সৃষ্টি উৎপত্তি ক্রম ও বৈদিক উপনিষদ - ধর্ম্মতত্ত্ব

ধর্ম্মতত্ত্ব

ধর্ম বিষয়ে জ্ঞান, ধর্ম গ্রন্থ কি , হিন্দু মুসলমান সম্প্রদায়, ইসলাম খ্রীষ্ট মত বিষয়ে তত্ত্ব ও সনাতন ধর্ম নিয়ে আলোচনা

धर्म मानव मात्र का एक है, मानवों के धर्म अलग अलग नहीं होते-Theology

সাম্প্রতিক প্রবন্ধ

Post Top Ad

স্বাগতম

08 November, 2022

সৃষ্টি উৎপত্তি ক্রম ও বৈদিক উপনিষদ

ऋषि: - प्रजापतिः परमेष्ठीदेवता - भाववृत्तम्छन्दः - निचृत्त्रिष्टुप्स्वरः - धैवतः

নাসদাসীন্নো সদাসীত্তদানীম্ নাসীদ্রজো নো ব্যোমা পরো য়ত্।

কিমাবরীবঃ কুহ কস্য শর্মন্নম্ভঃ কিমাসীদ্গহনম্ গভীরম্।।

नास॑दासी॒न्नो सदा॑सीत्त॒दानीं॒ नासी॒द्रजो॒ नो व्यो॑मा प॒रो यत् । किमाव॑रीव॒: कुह॒ कस्य॒ शर्म॒न्नम्भ॒: किमा॑सी॒द्गह॑नं गभी॒रम् ॥
पदार्थः -
(तदानीम्) सृष्टितः पूर्वं तदानीं प्रलयावस्थायां (असत्-न-आसीत्) शून्यं नितान्ताभावो नासीत् (सत्-नो-आसीत्) सत् प्रकटरूपमपि वर्त्तमानं किञ्चन नासीत् (रजः-न-आसीत्) रञ्जनात्मकं कणमयं गगनमन्तरिक्षमपि नासीत् “भूरञ्जिम्यां कित्” [उणा० ४।२१७] [रजः सूक्ष्मधूलिः-दयानन्दः] “रजसोऽन्तरिक्षलोकस्य” [निरु० १२।७] (परः-व्योम न-उ-यत्) विश्वस्य परवर्ती विशिष्टरक्षक आवर्तः खगोलाकाशोऽपि नैवासीत् (किम् आ अवरीवः) पुनरावरणीयाभावाद् भृशमावरकमपि किं स्यात् ? नासीदित्यर्थः (कुह कस्य शर्मन्) कुत्र-न कुत्रापि तथा प्रदेश आसीत् कस्य सुखनिमित्तं स्यात् “शर्म सुखनाम” [निघं० ३।६] (गहनं गभीरम्-अम्भः किम्-आसीत्) गहनं गम्भीरं सूक्ष्मं जलमपि किं स्यादर्थान्नासीत्, यतो भोग्यं वस्तूत्पद्येत् यस्मिन् सृष्टिबीजमीश्वरो-ऽवसृजेत् “अप एव सर्सजादौ तासु बीजमवासृजत्” [मनु० १।८] ॥

ऋषि: - प्रजापतिः परमेष्ठीदेवता - भाववृत्तम्छन्दः - निचृत्त्रिष्टुप्स्वरः - धैवतः
ন মৃত্যুরাসীদমৃতম্ ন তর্হি ন রাত্র্যা অহ্ন আসীত্প্রকেতঃ।
আনীদবাতম্ স্বধয়া তদেকম্ তস্মাদ্ধান্যন্ন পরঃ কিম্ চনাস।।

पदार्थ -

(न) नहीं। (मृत्युः) मरना अर्थात् संहार। (अमृत) जीवन। (प्रासीत्) था। (न) नहीं। (तर्हि) उस समय। (न) नहीं (था)। (रात्र्याः) रात्रि। (अह्नः) दिन (सूर्य-चन्द्र)। (आसीत्) था। (प्रकेत:) ज्ञान। (आनीत् ) प्राण। (अवातम्) गति का अभाव। (स्वथया) प्रकृति से। (तत्) वह। (एक) एक। (तस्मात् ) इससे। (ह) निश्चय से। (अन्यत्) दूसरा कोई। (न) नहीं। (परा) सूक्ष्म। (किंचन् ) कुछ भी। (च न) और नहीं। (प्रास) था।

