শাস্ত্রার্থ - মৃতক শ্রাদ্ধ
আর্য সমাজ থেকে শাস্ত্রার্থ কর্তা - শ্রী অমর স্বামী সরস্বতী
পৌরাণিক সমাজ থেকে শাস্ত্রার্থ কর্তা - শ্রী পণ্ডিত প্রেমাচার্য জী শাস্ত্রী
সহায়ক - শ্রী পণ্ডিত রামেশ্বরাচার্য জী শাস্ত্রী (বনারস)
পৌরাণিক সমাজ থেকে শাস্ত্রার্থ প্রধান - শ্রী পণ্ডিত বালকৃষ্ণ জী বর্মালঙ্কার
আর্য সমাজ থেকে শাস্ত্রার্থ প্রধান - শ্রী স্বামী ওমানন্দ জী সরস্বতী (পূর্ব আচার্য্য ভগবান দেব জী, গুরুকুল ঝাজ্জর)
অন্য উপস্থিত বিদ্বান - শ্রী ওমপ্রকাশ জী শাস্ত্রী বিদ্যাভাস্কর, শ্রী পণ্ডিত রাজবীর জী শাস্ত্রী (সম্পাদক - দয়ানন্দ-সন্দেশ) এবং অনেক বিদ্বান।
শ্রী পণ্ডিত প্রেমাচার্য জী শাস্ত্রী -
আদরণীয় বিদ্বানগণ! মহান পূজনীয় মাতাগণ, বোনেরা আর সজ্জনগণ! এখন শাস্ত্রার্থ শুরু হবে, আদরণীয় অধ্যক্ষ মহোদয়কে প্রার্থনা করছি যে, এখনও পোনে আট বাজতে তিন মিনিট বাকি আছে। সুতরাং পোনে আট বাজা পর্যন্ত আমার কথা শুনুন। পোনে আট বেজে গেলে শাস্ত্রার্থ আরম্ভ করবো।
সকল অধ্যক্ষ মহোদয়! বিদ্বানগণ!! কাল মূর্তিপূজার উপর শাস্ত্রার্থ হয়েছে যা খুবই সরলতা আর প্রসন্নতার সঙ্গে সম্পন্ন হয়েছে। একটু চেঁচামেচি হয়েছিল সেখানে, কিছু হাততালিও বাজে। সেটা বিদ্বত্ জনের আদেশ ছিল, আশা করি আজ ওরকম বিঘ্ন হবে না আর সকলে শান্তভাবে শুনবে। আশা করি কেউ হাততালি বাজাবে না আর না কেউ বিঘ্ন করবে, আমাদের অধ্যক্ষ মহোদয়... (টন টন টন....)
শ্রী স্বামী ওমানন্দ জী সরস্বতী -
আমি নিবেদন করবো কারণ সময় হয়ে গেছে শাস্ত্রার্থ করার! শ্রী প্রেমাচার্য জী শাস্ত্রী আজ এই বিষয়ে শাস্ত্রার্থ করছেন যে, শ্রাদ্ধ জীবিতদের হয় নাকি মৃতকদের? তার বিষয় হবে "শ্রাদ্ধ মৃতকের হয় জীবিতদের নয়" আর আর্য সমাজের থেকে প্রশ্ন হবে "শ্রাদ্ধ জীবিতদের হয় মৃতকদের নয়"। আমি প্রেমাচার্য জী শাস্ত্রীকে প্রার্থনা করছি যে, শাস্ত্রার্থ আরম্ভ করুন।
শ্রী পণ্ডিত প্রেমাচার্য জী শাস্ত্রী -
হরি ওম্! দয়ৌ দর্শনম্ নিদ্দহানাম্ দিশিবিদিশ স্প্রহ সা বিদ্মর্জিবাহ্য়াবাহ্য়ারন্ধকারক্ষত জগদগম্দকারথোম্নাম্ স্বধাম্নাম। দো কর জোর দূর গর্জত্ বিপুথরবষকুণ্ঠকৈল্ব কল্পাত্জ্বালা তাজ্বল্য়মানাবিকর সততম্ বিপ্রয়া বিপ্রতানি।। মুকম্ করোতি বাচালম্ পম্গুম্ লম্ঘ্য়তে গিরিম্। য়ত্ কৃপা তম্হম্ বন্দে পরমানন্দ মাধবমম্।।
মাননীয় সভাপতি যুগল, বন্দনীয় বিদ্বত্ মন্ডলী, ধর্মানুরাগী সজ্জনগণ এবং দেবীগণ!! আপনারা এখনই যা শুনলেন আজকের শাস্ত্রার্থের বিষয় হল "শ্রাদ্ধ"। আমি তার পূর্বে নিবেদন করে দিতে চাই যে, আর্য সমাজ আর পৌরাণিক সনাতনী সমাজ এই দুই সমাজও শ্রাদ্ধকে মানে। আর্য সমাজ শ্রাদ্ধকে মানে না, এমনটা নয়। আজ বিবাদ এই বিষয়ে যে, আর্য সমাজী সজ্জনগণ বলছেন যে শ্রাদ্ধ জীবিতদের হওয়া উচিত। আমাদের যে বাপ-দাদা মরেছে, তারা মরে ছাই হয়েগেছে। তাদের সঙ্গে আমাদের আর কোনো সম্পর্ক নেই ঝগড়া শেষ। এই কারণে জীবিত থাকতে যা করার করে ফেলো। মরার পর তাদের সঙ্গে আমাদের কোনো সম্পর্ক নেই। কিন্তু সনাতনী ধর্মীর পক্ষ তো এটা যে, যতদিন তোমাদের মাতা-পিতা জীবিত আছে তো জীবিত মাতা-পিতার সেবা করো, তাদের আজ্ঞা মানো, যেমনটা তারা বলে তা করো, করার চেষ্টা করো কিন্তু যখন তারা মরে যায় অর্থাৎ সময় আসলে মৃত্যু প্রাপ্ত হয় তো মরে যাওয়ার পরেও আমাদের তাদের প্রতি কর্তব্য সমাপ্ত শেষ হয়ে যায় না। মরার পরেও আমাদের উপর কিছু দায়িত্ব থেকে যায়। যে আমরা তাদের জন্য কিছু করি। শাস্ত্র বলে যে, পুত্র কে? কাকে পুত্র বলে? শাস্ত্রকার বলে -
জীবিতো বাক্য কর্ণাত্, মৃতাহে ভূরি ভূজনাত।
গয়ায়াম্ পিণ্ডদানাচ্চ, ত্রিবিদ্ পুত্রস্য পুত্রতা।।
যারা তিন কর্ম করে তারা হল পুত্র। কোন তিন কর্ম? যতদিন মাতা-পিতা জীবিত থাকে তাদের আজ্ঞা মানা, তাদের সেবা করা। যখন তারা মরে যায়, তাদের জন্য পিণ্ডদান, তর্পন, শ্রাদ্ধ করা। আর তৃতীয় কর্ম এটা হল যে, "গয়া" তীর্থে গিয়ে সম্ভব হয় তো চেষ্টা করে, পিণ্ডদান করা। এই তিন কর্ম যারা করে তারা পুত্র! ক্ষমা করবেন, আজকের বিষয় বেদাদী শাস্ত্র দ্বারা আমাদের প্রমাণিত করতে হবে। দেখুন, আপনারা সকলে এটা জানেন যে, এই সংসারে যারাই ঈশ্বরবাদী ভগবানকে মানে এমন লোক আছে তারা কোনো না কোনো ভাবে নিজের মৃত ব্যাক্তির প্রতি যিনি মরে গেছেন, আমাদের থেকে দূরে চলে গেছে, তার প্রতি নিজের কিছু না কিছু সম্বন্ধ বানিয়ে রাখে আর কোনো না কোনো রূপে শ্রাদ্ধ করে থাকে। দেখুন, মনে করুন কোনো মহাপুরুষ বা নেতা অথবা লিডার, কেউ মরে যায় তো আর কিছু করুক না করুক তবে ২মিনিটের মৌন রাখা হয়। ২ মিনিট তো শান্তি রাখে দাড়িয়ে থেকে। তো এটাও মৃত ব্যাক্তির প্রতি আমরা কিছু করলাম, আমরা শান্ত থাকি, শান্তি পাঠ করি। মৌন থাকি। এটা আমরা নিজে তার প্রতি কর্তব্য নিভাই। এই প্রকার আমাদের মুসলিম ভাই তারাও কবরের উপর গিয়ে ফুল বাতাসা চরায়, এই কার্য করে। এই প্রকার ঈশাঈ সজ্জনরাও কবরে গিয়ে মোম বাতি জ্বালায়, যাতে তার পথ উজ্জ্বল হয়, মৃত ব্যাক্তির আত্মা, এই ভাবনায় মোমবাতি জ্বালায়, তো বলার তাৎপর্য হল এই যে সম্পূর্ন বিশ্বে, আমাদের শিখ সজ্জন নিজের মৃতকের জন্য এক বিশেষ প্রসাদ দরগাতে বানায় তথা তাকে বিতরণ করে। আর যখন প্রসাদ বিতরণ করে গুরুদারগাহে, তখন দরগাহের মধ্যে, এটা বলা হয় - অমুক ব্যাক্তি অমুক ব্যাক্তির জন্য ভেট চড়িয়েছে, তো কবুল করা হোক। তো বলার মানে হল এই যে, মৃত ব্যাক্তির প্রতি কিছু না কিছু করার ভাবনা আমরা সংসারের সকল ঈশ্বরবাদী মত-মতান্তর বাদীদের মাঝে দেখতে পাই। কিন্তু সনাতন ধর্ম হল যেহেতু বেদক্ত ধর্ম, বেদ - আমাদের কি করা উচিত, কি করে করবো, কোন কোন কার্য করবো? আমাদের অন্ধকারে রাখে না বরং তা আমাদের এক সুস্পষ্ট মার্গ আমাদের সম্মুখে রাখে। আমি আপনাদের বেদমন্ত্র বলে এই কথার স্থাপনা করবো যে, শাস্ত্রে আমাদের কি ভাবে শ্রাদ্ধ করা উচিত তা আমাদের বেদ বলেছে। দেখুন সজ্জনগণ ! আর কেউ হয়তো বিষয় সংক্ষেপে অথবা কিছু মন্ত্রে বর্ণিত করেছে, এমনটা হতে পারে, কিন্তু শ্রাদ্ধ হল এক এমন বিষয় যাকে বেদে এক-দুই মন্ত্রে নয় বরং সহস্র মন্ত্রে বর্ণিত করা হয়েছে, আর খুব প্রসন্নতার কথা হল, সেই বেদ মন্ত্রগুলোকে যাকে আজ আমি আপনাদের সামনে তুলে ধরবো। সে বেদমন্ত্র আর্য প্রতিনিধি সভা পাঞ্জাব দ্বারা দুই বিদ্বান নিযুক্ত করা হয় তাদের মধ্যে এক পণ্ডিত তডিৎকান্ত বিদ্যালঙ্কার আর দ্বিতীয় পণ্ডিত শ্রী দামোদর সাতবলেকর জী, যে দয়ানন্দ জন্ম শতাব্দী সমারোহ মথুরা, যেমনটা শতাব্দী সমারোহ এখন করার প্রস্তুতি চলছে, এরকমই স্বামী দয়ানন্দ জন্ম শতাব্দী সমারোহ করা হয়েছিল মথুরাতে। সেখানে যে সভাপতি হয়েছিল সুপ্রসিদ্ধ বেদ বিদ্বান শ্রী পণ্ডিত দামোদর সাতবলেকর! শ্রী পাদ্ দামোদর সাতবলেকর!! তার বেদ ভাষ্য সকলে জানে, সকলে সুপরিচিত, তিনি প্রতিনিধি সভার আজ্ঞায় বেদ মন্ত্রের অনুসন্ধান করেন আর বেদ মন্ত্রের অনুসন্ধান করে প্রায় অন্তত দুই সহস্র মন্ত্র, এক-দুই নয় দুই সহস্র! সজ্জনগণ দুই হাজা...র মন্ত্র বেদ থেকে বের করেন। যেখানে মৃতকের প্রতি শ্রদ্ধা করার বর্ণন বিদ্যমান আছে। এইরকম 'যম আর পিতর' নামের পুস্তক মঙ্গলদেব তডিৎকান্ত বিদ্যালঙ্কার জী লেখেন। যা শ্রী পাদ্ দামোদর সাতবলেকর জীর প্রেসে ছাপা হয়, সে পুস্তক যেহেতু কেবল সদস্যদের জন্য ছিল, বিক্রির জন্য নয়, আমার প্রিয় কোনো এক আর্য সমাজী সদস্য প্রেমপূর্বক সেই পুস্তকটি আমাকে উপহার দেয়, সেটা আমি নিজের সঙ্গে নিয়ে এসেছি, সেই পুস্তকে এই মন্ত্র সংগ্রহীত করা হয়েছে, আর মৃতক শ্রাদ্ধের মন্ত্র একত্রিত করার কার্যে প্রসন্ন হয়ে প্রতিনিধি সভা পাঞ্জাব শ্রী পাদ্ দামোদর মহারাজ সাতবলেকর জীকে ধন্যবাদ দেয়, ধন্যবাদের শব্দ আমি আপনাদের খুঁজে নিয়ে শোনাবো। এটা শ্রী পাদ্ দামোদর সাতবলেকর জীর গ্রন্থ, এর নাম "বেদামৃত", সজ্জন গণ! বেদামৃত!! আর্য প্রতিনিধি সভা পাঞ্জাব, লাহোর! তার সার্টিফিকেট আছে যা তার উপর ছাপা আছে, এখানে লেখা আছে - "সভা পণ্ডিত জীকে হার্দিক ধন্যবাদ দেয়, যে তিনি এরকম পরম পুনীত গ্রন্থকে প্রকাশিত করেছেন আর এরকম মন্ত্রের সংগ্রহ করেছেন।" এই জন্য বেদের মন্ত্রের সংগ্রহ স্বয়ং আর্য সমাজী বিদ্বানগণের দ্বারা যারা মৃতক শ্রাদ্ধ মণ্ডনকারী এক-দুই মন্ত্র নয় বরং আড়াই হাজার মন্ত্র আছে, সেই মন্ত্রগুলো থেকে এক-দুইটা আপনাদের সামনে উপস্থিত করবো, কারণ সময় সীমিত, যখন-যখন আমার টার্ন আসবে আমি আপনাদের আরও মন্ত্র শোনাবো, সর্বপ্রথম কথা হল যে, শাস্ত্রকার বলছে যে, শ্রাদ্ধ কাকে বলে? শ্রাদ্ধের মানে কি? শ্রাদ্ধ শব্দ কি? এর উপর শ্রাদ্ধ কল্পের প্রমাণ আমি আপনাদের শোনাচ্ছি। দেখুন আর ধ্যান দিয়ে শুনুন -
প্রেতান পিতৃশ্চে নির্দিশ্য ভোজ্যম্ য়ত্ প্রিয়মাত্মনঃ।
শ্রদ্ধয়া দীয়তে য়স্মাত্, তস্মাত্ শ্রাদ্ধ ইতি স্মৃতঃ।।
নিজের মরে যাওয়া পিতরের নামে যে ভোজন যে ভোজ্য পদার্থ আমরা শ্রদ্ধাপূর্বক সমর্পণ করি, সেই ক্রিয়ার নাম হল শ্রাদ্ধ। আপনারা জেনে থাকবেন যে শ্রাদ্ধের উপর শাস্ত্রার্থ আজই যে প্রথম হচ্ছে তা নয়! অনেক বার হয়ে এসেছে, আগেও অনেক হয়েছে, আর যেরকম আর্য সন্যাসী আপনাদের সামনে বিরাজমান আছেন, এরকমই সুপ্রসিদ্ধ আর্য সন্যাসী শ্রী স্বামী দর্শনানন্দ জী মহারাজ ছিলেন, ওনার শাস্ত্রার্থ শ্রী পণ্ডিত গণেশ দত্ত মহামহোপাধ্যায় পৌরাণিক সমাজের বিদ্বান মহোদয়ের সঙ্গেও হয়েছিল, আর সেই শাস্ত্রার্থকে লিখিত রূপে পাঠিয়ে দেওয়া হয় "জার্মানী" প্রফেসর ম্যাক্সমুলারের নিকট নির্ণয় নেওয়ার জন্য। প্রফেসর ম্যাক্সমুলার দুই পক্ষকে পড়ে নিজের সিদ্ধান্ত পাঠিয়ে দেয়। সেটা তার নিজের অরিজিনাল সিদ্ধান্ত আমার কাছে আছে। আমি পরবর্তী আমার টার্ন আসলে আপনাদের পড়ে শোনাবো। আর প্রফেসর ম্যাক্সমুলার এই সিদ্ধান্ত দেয় যে, আমি দুই পক্ষকে দেখে এটা নির্ণয় করছি যে "হিন্দুদের মধ্যে যে শ্রাদ্ধের পরম্পরা চলে আসছে, মৃতকের প্রতি শ্রদ্ধা করার, এটা বেদ শাস্ত্র অনুমোদিত" আর যে শ্লোক আমি আপনাদের শুনিয়েছি শ্রাদ্ধকল্পের প্রফেসর ম্যাক্সমুলারও সেটাই উদ্ধৃত করে। তো শ্রাদ্ধ বলা হয় - মরে যাওয়া পিতরের নামে যা করা হয় কার্য বিশেষ! তার নাম হল "শ্রাদ্ধ"। প্রথম কথা হল শ্রাদ্ধের তাৎপর্য হল এটা। আচ্ছা এখন পিতর শব্দ অনেক বার শুনবেন। পিতর যা আপনারা পরে শুনবেন তা আমি আগেই বলে দিচ্ছি, পিতর-পিতর শব্দ অনেক বার শুনবেন, আর আপনারা জবাবে শুনবেন "পিতর" মানে "পিতৌ" অর্থাৎ মা-বাপ! কিন্তু এমনটা নয় এটা হল "পিতৃ" শব্দ, পিতর শব্দ হল টেকনিক্যাল এক শাস্ত্রীয় শব্দ বিশেষ। এর নাম হল পিতর, বেদ মন্ত্র শোনাচ্ছি ধ্যান দেবেন - অধামৃতাম্ পিত্রেষু সম্ভবন্তু" এটা হল অনেক সোজা সংস্কৃত অর্থাৎ যে অধামৃতঃ যে মরে যায়, মরে গেছে সে পিত্রেষু সম্ভবন্তু তাদের পিতরদের মধ্যে গণা হয়। তো বলার তাৎপর্য হল এই যে মৃতককে পিতর বলে। কোনো জীবিতের অর্থের পিতর শব্দ অর্থ হয় না। এখন আমি আপনাদের সামনে বেদ মন্ত্র শোনাতে যাচ্ছি আর আশা করবো আমাদের শ্রী অমর স্বামী জী এটার উপর বিচার করবেন। আর বেদ থেকে কোনো এমন মন্ত্র খুঁজে দেখাবেন যেখানে মৃতক শ্রাদ্ধ করার নিষেধ রয়েছে, আর জীবিতের শ্রাদ্ধ করার বিধান রয়েছে, হ্যাঁ, এদিক-ওদিকের কথা বললে চলবে না, বেদ মন্ত্র চাচ্ছি, আমি আগে থেকে বলে রাখছি। বেদের মন্ত্র উপস্থিত করুন যে, জীবিতের শ্রাদ্ধ হবে, মৃতকের হবে না। আমি আপনাকে শোনাচ্ছি সহস্র মন্ত্রের মধ্যে, সময় খুব কম রয়েছে, দুই-তিন উদাহরণ শোনাচ্ছি, শ্রাদ্ধের সময় আমাদের এখানে যখন পিতরদের আহ্বান করা হয় তখন এই মন্ত্র বলা হয়, কি বলা হয়? শুনুন -
য়ে নিখাতা য়ে পারোক্তা য়ে দগ্ধা য়ে চোদ্ধৃতা।
সর্বান্স্তান্ আবহ পিত্রে ন হবিষে অত্তবে।।
এখানে অগ্নির নিকট প্রার্থনা করা হয়েছে - হে অগ্নিদেব, এটা দেখাচ্ছে হিন্দু ধর্মে মৃতকের সংস্কার করা হয় চার প্রকারে - ভাইয়েরা! যে বিনা দাঁতে মারা যায় তো তাকে ভূমিতে পোতা হয়। সাধারণ লোককে জ্বালানো হয় শ্মশানে। আর যার কুষ্ঠ, বা রোগী, এমন কোনো ব্যাক্তি যদি হয় তো তার শবকে জলে ভাসিয়ে দেওয়ার পরম্পরা আছে। আর যিনি কুটীচক সন্যাসী তার শবকে শ্মশানে ছেড়ে দেওয়া, খোলা স্থানে রেখে দেওয়া, এই পরম্পরা চার প্রকারে চলে তো এই মন্ত্রে সেই চার প্রকারের গণনা করা হয়েছে। য়ে নিখাতা, য়ে পরোক্তা, য়ে দগ্ধা, য়ে চোদ্ধৃতা, তো এই চার সেই সকল প্রকারের পিতরে হবিশ অত্তবে, হবি খাওয়ার জন্য হে অগ্নিদেব! আমি তোমার কাছে প্রার্থনা করছি। তুমি একে নিয়ে যাও এটা প্রথম মন্ত্র, ধ্যান দেবেন। দ্বিতীয় মন্ত্র "য়ে অগ্নি দগ্ধা" ধ্যান দেবেন কোথাকার মন্ত্র? অথর্ববেদ কান্ড ১৮ সুক্ত ৪ মন্ত্র ৪৮, সংখ্যা খুলে দেখে নিন -
য়দ্ বো অগ্নি রজহাদেক মগম, পিতৃলোকম্ গময়ঞ্জাতবেদাঃ।
তদ্ ব এতত্ পুনরাপ্যাপয়ামি, সাঙ্গা স্বর্গে পিতরো মাদয়ধ্বম্।।
এখানে বলা হয়েছে, মন্ত্রে! অর্থ বলার সময় নেই ভাইগণ! পরবর্তী টার্নে আপনাদের আমি অর্থও বলে দিবো, সংক্ষেপে শুনুন! এই মন্ত্রে বলা হয়েছে যে - হে পিতরগণ! যখন আপনি আমার শরীরকে পরিত্যাগ করেছেন তো অগ্নি আপনার শরীরকে ভস্ম করেছে। তো এই পিণ্ডদানাদি দ্বারা আমি আপনাকে পুনঃ সঙ্গ বানাই আর এই শ্রাদ্ধে আপনাকে আমন্ত্রিত করি। এইভাবে "য়ে অগ্নি দগ্ধা, য়ে অনগ্নিদগ্ধামধ্য়ে দিবস স্বধয়া মাধয়ন্তে" এরমধ্যেও যা আগুনে জ্বালানো আছে অথবা যা আগুনে জ্বালিয়ে যার সংস্কার করা হয় নি সেসব প্রকারের পিতরগণকে এখানে আহ্বান করা হয়েছে। এই যে মন্ত্র আমি আপনাদের শোনালাম এখনই এই মন্ত্রের হিন্দি মানে শুনে নিন, তা নয় তো আমার টার্ন শেষ হয়ে যাবে। ... (টং টং টং ss....) আচ্ছা পরের বার শোনাবো।
শ্রী অমর স্বামী জী মহারাজ -
ও৩ম্ শন্নো মিত্রঃ শম্ বরুণঃ শন্নো ভবত্বর্য়্যমা।
শন্নঽ ইন্দ্রো বৃহস্পতিঃ শন্নো বিষ্ণুরুরুক্রমঃ।।
নমো ব্রহ্মণে নমস্তে বায়ো ত্বমেব প্রত্যক্ষম্ ব্রহ্মাসি।
ত্বামেব প্রত্যক্ষম্ ব্রহ্ম বদিষ্যামি ঋতম্ বদিষ্যামি সত্যম্ বদিষ্যামি।
তন্মামবতু তদ্বক্তারমবতু। অবতু মামবতু বক্তারম্।
মাননীয় দুই অধ্যক্ষ সজ্জন পুরুষ! বোনেরা এবং ভাইয়েরা!! আজ খুবই আনন্দের দিন, আমার পরম মিত্র শ্রী মাধবাচার্য জী মহারাজের সপুত্র শ্রী প্রেমাচার্য জী আমার সামনে উপস্থিত, আমার তার প্রতি অনেক প্রেম রয়েছে আর তিনি তো আমার সঙ্গে অনেক স্নেহ রাখেন, শ্রী ধর্মালঙ্কার পণ্ডিত বালকৃষ্ণ জী বড়ো সজ্জন পুরুষ, আজ তারও সম্পর্ক আমার প্রাপ্ত হয়েছে। শ্রী রামেশ্বরাচার্য জীও আমার অনেক প্রিয় লাগে, অনেক সুন্দরভাবে বার্তালাব করা আরম্ভ হয়েছে এটা খুব ভালো।
আরম্ভেই কিছু গড়বড় প্রসঙ্গ এসে গেছে "প্রথমে গ্রাসে মিক্ষিকা পাতঃ" আমাদের পণ্ডিত প্রিয় শ্রী প্রেমাচার্য জী এটা বলেছেন যে - আর্য প্রতিনিধি সভা দুই পণ্ডিতকে পুস্তক লেখার জন্য নিযুক্ত করেছে, এক শ্রী মঙ্গলদেব তডিতকান্ত জী বিদ্যালঙ্কার আর দ্বিতীয় শ্রী পণ্ডিত সাতবলেকর জী, আর তাকে কিছু দিয়েছে সেটাও শুনেছেন। এই কথা আচার্য্য জী আমার সামনে বলেছেন! কোনো নতুন শাস্ত্রার্থ কর্তার সামনে যদি বলতেন তো চলে যেত, সজ্জনগণ শুনুন, ধ্যান পূর্বক এর রহস্য শুনুন!!
Note - শ্রী পণ্ডিত প্রেমাচার্য জী স্বামী জীর এই কথা শুনে মনে মনে হাসছিলেন, এতে তার বাক্ ছল স্পষ্ট বোঝা যায়।
শ্রী অমর স্বামী জী মহারাজ -
এই যে প্রথম কথা এখানেই গড়বড় হয়ে গেছে। দুই পুস্তককে মিলিয়ে একটির কথা বলে ফেলেছেন। পুস্তক হল দুটি, এক পুস্তক হল "যম আর পিতর" তথা দ্বিতীয় "বেদামৃত", দুটি পুস্তক হল পৃথক-পৃথক, আর্য প্রতিনিধি সভা যে পুস্তকটি লিখিয়েছে সেটা হল "বেদামৃত"। যার জন্য ধন্যবাদ দেয় আর্য প্রতিনিধি সভা সেটা হল "বেদামৃত"। আর যেটা "যম আর নিয়ম" নামের পুস্তক সেটা, না তো সমাজ বা সভা লিখিয়েছে আর না তার জন্য সভা কোনো ধন্যবাদ দিয়েছে, না সেটা আর্য সমাজীদের জন্য হয়েছে। গুপচুপ ভাবে ছাপছিল আর গুপচুপ ভাবে বিতরণ হচ্ছিল, যা আচার্য্য জীর কাছে পৌঁছে গেছে, আর আমার কাছে পৌঁছায় নি, আর এখন চাইলেও আমাকে দেখাচ্ছেন না, আপনি পেয়ে গেছেন! শুনুন প্রেমাচার্য জী, আর্য সমাজ এর জন্য কি করেছে? এর জন্য আর্য সমাজ তার বিরুদ্ধে এক পুস্তক লিখিয়েছে, তার খণ্ডন লিখিয়েছে, তার নাম হল "যম পিতৃ পরিচয়"। শ্রী স্বামী ব্রহ্মমুনী মহারাজ সেসময় প্রিয়রত্ন আর্ষ তার নাম ছিল, তিনি সেই পুস্তক খণ্ডনের লেখক। তো আপনি এই দুই কথা মিলিয়ে বলেছেন, দুটি কথা এক নয়, সেটা হল ভিন্ন-ভিন্ন, আর্য প্রতিনিধি সভার সম্পর্ক যার সঙ্গে তা হল পণ্ডিত জীর "বেদামৃত", তার জন্যই ধন্যবাদ দেওয়া হয়েছিল। এটার জন্য কোনো ধন্যবাদ দেওয়া হয়নি যার কথা আপনি বলছেন, এই দুই কথাকে মিলানোর দরকারটা কি? লোক ভ্রমে কেন পরবে? তার গাথাও শুনুন - যা শ্রী সাতবলেকর জী লেখেন আর তার জন্য প্রতিনিধি সভা ধন্যবাদ দেয়, প্রিয় শাস্ত্রী জী আপনি জেনে থাকবেন যে প্রতিনিধি সভাই তার জন্য আবার পশ্চাত্তাপ করে আর পশ্চাত্তাপ করে সেই বেদামৃত নামক পুস্তককে পুনঃ শ্রী স্বামী বেদানন্দ জী তীর্থ দ্বারা লিখিয়েছে, ওটাকে বন্ধ করেছে, আর বন্ধ করিয়ে স্বামী বেদানন্দ জীকে দিয়ে পুস্তক লিখিয়েছে সেখানে মৃতক শ্রাদ্ধের কোনো কথা নেই, মৃতক শ্রাদ্ধের কথা যেখানে আছে সেটা তো অন্য পুস্তক ছিল, তার সঙ্গে আমাদের কোনো সম্বন্ধ নেই আর শ্রী সাতবলেকর জীকে বা অন্য কাউকেও আর্য প্রতিনিধি সভা এর জন্য নিযুক্ত করে নি, তো এসব বলে কোনো লাভ নেই। বেদ মন্ত্র অনেক আছে, বলুন আপনি যা বলতে পারেন, আর আপনি বললেন সহস্র বেদ মন্ত্র আছে, সেটাও সামনে এসে যাবে, চিন্তা করছেন কেন? আপনি শ্রাদ্ধের লক্ষণ করলেন - শ্রাদ্ধের পরিভাষা করলেন, আর প্রমাণ দিলেন "শ্রাদ্ধকল্পতরু"র, তার আপনি প্রমাণ দিলেন! আমাদের এর সঙ্গে কি সম্পর্ক? কোনো এমন প্রমাণ দিন যেটা আমরাও মানি। প্রমাণ তো সেটাই দেওয়া উচিত, যাকে উভয় পক্ষ মানে আর যাকে কেবল আপনারই পক্ষ সেটা দিয়ে লাভ নেই। আপনি একটা কথা আরও বলেছেন যে - মৃতক শ্রাদ্ধ তো ঈশাঈরাও(ক্রিশ্চিয়ান) করে, আর মুসলিমরাও করে, দেখুন ঈশাঈ করুক আর মুসলিম করুক, আমাদের তাতে কী? ঈশাঈ আর মুসলিম তো আরও অনেক ভিন্ন কাজ করে, (জনতায় হাসি...) বহুতর গড়বড় করে, গৌহত্যা করে আরও বহুতর পাপ করে