নিয়োগ প্রথা - ধর্ম্মতত্ত্ব

ধর্ম্মতত্ত্ব

ধর্ম বিষয়ে জ্ঞান, ধর্ম গ্রন্থ কি , হিন্দু মুসলমান সম্প্রদায়, ইসলাম খ্রীষ্ট মত বিষয়ে তত্ত্ব ও সনাতন ধর্ম নিয়ে আলোচনা

धर्म मानव मात्र का एक है, मानवों के धर्म अलग अलग नहीं होते-Theology

সাম্প্রতিক প্রবন্ধ

Post Top Ad

স্বাগতম

17 February, 2022

নিয়োগ প্রথা

( প্রশ্ন) – পুনর্বিবাহ এবং নিয়োগের মধ্যে প্রভেদ কি ? 

(উত্তর) 

( প্রথমতঃ) বিবাহ হইলে যেমন কন্যা পিতৃগৃহ ছাড়িয়া পতিগৃহে গমন করে, পিতার সহিত তাহার বিশেষ সম্বন্ধ থাকে না সেইরূপ বিধবা স্ত্রী বিবাহিত পতির গৃহেই অবস্থান করে।

 (দ্বিতীয়তঃ ) সেই বিবাহিতা স্ত্রীর পুত্র সেই বিবাহিত পতির উত্তরাধিকারী হইয়া থাকে কিন্তু বিধবা স্ত্রীর পুত্র বীর্য্যদাতার পুত্র হয় না, তাহার গোত্রীয়ও হয়না, পুত্রের উপর তাহার কোন স্বত্ব থাকেনা। কিন্তু সে বিধবার মৃত পতিরই পুত্ররূপে পরিগণিত হয় এবং তাহারই গোত্রীয় ও ভাহারই সম্পত্তির উত্তরাধিকারী হইয়া তাহারই গৃহে বাস করে। 

(তৃতীয়তঃ ) বিবাহিত স্ত্রীপুরুষের পক্ষে পরস্পরের সেবা এবং পালন করা অবশ্য কৰ্ত্তব্য। কিন্তু নিযুক্ত স্ত্রীপুরুষের কোন সম্বন্ধই থাকেনা। 

(চতুর্থতঃ ) বিবাহিত স্ত্রীপুরুষের আমরণ সম্বন্ধ থাকে, কিন্তু নিযুক্ত স্ত্রীপুরুষের সম্বন্ধ কার্য্যান্তে ছিন্ন হইয়া যায়। 

(পঞ্চমতঃ ) বিবাহিত স্ত্রীপুরুষ পরস্পর মিলিত হইয়া গৃহকর্ম্ম সম্পাদনে পরস্পর যত্নবান হইয়া থাকে কিন্তু নিযুক্ত দ্রীপুরুষ নিজ নিজ গৃহকর্ম্ম করিতে থাকে।


(প্রশ্ন) – বিবাহ এবং নিয়োগের নিয়ম কি একই প্রকার না পৃথক পৃথক ? (উত্তর) – কিঞ্চিৎ প্রঙ্গে আছে, তাহা পূর্ব্বে বলা হইয়াছে। তথ্যতীত বিবাহিত স্ত্রীপুরুষ একপতি এবং এক স্ত্রী মিলিত হইয়া দশটি সন্তান উৎপন্ন করিতে পারে। কিন্তু নিযুক্ত স্ত্রীপুরুষ চারিটির অধিক সন্তান উৎপন্ন করিতে পারে না। অর্থাৎ কুমার ও কুমারীর বিবাহের দ্যার বিপত্নীক পুরুষ এবং বিধবা স্ত্রীর নিয়োগ হইয়া থাকে। কুমার এবং কুমারীর নিয়োগ হয় না। বিবাহিত স্ত্রীপুরুষ সর্ববদা সঙ্গে থাকে কিন্তু নিযুক্ত স্ত্রীপুরুষের ব্যবহার সেইরূপ নহে। তাহারা ঋতুদানের সময় ব্যতীত অন্য সময়ে ) একত্র হইবেনা। যদি স্ত্রী প্রয়োজনে নিয়োগ করে, তবে দ্বিতীয় গর্ভস্থিতির দিন হইতে তাহার সহিত নিযুক্ত পুরুষের সম্বন্ধ ছিন্ন হইয়া যায়। পুরুষ নিজের জন্য নিয়োগ করিলেও দ্বিতীয় গর্ভস্থিতির পর হইতে সম্বন্ধ থাকেনা। কিন্তু সেই নিযুক্ত স্ত্রী দুই তিন বৎসর পর্য্যন্ত সন্তানগুলিকে পালন করিয়া নিযুক্ত পুরুষকে দিবে। এইরূপে এককালে বিধবা স্ত্রী নিজের জন্য দুইটি এবং অন্য চারিজন নিযুক্ত পুরুষের প্রত্যেকের জন্ম দুইটি দুইটি করিয়া সন্তান উৎপন্ন করিতে পারে। একজন বিপত্নীক পুরুষও নিজের জঞ্চ দুইটি এবং অন্য চারি বিধবার জন্য দুইটি করিয়া পুত্র উৎপন্ন করিতে পারে। এইরূপে মোট দশটি সন্তান উৎপত্তির আড্ডা বেদে আছে, যথা


ইমাং তুমিদ্ৰ মীঢ়ঃ হুপুত্ৰাং মুভগাং কৃণু।

দশাস্যাং পুত্রানায়েছি পতিমেকাদৃশং কৃষি ॥ 1ঋঃ। মং ১০ । সূঃ ৮৫৷ মং ৪৫ ॥


হে (মীঢ়, ইন্দ্ৰ ) বীৰ্য্যসিফনে সমর্থ ঐশ্বৰ্য্যশালী পুরুষ ! তুমি এই বিবাহিতা স্ত্রী বা বিধবা স্ত্রীকে শ্রেষ্ঠ পুত্রের মাতা এবং সৌভাগ্যবতী কর। বিবাহিতা স্ত্রীতে দশ পুত্র উৎপন্ন কর এবং স্ত্রীকে একাদশ বলিয়া মনে কর। হে স্ত্রী! তুমিও বিবাহিত বা নিযুক্ত পুরুষ কর্তৃক দশটি সন্তান উৎপন্ন কর এবং পতিকে একাদশ বলিয়া মনে কর। বেদের এই আজ্ঞানুসারে ব্রহ্ম এবং বৈশ্য বর্ণের জীপুরুষ দশ দশটির অধিক সন্তান উৎপন্ন করিবেনা। কারণ অধিক সন্তান হইলে সন্তানগুলি দুর্ব্বল নির্বুদ্ধি অন্নায়ু হয় এবং স্ত্রীপুরুষ ও ন্নায়ু এবং রুগ্ন হইয়া বৃদ্ধাবস্থায় বহু দুঃখ ভোগ করে।