সৃষ্টি উৎপত্তি ক্রম

व्याख्या -

पूर्वोक्त मन्त्र में पूछे गये प्रश्नों के उत्तर में इस मन्त्र में कहा है कि उस समय अर्थात् सृष्टि-रचना से पूर्व न तो कोई जीवन था और न ही मृत्यु (संहार) थी। उस समय दिन और रात भी नहीं थे। कारण यह कि सूर्य और चन्द्र ही नहीं थे। अर्थात् उस समय सृष्टि और विसृष्टि नहीं थी। उस समय यहाँ कुछ भी जानने योग्य नहीं था। प्राण तो था, परन्तु स्थिति अवातम् अर्थात् अविचलता की थी। अभिप्राय यह कि प्राण कार्य रूप में नहीं था। जब ऊर्जा कार्य रूप में होती है तब वह प्राण कहलाती है।

आगे कहा है कि प्राण रहित स्थान था। प्राण परमात्मा की शक्ति है जो कार्य करती है। इस पर भी शक्ति तो थी। वह ऐसे रूप में थी जो कार्य नहीं कर रही थी। आज भी हम शक्ति को दो रूपों में देखते हैं। शक्ति अर्थात् ऊर्जा का एक रूप गभित अर्थात् पोटेंशियल (potential energy) कहलाता है और दूसरा रूप क्रियाशील ऊर्जा (kinetic energy) कहलाती है। इसको समझने के लिए एक उदाहरण लें। बन्दूक की गोली में किसी को मार डालने की शक्ति तो तब भी होती है जब यह चलायी नहीं गयी होती। उस समय इसकी शक्ति को गभित कहते हैं और जब गोली दाग दी जाती है तब यह वेग से भागती हुई जिसको लग जाती है, वह मारा जा सकता है। इस समय गोली में वह शक्ति या जाती है कि वह पेड़ों को चीरकर निकल जाती है। इसे क्रियाशील ऊर्जा कहते हैं।

मन्त्र में कहा है कि उस समय एक स्वधा गुणवाला पदार्थ था। स्वधा का अर्थ है अपने आप स्थित रहने का गुण और जो ऐसा रह सके वह स्वधा कहलाती है। यह मूल प्रकृति का दूसरा नाम है। वह अनादि तत्त्व है। उसके कई प्रकार भी नहीं थे। वह एक ही था।-গুরদত্ত বিদ্যার্থী

ऋषि: - प्रजापतिः परमेष्ठीदेवता - भाववृत्तम्छन्दः - निचृत्त्रिष्टुप्स्वरः - धैवतः

তম আসীত্তমসা গূळ्হমগ্রেऽপ্রকেতম্ সলিলম্ সর্বমা ইদম্।
তুচ্ছ্যেনাভ্বপিহিতম্ য়দাসীত্তপসস্তন্মহিনা জায়তৈকম্।। (ঋঃ ১০|১২৯|১-৩)

तम॑ आसी॒त्तम॑सा गू॒ळ्हमग्रे॑ऽप्रके॒तं स॑लि॒लं सर्व॑मा इ॒दम् । तु॒च्छ्येना॒भ्वपि॑हितं॒ यदासी॒त्तप॑स॒स्तन्म॑हि॒नाजा॑य॒तैक॑म् ॥

पदार्थ -
(अग्रे) सृष्टि से पूर्व (तमसा) अन्धकार से (गूढम्) आवृत (तमः-आसीत्) अन्धकाररूप था (इदं सर्वम्) यह सब उस समय (सलिलम्-आः) फैले जल जैसा (अप्रकेतम्) अविज्ञेय-न जानने योग्य था (तुच्छ्येन) तुच्छभाव से (यत्-अपिहितम्) आवृत ढका हुआ (आभु) आभु नाम से अव्यक्त उपादान कारण (आसीत्) था, जिससे यह सृष्टि आभूत-आविर्भूत हुई (तपसः) परमात्मा के ज्ञानमय तप से (तत्-महिना) महत्तत्त्व एकरूप एक उत्पन्न हुआ ॥३॥ -ब्रह्ममुनि जी

भावार्थ - सृष्टि से पूर्व अन्धकार से आच्छादित अन्धकारमय था, जलसमान अवयवरहित न जानने योग्य “आभु” नाम से परमात्मा के सम्मुख तुच्छरूप में एकदेशी अव्यक्त प्रकृतिरूप उपादान कारण था, जिससे सृष्टि आविर्भूत होती है, उसके ज्ञानमय तप से प्रथम महत्तत्त्व उत्पन्न हुआ ॥३॥