তবে কি আমরাও সেসব কাজগুলোকে এর জন্য করবো যে একে ঈশাঈরাও করে তথা মুসলিমরাও করে? এটা তো কোনো কথা হল না, এটা তো শাস্ত্রী জী কেবল "জলে বিপদে পরে খড়কে আকড়ে ধরার মতো" হয়ে গেলো। সাহায্য পাবার আশায় এদিক থেকে একে ধরো ওদিক থেকে ওকে ধরো ব্যস্ হয়ে গেলেন আপনি পণ্ডিত, বিদ্বান! বেদ মন্ত্র বলুন, তারপর সেই মন্ত্রে বিচার হবে আর সেসব বলা হবে। একটা কথা আপনি আরও বলেছেন - স্বামী দর্শনানন্দ জী আর পণ্ডিত গণেশদত্ত জীর শাস্ত্রার্থ হয়েছিল আর তার নির্ণায়ার্থ মাক্সমুলারের নিকট জার্মান পাঠানো হয়েছিল তো মাক্সমুলার এর উপর এই নির্ণয় দেয় যে "এই যে মৃতক শ্রাদ্ধ, এটা হল বৈদিক?" তা আমি পড়েছি আচার্য্য জী, সেটা আমিও পড়েছি, সেই পুস্তকে কোথাও লেখা নেই যে "এটা বেদানুকূল" আপনি দেখান! (জনতায় শোরগুল মেচে যায়, আর অনেক আগ্রহ করার পরেও না পুস্তক দেখালেন, না লেখা দেখাতে পারলেন, আর্য শ্রোতাগণের মধ্যে হর্ষের বাতাবরণ...) উনি তো শাস্ত্রী জী এটা বলেছেন, সেখানে লেখা আছে যে "সেটা এখানে পাঠানো হয়েছে"। আর সজ্জন গণ শুনুন! শাস্ত্রার্থও কার ছিল "পণ্ডিত কৃপারাম" জী নাম ছিল তার, "স্বামী দর্শনানন্দ জী নয়, সে তো অনেক পরে স্বামী দর্শনানন্দ জী হয়, কৃপারাম জী তার নাম ছিল আর সে তো শাস্ত্রার্থ বাজীরাবাদে হয় আর আমি সেই শাস্ত্রার্থকে নেওয়ার জন্য লাহোরে যাই তো এক পণ্ডিতের কাছে যাই সে দুর্গা সপ্তশতীর পাঠ করতো। তার কাছে আমি পৌঁছাই যে 'শাস্ত্রার্থের প্রতি আমায় দিন' তো আমি সেটা নিয়ে আসি, পরে আমি সেটা দেখি সেই পুস্তকে কোথাও লেখা নেই যে মাক্সমুলার জীর নির্ণয় এটা মৃতক শ্রাদ্ধ বেদানুকূল। তিনি লিখেছেন - সে শাস্ত্রার্থ আমার কাছে এসেছে, আমি তো দেখেছি, আমি আমার মিত্রকে দেখিয়েছি, এখন আমাকে বার বার বলা হচ্ছে যে - "আপনি এর উপর নির্ণয় দিন, কিন্তু সেটা আমার কাছেই নেই, জানিই না সেটা আমার বইগুলোর মাঝে হারিয়ে গেছে নাকি কোনো মিত্র নিয়ে গেছে" এক বর্ষ পর তিনি এটা লেখেন - "এটা তো প্রশ্নই উঠে না যে ব্রাহ্মণদের খাওয়া-পানাদি করালে মৃতকের কাছে পৌঁছয়, এর জন্য নয়, সে তো স্মরণ রাখার রূপে পালন করা হতো, আর এখনও যে ব্যাক্তি মানে যে বস্তু মৃতের প্রিয় হয় তো আমার কাছেও পাঠিয়ে দেয় এখনও" উনি এই নির্ণয় পাঠিয়ে ছিলেন নাকি এমন যে শাস্ত্রী জী বলেন যে তিনি নির্ণয় দেন - "শ্রাদ্ধ হল বেদানুকূল"? তো এই কথা আপনি বলেন, এখন শাস্ত্রী জী আপনি এই কথারই সম্বন্ধে ধ্যান দিয়ে শুনুন! শ্রোতা গণও ধ্যান দিয়ে শুনুন! যে মাক্সমুলার নির্ণয় কথার উপর পণ্ডিত প্রেমাচার্য জী শাস্ত্রী বড় গর্বের সঙ্গে প্রস্তুত করে ছিলেন, সে পুস্তক এটি - (পুস্তকটি হতে নিয়ে দেখিয়ে) এর নাম ''নির্ণয় কে তট পর (শাস্ত্রার্থ সংগ্রহ) ভাগ প্রথম'', একে আমার প্রিয় শিষ্য লাজপতরায় জী যিনি এখানে বিদ্যমান আছেন ছাপিয়েছেন, এখানে অরিজিনাল ও তার ভাষা তথা ফটো পর্যন্ত ছাপা আছে, আপনারা পড়ে নেবেন এবং শাস্ত্রী জী তো চাওয়ার পরেও পুস্তক দেন নি, আপনারা দেখুন এনার কথনে কতখানি সত্যতা আছে? (পণ্ডিত প্রেমাচার্য ও পৌরাণিক শ্রোতা গণের মধ্যে নিরবতা ছেয়ে যায়) আমি শাস্ত্রী জীকে বলবো যে ভবিষ্যতে যেন ধ্যান রাখে, এই প্রকার মিথ্যা যেন না বলে। কিন্তু বন্ধুগণ! কথা তো হল এটা যে - ম্যাক্সমুলার জী যা কিছু বলে গেছে, তা এনাদের কাছে প্রমাণ হয়ে গেছে, আমাদের কাছে তো প্রমাণ নেই, আমাদের কাছে তো পত্রগুলো আছে ম্যাক্সমুলারের, বেদের ভাষ্যও ম্যাক্সমুলার কেন লিখেন ইংরেজিতে? তার স্ত্রী তাকে জিজ্ঞাস করে আর তার উত্তরে তিনি নিজের স্ত্রীকে লিখেছেন যে - "আমি বেদের ট্রান্সলেশন (অনুবাদ) ইংরেজিতে এই জন্য করেছি যে লোকেদের শ্রদ্ধা বেদ থেকে যেন মুছে যায় আর ক্রিশ্চিয়ান মতের দিকে তাদের ঝোক যায়, আমি হলাম ক্রিশ্চিয়ান মতের প্রচারক" এই পত্রগুলো ছাপে আর সমগ্র বিশ্বে প্রসিদ্ধ হয়।
ম্যাক্সমুলার আমাদের জন্য কোনো প্রমাণ নয়, আপনি প্রমাণ মানতে পারেন, সেসবও না হয় হল, আপনি একটি প্রমাণ আরও দিয়েছেন বেদের যে - "অথাম্মৃতা-পিতৃষু সম্ভন্তু" এই মন্ত্র করে বললেন যে তোমায় জ্বালানো হচ্ছে, তোমায় ভস্ম করা হচ্ছে, তোমার এটা হয়ে যাক, তোমার সেটা হয়ে যাক, তার ঠিকানা বললেন "১৮তম কাণ্ড, ৪ সূক্ত, ৪৮তম মন্ত্র" এখানে বলেছেন, আর এটা জানেন কোথাকার, ঠিকানা হল - "অথাম্মৃতা পিতৃষু সম্ভন্তু" এর স্থান, ঠিক আছে স্থান তো সেখানেই যা আপনি বলেছেন, অন্য কারও নয়, তারই, কিন্তু! তা হলে পরেও "অথাম্মৃতা পিতৃষু সম্ভন্তু" আপনি বলেন যে যারা মরে তারা পিতরে গিয়ে শামিল হয়ে যায়, এই অর্থ বলেন এর বাকি বাক্য কোথায়? "অথাম্ মৃতা" "পিতৃষু সম্ভন্তু" এখানে "মৃতা" নেই অর্থাৎ এখানে মরে যাওয়া নেই, এখানে তো "অমৃতা" আছে - "অথঅমৃতঃ" অর্থাৎ যে ব্যাক্তি অমর হয়ে চায় সে ব্যাক্তি পিতরে গোনা হবে, তো মন্ত্রের অর্থ হল এটা। এখানে এই "মৃতা" কথা থেকে খুঁজে পেলেন? "মৃতঃ" কথাটা কোথা থেকে এসে গেলো? এটা তো "অমৃতা"। এইজন্য "পিতৃ" দ্বারা কাজ চলবে না। একটা কথা খুবই দারুন বলছিলেন, আপনি একটি মন্ত্র বললেন সহস্র মন্ত্রের মধ্যে! কিন্তু বন্ধুগণ, আছে এটা এক-দুটোই, নিজের ঘ্যাম দেখানোর জন্য বলেছে সহস্র মন্ত্র আছে অথবা হতে পরে আমাকে ভয়ভীত করার জন্য বলে দিয়েছে (জনতায় হাসি তথা স্বয়ং প্রেমাচার্য জীও হাসি...) তবে সেসব সহস্র লুপ্ত হয়ে গেলো, সেই সহস্রের মধ্যে এই এক-দুই টুকরো বেরিয়েছে, এটা বেরিয়েছে যে - "য়ে নিখাতা য়ে পরোক্তা য়ে দগ্ধা য়ে চ উদ্ধৃতা" এটি বেরিয়ে এসেছে আর এখানে কথা কি বেরিয়েছে? পৌরাণিক সনাতন ধর্মের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধ! বৈদিক ধর্মের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধ!! কথা এটা বেরিয়েছে যে যাকে জার্মানে গাড়া হয়েছে, সর্বপ্রথম শ্রাদ্ধ তার হওয়া দরকার যাকে ভূমিতে গাড়া হয়েছে। অর্থাৎ সবার আগে শ্রাদ্ধ তাদের হওয়া দরকার যাকে ভূমিতে গাড়া হয়েছে। বৈদিক ধর্মীতে কেবল সনাতন ধর্মীই নয় বরং আর্য সমাজ আর পৌরাণিক সনাতন ধর্মী দুটো মিলে হল বৈদিক ধর্মী। দুটোর মধ্যে এটাই প্রথা হল যে মৃতককে জ্বালানো হবে। এখন আপনি বলেছেন যে শিশুকে গাড়া হয় তবে কি শিশুটাও "পিতর" হয়ে গেল? তবে শিশুটার সন্তান কে? - দাড়ীওয়ালা বুড়া নাকি তার নাতি-পুতি? নাকি সেই শিশুটাই? কার শ্রাদ্ধ করে! পণ্ডিত জী কথা চিন্তা ভাবনা করে বলুন (জনতার মধ্যে প্রচণ্ড হাসি আর হাততালি) এদিকের কথা ওদিকে ওদিকের কথা এদিকে হলে চলবে না, বৈদিক ধর্মে ভূমিতে গাড়ার প্রথা নেই। আর আপনি সবার আগে গাড়ার প্রসঙ্গই উল্লেখ করেছেন, জ্বালানোর পরে। তবে জ্বালানোর কথাও নয়, জ্বালানো কাকে হয়? যতক্ষণ শরীরে জীবাত্মা আছে ততক্ষন জ্বালানো হয় না। সে সন্তান নিজের পিতাকে নিজের মাতাকে সেই সময় পর্যন্ত জ্বালায় না যতক্ষণ তাদের ভেতর জীবাত্মা থাকে ততক্ষণ জ্বালায় না, যখন জীবাত্মা বেরিয়ে যায় অর্থাৎ চলে যায় তখন সেই "মৃতক" শরীরকে জ্বালালে তবে তার উপর কিসের মোহর লাগানো ছিল, যে চলে গেছে বেরিয়েছে তাকে জ্বালানো হয়েছে! তাকে কখন জ্বালানো হয়েছে? সে তো জ্বলার পূর্বেই বেরিয়ে গেছে। আর জীবাত্মা তো জ্বলেই না। দেখুন গীতাতে বলা হয়েছে -
নেনম্ ছিন্দতি শস্ত্রাণি নেনম্ দহতি পাবকঃ ।
ন চৈনম্ ক্লেদয়ন্তয়াপো ন শোষয়তি মারূতঃ।।
জীবাত্মা জ্বলে না, সে হল "অচ্ছেদ্য" - "অদাহ্য" - "অক্লেদ্য" - "অশোষয়তঃ"। সে জ্বলে না, তো তাকে জ্বালানো হল কোথায়? জ্বালানো হয়েছে শরীরটাকে। তো যিনি পিতা যার কথা আপনি বলছেন সে পিতাটা কে? পিতা হল সে যে শরীর থেকে জীবাত্মা বেরিয়ে চলে গেছে নাকি সেটা যার শরীর রয়ে গেছে? পিতাটা কে? যদি সেটা পিতা হয় তো পিতৃঘাতের পাপ লাগবে, যে জ্বালাবে? আবার যদি সে বেরিয়ে চলে গেছে তো এটা পিতা হবেই না। দেখুন -
নৈব স্ত্রী ন পুমানেবঃ ন চৈবায়ে ন পুম্সকঃ।
পদ্যতেঃ শরীর মাধন্তে তেন ত্বেন স য়ুজ্যতে।।
অর্থাৎ জীব স্ত্রী নয়, পুরুষ নয়, না কারও মাতা, না পিতা, সে জীবাত্মা হল কেবল জীবাত্মা। সে চলে গেছে তো গেছে, এখন তার সঙ্গে কি সম্বন্ধ? সম্বন্ধ কার সঙ্গে ছিল? জীব আর শরীর দুটোই একত্রিত ছিল, ততক্ষন তার সঙ্গে সম্বন্ধ ছিল। যখন সম্বন্ধই বিচ্ছেদ হয়ে গেছে, তখন না তো কেউ কারও সন্তান থাকলো আর না থাকলো পিতা। আপনি বলেছেন যে পুত্র সে যে পিতার জন্য এটা করে, ওটা করে!! আর "গয়াতে" গিয়ে পিণ্ড দিবে, এটা কোনো প্রমাণিত গ্রন্থের প্রমাণ নয়, না আপনি এর ঠিকানা বলেছেন আর না সেটা বেদের প্রমাণ। যাকে আমরা মানি। তো এই রকম কথা বলে লাভ কি? আপনি আপনার গ্রন্থকে পড়তে থাকুন, আর তার থেকে আপনার মতলবের কথা বলতে থাকুন। আমাদের উপর এর কোনো প্রভাব পড়বে না। আমাদের জন্য তার কোনো উত্তরদায়িত্ব হবে না। পুত্র তো "পুন্নাম নরকাঃ ত্রায়তে ইতি পুত্রঃ" যে দুঃখের নরক থেকে পিতাকে বাঁচানোর জন্য চেষ্টা করে, সে হল পুত্র। তো এরকম যত্ন তো হয়েগেছে, এটা তো ঠিক যে এরকম কার্য হওয়া উচিত। এখন আমার শুনুন - যেটা আপনি বলেছেন আমি তো সংক্ষেপে একটু-একটু করেছি, তথা উত্তর দিয়েছি, আমি জিজ্ঞাস করছি যে কৃপা করে এটা বলুন যে - "পিতৃ" কোন ধাতু দিয়ে তৈরি? যদি বলো যে "পা-রক্ষণে" ধাতু দিয়ে তৈরি তবে "পিতৃ" র অর্থ হল রক্ষাকারী, এখানে য়াস্কারাচার্য জী বলেন - "পিতা পাতা পালয়িতাবা" পিতা কে হন, যিনি পালনকারী, "পা রক্ষণে" হতে "পিতা" শব্দ হয়েছে, "পিতৃ" শব্দ হয়েছে তারই বহুবচন হল "পিতর"। তো যে রক্ষাকারী হবার সামর্থ রাখে সে জীবিত হবে, মরা হলে হবে না। সে জীবিতই হতে পারে, মৃত কখনও হতে পারে না।
শ্রী পণ্ডিত প্রেমাচার্য জী শাস্ত্রী -
সজ্জন গণ! শ্রী অমর স্বামী জী মহারাজ আর্য সমাজের পুরানো প্রচারক আর শাস্ত্রার্থী তথা বিদ্বান। অনেক দিন পর এনার সঙ্গে শাস্ত্রার্থের সুযোগ পেয়েছি একটা তো বিষয় এটা হল যে এক-দুইবার অবশ্য সামনা-সামনি হয়েছে, কিন্তু এইভাবে ব্যাক্তিগত রূপে হয় নি। আমি আশা করেছিলাম যে - স্বামী জী মহারাজ বাচ্চাদের মতো কথা বলে আমার শক্ত প্রমাণকে অবহেলা করার চেষ্টা করবেন না। কালকের মতো আবার শুরু হলো না তো যে - আমি মানি না সাহেব! এটা নকল পুস্তক সাহেব! আমি পাইনি 'যম-পিতর' তো আচার্য্য জী কি করে পেল? আরে ভাই আমি বলছি, আপনি ঘুমোচ্ছিলেন তখন! আপনি পাননি তখন! আমি এর গ্যারান্টি কেন নিবো? আপনি নিতেন, খুঁজতেন, খোঁজ নিতেন, পুস্তক আমার কাছে আছে "যম আর পিতর" যা শ্রী পাদ্ দামোদর সাতবলেকর জীর প্রেসে ছেপেছে আর মঙ্গলদেব তড়িতকান্ত বিদ্যালঙ্কার জী লিখেছে তথা সংগ্রহ করেছে আর এই সাহেব বলে কিনা আমি পাই নি, আমি জানি না এইজন্য এইসব কথা বললে চলবে না। সাহেব আরও বলে সেই যে পুস্তক লিখেন যার জন্য প্রতিনিধি সভা পাঞ্জাব ধন্যবাদ দিয়েছিল, সভা পুস্তক লিখিয়েছে শ্রী পাদ্ দামোদর সাতবোলেকরকে দিয়ে আর ধন্যবাদ দেয় যে - আপনি এরকম মন্ত্র সংগ্রহ করেছেন, বলছে যে সভা পরে এর জন্য এই কথার জন্য পছতাবা করে আমরা কেন ধন্যবাদ দিয়েছি? প্রকাশক আগে ধন্যবাদ দিয়ে পশ্চাৎ পশ্চাতাপ করে, সে পশ্চাতাপ এর জন্য করে নি যে তিনি পুস্তক কেন লিখেছেন, বরং সেটার কারণ কি ছিল তা আমি বলছি, পশ্চাতাপের কারণ কি? তাহলে পরেও! শ্রী পাদ্ দামোদর সাতবোলেকর জী আর্য সমাজের মূর্ধন্য বেদ পণ্ডিত আর নিষ্পক্ষ বিদ্বান্ ছিলেন, তিনি যদিও নিজের পুস্তকে সেই বেদ মন্ত্র সংগ্রহ করেন যেসব মন্ত্র হতে মৃতক শ্রাদ্ধ সিদ্ধি হত আর মৃতক শ্রাদ্ধের সিদ্ধি হওয়ার কারণে আর্য সমাজের স্বামী দয়ানন্দ দ্বারা লিখে থাকা যে সিদ্ধান্ত ছিল, যে মান্যতা ছিল, তা বাধা পাচ্ছিল, এই জন্য স্বামী দয়ানন্দ জীর মান্যতার উপর মূর্ধন্য পণ্ডিত শ্রী পাদ্ দামোদর সাতবোলেকর জীকে বলিদানের জন্য তিনি পশ্চাতাপ করেছিলেন হয়তো। তো সজ্জনগণ! পশ্চাতাপ প্রকট করলে কি হবে? পুস্তক তো উপস্থিত আছে। পুস্তকে সেসব মন্ত্র রয়েছে আর তাই এসব কথা টিকবে না। স্বামী জী একটা কথা আরও বলেছেন, বেদের প্রমাণ দাও। এর থেকে ভালো কথা আর কি হতে পারে? আমি আগেই বলেছি যে বেদ মন্ত্রের উপর বিচার করে একটা অন্তত এমন বেদ প্রমাণ উপস্থিত করতেন যেখানে মৃতকের শ্রাদ্ধ করা যাবে না, জীবিতদের করা যাবে, সে মন্ত্র দিতেন। কিন্তু আপনি এমন মন্ত্র দেখান নি, আমার মন্ত্রের উপরও বিচার করেননি, আর বলেছেন - ''য়ে নিখাতা য়ে পরোক্তা" এটা অথর্ববেদের মন্ত্র যা চুটকি দিয়ে উড়ে যাবে স্বামী জী মহারাজ! শুনুন - 'যম-পিতর' এ ইহার কি হল, অর্থ বলছি আর যেটা বলবেন যে আমাদের এখানে তো এমনটা হয় না সাহেব! আমাদের এখানে তো মরাকে জ্বালানো হয় তারপর আমাদের সঙ্গে তাদের কি সম্পর্ক থাকলো? এসব কিছু নয়, শুনুন যম আর পিতরে মঙ্গলদেব বিদ্যালঙ্কার জী এই মন্ত্রের কি অর্থ করেছেন? স্বামী জী ধ্যান পূর্বক শুনবেন -
য়ে নিখাতা য়ে পরোক্তা য়ে দঘ্ধা য়ে চ উদ্ধৃতা সর্বান্তান্ অগ্ন আ বহ পিত্রেন্ হবিষ অস্তবে।
অর্থ লিখেছেন যে - হে অগ্নি! "য়ে নিখাতা" যে পিতর ভূমিতে গাড়া হয়েছে, "য়ে পরোক্তা" যে পিতর দূরে ভাসিয়ে দেওয়া হয়েছে, "য়ে দঘ্ধা" যে পিতর আগুনে জ্বালানো হয়েছে, আর যে পিতর "উদ্ধৃতা" ভূমির উপর রাখা হয়েছে, "তান সর্বান্" সে সকল পিতরকে হে অগ্নি তুমি - "হবিষ-অস্তবে" হবি ভক্ষণ করার জন্য "আবহ" নিয়ে আসো। এটা তো করেছে মন্ত্রের অর্থ! এখন মন্তব্য শুনুন! যা লিখেছেন মঙ্গলদেব জী, বলেছেন যে - এই মন্ত্রে এটা বলা হয়েছে যে অন্ত্যেষ্টি সংস্কার চার প্রকারের হয়। সজ্জনগণ ধ্যান দেবেন শব্দের উপর - এই মন্ত্রে বলা যে হয়েছে অন্ত্যেষ্টি সংস্কার চার প্রকারের হয় যথা গাড়ানো, ভাসিয়ে দেওয়া, জ্বালানো, খোলা বাতাসে ছেড়ে দেওয়া। এখানে মানে এই মন্ত্রে এই চার সংস্কার দ্বারা সংস্কৃত পিতরদের হবি খাওয়ার জন্য অগ্নিকে ডেকে নিয়ে আসার জন্য বলা হয়েছে। এই জন্য এই অর্থ কে করেছে? আমাদের পণ্ডিতদের নয়, আমাদের পণ্ডিতদের হতে পারে আপনি বলে দিন যে আমি মানি না, যখন আপনি আপনাদের পুস্তকই স্বীকার করতে রাজি নন, পুস্তককে জালি বলেদেন, জালি হওয়ার কারণ কি এটাই যে আপনি পুস্তক পাননি, আমি কোথায় পেয়েছি? এই জন্য এইসব হল বাহানা-বাজি, আর্য সমাজের বিদ্বান দ্বারা করা হয়েছে এমন অর্থ আমি শুনিয়েছি, এরকমই প্রফেসর রাজারাম যিনি দয়ানন্দ অ্যাংলো ইন্ডিয়ান কলেজ লাহোরের প্রফেসর! কাল যার বেদ ভাষ্যের চর্চা আমি করছিলাম, তারই দ্বারা করা বেদ ভাষ্যের অর্থও এই মন্ত্র যা আমি আপনাদের বলছি, শুনুন! স্বামী জীর কাছে এমনটা আশা ছিল না, স্বামী জী বলেন "অধাম্ মৃতাঃ" এতে ধ্যান দেবেন, "মৃতা" এটা মরে হওয়া অর্থ নয়, বরং "অমৃতা" হবে, অমৃতা অর্থাৎ যা মরে নি অথবা "অমৃত স্বরূপ", মনে আছে! আমার বড় আশ্চর্য লাগে যে - বেদ মন্ত্রতেও এমন অনুপ্রবেশ করা। আরে! বেদ মন্ত্রে অনুপ্রবেশের প্রশ্নই ওঠে না। ইনি বলেন যে মরা হাওয়াই না, আর প্রফেসর রাজারাম জী কি বলছেন? সজ্জনগণ! এই মন্ত্রে এনাদেরই বিদ্বান ডি০ এ০ বি০ কলেজের প্রফেসর লাহোরের শুনুন, কি বলছেন এই মন্ত্র নিয়ে! এই মন্ত্র হল নোট করে নিন - নম্বর নোট করাচ্ছি আর নম্বর-বাম্বের কি বলবো? এক মন্ত্র আগে পিছে হয়ে গেল তো কি হয়েছে? হবে তো বেদ মন্ত্রই। এইজন্য মন্ত্রের নম্বর নিয়ে থাকো না, আরে মন্ত্রটাকে তো দেখো, বলছেন এখন মন্ত্রটাও শোনো, পাক্কা মন্ত্র নম্বর বলে দিচ্ছি - মন্ত্র হল অথর্ববেদ সংহিতা ১৮ কাণ্ড ৪ সূক্ত, ৪৮ মন্ত্র এটা কি বলছে? সম্পূর্ণ মন্ত্র এই রকম -
প্রথ্বেত্বা পৃথিব্যামবিষয়ামি দেবোনো থাথা মৃত্যুরাজ।
আয়ু পরা পরাবৈতা বসুবতিবো অসস্বধমৃতা পিতৃষু সম্ভবন্তু।।
এর উপর প্রফেসর রাজারাম লেখেন, এর অর্থ হল যে -
পদ মরে যাওয়া পিতর, মরে যাওয়া পিতর - পিতরের মাঝে হোক। অর্থাৎ যে মারা গেছে সে আরও পিতরে গিয়ে মিলিত হয়ে যাক আর তাদেরও পিতর নাম হয়ে যাক। তো "মৃতা" অর্থ প্রফেসর রাজারাম বলছেন "মরে যাওয়া" আর ইনি বলেন "অ" আরও জুড়ে দিতে মাঝখানে, আরে! বেদেও কখনও ঢুখেছে? নাকি যা ইচ্ছা তাই ঢুকিয়ে দাও! বেদের অর্থের যা ইচ্ছা অর্থে ছেদ করে দাও, বেদের শব্দ নিশ্চিত আছে। আর এভাবেই আমাদের এখানে অষ্টাবক্র কৃতি চলে।
(Note - শ্রী পণ্ডিত প্রেমাচার্য জী শাস্ত্রী অথর্ববেদের ভুল মন্ত্র পাঠ করেছেন। মন্ত্রটি হবে -
পৃথিবীম্ ত্বা পৃথিব্যামা বেম্শয়ামি দেবো নো ধাতা প্র তিরাত্যায়ুঃ।
পরাপরৈতা বসুবিদ্ বো অস্ত্বধা মৃতাঃ পিতৃষু সম্ ভবন্তু।।
অথর্বঃ ১৮/৪/৪৮)
শ্রী পণ্ডিত প্রেমাচার্য জী শাস্ত্রী -
বেদ পাঠের ৮ প্রকারের নিয়ম আছে, বেদে কোনো প্রকার কথার সমাবেশের প্রশ্নই নেই। এ তো হল বেদ মন্ত্রের কথা! সে মন্ত্র শুনিয়েছি চার, দুইটার বিচার হয়েছে। বলছিল হাজারের মধ্যে দুইটাই পাওয়া গেলো। মহারাজ! স্বামী জী মিনিট আছেই পনেরো! এক মিনিটে এক একটা যদি শোনাই তো শোনাতে পারবো পনেরোটা, আপনি এক সপ্তাহ শাস্ত্রার্থ রাখুন "শ্রাদ্ধের" উপর! যদি দুই হাজারের কম শোনাতে পারি তো যা বলবেন আমি রাজি। এখানে দুইটা কেন পেলেন? আমি চারটা শুনিয়েছি, আর একটি আপনি ভুলে গেছেন যে - "য়ে অগ্নি দগ্ধা" এ মন্ত্র আমি শুনিয়েছি, এর উপর আপনি বিচার করেন নি, কিছু ব্যাখ্যা করে বলেন নি, আর বলেছিলেন সাহেব আমি তো মানি না ম্যাক্সমুলারকে। যখন স্বামী দর্শনানন্দ জী যার পূর্ব নাম কৃপারাম ছিল, ওনার শাস্ত্রার্থ হয়েছে, সে সময় তো ম্যাক্সমুলার সাহেবকে শাস্ত্রার্থের নির্ণয় করার জন্য মধ্যস্থ মানা হয়, কিন্তু যেহেতু নির্ণয় তিনি এর বিরুদ্ধ দিয়ে দিয়েছে, তো বলছেন আমি মানি না তাকে। আরে সাহেব আপনি না মানেন, কিন্তু প্রফেসর ম্যাক্সমুলার বেদ ভাষ্যকারী, জার্মানিতে বাসকারী প্রত্যক্ষ বিদ্বান, তিনি সত্য আপনার সামনে প্রকট করে রেখেছে, তো আপনি মানেন না তবে আমাদের কিছু করার নেই, কেউ নিজের বাপকে বাপ না মানে, নিজের বাপকে কেউ জালি বলে দেয় যে আমার বাপ হল জালি! তবে আমাদের উপর এর কোনো দায়িত্ব অথবা জিম্মেদারি নেই। এই জন্য গ্রন্থকে জালি বলে ... আমি চার মন্ত্র দিয়েছিলাম, (টন টন টন ss. ..) আরও মন্ত্র পরে শোনাবো।
অধ্যক্ষ মহোদয় -
আপনি বলেছিলেন আগে বলে দিন, তারপর শাস্ত্রার্থ চলবে (এতে বিঘ্ন হতে থাকে অনেকক্ষণ পর শাস্ত্রার্থ পুনঃ প্রারম্ভ হয়)
শ্রী অমর স্বামী জী মহারাজ -
