গীতা ১০/৩০ - ধর্ম্মতত্ত্ব

ধর্ম্মতত্ত্ব

ধর্ম বিষয়ে জ্ঞান, ধর্ম গ্রন্থ কি , হিন্দু মুসলমান সম্প্রদায়, ইসলাম খ্রীষ্ট মত বিষয়ে তত্ত্ব ও সনাতন ধর্ম নিয়ে আলোচনা

धर्म मानव मात्र का एक है, मानवों के धर्म अलग अलग नहीं होते-Theology

সাম্প্রতিক প্রবন্ধ

Post Top Ad

স্বাগতম

23 July, 2023

গীতা ১০/৩০

 

প্রহ্লাদশ্চাস্মি দৈত্যানাং কালঃ কলয়তামহম্। 

মৃগাণাং চ মৃগোন্দ্রোऽহং বৈনতেয়শ্চ পক্ষিণাম্।। গীতা-১০/৩০

পদার্থ-( অহম্) আমি ( দৈত্যানাম্) দৈত্যদের মধ্যে দেবতা মধ্যে ( প্রহ্লাদঃ) প্রহ্লাদ অর্থাৎ আনন্দ হই,( কলয়তাম্) গণনাকারীদের মধ্যে ( কালঃ) সময় ( অস্মি) হই,( চ) এবং ( মৃণাণাম্) পশুদের মধ্যে ( মৃগেন্দ্রঃ) পশুদের রাজা সিংহ ( চ) ও ( অহম্) হই, ( পক্ষিণাম্) পক্ষিদের মধ্যে ( বৈনতেয়ঃ) গরুড় ( অস্মি) হই।।

অর্থ-আমি দৈত্যদের মধ্যে অর্থাৎ দেবতাদের মধ্যে প্রহ্লাদ অর্থাৎ আনন্দ হই, এবং গণনাকারীদের মধ্যে সময় হই, এবং পশুদের মধ্যে পশুর রাজা সিংহ ও আমি পক্ষিদের মধ্যে গরুড় হই।।

ভাবার্থ-দৈত্য শব্দের দুই অর্থ হয়-এক দেব দুই রাক্ষস। অতঃপর অর্থ এই প্রকার হবে যে রাক্ষদের মধ্যে প্রহ্লাদ আস্তিক ছিলেন এবং দেব বৃত্তি যুক্ত ছিলেন। অতঃপর ভাব হয় যে রাক্ষাসদের মধ্যে প্রহ্লাদ হই। পরন্তু এই অর্থ কিংবদন্তি উপর আধারিত হয় এবং এতটা সত্য প্রতীত হয় না। বৈদিক আধারের উপর দুই অর্থ এই প্রকার হবে যে দৈত্যের অর্থ "দেব" এবং "প্রহ্লাদের অর্থ আনন্দ। অতঃপর দেবের মধ্যে ব্রহ্মের আনন্দ হয়। যারা দেব বৃত্তির আস্তিক পুরুষ হয় তারা বেদাধ্যয়ন,যজ্ঞ এবং যোগাভ্যাসের দ্বারা এক দিন আনন্দানুগত সমাধি প্রাপ্ত করে,এবং তাদের মধ্যে ব্রহ্ম অনুভূতির আনন্দ প্রকট হয় যেমন-ঋগ্বেদ মণ্ডল ১০/ সূক্ত ১১৯ এ সোম পান বলা হয়েছে।
ভাব এই যে পরমেশ্বর আনন্দস্বরূপ অতঃপর দৈত্য অর্থাৎ দেবতাদের সেই প্রহ্লাদ অর্থাৎ আনন্দ।।