অর্থাৎ - এটি সৃষ্টির পূর্বে না তো সত্ অর্থাৎ নির্মিত দশাতে ছিল, না অসত্ অর্থাৎ অভাব অথবা শূন্য দশাতে ছিল, না রজ অর্থাৎ নির্মাণের আরম্ভিক দশাতে ছিল আর না সেই সময় এই উপরের নীল আকাশ ছিল। সেই সময় না ছিল মৃত্যু, না ছিল জন্ম আর না ছিল রাত্রি, না ছিল দিন। সেই সময় তম অর্থাৎ আরম্ভের পূর্বকাল কেবল অন্ধকার ছিল আর এক অসক্রিয় স্বধা (মেটার, মাদ্দা, মায়া, প্রকৃতি) কুহরের নেয় সর্বত্র ছড়িয়ে ছিল।
এই মন্ত্রগুলোতে এই সৃষ্টির পূর্বরূপের বর্ণনা করার পরে বেদ বলেছে যে, এই সৃষ্টি তিনটি অনাদি স্বয়ম্ভূ পদার্থের মিলন দ্বারা নির্মিত হয়। ঋগ্বেদে লেখা রয়েছে যে -
দ্বা সুপর্ণা সয়ুজা সখায়া সমানম্ বৃক্ষম্ পরি ষস্বজাতে।
তয়োরন্যঃ পিপ্পলম্ স্বাদ্বত্যনশ্নন্নন্যো অভি চাকশীতি।। (ঋঃ ১|১৬৪|২০)
অর্থাৎ - দুটি পক্ষী একত্রিত হয়ে মিত্রভাবে তাদেরই সমান একটি বৃক্ষে বসে রয়েছে। এদের মধ্যে একটি মিত্র সেই বৃক্ষের ফলকে খায় আর সুখ-দুঃখ ভোগ করে আর অন্য মিত্রটি ফল না খেয়ে কেবল দেখতে থাকে।
এই মন্ত্রটিতে পরমেশ্বর, জীব আর প্রকৃতির বর্ণনা রয়েছে। এই তিনটি পদার্থই হল সংসারের কারণ। এদের দ্বারাই সংসারের উৎপত্তি-বিনাশ হতে থাকে। এই তিনটির মধ্যে পরমেশ্বরের বিষয়ে বেদ উপদেশ করেছে-
পরীত্য ভূতানি পরীত্য লোকান্ পরীত্য সর্বাঃ প্রদিশো দিশশ্চ।
উপস্থায় প্রথমজামৃতস্যাত্মনাত্মানমভি সম্বিবেশ।। (য়জুঃ ৩২|১১)

অর্থাৎ - পরমেশ্বর সর্বভূতে, ভুবনে আর সর্বদিশা - বিদিশাতে সবদিক থেকে ব্যাপ্ত করে সত্য আর অনাদি স্বয়ম্ভূ আত্মার মধ্যেও সঠিক ভাবে প্রবেশ করে আছে।
এই মন্ত্রটিতে পরমেশ্বরকে সর্বত্র ব্যাপকত্ব বলা হয়েছে। এই ব্যাপক পরমেশ্বরের অতিরিক্ত অন্য ব্যাপ্য চেতন জীবের বর্ণনা এইভাবে রয়েছে -
সত্যেনোর্ধ্বস্তপতি ব্রহ্মণাऽর্বাঙ্ বি পশ্যতি।
প্রাণেন তির্য়ঙ্ প্রাণতি য়স্মিঞ্জ্যেষ্ঠমধি শ্রিতম্।।

য়ো বৈ তে বিদ্যাদরণী য়াভ্যাম্ নির্মথ্যতে বসু।
স বিদ্বাঞ্জ্যেষ্ঠম্ মন্যতে স বিদ্যাদ্ ব্রাহ্মণম্ মহত্।। (অথর্বঃ ১০|৮|১৯-২০)

সনাতনমেনমাহুরুতাদ্য স্যাত্ পুনর্ণবঃ।
অহোরাত্রে প্র জায়েতে অন্যো অন্যস্য রূপয়োঃ।।

