শিব লিঙ্গ না চিহ্ন ? - ধর্ম্মতত্ত্ব

ধর্ম্মতত্ত্ব

ধর্ম বিষয়ে জ্ঞান, ধর্ম গ্রন্থ কি , হিন্দু মুসলমান সম্প্রদায়, ইসলাম খ্রীষ্ট মত বিষয়ে তত্ত্ব ও সনাতন ধর্ম নিয়ে আলোচনা

धर्म मानव मात्र का एक है, मानवों के धर्म अलग अलग नहीं होते-Theology

সাম্প্রতিক প্রবন্ধ

Post Top Ad

স্বাগতম

26 July, 2023

শিব লিঙ্গ না চিহ্ন ?

 ন তস্য কশ্চিৎ পতিরস্তি লোকে

ন চেশিতা নৈব তস্য লিঙ্গম্।
•শ্বেতাশ্বতর উপনিষদ_6.9
•অর্থাৎ,এই জগতে, ঈশ্বরের কোনো প্রভু এবং নিয়ন্ত্রক নেই।
এমন কোনও লিঙ্গ বা চিহ্ন নেই যার দ্বারা তাঁর সম্পর্কে অনুমান করা চলে।
শিবের লিঙ্গ বলতে কি বোঝায়?
লিঙ্গ অর্থ, পুরুষের যৌনাঙ্গ এবং ব্যাকরণের চিহ্ন।
কিছু লোক বলেন শিব লিঙ্গ অর্থাৎ শিব বা মঙ্গলময় ঈশ্বরের চিহ্ন।
কিন্তু,শ্বেতাশ্বতর উপনিষদের বচন অনুযায়ী ঈশ্বরের কোনো চিহ্ন নেই।
পুরাণগুলোতেও লিঙ্গ বলতে শিবের যৌনাঙ্গকেই বুঝিয়েছে।
♦এই সিরিজে নিম্নে লিখিত পুরাণ,তন্ত্রের গ্ৰন্থ ও মহাভারত থেকে প্রমাণ দেখাবো,শিব লিঙ্গ বলতে শিবের যৌনাঙ্গকেই বোঝায়:-----
•মহানির্বাণ তন্ত্রম্।
•যোনী তন্ত্রম্।
•শিব পুরাণ।
•পদ্ম পুরাণ।
•স্কন্দ পুরাণ।
•বামন পুরাণ।
•কূর্ম পুরাণ।
•দেবী ভাগবত।
•মহাভারত।
♦বেদে বলা হয়েছে(যজুর্বেদ_40.9), প্রাকৃতিক বস্তুকে ঈশ্বর ভেবে উপাসনা করলে অজ্ঞানরূপ অন্ধকারে প্রবেশ করতে হবে।
বেদের বাক্য অবমাননা করার বিষময় ফল এই যে,যোনী-লিঙ্গের চিহ্ন স্থাপন করে আমরা যোনী-লিঙ্গকে ঈশ্বর ভেবে উপাসনা করছি!!
সব জেনেও যাঁরা লিঙ্গ পূজা করে নিজের বিকৃত মানসিকতার পরিচয় দিতে চান,তাঁরা অবশ্যই দিন।
আমার বিরোধ, সেই সমস্ত সবজান্তা দ্বিচারীদের প্রতি,যাঁরা বলেন শিবের লিঙ্গ যৌনাঙ্গ নয়!!
যাইহোক,লিঙ্গ বিষয়ে, বিভিন্ন পুরাণের গল্প থেকে থেকে এটাও বুঝতে পারবেন ,পুরাণ এক ব্যক্তির লেখা নয়।
কারণ,এক ঘটনার পুনরাবৃত্তি সব জায়গায়,অথচ ঘটনার প্রেক্ষাপট আলাদা।
এক ব্যক্তির লেখা হলে এতবার পুনরাবৃত্তি হত না আর হলেও ঘটনার প্রেক্ষাপট এক হত আলাদা আলাদা হত না।
কিন্তু, সন্দেহ প্রকাশ করলে বৈষ্ণবেরা যেমন লীলা বলে চালিয়ে দেন ঠিক তেমন পুরাণবাদীরাও অন্য কল্পের ঘটনা বলে চালিয়ে দেন!!
ঠগবাজি আর জোচ্চুরিতে এনারা সবাই এক নম্বরে।
♦আমার পোস্টের উদ্দেশ্য,যাতে আপনারা সত্য জানতে পারেন।
ধর্ম ব্যবসায়ীদের দ্বারা প্রতারিত না হন।
সত্য জেনে তারপর সিদ্ধান্ত নেবেন আপনার "শিব লিঙ্গ" বিষয়ে ধারণা ভুল না ঠিক।
•পরিশেষে প্রার্থনা করি, অন্ধকার থেকে আমরা সবাই যেনো আলোর দিকে যাত্রা করি।
আমাদের জীবনে,বেদ প্রতিষ্ঠিত হোক,
সত্য প্রতিষ্ঠিত হোক।
♦ও৩ম্ খং ব্রহ্ম। (যজুর্বেদ _40.17)