( প্রশ্ন ) — এই নিয়োগ ব্যভিচারের ভার দেখাইতেছে। 

(উত্তর) – যেমন অবিবাহিতলিগের (সংসর্গ) ব্যভিচার, সেইরূপ নিয়োগ ব্যতীতও সংসর্গ করাকে ব্যক্চিার বলা যাইতে পারে। ইহাতে সিদ্ধ হইল যে, যেমন বিষিষঙ্গত বিবাহকে ব্যভিচার বলা যায় না, সেইরূপ বিধিসঙ্গত নিয়োগকেও ব্যভিচার বলা যাইবে না। যেমন শাস্ত্রোক্ত বিধি অনুসারে একখনের কন্ঠার সহিত অপর একজনের পুত্রের বিবাহের পর সমাগমে ব্যভিচার, পাপ এবং লজ্জা হয় না, সেইরূপ বেদশাস্ত্রোক্ত নিয়োগেও ব্যভিচার, পাপ এবং লজ্জা মনে কর। উচিত নহে।


( প্রশ্ন)—যথার্থ বটে, কিন্তু ইহা বেশ্যাবৃত্তির ন্যায় দেখাইতেছে। 

(উত্তর)—না, কারণ বেশ্যাসমাগমে কোন পুরুষ বা নিয়মের নিশ্চয়তা নাই। কিন্তু নিয়োগে বিবাহের দ্যায় নিয়ম আছে। যেমন একজনের ক্যা অপরকে সম্প্রদান করা হইলে বিবাহের পর সমাগমে লজ্জা হয় না, সেইরূপ নিয়োগেও লজ্জা না হওয়া উচিত। ব্যভিচারী পুরুষ বা ব্যভিচারিণী নারী কি বিবাহের পরেও কুকর্ম্ম হইতে রক্ষা পায় ?


(প্রশ্ন) – নিয়োগের কথা আমার নিকট পাপ বলিয়াই মনে হইতেছে।

 (উত্তর) — যদি নিয়োগকে পাপ বলিয়া মনে কর, তবে বিবাহকে পাপ বলিয়া মনে কর না কেন ? নিয়োগে বাধাদান করিলেই ত পাপ হয়। কারণ বৈরাগ্যবান, পুর্ণ বিদ্বান, যোগী ব্যতীত ঈশ্বরের সৃষ্টির ক্রম অনুসারে স্ত্রী পুরুষের স্বাভাবিক ব্যবহার রুদ্ধ করিতে পারে না। গর্ভপাতরূপ ভ্রুণহত্যা এবং বিধবা স্ত্রী ও বিপত্নীক পুরুষের মহাদুঃখকে কি পাপের মধ্যে গণ্য কর না? যতদিন তাহাদের যৌবন থাকে, ততদিন তাহারা মনে মনে সন্তানকামী এবং বিষয়ভোগবিলাসী থাকে। যদি কোন রাজ্য বা সমাজ ব্যবস্থা দ্বারা তাহাদিগকে বাধা দেওয়া হয় তবে গোপনে বহু কুকৰ্ম্ম হইতে থাকে। এই সকল ব্যভিচার ও কুকর্ম্ম রোধ করিবার সর্বশ্রেষ্ঠ উপার জিতেন্দ্রিয় থাকা। যদি তাহা না সন্ত হয় তবে বিবাহ বা নিয়োগ না করাই সঙ্গত। কিন্তু যদি সম্ভব না হয় তবে বিবাহ এবং আপৎকালে নিয়োগ অবশ্য কর্তব্য। ইহাতে ব্যভিচার হ্রাস পায় এবং প্রেম বশতঃ উত্তম সন্তান উৎপন্ন হওয়াতে মনুষ্যজাতির উন্নতি হয়। গর্ভপাতও সর্বপ্রকারে নিবারিত হয়। নীচ পুরুষের সহিত উত্তম স্ত্রীর এবং বেশ্যাদি নীচ স্ত্রীর সহিত উত্তম পুরুষের ব্যভিচার রূপ কুকর্ম্ম সৎকুলের কলঙ্ক, বংশোচ্ছো, স্ত্রী পুরুষের সন্তাপ এবং গর্ভহত্যাদি কুকৰ্ম্ম বিবাহ ও নিয়োগ দ্বারা নিবারিত হয়। এইজন্য নিয়োগ করা কর্তব্য।


(প্রশ্ন) – নিয়োগে কি কি নিয়ম থাকা আবশ্যক? 

(উত্তর) – বিবাহের ছায় নিয়োগও প্রসিদ্ধি সহকারে হওয়া উচিত। বিবাহের ন্যায় নিয়োগেও ভদ্র পুরুষদিগের অনুমতি এবং বরক্যার প্রসন্নতা থাকা আবশ্যক। অর্থাৎ যখন স্ত্রীপুরুষের নিয়োগ হয়, তখন তাহারা স্বীয় আত্মীর কুটুথ স্ত্রী পুরুষদিগের সমক্ষে ( প্রকাশ করিবে ) "আমরা উভয়ে সন্তানোৎপত্তির জন্য নিয়োগ করিতেছি, নিয়োগের নিয়ম পূর্ণ হইলে আমরা আর সংযুক্ত হইব না। যদি ইহার বিরুদ্ধ কাৰ্য্য করি, ভৰে পাপী এবং জাতি বা রাষ্ট্রের নিকট দণ্ডনীয় হইব। প্রতিমাসে একবার গর্ভাষানকৃত্য করিব এবং গর্ভস্থিতির পর এক বৎসর পর্যন্ত পৃথক থাকিব।


( প্রশ্ন) – নিয়োগ কি সবণে হইবে, না ভিন্ন বর্ণের সহিতও হইবে।

 (উত্তর) – সবর্ণে অথবা সম্পূর্ণ অপেক্ষা উত্তম বর্ণের পুরুষের সহিত অর্থাৎ বৈশ্যার ক্ষত্রিয় এবং ব্রাহ্মণের সহিত, ক্ষত্রিয়ার ক্ষত্রিয় ও ব্রাহ্মণের সহিত এবং ব্রাহ্মণীর ব্রাহ্মণের সহিত নিয়োগ হইতে পারে। তাৎপর্য্য এই যে বীৰ্য্য সমান অথবা উত্তম বর্ণের হওয়া উচিত, নিজ অপেক্ষা নিম্ন বর্ণের হওয়া উচিত নহে। ধর্ম্ম অর্থাৎ বেদোক্ত রীতি অনুসারে বিবাহ অথবা নিয়োগ দ্বারা সন্তানোৎপত্তি স্ত্রী পুরুষ সৃষ্টির প্রয়োজনে।


( প্রশ্ন) – পুরুষ যখন দ্বিতীয়বার বিবাহ করিতে পারে, তখন তাহার নিয়োগ করিবার আবশ্যকতা কি?

