ইসলামেই শুধু স্ত্রীকে শস্যক্ষেত্র বলা হয় নি বরং সনাতন ধর্মেও স্ত্রীকে শস্যক্ষেত্র বলা হয়েছে - ধর্ম্মতত্ত্ব

ধর্ম্মতত্ত্ব

ধর্ম বিষয়ে জ্ঞান, ধর্ম গ্রন্থ কি , হিন্দু মুসলমান সম্প্রদায়, ইসলাম খ্রীষ্ট মত বিষয়ে তত্ত্ব ও সনাতন ধর্ম নিয়ে আলোচনা

धर्म मानव मात्र का एक है, मानवों के धर्म अलग अलग नहीं होते-Theology

সাম্প্রতিক প্রবন্ধ

Post Top Ad

স্বাগতম

20 November, 2022

ইসলামেই শুধু স্ত্রীকে শস্যক্ষেত্র বলা হয় নি বরং সনাতন ধর্মেও স্ত্রীকে শস্যক্ষেত্র বলা হয়েছে

 কোরআন (২ঃ ২২৩)-- " তোমাদের স্ত্রীরা হলো তোমাদের জন্য শস্যক্ষেত্র। তোমরা যেভাবে ইচ্ছা তাদেরকে ব্যবহার করো"।।