বামন পুরাণের দুটো প্রমাণ আছে।:---
♦প্রথম প্রমাণ:---
তত্রাপি গত্বা মদনো দদর্শ বৃষকেতনম্।
দৃষ্টা প্রহর্ত্তু কামোহস্য ততঃ স প্রাদ্রবদ্ধ হরঃ।।(57)
ততো দারুবনং ঘোরং মদনাভিসৃতো হরঃ।
বিবেশ ঋষয়ো যত্র সপত্নীকা ব্যবস্থিতাঃ।।(58)
তে চাপি ঋষয়ঃ সর্বে দৃষ্টা মূর্ধা নতাভবন্।
ততস্তান্ প্রাহ ভগবান্ ভিক্ষাং মে প্রতিদীয়তাম্।।(59)
ততস্তে মৌনিনস্তস্থূঃ সর্ব এব মহর্ষয়ঃ।তদাশ্রমাণি পুণ্যানি পরিচক্রাম নারদ।।
(60)
তং প্রবিষ্টং তদা দৃষ্টা ভার্গবাত্রেয়যোষিতঃ।
প্রক্ষোভমগমন্ সর্বা হীনসত্ত্বাঃ সমনস্ততঃ।।(61)
ঋতে ত্বরুন্ধতীমেনামনসূয়াঞ্চ ভামিনীম্।
এতয়োর্ভর্ত্তৃপূজাসূতচ্চিন্তা সুস্থিতং মনঃ।।(62)
ততঃ সংক্ষোভিতাঃ সর্বা যত্রযাতি মহেশ্বরঃ।
তত্র প্রয়ান্তি কামার্ত্তা মদবিহ্বলিতেন্দ্রিয়াঃ।।(63)
ত্যক্তাশ্রমাণি শূন্যানি স্বানি তা মুনিযোষিতঃ।
অনুজগ্মুর্যথা মত্তং করিণ্য ইব কুঞ্জরম্।।
(64)
ততস্তুঋষয়ো দৃষ্টা ভার্গবাংগিরসো মুনে।
ক্রোধান্বিতাব্রুবন্ সর্বে লিঙ্গোহস্য পততাং ভূবি।।(65)
ততঃ পপাত দেবস্য লিঙ্গং পৃথ্বীং বিদারয়ৎ।
অন্তর্ধানং জগামাথ ত্রিশূলী নীললোহিতঃ।।(66)
ততঃ স পতিতো লিঙ্গং বিভেদ্য বসুধাতলম্।
রসাতলং বিবেশাথ ব্রহ্মান্ডে চোদ্ধতোভিনৎ।।(67)
ততশ্চচাল পৃথিবী গিরয়ঃ সরিতো নগাঃ।
পাতালভুবনাঃ সর্বে জঙ্গমাজঙ্গমাঃ স্থিতাঃ।।(68)
দেবাবুচতুঃ।তবাঙ্গপাতিতং লিঙ্গং যদেতদ্ভূবি শঙ্কর।
এতৎ প্রগৃহ্যত্যাং ভূয়স্ততো দেব বদাবহে।।(83)
হর উবাচ।যদ্যর্চযন্তি ত্রিদশা মম লিঙ্গম সুরোত্তমৌ।
তদৈতৎ প্রতিগৃহ্নীয়াৎ নান্যথেতি কথঞ্চন।।(84)
••বামন পুরাণ_ষষ্ঠ অধ্যায়_শ্লোক_57-68 ও 83-84
♦ অর্থ _ মদন দেবকে দেখে,
মহাদেব ভয়ঙ্কর দেবদারু বনে প্রবেশ করলেন যেখানে ঋষিরা তাঁদের বৌদের নিয়ে বসবাস করেন।(57-58)