শতম্ সহস্রময়ুতম্ ন্যর্বুদমসম্খ্যেয়ম্ স্বমস্মিন্ নিবিষ্টম্।
তদস্য ঘ্নন্ত্যভিপশ্যত এব তস্মাদ্ দেবো রোচত এষ এতত্।।

বালাদেকমণীয়স্কমুতৈকম্ নেব দৃশ্যতে।
ততঃ পরিষ্বজয়িসী দেবতা সা মম প্রিয়া।।

ইয়ম্ কল্যাণয়জরা মর্ত্যস্যামৃতা গৃহে।
য়স্মৈ কৃতা শয়ে স য়শ্চকার জজার সঃ।।

ত্বম্ স্ত্রী ত্বম্ পুমানসি ত্বম্ কুমার উত বা কুমারী।
ত্বম্ জীর্ণো দণ্ডেন বঞ্চসি ত্বম্ জাতো ভবসি বিশ্বতোমুখঃ।। (অথর্বঃ ১০|৮|২৩-২৭)

অর্থাৎ - এই জীব যার ভিতর জ্যেষ্ঠ ব্রহ্ম রয়েছে, সে সত্য দ্বারা উঁচু হয়ে প্রতাপী হয় আর অসত্য দ্বারা নিচু হয়ে প্রাণের সঙ্গে তির্য়ক্ য়োনির মধ্যে জীবন ধারণ করে। যে এই দুই (জ্যেষ্ঠ ব্রহ্ম আর প্রাণ ধারণকারী জীবকে) যজ্ঞের অরণিয়ের মতো জেনে নেয়, সে জ্যেষ্ঠ ব্রহ্মকেও জেনে নেয়, আর অন্য সনাতন জীবটিকেও জেনে নেয়। এই সনাতন জীবটি দিন-রাতের মতো ভিন্ন-ভিন্ন রূপকে ধারণ করে আর নিত্য নতুন থাকে। এই সনাতন জীব শত, সহস্র, দশ সহস্র, দশ কোটি আর অসংখ্য সংখ্যাতে সেই ব্যাপক পরমাত্মার মধ্যেও ভরে পরে রয়েছে। যখন এটি সেই সর্বজ্ঞ পরমাত্মাকে প্রাপ্ত করে তখনই পরম সুখ প্রাপ্ত করে। এই দুই ব্যাপ্য-ব্যাপক ঈশ্বর আর জীবের মধ্যে একটি তো কেশের অনী থেকেও ছোটো আর অন্যটি তো একদমই অদৃশ্য। এই জীবটি হল সেই অদৃশ্য প্রিয় দেবতার মধ্যে ব্যাপ্য। এটি সেই কল্যাণকারিণী অজরা আর অমৃতা প্রকৃতি মাতার গর্ভরূপী গৃহে ঘুমায়। হে জীব! তুমি কখনও স্ত্রী, কখনও পুরুষ, কখনও কুমার তো কখনও কুমারী হও আর কখনও বৃদ্ধ হয়ে হাতে লাঠি নিয়ে চলো, এইজন্য তুমি জন্মধারণকারী সর্বতোমুখ।
বেদ এই মন্ত্রগুলোর মধ্যে জীবকে সনাতন অসংখ্য, ব্যাপ্য, জন্মধারণকারী আর পরমেশ্বরের প্রাপ্তি দ্বারা মোক্ষ প্রাপ্তকারী বলেছে। এরপর এই সৃষ্টির তৃতীয় কারণ প্রকৃতির বর্ণনা হল এই রকম -
অদিতির্দ্যৌদিতিরন্তরিক্ষমদিতির্মাতা স পিতা স পুত্রঃ।
বিশ্বেদেবা অদিতিঃ পঞ্চ জনা অদিতির্জাতমদিতির্জনিত্বম্।। (য়জুঃ ২৫|২৩)