এই স্থলে কিন্তু স্পষ্ট যে স্ত্রীকে ব্যবহারের প্রসঙ্গে বলা হয়েছে।। আর কোরআনের এই আয়াতটি নবী মোহাম্মদ সঃ কখন কখন ব্যবহার করেছিলেন সে বিষয়ে তাফসিরে ইবনে কাসিরে বিস্তারপূর্বক বর্ণিত রয়েছে। তবে আমি এখন তাফসিরে ইবনে কাসিরে বর্ণিত সুনানে আবু-দাউদের একটি ঘটনা ব্যাখা করছিঃ--
🟪 ঘটনা-২
[ আরবের বিভিন্ন গোত্রের লোকেরা বিভিন্ন স্টাইলে সেক্স করতো তাদের স্ত্রীদের সঙ্গে ]
🔰 একজন ইহুদি তার স্ত্রীর সাথে যে ধরনে যৌনকর্ম করতো, তা তার বেদুঈন প্রতিবেশীর চেয়ে ভিন্নতর ছিল। মরুভূমিতে প্রচলিত পদ্ধতিগুলিও ছিল ভিন্ন ভিন্ন। আমরা আরও দেখতে পাই যে, যৌনতার ব্যাপারে মরুচারী বেদুঈনরা বেশ এগিয়ে ছিল। সঙ্গমের আসন, সঙ্গমের ধরন ইত্যাদি কেলিগুলিতে নতুন মাত্রা যোগ করেছিল তারা। আনসার এবং মোহজেরদের মধ্যেও এই পদ্ধতির বিস্তর পার্থক্য ছিল। ইহুদিরা সাধারণত শাস্ত্রীয় আসন অনুসরণ করে সঙ্গম করতো। পক্ষান্তরে মক্কা হতে আগত মোহাজেররা স্ত্রীদের সাথে বিভিন্ন আসনে সঙ্গম করতে অভ্যস্ত ছিল। এইসব আসনের মধ্যে তাদের সবচেয়ে প্রিয় ছিল স্ত্রীর পেছন দিক হতে সঙ্গম করা।।
আনসার কিংবা ইহুদি রমণীরা মক্কার এই সঙ্গম-পদ্ধতিতে অভ্যস্ত ছিল না। মোহাজেররা এই ধরনের সঙ্গম আনসার রমণীদের ওপর প্রয়োগ করতে শুরু করলে রমণীরা অসন্তুষ্টি ও বিরক্তি প্রকাশ করে। কারণ কোনো কোনো মোহাজের ষণ্ড এই সুযোগে মেয়েদের পায়ুপথে লিঙ্গ প্রবিষ্ট করতেও দ্বিধাবোধ করত না। এই মোহাজেররা যৌনদুর্ভিক্ষের শিকার। নবীর সাথে মদীনায় হিজরতের কারণে অধিকাংশ মোহাজেরই তাদের বউদের মক্কায় ফেলে এসেছিলো। সুতরাং মেয়ে দেখলেই ক্ষুধার্ত নেকড়ের মতো হয়ে যেতো তারা। কোনো মেয়ের সাথে ঘুমানোর সুযোগ পেলে এমন আচরণ করতো যে, অনেক ক্ষেত্রেই মেয়েটির কাছে তা বলাৎকার এবং গর্হিত বলে মনে হতো। মোহাজেরদের এই অনাকঙ্খিত আচরণের কথা আনসারি মেয়েরা রসূলের কানে তোলে। অবিলম্বে আল্লাহর তরফ থেকে বার্তা এসে গেলো এবং পায়ুপথে সঙ্গম নিষিদ্ধ বলে ঘোষিত হলো। কুকুর পদ্ধতিটি (পেছনের দিক হতে সঙ্গম) অবশ্য বহাল রইলো, যদিও আনসারি মেয়েরা এই পদ্ধতিটির ওপর খুব একটা সন্তুষ্ট ছিল না। এ প্রসঙ্গে গোটাকয়েক মজার হাদিসের বর্ণনা নিচে দেয়া হলো।
সুনান আবু দাউদ; বই ১১, হাদিস নম্বর ২১৫৯: আবদুল্লাহ্ ইবনে আব্বাস হতে বর্ণিত:
