এতে কোনো সন্দেহ নেই যে, দীর্ঘ গুলামী তথা শত্রুভাব দ্বারা প্রাচীন সংস্কৃত সাহিত্যের যথাসম্ভব বিনাশ করা হয়েছে। এই কারণে বিমান বিষয়ের উপর বিস্তার তথ্য প্রদানকারী সাহিত্য লুপ্তপ্রায় হয়েছে। সৌভাগ্যক্রমে একটি গ্রন্থ মহর্ষি ভারতদ্বাজকৃত "বৃহদ্বিমানশাস্ত্র" গ্রন্থের প্রাচীন প্রতি আমার হাতে আসে। একটি প্রতি বডৌদা রাজকীয় পুস্তকালয়ের মধ্যেও রয়েছে কারণ এই পুস্তকালয় দ্বারা সহায়তা আদি নিয়ে দিল্লি সরকারের সংস্কৃত একাডেমী এই গ্রন্থের সংস্কৃতে প্রকাশন করার পরিকল্পনা তৈরি করছে। অস্তু, যাই হোক এই গ্রন্থের মধ্যে অত্যন্ত উচ্চ ও উন্নত প্রকারের বিমানবিদ্যার প্রতিপাদন করা হয়েছে।
প্রায় ২৫ বছর পূর্বে ব্যাঙ্গালোরের Institute of Science এর বিমান বিভাগ (Aeronautics Division) এর পাঁচ বিদ্বান সংশোধকের (Research Scholars) লেখা পত্র মাদ্রাজের আঙ্গল দৈনিক The Hindu তে প্রকাশিত হয়েছিল। সেই পত্রে তারা লিখেছিল যে, "ভরদ্বাজ মুনি দ্বারা লিখিত "বৃহদ্বিমানশাস্ত্র" পুস্তকের মধ্যে বর্ণিত বিবিধ বিমানগুলোর মধ্যে "রুক্মি" প্রকারের বিমানের উড়ান বিধিটি বুঝতে পারা যায়। সেই বিধিতে আজও উড়ানো যেতে পারে। কিন্তু অন্য বিমানগুলো বিস্তারিতভাবে বোঝা যাচ্ছে না।"
প্রাচীন সংস্কৃত গ্রন্থের শব্দ, পরিভাষা তথা সিদ্ধান্তগুলোকে আজ বুঝতে খুবই দূর্লভ হবে। এর স্পষ্ট কারণ হয় যে, শত শত বছর ধরে সেই গ্রন্থগুলোর অনুসন্ধান করা হয়নি আর না সেই বিদ্যার অভ্যাস করা হয়েছে। কিন্তু তবুও বর্তমান কালেও ১৮৯৫ তে এরকম গ্রন্থ পড়ে একজন ভারতীয়ই বিমান নির্মাণের ভিত্তি রেখেছিলেন। বিমানশাস্ত্র পুস্তকটি Thanks Bharat এর সঙ্গে সম্পর্ক করে প্রাপ্ত করতে পারবেন।
অনেক লোকেই জিজ্ঞেস করে থাকে যে, শিবকর বাপুজী তলপাডের বিষয়ে যা কিছু কমবেশি বলা হয়েছে সেসব কি সত্য নাকি মিথ্যা? আমি মনে করি শিবকর বাপুজী তলপাডে ইতিহাসের সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের মধ্যে একজন ছিলেন। কিন্তু তাঁর সম্বন্ধে খুবই কম তথ্য উপলব্ধ রয়েছে। এই মহান ব্যক্তির উপর একটি ফিল্মও হয়েছিল যার নাম "হাওয়াইজাদা" ছিল। যদিও ফিল্মটিকে রুচিকর বানানোর জন্য সংস্কৃতের পণ্ডিত, আর্য সমাজ কাকডবাড়ীর সদস্য শিবকর বাপুজী তলপাডেকে ভুল রূপে প্রদর্শিত করা হয়েছিল। অস্তু, এখন তো সারা বিশ্বের মিডিয়াতে এই বিষয় যে "বিমান আবিষ্কার কি এক ভারতীয় করেছিল?" এসে গেছে।
