যজুর্বেদ শিবসঙ্কল্পমস্তু - ধর্ম্মতত্ত্ব

ধর্ম্মতত্ত্ব

ধর্ম বিষয়ে জ্ঞান, ধর্ম গ্রন্থ কি , হিন্দু মুসলমান সম্প্রদায়, ইসলাম খ্রীষ্ট মত বিষয়ে তত্ত্ব ও সনাতন ধর্ম নিয়ে আলোচনা

धर्म मानव मात्र का एक है, मानवों के धर्म अलग अलग नहीं होते-Theology

সাম্প্রতিক প্রবন্ধ

Post Top Ad

স্বাগতম

01 November, 2022

যজুর্বেদ শিবসঙ্কল্পমস্তু

য়জ্জাগ্রত ইত্যস্য শিবসঙ্কল্প ঋষিঃ । মনো দেবতা । বিরাট্ ত্রিষ্টুপ্ ছন্দঃ । ধৈবতঃ স্বরঃ ॥

য়জ্জাগ্র॑তো দূ॒রমু॒দৈতি॒ দৈবং॒ তদু॑ সু॒প্তস্য॒ তথৈ॒বৈতি॑ ।

দূ॒র॒ঙ্গ॒মং জ্যোতি॑ষাং॒ জ্যোতি॒রেকং॒ তন্মে॒ মনঃ॑ শি॒বসং॑কল্পমস্তু ॥ (য়জুঃ ৩৪|১)

পদার্থঃ- হে জগদীশ্বর বা রাজন্ ! আপনার কৃপা বলে (য়ৎ) যাহা (দেবম্) আত্মায় নিবাস কারী অথবা জীবাত্মার সাধন (দূরঙ্গমম্) দূরে গমনকারী, মনুষ্যকে দূরে লইয়া যাইবার গমনকারী বা বহু পদার্থ সমূহের গ্রহণকারী (জ্যোতিষাম্) শব্দাদি বিষয়সমূহের প্রকাশন শ্রোত্রাদি ইন্দ্রিয় সমূহকে (জ্যোতিঃ) প্রবৃত্তকারী (একম্) এক (জাগ্রতঃ) জাগ্রত অবস্থায় (দূরম্) দূরে দূরে (উৎ, ঐতি) পলায়ন করে (উ) এবং (তৎ) যাহা (সুপ্তস্য) সুপ্তের (তথা, এব) সেই প্রকার (এতি) ভিতর অন্তঃকরণে যায় (তৎ) উহা (মে) আমার (মনঃ) সংকল্প-বিকল্পাত্মক মন (শিবসংকল্পম্) কল্যাণকারী ধর্ম বিষয়ক ইচ্ছা সম্পন্ন (অস্তু) হউক ॥ ১ ॥
ভাবার্থঃ- যে মনুষ্য পরমেশ্বরের আজ্ঞার সেবন এবং বিদ্বান্দিগের সঙ্গ করিয়া বহুবিধ সামর্থ্যযুক্ত মনকে শুদ্ধ করে, যে জাগৃতাবস্থায় বিস্তৃত ব্যবহারকারী, সেই মন সুষুপ্তি অবস্থায় শান্ত হয় । যে বেগযুক্ত পদার্থগুলিতে অতিবেগবান্ জ্ঞানের সাধন হওয়ায় ইন্দ্রিয়দের প্রবর্ত্তক মনকে বশ করে, তাহারা অশুভ ব্যবহার ত্যাগ করিয়া শুভ ব্যবহারে মনকে প্রবৃত্ত করিতে পারে ॥ ১ ॥

য়েন কর্মাণীত্যস্য শিবসঙ্কল্প ঋষিঃ । মনো দেবতা । ত্রিষ্টুপ্ ছন্দঃ । ধৈবতঃ স্বরঃ ॥


য়েন কর্মাণ্যপসো মনীষিণো য়জ্ঞে কৃণ্বন্তি বিদথেষু ধীরাঃ। 

য়দপূর্বম্ য়ক্ষমন্তঃ প্রজানাম্ তন্মে মনঃ শিবসঙ্কল্পমস্তু।। (য়জুঃ ৩৪|২)