শুনুন! বন্ধুগণ শুনুন! আরম্ভ হয়ে গেল শাস্ত্রার্থের সভ্যতা! (জনতায় হাসি...) শ্রী আচার্য্য জী আরম্ভ করেই দিলেন। শ্রী প্রেমাচার্য জী একটা কথা বলে দিয়েছেন - স্বামী জী বাচ্চার মতো কথা বলে। আমি এখনও আচার্য্য জীকে বাচ্চা বলি নি, যদিও আমার সামনে বাচ্চাই! কিন্তু উনি আমাকে বাচ্চা বলেছেন, এই হল সভ্যতা! এই হল তার শিষ্টাচার! শাস্ত্রার্থের!!! দ্বিতীয় কথা আমি বলেছিলাম, যাকে এখন লেখার প্রয়োজন হয়ে যাবে, "যম - পিতর" যা হল তড়িতকান্ত জীর লেখা। সাতবলেকর জী আর্য সমাজী ছিলেন নাকি? সাতবলেকর জী হলেন তিনি যাকে মেরঠে যখন বড়ো বিদ্বত্ সভা হচ্ছিল তো সকল পণ্ডিতগণ তাকে সভাপতিত্ব হওয়ার জন্য প্রচণ্ড অপমানিত করে, কেউ তাকে আর্য সমাজী মানেই না। বন্ধুগণ! রাজারাম জী..! সাতবলেকর!! এগুলো তো ডোবার পূর্বে খড় আকড়ে ধরার মতো! প্রমাণ কিছুই নেই। বাকি থাকলো অর্থের কথা! আমি এর অর্থ - যাকে আমরা একদমই মানি না, সেটা এক বার কেন লাখ বার শোনাও! আর কোনো প্রমাণই নেই এইজন্য রাজারামের শোনাও, অথবা তডিতকান্তের শুনিয়ে দাও, "এই পুস্তকের জন্য আমি চ্যালেঞ্জ দিয়ে বলছি যে প্রতিনিধি সভা এই পুস্তকটি লেখায়নি" আর যদি লিখিয়ে থাকে তো এখনই লিখিত দেখাতে হবে, তারপরেই শাস্ত্রার্থ চলবে, যদি লিখিত দেখিয়ে দিতে পারেন যে "যম আর পিতর" এই পুস্তকটি আর্য প্রতিনিধি সভা লিখিয়েছে আর এর উপর ধন্যবাদ দিয়েছে..…
শ্রোতাদের মধ্যে ভারী শোরগুল শুরু হয়ে যায়...বক্তাদের মধ্যে শুরু হয় ঝগড়া - হ্যাঁ, হ্যাঁ!! পণ্ডিত জী আগে এটা দেখাতে হবে, তবেই শাস্ত্রার্থ চলবে, এই পুস্তকটি দিতে হবে তথা এর উপর "প্রতিনিধি সভা ধন্যবাদ করেছে" দেখাতে হবে। এটা দেখাতেই হবে। (এরই মাঝে প্রেমাচার্য চেঁচিয়ে বলা শুরু করেন) - অনেক ভারী বিঘ্ন সজ্জনগণ! শ্রী রাজারাম জী ... - আপনি মাঝখান থেকে কেন বলছেন? এই আপনার অভ্যাস কালকেও ছিল আর এখনও আছে, কিন্তু যতক্ষন এটা দেখাবেন না ততক্ষন শাস্ত্রার্থ এগোবে না, আর এখন বোঝা যাবে যে আপনি যা বলেছেন যে এর অর্থ হল এটা নাকি এটা নয়! (প্রেমাচার্য জী আবারও তারমাঝে বলেন - দেখুন আবারও বলছি..।) - প্রধান জী, এনার এই গড়বড় চলতেই থাকবে, শাস্ত্রার্থ হতে দেবে না। কারণ এখন এনার মিথ্যা ধরা পড়ে গেছে। ... আবারও প্রেমাচার্য জী মাঝখানে চেঁচিয়ে ওঠেন - আপনি কেন মাঝখানে বলছেন?
শ্রী প্রেমাচার্য জী শাস্ত্রী -
স্বামী জী মহারাজ বলেছেন যে, আগে লিখিত দেখান তারপর শাস্ত্রার্থ শুরু হবে....(বিঘ্ন)... আচ্ছা আচ্ছা দেখাচ্ছি।
শ্রী অমর স্বামী জী মহারাজ -
হ্যাঁ অবশ্যই, আগে লিখিত দেখান।
শ্রী প্রেমাচার্য জী শাস্ত্রী -
প্রধান জী আমি আপনার কাছে জিজ্ঞেস করছি, যেমনটা স্বামী জী বলেছেন - শাস্ত্রার্থ তখনই এগোবে যদি আপনি সেই কথাকে লিখিত দেখিয়ে দেন! তো এটা কি ঠিক?
শ্রী ওমানন্দ জী সরস্বতী (প্রধান) -
হ্যাঁ, এটা একদম ঠিক কথা।
শ্রী প্রেমাচার্য জী শাস্ত্রী -
ঠিক আছে তো আমি এখনই দেখাচ্ছি, আমি প্রথমে তো এটা বলেছি যে, আপনি বলেন আমি আপনাকে বাচ্চা বলেছি, আমার বাচ্চা বলতে আপনি বাচ্চা হতেন না, আপনি হলেন বয়োবৃদ্ধ, সাধু সন্যাসী, আমি আসলে বলেছিলাম আপনি বাচ্চাদের মতো কথা বলেছিলেন, দ্বিতীয় কথা আপনি বলেছেন - প্রফেসর রাজারাম শাস্ত্রী ...(আবারও বিঘ্ন শুরু)
শ্রী অমর স্বামী জী মহারাজ -
বন্ধুগণ! এটা কি সেটা বলা হচ্ছে যেটা আমি জিজ্ঞেস করেছিলাম? (জনতায় হাসি.. ) আচার্য্য জী এটা জিজ্ঞেস করেছিলাম যে "যম আর পিতর" পুস্তকখানা "আর্য প্রতিনিধি সভা লিখিয়েছে আর এরজন্য ধন্যবাদ দিয়েছে" এটা লিখিত দেখান কোথায় লেখা আছে? ... আর এই ফালতু কথা ছেড়ে দিন।
শ্রী প্রেমাচার্য জী শাস্ত্রী -
প্রফেসর রাজারাম...
শ্রী অমর স্বামী জী মহারাজ -
রাখুন আপনার প্রফেসর, আমরা শুনবো না! এসব শুনবো না, আমার কথার জবাব দিন।
শ্রী প্রেমাচার্য জী শাস্ত্রী -
প্রধান জী! আপনি এনাকে বোঝান, ইনি যেন চুপ থাকে।
শ্রী অমর স্বামী জী মহারাজ -
আপনাকে এরজন্য সময় দেওয়া হয়নি যে আপনি এদিক-সেদিকের কথা বলবেন, যেটা জিজ্ঞেস করা হয়েছে জবাব দিন! সেটা লিখিত দেখান?
শ্রী প্রেমাচার্য জী শাস্ত্রী -
হ্যাঁ আমি দেখাবো! আর বলবো...
শ্রী অমর স্বামী জী মহারাজ -
না! আগে আপনি সেটা দেখান, যে "যম আর পিতর পুস্তকটি আর্য প্রতিনিধি সভা লিখিয়েছে আর তার জন্য ধন্যবাদ দিয়েছে"।
শ্রী প্রেমাচার্য জী শাস্ত্রী -
(রেগে) আপনি আপনার জিহ্বাতে লাগাম লাগাবেন কি না?
শ্রী অমর স্বামী জী মহারাজ -
দেখুন আপনি আপনার মুখে লাগাম লাগান! (পুনঃ গর্জন করে) লাগান আপনার মুখে লাগাম! এসব অসভ্যতার কথা আপনি বলে যাবেন, আর এরজন্য শাস্ত্রার্থ খারাপ হবে, আর ইনি খারাপ করবেন, ইনি শাস্ত্রার্থ করতেই জানে না! এই জন্য আমি আপনার সামনে বলছি...(প্রেমাচার্য জী মাঝখানে বলে ওঠেন) স্বামী জী গর্জে বলেন - লাগাম ঘোড়ায় লাগানো হয়, আমি বলছি এখন আপনি আপনার মুখে লাগাম লাগান। (জনতায় হাসি ছড়িয়ে পরে আর হাততালির বজ্রপাত সঙ্গে সাংঘাতিক বাতাবরণ ) - প্রেমাচার্য জী! আজ মায়ের দুধ স্মরণে না আসলে মজাটা কি থাকলো?
শ্রী স্বামী ওমানন্দ জী সরস্বতী -
দেখুন প্রধান হবার কারণে আমি প্রার্থনা করছি যে - আপনি একটু সভ্যতা রেখে কথা বলুন, আপনাকে খারাপ কথা স্বামী জীকে বলা উচিত হয়নি।
শ্রী অমর স্বামী জী মহারাজ -
সে তো মানবে না।
শ্রী পণ্ডিত প্রেমাচার্য জী শাস্ত্রী -
শুনুন! সজ্জন গণ শুনুন!!
শ্রী অমর স্বামী জী মহারাজ -
আমি জিজ্ঞেস করছি যে কোন সভা ছাপিয়েছে এটা? প্রধান জী! আমার কথার জবাব দেওয়ান, ফালতু লেকচার দেওয়া আবশ্যকতা নেই, আমি এখন একে এদিক থেকে ওদিক হেলতে দিবো না। আমি যা জিজ্ঞেস করেছি, তার উত্তর দেওয়ান, এসব গড়বড় চলবে না। এতে এটা দেখান যে "প্রতিনিধি সভা একে লিখিয়েছে, আর প্রতিনিধি সভা এর জন্য ধন্যবাদ দিয়েছে"।
শ্রী পণ্ডিত প্রেমাচার্য জী শাস্ত্রী -
(পুস্তক হতে নিয়ে) "বেদামৃত" এই যে এটা স্বামী জী মহারাজ!
শ্রী অমর স্বামী জী মহারাজ -
হ্যাঁ! তবে কেন মিথ্যা বলছিলেন আপনি? যেটা আপনি দেখাচ্ছেন সেটা এটা নয়, আমি জোর গলায় বলছি এটা সেই পুস্তকই না।
শ্রী পণ্ডিত প্রমাচার্য জী শাস্ত্রী -
একদম মিথ্যা বলিনি।
শ্রী অমর স্বামী জী মহারাজ -
আমার কাছে সেটাও আছে .... চিন্তা করতে হবে না।
শ্রী পণ্ডিত প্রেমাচার্য জী শাস্ত্রী -
দেখান! আপনিই দেখান! সজ্জনগণ শান্ত থাকুন, শান্ত থাকুন, যদি শাস্ত্রার্থের নির্ণয় শুনতে চান তো শান্ত হয়ে যান, প্রথম কথা হল যে স্বামী জী বলেছেন যে মঙ্গলদেব যম-পিতর যিনি লেখেন তিনি হলেন মঙ্গলদেব বিদ্যালঙ্কার আর তিনি আর্য সমাজের পণ্ডিত নন, আমি এই পুস্তক থেকে খুঁজে শোনাচ্ছি! পুস্তক তো আমি দিবো না, কারণ ইনি তো পাননি, আমিই পেয়েছি, খুঁজে শোনাচ্ছি! খুঁজে শোনাচ্ছি, এখনই খুঁজছি...(এরই মাঝে)
শ্রী অমর স্বামী জী মহারাজ -
দেখুন যতক্ষন ইনি দেখাবেন না, আগে যেতে দিবো না আমি, দেখান "আর্য প্রতিনিধি সভা একে লিখিয়েছে আর ধন্যবাদ দিয়েছে"। (আবার বিঘ্ন) - এটা একদম মিথ্যা বলেছে, এটা ফেরত নিন, তবে কথা আগে চলবে। দেখুন প্রধান জী! এই শাস্ত্রার্থ চলবে না, আর না এর নির্ণয় হবে, আর ...(এর মাঝে)
অধ্যক্ষ -
দুই বক্তা নিজের নিজের পুস্তককে দেখান।
শ্রী পণ্ডিত প্রেমাচার্য জী শাস্ত্রী -
ইনি হলেন গুরুকুল কাঙ্গড়ীর স্নাতক তো আর্য সমাজী হলেন কি না? আরে কাঙ্গড়ীর গুরুকুল আমাদের নাকি এনার? ইনি গুরুকুল কাঙ্গড়ীর প্রফেসর যিনি লিখেছেন। আসুন পড়ুন বেদামৃতে... (এর মাঝে আবার বিঘ্ন).. শান্তি! শান্তি!!...
শ্রী বালকৃষ্ণ জী (প্রধান) -
দেখুন এভাবে শাস্ত্রার্থ চলতে পারবে না, আর আমি এটা নিবেদন করবো যে দুই বক্তা নিজের নিজের দায়িত্বকে ভালো ভাবে নিভান, মাঝখানে বিঘ্ন করবেন না, আমাদের দেখান একবার! দ্বিতীয় কথা হল যে - পণ্ডিত জীর পক্ষ থেকে "যম আর পিতর" - এর জন্য বলা হয়নি যে আর্য প্রতিনিধি সভা ছাপিয়েছে, সে তো বেদামৃতের জন্য বলা হয়েছে, এটা আমি বলছি, আর বেদামৃতের জন্য ধন্যবাদ করা হয়েছিল, এর জন্য করা হয়নি, স্বামী জীর এই কথন সত্য। (শ্রোতাগণের মধ্যে হাততালি) এইজন্য এখন শাস্ত্রার্থের পালা এগিয়ে নিয়ে যান।
শ্রী অমর স্বামী জী মহারাজ -
বলার সময় আমার ছিল, আর আপনি তাকে সময় দিয়েছেন মাঝখানে বলতে, আমি বলছিলাম যে এটা আপনি দেখান যে - "প্রতিনিধি সভা যম আর পিতর পুস্তকটি লিখিয়েছে আর ছাপিয়েছে আর ধন্যবাদ দিয়েছে" তা মেনে নিয়েছেন ইনি, কথা শেষ! সে মেনে নিয়েছে যে "প্রতিনিধি সভা ছাপায় নি আর না প্রতিনিধি সভা তার জন্য কোনো ধন্যবাদ দিয়েছে" কথা শেষ। (জনতার মধ্যে হাসির বাতাবরণ) এখন দ্বিতীয় কথা রইলো "অধামৃতা পিতৃষু সম্ভবন্তু" এর উপর ইনি বলেন যে আমি "মৃতা" তে "অ" আপনে-আপ ঠুকে দিয়েছি, সুতরাং এতে বোঝা গেল যে - ইনি নিজের পুস্তক পড়ে না, শাস্ত্রার্থ করার জন্য তৈরি হয়েগেছে, কিন্তু পুস্তক পড়ে না। এটা হল সায়ণাচার্যর ভাষ্য, সায়ণাচার্য জী বলছে - "অমৃতাঃ অমরণ ধর্মাণঃ সন্তঃ" - "অমৃতা" পাঠ মেনেছে, "মৃতা" নয়, এই জন্য "মৃতা" নয় বরং "অমৃতা" হবে। সায়ণাচার্য জীর হল এটি যেখানে সে বলছে - "পিতৃষু পিতৃত্বম্ প্রপ্তেষু পুরাতনেষু স্বপূর্বজেষ অমৃতাঃ" নিন কান খুলে শুনে নিন - "অমৃতাঃ অমরণ ধর্মাণঃ সন্তঃ সম্ ভবন্তু সম্ প্রাপ্তা সম্য়ুক্তা ভবন্তু" এখানে "মৃতা" নয় বরং "অমৃতা" আছে আর এটা হল সায়ণাচার্য জীর ভাষ্য। বন্ধুগণ! ইনি রাজারামের ভাষ্য নিয়ে আসুক অথবা অন্য কারও ভাষ্য নিয়ে আসুক, যাকে আমরা কালকেই বলে দিয়েছি - রাজরাম জীর ভাষ্য কোন আর্য সমাজী মানে? কেউই মানে না, ইনি সেসব ভাষ্য খুঁজে বেড়ান, যাকে আর্য সমাজীরা বহিষ্কার করে দিয়েছে, এটা হল সায়ণাচার্য জীর ভাষ্য, এখানে "মৃতা" নেই বরং "অমৃতা" পাঠ আছে।
আর এর অর্থ হল অমরণধর্মা, এই জন্য যেসব লোক অমরণধর্মা, অর্থাৎ যারা সন্যাসী বা বানপ্রস্থ এই ধরণের যোগ্য, তারা পিতরে গোনা হোক অর্থাৎ গণনা পিতরে হোক, এটা হল সায়ণাচার্য জীর পাঠ, অমৃতাকে আপনি ভুলেছেন, অমৃতাকে আপনি লুকাচ্ছেন, বিনা কারণে অমৃতাকে হজম করেছেন! আমি এরজন্য এই কথা বলি। এখন চুলন এসবের পর আরও বলছি যা ইনি জিজ্ঞেস করছিলেন জীবিতদের শ্রাদ্ধ সম্বন্ধে কোনো প্রমাণ বলুন? নিন শুনুন - জীবিতদের উপর যা মন্ত্র তা আমি বলছি সেটা শুনুন -
উপহূতাঃ পিতরঃ সোম্য়াসো বর্হিষ্য়েষু নিধিষু প্রিয়েষু।
ত আগমন্তু ত ইহ শ্রুবন্ত্বধি ব্রুবন্তু তে অবন্ত্বস্মান্।।
(যজুর্বেদ অধ্যায় ১৯ মন্ত্র ৫৭)
আয়ন্তু নঃ পিতরঃ সোম্য়াসোঽগ্নিষ্বাত্তাঃ পথিভির্দেবয়ানৈঃ।
অস্মিন্ য়জ্ঞে স্বধয়া মদন্তোঽধি ব্রুবন্তু তে অবন্ত্বস্মান্।।
(যজুর্বেদ অধ্যায় ১৯ মন্ত্র ৫৮)
এই হল মন্ত্র, আর এই মন্ত্রে বলা হয়েছে - "পিতর আসুক, আর এসে আমাদের সামনে বলুক, আমাদের উপদেশ দিক, আমাদের কথা শুনুক" - শুনুন! "অস্মাদয়ামি বচাম্সি" আমাদের বচনগুলো শুনুক আর বলুক আর আমাদের রক্ষা করুক। তো এরা হল জীবিত নাকি মৃত? যে রক্ষা করবে, বলবে, শুনবে? মরে পড়ে আছে, ঘরের সকলে কাদঁছে যে আমাদের শোনো - সে শোনেই না, আমাদের কিছু বলে যাও, সে বলেই না, মরে গেছে, শরীর জ্বলে গেছে, আর এখন জ্বলার পর সে বলতেও পারবে আর শুনতেও পারবে? (জনতায় প্রচণ্ড হাসি) .. শুনুন! -
য়ে সমানাঃ সমনসঃ পিতরো য়মরাজ্যে।।
(যজুর্বেদ অধ্যায় ১৯ মন্ত্র ৪৫)
য়ে সমানাঃ সমনসো জীবা জীবেষু মামকাঃ।।
(যজুর্বেদ অধ্যায় ১৯ মন্ত্র ৪৬)
এই হল মন্ত্র, শুনেছেন পণ্ডিত জী! এটা উন্নিশতম অধ্যায়ের যজুর্বেদের মন্ত্র - যেখানে বলা হয়েছে যে, যারা হল সমতুল্য আয়ুর, যারা সমান বয়সী সে পিতর আসুক, আর আমাদের এখানে এসে ভোজন করুক, তারা হল জীবিত। যার আয়ু সমান, যার মন সমান এরা মৃত? মৃতদের কি কোনো আয়ুও হয়? আমি এমন এমন মন্ত্র বলবো যে ঠিক এরকমই যা শুনে অবাক হবেন, সেসব মন্ত্র পড়ে বলছি, এই "নিখাতা"র অর্থটা ভুল যা আপনি বলেছেন, মৃতককে ভূমিতে গাড়া আমাদের কোনো প্রথা নয়, আর ভূমিতে গাড়ানো, সেখানে তো বলা হয়েছে যে, যারা খনন বিদ্যা জ্ঞানী, যারা আকাশ বিদ্যার জ্ঞানী, যারা অগ্নি বিদ্যার জ্ঞানী তারা সেসব লোক, তাদের ভোজনের জন্য ডাকো, এই মন্ত্রে এটা বলা হয়েছে, এই গাড়া হয়েছে তাদের ডাকো, তাহলে তো মুসলমানদের ডাকো, ক্রিশ্চিয়ানদের যারা পিতর শ্রাদ্ধ তাদের হবে।
শ্রী পণ্ডিত প্রেমাচার্য জী শাস্ত্রী -
সজ্জনগণ! এই দ্বিতীয় বারের টার্নও শেষ হচ্ছে, আর এভাবেই ক্রমে ক্রমে সম্পূর্ণ শাস্ত্রার্থ শেষ হয়ে যাবে, আর কথা যেখানের সেখানেই থেকে যাবে। আমার একটা কথাকেও স্পর্শ করার কৃপা করে নি আমি আবারও বলছি, শুনুন! স্বামী জী মহারাজ বলেছেন - এখন তো একটা মন্ত্র শুনিয়েছে আমাদের। প্রথম কথা বলেছিল যা বলতে বলতে বলাই হয়নি, বলেছিল যে, সাহেব আমি মানি না যে শ্রাদ্ধ কোনো গ্রন্থে লেখা আছে নাকি লেখা নেই, আমাকে তো বেদে লিখা আছে এমনটা দেখাও, বেদে শ্রাদ্ধ শব্দ লেখা দেখাও তো মেনে নিবো। তোমার স্মৃতিতে লেখা হোক, আর কোথাও লেখা হোক তো আমি মেনে নিবো, এটা ইনি বলেছিলেন, এক কথা! আমি বলছি ধরে নিন এক মিনিটের জন্য, আমি প্রমাণ দিবো। শ্রাদ্ধ আছে বেদে!! কিন্তু ধরে নিন এক মিনিটের জন্য যে - শ্রাদ্ধ শব্দ বেদে নেই তবে কি শ্রাদ্ধই শেষ হয়ে গেলো? না জীবিতর থাকলো না মৃতর থাকলো। আপনারাই বা কেমন করে করবেন শ্রাদ্ধ? এই জন্য যদি জিদ্ ধরে থাকবেন যে বেদে শ্রাদ্ধ শব্দ দেখাও, তো তাহলে তো আপনাদের জীবিত শ্রাদ্ধের উপরেও পর্দা পরে যাবে, এই জন্য এরকম আগ্রহের প্রয়োজন ছিল না, তবুও আমি স্বামী জীকে সন্তুষ্ট করার জন্য সে মন্ত্র প্রস্তুত করছি, যাতে ভাইগণ আপনারা বুঝতে পারেন, বেদে কোথায় কিভাবে এসেছে? শুনুন! এটা হল যজুর্বেদের মন্ত্র -
সত্যম্ চ মেম্ শ্রদ্ধা চ মেম্ য়জ্ঞেন কলপন্তাম্।
ব্রত সত্যম্ দধাতি ইতি শ্রদ্ধা।।
অর্থাৎ "শ্রদ্ধয়া য়দ্ ক্রিয়তে ইতি শ্রাদ্ধম্" শ্রদ্ধা পূর্বক যে কর্ম করা হয় তার নাম "শ্রাদ্ধ" আর "শ্রাদ্ধম্" বা শ্রাদ্ধের দ্বিতীয় পর্যায়বাচী হল "পিতৃয়জ্ঞ"। তো সজ্জনগণ! শ্রাদ্ধ শব্দের কথা ছিল তো শব্দটি আমি তা দেখিয়ে দিলাম। আমি জিজ্ঞেস করেছিলাম এমন কোনো মন্ত্র বলুন যেখানে জীবিতদের সেবা করা লেখা আছে, মৃতকের শ্রাদ্ধ করা লেখা নেই। স্বামী জী একটা মন্ত্র প্রস্তুত করেছেন, আর আমি চেয়েছিলাম যে - একটা মন্ত্র প্রস্তুত করুক, কারণ এইসব কথোপকথন তো হল এক বালির উপর বালির দেয়াল, এখন আমি সেই শব্দকে খুঁজে বের করছি সেই মন্ত্রটি থেকে, তখনই বালির দেয়াল ধসে পরবে। শুনুন ইনি যে মন্ত্র উপস্থিত করেছিলেন, ইনি মন্ত্র উপস্থিত করেছিলেন "আয়ন্তু ন পিতরঃ সোম্য়াসঃ" এখনই এই মন্ত্র প্রস্তুত করেন, কিন্তু সজ্জন গণ! এই মন্ত্রের ভিতর একটা শব্দ আছে "অগ্নিষ্বাত্তা" এই শব্দ যে মন্ত্রে আছে এনার সব মান্যতা ধ্বংস করে দিচ্ছে। "অগ্নিষ্বাত্তা" এর অর্থটা কি? যজুর্বেদের শতপথ শাখা অগ্নিষ্বাত্তার অর্থ করে - য়ান্ অগ্নির্রেবদহতি স্বদয়তি তে পিতরঃ অগ্নিষ্বাত্তা" অর্থাৎ যাকে সংস্কার করার সময় অগ্নি যার শরীরের রসস্বাদন করে, আগুন যার শরীরের স্বাদ নেয় চিতায় তার নাম হল "অগ্নিষ্বাত্তা" অর্থাৎ যা মরার পর অগ্নিতে জ্বালানো হয়েছে, তাদের বলা হয়েছে যে সেই পিতর আমাদের এখানে আসুক। আহাঃ? এখানে তো জীবিতর কথাই নেই! জীবিতর তো সম্বন্ধই নেই, অগ্নিষ্বাত্তার তো মানে হল যে - অগ্নিষ্বাত্তা শব্দ আছে, এই অর্থ হল কি না, শুনুন শতপথ বেদ শোনাচ্ছি! বড়ো বেদের কথা বলছেন! বড়ো ভালো হল ডান-বাম যান না, বেদই শুনুন কি বলছে, অগ্নিষ্বাত্তার প্রতি বেদ! যজুর্বেদের শতপথ -
"শাম্খায়ান্ অগ্নির্রেবদহাত্ স্বদহতি তে পিতরঃ অগ্নি স্বাপ্তা"
আর শতপথের এই উদাহরণকে আর্য সমাজের মূর্ধন্য শিরোমণি পণ্ডিত ভগবদত্ত জী, ভাই আপনি আপনার পণ্ডিতদের না মানেন, তিরস্কার করেন তাদের, তাদের উপেক্ষা করেন, কিন্তু এমনটা নয় বিদ্বান হল সর্বত্র সমাদরণীয়, আমরা সত্য কথা বলা আর্য সমাজের পণ্ডিতদেরও ততই আদর করি যতটা নিজের বিদ্বানদের! আপনি বলছিলেন এই বই তিনি লেখেন নি, এই পুস্তক সে লেখায় নি, এর দেখিয়ে দাও, তার দেখিয়ে দাও। এইসবেই সময় নষ্ট করে দাও। তার মধ্যেই টাইম পাস করে দাও। আপনি আমার কথাকে ধরেনই না। আর বলেন যম আর পিতর আর্য সমাজী লেখে নি। কেন লেখেনি? গুরুকুল কাঙ্গড়ীর স্নাতক তিনি, মঙ্গলদেব তদিতকান্ত বিদ্যালঙ্কার! তিনি গুরুকুল কাঙ্গড়ীর স্নাতক, গুরুকুল কাঙ্গড়ী হল আর্য সমাজের সংস্থা, আমাদের সংস্থা নয়। এই কারণে এক তো ইনি যে মন্ত্র প্রস্তুত করেন জীবিত পিতর সম্বন্ধে, আমি তার সমাধান প্রস্তুত করেছি যে - অগ্নিষ্বাত্তা শব্দের অর্থ হল এই যে, সে পিতর যার শরীরকে অগ্নি চিতায় জ্বালিয়ে ভস্ম করেছে তাকে অগ্নিষ্বাত্তা বলে, যে জীবিত তারা কখনও হতে পারে না, আমি বেশি বেদ মন্ত্র এইজন্য দিচ্ছি না, কারণ স্বামী মহারাজ হলেন বুড়ো, যেন ওনার উপর বেশি বোঝ না পরে যায়! (জনতায় হাসি) আমার আগের দুই মন্ত্রকে এখনও ইনি ধরেনই নি। "য়ে অগ্নি দগ্ধা, য়ে অনগ্নিদগ্ধা" বলছিলেন, ভাই আমাদের এখানে তো পোতার মান্যতা নেই। আরে ভাই যার যেখানে মান্যতা মেনে নাও, তোমার ওখানে নেই, এক মিনিটের জন্য ধরো, তবে যার ওখানে আছে, ক্রিশ্চিয়ানদের ওখানে আছে, মুসলিমদের ওখানে আছে, আর মাজহাব হীনদের ওখানে আছে, যদি তাদের মাথায় এটা এসে যায় যে আমরা আমাদের পিতরদের উদ্ধার করবো, আমরা আমাদের পিতরদের কল্যাণ কি করে করবো, তাদের উদ্ধার করবো, তাদের সেবা করবো। সনাতন ধর্মানুকূল শ্রাদ্ধ করার বিচার তো বেদ, যা এক সার্বভৌম সত্যই বলে, চার প্রকারের মান্যতা সংসার ভর হতে পারে। চার ভাবেই আমরা পিতরদের ডাকি। এটা তো সার্বভৌম সত্য প্রকট করেছে বেদ, এখানে, আমাদের এখানে এরকমটা হবে না, জ্বলে গেছে শরীর তো জ্বলে গেছে, সে পিতর আসবে কিভাবে? সে আমাদের সঙ্গে বলবে কি করে? আপনাকে দেখাবো স্বামী দয়ানন্দকে বলতে, অন্যদের তো ছাড়ো আমি স্বামী দয়ানন্দের দেখা বলছি। সে বলে - ও আর্য সমাজের ভাইগণ শোনো! এই পুস্তকটি পুস্তক নয় বরং এটি অ্যাটমবম। ইনি বার বার বলছিলেন আমি মানি না সাহেব! আমরা মানি না সাহেব!! এটা শ্রীমদ্দয়ানন্দ প্রকাশ - এর লেখক হল শ্রী সত্যানন্দ, এটি পঞ্চমতম এডিশন যা আমার হাতে আছে, এটি সম্বত্ ১৯৬৪তে ছাপা, এখানে স্বামী দয়ানন্দের জীবন ইতিহাস লেখা আছে তো এখানে যা লেখা আছে তা পড়ে শোনাচ্ছি আমি - শুনুন! ধ্যান দেবেন - কিভাবে মরণপরান্ত কিরকম দেখায়? এখানে লেখা আছে যে, যখন স্বামী জীর মৃত্যুর সময় নিকট ছিল সে সময়ের বর্ণন করা হচ্ছে যে - মহর্ষির মৃত্যুর অবস্থা দেখে শ্রী গুরুদত্তর মতো ধুরন্ধর তার কোনো এক সেবক যে সেখানে উপস্থিত ছিল, হৃদয়ের উপজাঊ ভূমিতে অন্তিম জীবনের মূল লেগে যায় - তিনি কি দেখলেন? সত্যানন্দ জী লিখেছেন গুরুদত্ত জী কি দেখলেন যে - "এক দিকে তো পরমধামে পধারের জন্য প্রভু পরমহংস্ পালঙ্কে বসে প্রার্থনা করছে আর অন্যদিকে ব্যাখ্যান দেওয়ার বেশভূষায় সুসজ্জিত সেই ঘরের ছাদের সঙ্গে লাগিয়ে বসে আছে" এক তো বসে আছে পালঙ্কের উপর স্বামী জী, দ্বিতীয় সে ছাদের সঙ্গে লাগিয়ে কি করে ছিল? ভাই, ইনি বলে দেবেন তার চোখের দৃষ্টির দোষ ছিল। সে ছাদে দয়ানন্দকে দেখ ছিল তো তার চোখে দোষ ছিল, আচ্ছা শুনুন আরে ভাই! আরও একটা আর্য সমাজী উনি জায়গায় জায়গায় প্রচারকর্তা, ভ্রমণকারী ব্রহ্মচারী হলেন কৃষ্ণদত্ত। আপনাদের অনেক শত আর্য সমাজে প্রচার করেছে, জায়গায় জায়গায় উনি প্রদর্শনও করে যে, ব্রহ্মচারী কৃষ্ণদত্তের মধ্যে শ্রঙ্গী ঋষির আত্মা আসে। শ্রঙ্গী ঋষির আত্মা তার শরীরে আসে, সেই ব্রহ্মচারী আমাদের নয়, যে তাকে যেখানে সেখানে শোয়ায়ে এই আর্য সমাজী তার প্রশ্নোত্তর করায়, এই কারণে মরার পর কোনো আত্মা আছে কি নেই? আজকের বিজ্ঞানের যুগে এরকম করা দুঃসাহস। টার্ন টন টন টন...
