি। নিরামিষভোজীদের জন্য এগুলো সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ।

সাত্ত্বিক আহার 👈আরো পডুন

শাস্ত্র মতে আমরা খাদ্য হিসাবে যা কিছুই গ্রহণ করি তা সবই অন্ন অন্নকে চার ভাগে বিভক্ত করা হয়েছে , যথা -

১ ) চর্ব্য ( যা কিছু আমরা চিবিয়ে খাই )

২ ) চোষ্য ( যা কিছু আমরা চুষে খাই )

৩ ) লেহ্য ( যা কিছু আমার জিহ্বা দ্বারা চেটে খাই )

৪ ) পেয় ( যা কিছু আমরা পান করি অর্থাৎ পানীয় জাতীয় )

No comments:

Post a Comment

ধন্যবাদ

বৈশিষ্ট্যযুক্ত পোস্ট

যজুর্বেদ অধ্যায় ১২

  ॥ ও৩ম্ ॥ অথ দ্বাদশাऽধ্যায়ারম্ভঃ ও৩ম্ বিশ্বা॑নি দেব সবিতর্দুরি॒তানি॒ পরা॑ সুব । য়দ্ভ॒দ্রং তন্ন॒ऽআ সু॑ব ॥ য়জুঃ৩০.৩ ॥ তত্রাদৌ বিদ্বদ্গুণানাহ ...

Post Top Ad

ধন্যবাদ