পদার্থঃ- হে পরমেশ্বর বা বিদ্বান্ ! যখন আপনার সঙ্গ দ্বারা (য়েন) যে (অপসঃ) সদা কর্ম্ম ধর্মনিষ্ঠ (মনীষিণঃ) মনের দমনকারী (ধীরাঃ) ধ্যানকারী বুদ্ধিমান লোকেরা (য়জ্ঞে) অগ্নিহোত্রাদি বা ধর্মসংযুক্ত ব্যবহার বা যোগযজ্ঞে এবং (বিদথেষু) বিজ্ঞান-সম্পর্কীয় এবং যুদ্ধাদি ব্যবহারে (কর্মাণি) অত্যন্ত ইষ্ট কর্ম্মকে (কৃণ্বন্তি) করে, (য়ৎ) যাহা (অপূর্বম্) সর্বোত্তম গুণ, কর্ম, স্বভাবযুক্ত (প্রজানাম্) প্রাণিমাত্রের (অন্তঃ) হৃদয়ে (য়ক্ষম্) পূজনীয় বা সঙ্গত একীভূত হইতেছে (তৎ) সেই (মে) আমার (মনঃ) মনন-বিচার-করণ রূপ মন (শিবসঙ্কল্পম্) ধর্মাচারী (অস্তু) হউক ॥ ২ ॥

ভাবার্থঃ- মনুষ্যদিগের উচিত যে, পরমেশ্বরের উপাসনা সুন্দর বিচার, বিদ্যা ও সৎসঙ্গ দ্বারা স্বীয় অন্তঃকরণকে অধর্মাচরণ হইতে নিবৃত্ত করিয়া ধর্মের আচরণে প্রবৃত্ত করুক ॥ ২ ॥

য়ৎ প্রজ্ঞানমিত্যস্য শিবসঙ্কল্প ঋষিঃ । মনো দেবতা । স্বরাট্ ত্রিষ্টুপ্ছন্দ । ধৈবতঃ স্বরঃ ।

য়ৎপ্র॒জ্ঞান॑মু॒ত চেতো॒ ধৃতি॑শ্চ॒ য়জ্জ্যোতি॑র॒ন্তর॒মৃতং॑ প্র॒জাসু॑ ।

য়স্মা॒ন্নऽঋ॒তে কিং চ॒ন কর্ম॑ ক্রি॒য়তে॒ তন্মে॒ মনঃ॑ শি॒বসং॑কল্পমস্তু ॥    (য়জুঃ ৩৪|৩)

পদার্থঃ- হে জগদীশ্বর বা পরমযোগিন্ বিদ্বান্ ! আপনার জ্ঞাপন দ্বারা (য়ৎ) যাহা (প্রজ্ঞানম্) বিশেষ করিয়া জ্ঞানের উৎপাদক বুদ্ধিরূপ (উত) আরও (চেতঃ) স্মৃতির সাধন (ধৃতিঃ) ধৈর্য্যস্বরূপ (য়ৎ, চ) এবং যাহা লজ্জাদি কর্ম্মের হেতু (প্রজাসু) মনুষ্যদিগের (অন্তঃ) অন্তঃকরণে আত্মার সঙ্গী হওয়ায় (অমৃতম্) নাশরহিত (জ্যোতিঃ) প্রকাশরূপ (য়স্মাৎ) যদ্দ্বারা (ঋতে) বিনা (কিম্, চন্) কোনও (কর্ম) কর্ম্ম (ন, ক্রিয়তে) করা হয় না (তৎ) সেই (মে) আমা জীবাত্মার (মনঃ) সকল কর্ম্মের সাধনরূপ মন (শিবসংকল্পম্) কল্যাণকারী পরমাত্মায় ইচ্ছাসম্পন্নকারী (অস্তু) হউক ॥ ৩ ॥

