ঋতুকালীন নারীরা কি অপবিত্র থাকে ? - ধর্ম্মতত্ত্ব

ধর্ম্মতত্ত্ব

ধর্ম বিষয়ে জ্ঞান, ধর্ম গ্রন্থ কি , হিন্দু মুসলমান সম্প্রদায়, ইসলাম খ্রীষ্ট মত বিষয়ে তত্ত্ব ও সনাতন ধর্ম নিয়ে আলোচনা

धर्म मानव मात्र का एक है, मानवों के धर्म अलग अलग नहीं होते-Theology

সাম্প্রতিক প্রবন্ধ

Post Top Ad

স্বাগতম

13 September, 2022

ঋতুকালীন নারীরা কি অপবিত্র থাকে ?

 নারী ও পুরুষ সকলেই জানা উচিত •••

নারীদের মাসিক বা (ঋতুস্রাবকালীনে পিরিয়ডের) বিষয় নিয়ে পূজা, উপসনা, ও মন্দিরে উঠতে পারবে না এটা সনাতনধর্মে ধর্মীয় শাস্ত্রীয় নিষেধাজ্ঞা নয় এটা একটি সামাজিক নিষেধাজ্ঞা।
ঋতু এর বাংলা অর্থ হলোঃ-
১. প্রাকৃতিক অবস্হা অনুযায়ী বছরের বিভাগ, যথা গ্রীষ্ম বর্ষা শীত ইত্যাদি।
২. মেয়েদের মাসিক রজস্রাব, স্ত্রীরজ। [সং. √ ঋ + তু]।
(কাল)— মাসের যে কয়দিন মেয়েদের ঋতুস্রাব চলে।
৩. পতি, (রাজ)— ঋতুশ্রেষ্ঠ বসন্ত।
৪. (পরিবর্তন)— এক ঋতুর পরে আর এক ঋতুর আগমন, ঋতু বদলে যাওয়া।
মতী বিণ. রজস্বলা, যার ঋতুস্রাব হয় এমন।
৫. (স্নান)— ঋতুমতী হওয়ার পর চতুর্থ দিন স্নান করার সংস্কার।
মাসিক মানে ঋতুস্রাব ওপর ধর্মীয় নিষেধাজ্ঞা একটি সামাজিক নিষেধাজ্ঞা যা নারীদের রজঃস্রাব জনিত বিষয়। রজস্রাব নারীদেরকে কলঙ্ক ও সামাজিক বাধা হিসেবে গণ্য করা হয় কিন্তু এটা সম্পুর্ণ
কুসংস্কার।
চলুন শাস্ত্রীয় প্রমান সহ দেখে নিই,,,,
শুদ্ধাঃ পুতা যোষিতো যজ্ঞিযা ইমা আপশ্চরুমব সর্পন্তু শুভ্রাঃ ।
অদুঃ প্রজাং বহুলান্পশুন্নঃ পক্তৌদনস্য সুকৃতামেতু লোকম্ ।।
(অথর্ববেদ ১১/১/১৭)
অনুবাদঃ— এই বিশুদ্ধ, পবিত্র, অতিথিবান যুবতী নারীরা এবং তাদের পবিত্র কাজগুলি যেন পবিত্র নৌযানের মত পবিত্র জাহাজের দিকে চলে যায় এবং পবিত্রতার জন্য পবিত্র খাদ্যের জন্য যজ্ঞের প্রস্তুতি নিচ্ছে। তারা আমাদের উন্নতচরিত্র বংশধর এবং প্রচুর সম্পদ দিতে পারে, এবং যারা ডিভাইনের জন্য খাদ্য প্রস্তুত এবং নিখুঁত করতে পারে তারা জীবনের সর্বোচ্চ অর্জনের ক্ষেত্রগুলিতে পৌঁছাতে পারে।
সনাতনধর্মে সর্বোৎকৃষ্ট মানবতাবাদী ধর্ম বলা হয়েছে। আর সনাতন ধর্মশাস্ত্র কে বিশেষ করে বেদে নারীদের অধিকার প্রতিষ্ঠা ও মর্যাদা দান করা হয়েছে।
এবং বেদে নারীদের সর্বদা পবিত্র ও শুদ্ধতা প্রতীক হিসেবে দেখা হয়েছে।
️ব্রাহ্মণ, ক্ষত্রিয়, শুদ্র, বৈশ্য, স্বীয় স্ত্রীর ও সেবকাদি এবংঅন্যান্য সকল মনুষ্যকেই যেমন আমি এই মঙ্গলদায়িনী বেদবানীর উপদেশ দান করিয়াছি, তোমরাও সেইরুপ করো।