অর্থাৎ - অদিতিই হল দ্যৌ, অদিতিই হল মহাকাশ, অদিতিই হল মাতা, অদিতিই হল পিতা, অদিতিই হল পুত্র, অদিতিই হল বিশ্বের দেবতা, অদিতিই হল ব্রাহ্মণ, ক্ষত্রী, বৈশ্য, শূদ্র আর অনার্য আর অদিতিই হল জন্মদাতা তথা সে-ই জন্ম ধারণকারী অর্থাৎ এই সম্পূর্ণ জগৎ হল অদিতিরই প্রপঞ্চ।
এই মন্ত্রটিতে অদিতি -- মায়ার বিশাল রূপ দেখানো হয়েছে। আসলে সংসারের সমস্ত নামরূপাত্মক পদার্থই হল প্রকৃতি। এটাই সৃষ্টি আর ধ্বংস হয় আর এরদ্বারাই সংসারের প্রাদুর্ভাব আর তিরোভাব হয়। বলার তাৎপর্য হল যে, পরমাত্মা জীবদের কর্মানুসার তাদের এই অদিতি নামক প্রকৃতির শরীররূপী ঘেরার মধ্যে আবদ্ধ করে আর সেই প্রকৃতির এই ব্রহ্মাণ্ডরূপী বড়ো ঘেরাতে ছেড়ে দেয়। এরই নাম হল সৃষ্টির উৎপত্তি, কিন্তু পরমাত্মা এই সৃষ্টিকে কিভাবে উৎপন্ন করে, সেই বিষয়ের বর্ণনা বেদের মধ্যে এইভাবে রয়েছে -
ঋতম্ চ সত্যম্ চাভীদ্ধাত্তপসোऽধ্যজায়ত্।
ততো রাত্র্যজায়ত ততঃ সমুদ্রো অর্ণবঃ।।

সমুদ্রাদর্ণবাদধি সম্বত্সরো অজায়ত।
অহোরাত্রাণি বিদধদ্বিশ্বস্য মিষতো বশী।।
(ঋঃ ১০|১৯০|১-২)

ততো বিরাডজায়ত বিরাজো অধি পূরুষঃ।
স জাতো অত্যরিচ্যত পশ্চাদ্ভূমিমথো পুরঃ।।
(য়জুঃ ৩১|৫)

সূর্য়াচন্দ্রমসৌ ধাতা য়থাপূর্বমকল্পয়ত্।
দিবম্ চ পৃথিবীম্ চান্তারিক্ষমথো স্বঃ।।
(ঋঃ ১০|১৯০|৩)

তস্মাদ্যজ্ঞাত্সর্বহুতঃ সম্ভৃতম্ পৃষদাজ্যম্।
পশূঁস্তাঁশ্চক্রে বায়ব্যানারণ্যা গ্রাম্যাশ্চ য়ে।।
(য়জুঃ ৩১|৬)

তম্ য়জ্ঞম্ বর্হিষি প্রৌক্ষন্পুরুষম্ জাতমগ্রতঃ।
তেন দেবা অয়জন্ত সাধ্যা ঋষয়শ্চ য়ে।।
(য়জুঃ ৩১|৯)

ব্রাহ্মণোऽস্য মুখমাসীদ্ বাহূ রাজন্যঃ কৃতঃ।
ঊরূ তদস্য উদ্বৈশ্যঃ পদ্ভ্যাꣳ শূদ্রো অজায়ত।।
(য়জুঃ ৩১|১১)