ইবনে উমর ভুল বুঝেছিল (“তোমাদের স্ত্রীরা হচ্ছে শষ্যক্ষেত্র, সুতরাং যেভাবে ইচ্ছা সেভাবে তা চাষ করো" – কোরআন এই আয়াতটির (আয়াত ২:২২৩) অর্থ ভূল বুঝেছিলেন ইবনে উমর), আল্লাহ্ তাকে ক্ষমা করুন। আসল ঘটনা এই যে আনসারদের এই গোত্রটি ছিল পৌত্তলিক। তারা ইহুদিদের পাশে বসবাস করতো যারা ছিল কেতাবধারী সম্প্রদায়। জ্ঞানের ক্ষেত্রে তারা (আনসাররা) ইহুদিদেরকে শ্রেষ্ঠতর বলে গণ্য করতো এবং তাদের রীতিনীতি অনুসরণ করতো। কেতাবধারী সম্প্রদায়রা (অর্থাৎ ইহুদিরা) স্ত্রী সঙ্গমকালে শুধুমাত্র একটি আসন ব্যবহার করতো (স্ত্রী চিৎ করে শায়িত অবস্থায়)। এই আসনটিতে মেয়েরা (অর্থাৎ তাদের যোনি) সবচেয়ে লুক্কায়িত অবস্থায় থাকে। আনসারদের এই গোত্রটি ইহুদিদের কাছ থেকে এই আসন শিখে নেয়। কিন্তু কোরেশরা পেছন দিক থেকে ও সামনে থেকে—উভয় দিক থেকেই আনন্দ পেতে চেষ্টা করত। মোহাজেরগণ যখন মদীনায় এলো, তাদের মধ্যে জনৈক ব্যক্তি একজন আনসার রমণীকে বিয়ে করে। সে যখন তার সাথে এইভাবে সঙ্গম করতে শুরু করলো (অর্থাৎ মক্কা পদ্ধতিতে), মেয়েটি তা পছন্দ করল না এবং তাকে বললো, একটিমাত্র আসনেই আমরা অভ্যস্ত, সেইভাবেই করো, নচেৎ আমার কাছ থেকে দূর হয়ে যাও। ঘটনাটি ব্যাপকভাবে প্রকাশ হয়ে পড়লো এবং রসুলের (সা) কানে পৌঁছালো। ➡️ সুতরাং মহান আল্লাহ্ কোরানের আয়াতটি (২:২২৩) অবতীর্ণ করলেন, “তোমাদের স্ত্রীরা হচ্ছে তোমাদের শষ্যক্ষেত্র, সুতরাং যেভাবে ইচ্ছা সেভাবে তা চাষ করো” অর্থাৎ সামনের দিক হতে, পেছনের দিক হাতে কিংবা চিৎ করে শায়িত অবস্থায়⬅️। তবে এই আয়াত (শুধুমাত্র) সন্তান প্রসবের ছিদ্রকে অর্থাৎ যোনিকে নির্দিষ্ট করে দিয়েছে। (সূত্র 😎
এখন আয়াত ২:২২৩ দেখা যাক।।
২:২২৩ তোমাদের স্ত্রীরা হলো তোমাদের জন্য শষ্যক্ষেত্র। তোমরা যে ভাবে ইচ্ছা তাদেরকে ব্যবহার কর। আর নিজেদের জন্য আগামী দিনের ব্যবস্থা কর এবং আল্লাহকে ভয় করতে থাক। আর নিশ্চিতভাবে জেনে রাখ যে, আল্লাহর সাথে তোমাদেরকে সাক্ষাত করতেই হবে, আর যারা ঈমান এনেছে তাদেরকে সুসংবাদ জানিয়ে দাও।।
🟪 ঘটনা-২
আয়াত ২:২২৩ এর প্রসঙ্গ সম্পর্কে অনেকে অনেক কিছু লিখেছেন, তবে একটি আকর্ষণপূর্ণ ঘটনার কথা উল্লেখ আছে সহি বুখারিতে। খলীফা উমরেরও অভ্যাস ছিল পেছন দিক থেকে লিঙ্গ প্রবিষ্ট করানো। একবার তিনি হয়তো এই করতে গিয়ে অন্য কিছু করে ফেলেছিলেন তাঁর স্ত্রীর পেছনে। আতঙ্কগ্রস্ত উমর নবীর কাছে ছুটে গেলেন এবং স্বীকার করলেন তাঁর কাজটি, আর নবীকে বললেন যে, এখন তাঁর (উমরের) জীবন বিপন্ন। ➡️ উমরকে আশ্বস্ত করে আল্লাহ্ পাঠিয়ে দিলেন আয়াত, “তোমাদের স্ত্রীরা হলো তোমাদের জন্য শষ্যক্ষেত্র। তোমরা যে ভাবে ইচ্ছা তাদেরকে ব্যবহার কর” (২:২২৩)। লক্ষ্য করা যায় যে এই আয়াতে স্ত্রীর পায়ুপথে সঙ্গম নিষেধের কোনো বাক্য নাই। পরে কোরআনের বিভিন্ন ভাষ্যকার বিভিন্নভাবে এই আয়াতের ভাষ্য করেছেন।।