ঋষি ও তাঁদের বৌরা মহাদেবকে দর্শন করে,মাথা ঠেকিয়ে প্রণাম করলেন।
মহাদেব,তাঁদের বললেন,আমাকে ভিক্ষা দাও।(59)
ঋষিরা কোনো উত্তর দিলেন না। তারপর,মহাদেব ঋষিদের আশ্রমে ঘুরে বেড়াতে লাগলেন।(60)
ভার্গব ও আত্রেয় ঋষির বৌরা শিবকে দেখার পর উত্তেজিত ও চঞ্চল হলেন।(61)
ভামিনী-অরুন্ধতী ও অনুসূয়া এই দুইজন ঋষি পত্নীই কেবল শান্ত হয়ে নিজেদের স্বামীর সেবা করতে লাগলেন।(62)
যাই হোক, আশ্রমের অন্যান্য ঋষির বৌরা মহাদেবকে দেখে এতোটাই কামার্ত হলেন যে, সবকিছু ভুলে কামের তাড়নায় মহাদেবের পেছনে পেছনে ঘুরতে লাগলেন।(63)
মত্ত হাতিকে যেমন হস্তিনীরা অনুসরণ করে, ঠিক তেমন ঋষি পত্নীরাও সবকিছু ভুলে মহাদেবকে অনুসরণ করতে লাগলেন।(64)
♦ভার্গব ও আঙ্গিরস ঋষিরা পত্নীদের এইরকম কামার্ত দেখে রেগে গিয়ে বললেন, এই ল্যাংটো পাগলের (মহাদেবের) লিঙ্গ কেটে মাটিতে পড়ে যাক।(65)
ঋষিদের অভিশাপের ফলে, মহাদেবের লিঙ্গ ছিন্ন হয়ে মাটিতে পড়লো কিন্তু মহাদেবের সেই ছিন্ন লিঙ্গ যখন মাটি ভাঙ্গতে আরম্ভ করলো তখন মহাদেব অদৃশ্য হলেন।(66)♦
শিবের লিঙ্গ,মাটি ভেঙ্গে রসাতলে প্রবেশ করলো।তার ফলে,ব্রহ্মান্ড চৌচির হয়ে গেলো।(67)
সমস্ত পৃথিবী, পর্বত,মহাসাগর,পাতাল আদি সবকিছুই চৌচির হয়ে গেলো।(68)
♦ব্রহ্মা ও বিষ্ণু বললেন,হে শঙ্কর!
আপনার এই যে লিঙ্গ মাটিতে পতিত বা ছিন্ন হয়ে পড়েছে,সেই ছিন্ন লিঙ্গ পুনরায় গ্ৰহণ করুন। এইজন্যই আপনার স্তব করছি।(83)
মহাদেব বললেন,হে ব্রহ্মা ও বিষ্ণু,
সমস্ত দেবতারা যদি আমার এই লিঙ্গের অর্চনা করেন তবেই আমি পুনরায় এই লিঙ্গ গ্ৰহণ করতে পারি,না হলে গ্ৰহণ করবো না।(84)♦
♦বিশ্লেষণ_ দেখলেন তো, মহাদেবের কাটা লিঙ্গের জোর!!
আর লিঙ্গ বলতে এখানে শিবের যৌনাঙ্গকেই বুঝিয়েছে।