তস্মাদ্যজ্ঞাত্ সর্বহুত ঋচঃ সামানি জঞ্জিরে।
ছন্দাꣳ সি জঞ্জিরে তস্মাদ্যজুস্তস্মাদজায়ত।।
(য়জুঃ ৩১|৭)
অর্থাৎ - ঋত আর সত্যকে (নীতি আর ধর্ম) বিচারপূর্বক পরমাত্মা তপ (ইক্ষণ) করেছে। সেই ইক্ষণ হতে কম্পন উৎপন্ন হয় আর প্রকৃতিরূপী অন্ধকার হয় তথা তা থেকে আকাশ নির্মিত হয়। সেই আকাশ হতে বায়ু আর মেঘরূপ উপরের সমুদ্র আর সম্বত্সররূপী সূর্য হয় আর সেই সূর্য হতে পৃথিবীর সমুদ্র হয় আর দিন-রাত হয়। এরপর বিরাট্ হয় আর বিরাটের পরে পৃথিবী উৎপন্ন হয়। পরমাত্মা এই সূর্য, চন্দ্র, মহাকাশ, দিন আর পৃথিবী আদিকে সেইভাবে রচনা করেছে যেভাবে সে এই সৃষ্টির পূর্বে অন্য ভূতসৃষ্টিগুলো রচনা করেছিল। পৃথিবী উৎপন্ন হওয়ার পর তার উপর বনস্পতি উৎপন্ন হয়। বনস্পতির পর পশু-পক্ষী উৎপন্ন হয় আর পশু-পক্ষীর পর দেব, ঋষি, সাধ্য, ব্রাহ্মণ, ক্ষত্রিয়, বৈশ্য আর শূদ্র উৎপন্ন হয় তথা সেই শ্রেষ্ঠ মানবদের হৃদয়ে ঋগ্বেদ, য়জুর্বেদ, সামবেদ আর অথর্ববেদের উপদেশ হয়।
উপরিউক্ত মন্ত্রগুলোর মধ্যে সৃষ্টি উৎপত্তির ক্রমের অনেক সুন্দর বর্ণনা রয়েছে। এই মন্ত্রে বলে দেওয়া হয়েছে যে, পরমাত্মা তার ইক্ষণ শক্তি দিয়ে প্রকৃতির মধ্যে প্রেরণা করে। প্রেরণা হতে গতি উৎপন্ন হয় আর গতি থেকে আকর্ষণ উৎপন্ন হয়। আকর্ষণ দ্বারা প্রকৃতি - পরমাণু নিজেদের মধ্যে মিশ্রিত হয় তাতে রাতের সমান এক গম্ভীর স্থিতি উৎপন্ন হয়। সেই স্থিতি যখন চক্রাকার গতিতে ঘোরে তখন আরও সঘন উৎপন্ন হয় আর তার চতুর্দিকে আকাশ উৎপন্ন হয়ে যায়। সেই রিক্ত স্থান -- আকাশে বায়ুর সমুদ্র ভরে যায় আর বায়ু সমুদ্র দ্বারাই সূর্য উৎপন্ন হয়, যা থেকে মেঘ, বর্ষা, নক্ষত্র, পৃথিবী আর দিন-রাত উৎপন্ন হয়, অর্থাৎ এই সমস্ত সৃষ্টি উপরিউক্ত ক্রমের সঙ্গে পরমাত্মার প্রেরণার দ্বারাই উৎপন্ন হয় আর এটির উৎপন্ন হওয়ার প্রধান কারণই হল জীবদের কর্ম আর পরমাত্মার ন্যায়ব্যবস্থা। সেই ন্যায়কারী , দয়াময় আর কারণেরও কারণ পরমপিতা পরমাত্মার বর্ণনা বেদের মধ্যে এইভাবে রয়েছে -
ইন্দ্রম্ মিত্রম্ বরুণমগ্নিমাহুরথো দিব্যঃ স সুপর্ণো গরুত্মান্।
একম্ সদ্বিপ্রা বহুধা বদন্ত্যগ্নিম্ য়মম্ মাতরিশ্বানমাহুঃ।। (ঋঃ ১|১৬৪|৪৬)

তদেবাগ্নিস্তদাদিত্যস্তদ্বায়ুস্তদু চন্দ্রমাঃ।
তদেব শুক্রম্ তদ্ ব্রহ্ম তা আপঃ স প্রজাপতিঃ।।

সর্বে নিমেষা জজ্ঞিরে বিদ্যুতঃ পুরুষাদধি।
নৈনমূর্ধ্বম্ ন তির্য়্য়ঞ্চম্ ন মধ্যে পরি জগ্রভত্।।

ন তস্য প্রতিমা অস্তি য়স্য নাম মহদ্যশঃ।
হিরণ্যগর্ভ ইত্যেষ মা মা হিꣳ সীদিত্যেষা য়স্মান্ন জাত ইত্যেষঃ।।

এষো হ দেবঃ প্রদিশোऽনু সর্বাঃ পূর্বো হ জাতঃ স উ গর্ভে অন্তঃ।
স এব জাতঃ স জনিষ্যমাণঃ প্রত্যঙ্ জনাস্তিষ্ঠতি সর্বতো মুখঃ।।

য়স্মাজ্জাতম্ ন পুরা কিঞ্চনৈব য় আবভূব ভুবনানি বিশ্বা।
প্রজাপতিঃ প্রজয়া সꣳ ররাণস্ত্রীণি জ্যোতীꣳসি সচতে স ষোডশী।। (য়জুঃ ৩২|১-৫)

স নো বন্ধুর্জনিতা স বিধাতা ধামানি বেদ ভুবনানি বিশ্বা।
য়ত্র দেবা অমৃতমানশানাস্তৃতীয়ে ধামন্নধ্যৈরয়ন্ত।। (য়জুঃ ৩২|১০)