ভাবার্থঃ- হে মনুষ্যগণ ! যাহা অন্তঃকরণ, বুদ্ধি, চিত্ত ও অহংকাররূপ বৃত্তিসম্পন্ন হওয়ায় চারি প্রকারে আন্তরিক প্রকাশক, প্রাণিদের সকল কর্ম্মের সাধক অবিনাশী মন আছে, তাহাকে ন্যায় ও সত্য আচরণে প্রবৃত্ত করিয়া পক্ষপাতিত্ব, অন্যায় ও অধর্মাচরণ হইতে তোমরা নিবৃত্ত কর ॥ ৩ ॥

য়েনেদমিত্যস্য শিবসঙ্কল্প ঋষিঃ । মনো দেবতা । ত্রিষ্টুপ্ ছন্দঃ । ধৈবতঃ স্বরঃ ॥

য়েনেদম্ ভূতম্ ভুবনম্ ভবিষ্যত্পরিগৃহীতমমৃতেন সর্বম্।

য়েন য়জ্ঞস্তায়তে সপ্তহোতা তন্মে মনঃ শিবসঙ্কল্পমস্তু।। (য়জুঃ ৩৪|৪)

পদার্থঃ- হে মনুষ্যগণ ! (য়েন) যে (অমৃতেন) নাশরহিত পরমাত্মা সহ যুক্ত মন দ্বারা (ভূতম্) অতীত (ভুবনম্) বর্তমান কাল সম্পর্কীয় এবং (ভবিষ্যৎ) ভবিষ্যৎ (সর্বম্, ইদম্) ইহা সব ত্রিকালস্থ বস্তুমাত্র (পরিগৃহীতম্) সকল দিক দিয়া গৃহীত অর্থাৎ জানা যায় (য়েন) যদ্দ্বারা (সপ্তহোতা) সাত মনুষ্য হয় অর্থাৎ পঞ্চ প্রাণ, ষষ্ঠ জীবাত্মা এবং অব্যক্ত সপ্তম এই সাত গ্রহীতা-দাতা যন্মধ্যে হয় সেই (য়জ্ঞঃ) অগ্নিষ্টোমাদি বা বিজ্ঞানরূপ ব্যবহার (তায়তে) বিস্তৃত করা হয় (তৎ) সেই (মে) আমার (মনঃ) যোগচিত্ত (শিবসংকল্পম্) মোক্ষরূপ সঙ্কল্পযুক্ত (অস্তু) হউক ॥ ৪ ॥

ভাবার্থঃ- হে মনুষ্যগণ ! যে চিত্ত যোগাভ্যাসের সাধন এবং উপসাধন দ্বারা সিদ্ধ ভূত, ভবিষ্যৎ, বর্ত্তমান ত্রিকালের জ্ঞাতা, সকল সৃষ্টির জ্ঞাতা, কর্ম্ম, উপাসনা ও জ্ঞানের সাধক তাহাকে সর্বদাই কল্যাণে প্রিয় কর ॥ ৪ ॥


য়স্মি॒ন্নৃচঃ॒ সাম॒ য়জূ॑ᳬষি॒ য়স্মি॒ন্ প্রতি॑ষ্ঠিতা রথনা॒ভাবি॑বা॒রাঃ ।

য়স্মিঁ॑শ্চি॒ত্তꣳ সর্ব॒মোতং॑ প্র॒জানাং॒ তন্মে॒ মনঃ॑ শি॒বসং॑কল্পমস্তু ॥  (য়জুঃ ৩৪|৫)


পদার্থঃ- (য়স্মিন্) যে মনে (রথনাভাবিব, অরাঃ) যেমন রথের চাকার মধ্যেকার কাষ্ঠে অরা লাগানো থাকে তদ্রূপ (ঋচঃ) ঋগ্বেদ (সাম) সামবেদ (য়জুংষি) যজুর্বেদ (প্রতিষ্ঠিতা) সকল দিক্ দিয়া স্থিত এবং (য়স্মিন্) যাহাতে অথর্ববেদ স্থিত (য়স্মিন্) যন্মধ্যে (প্রজানাম্) প্রাণিদিগের (সর্বম্) সমগ্র (চিত্তম্) সর্বপদার্থ সম্পর্কীয় জ্ঞান (ওতম্) সূত্রে মণিগুলির সমান সংযুক্ত (তৎ) সেই (মে) আমার (মনঃ) মন (শিবসঙ্কল্পম্) কল্যাণকারী বেদাদি সত্যশাস্ত্রের প্রচাররূপ সঙ্কল্পযুক্ত (অস্তু) হউক ॥ ৫ ॥