শ্রী অমর স্বামী জী মহারাজ -
বন্ধু গণ! এই কথা সমাপ্ত হয়েছে যে আর্য প্রতিনিধি সভা পুস্তকটি লেখিয়েছিল নাকি লেখায়নি? সেসব কথা সমাপ্ত হয়ে গেছে, এরজন্য আমি এটা বলবো না, এখন পরবর্তী কথা হল, ইনি নিজে-নিজেই প্রশ্ন বানিয়েছে, এটা কে জিজ্ঞেস করেছে যে বেদে শ্রাদ্ধ শব্দ লেখা আছে কি নেই? আমি না তো জিজ্ঞেস করেছি আর না বলেছি। তো নিজে নিজেই বলা আর নিজেই তার উত্তর দেওয়া সময় নষ্ট ছাড়া আর কিছু না! আর তাই নিজে নিজেই প্রশ্ন বানিয়েছে, নিজে নিজেই উত্তর দেওয়াও শুরু করেছে।(জনতায় হাসি) আর তার উপরেও "শ্রাদ্ধ" শব্দ দেখায় যে "শ্রদ্ধা"? অর্থ আপনি এটা করেছেন যে "শ্রদ্ধয়ায়দ্ ক্রিয়তে ইতি শ্রাদ্ধম্" এটা তো আমরাও বলি, এটা তো আমাদের করা অর্থ। সেটা বলতেন যেটা বলে যে - "গয়া" তে গিয়ে শ্রাদ্ধ করো, গয়াতে গিয়ে পিণ্ড দেবেন, রইলো শ্রাদ্ধের, - শ্রদ্ধা দ্বারা যেকোনো কার্য যা করা যায় সেটা হল শ্রাদ্ধ, কারও আদর সৎকার করা হলে সেটা হল শ্রাদ্ধ। এটা তো হল আমাদের লক্ষ্মণ, তাতে কি হল? এটা আপনি পড়ে দিলেন যে বেদে "শ্রাদ্ধ" আছে আর দেখিয়ে দিলেন "শ্রদ্ধা" এই কারণে শ্রাদ্ধ সিদ্ধ হয়ে গেলো! সে হল আপনার অজ্ঞেয় পিতরদর্শী, অনেক সহায়তা মিললো কৃষ্ণদত্ত ব্রহ্মচারীর, এই সভাতে ঘোষণা করা হচ্ছে যে কোনো আর্য সমাজী একে ডাকবে না আর ইনি বলছেন আর্য সমাজী! আমাদের পণ্ডিত ওমপ্রকাশ জী বসে আছেন। আর্য সমাজ ঘোষণা করছে যে - আর্য সমাজের সঙ্গে তার কোনো সম্বন্ধ নেই। আর্য সমাজী তাকে কোনো প্রৎসাহন যেন না দেয়। এর মানে কি? এর মানে হল - নাই মামার চেয়ে কানা মামাকে ধরা! কোনো প্রমাণ তো হাতে নেই, তাই কখনও কৃষ্ণদত্ত জীর শরণে যাবে, কখনও মুসলিমের শরণে যাবে কখনও বা ক্রিশ্চিয়ানদের শরনে যাবে, কিন্তু প্রমাণ কোত্থাও খুঁজে পায় না। বন্ধু গণ! ইনি কি দেখিয়েছেন যে - স্বামী দয়ানন্দ বলেছেন? এটা দেখায় নি। এটাই কি যে উনি দেখেন গুরুদত্ত জী যে দয়ানন্দ জী একটা তো বসে আছে পালঙ্কের উপর আর একটা ছাদের উপর দেখা যাচ্ছে, আর উত্তরও স্বয়ং নিজে নিজেই দিয়েছে যে তার দৃষ্টির দোষ বলবেন। আমি বলবো এটা দৃষ্টির দোষ নয় তো আর কি? আর কেউ বলবেই বা কি এসবকে? দৃষ্টির দোষ বলবে নয় তো কি বলবে? বলুন? বলবেন কি করে? এটা শাস্ত্রার্থ হচ্ছে! বেদ মন্ত্রের ঝর্না বইছে!! এটাও বেদ মন্ত্র - কৃষ্ণদত্ত ব্রহ্মচারীর সেটাও বেদ মন্ত্র ছিল? তডিতকান্ত, সেটাও বেদ মন্ত্র ছিল, যার জন্য কথা দিয়েছিল যে প্রতিনিধি সভা তাকে দিয়ে লিখিয়েছে, আর শেষে মানতেই হল যে প্রতিনিধি সভা লেখায় নি। আর প্রতিনিধি সভা ধন্যবাদ দিয়েছে, এটাও মিথ্যা বেরোলো। এমনিতেই প্রতিনিধি সভাতে সহস্র পুস্তক লেখা হয়ে থাকে, আমি সেসব পুস্তকের ঠেকেদার নাকি? যে কোনো পুস্তক এদিক সেদিক থেকে পাবে, তাকে নিয়ে এসে আমার মাথায় মারবে। আমার জন্য সেই প্রমাণ নিয়ে আসুন যাকে আমরা মানি, তা নাহলে এখানে বড়ো বড়ো বিদ্বান বসে আছেন, তাদের জিজ্ঞেস করে নিন, তাদের সহায়তা নিন, আর পড়ুন, তারপর কথা আগে এগোবে। মহাবিদ্বান পণ্ডিত রমেশ্বরাচার্য জী আপনার পাশে বসে আছেন। এখন আরও মন্ত্র বলছি, আগে একটা মন্ত্র শুনুন - "অদ্যামমৃতা পিতৃষু সম্ভবন্তু" ...(পৌরাণিকদের থেকে চেঁচাম্যাচি শুরু হয়) এখন এনারা শুনবে না তার কারণ সায়ণাচার্যের ভাষ্য যে দেখিয়েছি। "অমৃতা" আছে এখানে "মৃতা" নেই। "অমৃতা" আছে "অমৃতা"!! মিথ্যা বলবেন না, একটা মন্ত্র বলছি -
শতমিন্নু শরদো অগ্নি দেবা য়ত্রা নশ্চক্রাজরসম্ তনূনাম্।
পুত্রাসো য়ত্র পিতরো ভবন্তি, মা নো মধ্যা রীরিষ্তায়ুর্গন্তোঃ।।
(যজুর্বেদ অধ্যায় ২৫ মন্ত্র ২২)
যজুর্বেদের পঁচিশতম অধ্যায়ের এই মন্ত্র, এখানে কি বলা হয়েছে? যে - মাতা-পিতা পরমেশ্বরের কাছে প্রার্থনা করছেন যে, হে পরমেশ্বর! আমরা ততদিন জীবিত থাকি যতদিন পর্যন্ত না আমাদের পুত্র পিতর হয়ে যায়। এখন এই পিতরের অর্থ মরে যাওয়া নাকি? বলুন! কোনো পৌরাণিক সনাতন ধর্মে হতে পারে, আর্য সমাজে তো নয়, (জনতায় হাসি) এখানে কেউ আছে যিনি বলেন আমাদের পুত্র মরে যাক, যতদিন আমরা জীবিত থাকি, আমাদের এখানে তো কেউ এমন নেই যে এটা বলতে পারে আমাদের পুত্র মরে যাক যতদিন আমরা জীবিত আছি। মাতা-পিতা বলেন যে "পুত্রবন্তো ভবনন্তি" পুত্রবান হয়ে যাক অর্থাৎ এটা যে অর্থ আমি বলছি এটা হল মহীধরের অর্থ, এটা যে অর্থ তা আপনার আচার্য্য জীর অর্থ, কেউ এর উত্তর দিতে পারবে না, কেউ এর খন্ডন করতে পারবে না, এখানে জীবিত ব্যাক্তিকে অর্থাৎ জীবিতকে পিতর বলা হয়েছে। আমাদের যে পুত্র আছে পিতর হয়ে যাক, যতদিন আমরা জীবিত আছি। আর আমি চ্যালেঞ্জ দিয়ে বলছি যে অন্তিম সময় পর্যন্ত এর উত্তর আসবে না। এখন আমি দু-চার প্রশ্নও করে যাচ্ছি, উত্তর তো যেমনটা ইনি বলবেন শুনে নেবেন, এনার কাছে এই প্রশ্নগুলোর উত্তর কখনও জুটবে না, এটা আমার চ্যালেঞ্জ রইলো। এখন প্রশ্ন শুনুন! আমি প্রথমে তো এটা জিজ্ঞেস করছি যে "পিতর জীবকে বলে নাকি শরীরকে"? দ্বিতীয়, "যে মৃতক শ্রাদ্ধ করা হয় তো মৃতক এখানে খাওয়ার জন্য আসে নাকি ভোজন তার জন্য ওখানে পৌঁছে যায়"? যদি এখানে খাওয়ার জন্য আসে তো -
বাম্সাসি জীর্ণানি য়থা বিহায় নবানিগৃহণাতি নরোপরাণি।
তথা শরীরাণি বিহায় জীর্ণানি অন্যানিগ্রহণাতি নবানি দেহী।।
(ভগবতগীতা)
উনি পরে কোথাও জন্ম নিয়েছেন, আর আপনি ওনাকে এখানে ডেকেছেন যে আসো আমাদের এখানে ভোজন করো, তো সে শরীর ছেড়ে আসবে নাকি সঙ্গে নিয়ে আসবে? যদি সে শরীর সঙ্গে নিয়ে আসে তো পণ্ডিত জীর সঙ্গে একটা আরও এসে গেলো, তা না হলে একা পণ্ডিত জীকে আর সঙ্গে এসে গেলো আরও একটা! তো শ্রাদ্ধ কর্তারা বলবে যে এটা কাকে নিয়ে এসেছেন? পণ্ডিত জী বলবেন যে, তোমাদের বাপকে! তারা বলবে, বাপ হবে তোর, আমাদের বাপ এটা নাকি? আমাদের বাপ তো মরে গেছে, তো এটা কাকে নিয়ে এসেছ? তখন লড়াই শুরু হয়ে যাবে। কে আসবে? যদি শরীর ছেড়ে আসে তো সে মরে যাবে, জীবাত্মা সেখান থেকে বেরিয়ে আসবে, তার ঘরে কান্নাকাটি শুরু হয়ে যাবে, তারপর তাকে ভস্ম করে দিবে। তো মৃতক শ্রাদ্ধের পরিণাম এটা দাড়াবে! এই জন্য যেকোনো প্রকারে যেকোনো মৃতক শ্রাদ্ধই হোকনা কেন তাকে যুক্তি দিয়ে সিদ্ধ করা সম্ভব নয়, আর না বেদ দিয়ে সিদ্ধ করতে পারবে। এখন ইনি বলেছেন "অগ্নিষ্বাত্তা"র অর্থ, আমি বলছি আর অর্থও কার করা? সায়ণাচার্য জীর! শুনুন!! আর হ্যাঁ উব্বটেরও শুনুন, মহীধরেরও শুনুন! সায়ণ ভাষ্যে বলা হয়েছে - "অকৃত সোময়াগাস্তু অগ্নিষ্বাত্ত সম্জ্ঞকাঃ" যারা সোম য়াগ (সোময়জ্ঞ) করে না তাদের নাম হল "অগ্নিষ্বাত্ত", আর ইনি বলছেন অগ্নিতে জ্বালানো হয়েছে তাদের নাম "অগ্নিষ্বাত্ত"। আর স্বয়ং সায়ণাচার্য জী কি বলেছেন? এটাও আপনি শুনেছেন? এখন মনুস্মৃতিতে মনু জী কি বলছেন? শুনুন - "অগ্নিষ্বাত্তাশ্চ দেবানাম্ মারীচালোক বিশ্রুতাঃ" অর্থাৎ ঋষির পুত্রকে "অগ্নিষ্বাত্ত" বলা হয়, জ্বলে যাওয়ার নাম "অগ্নিষ্বাত্ত" নয়, মরীচিকাদের যে কোনো পুত্র হোক তাকে আগুনে জ্বালিয়ে দাও, যে বালক মরীচির বংশের তাকে আগুনে জ্বালাও তো "অগ্নিষ্বাত্ত" হবে! - অগ্নিষ্বাত্তের অর্থ এটা নয় বরং এটার অর্থ সেটাই যা সায়ণাচার্য জী করেছে - "অকৃত সোময়াগ" এটা হল সায়ণাচার্য জীর অর্থ। আর এরকমই মহীধর জীর! ওনার করা অর্থ আছে আমার কাছে, এই সময় এই গ্রন্থ উপস্থিত আছে, আর যা দেখার আছে দেখুন, এই দেখুন মহীধর জীর ভাষ্য আমার কাছে আছে। এরও এইসময় দুই ভাষ্য বিদ্যমান আছে। বন্ধুগণ ইনি তো খুঁজে বেরান তাদের যাদের আর্য সমাজ বের করে দিয়েছে, আমরা তাদের পেশ করি যাদের আচার্য্য মানা হয়। সব পৌরাণিক লোক যাদের মাথা নত করে মানে। আপনারা দেখেছেন ইনি কেমন মেঘের মতো বেদ মন্ত্রের বর্ষণ করেছেন? আর বাহানাটাও কি দারুন বের করেছে যে বেশি বেদ মন্ত্র আমি এরজন্য বলবো না যাতে বুড়া সন্যাসীর উপর বোঝ না পরে যায়! বন্ধুগণ, ইনি আমার উপর যেন বোঝ না পরে যায় এই জন্য বেদ মন্ত্র বলে না! (জনতায় হাসি) আগেই ইনি যা বেদ মন্ত্র শুনিয়েছে যে আমি বোঝের ঠেলায় ডেবে যাচ্ছি, ইনি হাজার মন্ত্র শুনিয়েছেন। (জনতায় পুনঃ অট্টহাসির বাতাবরণ) ইনি দুই কি তিনটিই বেদ মন্ত্র বলেছেন, তার উত্তর আমি দিয়ে দিয়েছি, অর্থও বলেছি, এনার অর্থ নেই, এখন এনার সেই "সৈন্ধব স্মরণে এসে গেলো, আর এখন যেখানে যেখানেই পিতর শব্দ দেখবে, এনার সেখানে মরাই অর্থ হবে, আর সেটা বদলাবে না। সৈন্ধব - এর অর্থ কোথাও ঘোড়া হয়, কোথাও লবণ হয়ে থাকে, এখানে পিতরের অর্থ মরে যাওয়াই হবে সে নামকরণ সংস্কারই হোক না কেন, অথবা সমাবর্তন সংস্কারই হয়ে থাক। (জনতায় হাসি) আমি জিজ্ঞেস করছি যে, কোথায় লেখা আছে যে দয়ানন্দ জী মরে যাওয়াকে পিতর বলেছে? আরও এক দারুণ কথা লোককে শুনিয়েছে হাসানোর জন্য অন্তত সনাতন ধর্মী তো প্রসন্ন হয়েই যাবে যে আমাদের পণ্ডিত বড়ো ভারী উৎসাহ দেখিয়েছে, তৃষ্ণার্ত পিতা বসে আছে সে তৃষ্ণায় মরে যাচ্ছে আর ওদিকে পূর্ব দিকে মুখ করে আর ওদিকে পশ্চিম দিকে মুখ করে জল দিয়ে দিলো - কোথায় লেখা আছে?" তৃষ্ণার্ত পিতা বসে আছে সে আপনার ঘরে বসে থাকতে পারে। না কোথাও তৃষ্ণার্ত বসে আছে আর না কোনো কথা! "পিতর" অর্থ হল মাতা পিতার খুব সেবা করা উচিত, আমরা বলি যারা জীবিত তাদের সকলের খুব সেবা করা উচিত সেখানে যে "পিতরঃ শুন্ধধ্বম্" বলা হয়েছে পিতর গণ শুদ্ধ হোক শুদ্ধ করো। এটা হল সংস্কারের কর্ম। সেখানে কোনো কিছু এমন আসলে তা করা হয়। শিক্ষা হয়ে থাকে, সেখানে বিভিন্ন শিক্ষা হয়ে থাকে! সে কেবল মৃতদের জন্য যেখানে কোথাও নামকরণে এসে যায় পিতর তা মরাদের জন্য হয়ে গেল যেখানেই শ্রাদ্ধে এসেগেল তা মরার জন্য হয়ে গেল, আপনি বলুন কোথায় লেখা আছে, মৃতদের জন্য? তৃষ্ণার্ত বাপ কোথায় বসে আছে, আর কোথায় তৃষ্ণার্ত মা বসে আছে? এই ভাবে এইসব কথা বলে সময় নষ্ট করা ছাড়া আর কিছু না, না আছে কোনো প্রমাণ। আর সেই খুঁজে গতকালের কথা আবারও নিয়ে এসেছে বার বার বলেছে যে স্বামী জী "পঞ্চমহায়জ্ঞ বিধি" ১৯৩২ লিখেছিল, প্রথমে তো সেটা ৩২ তে ছাপে সেটাও আমার কাছে আছে, এর পর দ্বিতীয় সংস্করণ ১৯৩৪ ছাপা হয় সেটাও আমার কাছে আছে, সন ৩৬ সের নিয়ে এসেছেন মিথ্যা বানিয়ে। আর তার উপর প্রমাণ করছেন যে "স্বামী জী বলেছিল"? বন্ধু গণ! সন ১৯৩২ তে মৃতক শ্রাদ্ধ নেই, মূর্তি পূজা নেই, না সন ১৯৩৪ সংস্করণে, তবে ১৯৩৬ তে কোথা থেকে এসে গেলো? ইনি কোনো সহায়তা পাচ্ছেন না। না এনার কাছে কোনো প্রমাণ আছে। খালি ঘুরে ফিরে ওই একই কথা বলতে থাকবেন। কখনও রাজারামের শরণে যাও কখনও কৃষ্ণদত্তের অথবা কখনও তাড়িতকান্তের! যাকে আর্য সমাজ থেকে বের করে দিয়েছে তার শরণে যাও, না আছে এনার কাছে কোনো বেদ মন্ত্র। এখন আমি বেদ মন্ত্র দিয়েছি যে - "পিতরের অর্থ হল জীবিত" মরে যাওয়া হয় না, আর আমি এই নিয়ে পুস্তক লিখেছি যেখানে ১২৪ প্রমাণ আমি এই পুস্তকে দিয়ে দিয়েছি, পুস্তকটি হল "জীবিত পিতর" তার ভিতর ১২৪ প্রমাণ আছে বেদের যে - "পিতর মানে হল জীবিত, মরা হয় না" আমি জিজ্ঞেস করেছিলাম যে - যদি মৃতের নাম পিতর হয় তবে পিতর নামটা মৃত শরীরের হল নাকি জীবাত্মার? কার নাম পিতর? আপনার কাছে কি এর কোনো উত্তর আছে? এসেছেন উত্তর দিতে! প্রেমাচার্য জী যারই শরণে যাও জিজ্ঞেস করে আসো উত্তর আছে নাকি? আমি জিজ্ঞেস করেছিলাম যে, আপনি শ্রাদ্ধে যাকে ডাকেন সে পিতর শরীর সহিত আসে নাকি শরীর রহিত? কিভাবে আর কোন রূপে আসে সেই পিতর? আপনি কোনো উত্তর দেন নি, আমি বলে দিচ্ছি আপনি কি আর বলবেন! শুনুন বন্ধু গণ! গরুড় পুরাণে লেখা আছে যে - তারা আসে আর কোথায় আসে? শুনুন - "উদরস্থঃ পিতা তস্য বামপার্শ্বেম্ পিতামহঃ" যে ব্রাহ্মণকে আমন্ত্রণ করে নিয়ে আসা হয় - বাপ তার পেটে এসে বসে যায় আর তার পিতামহ তার বাঁ কোলে এসে বসে যায়, তথা প্রপিতামহ দান কোলে! বন্ধু গণ! সে পেট ব্রাহ্মণের নাকি কোনো অতিথি ভান্ডার? (শ্রোতার মধ্যে প্রচণ্ড হাসি) যার ভিতর এত জন বসে যায় অর্থাৎ সবাই একত্রিত হয়ে যায়, আর সেই পেটে ক্ষীরও খাওয়া হয়, হালুয়াও খাওয়া হয়ে থাকে। সবকে খেয়ে ফেলে আর পিতর এসে বসে যায় পেটে ... (হাসি আর হাততালির বজ্রপাত.... পৌরাণিক দ্বারা চেঁচামেচি শুরু হয়ে যায়) - এরা এখনই ছটপটানো শুরু করেছে, এ তো কেবল শুরু, আগে আগে দেখুন কিরকম মার্কামারা কথা বলবো! আরও একটা কথা বলে দিচ্ছি যে মৃতক শ্রাদ্ধে মাংস খাওয়া আবশ্যক। পণ্ডিত জী আপনি খাওয়ার জন্য তৈরি তো! আমি প্রমাণ দিবো। যে মৃতকের শ্রাদ্ধ করবে তার নিমন্ত্রণে যে ব্রাহ্মণ আসবে তার মাংস খাওয়া আবশ্যক রয়েছে আর যদি মাংস না খায় তো নরকে যাবে সঙ্গে পিতরকেও নিয়ে যাবে। প্রমাণ শুনুন - (চতুর দিকে হৈ হট্টগোল শুরু হয়ে যায়... পৌরাণিক মন্ডলে প্রচণ্ড উত্তেজনা...বিঘ্ন..)
তার মাঝে পণ্ডিত বালকৃষ্ণ জী (প্রধান) বলেন - "স্বামী মহারাজ প্রশ্নটা ছিল শ্রাদ্ধ জীবিতদের নাকি মৃতদের"? এর পশ্চাৎ আপনি যা বলছেন তা হল "বিষয়ান্তর"।
শ্রী অমর স্বামী জী মহারাজ -
প্রধান জী, এটা বিষয় থেকে মোটেও আলাদা নয়, মৃত পিতরদের জন্য এটা বিষয় আর না এটা কোনো ভিন্ন বিষয়। সে সব ফালতু কথা বলতে থাকে তাকে তো আপনি থামান না। আমি বিষয়ের ভিতর কথা বলছি তথা একদম সোজা কথা বলছি। কূর্ম পুরাণে লেখা আছে যে - মৃত ব্যাক্তির শ্রাদ্ধ করা হোক আর শ্রাদ্ধতে ব্রাহ্মণ এসে নিমন্তন্ন খাবে তো তাকে মাংস অবশ্যই খেতে হবে। মূল মন্ত্র শুনুন -
য়ো নাশ্নাতি দ্বিজো মাম্সম্ নিয়ুক্তাঃ পিতৃ কর্মণি।
স প্রেত্য পশুতাম্ য়াতি সম্ভবা নেক বিম্শতিম্ আমন্ত্রিস্তু য়ঃ
শ্রাদ্ধৈর্দেবে বা মাম্স মুত্সৃম্জেত্।
পাবন্তি পশুরোমাণি তাবতো নরকান্ বৃজেত্।।
অর্থাৎ যে ব্রাহ্মণ মৃতক শ্রাদ্ধ পিতৃ কর্মে নিমন্ত্রিত মাংস খাবে না সে মরার পর ২১বার পশু হবে। অর্থাৎ মরে যাবে আবার পশু হয়ে জন্মাবে, আবার মরবে আবারও পশু হবে। এই ভাবে যতক্ষন ২১ বার পশু না হবে ততক্ষণ পিছু ছুটবে না। এই জন্য এখন আপনারা তৈরি হয়ে যান যে প্রতি ঘরে মাংস খেতে হবে। যদি না খান তো তার জন্যও তৈরি হয়ে যান। ২১ বার পশু হতে হবে ...(জনতায় প্রচণ্ড অট্টহাসি আর হাততালি) এই জন্য মৃত ব্যাক্তির শ্রাদ্ধ করার কথা তো কোনো ভাবেই সিদ্ধ হবে না। আমি যা বললাম তো পুনঃ স্মরণ রাখুন যে - "পিতর শরীর রহিত আসে নাকি শরীর সহিত"? কিভাবে আসে? আর সে ব্রাহ্মণের আগে খায় নাকি ব্রাহ্মণ তার পরে খায়? যদি ব্রাহ্মণ তার আগে খায় তো পিতর তার এটো খায়, আর যদি পিতর আগে খায় তো ব্রাহ্মণ তার এটো খাবার খায়, কারো এটো খাওয়া হল পাপ আর সে খেয়ে কোথায় পৌঁছায় সেটাও কৃপা করে বলবেন? সেখানে যদি পৌঁছায় তো তারও পোল খুলবো। এটার বিষয় সিদ্ধ হবে না। এই জন্য পণ্ডিত জী মহারাজ! ঘাবড়াবার কিছু নেই! মৃতক শ্রাদ্ধকে কেউই সিদ্ধ করতে পারবে না।
শ্রী অমর স্বামী জী মহারাজ -
আজ আপনি ফেঁসে গেছেন পণ্ডিত জী! এটা ভালো হত যদি এখানে আসার পূর্বে আপনি নিজের পিতাজী শ্রী পণ্ডিত মাধবাচার্য জীর থেকে জিজ্ঞেস করে নিতেন আমার পালা আজ কার সঙ্গে হতে যাচ্ছে? ...(জনতায় হাসি) আমি তো ধন্যবাদ দিচ্ছি শ্রী পণ্ডিত বালকৃষ্ণ জীকে, অনেক অনেক ধন্যবাদ যে তিনি হলেন সজ্জন পুরুষ, উনি এই শাস্ত্রার্থের পরম্পরা দিয়ে দিয়েছেন নয়তো আপনি কোথায় শাস্ত্রার্থ করতেন? ... ততক্ষন আমরা জীবিত থাকবো তার জন্য আমি অর্থ শুনিয়েছি যে - "পুত্রম্বত্ত" হয়ে যাক, পিতৃ, পুত্রবান হয়ে যাক। আর আমরা যারা আছি পিতৃবান হয়ে যাই ততক্ষন জীবিত থাকবো এইজন্য "পিতর"এর অর্থ হল জীবিত, মৃত নয়"। অগ্নিষ্বাত্তার অর্থ আমি বলেছি, যারা য়জ্ঞ করে না। এটা সায়ণাচার্য অর্থ করেছে - অগ্নিষ্বাত্তার অর্থ যা আমি বলেছি। মহর্ষি মরীচি যে পুত্র আছে সকলে অগ্নিষ্বাত্তা। এর মানে এই নয় যে তাদের সকলকে জ্বালিয়ে দিক এটা তার প্রমাণ দেয়, আমার কাছে এর সব প্রমাণ আছে। আমি বলেছিলাম যে সমান আয়ু আর সমান মনের "য়ে সমান সমনসো জীবা জীবেষু মামকাঃ" যারা এক মনের আর সমবয়সী তথা তাদের জন্য প্রার্থনা করা হয়েছে যে - আজ্যাজানু দক্ষিতো নিষদ্য" এই মন্ত্র আছে ঋগবেদে তথা যজুর্বেদে ১৯/৬২ ও অথর্ববেদে যে - পিতর আসুক বাঁ হাঁটু রেখে দক্ষিণ দিশাতে বসুক, কি হল আচার্য্য জী! মৃতকের কি হাঁটুও থাকে? মৃতকের শরীর তো জ্বলে গেছে তবে হাঁটু কি করে রাখবে? "আসিনাসো অরূণীনামুপস্থে..." যজুর্বেদ ১৯/৬৩ তে বলা হয়েছে যে - "পিতর এসে লাল উলের আসনের উপর বসুক" এটা জীবিত বসবে নাকি মৃত বসবে? এসব মন্ত্র হল পিতর সম্বন্ধে। পিতরের অর্থ জীবিতই হয় মৃতের হয় না। একটাও মন্ত্র বলা হয়নি যেখানে মৃতের নাম নেওয়া হয়েছে।.... (বিঘ্ন... পণ্ডিত প্রেমাচার্য জী দ্বারা মাঝখানে কথা বলে বিঘ্ন ঘটে) আমি এটা স্বীকার করছি যে, আপনার বড়ো ভারী দুঃখ হচ্ছে যে আমি ব্রাহ্মণের ক্ষীর খাওয়া বন্ধ করে দিয়েছি। আমি এতক্ষন পর্যন্ত একবারও বলিনি যে - ব্রাহ্মণদের ক্ষীর খাওয়ানো বন্ধ করো। আরে ভাই খুব করে খাওয়াও আজ থেকে আমি অনুরোধ করছি যে আর কাউকে খাওয়াও আর না খাওয়াও কিন্তু প্রেমাচার্য জীকে এত ক্ষীর খাওয়াও যে এনার নাক পর্যন্ত যেন ভরে যায়। আমি কখনও বলবো না যে ব্রাহ্মণদের ক্ষীর খাওয়াবে না। না আমি আগে কখন বলেছি না কখনও বলবো...(জনতায় প্রচণ্ড হাসি) ইনি তো নিজে নিজেই বানিয়ে বানিয়ে অকারণে অহেতুক কথাই বলবেন কারণ সময় তো কাটাতে হবে। নষ্ট করতে হবে। নিজে নিজেই কথা বানাও আর নিজে নিজেই তার উত্তর দাও আর হ্যাঁ এটা মনে আছে আমি আপনাকে বলেছিলাম গরুড় পুরাণের শ্লোক যেখানে বলা হয়েছে -