স পর্য়গাচ্ছুক্রমকায়মব্রণমস্নাবিরꣳ শুদ্ধমপাপবিদ্ধম্।
কবির্মনীষী পরিভূঃ স্বয়ম্ভূর্য়াথাতথ্যতোऽর্থান্ ব্যদধাচ্ছাশ্বতীভ্যঃ সমাভ্যঃ।। (য়জুঃ ৪০|৮)

অর্থাৎ - ইন্দ্র, মিত্র, বরুণ, অগ্নি, দিব্য, সুপর্ণ, গুরুত্মান্, অগ্নি, যম আর মাতরিশ্বা আদি নামগুলো হল সেই একই পরমাত্মার। তাকেই অগ্নি, আদিত্য, বায়ু, চন্দ্রমা, শুক্র, ব্রহ্ম, আপ আর প্রজাপতি আদি নামে ডাকা হয়। সকল নিমেষাদি কালবিভাগ সে-ই নির্মাণ করেছে। তাকে উপর-নিচে, তির্যকভাবে আর মাঝখান থেকে ধরা যাওয়া সম্ভব নয়। তার কোনো পরিমাপ নেই, কারণ য়শকারী হল তার নাম, এইজন্য অনেক বেদমন্ত্র তার স্তুতি করে। সেই দেবই সকল দিশা-বিদিশাতে ব্যাপ্ত হয়ে রয়েছে আর সে সকলের ভিতরে আগে থেকেই বসে রয়েছে। সে সবদিক থেকে প্রাণীদের মাঝে উপস্থিত রয়েছে আর সে-ই সর্বপ্রথম সংসারে প্রসিদ্ধ হয় আর সকলকে জন্ম দেয়। যার পূর্বে কোনো কিছুই উৎপন্ন হয়নি আর যে সব ভুবনে ভালোভাবে স্থির রয়েছে সেই ষোলো কলাকারী পূর্ণ প্রজাপতি সমস্ত প্রজার মধ্যে রমণ করার সঙ্গে তিন প্রকারের জ্যোতির (অগ্নি, বিদ্যুৎ আর সূর্য) নির্মাণ করে। সে হল শরীররহিত, ছিদ্ররহিত, নাড়ীরহিত, পাপরহিত। সে হল দুষ্টদের থেকে দূরে, শক্তিস্বরূপ, শুদ্ধ, কবি, মনীষী, স্বয়ংসিদ্ধ আর শাশ্বত প্রজার জন্য সবদিক থেকে
ব্যাপ্ত হয়ে যথাযোগ্য অর্থের উৎপন্ন করে। সে-ই আমাদের বন্ধু, পিতা, মাতা, বিধাতা আর সব ভুবনের জ্ঞাতা, এইজন্য আমি প্রার্থনা করছি যে সে আমাকে তৃতীয় ভুবনে যেখানে দেবতা মোক্ষ প্রাপ্ত করে, সেখানে যেন পৌঁছে দেয়।
এই মন্ত্রগুলোর মধ্যে পরমাত্মার স্বরূপ আর তার কর্মের বর্ণনা করে মোক্ষ সুখের অনুরোধ করা হয়েছে। বেদের মধ্যে এই ধরনের মন্ত্রের অনেক বড়ো সংগ্রহ রয়েছে। এই সবগুলোর মধ্যে তার স্বরূপের বর্ণনা আর নিজের কল্যাণের অনুরোধের বর্ণনা রয়েছে। জিজ্ঞাসুর হৃদয়ে মোক্ষের অভিলাষা উৎপন্ন হয়ে থাকে তা এই বর্ণনাগুলো থেকে সংসারের কারণের আর কারণেরও কারণ পরমাত্মার মহত্তার জ্ঞান হয়ে যায়। এটি হল বৈদিক উপনিষদের পূর্বার্দ্ধ।

No comments:

Post a Comment

ধন্যবাদ

বৈশিষ্ট্যযুক্ত পোস্ট

যজুর্বেদ অধ্যায় ১২

  ॥ ও৩ম্ ॥ অথ দ্বাদশাऽধ্যায়ারম্ভঃ ও৩ম্ বিশ্বা॑নি দেব সবিতর্দুরি॒তানি॒ পরা॑ সুব । য়দ্ভ॒দ্রং তন্ন॒ऽআ সু॑ব ॥ য়জুঃ৩০.৩ ॥ তত্রাদৌ বিদ্বদ্গুণানাহ ...

Post Top Ad

ধন্যবাদ