বামন পুরাণের দ্বিতীয় প্রমাণ♦
♦ দ্বিতীয় প্রমাণ:-----
•মুনিদের বৌদের স্পর্শে শিবের, লিঙ্গের বিরাট আকৃতি ধারণ।
•মুনিদের,কাঠ-পাথর আদি দিয়ে ঠুকে ঠুকে শিবের লিঙ্গ ছেদন।
♦ দ্বিতীয় গল্প:----
ততো রুদ্র উবাচেদং দেবীং দেবঃ স্মিতাননঃ।
তিষ্ঠ ত্বমত্র বাস্যামি যত্রৈতে মুনিসত্তমাঃ।।(54)
ইত্যুক্তা তু ততো দেবী শঙ্করেণ মহাত্মনা।
গচ্ছস্বেত্যাহ মুদিতা ভর্ত্তারং ভুবনেশ্বরী।।(55)
যত্র তে মুনয়ঃ সর্বে কাষ্ঠলোষ্ট্রসমাশ্রিতাঃ।
অধায়ানা মহাভাগাঃ কৃতাগ্নি সদনক্রিয়াঃ।।(56)
তান্ বিলোক্য ততো দেবো নগ্নঃ সর্বাঙ্গসুন্দরঃ।
বনমালাকৃতাপীড়ো যুবা ভিক্ষাকপালভৃৎ।।(57)
আশ্রমে পর্যটন্ ভিক্ষাং মুনীনাং নিয়তাত্মনাম্।
দেহি ভিক্ষাং ততশ্চোক্তা সভ্রমন্নাশ্রমং যযৌ।।(58)
তং বিলোক্যাশ্রমগতং যোষিতো ব্রহ্মবাদিনাম্।
সকৌতুকস্বভাবেন তস্য রূপেণ মোহিতাঃ।।(59)
প্রোচুঃ পরস্পরং কার্য্যমস্তি পশ্যাম ভিক্ষুকম্।
পরস্পরমিতীবোক্তা গৃহ্য মূলফলং বহু।।(60)
গৃহাণ ভিক্ষামূচুস্তাস্তং দেবং মুনিযোষিতঃ।
স তু ভিক্ষাকপা‌লং তৎ প্রসার্য্য বহু সাদরং।।(61)
দেহি ভক্ষাং শিবং বোস্তু ভবতীভ্যস্তপোধনাঃ।
হসমানন্তু দেবেশ স্তত্র দেব্যা নিরীক্ষিতঃ।।(62)
তস্মৈ দত্ত্বৈব তাং ভিক্ষাং পপ্রচ্ছুস্তাঃ স্মরাতুরাঃ।
নার্য্য উচুঃ
কোহসৌ নাম ব্রতবিধিস্তয়া তাপস সেব্যতে।।(63)
যত্র নগ্নেন লিঙ্গেন বনমালাবিভূষিতঃ।
ভবান্ বৈ তাপসো হৃদ্যো হৃদ্যা স্মো যদি মন্যসে ।।(64)
ইত্যুক্তস্তাপস্তাভিঃ প্রোবাচ হসিতাননঃ।
ইদং মম ব্রতং কিঞ্চিন্ন রহস্যং প্রকাশতে।।(65)
শৃণ্বতি বহবো যত্র তত্র ন বিদ্যতে।
তস্য ব্রতস্য সুভগা ইতি মত্বাগমিষ্যথ।।(66)
এবমুক্তাস্তদা তেন তাঃ প্রত্যূচুস্তদা মুনিম্।
ততোহভ্যেত্য গমিষ্যামি মুনে নঃ কৌতুকং মহৎ।।(67)
ইত্যুক্তা তাস্তদাতীব জগৃহুঃ পাণিপল্লবৈঃ।
কাচিৎকন্ঠে সকন্দর্পা বাহুভ্যাং কাচিৎ কামপরা তথা।।(68)
জানুভ্যামপরা নাভ্যাং কেশেষু লুন্ঠিতাপরা।
অপরা তু কটীবন্ধে অপরা পাদয়োরপি।।(69)
ক্ষোভং বিলোক্য মুনয় আশ্রমেষু স্বযোষিতাম্।
হন্যতামিতি সংভাষ্য কাষ্ঠপাষাণপাণয়ঃ।।(70)
পাতয়ন্তি স্ম দেবস্য লিঙ্গমূদ্বুধ্য ভীষণম্।
পাতিতে তু ততো লিঙ্গে গতোহস্তার্দ্ধানমীশ্বরঃ।।(71)
দেব্যা স ভগবান্ রুদ্রঃ কৈলাসং নগমাশ্রিতঃ।
পতিতে দেবদেবস্য লিঙ্গে নষ্টে চরাচরে।।(72)
♦বামন পুরাণ_43 অধ্যায়_শ্লোক_54-72
♦ অনুবাদ _তখন,ঈষৎ হেসে,মহাদেব পার্বতীকে বললেন,দেবি!! আমি তোমার সন্দেহ দূর করছি তুমি এইখানেই থাকো। যেখানে বালখিল্যগণ আছে আমি সেইখানে যাচ্ছি।
সব শুনে দেবী পার্বতী বললেন,তাই হোক! আপনি ওখানে যান!