 (উত্তর) –পূর্বের লিখিয়াছি যে দ্বিজগণের মধ্যে স্ত্রী পুরুষের একবার মাত্রই বিবাহ হওয়া সঙ্গত, দ্বিতীয়বার নহে, বেদাদি শাস্ত্রে লিখিত আছে। কুমারের সহিত কুমারীর বিবাহ সঙ্গত। বিধবার সহিত কুমারের এবং কুমারীর সহিত বিপত্নীকের বিবাহ দ্যায়বিরুদ্ধ অর্থাৎ অধর্ম্ম। বিবাহিত পুরুষ যেমন বিধবাকে বিবাহ করিতে ইচ্ছা করে না, সেইরূপ যে পুরুষ স্ত্রী সমাগম করিয়াছে তাহাকেও কুমারী বিবাহ করিতে ইচ্ছা করে না। কুমারী ক্যা বিবাহিত পুরুষকে এবং কুমার বিধবা স্ত্রীকে বিবাহ করিতে ইচ্ছা না করিলে স্ত্রী পুরুষের নিয়োগের প্রয়োজন হইবে। যে ব্যক্তি যেমন তাহার সহিত তেমন ব্যক্তিরই সম্বন্ধ হওয়া উচিত এবং তাহাই ধৰ্ম্ম।


(প্রশ্ন) – বিবাহবিষয়ে বেদাদি শাস্ত্রে বেরূপ প্রমাণ আছে, নিয়োগ বিষয়েও সেইরূপ প্রমাণ আছে কি ?

 (উত্তর)—এ বিষয়ে বহু প্রমাণ আছে। দেখঃ-👇

 অথ নিয়োগবিষয়ঃ সংক্ষেপতঃ

নিয়োগ প্রথা

কুই স্কিদ্দোষা কুহ বস্তোরশ্বিনা কুহাভিপিত্বং করতঃ কুহোষতুঃ।

 কো বাং শয়ুত্রা বিধবেব দেবরং মর্ত্যং ন ঘোষা কৃণুতে সধস্থ আ।।১।। ঋঅ ৭ অ০ ৮ ০ ১৮। ম০ ২।

 ইয়ং নারী প্রতিলোকং বৃণানা নি পদ্যত উপ ত্বা মর্ত্য প্রেতম।

 ধর্ম্মং পুরাণমনুপালয়ন্তী তস্যৈ প্ৰজাং দ্রবিণং চেহ খেহি।।২।।অথর্ব কাং ১৮ অনু০ ৩ ব০৩ মং০১।

 উদীস্ব নার্য্য্যভি জীবলোকং গতাসুমেতমুপশেষ এহি'। 

হস্তগ্রাভস্য দিধিষোস্তবেদং পত্যুজনিত্বমভি সং বর্তৃথ।।৩।। ঋ০ মণ্ডল ১০ সু ১৮বং ৮।


ভাষ্যম্ :- এষামভিপ্রাযঃ অত্র বিধবাবিস্ত্ৰীকনিয়োগব্যবস্থা বিধীয়ত ইতি। (কুহস্বিদ্দোষা০) হে বিবাহিতৌ স্ত্রীপুরুষৌ ! য়ুবাং (কুহ) কস্মিন্ স্থানে (দোষা) রাত্রৌ (বস্তোঃ) বসথঃ (কুহ০) অশ্বিনা দিবসে চ স্ব বাসং কুরুখঃ (কুহাভি০) ক্বাভিপিতৃং প্রাপ্তিং (করতঃ) কুরুতঃ। (কুহোষতুঃ) ক্বয়ুবয়োনিজস্থানবাসোৎস্তি। (কো বাং শয়ুত্রা) শয়নস্থানং য়ুবয়োঃ ক্বাস্তি ইতি স্ত্রীপুরুষৌ প্রতি প্রশ্নের দ্বিবচনোচ্চারণেন চৈকস্য পুরুষস্যৈকৈবস্ত্রী কৰ্ত্তৃং য়োগ্যাস্তি, তথৈকস্যাঃ স্ত্রিয়া এক এব পুরুষশ্চ। দ্বয়োঃ পরস্পরং সদৈব প্রীতির্ভবেন্ন কদাচিদ্বিয়োগব্যভিচারৌ ভবেতামিতি দ্যোত্যতে। (বিধবের দেবরং) কং কেব? যথা দেবরং দ্বিতীয়ং বরং নিয়োগেন প্রাপ্তং বিধবা ইব।


অত্র প্রমাণং-দেবরঃ কস্মাদ দ্বিতীয়ো বর উচ্যতে। -নিরু অ০ ৩ খন্ড ১৫।।


বিধবায়া দ্বিতীয় পুরুষেণ সহ নিযোগকরণে আজ্ঞান্তি, তথা পুরুষস্য চ বিধবয়াসহ । বিধবা স্ত্রী মৃতকস্ত্রীকপুরুষেণ সহৈব সন্তানাৰ্থং নিয়োগং কুর্ম্যান্ন কুমারেণ সহ, তথা কুমারস্য বিধবয়া সহচ। অর্থাৎ কুমারয়োঃ স্ত্রীপুরুষয়োরেকবারমের বিবাহঃ স্যাৎ, পুনরেবং নিয়োগশ্চ। নৈব দ্বিজেষু দ্বিতীয়বারং বিবাহো বিধীয়তে। পুনর্বিবাহস্ত খলু শুদ্রবর্ণ এব বিধীয়তে, তস্য বিদ্যাব্যবহাররহিতত্বাৎ নিয়োজিতৌ স্ত্রীপুরুষৌ কথং পরস্পরং বর্ভেতামিত্যত্ৰাহ (মর্য্যং ন য়োষা) যথা বিবাহিতং মনুষ্যং (সখস্থে) সমানস্থানে সন্তানাথং ঘোষা বিবাহিতা স্ত্রী (কৃণুতে) আকৃণুতে, তথৈব বিধবা বিগতস্ত্রীকশ্চ সন্তানোৎ পত্তিকরণার্থং পরস্পরং নিয়োগং কৃত্বা বিবাহিত স্ত্রীপুরুষবদ্ধৰ্ত্তেয়াতাম্।।১।।