শিবকর বাপুজী তলপাডে বিমান নির্মাণের প্রয়োগশালা মহর্ষি দয়ানন্দের দ্বারা প্রভাবিত হয়ে ১৮৮২ সালে খুলে ছিলেন। মহর্ষি দয়ানন্দের বেদ ভাষ্যকে পড়ে তথা ঋগ্বেদাদিভাষ্যভূমিকাকে পড়ে তিনি প্রথম বিমানের মডেল তৈরি করেন আর বিশ্বের প্রথম বিমানটি ১৮৯৫ সালে মুম্বাইয়ের জুহু বিজে উড়িয়ে ছিলেন।
এটা কিভাবে হতে পারে যে এরকম ব্যক্তি কোনো পুস্তক, নিবন্ধ অথবা নিজের অনুসন্ধানের কোনো মডেল না রেখে চলে যাবেন? নিশ্চই শিবকর বাপুজী তলপাডের কাছে ইংরেজরা বিমানকে উন্নত বানানোর জন্য আর্থিক সহায়তা দেওয়ার বাহানায় মডেলটি হাতিয়ে নিয়ে থাকবে। সেখান থেকেই বিমান নির্মাণের কাজে লেগে থাকা রাইট ব্রাদার্সরা সেই ডকুমেন্ট (দলিল) পেয়ে যায় তথা আবিষ্কারের শ্রেয় তাদেরকেই দিয়ে দেওয়া হয়। পরবর্তীতে অনেক লুট করা ধনের ক্ষমতায় ইউরোপীয়রা বড় বড় বিমান নির্মাণ করে আর আর্য শিবকর বাপুজী তলপাডেকে ভুলিয়ে দেওয়া হয়।
এই ঘটনায় শিবকর বাপুজী অনেক আঘাত পেয়েছিলেন। ১৯১৬ সালে শিবকর জী সুব্রহ্মণ্যয়ম শাস্ত্রীর কাছে "বৃহদ্বিমানশাস্ত্র" কে বোঝার জন্য সহায়তা নেন। শিবকর জী ১৯১৫-১৯১৭ পর্যন্ত "মরুত্শিখা" নামক বিমানের উপর কাজ করছিলেন। এবারের বার তিনি এক এরকম অতি উন্নত বিমান নির্মাণের বিচার করছিলেন যে যেন সেটিকে জানতে পেরে বিশ্বের লোকেরা মিথ্যাবাদী আবিষ্কারক রাইট ব্রাদার্সকে ভুলে যায়। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত ১৭ সেপ্টেম্বর ১৯১৭ তাঁর মৃত্যু হয়ে যায়।
কিছু আর্য সমাজের বিদ্বানরা মনে করেন যে, তিনি বিমান নির্মাণের খুবই নিকটে ছিলেন ও তাঁর মৃত্যুর পিছনেও কোনো ষড়যন্ত্র ছিল। কেবল আর্য সমাজিদের ছাড়া সকল হিন্দুরাই এই বিষয়ে চুপ করে আছে কারণ তারা মনে করে যে শিবকর বাপুজী একজন আর্য সমাজী ছিলেন আর তাঁর নাম নিলে আর্য সমাজের প্রচার হবে। এই নিম্ন মানসিকতা থেকে বাইরে বেরিয়ে আমাদের এরকম সময়ে একজন ভারতীয় হয়ে ভাবা উচিত। ভারতের আত্মমর্যাদাকে জাগানোর দায়িত্ব কি কেবল শিবকর বাপুজী তলপাডেরই ছিল? এই দায়িত্ব কি আমাদের সকলের নয়?