উদরস্থঃ পিতা তস্য বাম পার্শ্বে পিতামহঃ",
আপনি বলছেন আপনি বেদ মন্ত্র বলেছেন বেদ মন্ত্রের আপনি নিজেই খন্ডন করে দিয়েছেন। খন্ডন কি করেছেন - "আসীনাসো অরূণীনামুপস্থে" যে সে তো লাল উলের আসনে বসে, খন্ডন হয়েছে? গরুড় পুরাণের খন্ডন হল, বেদ মন্ত্রের কি খন্ডন হল? গরুড় পুরাণে যা লেখা আছে তার খন্ডন হোক হাজার বার! তাতে আমাদের কি? আমি আপনাকে বলেছিলাম যে ব্রাহ্মণের পেটে এসে বসে পিতর গণ, আর আপনি বলেছেন ব্রাহ্মণ বসে যায় লাল উলের আসনের উপর! একদম ভুল, "ব্রাহ্মণ নয় -- পিতর বসে" এই মন্ত্রে বলা হয়েছে যে "পিতর বসুক" দেখুন মন্ত্রতে ধ্যান দিন -
"আসীনাসো অরূণীনামুপস্থে"
এই মন্ত্রে পিতর শব্দ আছে, ব্রাহ্মণ শব্দ নেই। পিতর এখানে এসে বসুক। এরকম ব্যর্থ সময় নষ্ট করার মানে কি? এদিকের কথা বলো ওদিকের কথা বলো, না বেদ মন্ত্র বলে না তাকে ধরে! আমি যত বেদ মন্ত্র বলেছি তার মধ্যে যেকোনো মন্ত্র দিয়ে হবন করো। সে যে পিতর আছে দক্ষিণ দিশাতে কি করে এটা জিজ্ঞেস করেছিলেন? অকারণে কথা! কথা তো এটা হল যে একটা হয় দেবকাল আর একটা পিতৃকাল! দেব যারা হন মহান বিদ্বান বেদ জ্ঞাতা তথা রক্ষাকারী এই মাতা-পিতা আদি যারা আছে এরা সকলে হল পিতর। রক্ষাকারী সব পিতর তথা শিক্ষা দাতা বিদ্বান এরা সকলে আছেন তখন বেদের কাল শুক্ল পক্ষ বলা হয় আর পিতরের কালকে কৃষ্ণ পক্ষ বলা হয়। দক্ষিণে পিতরের কাল বলা হয়ে থাকে। কারণ রক্ষা করার আবশ্যকতা দক্ষিণায়নে অধিক আবশ্যকতা পরে। এসব কথা পড়ার দরকার কিন্তু "লেখা-পড়া ব্রাহ্মণের কর্ম"! এমনটা করুন, আপনি জেনে যাবেন যে দক্ষিণ দিশাতে কেন হয়? বেদ মন্ত্র - পিতা -- "পিতর" কোথায় থাকে? অনেক মন্ত্র বলে দিয়েছেন কোথায় থাকে, পিতর শব্দের অর্থ কী? আমি বলেছি জীবিত, মৃত নয়। আর আমি ১২৪ প্রমাণ দিয়েছি যা আমার পুস্তকে লেখা আছে, সে পুস্তকটি হল "জীবিত পিতর", ব্রাহ্মণ গ্রন্থে পিতর শব্দের অনেক অর্থ দেওয়া হয়েছে।
বাকি রইলো ক্ষীরের কথা! আপনি বলেছেন যে স্বামী জীর পেটে ব্যথা ওঠে অন্যের ক্ষীর খাওয়া দেখলে, খাওয়ায় অন্য কেউ আর স্বামী জীর পেটে অকারণে ব্যথা হয়। আমি বলছি খুব করে খাওয়াও ক্ষীর আর এমন খাওয়াও যেন নাক পর্যন্ত ভরে যায়। বরং আমাদের এখানে তো ব্রজে এমনও বলা হয় যে ব্রাহ্মণ খেয়ে খেয়ে মরে গেলে নিমন্ত্রণকারীর পূণ্য হয়। এতো ক্ষীর খাওয়াও যে খেতে খেতে ... ব্যাস্! স্বর্গলোকে চলে যাক ...(জনতায় হাসি) আমি কখন বলেছি যে খাওয়াবে না? সেখানে তো বলা হয় দুই তিন লাড্ডু আরও খাওয়াও, চার আরও মথুরা আর বৃন্দাবনে! আর টাকাও নেও, তথা দক্ষিণাও নেও। ব্যাস্ তাদের কথা হল খেয়ে নে! তারা বলে যে ব্যাস্ কোনো রকমে মরে যাক আমাদের ঘরে তবে তো আরও ভালো। আমি বলেছি ব্রাহ্মণকে মাংস খাওয়াতে বলা হয়েছে! কোনো উত্তর আছে কি এটার? আমি বলেছি যে পিতর এখানে আসে নাকি ভোজন সেখানে যায়? আমি যে জিজ্ঞেস করেছিলাম যে, শরীরের নাম কি পিতর নাকি জীবাত্মার নাম পিতর? এর কোনো উত্তর? আমি যা প্রশ্ন করেছি তার কোনো উত্তর নেই। যা ওনার প্রশ্ন আমি তার উত্তর বরাবর দিয়ে এসেছি। যা মন্ত্র উনি বলেছেন সেসবের অর্থ ও উত্তর আমি দিচ্ছি। যা মন্ত্র আমি বলছি তার উত্তর নেই, আমি বলেছি - "অগ্নিষ্বাত্তা"র অর্থ উনি করেছেন জ্বালানো কিন্তু মনু জী বলছেন যে "অগ্নিষ্বাত্ত" হল মরীচির পুত্রের নাম। আর আমি বলে দিয়েছি যারা য়জ্ঞ করে না তার নাম হল "অগ্নিষ্বাত্ত"। আমি সকল কথার প্রমাণ দিচ্ছি। আর এনারই সায়ণাচার্য জী ও মহীধর জীর দিয়ে দিচ্ছি। আমি এনার মতো কৃষ্ণদত্ত জীর পিছু চলি না, যে হিলিয়ে-দুলিয়ে এনাকে কে পড়াবে? ওনার শরণে আপনি যান, আমি তো মহান বড়ো বড়ো বিদ্বানদের প্রমাণ খুঁজে বেড়াই। আর ওনাদের প্রমাণ নিয়ে এসে দি। আর এর জন্য বলবো আপনাকে যে আপনি এর উপর বিচার করুন। আরও বলা হয়েছে যে, পিতর জিতেন্দ্রিয় হোক! পিতরদের জিতেন্দ্রিয় বলা হয়েছে। আর এখানে "গরুর দুধ দূহকারীকে" পিতর বলা হয়েছে। (ঋগবেদ ১/১২১/৫) এখানে বলা হয়েছে সদাচারী হোক, সত্যচারী হোক, স্বজাতির মধ্যে যশস্বী হোক। পিতর পূর্নায়ু হোক। (ঋগবেদ ৬/৭৫/৯ ও ৮৮ তথা ৩/৩৯/৪) তথা আয়ুকে ধারণকারী হোক "শক্তিবন্তো গম্ভোরাঃ" শক্তিশালী হোক তথা গম্ভীর হোক - পণ্ডিত জী মহারাজ! এরা মৃত নাকি জীবিত? জীবিতদের জন্যই সব বলা হয়েছে। আর এক-দুটো নয়, পিতর যোদ্ধা হোক। "অস্মাকম্ পিতরঃ যোদ্যাঃ" আমাদের পিতর এমন হোক যারা যুদ্ধকারী, বীর, শুরভীর। এমন ধরনের পিতর হোক যে - "য়েনা নঃ পূর্বে পিতরঃ পদজ্ঞঃ ... ঋগবেদ ১/৬২/২" ব্যাকরণ জ্ঞানী পিতর হোক, তরল পদার্থ জ্ঞানী পিতর হোক, এরা পিতর হওয়া উচিত। আর "যুবক পিতর হোক" এই প্রকারে, আর হ্যাঁ দক্ষিণ দিশাতে রক্ষাকারী পিতর হোক, কেবল একটাই মন্ত্র আমাদের কাছে আছে নাকি? ঢিপি ভর্তি মন্ত্রই মন্ত্র, যেখানে জীবিত পিতর আর মাতা-পিতার খুব সেবা করা দরকার, আমাদের সিদ্ধান্ত তো এটা যে জীবিত মাতা-পিতার খুব সেবা করা দরকার। এনার আরও একটা প্রশ্ন রয়েগেছে সেটাও শুনুন, বলেছেন যে - ব্রহ্মচারী হয়ে গেছে এখন আপনি প্রশ্ন করেন যে ৪৮ বর্ষ পর্যন্ত কোন ব্রহ্মচারী কোন আর্য সমাজী থাকতে পারে? করবে না বিবাহ তাতে আপনার এত চিন্তা কেন? বিয়ে করবে না। সারা জীবন কেউ না করুক বিবাহ তাতে আপনার কি? বলুন করবে নাকি করবে না? আপনার প্রশ্ন হল যে, যখন তাদের পুত্রের সন্তান হবে তখন তারা বানপ্রস্থে চলে যাবে তারপর তারা সন্যাসে চলে যাবে, আমি বলছি যদি সন্যাসী হয়ে যায় তবে কি তারা পিতর থাকবে না? আর যদি বানপ্রস্থে যায় তবে কি তারা পিতর থাকবে না।
আর তার পিতরপনা কোথায় চলে গেছে? তা হবে আর পুত্রের কর্তব্য হল যেখানেই কোনো বানপ্রস্থী হোক সেটা নিজেরই হোক বা পরের হোক সকলের সেবা করো। শ্রী পণ্ডিত মাধোবাচার্যের মতন বড়ো বিদ্বান হলে তাদের সেবা খুব করো। কে বলে সেবা করো না? তাদের খুব সেবা করো, খুব ক্ষীর খাওয়াও। এইসব করো, তা সে বানপ্রস্থি হোক অথবা সন্যাসী হোক। সে যেই হোক, নিষেধ নেই তার সেবা করার। খুব সেবা করো তার। এটা বড়ো ভারী প্রশ্ন বের করে নিয়ে এসেছে যে, তারা চলে গেলে তাদের সেবা কে করবে? আর তার জন্য কে বলেছে যে সবাই বানপ্রস্থ হয়ে যাক, অথবা সবাই সন্যাসী হয়ে যাক? যে বানপ্রস্থ হতে চায় আর সময় হয়েছে, যোগ্যতা তার আছে, সে করুক তপস্যার কাজ, যা বড়ো ভারী। আর সন্যাসী কে হবে? যার বৈরাগ্য হয়ে গেছে; কে বলেছে সব সন্যাসী হোক, সব সন্যাসী হয়ে যাক! সব বানপ্রস্থী হয়ে যাক! যখন হবার তখন সে হয়ে যাবে। এই নিয়ে আমি আপনার সামনে বলেছিলাম যে, সকলে যা চায় সেটা দেব - বিদ্বান, আপনি দেব বলেছেন, হ্যাঁ আরও একটা কথা যা আপনি বলেছেন যে - সেটা চোদ্দো ভাগ, এটা ষোলো ভাগ, এটা পিতরের জন্য রাখো, আর আমাদের প্রধান শ্রী পণ্ডিত বালকৃষ্ণ জী হলেন তো বড়ো সজ্জন কিন্তু কখনও-সখনও পক্ষপাত করে ফেলেন, ভাই কথাটা ব্রাহ্মণের না তাই এইরকম করে ফেলেন বেচারা! (জনতায় প্রচণ্ড হাসি) আমি কিছু বললেই বলেন যে এটা বিষয়ান্তর হয়ে গেছে, আর এটা কি বিষয়ান্তর নয় যেটা ইনি প্রমাণ দিচ্ছেন, যা পিতৃয়জ্ঞের নয়, এটা হল বলিবৈশ্বদেবয়জ্ঞের। এটা বিষয়ান্তর নয় কি? বেদের প্রমাণ আছে, চোদ্দো ভাগ রাখো, এটা করো, সেটা করো, আর আপনি এটা বলছেন শ্রাদ্ধতে! পিতৃয়জ্ঞতে!! শুনুন -
শূনাম্ চ পতিতানাম্, শ্বপচাম্ পাপ রোগিণাম্।
বাপসানাম্ কৃমীণাম্ চ, শনকৈ নির্বিপেদ ভুবি।।
মনুস্মৃতির এই বচনে মনু জী মহারাজ বলেছেন যে, কুকুরের জন্য, কাকের জন্য, কুষ্ঠ রোগীর জন্য, রোগীর জন্য, কীটপতঙ্গের জন্য, তাদের জন্য সব ভাগ রাখা হয়, এরমধ্যে যে যেমনই হোক। মৃত তো নয় তারা সকলে হল জীবিত। জীবিতদের জন্য নাকি মৃত কুকুর, বিড়ালের জন্য? মৃত সাপের জন্য, মৃত কাকের জন্য ভোজন কোথায় লেখা আছে? এরা হল জীবিতই, সে সকল জীবিতদের জন্য আর এই পিতর, তারাও তো কারও পিতর। তারা নিজের মা-বাপ-বাচ্চার পিতর তারাও। তাদের জন্য কেউ হল দেব, আর সে এদের জন্য পিতর - দেবতা হয়, আপনিই বলুন?
আমি জিজ্ঞেস করেছিলাম যে, আপনার নিমন্ত্রণে যে পিতর আসে সে শরীর সহিত আসে অথবা শরীর রহিত আসে? এর উত্তর আপনি দেন এই যে মানি অর্ডার আসে। এটা এর উত্তর যে মানি অর্ডারে আপনি নোট পাঠান, টাকা পাঠান, সেখানে ডলার হয়ে যাবে, এখানেও সমস্যায় পড়ে যাবে।'' এরকমও চলবে না যদি এমনটা হয় তো আমি বলবো, যাই হোক আপনি আমার মন আনন্দিত করেছেন। এটা বলে আর আপনি নিজের সঙ্গীদেরও আনন্দিত করেছেন। আমি বলি কি - মৃতের নামে কেন খান? জীবিতর নামে খান। পরমাত্মা আপনাকে জীবিত রাখুক। এসব লোক মনে করবেন যে, জীবিতকে খাওয়াচ্ছে, মৃতকে খাওয়াচ্ছে না। আপনারা মৃত সেজে কেন খান? কেন বলেন মৃতের নামে খাওয়াও? জীবিতের নামে পাওয়া যায় আমরা তো মানা করে দেই, তবুও প্রায়শই কেউ কেউ ক্ষীর দিয়ে দেয়, তো এখন আপনারা এত লোভী ক্ষীরের জন্য হয়েছেন যে জীবিতর নামে না খেয়ে মৃতের নামে, কুকুরের নামে, বিড়ালের নামে খাচ্ছেন, এটা কুকুর বিড়ালদের জন্য বানানো নয় কি? আরে ভাই! এটা পিতৃ য়জ্ঞ নয়, এটা হল বলিবৈশ্বদেবয়জ্ঞ। কুকুরের জন্য, কাকের জন্য, তাদের জন্য, এর মানে এটা নয় যে - পশু দিয়ে য়জ্ঞ করা হবে, আপনি খান তাদের, কাক খান, কুকুর খান, কে মানা করেছে? হাজার বার বলেছি যজ্ঞটা তাদের জন্য। এটা হল বলিবৈশ্বদেবয়জ্ঞ। বিষয়ান্তের কথা বলে! আপনি বলে দিলেন - মাংসাহারী মাংস খায়, অন্যরা অন্য কিছু খায়। প্রশ্ন এটা নয় যে, অন্যরা অন্য কিছু খায়, আর তারা যাদের সর্বভূক বলে, তারা তো আরও কিছু খায়। তাদেরও বিধান হয়ে যাবে, আর শ্রাদ্ধে সেটাও খাওয়ানো হবে। খাবে আর খেতে থাকবে! শাস্ত্র কি বলে? প্রশ্ন তো এটা যে, আপনার শাস্ত্র বলছে মাংস খাওয়াও। প্রশ্ন হল এটা, আর আপনি বলে দিলেন যে - সেখানে এটা লেখা আছে, যারা মাংসাহারী তাদেরই মাংস খাওয়াও, এখানে লেখা আছে যে মাংসের নিষেধ না করতে।
"য়ো নাশ্নাতি দ্বিজো মাম্সম্ নিয়ুক্তাঃ পিতৃ কর্মাণি"
নিমন্ত্রিত করে যাকে পিতৃ কর্মে যাকে আপনি পিতৃ কর্ম বলছেন, শ্রাদ্ধ সেটা যেখানে মাংস খাবে না, মানা করবে সে মরে ২১ জন্ম পর্যন্ত পশু হবে। আর ইনি বলছেন যে, যারা মাংস খায় তাদের খাওয়াও। আপনার শাস্ত্র মাংস খাওয়া অনিবার্য বলছে। তাই ''যারা খায়'' এর মানে কি? যারাই শ্রাদ্ধে যাবে তাদেরই খেতে হবে। আপনাকেও মাংস খেতে হবে। আপনিও অস্বীকার করতে পারবেন না, আর যদি মানা করেন তো শাস্ত্রের অজ্ঞানুসার ২১ জন্ম পর্যন্ত পশু জন্মাতে হবে। যারা মাংস খায় তাদের নামই নেই এখানে, এটা মাংসাহারীদের নিয়ে কথাই বলে নি। এটা তখন তাদের বলা হয়েছে যখন নিমন্ত্রিত কোনো ব্রাহ্মণ হবে তাদের খেতে হবে। আর বাকি রইলো যে, তাদের জন্য ডলারে পরিবর্তন হয়ে যাওয়া! যদি এটা ঠিক তো ঠিক আছে - অন্নের অনেক দাম বেড়ে গেছে, কেউ ডেকে নিয়ে বলুক যে "আজ্ঞে ঘাসই খেয়ে নাও", কারণ তার কিসের চিন্তা? সে ঘাস তো পরিবর্তন হয়ে যাবে, সেখানে পরিবর্তন তো হবেই, যখন ক্ষীর-পুরী সেখানে গিয়ে অমৃত হতে পারে তবে ঘাসের ক্ষীর হতে পারবে না? (জনতায় হাসি) বন্ধুগণ শুনুন! এনার কথায় ধ্যান দিন, যখন ডলার নোট হয়ে যাবে, নোটের টাকা হয়ে যাবে, এটা তো পরিবর্তন হলো মানি অর্ডারের, তো মানি অর্ডারটা কোথায়?
আমি সব জানি আর যা জানি তাই বলবো। এছাড়া অন্য কিছু বলবো না। হ্যাঁ আরও একটা কথা, আগের মৃতক নিয়ে দুটি প্রশ্ন এখনও আটকে আছে, "জীবাত্মা" পিতর নাকি শরীর? ইনি কোনো উত্তর দেন নি। আমি জিজ্ঞেস করেছিলাম যে, এটা বলুন জীবাত্মা একা আসে নাকি শরীর সহিত আসে? কোনো উত্তর নেই। পিতর ব্রাহ্মণের পেটে এসে বসে এটা ঠিক কি ঠিক না? কোনো উত্তর নেই।
দক্ষিণ দিকে জল দাও তো মৃতক পিতর হয়ে গেলো, পৈতা কাধে এমন করলে মৃতক পিতর হয়ে গেলো। মৃতকরা পিতর - কোথায়? কোথায় লেখা আছে? মৃতকরা পিতর এর কোনো প্রমাণ নেই। আপনি জিজ্ঞেস করেছেন, যম কে? যম তো হল পরমাত্মারের নাম "য়ম-মহাপরিশ্যামি মাহূ", যম হল পরমাত্মার নাম, জানেন না যম কে? যম হলেন আমাদের সকলের স্বামী। ন্যায় নিয়ন্তা হলেন "যম"। একটা প্রশ্ন হচ্ছে যে, যদি মৃতক শ্রাদ্ধ করা হয় যে শ্রাদ্ধ করেছে - ক্ষীর-পুরী খাইয়েছে, নিজের কামাই করা টাকা থেকে খরচ করে, হবন করে, এসব করলো আর এর জন্য যে মৃত পিতর যেন সেটা পায়। যে করেছে সে যদি কিছুই না পায় তবে "কৃতহানি" দোষ হবে। ন্যায় অনুসারে যে পূণ্য করেছে সে ফল যদি না পায় তো "কৃতহানি" দোষ হবে। আর যে করেনি কিন্তু ফল পেয়েছে তবে "আকৃতাভ্যাগম্" দোষ হয়ে গেল। নিরাকরণ করুন পণ্ডিত জী! এর কোনো সমাধান আছে আপনার কাছে? দুই জনই পাপী হয়ে যাবে। তাহা যে করেছে সে কিছুই পেলো না আর যে করেনি সে পেয়ে গেলো। আর তার পাঠানো যে পায় আর সে বিনা করেই পেয়ে গেলো, অথচ সে কিছু করেই নি।
ন পিতুঃ কর্মেণঃ পুত্রঃ পিতা বা পুত্র কর্মণা।
স্বয়ম্ কৃতেন গচ্ছন্তিঃ স্বয়ম্ বদ্ধাঃ স্ব কর্মণা।।
পিতার করা পিতা, পুত্রের করা পুত্র ফল পাবে, কিন্তু এর করা তাকে আর তার করা একে - এটা তো পরমাত্মার ন্যায়ের মধ্যে নেই, এটা তো লৌকিক কথা, সেখানে অন্যায় চলে না। আমি বলেছি পিতর হল জীবিত, আর এটাও প্রার্থনা করা হয়েছে যে তারা পূর্নাযু হোক, তারা ব্যাকরণ জ্ঞানী হোক, গরুর দুধ দূহনকারী হোক, যোদ্ধা হোক। এই প্রকারের সকল বিশেষণ আমি বলেছি, তা জীবিত পিতরের মধ্যেই হওয়া সম্ভব, মৃতের মধ্যে নয়। এখনই বেদ মন্ত্রে বলেছি যে, উলের আসনে বসুক। ব্রাহ্মণ কোথায় আবার বসবে? পিতর বসুক। "পিতর বসুক" এটা লেখা আছে, সে মন্ত্রে "পিতর" লেখা আছে, ব্রাহ্মণ লেখা নেই। বার বার ঘুরে ফিরে বলেন যে "ব্রাহ্মণকে ক্ষীর খাওয়ানো হবে", ভাই আমি কখন মানা করেছি? অবশ্যই খাওয়ান, ব্রাহ্মণদের খুব করে ক্ষীর খাওয়ান, খুব করে মাল-পোয়া খাওয়ান, কিন্তু মৃতের নামে খাওয়াবেন না। জীবিতর নামে খাওয়ান, মরার নামে খাওয়া বন্ধ করো, জীবিতর নামে খাও, আর পরমাত্মার কাছে প্রার্থনা করি আপনি জীবনে যেন খুব ক্ষীর পান। (জনতায় হাসি) কিন্তু আপনারা এটা কেন করেন যে, এই ধনী মরলে খুব ক্ষীর পাওয়া যাবে, সেই ধনী মরলে তার ওখানে ক্ষীর পাওয়া যাবে, জীবিতের নামে খান না। ক্ষীর দিয়ে জীবিতেরই শ্রাদ্ধ হয়ে থাকে, মৃতের নয়। আর আমি বলেছিলাম -
"অধামৃতা পিতৃষু সম্ভবন্তু" এটাকে এখনও ধরা হয়নি, আর আমি বলেছিলাম, মৃতকে পুঁতে রাখার সংস্কার আমাদের এখানে নেই, আর না এটা কোনো গাড়া-পুঁতে রাখার কথা। ইনি কথা থেকে কি নিয়ে এসেছেন, আর তা বেদ মন্ত্র হয়ে গেলো! আর ইনি বলছিলেন ভয় লাগে বোঝ যেন না বেড়ে হয় বেদ মন্ত্রের! এই কারণে এটা আমাদের এখানে মান্যতাই নয়, যারা বেদ জানে তারা বোঝে। এমন কোনো বেদ মন্ত্রই নেই যেখানে লেখা রয়েছে যে মৃতের নামে ব্রাহ্মণকে খাওয়াও। তবে মৃতের নামে হবন, বস্ত্র বিতরণ আদি করা উচিত। হ্যাঁ আরও একটা কথা শাস্ত্রী জী বলছিলেন - পুরাণ আমাদের জন্য, পুরাণের প্রমাণ আপনি কেন দিচ্ছেন? আমি বলছি আপনি ভাগবতের প্রমাণ আমাদের জন্য দিয়ে ছিলেন, শাস্ত্রার্থের নিয়ম এটা হল যে - যে পক্ষ যেই প্রমাণ মানে তাকে সেই প্রমাণ দিতে হয়। শ্রীমদ্ভাবতের সঙ্গে আমাদের কি সম্পর্ক? আপনার প্রমাণ আমাদের জন্য কি মূল্য রাখে? গরুড় পুরাণটা হল আপনাদের গ্রন্থ। এই জন্য আমরা তার প্রমাণ আপনাদেরকেই দিই। যে গ্রন্থ আপনার আমরা তাকে আপনার জন্য দিবো, আর যেটা আমাদের জন্য তাকে আপনি আমাদের জন্য দিন, যা আমাদের জন্যই না আর আমরা যাকে মানিই না, তো আপনি তার প্রমাণ দিয়ে কেন সময় নষ্ট করছেন? যে গ্রন্থকে আমরা মানি তার প্রমাণ দিন। সেই গ্রন্থের প্রমাণ আপনার কাছে নেই আর না আছে বেদের কোনো প্রমাণ। শাস্ত্রেরও কোনো প্রমাণ আপনার কাছে নেই। "অগ্নিষ্বাত্তা"র কথা বলছিলেন! আপনি বলেছেন - "অগ্নিষ্বাত্তা" জ্বলে যাওয়ার নাম। আমি জিজ্ঞেস করেছিলাম - শরীর জ্বলে নাকি আত্মা? ? এর কোনো উত্তর আছে? কোনো উত্তর দেন নি মহারাজ জী! এর অর্থ "যা আগুনে জ্বালানো হয়" নয় বরং "যারা অগ্নিহোত্র করে না" এই সায়ণাচার্যের প্রমাণ আমি আপনাকে দিয়েছিলাম যার এই অর্থ ছিল, সেটা নয় যেটা আপনি বলেছেন।
প্রিয় বন্ধু গণ! আমি আপনাদের সামনে অনেক কথা বললাম আর এই সব বলে আমি এটা বলেছি যে, এই মৃতক শ্রাদ্ধ কথাটা বেদ দ্বারা সিদ্ধ হয় না! যুক্তি দিয়ে সিদ্ধ হয় না, প্রমাণ দিয়েও সিদ্ধ হয় না!! কাউকে দিয়েও কোনো ভাবে সিদ্ধ হয় না। আমি এটা জিজ্ঞেস করেছিলাম যে - ব্রাহ্মণ আগে খায় নাকি পিতর আগে খায়? এর কোনো উত্তর দেন নি বরং বলে দিলেন যে "তারা তো হল দেব, দেবের মধ্যে এটো-সেটর কোনো ব্যাপার নেই, কেউ কারও এটো খাক এতে কোনো যায় আসে না.."(জনতায় প্রচণ্ড হাসি).... (টন টন টন)
শ্রী পণ্ডিত প্রেমাচার্য জী শাস্ত্রী -
সজ্জন গণ! স্বামী জী বার বার আমার উপর দোষারোপ করে পালিয়ে যেতে চান, যে আমি কোনো বেদ মন্ত্র উপস্থিত করছি না, আর আমি বেদ মন্ত্র শুরু থেকেই উপস্থিত করে আসছি। সেসব বেদ মন্ত্রের উপর ইনি এখনও পর্যন্ত নজর দেন নি। আমি এর উপর আরও ঢেলে দি আর ওজন বাড়িয়ে দি, আমি এমনটা চাই না। আগে পুরনো পাওনা শোধ হয়ে যাক, তবে আগে আরম্ভ করবো। আর শুনুন এটা বাচ্চাদের বোকা বানাবার কথা নয়, কি বলছেন? যে - স্বামী বলেছেন "অগ্নিষ্বাত্তা"র অর্থ হল সেটা যারা কি বলে অগ্নিহোত্র বা অমুক কার্য করে না, তাদের নাম, দেখুন ভাই স্বয়ং আচার্যের অভিপ্রাযয়ে বলেছেন, কিন্তু প্রসঙ্গ তো এটা চলছিল যে যেই মন্ত্র মহারাজ নিজে উপস্থিত করেন সেই মন্ত্রে আসা "অগ্নিষ্বাত্তা"র কি অর্থ হবে? এমনি তো শব্দের প্রসঙ্গানুসার ভিন্ন ভিন্ন অর্থ হয়ে থাকে।