 (ইয়ং নারী০) ইয়ং বিধবা নারী (প্রেতং) মৃতং পতিং বিহায় (পতিলোকং) পতিসুখং (বৃণানা) স্বীকৰ্ভুমিচ্ছন্তী সতী (মৰ্ত্তা) হে মনুষ্য! (তা) তামুপনিপদ্যতে, তাই পতিং প্রাপ্নোতি, তব সমীপং নিযোগবিধানেনাগচ্ছতি, তাং ত্বং গৃহাণাৎস্যাং সন্তানান্যুৎপাদয়। কথভুতা সা? (ধর্ম্মংপুরাণং০) বেদ প্রতিপাদ্যং সনাতনং ধৰ্ম্মমনুপালন্তী সতী তাং নিয়োগেন পতিং বৃণুতে, তৃমপীমাং বৃণু। (তস্যৈ)বিধাবায়ৈ (ইহ) অস্মিন্ সময়ে লোকে বা (প্রজাং ধেহি) তুমস্যাং প্রজোৎ পত্তিং কুরু, (দ্রবিণং) দ্রব্যং বীর্য়াং (চ) অস্যাং ধেহি অর্থাৎ গর্ভাধানং কুরু।।২।।


(উদীর্ঘ না০) হে বিধবে নারি! (এতং গতাসুম) গত প্রাণং মৃতং বিবাহিতং পতিং ত্যক্ত্বা (অভিজীবলোকং) জীবন্তং দেবরং দ্বিতীয়বরং পতিং (এহি) প্রাপ্তহি (উপশেষে) তস্যৈবোপশেষে সন্তানোৎপাদনায় বর্ত্তস্ব। তৎসন্তানং (হস্তগ্রাভ্যস্য) বিবাহে সংগ্রহীতহস্তস্য পত্যুঃ স্যাৎ। য়দি নিযুক্তপত্যর্থো নিয়োগঃ কৃতস্তৰ্হি (দিধিষোঃ) তস্যৈব সন্তানং ভবেৎ। (তবেদম্) ইদমের বিধবায়াস্তব (জনিতৃং) সন্তানং ভবতি। হে বিধবে! বিগতবিবাহিতন্ত্রীকস্য পত্যুশ্চৈতন্নিযোগকরণার্থং (উদীর্ঘ) বিবাহিতপতিমরণানন্তরমিমং নিয়োগমিচ্ছ। তথা (অভিসংবভূখ) সন্তানোৎপত্তিং কৃত্বা সুখসংযুক্তা ভব।।৩।।


।। ভাষাৰ্থ।।

বিধবা স্ত্রী অথবা যে পুরুসের স্ত্রী বিয়োগ হইয়াছে তাঁহারা পরস্পর সংযুক্ত হইয়া ধর্মাচরণ দ্বারা যে সন্তান উৎপন্ন করেন তাহাকে নিয়োগ বলে। নিয়োগের নিয়ম এইরূপ যথাঃ- যদি কোন স্ত্রীর পতি বিয়োগ হয়, অথবা কোন পুরুষের স্ত্রী বিয়োগ হয়, অথবা বিবাহের পশ্চাৎ স্ত্রী পুরুষের মধ্যে কাহারও বন্ধ্যাদি বা নপুংসকাদি দোষ প্রকাশ পায়, অথবা কোনরূপ কুষ্ঠাদি কদর্য্য রোগ উপস্থিত হয়, এবং যদি যুবাবস্তাতেই সন্তানোৎ পত্তির ইচ্ছা হয়, তবে স্ত্রীর পক্ষে স্ববর্ণা অথবা আপন বর্ণাপেক্ষা উত্তম বর্ণস্থ পুরুষের সহিত সন্তানোৎ পত্তি করা, এবং আপৎকালে পুরুষের পক্ষে স্ববর্ণা অথবা নিম্ন বর্ণস্থা স্ত্রীর সহিত সন্তানোৎপত্তি করিবে, কখনও পুরুষ আপনাপেক্ষা উচ্চবর্ণের স্ত্রীর সহিত নিয়োগ করিবে না। এক্ষণে বেদশাস্ত্রে নিয়োগ বিষয় যেরূপ লেখা আছে তাহাই বর্ণিত হইতেছে যথা ঃ- (কুহস্ত্বিংঃ) হে বিবাহিত স্ত্রী পুরুষ ! তোমরা দুইজনে (দোষা) রাত্রিতে কোথায় নিবাস করিয়াছিলে? (কুহ বস্তোবশ্বিনা) এবং দিবসেই বা কোথায় ছিলে ? (কুহাভিপিতৃং করতঃ) তোমরা অন্ন বস্ত্র ও ধনাদিই বা কোথা হইতে প্রাপ্ত হইলে ? (কুহোষত্বঃ) তোমাদিগের নিবাস স্থানই বা কোথায় ? (কো বাং শয়ুত্রা) রাত্রিতেই বা কোথায় শয়ন করিয়া থাক ? বেদশাস্ত্রে পুরুষ ও স্ত্রীকে বিবাহ বিষয়ে এক বচনের প্রয়োগ দ্বারা বেশ বুঝা যাইতেছে যে বেদ শাস্ত্রানুসারে এক পুরুষের একমাত্র স্ত্রী ও স্ত্রীর পক্ষেও একমাত্র পতি হওয়া কৰ্ত্তব্য, অধিক নহে এবং দ্বিজাতিদিগের মধ্যে কখনও স্ত্রীপুরুষের বিয়োগ (Divorce) অথবা পুনর্বিবাহ হওয়া উচিত নহে। কিন্তু (বিধবের দেবরম্) যেরূপ বিধবা স্ত্রী দেবরের দ্বারা সন্তানোৎ পত্তি করিয়া থাকেন, তদ্রূপ তুমিও করিবে। বিধবার দ্বিতীয় পতিকেই দেবর বলা হয়। অতএব এইরূপ নিয়ম হওয়া উচিত যে, দ্বিজ অর্থাৎ ব্রাহ্মণ ক্ষত্রিয় ও বৈশ্যের মধ্যে দুইটী সন্তানোৎপত্তির জন্য নিযোগ হওয়া কর্ত্তব্য এবং শূদ্রের জন্য আমরণ কাল পর্যন্ত পুনর্বিবাহ হওয়া কর্তব্য, পরন্তু সকল কালেই মাতা, গুরুপত্নী, ভগিনী, কন্যা, পুত্রবধূআদির সহিত নিয়োগ করা সর্বথা ধর্ম্ম শাস্ত্র বিরুদ্ধ ও নিষিদ্ধ। এই নিয়োগবিশিষ্ট পুরুষদিগের সম্মতি ও স্ত্রী পুরুষের প্রসন্নতা দ্বারাই ঘটিতে পারে। যখন দ্বিতীয় গর্ভ হইবে তখন নিয়ম ভঙ্গ হইয়া যায়, এবং যে কেহ এই নিয়ম ভঙ্গ করিবেন তাহাকে দ্বিজকুল হইতে পৃথক করিয়া শুদ্রকুলে পতিত করিয়া দেওয়া কৰ্ত্তব্য।।১।।