ভাবার্থঃ- এই মন্ত্রে উপমা ও বাচকলুপ্তোপমালঙ্কার আছে । হে মনুষ্যগণ ! তোমাদের উচিত, যে মনের সুস্থ থাকলেই বেদাদি বিদ্যাগুলির আধার এবং যাহাতে সকল ব্যবহারের জ্ঞান একত্র হয়, সেই অন্তঃকরণকে বিদ্যা ও ধর্মের আচরণ দ্বারা পবিত্র কর ॥ ৫ ॥

সু॒ষা॒র॒থিরশ্বা॑নিব॒ য়ন্ম॑নু॒ষ্যা᳖ন্নে॑নী॒য়তে॒ऽভীশু॑ভির্বা॒জিন॑ऽইব ।

হৃ॒ৎপ্রতি॑ষ্ঠং॒ য়দ॑জি॒রং জবি॑ষ্ঠং॒ তন্মে॒ মনঃ॑ শি॒বসং॑কল্পমস্তু ॥ (য়জুঃ ৩৪|৬)

পদার্থঃ- (য়ৎ) যে মন (সুষারথিঃ) যেমন সুন্দর চতুর সারথি চালক (অশ্বানিব) লাগাম দ্বারা অশ্বদিগকে সব দিকে চালনা করে সেইরূপ (মনুষ্যান্) মনুষ্যাদি প্রাণিসকলকে (নেনীয়তে) শীঘ্র ইতস্তুতঃ ভ্রমণ করায় এবং (অভীশুভিঃ) যেমন রজ্জু দ্বারা (বাজিন ইব) বেগবান্ অশ্বদিগকে সারথি বশ করে, সেই মত নিয়মে রাখে (য়ৎ) যাহা (হৃৎপ্রতিষ্ঠম্) হৃদয়ে স্থিত (অ জিরম্) বিষয়াদিতে প্রেরক বা বৃদ্ধাদি অবস্থারহিত এবং (জবিষ্ঠম্) অত্যন্ত বেগবান্ (তৎ) সেই (মে) আমার (মনঃ) মন (শিবসংকল্পম্) মঙ্গলময় নিয়মে ইষ্ট (অস্তু) হউক ॥ ৬ ॥

ভাবার্থঃ- এই মন্ত্রে দুইটি উপমালঙ্কার আছে, যে মনুষ্য যে পদার্থে আসক্ত সেই বল দ্বারা সারথি অশ্বসকলকে যেমন, সেইরূপ প্রাণিদেরকে লইয়া যায়, যেমন লাগাম দ্বারা সারথি অশ্বকে যেমন, সেইরকম বশে রাখে, সকল মূর্খগণ যাহার অনুকূল আচরণ করে এবং বিদ্বান্ স্বীয় বশে রাখে, যাহা শুদ্ধ হইয়া সুখকারী এবং অশুদ্ধ হইয়া দুঃখদায়ী, যাহা জিতিয়া সিদ্ধিকে এবং না জিতিয়া অসিদ্ধি প্রদান করে, সেই মন মনুষ্যদিগকে স্বীয় বশে রাখা উচিত ॥ ৬ ॥



No comments:

Post a Comment

ধন্যবাদ

বৈশিষ্ট্যযুক্ত পোস্ট

যজুর্বেদ অধ্যায় ১২

  ॥ ও৩ম্ ॥ অথ দ্বাদশাऽধ্যায়ারম্ভঃ ও৩ম্ বিশ্বা॑নি দেব সবিতর্দুরি॒তানি॒ পরা॑ সুব । য়দ্ভ॒দ্রং তন্ন॒ऽআ সু॑ব ॥ য়জুঃ৩০.৩ ॥ তত্রাদৌ বিদ্বদ্গুণানাহ ...

Post Top Ad

ধন্যবাদ