মূলরূপে সারা বিশ্বে ছড়ানো সব বিদ্যাই বেদ থেকে ছড়িয়েছে। বেদের মধ্যে বিস্তারভাবে সমুদ্র, ভূমি আর অন্তরিক্ষে দ্রুত চলার জন্য যান বিদ্যার অনেক মন্ত্র রয়েছে। উড়োজাহাজ কিরকম হয়? উড়োজাহাজের গতি কত হয়? উড়োজাহাজ কিভাবে নির্মাণ করা হয়? এই বিষয়ে এত বিস্তারে বেদের মধ্যে লেখা রয়েছে যে এর উপর একটি সম্পূর্ণ বিশাল গ্রন্থ লেখা যেতে পারে। এই বিষয়ের অধিক তথ্যের জন্য আপনি মহর্ষি দয়ানন্দ স্বামীকৃত "#ঋগ্বেদাদিভাষ্যভূমিকা" পুস্তকের "নৌবিমানাদিবিদ্যাবিষয়ঃ"-টিও পড়তে পারেন।
সংক্ষেপে বেদের কয়েকটি মন্ত্র যেগুলোতে এই বিদ্যা বিস্তারভাবে দেওয়া হয়েছে -
১. যারা নৌকা দ্বারা সমুদ্রে, রথ দ্বারা ভূমিতে আর বিমান দ্বারা আকাশের মধ্যে দুষ্টের সঙ্গে যুদ্ধ করে, তারা সর্বদা ঐশ্বর্য প্রাপ্ত করে থাকে। (ঋগ্বেদ ভাষ্য ১|১৬|৭)
২. যান এই প্রকারের হতে হবে যে যার দ্বারা একই দিবা-রাতের মধ্যে ভূগোল, সমুদ্র তথা অন্তরিক্ষ মার্গে তিনবার যাওয়া যেতে পারে। (ঋগ্বেদ ভাষ্য ১|৩৪|২)
৩. যান এই প্রকারের হতে হবে যে সেটির উপর বসে ১১ দিনের মধ্যে ব্রহ্মাণ্ডের চতুর্দিকে যাওয়া যেতে পারে। (ঋগ্বেদ ভাষ্য ১|৩৪|১১)
৪. যে রাজা শস্ত্রাস্ত্র জ্ঞানী শ্রেষ্ঠ ধার্মিক বীরদের, বিমান আদি যানের নির্মাতা শিল্পীদের আর বিদ্যুদাদি বিদ্যার বিদ্বানদের সৎকার-পূর্বক রক্ষা করে, তার খ্যাতি সূর্য-রশ্মির মতো ছড়ায়। (ঋগ্বেদ ভাষ্য ৬|২৯|২)
(যেরকম আমেরিকা, ইউরোপ আদি দেশের মধ্যে বৈজ্ঞানিক, সৈনিক, বিদ্বানরা অনেক ধন ও মান-সম্মান পেয়ে থাকে তাই সেসব দেশ আজ ঈশ্বরীয় জ্ঞানের কথা মানে তাই তারা এগিয়ে আছে।)
এখানেই শেষ নয়, বিমান নির্মাণের বিদ্যাও বেদের মধ্যে দেওয়া হয়েছে। বিমান কিভাবে নির্মাণ করতে হবে তার সম্বন্ধেও বেদের মধ্যে অনেক মন্ত্র রয়েছে। বিমান নির্মাণ করার বিদ্যা অনেক বেদ মন্ত্রের মধ্যে সংক্ষেপে বলা হয়েছে যথা - ঋগ্বেদ ১|১৬৪|৪৮, ঋগ্বেদ ১|৩৪|২, ঋগ্বেদ ১|৩৪|৯ আদি আদি।
ঋগ্বেদ মণ্ডল ১, সূক্ত ৩৪, মন্ত্র সংখ্যা ১০ এর ভাবার্থে বাষ্প-নিঃসরণের জন্য যানের মধ্যে এক বিশেষ স্থান নির্মাণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
"যখন যানের মধ্যে জল আর অগ্নিকে প্রদীপ্ত করে জ্বালানো হয়, তখন এই যানটি স্থানান্তরে শীঘ্র প্রাপ্ত করবে। সেখানে জল আর বাষ্প বের করার এক এরকম স্থান করবে যেটি দিয়ে বাষ্প বের হতে বেগের (speed) বৃদ্ধি হবে।"
বাস্তবে, এই বিদ্যাটি এক সাধারণ সৃষ্টি নিয়মের আধারে কাজ করে আর সৃষ্টি নিয়মের জ্ঞান সর্বদা বেদের মধ্যে দেওয়া রয়েছে যারদ্বারা মানুষ বুদ্ধিপূর্বক অনেক প্রকারের জ্ঞান-বিজ্ঞানের পদার্থ নির্মাণ করে থাকে।