🟪 আরো কিছু ঘটনা তাফসিরে ইবনে কাসিরে রয়েছে।। এখান থেকে আমরা স্পষ্ট ভাবে বুঝতে পারি যে, একজন স্বামী তার স্ত্রীর সাথে সহবাসের জন্য যেকোনো স্টাইল ব্যবহার করিতে পারেন তবে পায়ুপথে সঙ্গম নিষেধ।। আরো একটি তাফসীরে দেখুনঃ-
🔰 তাফসীর আবু-বকর জাকারিয়া 🔰
نِسَآؤُکُمۡ حَرۡثٌ لَّکُمۡ ۪ فَاۡتُوۡا حَرۡثَکُمۡ
اَنّٰی شِئۡتُمۡ ۫ وَ قَدِّمُوۡا لِاَنۡفُسِکُمۡ ؕ وَ اتَّقُوا اللّٰہَ وَ اعۡلَمُوۡۤا اَنَّکُمۡ مُّلٰقُوۡہُ ؕ وَ بَشِّرِ الۡمُؤۡمِنِیۡنَ ﴿۲۲۳﴾
তোমাদের স্ত্রীরা তোমাদের শস্যক্ষেত্র। অতএব তোমরা তোমাদের শস্যক্ষেত্রে যেভাবে ইচ্ছে [১] গমন করতে পার। আর তোমরা নিজেদের ভবিষ্যতের জন্য কিছু করো [২] এবং আল্লাহকে ভয় করো। এবং জেনে রেখো, তোমরা অবশ্যই আল্লাহর সম্মুখীন হবে। আর মুমিনদেরকে সুসংবাদ দিন। [১] ➡️ আল্লাহ এখানে স্ত্রীদের সাথে সংগমের কোন নিয়মনীতি বেঁধে দেননি। শুইয়ে, বসিয়ে, কাত করে সব রকমই জায়েয⬅️। তবে যৌনাঙ্গ ছাড়া অন্যান্য অঙ্গ যেমন, পায়ূপথ, মুখ ইত্যাদিতে সংগম করা জায়েয নেই। কেননা, তা বিকৃত মানসিকতার ফল। এ ব্যাপারে বিভিন্ন হাদীসে নিষেধ এসেছে। [২] এখানে ভবিষ্যতের জন্য কিছু কর' বলতে অনেকের মতেই সন্তান-সন্ততির জন্য প্রচেষ্টা চালানো বুঝানো হয়েছে।।
🔰 অর্থাৎ স্ত্রীকে সহবাসের জন্য যেভাবে ইচ্ছা ব্যবহার করা এটা বোঝানোর জন্যই ইসলামে স্ত্রীকে শস্যক্ষেত্র বলা হয়েছে।।
এবারে সনাতন ধর্মে স্ত্রীকে কেন শস্যক্ষেত্র বলা হয়েছে তা বোঝেন।।
🕉️ সনাতন ধর্ম
🕉️ মনুসংহিতা (৯/৩৩)
ক্ষেত্রভূতা স্মৃতা নারী বীজভূতঃ স্মমতঃ পুমান্। ক্ষেত্রবীজসমায়োগাৎসম্ভবঃ সর্বদেহিনাম্।। ৩৩।।
অনুবাদঃ স্ত্রীকে ভূমি অথবা ক্ষেত্রের তূল্য মানা হয়েছে আর পুরুষকে বীজের তূল্য মানা হয়েছে। ভূমি আর বীজ অর্থাৎ স্ত্রী আর পুরুষের সংযোগের মাধ্যমে সকল প্রাণীর উৎপত্তি হয়।।
[ ভাষ্যকারঃ ড. সুরেন্দ্র কুমার ]
ক্ষেত্র বলার কারণ নারীর গর্ভ থেকে সন্তান হয়। যেমন শস্যক্ষেত্রের থেকে শস্য হয়। আর পুরুষকে বীজ বলার কারণ শস্যক্ষেত্রে বীজ বোপণ করলে যেমন থেকে থেকে গাছ হয়ে শস্য দেয়, তেমন ই পুরুষের শুক্রাণু ডিম্বাণুর সাথে নিষেক হয় জরায়ুতে স্থাপিত হয়৷ তাই নারী দেহ সন্তান উৎপাদনের ক্ষেত্র স্বরূপ ও পুরুষ হলো বীজ৷।
আর এই ক্ষেত্র অর্থাৎ নারীর গর্ভ এবং পুরুষের বীজ যদি উত্তম হয় তবে পিতা-মাতা উত্তম সন্তানের জন্ম দিতে পারবেন পিতা-মাতা। আর এর জন্য নারীর এই গর্ভ ও পুরুষের বীর্য যেন 💠 উত্তম হয় সে ব্যাপারে সনাতন শাস্ত্রে কি বলা হয়েছেঃ--