(ইয়ং নারী পতি লোকং) যে বিধবা নারী পতিলোক অর্থাৎ পতি সুখের ইচ্ছা করিয়া নিয়োগ করিতে চাহে তৎপক্ষে (প্রেতম্) প্রথম পতির মৃত্যুর পর দ্বিতীয় পতি প্রাপ্ত হউক। (উপত্না মর্ত্য) এই মন্ত্রে স্ত্রী পুরুষ উভয়কেই পরস্পর আজ্ঞা দিতেছেন যে, হে পুরুষ। (ধর্ম্মং পুরাণমনুপালয়ন্তী) এই সনাতন নিয়োগধর্ম্ম পালনকারিণী স্ত্রীর সন্তানোৎ পত্তির হেতু (তস্যৈ প্রজাং দ্রবিণং চেহি ধেহি) ধৰ্ম্মযুক্ত হইযা বীর্য দান কর, যদ্দ্বারা ঐ স্ত্রী সন্তান লাভ করিয়া আনন্দে জীবন অতিবাহিত করিতে সমর্থ হয়। এইরূপে স্ত্রীর প্রতি আড্ডা দিতেছেন যে, যখন কোন পুরুষের স্ত্রী বিয়োগ হইবে এবং সেই পুরুষ যদি সন্তানোৎপত্তি করিতে অভিলাষী হয়, তবে ঐ বিধবা স্ত্রীও ঐ পুরুষের সহিত নিয়োগ করিয়া তাহাকে সন্তান লাভ করাইয়া দিবেন, এজন্য পরমেশ্বর বলিতেছেন যে, আমি আজ্ঞা দিতেছি যে, তুমি বা তোমরা কখনো মন বাক্য অথবা কর্ম্ম দ্বারা ব্যভিচারে প্রবৃত্ত হইও না, পরন্তু ধর্মযুক্ত নিয়োগ ও বিবাহ দ্বারা সন্তানোৎ পত্তি করিতে থাক।।২।।


(উদীর্ঘনারী) হে বিধবা নারী। (তুমি) তোমার মৃত পতিকে পরিত্যাগ করিয়া (অভিজীবলোকং এই জীবলোকে অর্থাৎ জীবন্ত দেবর অর্থাৎ দ্বিতীয় বরকে প্রাপ্ত হও তার্থাৎ যদি ইচ্ছা হয় তবে দ্বিতীয় পতির সহিত নিয়োগ করিয়া সন্তান প্রাপ্ত হও নচেৎ ব্রহ্মচর্যাশ্রমে স্থিত হইয়া অর্থাৎ ব্রহ্মচারিণী হইয়া কন্যা ও স্বীগণকে বিদ্যা শিক্ষা প্রদান কর। যদি নিয়োগ ধৰ্ম্মে স্থিত হইতে চাহ তাহা হইলে আমৃত্যু ঈশ্বরের ধ্যান ও সত্যধর্ম্মের অনুষ্ঠান জন্য প্রবৃত্ত হইয়া (হস্তগ্রাভস্য দিধিষোঃ) তোমার পাণিগ্রহণকারী দ্বিতীয় পতির সেবায় রত থাক ও তিনিও তোমার পালন করুন। তাহার এইরূপ দ্বিতীয় পতির নাম (দিধিষু), অর্থাৎ এইরূপ দ্বিতীয় পতিকে দিধিমু বলে। (তবেদং) এই দিধিষু তোমার সন্তান উৎপন্নকারী হউক, যদি তোমার জন্য অর্থাৎ তোমার পুত্রোৎ পাদন হেতু নিয়োগ করা হইয়া থাকে, তবে সেই পুত্র তোমার বা তোমার পূর্ব পতি কুলের হইবে। কিন্তু যদি তোমার নিযুক্ত বা নিয়োগিত পতির পুত্রার্থে তোমার সহিত নিয়োগ হইয়া থাকে তবে তোমার যে উৎপন্ন পুত্র, তাহা উক্ত পুরুষের হইবে (অর্থাৎ নিয়োগকারী পুরুষের পুত্রস্বরূপ গণ্য হইবে ও সেই পুত্রের অধিকার উক্ত পুরুষের হইবে— অনুবাদক) এইরূপে নিয়োগ দ্বারা আপনাপন সন্তান উৎপন্ন করিয়া দুজনে অর্থাৎ স্ত্রীপুরুষেরা সুখে থাকে।


ইমাং তুমিন্দ্ৰ মীঢ়বঃ সুপুত্ৰাং সুভগাং কৃণু । 

দশাস্যাং পুত্রানা ঘেঁহি পতিমেকাদশং কৃষি।।৪।।

সোমঃ প্রথমো বিবিদে গন্ধর্বো বিবিদ উত্তরঃ ।

তৃতীয়ো অগ্নিষ্টে পতিস্তরীয়ন্তে মনুষ্যজাঃ।।৫।।

[ঋগ্বেদ০অষ্ট০৮ অ০৩আ০২৭,২৮। মং০৫।৫]


 অদেবৃদ্ৰ্য্যুপতিঘ্ন্যুহৈধি শিৰা পশুভ্যঃ সুয়মা সুবৰ্চাঃ ।

 প্রজাবতী বীরসুর্দৈবৃকামা স্যোনেমমগ্লিং গার্হপত্যং সপৰ্য্য।।৬।।

[অথর্ব্ব কাং- ১৪ অনু০ ২ মং০ ১৮]