উড়োজাহাজ সম্বন্ধিত বেদের মন্ত্রঃ
যজুর্বেদের ২১|৬, ৪|৩৪, ৩৩|৭৩ আদি অনেক মন্ত্রতে রয়েছে।
ঋগ্বেদ ১|৮৫|৪, ১|১১৭|১৫, ১|১১৬|৪, ৬|৬৩|৭, ১|৩৪|১২, ১|১৬৪|৩, ১|১০৮|১, ১|১০৪|১, ১|৩৪|৭, ১|১৮৪|৫, ১|১৬|৭, ৪|৪৫|৪, ১|৮৫|৭, ১|৮৭|২, ১|৮৮|১, ১|৯২|১৬, ১|১০৬|১, ১|১০৬|২, ১|১১২|১৩, ১|১১৬|৫, ১|১১৭|২, ১|১১৯|১, ১|১২০|১০, ১|১৪০|১২, ১|১৫৭|২, ১|১৬৩|৬, ১|১৬৭|২, ১|১৬৬|৫, ১|১৮১|৩, ১|১৮২|৫, ২|১৮|১, ২|১৮|৫, ২|৪০|৩, ৩|১৪|১, ৩|২৩|১, ৩|৪১|৯, ৩|৫৮|৩,৮,৯, ৪|১৭|১৪, ৪|৩১|১৪, ৪|৪৩|২, ৪|৪৫|৭, ৪|৪৬|৪, ৫|৫৬|৬, ৫|৬২|৪, ৫|৭৭|৩, ৬|৪৬|১১, ৬|৫৮|৩, ৬|৬০|১২, ৭|৩২|২৭ ইত্যাদি।
এছাড়াও বেদের মধ্যে বিনা ইঞ্জিনের উড়োজাহাজ নির্মাণের বিষয়েও জ্ঞান দেওয়া হয়েছে। অর্থাৎ অণু শক্তি ও অন্য বৈকল্পিক ঊর্জার (energy) স্রোত দ্বারা বিমান উড়ানোর সংকেত দেওয়া হয়েছে। আজ বৈজ্ঞানিক এরই বিদ্যার বিস্তার করার জন্য লেগে রয়েছে। বেদে এক মন্ত্র এসেছে যে -
অনেনো বো মরুতো য়ামো অস্ত্বনশ্বশ্চিদ্যমজত্যরথীঃ।
অনবসো অনভীশূ রজস্তূর্বি রোদসী পথ্যা য়াতি সাধন্।। (ঋগ্বেদ ৬|৬৬|৭)
শব্দার্থ - (মরুতঃ) হে মরুত! বীর সৈনিক! (বঃ) তোমার (য়ামঃ) যান, জাহাজ (অন্ এনঃ) নির্বিঘ্ন গতিকারী (অস্তু) হোক। তোমার সেই যান (রজঃ তূঃ) অণু শক্তি দ্বারা চালিত হোক (য়ম্) যা (অন্ অশ্বঃ) বিনা ঘোড়ার (অরথীঃ) বিনা সারথীর (অনবসঃ) বিনা অন্ন, বিনা কাঠ, কয়লা অথবা পেট্রোল আদির (অন্ অভীশূঃ) বিনা রাসনের, বিনা লাগামেই (চিত্) (রোদসী) ভূমি আর আকাশে চলতে পারে, যেতে পারে (পথ্যা সাধন্) গতি বজায় রেখে মার্গে অনেক প্রকারের গতি আদি করতে পারে।
এত উন্নত বিমান নির্মাণের বিদ্যা বেদের মধ্যে দেখতে পেয়ে কিছু লোকের মহা আশ্চর্য হতে পারে যে বিশ্বের প্রাচীন পুস্তকটির মধ্যে এরকম বিদ্যা কিভাবে হতে পারে? যদি ইতিহাসকারদের মধ্যে এতটুকুও সততা বেঁচে থাকে তবে প্রাচীন বিশ্বের লোকেদের জংলী, মূর্খ, যাযাবর, সাপুড়ে আর রাখল বলা তথা লেখা বন্ধ করা উচিত। প্রাচীন লোক বেদাদি শাস্ত্রের বিদ্বান ছিলেন। বেদের মধ্যে সৃষ্টির সকল প্রকারের নিয়ম বলা হয়েছে। সুতরাং প্রাচীন লোকেরাও সব নিয়মের জ্ঞান সর্বদা জানতেন। তার থেকে তাঁরা অনেক ধরনের পদার্থও নির্মাণ করতেন। বর্তমান বিজ্ঞান এখানে পর্যন্ত এসেছে কারণ প্রাচীন লোকেরা অনেক পুরুষার্থ করে গণিত আদি বিদ্যাকে বেদ দ্বারা উন্নত করেছিলেন। সুতরাং সংসারের লোকেদের প্রাচীন আর্যদের ঋণী হওয়া উচিত তথা বিজ্ঞানের এই উন্নতির শ্রেয় তাঁদের অবশ্যই দেওয়া উচিত। যদি আমরা এরকমটা না করি তবে নিশ্চিত রূপে আমরা কৃতঘ্ন হবো।