"কালের অর্থ গণনা"। অতঃপর বলা হয়েছে গণনাকারীদের মধ্যে "কাল" হই। অথর্ব্বেদ কাণ্ড ৯/সূক্ত ৯ এর / মন্ত্র ১৩ তে বলা হয়েছে যে কাল চক্র নিরন্তর চলতে থাকে,কখনও জীর্ণ হন না। একই প্রকার পরমেশ্বরেরও সর্বদা আছেন, সর্বদা থাকেন এবং ঋগ্বেদ মন্ত্র ১০/৯০/৩ এ বলা হয়েছে, অজর, অমর, অবিনাশী কখনও জীর্ণ হন না এবং জন্ম- মৃত্যু থেকে ঊর্ধ্বে। সৃষ্টির আরম্ভ থেকে আজ পর্যন্ত না জানা কত দার্শনিক সময়ের গণনা করেছেন। বস্তুতঃ অথর্ব্বেদ মন্ত্র ১৯/৫৩/৮ এ বলা হয়েছে ( কালঃ) কাল ( হ) ই ( সর্বস্য) সকলের ( ঈশ্বরঃ) স্বামী। কালই ঈশ্বর এবং প্রত্যেক সময়ের দ্রষ্টা। অনন্ত নামের মধ্যে "কাল"ও সর্বব্যাপক পরমেশ্বরের নাম। অথর্ব্বেদ কাণ্ড ১৯/সূক্ত ৫৩ এবং ৫৪ তে কালের বিস্তার থেকে বর্ণনা আছে। মন্ত্রে বলা হয়েছে-"কালঃ অশ্বঃ বহতি" কালের সময় রূপী অশ্ব চলতে থাকেন ইত্যাদি। ভাব এই যে পরমেশ্বরই সব থেকে মহান কালের গণনাকারী পরম্ পুরুষ কারণ তিনি প্রত্যেক কাল অর্থাৎ ভূতঃ,ভবিষ্য,বর্তমানে রঢেছেন,সকলের দ্রষ্টা।।

আরও বলা হয়েছে যে মৃগ অর্থাৎ পশুদের মধ্যে সিংহ হই। সিংহ পশুদের মধ্যে সব থেকে বলবান পশু মানা হয়। গীতার এই শ্লোকের অনুসারে সিংহও ঈশ্বরের বিভূতি। ঋগ্বেদ মন্ত্র ১/৮১/৬ এ বলা হয়েছে ( শ্বেতঃ) শুদ্ধ স্বরূপ পরমেশ্বর ( তুবিষ্মানঃ) কুটিল গতিযুক্তের জন্য ( মৃগঃ) সিংহ সমান। এখানে মৃগের অর্থ সিংহ। পরের মন্ত্রে বলা হয়েছে ( সতঃ অস্য রাজা) এই জগতের স্বামী। অতমপর কিনা বনের পশু হোক,সিংহ হোক,যে কেউও হোক সকলের রাজা তো পরমেশ্বরই।।

আরএ বলা হয়েছে পক্ষিদের মধ্যে "বৈনতেয়ঃ" হই। বৈনতেয় অর্থ গরুড়। গরুড়কে পক্ষিদের মধ্যে রাজা বলে। এটি সাপের শত্রু। যেমন গরুড় পক্ষিদের রাজা, পরমেশ্বর সমস্ত ব্রহ্মাণ্ডের রাজা,অথর্ব্বেদ মন্ত্র ৬/৫৬/১ এ বিদ্বানদের দ্বারা প্রার্থনা হয় যে ( মা) না ( নঃ) আমাদের ( দেবাঃ) বিদ্বান্ ( অহিঃ) সর্প ( বধীত্) বধ করা-কর্ত্তন অর্থাৎ হে বিদ্বান্! আমাদের এমন শিক্ষা দিন এবং কৃপা করুন যে আমাদের সর্প না দংশন করতে পারে। এখানে সর্পের অর্থ কাম,ক্রোধ,মদ,লোভ, অহংহঙ্কার আদি শত্রু। ভাব এই যে, যেমন গরুড় সর্পকে ভক্ণ করে,ওই প্রকার বিদ্বান্ দ্বারা দান ঈশ্বরের বৈদিক শিক্ষা বিষয়-বিকৃতিকে নষ্ট করে দেয়। অতঃপর ঈশ্বর গরুড়েরও গরুড়। যদি ঈশ্বর আমাদের বেদ বিদ্যার দান না করতো তবে কাম-ক্রোধ আদি শত্রুদের নাশ করে ঈশ্বরকে প্রাপ্তকারী ঋষি-মুনি সংসারে কখনও জন্ম না হতো । অতঃপর আসাদের সর্বদা বেদ বাণীকেই সম্মান করা এবং শ্রদ্ধাপূর্বক শ্রবণ করা উচিত।। ( ভাষ্যকার-স্বামী রামস্বরূপজী যোগাচার্য)

No comments:

Post a Comment

ধন্যবাদ

বৈশিষ্ট্যযুক্ত পোস্ট

वैदिक रश्मिविज्ञानम्

EBooks Download – Vaidic Physics

Post Top Ad

ধন্যবাদ