ভাষ্যম্ :- ইদানীং নিয়োগস্য সন্তানোৎপত্তেশ্চ পরিগণনং ক্রিয়তে–কতিবারং নিয়োগঃ কৰ্ত্তব্যঃ কিয়ন্তি সন্তানানি চোৎ পাদ্যানীতি, তদ্যথা-(ইমাং তুমিন্দ্ৰ০)। হেইন্দ্ৰ বিবাহিতপতে! (মীঢুবঃ) হে বীর্য্যাদানকৰ্ত্তত্ত্বমিমাং বিবাহিতস্ত্রিয়ং বীর্য্যসেকেন গর্ভযুক্তাং কুরু। তাং (সুপুত্রাম) শ্রেষ্ঠপুত্রবতীং (সুভগাং) অনুত্তমসুখযুক্তাং (কৃৎ) কুরু। (দশাস্যাং০) অস্যাং বিবাহিতস্ত্রিয়াং দশ পুত্রানাধেহি উৎপাদয়, নাতোধিকমিতি ঈশ্বরেণ দশসন্তানোৎ পাদনস্যৈবাজ্ঞা পুরুষায় দত্তেতি বিজ্ঞেয়ম্। তথা (পতিমেকাদশং কৃষি) হে স্ত্রি! ত্বং বিবাহিতপতিং গৃহীত্বৈকাদশপতিপর্য্যন্ত নিয়োগং কুরু। অর্থাৎ কস্যাচিদাপৎকালাবস্থায়াং প্রাপ্তায়ামেকৈকস্যাভাবে সন্তানোৎ পত্যর্থং দশমপুরুষপর্য্যন্তং নিয়োগং কুর্ম্যাৎ তথা পুরুষোৎপি বিবাহিতস্ত্রিয়াং মৃতায়াং সত্যাং সন্তানাভাবে একৈকস্যা অভাবে দশম্যা বিধবয়া সহ নিয়োগং করোত্বীতি, ইচ্ছা নাস্তি চেম্মা কুরুতাম্।।৪।।


অর্থোত্তরোত্তরং পতীনাং সংজ্ঞা বিধীয়তে–(সোমঃ প্রথমঃ০) হেস্ত্রি! যন্ত্রাং প্রথমঃ (বিবিদে) বিবাহিতঃ পতিঃ প্রাপ্নোতি স সৌকুমার্য্যাদিগুণযুক্ততাৎ সোমসংজ্ঞো ভবতি। (গন্ধর্বো বি০) য়স্তু উত্তরঃ দ্বিতীয়ো নিযুক্তঃ পতিবিধবাং তাং বিবিদে প্রাপ্নোতি স গন্ধর্বসংজ্ঞাং লভতে কুত! তস্য ভোগাভিজ্ঞতত্ত্বাৎ। (তৃতীয়ো অ0) য়েন সহস্ত্বং তৃতীয়বারং নিয়োগং করোয়ি সোऽগ্নিসংজ্ঞো জায়তে। কুতঃ ? খাভ্যাং পুরুষাভ্যাং ভুক্তভোগয়া তুয়া সহ নিযুক্তাদমিদাহবত্তস্য শরীরস্থধাতবো দহ্যন্ত 'ইত্যতঃ। (তুরীয়ন্তে মনুষ্যজাঃ) হেস্ত্রি। চতুর্থমারভা দশমপর্য্যস্তাস্তব পতয়ঃ সাধারণবলবীৰ্য্যত্বান্মনুস্যসংজ্ঞা ভবম্ভীতি বোধ্যম্। তথৈব স্ত্রীণামপি সোম্যা, গন্ধর্ব্য্যাশায়ী, মনুষ্যজাঃ সংজ্ঞাস্তদগুণ-যুক্তাদ ভবন্তীতি।।৫।। 

(অদেবৃক্নাপতিঘ্নি) হে অদেবৃদ্ধি দেবরসেবিকে! হে অপতিঘ্নি বিবাহিতপতিসেবিকে স্ত্রি ? তুং (শিবা) কল্যাণগুণযুক্তা, (পশুভ্যঃ সুয়মা সুবর্চ্চাঃ) গৃহকৃত্যেষু শোভননিয়মমুক্তা, গৃহসম্বদ্ধিপশু ভ্যোহিতা, শ্রেষ্ঠকান্তিবিদ্যাসহিতা, তথা (প্রজাবতী বীরসুঃ) প্রজাপালনতৎ পরা বীরসম্ভানোৎ পাদিকা, (দেব্‌কামা) নিয়োগেন দ্বিতীয়বরস্য কামনাবতী, (স্যোনা) সম্যক্‌ সুখযুক্তা সুখকারিণী সতী (ইমমগ্নিং গার্হপত্যং) গৃহসম্বন্ধিনমাহবনীয়াদিমমিং, সর্বং গৃহসম্বন্ধিব্যবহারং চ (সম্পয়া) প্রীত্যা সম্যক্ সেবয়। অত্র স্ক্রিয়াঃ পুরুষস্য চাপৎ কালে নিয়োগব্যবস্থা প্রতিপাদিতাস্তীতি বেদিতব্যম্। ইতি।।৬।। [ইতি নিয়োগবিষয়ঃ সংক্ষেপেতঃ]


।। ভাষাৰ্থ।।


এখন নিয়োগ বিষয়ে সন্তানোৎপত্তি পরিগণনা করা যাইতেছে, অর্থাৎ কতবার পর্যন্ত নিয়োগ করা যাইতে পারে ও কতগুলি পর্যন্তইবা নিয়োগ দ্বারা সন্তান উৎপত্তি। করা যাইতে পারে ইত্যাদি বিষয় বর্ণিত হইতেছে। (ইমাং) পরমেশ্বর মনুষ্যকে আজ্ঞা প্রদান করিতেছেন যে, হে ইন্দ্ৰপতে। অর্থাৎ ঐশ্বর্য্যযুক্ত বিবাহিত পতি! তুমি স্ত্রীকে বীর্য্যদান করিয়া সুপুত্র ও সৌভাগ্যযুক্ত কর। (মীঢ়বঃ) হে বীর্য্যপ্রদ (দশাস্যাং পুত্রানাধেহি) পুরুষ ! তুমি এই বিবাহিতা অথবা নিয়োজিতা স্ত্রীতে দশসন্তান পর্যন্ত উৎপন্ন কর, তদপেক্ষা অধিক সন্তান উৎপন্ন করিও না। (পতি মেকাং দশং কৃধি) অর্থাৎ স্ত্রীর প্রতিও যেন এইরূপ আদেশ করিতেছেন যে, হে স্ত্রী তুমি নিয়োগে একাদশ পতি পর্যান্ত করিবে অর্থাৎ প্রথমে বিবাহিত পতি ও তৎপরে দশম পর্যন্ত নিয়োজিত পতি কর অর্থাৎ করিতে পার। ইহার অধিক করিও না। 