🔥🔥 শাস্ত্রে গর্ভাদান🔥🔥
পরিহন্ত বি ধারয় যোনিং গর্ভায় ধাতবে। মর্যাদে পুত্রমা ধেহি তং ত্বমা গময়াগমে।। 🔥
পদার্থঃ- (পরিহন্ত) হে শক্তির আশ্রয়দাতা পুরুষ! (গর্ভায় ধাতবে) গর্ভের পুষ্টির জন্য (যোনিম্) স্ত্রী যোনিকে (বি ধারয়) বিশেষ রূপে রক্ষা কর, (মর্যাদে) হে মর্যাদাযুক্ত পত্নী! (পুত্রম্) গর্ভস্থ সন্তানকে (আ ধেহি) বিশ্বাস রূপে পুষ্ট কর (ত্বম্) তুমি (তম্) সেই সন্তানকে (আগমে) যোগ্য সময়ে (আ গময়) উৎপন্ন কর ।
অথর্ববেদ ৬/৮১/২🔥
বঙ্গানুবাদঃ- হে শক্তিধর পুরুষ! গর্ভের পুষ্টির জন্য স্ত্রী যোনিকে বিশেষরূপে রক্ষা কর। হে মর্যাদাময়ী পত্নী! গর্ভস্থ সন্তানকে বিশেষ ভাবে পুষ্ট কর। তুমি সেই সন্তানকে উপযুক্ত সময়ে প্রসব কর।
‘‘আহারশুদ্ধৌ সত্ত্বশুদ্ধিঃ সত্ত্বগুদ্ধৌ ধ্রুবা স্মৃতিঃ।।”
(ছান্দোঃ উপ০=অ০৭। খ ২৬।২।।) 🔥
=ইহা ছান্দোগ্যের বচন অর্থাৎ মদ্যমাংসাদি রহিত ঘৃত, দুগ্ধাদি এবং তণ্ডুল, গোধূম ইত্যাদি শুদ্ধাহার করিলে অন্তঃকরণের শুদ্ধি বুদ্ধি, বল, পুরুষকার ও আরোগ্য লাভ হয়। এইজন্য পূর্ণ যুবাবস্থায় বিবাহ করিবে। এইরূপ বিধি অনুসারে প্রেমপূর্বক গর্ভাধান করিলে সন্তান ও কুল উত্তরোত্তর উন্নতি লাভ করিবে।
শরীরের উন্নতি বা অবনতি সম্বন্ধে বৈদ্যক শাস্ত্রে যেরূপ বিধি,সেরূপ অন্য কোথাও নাই। কোন্ কোন্ বয়সে কোন্ কোন্ ধাতু কী কী প্রকারে কাঁচা বা পাকা হয়, বৃদ্ধি পায় বা ক্ষয় হয়-এসব বিষয় বৈদ্যক শাস্ত্রে লিখিত আছে। এজন্য গর্ভাধান সংস্কারাদি করিতে বৈদ্যক শাস্ত্রের আশ্রয় লওয়া বিশেষ প্রয়োজন। এক্ষণে দেখুন-সমগ্র বিদ্বনমণ্ডলী যে বৈদ্যশ্রেষ্ঠ সুশ্রুতকারের প্রামাণিকতা স্বীকার করিয়া থাকেন, তিনি বিবাহ গর্ভাদানের কাল সম্বন্ধে লিখিতেছেন যে -
▶️বিবাহোচিত কাল -
পঞ্চবিংশে ততো বর্ষে পুমান্নারী তু ষোড়শে। সমত্বাগতবীয়ৌ তৌ জানীয়াৎ কুশলোভিষক্।।
সুশ্ৰুতে। সূত্রস্থানে। অধ্যায় ৩৫।১০।🔥
=এই সময় কন্যার ন্যূনতম বয়স ১৬ (ষোল) বৎসর ও পুরুষের ন্যূনতম বয়স ২৫ (পঁচিশ) বৎসর অবশ্যই হইবে। ২৫ (পঁচিশ) বৎসর বয়সে পুরুষের শরীরে যেরূপ সামর্থ্য জন্মে, ১৬ (ষোল) বৎসর বয়সে কন্যার শরীরে সেইরূপ সামর্থ্য জন্মে। এই কারণে বৈদ্যগণ (আয়ুর্বেদজ্ঞমণ্ডলী) পূর্বোক্ত বয়সে উভয়কে সমবীর্য অর্থাৎ সম-সামর্থ্যবান্ বলিয়া জানেন।
ঊনষোড়শবর্ষায়ামপ্রাপ্তঃ পঞ্চবিংশতিম্। য়দ্যাধত্তে পুমান্ গর্ভং কুক্ষিস্থঃ স বিপদ্যতে।।
জাতো বা ন চিরং জীবেজ্জীবেদ্বা দুর্বলেন্দ্রিয়ঃ । তন্মাদত্যন্তবালায়াং গর্ভাধানং ন কারয়েৎ।।