(যজুর্বেদ২৬/২)
এখানে নারী পুরুষ সবাইকে একসাথে কর্ম করতে বলেছেন।
️নারীদের একটা অন্য ধরনের পবিত্রতা আছে। তারা কখনোই পুরোপুরি অপবিত্র হন না।(বশিষ্ট ধর্মসূত্র ২৮/৪)
️নারীরা সবসময় কলুষতা থেকে মুক্ত।(বশিষ্ট ধর্মসূত্র ২৮/৬)
মৃত্তৌয়ঃ শুধ্যতে শোধ্যং নদী বেগম শুধ্যতে।
রজসা স্ত্রী মনোদুষ্টা সন্ন্যাসেন দ্বিজোত্তমঃ।।
(মনু ৫/১০৮)
অনুবাদঃ— মালিন বস্তু মৃত্তিকা ও জলাদি দ্বারা শুদ্ধ হয়, নদী শ্লেষ্মাদি-দূষিত হইলে শ্রোতে শুদ্ধ হয়। স্ত্রীলোক মনে মনে পরপুরুষামুকী হইলে ঋতু হইলেই শুদ্ধ হয় ব্রাহ্মণ পাপাচরণ করিলে ব্রহ্ম চিন্তন দ্বারা শুদ্ধ হয়।
(বশিষ্ঠ ধর্মসূত্র ২৮/২-৩ তে বর্ণিত হয়েছে)।
অর্থাৎ অগ্নিহোত্র যজ্ঞের অনুমতি নেই। নারীর তপস্বিনীর ন্যায় আচরণ ও ঋতুকালীন সময় যে তার শুদ্ধতার প্রতীক। (মনুসংহিতা ও বশিষ্ট ধর্মসূত্রে বর্ণিত)।।
নারীরা কখনোই অপবিত্র নন। মাসের নির্দিষ্ট সময়ে সাময়িক অসুবিধা তাদের সমস্ত মনের পাপ ধুয়েমুছে সাফ করে পবিত্রতা আরো বৃদ্ধি করে।
(বশিষ্ট ধর্মসূত্র ২৮/৯)
এছাড়াও বেদের মন্ত্রদ্রষ্টা ঋষিদের মধ্যে কিছু শ্রদ্ধেয় নারী ঋষি রয়েছেন।
ঘোষা (ঋগ্বেদ দশম মন্ডলের ৩৯-৪১ নং সুক্তের দ্রষ্টা, ঋষি কক্ষিবান এর কন্যা)।
লোপামুদ্রা,
মৈত্রেয়্‌
গার্গেয়ী,
পৌলমী,
রোমশা ,
অপালা,
বাক (ঋগ্বেদের বিখ্যাত দেবীসুক্তের দ্রষ্টা),
একমাত্র সনাতন ধর্মের নারীকে সর্ব্বোচ্চ মর্যাদা দান হয়েছিল, তাই সনাতন ধর্মের নারীর আদর্শ ও কীর্ত্তি-গরিমা পরিপূর্ণরূপে অতুলনীয় গৌরবে বিকশিত হয়েছিল।
সনাতন ধর্মে নারীর মর্য্যাদা শুধু দাম্পত্য, পারিবারিক, সামাজিক ক্ষেত্রে সীমাবদ্ধ নয় ;
বরং সনাতন ধর্মে নারী দেবী, ভগবতী, বিশ্বজননী। সনাতন ধর্মের নারী শুধু স্নেহ-প্রীতি-শ্রদ্ধা-সন্মানের পাত্রী নয়; নারী দেবীরূপে পূজিতা। (ঋষির অনুশাসন)
নারীকে দেবী বলে পূজিত করা হয়েছে।
যা বিশ্বের আর কোন ধর্ম বা ধর্মগ্রন্থে নারীদের এমন ভূমিকা দেখা যায় না। একমাত্র পবিত্র বেদেই পাওয়া যায় নারীদের এমন অসাধারণ অবদান। অার পৃথিবীর অন্যান্য সব ধর্মগ্রন্থে শুধুমাত্র পুরুষদের ভূমিকাই পাওয়া যায়
সুতরাং শাস্ত্র মতে নারী অপবিত্র নয়।

সংগৃহীত লেখা

No comments:

Post a Comment

ধন্যবাদ

বৈশিষ্ট্যযুক্ত পোস্ট

যজুর্বেদ অধ্যায় ১২

  ॥ ও৩ম্ ॥ অথ দ্বাদশাऽধ্যায়ারম্ভঃ ও৩ম্ বিশ্বা॑নি দেব সবিতর্দুরি॒তানি॒ পরা॑ সুব । য়দ্ভ॒দ্রং তন্ন॒ऽআ সু॑ব ॥ য়জুঃ৩০.৩ ॥ তত্রাদৌ বিদ্বদ্গুণানাহ ...

Post Top Ad

ধন্যবাদ