ইহার ব্যবস্থা এইরূপ যে বিবাহিত পতির যদি মৃত্যু হয় অথবা ক্লীবাদি রোগ হয়, কিন্তুা যদি পতির স্ত্রীবিয়োগ হয় অথবা তাহার বন্ধ্যাদি দোষ থাকে অথবা অন্য কোন প্রকার আপৎকাল উপস্থিত হয়, তাহা হইলে সেই স্ত্রী বা পুরুষ সন্তানের অভাব হইলে একে অপরের সহিত নিয়োগ করিবে। যদি নিয়োজিত দ্বিতীয় পতি বা স্ত্রীর মধ্যে কাহারও পুনঃ দুষ্ট রোগাদি উপস্থিত হয় অথবা বিয়োগ বা মৃত্যু ঘটে, তবে তৃতীয় পতি বা স্ত্রীর সহিত নিয়োগ করিবে, (অর্থাৎ পুরুষের নিয়োগ আবশ্যক হইলে স্ত্রীর সহিত ও স্ত্রীর নিয়োগ আবশ্যক হইলে পুরুষের সহিত নিয়োগ করিবে-অনুবাদক) এইরূপে দশমবার পর্যান্ত নিয়োগ করিবার আজ্ঞা বেদশাস্ত্রে লিখিত আছে। কিন্তু একসময়ে এক ভিন্ন দুইজন বীৰ্য্যাদাতা পতি থাকিবে না অর্থাৎ একসময়ে দুই নিয়োজিত পতি থাকিতে পারে না। পুরুষের পক্ষেও এইরূপে বিবাহিতা স্ত্রীর মৃত্যু ঘটিলে কোন বিধবার সহিত নিয়োগ করিবার আজ্ঞা লিখিত আছে। কিন্তু যদি ঐ নিয়োজিত স্ত্রীর কোনরূপ বন্ধ্যাদি দোষ বা অপর কোন প্রকার সংক্রামক রোগাদি প্রকাশ পায়, অথবা যদি মৃত্যু ঘটে, তবে সন্তানোপত্তি হেতু আবশ্যক হইলে দশম বিধবা স্ত্রী পর্যান্তের সহিত নিয়োগ করিবে (করিতে পারে–অনুবাদক) 18


এখন ভিন্ন-ভিন্ন পতির সংখ্যা বলা হইতেছে যথাঃ- (সোমঃ প্রথমো বিবিদে) অর্থাৎ সর্ব প্রথমে বিবাহিত পতিকে সোম সংজ্ঞা দেওয়া হয়, যেহেতু ঐ প্রথম পতি সুকুমার হওয়ায় অপরাপর পতি অপেক্ষা অল্পবয়স্ক হন এবং মুদু আদি গুণযুক্ত হইয়া থাকেন। (গন্ধর্বো বিবিদ উত্তরঃ) দ্বিতীয় পতি নিয়োগ দ্বারা হওয়ায় তিনি গন্ধর্ব সংজ্ঞাকরী হন। অর্থাৎ তাহাকে গন্ধর্ব (ইচ্ছানুকুল) মতে বরণ করা হইয়াছে ও বিশেষতঃ তিনি ভোগাভিজ্ঞ বশতঃ, গন্ধর্ব সংজ্ঞা প্রাপ্ত হন। (তৃতীয়ো অগ্নিষ্টে পতিঃ) যে তৃতীয় পতি নিয়োগ দ্বারা প্রাপ্ত হওয়া যায় তিনি অগ্নি সংজ্ঞাকারী অর্থাৎ তেজস্বী ও অপেক্ষাকৃত অধিক বয়স্কের হেতু অগ্নি সংজ্ঞা প্রাপ্ত হন। (তুরীয়স্তে মনুষ্যজাঃ) অর্থাৎ চতুর্থ হইতে দশম পর্যন্ত নিযুক্ত পতি সকল সাধারণ বলবীর্য্যশালী হওয়ায়, মনুষ্য সংজ্ঞা প্রাপ্ত হন।৫।


(অদেবৃঘ্ন পতিঘ্নী) হে অদেবৃঘ্নি দেবর সেবিকে ! হে অপতিঘ্নি! অর্থাৎ হে বিধবা স্ত্রী! তুমি তোমার দেবর অর্থাৎ দ্বিতীয় পতির সুখদায়িনী হও, কখনও তাহার প্রতি অপ্রিয় কার্য করিও না এবং তোমার দ্বিতীয় পতি যেন কোনরূপ তোমার প্রতি অপ্রিয় কার্য্য না করেন। (এধি শিবা) এই প্রকার মঙ্গলানুষ্ঠান দ্বারা সদা সুখের বৃদ্ধি করিতে থাক। (পশুভাঃ সুয়মা সুবচাঃ) গৃহ পালিত পন্থাদি প্রাণিগণের রক্ষা করিয়া ও জিতেন্দ্ৰিয় হইয়া ধর্ম্মযুক্ত শ্রেষ্ঠ কার্য্যানুষ্ঠানে রত থাক এবং সর্ব্বপ্রকারে বিদ্যারূপ উত্তম তেজের বৃদ্ধি কর। (প্রজাবতী বীরসূঃ) তুমি শ্রেষ্ঠ প্রজাযুক্ত হও ও বড় বড় বীর পুরুষ উৎপন্ন কর, (অর্থাৎ তোমার গর্ভে শ্রেষ্ঠ ও বীর পুরুষ জন্ম গ্রহণ করুক – অনুবাদক)। (দেবৃকামা) নিয়োগ দ্বারা দ্বিতীয় বর কামনাবতী স্ত্রী অর্থাৎ হে স্ত্রী, যদি তোমার দেবর বা দ্বিতীয় বরের কামনা থাকে, অথবা যদি পতি কুণ্ঠা রোগগ্রস্থ হয়, কিম্বা ক্লীবাদি দোষযুক্ত প্রকাশ পায়, তাহা হইলে দ্বিতীয় পতির সহিত নিয়োগ করিয়া সন্তানোৎপত্তি করিবে, এবং (স্যোনেমথিং গার্হপত্যং সপৰ্য) তুমি গৃহস্থসম্বন্ধীয় অগ্নিহোত্রাদি অবশ্য কৰ্ত্তব্য কৰ্ম্মগুলিকে সর্ব্বদা প্রীতির সহিত সেবন বা সাধন করিবে। ৬।