রামায়ণে অনেক স্থানে উড়োজাহাজের বিদ্যার উল্লেখ দেখতে পাওয়া যায়।
যখন শ্রীরাম ও লক্ষ্মণ মূর্ছিত হয়ে ভূমিতে পরে ছিলেন তখন রাবণ রাক্ষসীদের বলে যে, যাও সীতাকে পুষ্পক বিমানে বসিয়ে মৃত রাম-লক্ষ্মণকে দর্শন করিয়ে নিয়ে আসো।
বিমানম্ পুষ্পকম্ তত্তু সন্নিবর্ত্যেম্ মনোজবম্।
দীনা ত্রিজটয়া সীতা লঙ্কামেব প্রবেশিতা।।
(বাল্মীকি রামায়ণ যুদ্ধকাণ্ড ২৮|২০)
রাম-লক্ষ্মণকে দেখিয়ে ত্রিজটা রাক্ষসী মনের সমান দ্রুতগামী পুষ্পক বিমানকে ফিরিয়ে দুঃখী সীতাকে লঙ্কাতে নিয়ে আসলো।
এই প্রকার যুদ্ধ সমাপ্তির পরে লঙ্কারাজ বিভীষণ শ্রীরামের প্রস্থানের জন্য পুষ্পক বিমানকে প্রস্তুত করেছিলেন -
ক্ষিপ্রমারোহ সুগ্রীব বিমানম্ বানরৈঃ সহ।
ত্বমপ্যারোহ সামাত্যো রাক্ষসেন্দ্র বিভীষণ।।
(বাল্মীকি রামায়ণ যুদ্ধকাণ্ড ৬৮|২০)
শ্রীরামের আজ্ঞা পেয়ে বানর সহিত বিভীষণ আদিও পুষ্পক বিমানে বসে অযোধ্যায় শ্রীরামের রাজ্যাভিষেকে যান।
ভাবুন, বিমানটি কত বড় হবে! অযোধ্যাতে যাওয়ার সময় পুষ্পক বিমান দ্বারা অনেক স্থানের নিরীক্ষণও সকলে করেছিল যাকে আজকাল হাওয়াই নিরীক্ষণও বলা হয়।
সুগ্রীবেণৈবমুক্তস্তু হৃষ্টো দধিমুখঃ কপিঃ।
স প্রণম্য তান্ সর্বান্ দিবমেবোৎপপাত হ।।
(বাল্মীকি রামায়ণ সুন্দরকাণ্ড ৪০|১)
সুন্দরকাণ্ডে সুগ্রীব তার নিজের বনরক্ষক দধিমুখকে বলেন যে, এখন আপনি গিয়ে পূর্ববনের রক্ষা করুন। আর হনুমান আদি সৈনিকদের শীঘ্রই এখানে পাঠিয়ে দিন। সুগ্রীবের এরকম বলার পর দধিমুখ প্রসন্নতাপূর্বক "আকাশ মার্গ" দ্বারা চলে যায়।
এতে এটা পরিষ্কার বোঝা যায় যে, না কেবল পুষ্পক বিমান বরং রামায়ণে আকাশ মার্গ দ্বারা যাওয়ার জন্য অনেক ব্যক্তিদের কাছে নিজের নিজের উড়োজাহাজ ছিল।
ব্রিটেনের ভূতপূর্ব প্রধানমন্ত্রী "লর্ড পর্মস্টন" ১২ ফেব্রুয়ারি, ১৯৫৮ তে ব্রিটিশ লোকসদনে বলেছেন যে, "যখন আর্যাবর্তে সভ্যতা ও সংস্কৃতি তার নিজের শিখরে পৌঁছে গিয়েছিল, তখন ইউরোপীয়রা নিতান্ত জংলী ছিল।"
এতে কোনো সংশয় নেই যে মানুষ সর্বপ্রথম ভারত দেশের মধ্যেই বিজ্ঞান ও শিল্পকলার অরুণোদয় দেখে। যত ধরনের বিদ্যা আদি ভূগোলে ছড়িয়ে রয়েছে তার পিছনে আর্য প্রজাতি ও আর্য সংস্কৃতিই রয়েছে। আশা করি আপনাদের এই লেখাটি ভালো লেগেছে, আত্মমর্যাদাকে জাগিয়ে তুলতে আর প্রমাণিক লেগেছে।
আমি মনে করি যে, যতক্ষণ পর্যন্ত না প্রত্যেক ভারতীয় স্বয়ং অধ্যয়ন করা শুরু করবে ততক্ষন পর্যন্ত কোনো লাভ হবে না। ১০-১২ লোক দ্বারা এই কাজ সম্ভব নয়।
No comments:
Post a Comment
ধন্যবাদ