সংস্কৃতে একটি শব্দ আছে "সৈন্ধব" এই সৈন্ধবের দুটি অর্থ আছে, সৈন্ধব মানে লবণ আর সৈন্ধব মানে ঘোড়া, কিন্তু যদি কেউ রান্নাঘরে বসে বলে যে সৈন্ধব নিয়ে আসো আর যদি কেউ ঘোড়া নিয়ে আসে, আর রান্নাঘরে নিয়ে গিয়ে ঘোড়া রেখে দেয় তো মূর্খতা হবে, ঠিক এই ভাবে শব্দের প্রসঙ্গানুসার অর্থ দেখা হয়, যা আপনি "আয়ন্তু পিতরঃ সোম্যাস্তু" বলেছেন, সেখানে যে "অগ্নিষ্বাত্তা" অর্থ এসেছে, সে শব্দের শতপথ শাখায় যা অর্থ করেছেন তা আমি আপনাদের শুনিয়েছি। আর আপনি তার উপর বিচার না করে আর যেখান-সেখানকার অর্থ শুনিয়ে সেটা দূর করার চেষ্টা করেন, আচ্ছা ভাইগণ ইনি অন্যদের মানেন না, স্বামী দয়ানন্দ জীকে তো মানেন। স্বামী দয়ানন্দ জী মহারাজ তার সত্যার্থ প্রকাশ ও সংস্কার বিধি গ্রন্থে, আর ভাইগণ কালকের সেই আমাদের জানা-পরিচিত যার উপর আবোল-তাবোল শুরু করেছিলেন - সন্ধ্যোপাসনাদি, পঞ্চমহায়জ্ঞাবিধিতে মৃতক শ্রাদ্ধ করা লেখা আছে। মৃতকের শ্রাদ্ধ করা হোক সেটা স্বামী জী নিজের গ্রন্থে লিখেছেন। আর শুনুন ইনি বার বার জীবের সেবার কথা বলতে থাকেন, তা আপনি জীবের সেবা করুন বাবু জীবের সেবা করুন। আমি বলি যে নিজের মরে যাওয়া বাপ-ঠাকুরদাদের তিন ফোঁটা জল দিতে এত আনাকানি কেন করেন? যে নিজের বাপ-দাদাকে যেন তিন ফোঁটা জল দিতে না হয়। তাই বাহানা বানাচ্ছেন! এই শুনুন এরকম হবে না! যদি জীবিতই শ্রাদ্ধ হবে, ধ্যান দেবেন আমার শব্দের উপর - তবে কোনো আর্য সমাজী সজ্জনই সারা জীবন স্বামী দয়ানন্দের মান্যতা অনুসারে নিজের মা-বাপের সেবা করার সুযোগ পাবে না, মা-বাপ তড়পাতে থাকবে। আর যে সন্তানকে লেখাপড়া করিয়েছে, এত বড়ো করেছে, আর যখন সেবা করার সুযোগ আসবে, তো সে সেবা করতে পারবে না, কেন? শুনুন, কেন - কারণ এই জন্য যে স্বামী দয়ানন্দ জী মহারাজ বলেছেন যে, যখন বালক বর্ণানুসার আঠ-এগারো বা বারো বর্ষীয় অবস্থার হয় তখন তো তাকে আচার্য্য কুলে বা গুরুকুলে পড়ার জন্য পাঠিয়ে দাও, সেখানে ব্রহ্মচারীয় পালন করুক। ব্রহ্মচর্য স্বামী জী বলেছেন যে, কত প্রকারের উত্তম ব্রহ্মচর্য? ব্রহ্মচর্যের প্রকার স্বামী জী বলেন ২৪ বর্ষ পর্যন্ত, ৪৪ বর্ষ পর্যন্ত আর ৪৮ বর্ষ পর্যন্ত ব্রহ্মচর্য আছে। এই জন্য স্বামী জী বিবাহ ৪৮ বর্ষের আয়ুরই মানেন, আছে কোনো আর্য সমাজী যে ৪৮ বর্ষ পর্যন্ত অবিবাহিত বসে থাকে? বা কেউ বসে আছে আজ পর্যন্ত? শুনুন ভাই এই জন্য শুনুন কথা সম্পূর্ণ হতে দাও, সম্পূর্ণ কথা বলতে দিন - স্বামী জী বলেন ২৪ বর্ষ আর ৪৮ বর্ষ পর্যন্ত ব্রহ্মচর্য পালন করো, এই ভাবে ৪৮ বর্ষ তো ব্রহ্মচর্য থাকলো। তারপর যখন ঘরে আসলো তখন তার বিবাহ হল আর স্বামী জী মহারাজ বলেন যখন পুত্রের পুত্র হয়ে যায় তো বাপের উচিত যে বানপ্রস্থ হয়ে যাক। যখন আগে পুত্রের পুত্র হয়ে যায় তো বানপ্রস্থ অর্থাৎ বনে গিয়ে থাকো। তো যখনই ঘরে নাতি আসলো তো "বাবার বাইকাট" বাবা চলে গেলেন জঙ্গলে। তো যখন সন্তানের লেখাপড়া করে মা-বাপের সেবা করার সুযোগ আসলো তো এখন মা-বাপই বেচারা বানপ্রস্থ হয়ে গেল তো জীবিত শ্রাদ্ধ কার করবেন? জীবিত শ্রাদ্ধ মানবেন তো জিন্দা না-বাপের সেবা করার সুযোগ তো জীবনভর মিলবে না, এই জন্য জীবিতের শ্রাদ্ধ নয়, জীবিতদের তো সেবা করা হয়। অর্থাৎ সেবা করো জীবিতদের, আর শ্রাদ্ধ করো মৃতকদের। শুনুন স্বামী জী মহারাজ! সে পিতরদের তর্পণ করা পিতরদের কোন প্রকার কি নাম, ভজনাদি দেওয়া, কিভাবে তাদের সম্মান করা - এই সব স্বামী জী মহারাজ লিখেছেন। দেখুন ভাইগণ! সমাবর্তন সংস্কারের কথা বলছি! যে ব্রহ্মচারী জুতা পরে মন্ত্র বলে, কাল আপনারা শুনেছেন, রইলো ব্রহ্মচারী কি করবে? তো স্বামী জী লিখেছেন "ও৩ম্ প্রাণাপানোমেতপেয়ম্" ইত্যাদি এই মন্ত্রে স্পর্শ করে হাতে জল নিবে আর পৈতাকে করে নিবে অপসব্য অর্থাৎ বাঁম কাঁধ থেকে ডানকাঁধে নিয়ে যাবে, আর তখন "ও৩ম্ পিতরঃ সুন্ধধ্বম্" এই বাক্য বলে সেই জলকে ভূমির উপর ফেলে দাও। কি ভাইগণ! এটা কি জিন্দা মা-বাপের সেবা হল? ভাবুন যে তোমার বাপ তোমার সামনে বসে আছে তৃষ্ণায় গলা শুকে যাচ্ছে, শুকে গেছে, আর তুমি হাতের তালু ভোরে জল নিয়ে তার সামনে যাও, তাও বেচারার মুখে না ঢেলে, বরং তাকে দেখিয়ে ভূমির উপর ফেলে দাও। আর তারপর পৈতা বদলাও বাঁ থেকে ডানে নিয়ে যাও। যদি বাঁয়ে থেকেই থাকতে থাকতে বাপকে জল পান করাতে তবে কি তৃষ্ণা বুঝতো না? সে স্বামী জী লিখেছেন যে - পৈতাকে পাল্টাও, বাঁম কাঁধ থেকে ডান কাঁধে নিয়ে যাও আর দক্ষিণ দিশায় মুখ করো। আর বাপ পূর্বে বসে থাকলে এই ভাবে ফেলবে তার মাথার উপর। এই জন্য - ডায়ে বাঁয়ে যাওয়া বন্ধ করো, স্বামী জী আপনার গ্রন্থের কথা শোনাচ্ছি। আর ভাইগণ পরের টার্নে এনার শ্রাদ্ধও শোনাবো যা "জীবিত শ্রাদ্ধ" - "জীবিত শ্রাদ্ধ" ইনি চিল্লাচ্ছেন। সে জীবিত শ্রাদ্ধ কিরকম লিখেছেন স্বামী জী? এই জন্য আমার প্রথম কথায় ধ্যান দিন, শ্রী স্বামী দয়ানন্দ জী মহারাজ সমাবর্তন সংস্কারের সময় লিখেছ যে - যার সমাবর্তন সংস্কার হচ্ছে সেই ব্রহ্মচারী পৈতাকে হাতে নিয়ে কাধেঁর সঙ্গে কাঁধ বদলে নাও, বদলিয়ে দ্বিতীয় কাঁধে নিয়ে যাও, আর দক্ষিণ দিশার দিকে মুখ করে নাও, আর তারপর এই বাক্য "পিতা শুন্ধধ্বম্" এটা বলে জল - ভূমির উপর ফেলে দাও, এই ক্রিয়া কোনো জীবিত মা-বাপের সঙ্গে হতে পরে না, এটা তো ভাই কোনো মৃত পিতরের সঙ্গেই হওয়া সম্ভব। ইনি বলেছেন "পিতর" শব্দ মা-বাপের জন্যও হয়? আরে হয় তবে প্রসঙ্গানুসার তার অর্থ কি? সে কথা ওখানে ঠিক মিল খাচ্ছে কি না? চলো অর্থ করাতে কথাটা সম্ভব হচ্ছে কি না? আচ্ছা আরও একটা কথা শুনুন, এটা হল নামকরণ সংস্কারের - স্বামী দয়ানন্দ জী মহারাজ লিখছেন যে - যে বালকের নামকরণ সংস্কার হবে তো যে নক্ষত্রে বালকের জন্ম হয়েছে সেই তিথি আর নক্ষত্রের নাম নিবে, সেই তিথি আর দেবতার নামে চার আহুতি দিবে। তো ভাইগণ! অমাবস্যা আর মঘা হল নক্ষত্রের দেবতা। "পিতর" এটা স্বামী যখন গোনেছেন উদাহরণে যে নক্ষত্রের দেবতা কে? কে তিথির দেবতা? আর্য সমাজ তো বিদ্বানকেই দেবতা মানে অন্য দেবতাদেরকে তো মানেই না। এই আর্য বলেন যে বিদ্বানই দেবতা হয়ে থাকে। তো ভাইগণ! এটা বলুন যে, নক্ষত্রের সঙ্গে এই বিদ্বান দেবতাদের কি সম্বন্ধ? এখানে এত পণ্ডিত বসে আছে তারা কি সব দেবতা? (জনতায় হাসি)
সজ্জনগণ! আমার মন্ত্রাশের উপর বিচার না করে স্বামী জী কেবল দলিলবাজী দ্বারা শ্রাদ্ধের কথা উড়াতে চান। দলিলবাজী তো ভাই আমিও খুব জানি। বাবু সাহেব বলেন যে "পিতর খায় নাকি ব্রাহ্মণ খায়" ব্রাহ্মণের পেট তো অতিথিশালা! আমাদের ব্রাহ্মণগণকে যে ক্ষীর খাওয়ানো হয় যারা হল বেদোক্ত, বেদ বলে যে ব্রাহ্মণদের ক্ষীর খাওয়াও, সে আমাদের খাওয়া ক্ষীর স্বামী জীর পেটে ব্যাথা তুলেছে। আরে ভাই ক্ষীর খেলো কেউ! খাওয়ালো কেউ! ব্যথা ওনার পেটে! (জনতায় হাসি) আচ্ছা মেনে নিন ঝগড়া ব্রাহ্মণ ভোজন নিয়ে! শুনুন সজ্জনগণ শুনুন! সত্যটা শুনুন, সূর্যকে হাতে ঢাকা যায় না। শ্রাদ্ধকেও না ঢাকতে পারবেন না লুকাতে পারবেন। শ্রাদ্ধে ব্রাহ্মণ ভোজনে আপনার আপত্তি, ব্রাহ্মণকে কেন খাওয়াবে? যদি কোনো হাড়কিপটে হয় তো করতে পারবে না, সে বছরে একটা দিনও নিজের পিতরের নামে খরচা করতে পারবে না! তারা তো আর প্রতিদিনের চায় না, সে বেচারা বছরে একটি বারই চায়। কিন্তু ব্রাহ্মণ ভোজনই তো আর কেবল শ্রাদ্ধ নয়। শ্রাদ্ধের অঙ্গ হল চারটি। চারটা কর্ম করতে হয় শ্রাদ্ধে যথা - (১) হবন করা, (২) তর্পণ করা, (৩) ব্রাহ্মণকে ভোজন করানো - এর মধ্যে ব্রাহ্মণ ভোজনে আপত্তি হতে পারে কিন্তু হবনে আপত্তি কেন? হবন করে দিন। আর দুই ফোঁটা জল জল .... আরে ভাই রবিবার করে তো আপনারা হবন করেনই সে দিনই পিতরের নামে করে দিন। সেখানে তো ব্রাহ্মণ ভোজনের ভয় নেই। আচ্ছা বাকি থাকলো তর্পণ? নদী নালায় তো যানই সন্ধ্যা-বন্দন করতে তারই মাঝে পিতরেরও করে দিন। সেই তর্পণেও কোনো কানাকরিও খরচ হয় না। কিন্তু যে বাপ-দাদার সম্পত্তিতে কব্জা করে বসেছ, ব্যাংক ব্যালেন্স এর মালিক হয়েছ, সেই বেচারিকে বছরে এক বার যদি কিছু দিতে হয় তো এত বাহানা! এই কথা টিকবে না। শুনুন! বেদ মন্ত্র বলছি, বেদের মন্ত্র শুনুন! পিতর লোক কোথায় থাকে? শুনুন ভাইগণ, বেদ বলছে পিতরের নিবাস! আমি এনাকে জিজ্ঞেস করেছিলাম যে - দক্ষিণ দিশাতে মুখ করে জলের অঞ্জুলী দিতে দিতে স্বামী জী লিখেছে তো পৈতা কাঁধে নিয়ে যাও আর দক্ষিণ দিশায় মুখ করে সেই জলের অঞ্জুলী ভূমির উপর ফেলে দাও তো আমি এটা জিজ্ঞেস করছি যে দক্ষিণ দিশাতে মুখ কেন করবে? এই বিধির মানে কি? যদি পিতর মানে পিতা হয়, যদি পিতা হয় পিতরের অর্থ তো সব জায়গায় পিতাই তো আছে তো পিতা তোমার সামনে বসে আছে তো দিয়ে দাও, পান করে দাও জল। দক্ষিণ দি কেন মুখ করবে? জরুরী হয় কি যে তোমাদের বাপ-দাদা হায়দরাবাদে থাকে দক্ষিণে ওদিকেই মুখ করো, (জনতায় হাসি) এটা জরুরী নয় ভাই! এইজন্য আমার তো এটা বলার ছিল যে, আরে যখন জল দিতে থাকবে পিতরের তো তৃষ্ণা হবে কি হবে না? নাকি এরকমই তার মাথায় ঢালতে থাকবে! এইজন্য তারা তৃষ্ণাক্ত তাইতো জল নিয়ে তুমি চলেছ, এইজন্য - "ও৩ম্ পিতরঃ সুন্ধ্বম্" আচ্ছা আমি জিজ্ঞেস করেছিলাম নক্ষত্রের নামে, স্বামী জী বলে - বালকের যেই নক্ষত্রে জন্ম হয়েছে, আর যেই তিথিতে, সেই নক্ষত্র আর তিথির নামে চার আহুতি দিবে। যদি মঘা নক্ষত্রে আর অমাবস্যা তিথিতে কোনো বালক হয়েছে তো মঘা নক্ষত্র আর অমাবস্যা তিথিতে এর দেবতা হল পিতর, তার নামে এই আহুতি দেওয়া লেখা আছে, নয়তো ভাইগণ আর্য সমাজ তো বিদ্বানদের ছাড়া আর কোনো দেবতাদের মানে না, তো পিতর নামই দেবতাটা কে? যার নামে স্বামী জী আহুতি দিতে লিখেছেন। আর স্বামীজি - পিতর কেমন ভোজন পায়? এখন এই আর্যদের জীবিত শ্রাদ্ধও শুনুন এক মিনিট! জীবিত শ্রাদ্ধ বলছে বাবু যে আমরা জীবিতদেরই সেবা করবো। তো কি বলে স্বামী জী, জীবিতের যখন শুরু করবে সেবা, "জীবিত শ্রাদ্ধ" শোনাচ্ছি ভাই শুনুন! জানি না আমার ঘন্টি খুব তাড়াতাড়ি বেজে যায়। হয়তো সময় হয়ে যায়, আমি আক্ষেপ করি না, না না আমি আক্ষেপ করি না। আমার মনে হয় তাড়াতাড়ি বেজে যায়।
শুনুন ভাই শুনুন! স্বামী জী লিখেছেন, জীবিতের জীবিত থাকা কালীন মাতা-পিতা আদির যথাযথ সেবা করা উচিত। তা কি করবে, গুর-ঘী মিশ্রিত ভাত হোক, সেখানে লবণ না হোক, বিনা লবণ ভাত হোক, আর তাদের এই - এই মন্ত্র বলে অমুক অমুক জায়গায় রাখো, "সানুগায় ইন্দ্রায় নমঃ" এটা বলে পূর্বে রাখো, "য়মায় নমঃ" এটা বলে দক্ষিণে রাখো আর "ভ্রদকাল্য়ৈ নমঃ" বড়ো ভদ্রকালীর কথা বলছিলেন। সেখানে ভদ্রকালীকে লেখা হয়েছে, স্বামী জী ভদ্রকালীকে বলে নৈবেদ্যে রাখো আর "ও৩ম্ স্বাধায়ভ্যস্বধা নমঃ" বলে দক্ষিণ দিশাতে রাখো? আর তা কোথায় রাখবে? পত্তলের উপর রাখো। পাতার উপর! কি বলুন, যদি মা-বাপকে ভোজন করাতে হয় তবে কি তারা থালিতে খেতে পারে না! পাতায় কেন রাখবে! আর ভাই বিনা লবণ হীন ভাতের দিয়ে দাও তাদের পিণ্ড! তারা কি সুগারের রোগী? নাকি হাই ব্লাড প্রেসার আছে? (জনতায় হাসি) ডক্টর কি তাদের লবণ খেতে মানা করেছে! বিনা লবণ ভাত তাদের দেবে আর কতখানি দেবে তাও নিশ্চিত আছে। তা পাতার উপর রেখে দেবে! আর বাপ বেচারা তড়পাতেই থাকবে। সে বিনা লবণ ভাতেই, তাও আবার পাতায়, আর নিশ্চিত গ্রাস কেবল ষোলো, সতেরো দিবে না। কেবল ১৬ই দিবে। যদি বাপের পেট বেশি হয় সে বেশি খায় তবুও ব্যাস্ বেশি দিবে না কেবন ষোলোই দিবে, সেই ষোলো শুধু বাপকে নয়, ভূমিতে রেখে, পাতায় দিবে! (জনতায় হাসি) তো বলার তাৎপর্য এই যে - আমি এটা বলছি যে, ওই বার বার দক্ষিণ দিশাতে মুখ করে পিতরের নাম নিয়ে করো। এর মানে কি? তো স্বামী জী এইরকম করার বিধান লিখেছে। যা কোনো জীবিতে হতে পারে না। এসব তো মৃতদেরই হতে পারে। আচ্ছা আরও একটা কথা, এর কোনো খন্ডন নয়। শুনুন বলছিলেন যে - যখন পিতর আসে তা সে পিতর খায় নাকি ব্রাহ্মণ? যদি আগে পিতর খায় তো ব্রাহ্মণ এটো খেলো, আর যদি ব্রাহ্মণ আগে খায় তো পিতর এটো খেলো। কি বাচ্চাদের মতো কথা বলেন? বলতে থাকুন, বলতে বাধ্য, যখন কিছু থাক না থাক তো ঐরকম উল্টো পাল্টা তুর্কে মারা। আরে ভাই যখন আপনি ভগবানকে ভোগ লাগান তো পিতরও দেবতাদের সঙ্গে সম্মিলিত হয়ে দেবয়োনি বিশেষ হয়। আপনারা ভগবানকে ভোগ লাগিয়ে প্রসাদ গ্রহণ করেন, তবে কি ভগবানের এটো খাওয়ায় আপনার উপর দোষ লাগবে? তো যেরকম ভগবানের উপর ভোগ লাগিয়ে খাওয়া হয়, তাতে এটো খাওয়ার কথা আসে না, সেই রকম এটাও "তারা দেবয়োনি বিশেষ" তাই আমরা তাদের সমতুল্য করতে পারি না। বাকি আরও বলেছেন - সে পিতর এসে যায় ব্রাহ্মণে, - বড়ো ভালো বলেছেন স্বামী জী আপনি। আর যে মন্ত্র আপনি দিয়েছেন তার খন্ডন স্বয়ং করলেন। স্বামী জী বলেছেন যে লাল উলের আসনে পিতরকে বসানো লেখা আছে মন্ত্রে, "আসীনাসো আরূণীনামুপাসতে" লাল উলের আসনে বসা লেখা আছে, আরে ভাই যখন পিতর সেই ব্রাহ্মণের শরীরে আসে, তো আসনে তো ব্রাহ্মণ বসে, মনু জী লিখেছে "নিমন্ত্রণতানি হি পিতরঃ উপতিষ্ঠন্তি তান্ দ্বজান্" যে ব্রাহ্মণ ভোজনের জন্য তোমার ওখানে আসবে সেখানে তোমার আমন্ত্রিত পিতর তোমার দ্বারা দেওয়া ভোজনের সূক্ষ্মাংশ গ্রহণ করে, সূক্ষ্মাংশ আর ব্রাহ্মণ যিনি কেবল পূত্তকম্ অন্নের অংশকে গ্রহণ করে। তো ধরুন তোমার ব্রাহ্মণকে খাওয়াতে গেলে ননু-নজ্জা, কিন্তু-পরন্তু, এটা-সেটা, দিতে বাঁধে। তুমি খাওয়াতে চাওনা তো বাকি যে শ্রাদ্ধের তিন কর্ম আছে সেসকল কাম করতে হবে আমাদের তা বেদ বলছে। শুনুন সে বেদ মন্ত্রকে আমি দ্বিতীয় বার বলছি, পড়ে যেন না বলেন যে আমি মন্ত্র দেই নি, স্বামী জী শুনুন অথর্ববেদ মন্ত্র -
"পিতৃণাম্ লোকমতিগচ্ছন্তু য়ে মৃতা"
এর মানে হল পিতর লোগ আমি বলেছি দ্য়ো মানে আকাশ মণ্ডলে হল পিতরগণের নিবাস স্থান। তারা দ্য়োলোকে নিবাস করে। "অন্তর্হিতঃ পিতৃলোকো মনুষ্যাণাম্" মনুষ্য লোকা হবি ব্রাহ্মণ ভোজন আদি দ্বারা তৃপ্ত হয়। এই ব্রাহ্মণ ... বেদ বলছে, কি মন্ত্র "ত্বার্য অগ্নে ইডিতো জাত বেদ" মন্ত্র তো শুনুন মহারাজ! "বাড়হৃদ্য়ানি সুরভীরিত কৃত্বা-- শ্রাদ্ধা পিতৃভ্যঃ" অথর্ববেদ আঠারোতম কাণ্ডের তৃতীয় সূক্ত ও বেয়াল্লিশতম মন্ত্র, আরও দেখুন -
বহী স্বানরে হবির্দন্জুমি নবিভর্তিপিতারম্ পিতামহাত্।
(অথর্ববেদ ১৮/৪/৩৫)
এতা বসুধারাউপয়ন্তু বিশবা স্বর্গেলোকমধুমত্তির্সি ধুমানা
(অথর্ববেদ ৪/৩৪/৭)
"জিম মোদ মে জিমনে ব্রাহ্মণেষু" অর্থাৎ ব্রাহ্মণ ভোজন। ইনি ব্রাহ্মণের প্রতি বড়ো লাল-সবুজ চোখ রাঙাচ্ছিলেন, "ইমম্ মোদনম্ নিবদো ব্রাহ্মণেষু" এর উদাহরণ লিখে নিন! স্থান-ঠিকানা অথর্ববেদ ৪/৩৪/৮"।
সজ্জনগণ! স্বামী জীর কুআগ্রহতে আমি এক ডজন প্রমাণ এক্সপ্রেস স্পিডে শুনিয়েছি। আমার সেই প্রমাণে স্বামী জীর জট বেধে গেছে। কোন প্রমাণ কি বিষয়ের ছিল? এর উপরেও ধ্যান দেন নি। কিন্তু তবুও একটা লাভ তো হল, ইনি কেবল আর্য সমাজী ভাইগণকে উপদেশ দিয়েছেন যে নিজের মৃত পিতরদের শ্রাদ্ধ করো - পৌরাণিক সনাতনী ভাই তো জানেনই। আর প্রেমাচার্যকে ক্ষীর খাওয়াও! ভাই যখন এরকম সুযোগ উপস্থিত হবে তো প্রেমাচার্য তৈরি সেই ক্ষীর খাওয়ার জন্য। করবে শ্রাদ্ধ! আমাদের আর্য সমাজী ভাই, মৃত পিতরের শ্রাদ্ধ করো। আর ক্ষীর খাওয়ার জন্য আমরা ডাকবো, আমরা অস্বীকার করবো না। এইজন্য শুনুন এটা তো হল, আমি বলেছিলাম যে কেবল ব্রাহ্মণ ভোজনের নামই শ্রাদ্ধ নয় আরও চার বিষয়ের নাম হল শ্রাদ্ধ, আর সেই চার বিষয়কে পুষ্টকারী মন্ত্র বলছি, সে মন্ত্রকে স্বামী জী স্পর্শ পর্যন্ত করেন নি। বলবো! সেই চার বিষয়ের পোষক মন্ত্র শুনবো, তার প্রমাণ বলেছি আর সেসবকে উদ্ধৃত করেছি, নাম ঠিকানা বলেছি
ত্বয়ম্ অগ্নেইড়িতো জাত বেদঃ।
বহিস্বানরে হবিদ্ন্জুমি ইমমো দুননম্জিমনে ব্রাহ্মণেষু
বেদ বলছে আমি এই ভোজন সামগ্রিক "ব্রাহ্মণেষু নিদদেতু" তো ব্রাহ্মণ ভোজন, তর্পণ, পিণ্ড দান, হবন, এই চার ক্রিয়ার নামকে বেদ বলছে "শ্রাদ্ধ"। যদি ব্রাহ্মণ ভোজনে ঝগড়া হয় তো তাকে নিপটাও। বলছিলেন আমার মাংসের কথাকে ধরি নি। আর প্রধান জী বলে দিলেন যে সেটা বিষয়ান্তর। শুনুন মহারাজ! মাংসের কথা বলছি আপনাকে, এটা এমন কোনো ভারী ব্রহ্মাস্ত্র নয়, আসল কথা হল এই যে সংসারে সব প্রকারের ভোজন কারী লোক আছে, কেউ ডাল ভাত খায়, তো কেউ খায় মাছ, কেউ পাঠা, ভেরা খায় আর কেউ অন্য কিছু সব খায়, তো এই বিধান যখন বানানো হয় তো সকলের ধ্যান রেখে বানানো হয়, আপনি দূরে কেন যাচ্ছেন? আপনার আর্য সমাজেও তো দুটো পার্টি আছে - "মাংস পার্টি আর ঘাস পার্টি" ...(বিঘ্ন) এর মাঝেই অমর স্বামী জী মহারাজ গর্জন করে বলেন - "আর্য সমাজে কোনো মাংস পার্টি নেই" (শর্গুল মেচে যায়)। প্রেমাচার্য জী বলেন - দেখুন দেখুন! ভাই গণ! স্বামী জীর কেমন তাপ এসেছে! মাংস পার্টির নাম শুনেই কেমন তাপ লেগেছে মহারাজ জীর! আরে যে আর্য সমাজে "মাংস ভোজন বিচার" নামে পুস্তক লেখে, যোধপুর আর্য সমাজ "মাংস ভোজন বিচার" নামে পুস্তক লেখে এটা আর কি নাম কোনো জানা অজানার কথা কি? এইজন্য শুনুন! সব রকমের ভোজন কারী লোক এই দুনিয়ায় আছে। বাঙালি বলে আমরা তো শ্রাদ্ধে মাছ খাবো। অমুকে বলে আমরা তো এটা খাবো। ফ্রান্টিয়ররা বলে আমাদের তো পাঠাই খাওয়াও বাবু। তো ভিন্ন ভিন্ন খান-পান কারী শ্রাদ্ধে অমুক-অমুক জিনিস খাওয়ার কথা বলে, তো বিধানকর্তা মনু জী মহারাজ বলেছেন যে - ভাই যদি তুমি মাছ খাওয়াও বা অমুক অন্ন খাওয়াও বা অমুক পশুর মাংস খাওয়াবে তো তাতে পিতরদের দুই মাসের, দুই বর্ষের, বা ১২ বর্ষের তৃপ্তি হবে।
{{((Note: অনুমন্তা বিশসিতা নিহন্তা ক্রয়বিক্রয়ী।
সংস্কর্ত্তা চোপহর্ত্তা চ খাদকশ্চেতি ঘাতকাঃ।। (মনুস্মৃতি- ৫/৫১)
পদার্থঃ- (অনুমন্তা) বধ করার আজ্ঞাকারী (বিশসিতা) মাংস কর্তনকারী (নিহন্তা) পশু বধকারী (ক্রয়-বিক্রয়ী) মাংসের ক্রয়-বিক্রয়কারী (সংস্কর্ত্তা) রন্ধনকারী (চোপহর্ত্তা) পরিবেশনকারী (চ) এবং (খাদকশ্চেতি) ভোজনকারী (ঘাতকাঃ) ঘাতক অর্থাৎ হত্যাকারী আর পাপী।
অনুবাদঃ- পশু বধ করার জন্য যিনি আজ্ঞা করেন, যিনি মাংস কর্তন করেন, যিনি পশু বধ তথা হত্যা করেন, যিনি মাংস ক্রয় করেন এবং যিনি বিক্রয় করেন, যিনি মাংস রন্ধন করেন, যিনি মাংস পরিবেশন করেন এবং যিনি ভোজন করেন, তাহারা ঘাতক অর্থাৎ হত্যাকারী আর পাপী।))}}