সুশ্রুতে। সূত্রস্থানে। অ১০।৪৭ -৪৮🔥
=২৫ (পঁচিশ) বৎসরের কম বয়সের পুরুষ যদি ১৬ (ষোল) বৎসরের কম বয়সের স্ত্রীতে গর্ভাধান করে, তবে গর্ভ উদরেই বিপন্ন হয়।।
সন্তান জন্মিলেও অধিক দিন জীবিত থাকে না। জীবিত থাকিলেও তাহার শরীর ও ইন্দ্রিয় অত্যন্ত দুর্বল হইয়া থাকে। সুতরাং অল্প বয়সের বালিকা অর্থাৎ ১৬ (ষোল) বৎসরের কম বয়সের স্ত্রীতে কখনও গর্ভাধান করিবে না।
সুশ্ৰুতে ইহাও লিখিত আছে-
চতস্রোৎবস্থাঃ শরীরস্য বৃদ্ধিয়ৌবনং সম্পূর্ণতা কিঞ্চিৎ পরিহানিশ্চেতি। আষোড়শাবৃদ্ধিরা চতুর্বিংশতেয়ৌবনমাচত্বারিং শতঃ সম্পূর্ণতা ততঃ কিঞ্চিৎ পরিহাণিশ্চেতি।। ·
অর্থ :- ষোল বৎসরের পরে মনুষ্যের শরীরে সর্ব ধাতুর বৃদ্ধি, পঁচিশ বৎসর হইতে যুবাবস্থার আরম্ভ, চল্লিশ বৎসরে যুবাবস্থার পূর্ণতা অর্থাৎ সর্ব ধাতু পূর্ণভাবে পুষ্ট হয় এবং তাহার পরে ধাতুবীর্যের কিছু কিছু ক্ষয় হইতে থাকে । ৪০ (চল্লিশ) বৎসরে সব অবয়ব পূর্ণ হইয়া যায়। পরে পানাহারে যে ধাতুবীর্য উৎপন্ন হয়, তাহা কিছু কিছু ক্ষীণ হইতে থাকে। ইহা দ্বারা এই সিদ্ধ হয় যে, শীঘ্রই বিবাহ দিতে হইলে কন্যার বয়স অন্ততঃ ১৬ (ষোল) এবং পুরুষের বয়স অন্ততঃ ২৫ (পঁচিশ) বৎসর অবশ্যই হওয়া উচিত। কন্যার বয়স ২০ (কুড়ি) বৎসর পর্যন্ত এবং পুরুষের ৪০ (চল্লিশ) বৎসর পর্যন্ত-মধ্যম অবস্থা এবং কন্যার বয়স ২৪ (চব্বিশ) বৎসর পর্যন্ত এবং পুরুষের বয়স ৪৮ (আটচল্লিশ) বৎসর পর্যন্ত উত্তম অবস্থা। যাঁহারা দীর্ঘায়ু, সুশীল, বুদ্ধিমান, বলবান, পরাক্রমশালী, বিদ্বান্ সন্ততি লাভ করিয়া বংশের উন্নতি কামনা করেন, তাঁহারা যেন কখনও ১৬ (ষোল) বৎসরের পূর্বে কন্যার এবং ২৫ (পঁচিশ) বৎসরের পূর্বে পুত্রের বিবাহ না দেন। ইহাই সব সংস্কারের মধ্যে প্রকৃত সংস্কার, সব সৌভাগ্যের মধ্যে প্রকৃত সৌভাগ্য ও সব উন্নতির মধ্যে প্রকৃত উন্নতি বিধায়ক কর্ম।। মাতা এবং পিতার পক্ষে গর্ভাধানের পূর্বে, তৎকালে এবং তদন্তর মাদক দ্রব্য, মদ্য, দুর্গন্ধযুক্ত, রুক্ষ ও বুদ্ধিনাশক দ্রব্য পরিত্যাগ করিয়া, যাহাতে শান্তি, আরোগ্য, বল, বুদ্ধি, পরাক্রম এবং সুশীলতার দ্বারা সভ্যতা প্রাপ্ত হওয়া যায় এইরূপ ঘৃত, দুগ্ধ, মিষ্ট অন্নপানাদি উৎকৃষ্ট পদার্থ সেবন করিবে, যাহাতে রজোবীর্য দোষ রহিত হইয়া অত্যুত্তম গুণ লাভে সমর্থ হয়।

No comments:

Post a Comment

ধন্যবাদ

বৈশিষ্ট্যযুক্ত পোস্ট

যজুর্বেদ অধ্যায় ১২

  ॥ ও৩ম্ ॥ অথ দ্বাদশাऽধ্যায়ারম্ভঃ ও৩ম্ বিশ্বা॑নি দেব সবিতর্দুরি॒তানি॒ পরা॑ সুব । য়দ্ভ॒দ্রং তন্ন॒ऽআ সু॑ব ॥ য়জুঃ৩০.৩ ॥ তত্রাদৌ বিদ্বদ্গুণানাহ ...

Post Top Ad

ধন্যবাদ