মনুস্মৃতি ৯/৫৯-৫৮
দেবরাদ্বা সপিণ্ডাদ্বা স্ত্রিয়া সম্যক্ নিয়ুক্তয়া।
প্রজেপ্সিতাধিগন্তব্যা সন্তানস্য পরিক্ষয়ে ৷৷ ৫৯।।
জ্যেষ্ঠো য়বীয়সো ভার্য়াং য়বীয়ান্ বাগ্রজস্ত্রিয়ম্।
পতিতৌ ভবতো গত্বা নিয়ুক্তাবপ্যনাপদি৷৷৫৮।।
পতির দ্বারা সন্তান উৎপন্ন না হওয়ার কারণে, সন্তান রহিত অবস্থায় পতির মৃত্যু কারণে অথবা কোনো কারণে সন্তানের অভাব হওয়াতে আত্মীয়স্বজনদের দ্বারা শাস্ত্রোক্ত বিধি দ্বারা নিয়োগের জন্য নিযুক্ত হওয়া স্ত্রী দেবর=বর্ণস্থ অথবা নিজের চেয়ে উত্তম বর্ণের পুরুষ অথবা পতির ছয় পুরুষের মধ্যে পতির কনিষ্ঠ ভ্রাতা অথবা জ্যৈষ্ঠ ভ্রাতার দ্বারা নিয়োগ করে সন্তান প্রাপ্ত করা উচিত।
মনুস্মৃতি এই দুই শ্লোকের ব্যাখ্যায় ঋষি দয়ানন্দ লিখেছেন- ''সপিণ্ড অর্থাৎ পতির ছয় পুরুষের মধ্যে, পতির কনিষ্ঠ বা জ্যেষ্ঠ ভ্রাতা, অথবা স্বজাতীয় এবং নিজ অপেক্ষা উচ্চ জাতিস্থ পুরুষের সহিত বিধবা স্ত্রীর নিয়োগ হওয়া উচিত। যদি বিপত্নীক পুরুষ এবং বিধবা স্ত্রী সন্তান কামনা করে,তবে তার নিয়োগ হওয়া উচিত। সর্বথা সন্তানের অভাব হলে নিয়োগ হবে। আপতকালে অর্থাৎ সন্তান ব্যতীত, জ্যেষ্ঠ ভ্রাতার স্ত্রীর সহিত কনিষ্ঠ ভ্রাতার অথবা কনিষ্ঠ ভ্রাতার স্ত্রীর সহিত জ্যেষ্ঠ ভ্রাতার নিয়োগ হলে এবং সন্তানোৎপত্তির পরেও নিযুক্তগণ পরস্পর সমাগম করলে পতিত বলে গণ্য হবে।'' অর্থাৎ বলা যায় যে এই নিয়োগের শুধুমাত্র আপত্কালে সন্তান উৎপত্তির জন্য এক প্রকার বিধিব্যবস্থা, উক্ত শ্লোক থেকে এটাও প্রমাণ হলো নিয়োগ গুরুজন আদির সম্মতিতেই করা হয়ে থাকে কিন্তু কেউ যদি আপত্কালে ব্যতীত এইরূপ সমাগম করে তাহলে সেটা ব্যভিচার বলেই গণ্য হবে।
মনুস্মৃতি ৯/৭৬..৮১
প্রোষিতো ধর্মকার্য়ার্থং প্রতীক্ষ্যোঽষ্টে নরঃ সমাঃ।
বিদ্যার্থং ষড্য়শোঽর্থং বা কামার্থং ত্রীংস্তু বৎসরান্।।
বন্ধ্যাষ্টমেঽ ধিবেদ্যাব্দে দশমে তু মৃতপ্ৰজা।।
একাদশে স্ত্রীজননী সদ্যস্ত্বপ্রিয়বাদিনী।।
বিবাহিত পতি ধর্মার্থে বিদেশ গমন করলে বিবাহিতা স্ত্রী আট বৎসর, বিদ্যা ও কীর্তির জন্য গমন করে থাকলে ছয় বৎসর এবং ধনাদি কামনায় গমন করে থাকলে তিন বৎসর অবধি প্রতীক্ষা করার তদন্তর সন্তান উৎপত্তি করবে। বিবাহিত পতি ফিরে আসলে নিযুক্ত পতির সাথে কোন সম্বন্ধ থাকবে না।।
সেইরূপ পুরুষের পক্ষেও নিয়ম এই যে স্ত্রী বন্ধ্যা হলে আট বৎসর (বিবাহের পর আট বৎসর পর্য্যন্ত তার গর্ভ না হলে) সন্তান হওয়ার পর মৃত্যু হয়ে গেলে দশ বৎসর এবং গর্ভবতী হয়ে প্রত্যেক বার পুত্র প্রসব না করে কন্যা প্রসব করলে একাদশ বৎসর অপেক্ষা করিবে। কিন্তু স্ত্রী অপ্রিয়বাদিনী হলে তাহাকে সদ্য পরিত্যাগ করে অন্য স্ত্রীর সহিত নিয়োগ দ্বারা সন্তান উৎপত্তি করবে।


উপরোক্ত প্রকারে বিধবা স্ত্রী অথবা স্ত্রীবিয়োগ মুক্ত পুরুষ, তোমরা দুইজনে আপৎকালে ধর্মাচারণ পুর্বক পুত্রোৎপাদন করিবে, উত্তমোত্তম কর্ম্ম গুলিকে সিদ্ধ করিবে, কখনও গর্ভহত্যা বা ব্যভিচারাদি মহাপাতকে প্রবৃত্ত হইও না, কিন্তু নিয়োগ দ্বারা ঐ সমস্ত মহাপাতক হইতে নিজদিগকে রক্ষা করিবে এবং এইরূপ ব্যবস্থা আপৎকালের ড.না সৰ্ব্বাপেক্ষা উত্তম ব্যবস্থা জানিবে।


ইতি নিযোগ বিষয় সংক্ষেপতঃ সমাপ্তঃ


No comments:

Post a Comment

ধন্যবাদ

বৈশিষ্ট্যযুক্ত পোস্ট

অথর্ববেদ ২/১৩/৪

  ह्यश्मा॑न॒मा ति॒ष्ठाश्मा॑ भवतु ते त॒नूः। कृ॒ण्वन्तु॒ विश्वे॑ दे॒वा आयु॑ष्टे श॒रदः॑ श॒तम् ॥ ত্রহ্যশ্মানমা তিষ্ঠাশ্মা ভবতুতে তনূঃ। কৃণ্বন্তু...

Post Top Ad

ধন্যবাদ