শ্রী পণ্ডিত প্রেমাচার্য জী শাস্ত্রী -
কিন্তু যদি তুমি পিতরের অনন্ত তৃপ্তি চাও তবে সদা সর্বদার জন্য মৃত পিতর তৃপ্ত হয়ে যাবে তো " আনন্যাতেব কপ্যন্তে মুন্যানি সর্বষঃ" এখানে "মুন্যন্ন" অর্থাৎ মুনি লোগ যে অন্নকে খায় অর্থাৎ শাকাহার ভোজন - তা খাওয়াও তথা সে ক্ষীর খাওয়াও। তখন পিতরের অনন্ত তৃপ্তি হবে। এই জন্য ভাইগণ এই মনুর প্রমাণ আমি শোনাচ্ছি। মনু আর শ্রীমদ্ভাবত আদি গ্রন্থ! গরুড় পুরাণ! মহারাজ জী আপনি তো কেবল বেদের কথাই বলেন। আমাদের গরুড় পুরাণে কি লেখা আছে তাকে আমাদের কাছেই থাকতে দিন। আপনার পুরাণের উপর ঝোঁক থাকলে তবে শুনুন ভাগবতের পুরাণ - শ্রীমদ্ভাবত মহাপুরাণ কি বলে - "ন দত্যা আনশন শ্রাদ্ধে, ন চাপ্যা দর্মবিত্তমঃ পুরাণে যাবেন তো মহারাজ জী গড়বড়ে পড়ে যাবেন। পুরাণ বলে শ্রীমদ্ভাগবতে শ্রাদ্ধে আমিষ দিবে না। যে অন্ন উত্তম সে মুন্নন্যু খাওয়াও। এটা মনু মহারাজের কথন। এই জন্য শ্রাদ্ধে চার অঙ্গ আমি বলেছি, চার অঙ্গের বিধান আর আমি মন্ত্র বলেছিলাম যে পিতরের নিবাস স্থান কোথায়? আচ্ছা বন্ধু গণ, আরও একটা কথা বলেছিলেন স্বামী জী মহারাজ, বলেছেন বাবু সাহেব! যে যদি তার জন্ম হয়ে গেছে তো সে শরীর রহিত আসবে না কি শরীর সহিত? এটা বলেছেন। " আমরা তো করেছি শ্রাদ্ধ, কিন্তু আগেরটার হয়েগেছে জন্ম, তো শ্রাদ্ধের কি হবে"? এটা ইনি বলেছেন। শুনুন ভাই উত্তর শুনুন! আপনারা আপনাদের মিত্রকে মানি অর্ডার পাঠিয়েছেন মানি অর্ডার! পরে জানা গেল যে মিত্র তো নেই মিত্র তো out of station, তো সেই মানি অর্ডার কোথায় যাবে? সেটা ফিরে আপনার কাছে আসবে। শ্রাদ্ধের পরিণাম হল তৃপ্তি। আরে অন্ন তো ব্রাহ্মণের পেটে থেকে যায়, পিতরদের তো শ্রাদ্ধের পরিণাম তৃপ্তি প্রাপ্ত হয়ে থাকে, তৃপ্তি! তা সে পরে যদি পিতরের জন্ম হয়ে যায় তো ভিন্ন ভিন্ন য়োনিতে চলে গেছে কোথাও। তো আপনার শ্রাদ্ধের ফল নষ্ট হবে না, সে শ্রাদ্ধের পুণ্য আপনার প্রাপ্ত হয়ে যাবে। ভগবান নারায়ণের গভর্নমেন্ট....(গোলমাল)....ভগবানের গভর্নমেন্টে এত ন্যায়..…(গোলমাল) আরে! দুনিয়ার গভর্নমেন্টও মানি অর্ডার আটকে রাখে না তো ভগবানের ....(গোলমাল)....(চেঁচিয়ে) স্বামী জী চিন্তা করবেন না! শ্রাদ্ধ করে তো দেখুন, তার ফলও পরবর্তীতে যদি না পৌঁছায় তো আপনি পেয়ে যাবেন। মাঝপথে কেউ হাতিয়ে নিবে না। এই জন্য, সন্দেহ করো না, কি সাহেব "ব্রাহ্মণকে তো ক্ষীর খাইয়েছি বা ভোজন করিয়েছি - কিন্ত তা পরে পিতরদের কিভাবে পৌঁছবে? বা প্রাপ্ত হবে? ইনি মনে করেন "যা ব্রাহ্মণকে খাইয়েছি তা হয়তো সেটাই পোটলার পটলি হয়ে বা পার্সেল হয়ে পৌঁছে যাবে"। এমনটা, আরে! আপনার পাঠানো টাকা যত ডলার হয় তত ডলার হয়ে সেখানে Paid করে দেওয়া হবে। যেখানে পাউন্ড হবে সেখানে পাউন্ড দেওয়া হবে। এইজন্য সব হল ইন্টারনাল এক্সচেঞ্জ অফিস। (জনতায় হাসি) এটা হাসির কথা নয়, "যে কারেন্সিকে এক্সচেঞ্জ করে এটাই হল সেই অফিস। এই ভাবে আপনি যেসব ভোজন খাওয়ান যদি আপনার পিতর দেবতা হয়ে গেছে তো আপনার সে ডাল-ভাত অমৃত হয়ে দেবতাদের কাছে পৌঁছবে। কারণ তাদের ভোজন হল অমৃত। সেখানে ডাল - ভাত চলবে না। সেখানে অমৃত হয়ে যাবে, তো যেই দেবতার যে য়োনির যা ভোজন সেই রূপে - যখন দুনিয়াদারীতে এক্সচেঞ্জ অফিস আছে আজ যা খাওয়াবেন তা পরিবর্তন হয়ে বেরিয়ে যাবে। মাঝখানেই তার কি হবে? আরে সাহেব! আপনি খাওয়ানো আর দেওয়া তো শুরু করুন, আগেই জিজ্ঞেস করেন "তার কি হবে"? তার জিম্মেদারী আমাদের উপর ছেড়ে দিন। সে কি পাবে, কিভাবে পাবে - তার প্রমাণও আমি আপনাকে শোনাচ্ছি। তারপর আমি বলেছি দেবলোক সম্বন্ধে, তথা পিতৃলোকের বিষয়ে, আর কি বলেছি - আমার কথাকে উড়িয়ে দিচ্ছেন যে স্বামী জী লিখেছে তো এটা আর শোনাচ্ছেন অমুক প্রকরণ! (টার্ন টন টন টন)
শ্রী অমর স্বামী জী মহারাজ -
বোনেরা আর ভাইয়েরা! আমি বার বার বলেছি যে - এটা কাক আদি পক্ষী আর কুকুরাদি পশুর জন্য "বলিবৈশ্বদেবয়জ্ঞ" করা হয়। কিন্তু উনি তো বলবেনই কিছু না কিছু তাকে উল্টে-পুল্টে করে বার-বার লবণ ছাড়া কেন লবণ ছাড়া কেন? বারং বার বলেছি "বলি বৈশ্বদেব য়জ্ঞ" কাক-কুকুর আদিদের জন্য হয়ে থাকে। পিতরদের জন্য হয় না। আর একটা কথা এটা যে "ক্ষীরের কথায় খুব কাঁটা লাগে এনার"! ভাইয়েরা, আমার একদমই কাঁটা লাগে না, আমি তো বলি খুব ক্ষীর খাও, কিন্তু আমি বলেছি মরার নামে খাওয়া বন্ধ করো। কাউকে এটা বলে যে - তোমার বাপ মরে গেছে, তো ক্ষীর খাওয়াও। আরে ভাই! এমনিতেই খাও না, খুব করে খাও। বাকি রইলো যমের কথা, যাকে আপনি বার বার যম বলছেন সে তো বিবস্বানের পুত্র। বিবস্বান কে?;এটা কোন বংশ পরম্পরা চলে, বিবস্বান কে, কার পুত্র আর কার পুত্র যম? "পিতর সেই দ্য়োলোক থাকে?" আমি জিজ্ঞেস করছি যারাই মরে যায় সকলে পিতর হয়ে যায় নাকি কয়েকজনই হয়। কি সীমা আছে আপনাদের ওখানে যে যারা মরে যায় সকলে পিতর হয়ে যায়, তাহলে এখানে জন্ম কারা নেয়? এখানে এসে কারা জন্ম নেয়? আপনি কথা থেকে এসেছেন? আপনি পিতরলোক থেকে এসেছেন কি? ইনি কে যা শ্রীকৃষ্ণ জী মহারাজ বলেছেন গীতায় -
বাসাম্সিজীর্ণানি য়থা বিহায় নবানি গৃহণাতি নরোপরাণি।
শরীরাণি বিহায় জীর্ণাবনন্যানি সম্য়াতি নবানি দেহি।।
অর্থাৎ পুরনো শরীরকে ছেড়ে নতুন শরীর ধারণ করে, এটা কে? যে পিতর সেখানে গিয়ে বসে তো সেটাই বা কে? আবার আরও একটা কথা হল, ইনি বলছিলেন - গিয়ে বসেছে, পরমাত্মা বসিয়েছে, আপনা-আপনি তো বসে নি, তো যে গিয়ে বসিয়েছে তার চিন্তা তার কাছে, সে নিজে তার ব্যাবস্থা করবে। পুলিশ ধরে নিয়ে যায় কাউকে, তো আপনার উপর দায়িত্ব হল যে জেলখানায় ভোজন আপনিই পাঠান। (জনতায় প্রচণ্ড হাসি)...শুনুন আচার্য্য জী! যার পাঠানোর তার ব্যাবস্থা সে নিজেই করবে। আর আপনি না তো জানেন যে তারা কোথায় আছে, আর না জানেন যে তারা জন্ম নিয়েছে কি নেয় নি? না জানেন যে তারা দ্য়োলোকেই বসে আছে না কোনো স্থান না ঠিকানা! আচার্য্য জী মানি অর্ডার এমনি করেই হাওয়াতেই যাচ্ছে...(জনতায় পুনঃ প্রচণ্ড হাসি) ...বিনা ঠিকানায় আজ পর্যন্ত কারো মানি অর্ডার গেছে? ... ব্যাস্ যাই হোক ব্রাহ্মণকে খাইয়ে দাও। আর মৃতের নামে খাওয়াও তো সেসব ওখানে পৌঁছে যাবে? এর কোনো উত্তর নেই, আমি জিজ্ঞেস করেছিলাম যে - "জীবাত্মার নাম পিতর নাকি শরীরের?" কোনো উত্তর দেন নি। যদি জীবাত্মা আসে তো সে শরীর রহিত আসে নাকি শরীর সহিত? কোনো উত্তর দেন নি। আমি বলেছি - "অকৃতাভ্যাগম্" আর "কৃতহানি" এই কথাকে ধরেনই না, বলে দিলেন যে নতুন প্রশ্ন আর করোনা। নতুন প্রশ্ন অন্তিম টার্নে করা হয় না। বন্ধুগণ! এখনে অন্তিম বারটা কখন আসলো? এখনই তো এর উত্তর দেওয়া যেতে পারে। আমি বলি যে যারা শ্রাদ্ধ করেছে তারা কোনো ফল পাবে না, আর যারা করেনি তারা পাবে, সেটা "অকৃতাভ্যাগম্" হচ্ছে, এখানে "কৃতহানি" হচ্ছে। আপনি বলেছেন অমাবস্যার দেবতা হল পিতর। কে পিতর? কোন মৃত হয়েছে সেই পিতর? অমাবস্যার সঙ্গে পিতরদের কি সম্বন্ধ? আমি তো প্রথমেই বলেছি, রক্ষাকারীর রাত্রের সঙ্গে অন্ধকার রাতের সঙ্গে বিশেষ সম্বন্ধ হয়ে থাকে। যারা রক্ষাকারী তারা, অমাবস্যার রাতে ঘোর অন্ধকার থাকে, দারোয়ান আর মাতা-পিতা যেই হোক, যেই হোক তাদেরই চিন্তা হবে, নিজের সন্তানদের রক্ষা করার, যে অন্ধকারে কোনো জন্তু-জানোয়ার যেন না আসে, আর বাচ্চারা যেন কষ্ট না পায়। রাত্রির সঙ্গে পিতরের বিশেষ সম্বন্ধ আছে। দিনে তেমন কোনো বিশেষ আবশ্যকতাই নেই, দিনের বেলা তো সব কাজ হয়েই যায়, কিন্তু যখন অন্ধকার নামে তখন রক্ষা করার আবশ্যকতা পরে। আর দক্ষিণ দিশা সম্বন্ধেও বলে দিয়েছি, হ্যাঁ! একটা কথা আপনি বার বার বলছিলেন যে, আর্য সমাজ বিদ্বানকেই দেব মানে, এটা ঠিক, কিন্তু কেবল বিদ্বানকেই যে দেব মানে এমনটা কিভাবে? আমরা জড় পদার্থকেও দেব মানি, আর তার পূজা কি? দেব হল সে যে দেয়, যেমন - সূর্য আমাদের প্রকাশ দেয়, তথা চন্দ্রমা আমাদের রাতে প্রকাশ দেয়। এটা হল অগ্নি, এটা হল জল, এসব যত পদার্থ আছে এটাও দেব। আর দেবয়জ্ঞ হয়ে থাকে, হবন হয়। "অগ্নেয় স্বাহা" - "সোমায় স্বাহা" আদি দ্বারা হয়ে থাকে। বিদ্বানদের আমরা দেব মানি, এটা ঠিক। কিন্তু যে জড় পদার্থ আছে যারা আমাদের লাভ দিচ্ছে এরও হল দেব। এর জন্য পূজা-পুজাপাঠ কিছু নয়, না এরা বলে, না এরা খায়, না এরা পান করে, তবে হ্যাঁ! অগ্নিহোত্র করলে তাদের শুদ্ধি হয়, জলের শুদ্ধি হতে পারে, বায়ুর শুদ্ধি হতে পারে, আকাশেরও শুদ্ধি হতে পারে, সংশোধন সকলের হতে পারে। মৃতকের নামে ব্রাহ্মণ ভোজন করানো উচিত - এরকম একটা বেদ মন্ত্র বলে দেখান, আপনি মাত্র একটি বেদমন্ত্র বলে দিন যে, মৃতের নামে ব্রাহ্মণকে ভোজন করা উচিত। মেনে নিবো। ব্রাহ্মণকে ভোজন করাও মৃতের জন্য, মৃতের নামে ব্রাহ্মণদের ভোজন করাও, যে ভোজন ব্রাহ্মণের খাওয়া সেটা মৃতের কাছে পৌঁছে যায়? এটা হল প্রশ্ন। এর কোনো প্রমাণ দিন। তখন কথা হবে, আর আমি বলেছিলাম যে, প্রথমে ব্রাহ্মণ খায় নাকি পিতর? ব্রাহ্মণের এটো পিতর খায় নাকি পিতরের এটো ব্রাহ্মণ খায়? এর কোনো উত্তর নেই, "তারা তো হল দেব, দেবের মধ্যে এটো-সেটোর কোনো বালাই নেই", এটা কি বলেছেন? ভাই মৃতক শ্রাদ্ধের খন্ডন হচ্ছে, বেদ দ্বারা, শাস্ত্র দ্বারা, সব প্রকারে মৃতক শ্রাদ্ধের খন্ডন হয়ে যায়। আর আমি আমার পুস্তক "জীবিত পিতর"এ তার জন্য অনেক প্রমাণ দিয়েছি। ইনি বলছিলেন যে শ্রাদ্ধের অর্থ তো এটাই যে সেটা মৃতকের জন্য দেওয়া হয়। বেদের প্রমাণ বলুন? সেটা কোন বেদের প্রমাণ যেখানে "মৃতকের নিমিত্ত করা হলে তার নাম শ্রাদ্ধ হয়ে যায়। আর জীবিতদের নিমিত্ত যা করা হবে তার নাম শ্রাদ্ধ হবে না"? এর জন্য কোন বেদ মন্ত্র বলেছেন? এমনিতেই বলেছিলেন যে যা মৃতকের নামে করা হয় সেটাই হল শ্রাদ্ধ। আছে কোনো প্রমাণ? একটাও নেই, আছে মাত্র আপনার কপোল-কল্পনা, নিজের মনে কল্পনা কথা। যার কোনো প্রমাণ আপনার কাছে নেই। এরকমই কল্পনা জুড়ে জুড়ে বলেদিলেন "যা ইচ্ছে করে দাও", কিন্তু আমার যেটা প্রশ্ন সেটা তো যেমনটা তেমনি বিদ্যমান আছে। আমি অনেক প্রশ্ন করেছি, আমি জিজ্ঞেস করেছি যে, যখন সেটা ওখানে পৌঁছে যায় তো ঘাসও অমৃত হয়ে যাবে? (জনতায় হাসি) কিন্তু কথা এমনটা নয় যে তাদের ঘাস খাওয়াও, আমি তো বলছি - ক্ষীরই খাওয়াও, কিন্তু মরার নামে নয়, জিন্দার নামে খাওয়াও, আপনি জীবিত, ভগবানের দয়া আছে। আমি অনেক প্রশ্ন করেছি, তার কোনো উত্তর নেই যে জীবের নাম পিতর অথবা শরীরের নাম? আর জীব চলে গেছে তো সে জ্বলেছে কখন? জীব তো জ্বলেই না। জীব যেটা সে তো হল "অচ্ছেদ্য", "অদাহ্য" তথা "অক্লেদ্য"। সে জ্বলবে কি করে, তার জ্বলার তো কোনো কথাই নেই "অধামৃতাঃ পিতৃষু সম্ভবন্তু" অর্থাৎ খন্ডন করে দিলাম তার কথার। আর আমি য়েন্নিখাতার অর্থ করে দিয়েছি, সকল কথার খন্ডন করেছি, উনি যে অর্থ বলেন তারও খন্ডন করেছি। ওনার যা অর্থ সে অর্থকে বোঝার চেষ্টা করুন আর পৈতাকে এদিকেরটা ওদিক করে দিলেন, তো মৃত পিতর হয়ে গেলো আর যদি খুলে ফেলা হয় তো মৃতের কি ...মৃতের থেকেও কি অধিক মৃত হয়ে গেলো? এর কি সম্বন্ধ এই মৃতের সঙ্গে? কোনো বেদ মন্ত্র বলুন, কোনো বেদের প্রমাণ দিন যে যা মৃতের জন্য কাজ করা হয়, সেসময় পৈতাকে এদিক থেকে সেদিক করে দেওয়া হয়, দক্ষিণ দিকে মুখ করে হয়। এসব কথা আমাদের এখানে হচ্ছে, আর কিসের জন্য হয়? আমি তার কারণও বলেছি। ভাবুন! বুঝুন!! এইভাবে মৃতক শ্রাদ্ধ সিদ্ধ হবে না, আমি চ্যালেঞ্জ করছি যে তাতে "কৃতি হানি" ও "অকৃতাভ্যাগম্" এই দোষ হবে। আর একটা কথা হল যে মাংস খেতেই হবে, না খাবেন তো মরার পর ২১ বার পর্যন্ত পশু হবেন। "শ্রাদ্ধে মাংস খাওয়া হল আবশ্যক" - মৃতকের শ্রাদ্ধ ভাগবতে এই প্রকারে বর্ণনা করা হয়েছে। কিন্তু ভাগবতে লেখা থাকুক গিয়ে, আমাদের তাতে কোনো যায় আসে না, আমাদের তাতে কি (টার্ন টন টন টন) ভাগবত এনাদের, শ্রাদ্ধ এনাদের, ২১ বারের ভোগ এনাদের, তাই এটা নিয়ে স্বয়ং এনারাই ভাবুক...।
শ্রী পণ্ডিত প্রেমাচার্য জী শাস্ত্রী -
সজ্জনগণ! এখন কিছু সময় পরে ক্রমে ক্রমে শাস্ত্রার্থের সময় এভাবেই সমাপ্ত হয়ে যাবে, আমি শাস্ত্রার্থের সম্বন্ধে চার অঙ্গ দ্বারা সম্বন্ধিত মন্ত্র বলেছি - (১) ব্রাহ্মণদের ভোজন করানো, (২) পিতরদের জন্য পিণ্ডদান হোক, (৩) তর্পণ হোক, এই ক্রিয়াগুলোর জন্য আমি মন্ত্র শুনিয়েছি, - প্রত্যলোচনায় ইনি সেটা নিয়েই আসেন নি। আর বারংবার বলছেন যে, "কোনো মন্ত্র পেশ করে না"। নতুন আরও একটা কথা বলেদেন, আমি কি জিজ্ঞেস করেছিলাম যে যম কে? আর বলেদিলেন যে, যম তো হল পরমাত্মার নাম। কেন ভাই কাকে এটা বার-বার বলছেন যে, তোমরা তো কুকুরের আর কাকের জন্য বলিবৈশ্বদেবের কথা শুনিয়ে কথাটাকে উড়িয়ে দিতে চান। সেই কুকুরের কথা তো স্বামী জী অতিথি য়জ্ঞের ভিতর লিখেছে ...(বিঘ্ন)
মধ্যখানে শ্রী অমর স্বামী জী মহারাজ গর্জন করে বলেন - এটা একদমই মিথ্যা কথা। ..... হ্যাঁ! হ্যাঁ!! মিথ্যা, মিথ্যা...
শ্রী পণ্ডিত প্রেমাচার্য জী শাস্ত্রী -
শুনুন সাহেব! আমি তো বলি যে দক্ষিণ দিশার স্বামী, আর "সানুদায় য়মায় নমঃ" এটা বলে দক্ষিণ দিশায় পিণ্ড রাখো আর সেই পিণ্ড লবণ যুক্ত যেন না হয়, ভাতের হবে। কেন ভাই তো সেটা পরমাত্মা কি - যদি যম পরমাত্মা হয় আর তার নামে পিণ্ড রাখা হচ্ছে, একে তো সেটা বিনা লবণের হবে, সেটা ভাতের, তথা একটাই গ্রাস হবে। তবে কি এটাই পরমাত্মার পূজা হল আর্য সমাজে? আর সেই যমটা কে? শুনুন বেদমন্ত্র শোনাচ্ছি যমের রূপে। স্বামী জী মহারাজ! কে যম? এটা উড়িয়ে দিতে চান? কে যম? অথর্ববেদের মন্ত্র আছে, মহারাজ ধ্যান দিয়ে শুনুন আর ঠিকানাও নোট করুন, কাণ্ড ১৮, সূক্ত তিনের ১৩তম মন্ত্র -
য়ো মমাপ্রক্রমো মর্ত য়ানাম হবিষা সপর্য়ত্
এর অর্থ করে যেটা "মর্তয়ানাম্ প্রথমামমাম্" যে ঋষিগণের মধ্যে সবার আগে মরে, আর যে "লোকম্ প্রথমম্ প্র ইয়ায়ঃ" এই যমলোকে সবার আগে গিয়েছিল সেই "জনানাম্ সম্গমন্-জনো কে সম্গ ন বৈবশ্বত্ য়মম্ দিবাস্বান্" এর পুত্র যম রাজার "হবিষা সপয় সপর্য়ত্" হবি দ্বারা পূজা করো। তাহলে এটা তো যম লোকের অধিষ্ঠাতা, যিনি হলেন যমলোকের দেবতা, তার বর্ণন করা হচ্ছে। তারই নামে দক্ষিণ দিশায় এক পিণ্ড রাখার কথা বলা হচ্ছে। তো আমি যে বারংবার বলে যাচ্ছি যে পৈতা পরিবর্তন করা তারপরেও আমার কথা পৈতা পিতরদের নিয়ে সেটার উপর ধ্যান দিচ্ছেন না। যদি জীবিতের নাম পিতর হয়, তবে তাদের জল পান করানোর সময় পৈতা কেন বদলাবে? স্বামী জী কেন লিখেছে যে পৈতা এই কাঁধ থেকে ঐকাঁধে নেও, আর ভাই! দক্ষিণ দিকেই মুখ কেন করবে? আর তাদের বিনা লবণের ভাতই কেন খেতে দিবে? জলের যে অঙ্গুলী হাতে ভরে সেটা তাদের না পান করিয়ে তা ভূমির উপর কেন ফেলবে? এসব যে বিধিগুলো বানিয়েছে এসব বিধির তাৎপর্য কি? এটা জীবিতে ঘটে না, এই বিধি মৃতকে ঘটে, মৃতকের জন্যই দক্ষিণ দিশায় মুখ করে। আর যখন আমি মন্ত্র শোনালাম তখন পিতৃলোক কোথায় গেলো? পিতৃ লোক কোথায় থাকে তারও মন্ত্র আমি শুনিয়েছি। সেই মন্ত্রকে স্বামী জী ভুলিয়ে দিয়েছেন, সে মন্ত্র আবার বলে দিচ্ছি যেখানে পিতরগণের নিবাস স্থান বর্ণনা করা আছে, পিতর কোথায় থাকে শুনুন আর নোট করুন - কাণ্ড ১৮ সূক্ত ২ মন্ত্র ৪৮ -
কুদন্বতিদ্য়ো খমাত্ পিলুমতীতিমধ্যমাত্ তৃতীয়া হি
প্রদ্য়োলিপি অস্যাম্ পিতর আসতে"
বেদ বলছে যে, দ্য়ৌলোকে চন্দ্রমার অর্ধভাগে প্রকাশমান লোক আছে, সেখানে পিতর লোক থাকে। তাহলে বেদ তো ঘোষণা করছে, নক্ষত্র আকাশ - মন্ডলে দ্য়ৌ স্থানে পিতরের নিবাস! সেখান হতে দেবতা আহ্বান করবে, পিতর দেবতাগণের আহ্বানে আসে। আমার এই মন্ত্রের উত্তর দিন আর - "পিতরঃ শুন্ধধ্বম্" স্বামী জী যেটা লিখেছে যে ব্রহ্মচারী হাতে অঙ্গলী বানিয়ে আর "পিতরঃ শুন্ধধ্বম্" বলে জল ভূমির উপর ফেলবে, কাঁধের উপর পৈতা পরিবর্তন করো, আর দক্ষিণ দিশায় মুখ করবে, - এইসব বিধির অর্থ কি? জীবিত মা-বাপের সঙ্গে এইসব বিধিগুলোর অর্থ কি? আমি এটা বলতে চাচ্ছি, আর স্বামী জী বলছিলেন যে, - "শ্রদ্ধয়া য়দ্ ক্রিয়তে তত্ শ্রাদ্ধম্" যা শ্রদ্ধা দ্বারা করা হয় সেটা শ্রাদ্ধ। সেটা তো আমরাও করি। আরে মহারাজ! শ্রদ্ধা দ্বারা তো সকল কার্যই করা হয়। সব শ্রদ্ধা দ্বারাই করা উচিত। কিন্তু এখানে তো শ্রাদ্ধ হল এক বিধি (বিশেষের) নাম। যে বিধি বিশেষ প্রকারের বিধি দ্বারা মৃতকের জন্য করা হয়। সেই মৃতক সংস্কারের নাম হল শ্রাদ্ধ, তার জন্য এই শব্দ প্রযুক্ত হয়েছে। আর যে কার্য আপনি শ্রদ্ধাপূর্বক করবেন আর সেখানে শ্রাদ্ধ বলবেন তো বড় গোলমাল হয়ে যাবে। যদি কেউ নিজের সন্তানের বিবাহ করাচ্ছে, বিয়ে হওয়ার প্রস্তুতি চলছে, নিজের মনে অনেক আনন্দ, অনেক উৎসাহ, অনেক শ্রদ্ধা প্রেমের সঙ্গে করছে আর আপনাকে কেউ জিজ্ঞেস করলো - বলুন জী! আপনার সন্তানের শ্রাদ্ধ কবে? তো কিরকম খারাপ লাগবে? (জনতায় হাসি) এইজন্য শ্রাদ্ধ শব্দ তো ভাই এক বিশেষ সংস্কারের জন্যই। যদি সবকিছু শ্রদ্ধা দ্বারা করলেই শ্রাদ্ধ মানা হত তবে ভিন্ন ভিন্ন সংস্কার লেখার আবশ্যকতা হত না, সব শ্রাদ্ধই ছিল। আর সবগুলোকে শ্রাদ্ধ বলে দেওয়া উচিত। এইজন্য আমি পুনঃ আমার কথা রাখছি, যেহেতু এখন সময় ক্রমে ক্রমে সমাপ্ত হয়ে এসেছে, এইজন্য এই কথার মধ্যে নতুন কথা যেন শুরু না করেন। আমার যে চার অঙ্গকারী শ্রাদ্ধের মন্ত্র, ব্রাহ্মণের ভোজন ছেড়ে দিন, ক্ষীর আপনাকে বড় উপদ্রপ করছে। আপনি বারংবার ক্ষীরের উল্লেখ করে থাকেন, তাকে ছেড়ে দিন ভাই! কোনো ব্যাপার না আমাকে খাওয়ানোর জন্য এমন অনেক লোক আছে। আপনি এখনও খাওয়ান নাই তার পূর্বেই আপনি এত চিন্তিত হচ্ছেন তো ক্ষীরকে ছেড়ে দিন। তাহলে, আমি মন্ত্র শুনিয়েছি যে, পিতরদের জন্য হবন করো, পিতরদের জন্য পিণ্ড দান করো, পিতরদের জন্য তর্পণ করো, এই তিন কার্য করা বেদ বলছে আর তিন কার্যের জন্য আমি মন্ত্র বলেছি, আপনাকে ব্রাহ্মণ ভোজনেরও মন্ত্র বলেছি, সেই চারমন্ত্র জীবিতের সঙ্গে ঘটে না।
বিনা লবণের ভাতের পিণ্ড জীবিত মা-বাপকে খাওয়ানো হয় না, সেটা মৃতকদের জন্যই নিমিত্ত হতে পারে। পৈতা পাল্টানো, বাকাঁধ থেকে ডানকাঁধে নিয়ে আসা, এই কথাকে বারংবার ছেড়ে দেওয়া হচ্ছেন, আর সবথেকে বড় কথা, অমাবস্যা! স্বামী জী বলে অমাবস্যা তিথির দেবতা হল পিতর, তো আমি এটা জিজ্ঞেস করছি যে, আর্য সমাজী তো আর্য সমাজের বিদ্বানদের অতিরিক্ত কাউকে দেবতাই মানে না, বিদ্বানকেই দেবতা মানে তো অমাবস্যার সঙ্গে কোন বিদ্বানদের সম্বন্ধ আছে? (জনতায় হাসি) ... যে তাদের নামে স্বামী জী লিখেছে যে এই দেখুন! চার অঞ্জুলী দেখুন! চার চার অমুক কার্য করো।
শ্রী অমর স্বামী জী মহারাজ -
প্রিয় বন্ধুগণ! সজ্জন পুরুষগণ! আমি যে প্রশ্ন করেছি তার কথা আমি পরে বলবো আগে আচার্য্য জীর কথার উত্তর শুনুন, আচার্য্য জী বলছেন যে, "আমি এক বছরের মধ্যে একটি বার চাচ্ছি, একটি বার তো মৃতকের নামে দিন।" আমি বলছি যে প্রত্যেক দিন শ্রাদ্ধ করা উচিত, প্রতিদিন। কিন্তু মৃতের করা উচিত নয়, বরং জীবিতের করা উচিত। ইনি তো একদিন মৃতের নামে চাচ্ছেন আমি বলছি প্রতিদিন খান, জীবিত আছেন, আপনি ব্রাহ্মণ, তাই খান, এখানে কোনো আপত্তি নেই, এক মন্ত্র বলেন - "ইমম্ মোদনম্ নিবদেত্ ব্রাহ্মণেষু" আমি দাবি করি এখানে পিতর শব্দ বলুন, আপনি বলতে পারেন নি, পিতর শব্দই নেই, ব্রাহ্মণ ভোজনের বিরোধ আমি কখন করেছি? ব্রাহ্মণদের বিদ্বানদের ভোজন করানোই উচিত, বিদ্বানদের ভোজন করাও, তাদের পূজা তাদের আদর সৎকার করাই উচিত। কিন্তু মৃতকে নামে করা উচিত এটা কোথায় লেখা আছে? সেটা আপনি বলতে পারেন নি। পিতর শব্দ নেই। মৃতকে পিতর বলেছেন, তো সেই পিতরের সঙ্গে মৃতের শব্দটা কোথায় আছে? পিতরের জন্য কখন নিষেধ করা হয়েছে যে পিতরদের সেবা করা উচিত নয়? অনেক করা উচিত। কিন্তু তার সঙ্গে মৃতক শব্দটা কোথায় আছে? বারংবার ইনি বলছেন যে, বিধি লেখা আছে পাতায় এভাবে রাখো, বিনা লবণের রাখো, বিধি লেখা আছে। ইনি স্বামী দয়ানন্দেরই গ্রন্থে জল। ঢেলেছেন। আমি বলছি এটা কুকুর আদির জন্য, মানুষের জন্য নয়, আপনি ব্যর্থই সেটাকে পিতৃয়জ্ঞে ঢোকাচ্ছেন। আমি যা প্রশ্ন করেছি সেগুলো যেমনটা তেমনি পরে আছে। মন্ত্র বলেছি যে -
শতকমন্নুস্বর্গোদেবা য়ন্ত্র আমন্ত্র
আমি বলেছিলাম, আর মন্ত্রে বলেছি "পুত্রাসো য়ত্র পিতরো ভবন্তি" বেদ মন্ত্রে বলা হয়েছে যে, আমাদের পুত্র পিতর হোক, ততক্ষন আমরা জীবিত থাকি। স্পষ্ট বোঝা যায় যে পিতরের অর্থ জীবিতই, কোনোরূপ মৃত নয়। এটা আমি বেদের প্রমাণ দিয়েছি যা যজুর্বেদের ২৫তম অধ্যায়ের মন্ত্র। আর আমি বলেছিলাম যে, এখানে বলা হয়েছে যে যারা জীবিত, যারা আমাদের পুত্র, তারা সন্তানের পিতা হয়ে যাক। আমরা প্রপিতামহ হয়ে যাই। এটা হল এর অর্থ, আর ইনি বলেদেন, "লজ্জা থাকা উচিত, আপনার লজ্জা করে না। এইসব অশিষ্ঠাচারের কথা বলতে যে বাপকে চৌকিদার বানিয়ে দিলেন!" দেখুন বাপ হচ্ছে রক্ষাকারী, "পিতা পাতা পালয়িতাবা" এটাই য়াস্কারাচার্য বলছেন যে - পিতা হল রক্ষাকারী। "পিতাকে বানিয়ে দিলো, সে লণ্ঠন নিয়ে ঘুরবে!" আমি বলছি পিতা লণ্ঠন নিয়েও ঘুরবে, প্রদীপ নিয়েও ঘুরবে, আরও সব কার্য করবে। মাতাও করবে, করতে হয়, মাতা-পিতা দু'জনকেই সন্তানের নিমিত্ত সবকিছু করতে হয়। তাদের নোংরা কাপড়ও ধুতে হয়, এখন আপনি বলবেন - ভঙ্গী বানিয়ে দিলো! না জানি আপনি কি কি বলবেন? যা রক্ষার কার্য তো যত রক্ষার কার্য আছে সে করবে, আমি যে প্রশ্ন করেছিলাম, আমার সে প্রশ্ন যেমনটা তেমনি বিদ্যমান আছে। আমি বলেছিলাম যে - "পা রক্ষণে" ধাতু হতে পিতৃ শব্দ তৈরি, যার রক্ষা করার সামর্থ্য আছে, সে-ই পিতর হতে পারবে। যার রক্ষা করার সামর্থ্য নেই সে পিতর হতে পারবে না। আমি বলেছি - শরীরকে জ্বালিয়ে পিতর বলেন নাকি জীবাত্মাকে বলেন? কোনো উত্তর দেন নি, আমি বলেছি যে, যখন জীবাত্মা সেখান থেকে আসে এখানে, তো শরীর ছেড়ে আসে এখানে, শ্রাদ্ধের জন্য, নাকি সে শরীর সহিত আসে? কোনো উত্তর নেই। আমি জিজ্ঞেস করেছি যে, যারা মরে যায় তারা সকলে কি পিতর হয়ে যায় নাকি অর্ধেক হয় আর অর্ধেক হয় না? যদি তারা সবাই পিতৃলোকে গিয়ে বসে দ্য়ৌলোকে, তবে এখানে জন্ম কারা নেয়? এখানে শরীর ধারণ কারা করে? এর এখনও পর্যন্ত কোনো উত্তর পেলাম না। মন্ত্রে পিতর শব্দ আসে নি, আমি বার-বার দাবি করি যে সেই মন্ত্রে পিতর শব্দ নেই। যখনই আমি এটা জিজ্ঞেস করি যে যখন পিতর সেখানে গিয়ে বসে যায়, তারা কিরকম পিতর? তারা সেখানেই বসে থাকে, কি হয়? আর জন্ম কারা নেয়? কোনো উত্তর দেন নি। "অকৃতাভ্যাগম্" আর "কৃতহানি" এর কোনো উত্তর দেন নি। যে শ্রাদ্ধ করিয়েছে, ভোজন করিয়েছে, তার কোনো ফল সে পেলই না। আর যে কিছুই করলো না, সে ফল পেয়ে গেলো, এই দুটোই হচ্ছে উল্টো। একজন পড়ছে,পরিশ্রম করছে, তাকে পরীক্ষাতে বসতে দেওয়া হল না, তাকে কোনো উপাধি দেওয়া হল না। আর যে পড়ে না জ্ঞানহীন, তাকে বি এ আর এম এ অথবা আচার্য্য বানিয়ে দেওয়া হল? এমনটা তো কোথাও হয় না যে রাখাল পশু চরায়, লেখা-পড়া এক অক্ষরও জানে না, আর তাকে আচার্য্য বানিয়ে দেওয়া হল। (জনতায় প্রচণ্ড হাসি) ...এটা তো "অকৃতাভ্যাগম্" হয়ে যাবে। যে পরিশ্রম করেছে ফলও তার পাওয়া উচিত। আমি শ্লোক বলেছি -
ন পিতুঃ কর্মণাপুত্রঃ পিতা বা পুত্র কর্মণা স্বয়ম্
কৃতেন গচ্ছন্তি, স্বয়ম্ বদ্ধাঃ স্ব কর্মণা।।
পিতার করা পুত্র পায় না, পুত্রের করা পিতা পায় না, তার উত্তর আপনি এখনও পর্যন্ত দেন নি। পিতর এসে ব্রাহ্মণের পেটে বসে, "উদরস্থ পিতাতস্যবাম পাশর্বে পিতামহঃ" পিতা পেটে এসে বসে, বাঁপাশে উরুতে এসে বসে, পিতামহ বসে, প্রপিতামহ দক্ষিণ অথবা পূর্বে এসে বসে যায়, ব্যাস্ পেট হয়ে গেলো অতিথিশালা! (জনতায় হাসি)...এইসবের আপনি কোনো উত্তরই দেন নি, স্পর্শ পর্যন্ত করেন নি। আমি আপনার সকল প্রশ্নের উত্তর দিয়ে দিয়েছি "য়ে নিখাতা" এর খণ্ডন করেছি, যে - "য়ে নিখাতা" মৃতকে ভূমিতে পোঁতানো হয় না আমাদের এখানে, তার আমি খণ্ডন করেছি। আমি "অধামৃতাঃ পিতৃষুসম্ভবন্তু" এই মন্ত্রের অর্থ বলেছি যে - জীবিতই হল পিতর আর সেখানে অমরণাধর্মা" বলা হয়েছে, "অমৃতা" বলা হয়েছে, "মৃতা" শব্দ নেই। এইসব দ্বারা ভাইগণ আর বোনেরা! আপনারা অনেক প্রেম দিয়ে আমাদের সকলের বক্তব্য শুনেছেন।আমি আরও জিজ্ঞেস করেছিলাম যে, যখন কোনো পাপী মরে যায় তো সেও কি কোনো দেব হয়ে যায়? পিতর দেব হয়ে থাকে তো এটা আমি আগেই জিজ্ঞেস করেছিলাম, এরও কোনো উত্তর দেন নি।
যে মন্ত্র আমি বলেছি তা - পিতর জীবিতদের বলে, ব্যাকরণে জ্ঞানী, গরুর দুধ দূহকারী, যোদ্ধা, রক্ষাকারী, আর শিক্ষার উপদেশক, এরা সব হল পিতর। এরকম অনেক মন্ত্র বলেছি। এক মন্ত্র বলেছেন যে - "ইমম্মোদনম্ নিদধে ব্রাহ্মণেষু" আমি বলেছি একদম ঠিক আছে, ব্রাহ্মণদের ভোজন খাওয়ানো উচিত। ভাত খাওয়ানো উচিৎ, ভাত! আর সেখানে তো বার-বার বলেন যে - বিনা লবণে খাওয়াবে। এই ভাত কিসের হবে? এটাও তো বিনা লবণের ভাত, আর কিছু দিতে হবে, তারপর তো ভাত এরকম হবে নইলে তো খিচুরী হয়ে যাবে। তাহলে ব্রাহ্মণকে খাওয়াও, এটা তো বলা হয়েছে, কিন্তু মৃতের জন্য খাওয়াও এটা কোথায় লেখা আছে? খুব খাওয়াও, ভাতই নয় বরং ক্ষীর খাওয়াও, খুব করে ক্ষীর খাওয়াও, কিন্তু মৃতের নামে খাওয়াবে নয়, মৃতের জন্য হয় না। রাজারাম জী এটা লিখেছে যে যারা পিতর সেখানে চলে যায়, ঠিক লিখেছে। রাজারাম জী লেখুক বা অন্য যেকোনো রাম জী লিখে থাকুক, রাজারাম জী আমাদের কাছে প্রমাণ নয়, কিন্তু এখানে তো রাজারাম জীও বলেছে যে "পিতর"! মরে যাওয়া পিতর তো বলে নি। শুধু পিতরই বলেছে, আমরাও পিতর বলি। পিতর এখানে থাকে, সেখানে থাকে, জীবিত থাকে, লেখা-পড়া করে, পড়ায়, কার্য করে, রক্ষার কার্য করে তারাই হল পিতর। আমিও এটাই বলি, কিন্তু মৃত পিতর হয় এটা কোথায় লেখা আছে? আমি জিজ্ঞেস করেছিলাম যে, সে ব্যবস্থান যার পুত্র হচ্ছে যম, সেটা কোন ব্যবস্থান? কোথায় থাকে?
মৃতক শ্রাদ্ধের জন্য খুঁজতে-খুঁজতে একটা প্রমাণ রয়েগেছে যে সেটাই বলিবৈশ্বদেবয়জ্ঞের যেই ভাগ রাখে। পৈতা কেন বদলালো? পৈতা বদলাতে কি কেউ মরে গেলো? তাতে কি হয়ে গেলো? জল দিয়ে দিয়ে ভাই এটা তো হল সংকেত, এমন তো অনেক কার্যে সংকেত আছে। আমরা যখন অগ্নিহোত্রের সময়, পূর্ব দিশায়, পশ্চিম দিশায়, চতুরদিকে হল সিঞ্চন করি, আরও অনেক কিছু আছে। আমি আপনাদের সামনে এটা বলে দিয়েছি যে মৃতক শ্রাদ্ধের একটাও প্রমাণ বেদে নেই। আর অগ্নিষ্বাত্তার অর্থ আমি বলে দিয়েছি যে - যারা অগ্নিহোত্র করে না তাদের নাম হল "অগ্নিষ্বাত্ত"। জীবিত পিতরের শ্রাদ্ধ বেদে বলেছি। তাদের সেবা করো, তাদের ভোজন দাও, এইসব কার্য করো। অনেক ভালো হল পরমাত্মা করুক আপনি সদা প্রসন্ন থাকুন, সদা সুখী থাকুন, আমি আর্য সমাজের পক্ষ থেকে আদরণীয় প্রেমাচার্য জীকে আর প্রধান জীকে বিশেষ ধন্যবাদ দিচ্ছি। আর এভাবেই শাস্ত্রার্থ হতে থাকুক। এরজন্য আমি আপনাদের বিশেষ অভারী। বিশেষরূপে প্রধান জীর আর আদরণীয় পণ্ডিত প্রেমাচার্য জীর।
Note - অন্তিমে শ্রী প্রেমাচার্য জী পৌরাণিক সনাতন ধর্মের পক্ষ থেকে অধ্যক্ষ মহোদয় "শ্রী স্বামী ওমানন্দ জী সরস্বতী" জীকে ধন্যবাদ করতে করতে সেখানেই হয়ে যাওয়া বক্ত্যাব্য পুনরাবৃত্তি করতে থাকেন। এর মাঝখানে অধ্যক্ষ জী বলেন -
"নতুন কোনো কিছু থাকলে বলুন, এগুলো তো ঘণ্টা ধরে বসে থাকা শ্রোতাগণ শুনেইছে, এটা পুনঃ পুনরাবৃত্তি করে লাভ কি?"
শ্রী অমর স্বামী জী মহারাজ -
সজ্জনগণ! আচার্য্য জীর এই সব কথার উত্তর আমি অনেক বার দিয়ে দিয়েছি। কিন্তু ইনি তো বলবেনই কিছু না কিছু!
শ্রী পণ্ডিত প্রেমাচার্য জী শাস্ত্রী -
স্বামী জী মহারাজ! আমাকে আমার কথা বলতে দেওয়া হচ্ছে না। যা আমার সাথে অন্যায় করা হচ্ছে।
শ্রী অমর স্বামী জী মহারাজ -
আচার্য্য জী! বিচার-অবিচার তো আজ সব সকলের সামনে খুলে গেছে, সব বোঝা গেছে, ...(গর্জন করে) - আমি চ্যালেঞ্জ করছি এই বিষয়ের উপর আপনি ভুল করেও কারও সামনে শাস্ত্রার্থ করবেন না। শ্রোতাগণের মধ্যে আজ আপনি একদম স্পষ্ট করেছেন যে "শ্রাদ্ধ মৃতকদের হতেই পারে না" - শ্রাদ্ধ কেবল জীবিতদেরই হতে পারে।
চতুর্দিকে থেকে কোলাহল তথা স্লোগান দ্বারা আকাশ ডেকে ওঠে -
জনতার মধ্যে থেকে ... এইসব পেট ভরার জন্য পোঙ্গা পণ্ডিতেরা করেছে। বলো -
মৃতক শ্রাদ্ধ = মুর্দাবাদ
শ্রাদ্ধ কাদের হয়? = জীবিতদের
পিতর হল কারা? = জীবিত
আজ তো ক্ষীর মরে গেল = মরে গেল ভাই মরে গেল
বলো বৈদিক ধর্মের = জয়
অমর স্বামী জী মহারাজ = অমর হোক।
Note - দেখতে দেখতে এই জয়কারের সঙ্গে প্যান্ডেল খালি হয়ে যায়, পৌরাণিক লোকেরা নিজের পথি পত্র উঠিয়ে ভেগে যায়। ইতি শম্।।
শ্রী পণ্ডিত শ্রী গীতারাম জী শাস্ত্রী -
প্রিয় শ্রোতাগণ! যজুর্বেদের অধ্যায় ১৯, মন্ত্র ৫৭ আর ৫৮ এই রকম -
উপহূতাঃ পিতরঃ সোম্য়াসো বর্হিষ্য়েষু নিধিষু প্রিয়েষু।
ত আগমন্তু তইহ শ্রুবন্ত্বধি ব্রুবন্তু তেsবন্ত্বস্মান্।।৫৭।।
আ য়ন্তু নঃ পিতরঃ সোম্য়াসোsগ্নিষ্বাঃ পথিভির্দেবয়ানৈঃ।
অস্মিন্ য়জ্ঞে স্বধয়া মদন্তোsধি ব্রুবন্তু তেsবন্ত্বস্মান্।।৫৮।।
এই দুই মন্ত্রে "মৃতক শ্রাদ্ধের" স্পষ্ট বিধান আছে। এই মন্ত্রে বলা হয়েছে যে- যে পিতর অগ্নিতে জ্বলানো হয়েছে, সে শ্রাদ্ধে আসুক আর ভোজন করুক। বেদে "মৃতক শ্রাদ্ধের" বিধান আছে, আর মৃতক শ্রাদ্ধকে আর্য সমাজ মানে না, তো আর্য সমাজ বেদ বিরুদ্ধ হলো কিনা? উত্তর দিন।
Note - শ্রী পণ্ডিত শ্রী গীতারাম জী শাস্ত্রীকে বলার জন্য ১০ মিনিট দেওয়া হয়েছিল, কিন্তু তিনি কেবল ৩ মিনিট বলেই বসে পড়লেন।
শ্রী পণ্ডিত ঠাকুর অমর সিংহ জী শাস্ত্রার্থ কেশরী -
সত্যভিলাশী বন্ধুগণ! শ্রী পণ্ডিত যজুর্বেদের দুটি মন্ত্র পড়ে শোনালেন। আর তাতে "মৃতক শ্রাদ্ধ" সিদ্ধ হয়েছে, এটা প্রতিজ্ঞা করলেন, কিন্তু এই দুই মন্ত্রে না তো কোথাও "মৃতক" শব্দ আছে আর না "শ্রাদ্ধ"। " ছিন্নে মূলে নৈব শাখা ন পত্রম্"। গোড়াই কেটে গেছে, এখন না ডাল হবে না পাতা। এই মন্ত্রের শব্দে সিদ্ধ হচ্ছে যে - জীবিত মাতা-পিতা তথা পিতামহ আদিকে ডেকে ভোজন করানোর এখানে বর্ণন আছে। শুনুন, আমি এর অর্থ বলছি - "উপহূতাঃ...পিতরঃ...আগমন্তু" এর অর্থ হল, " আহ্বান করা পিতর আসুক"। এখন আপনিই চিন্তা করুন, এক নামের দুটি মানুষ আছে, তারমধ্যে একজন মারা গেছে, আপনি আমাকেই ধরে নিন। অমর সিংহ দুই জন ছিল, একজন মরে গেছে আর একজন জীবিত আছে, এক বাড়ির লোক যদি কাউকে বলে যে অমর সিংহকে ডেকে নিয়ে আসো, সে ভোজন করে নিক। আপনি ভাবুন! যাকে পাঠানো হয়েছে, সে কি এটা জিজ্ঞেস করবে যে কোন অমর সিংহকে ডেকে আনবো? যে মারা গেছে তাকে? বলুন এমন জিজ্ঞেস করলে তাকে পাগল বলা হবে না তো কি? আমার হিসেবে তো সকলে তাকে পাগল বলবে। আর বলবে ওরে মূর্খ! কখনও মরা মানুষকেও ডাকা যায় নাকি? যে জীবিত আছে তাকে ডেকে নিয়ে আয়। এখানে স্পষ্ট যে -
জীবিত পিতরকে ডেকে আনার কথা বলা হয়েছে, মৃতদের নয়। আর দ্বিতীয় কথা এটা ধ্যান দিন যে, এই মন্ত্রে চারটি শব্দ আছে যা জীবিতদেরই জন্য সম্ভব, মৃতদের জন্য নয়।
১. "শ্রুবন্তু তে" - অর্থাৎ সে আমাদের বচন শুনুক। এখন আপনারা পণ্ডিত জীকে জিজ্ঞেস করুন মরা ব্যাক্তি কি করে শুনবে! যখন কোনো ব্যাক্তি মরে, তখন তার আত্মীয়-সজন কেঁদে কেঁদে বলে, আমাদেরও কিছু শোনো"! মরা লাশ পড়ে আছে, তার কানও আছে, তবুও শোনে না, শব জ্বলার সঙ্গে-সঙ্গে কান নষ্ট হয়ে যাওয়ার পর সে কি করে শুনবে?
২. "অধিব্রুবন্তু" - অর্থাৎ আমাদের সঙ্গে ভালো ভাবে বলো। লাশ পড়ে থাকার পর সব সম্বন্ধী বলে, "আমাকে তো কিছু বলে যাও" নিজের স্ত্রী নিজের সন্তানকে কিছু বলো, সে কিছুই বলে না, জ্বলার পর সে কি করে বলবে?
৩. "অবন্ত্বস্মান্" - অর্থাৎ আমাদের রক্ষা করো। মরে যাওয়া নিজের লাশের রক্ষা করতে পারলো না, জ্বলার পর সে রক্ষা করতে কি করে আসবে? বুদ্ধি কি এইসব কথাকে স্বীকার করে? পণ্ডিত জী মহারাজ! চুপ করে আছেন কেন? একটু তো নিঃশ্বাস ছাড়ুন। আর দেখুন চতুর্থ শব্দ হল -
৪. "স্বধয়ামদন্তঃ" - অন্ন দ্বারা ভোজনে তৃপ্ত হয়ে। কি বন্ধুগণ! মৃত - ভোজন কি করে করবে? যদি কেউ মরাকে কোথাও জলও পান করতে দেখেছেন তো উঠে দাড়িয়ে বলুন। ভোজন তো দূরের কথা! কেউ দাড়ালো না...(জনতায় হাসি)। তো স্পষ্ট হল যে - জীবিত পিতরকে ডেকে তাদের কাছে এটা কামনা করা যেতে পারে যে তারা এখানে আমাদের গৃহে - ১. ভোজন দ্বারা তৃপ্ত হোক। ২. আমাদের কথা আর প্রার্থনা আদি শুনুক। ৩. আমাদের উপদেশ করুক। ৪. আমাদের কথার উত্তর দিক। ৫. আমাদের রক্ষা করুক। শুধু এই মন্ত্রে কি, চার বেদের কত্থাও মৃতক শ্রাদ্ধের নাম-গন্ধ পর্যন্ত নেই। আর্য সমাজ বেদকেই মানে তার সন্মান করে, বেদের নিন্দা তো দূর অবহেলা পর্যন্ত করে না, এই জন্য জনতা আর্য সমাজ হল পূর্ণরূপে আস্তিক সমাজ। শ্রী শাস্ত্রী জীর প্রশ্নের উত্তর আমি দিয়েছি। বলুন পণ্ডিত জী মহারাজ! কি জানতে চান?
শ্রী পণ্ডিত শ্রী গীতারাম জী শাস্ত্রী -
( শ্রী শাস্ত্রী জী দাড়া হয়ে খুব আবেগের সঙ্গে বললেন) - কার করা এই ভাষ্য আপনি বলছেন?
শ্রী পণ্ডিত ঠাকুর অমর সিংহ জী শাস্ত্রার্থ কেশরী -
শ্রী ঠাকুর সাহেবও দাড়িয়ে পণ্ডিত জীর থেকেও দ্বিগুণ আবেগের সঙ্গে কর্কশ স্বরে বললেন - পণ্ডিত জী মহারাজ! এই ভাষ্য আমার করা, আর যদি এখানে কোনো দোষ দেখে থাকেন তো বলুন।
শ্রী পণ্ডিত শ্রী গীতারাম জী শাস্ত্রী -
কি ভাইয়েরা! শুনছেন আপনারা, আমি তো শ্রী শঙ্করাচার্য জী মহারাজের করা ভাষ্যই বলি। আর এই মহারাজ জী নিজের করা ভাষ্য বলেন! বলুন! শ্রোতাগণ!! শ্রী শঙ্করাচার্য জীর করা ভাষ্য মানবো নাকি এনার মানবো? ভাই আমি তো শ্রী শঙ্করাচার্য জীর করা ভাষ্যই মানবো।
শ্রী পণ্ডিত ঠাকুর অমর সিংহ জী শাস্ত্রার্থ কেশরী -
(ঠাকুর জী গর্জন করে) শ্রী শঙ্করাচার্য জী কোনো বেদ অথবা একটা বেদ মন্ত্রেরও ভাষ্য করেন নি, আপনি একদম মিথ্যে বলছেন।
Note - শ্রী পণ্ডিত গীতারাম জীর সঙ্গে দুই পণ্ডিত সনাতন ধর্মী তিলক ছাপ লাগিয়ে বসে ছিল, তাদের দিকে শ্রী ঠাকুর সাহেব ইশারা করে বললেন-
"আপনারা বলুন পণ্ডিত জী! আপনারা শ্রী শঙ্করাচার্য জীর বেদ ভাষ্য পড়েছেন অথবা শুনেছেন? যদি হ্যাঁ তো বলুন যে কোন বেদের ভাষ্য তিনি করেছেন আর কোথায় ছাপা হয়েছে?"
Note - শ্রী প্রধান লালা আমীরচন্দ জী রিটার্ড তহসীলদারের বার বার বিশেষ আগ্রহ করার পর এই দুই পণ্ডিত উঠে দাঁড়ান তথা হাত জোড় করে বলেন - " শ্রী শঙ্করাচার্য জী কোনো বেদেরই ভাষ্য করেন নি"। এই শুনে শ্রী পণ্ডিত গীতারাম জী শাস্ত্রী রাগে আগুন হয়ে যান, আর নিজের পথি, পত্র আদি তুলে নিয়ে নিজের দুই সঙ্গীর উপর অভিশাপ দিয়ে তথা গালি দিতে-দিতে উঠে চলা শুরু করেন আর সেই পণ্ডিতদের বলতে থাকেন -
আর্য সমাজীদের সাক্ষী দিয়ে দিলে - আমি তোমাদের জন্য লড়াই করছিলাম, তোমরা তাদের সঙ্গী হয়ে গেছো। মরো! আমি চললাম!
তিনি চলে যান শাস্ত্রার্থ সমাপ্ত হয় যায়, আর পণ্ডিত অমর সিংহ জীকে সেদিন থেকে সমাজের লোকেরা "শাস্ত্রার্থ কেশরী" র পদবী দিয়ে দেয়। আর পণ্ডিত ঠাকুর অমর সিংহ জী সেদিন থেকেই শাস্ত্রার্থ মহারথী হয়ে যান।
Note - শ্রী পণ্ডিত ঠাকুর অমর সিংহ জীর বয়স সেসময় প্রায় ২৫ বর্ষ ছিল তথা এই শাস্ত্রার্থ তার জীবনের প্রথম শাস্ত্রার্থ ছিল। এই শাস্ত্রার্থে কেবল ২০ মিনিট সময় লেগেছিল।
শাস্ত্রার্থ বিষয় - মৃত ব্যাক্তির শ্রাদ্ধ বেদানুকূল কি?
স্থান - পিন্ডিঘেপ, জেলা অটক, কৈম্বলপুর
দিনাঙ্ক - ৩ ফেব্রুয়ারী ১৯১৯
আর্য সমাজ থেকে শাস্ত্রার্থকর্ত্তা - শ্রী পণ্ডিত ঠাকুর অমর সিংহ জী শাস্ত্রার্থ কেশরী
পৌরাণিক পক্ষ থেকে শাস্ত্রার্থকর্ত্তা - শ্রী পণ্ডিত শ্রী গীতারাম জী শাস্ত্রী
প্রধান - লালা অমীরচন্দ জী রিটায়র্ড তহসিলদার
উপস্থিত বিদ্বান - (১) শ্রী পণ্ডিত মহতা রামচন্দ্র জী শাস্ত্রী, (২) শ্রী পণ্ডিত য়জ্ঞদত্ত জী শাস্ত্রী, (৩) শ্রী মাস্টার অমর নাথ জী আদি।
অনুবাদকঃ- আশীষ আর্য
সনাতনীদের গর্ভধারণ থেকে শ্মশান পর্যন্ত বৈদিক সংস্কার ১৬ টি। মহর্ষি মনু (মনুস্মৃতি ২/১৬) বেদ দ্বারা এই ১৬ সংস্কার (যজুর্বেদ ৮/৩৩) নির্দেশিত বলেছেন। এগুলোকে একত্রে ষোড়শ সংস্কার বলা হয়। একজন ব্যক্তির উত্তম পরিবার ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মের স্বার্থে বাধ্যতামূলকভাবে এই ষোড়শ সংস্কার পালন করা উচিত ।

অথর্ববেদ (৬/৮১/২)

(অথর্ববেদ ৩/২৩/৬)

(ঋগ্বেদ ২/৩২/৪)

(ঋগ্বেদ ৫/৭৮/৯)

(যজুর্বেদ ৭/২৯)

(অথর্ববেদ ৮/২/১৪)

(অথর্ববেদ ৮/২/১৯)

(অথর্ববেদ ৬/৬৮/৩)

(অথর্ববেদ ৬/১৪১/২)

(অথর্ববেদ ১১/৫/৩)

(অথর্ববেদ ১১/৫/২৪)

(ঋগ্বেদ ৩/৮/৪)

(অথর্ববেদ ১১/৫/১৮)

(ঋগ্বেদ ১০/১৪৬/৫)

(ঋগ্বেদ ৯/১১৩/৪)

(যজুর্বেদ ৪০/১৫)
No comments:
Post a Comment
ধন্যবাদ