এরপর, কাঠ-ইঁট-পাথরের মাঝখানে অবস্থিত বালখিল্য মুনিদের দেখে, মহাদেব গলায় বনমালা ও হাতে ভিক্ষাপাত্র নিয়ে ল্যাংটো রূপবান যুবকের রূপ ধারণ করে,ঋষিদের আশ্রমে ভিক্ষার জন্য ভ্রমণ করতে করতে বালখিল্য মুনিদের আশ্রমে গমন করে বললেন,"ভিক্ষা দাও,ভিক্ষা দাও"।
এইদিকে মুনিদের বৌরা, অপূর্ব সুন্দর ল্যাংটো যুবককে (শিব) দেখে মুগ্ধ হয়ে গেলেন এবং মেয়েদের স্বাভাবিক কৌতুহল বশতঃ ল্যাংটো মহাদেবকে নিয়ে নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে
অনেক ফলমূল সঙ্গে নিয়ে মহাদেবকে বললেন, ভিক্ষুক! আমরা এই ভিক্ষা দিচ্ছি গ্রহণ করো।
এই সময় ঋষিদের বৌরা কামার্ত হৃদয়ে জিজ্ঞাসা করলেন ,হে তাপস! তুমি যে এই ব্রত গ্রহণ করেছ,এই ব্রতের নাম কি? এটা কি ধরনের ব্রত? আমরা দেখছি, তুমি বনের মালা তোমার লিঙ্গতে জড়িয়ে রেখেছো।তোমাকে খুব সুন্দর দেখতে।
হে তাপস! তুমি যদি এই ব্রত বিস্তারিত বলার জন্য রাজি হও, তাহলে এই ব্রত পালন করে আমরাও তোমার মতো সুন্দর দেখতে হতে পারি!
এই কথা শুনে হাসিমুখে মহাদেব বললেন,এই ব্রতের কথা তোমাদের বলতে আমার কোনো অসুবিধা নেই, কিন্তু যেখানে অনেক পুরুষ থাকে সেখানে বললে এই ব্রত নষ্ট হয়ে যাবে।
তাই তোমাদের যদি ইচ্ছা হয়,আমার সাথে নির্জন স্থানে আসো।
মহাদেবের এই কথা শুনে,ঋষিদের বৌরা বললেন, তোমার ব্রতের কথা শোনার জন্য আমরা অস্থির হয়ে যাচ্ছি!চলো, তোমার সাথে আমরা সবাই যাচ্ছি।
এই বলে মুনিদের বৌরা কামার্ত হয়ে হাত দিয়ে শিবের অঙ্গ শক্ত মুঠোয় ধরলেন।
কেউ শিবের ঊরু, কেউ নাভি,কেউ চুল, কেউ কোমড় এবং কেউ শিবের পা ধরে নিজের দিকে টানতে লাগলেন।
এইদিকে বালখিল্য মুনিরা আশ্রমের মধ্যে নিজেদের বৌদের এইরকম কামার্ত আচরণ দেখে,"এই পাগলকে মেরে ফেলো,এই ধর্ম জ্ঞানহীন ল্যাংটোকে মেরে ফেলো" এইরূপ চিৎকার করতে করতে,কাঠ পাথর প্রভৃতি নিয়ে,শিবের দিকে ছুটে গেলেন।
♦ এইদিকে মেয়েদের স্পর্শে শিবের লিঙ্গ ভীষণ আকার ধারণ করেছে।♦
♦ বালখিল্য মুনিরা,কাঠ,পাথর দিয়ে আঘাত করে শিবের লিঙ্গ ছিন্ন করে মাটিতে ফেলে দিলেন।♦
লিঙ্গ মাটিতে পড়া মাত্রই শিব অদৃশ্য হয়ে কৈলাসে পার্বতীর কাছে চলে গেলেন।
এইদিকে,শিবের সেই লিঙ্গ মাটিতে পড়া মাত্রই সমস্ত জগত ধ্বংস হবার উপক্রম হলো।

শিব পুরাণের প্রমাণ♦
পুরাণ থেকে প্রমাণ সহকারে পোস্ট করলেই অনেকেই চীৎকার করেন এই বলে যে,পুরাণ বিকৃত।
আমি তাঁদের কাছে জানতে চাই কোনো তথাকথিত হিন্দু সংগঠন কি পুরাণ বাতিল বলে ঘোষণা করেছেন?!!
আমরা সবাই জানি করেননি।
শৈবদের কাছে শৈব পুরাণগুলো আর বৈষ্ণবদের কাছে বৈষ্ণব পুরাণগুলো খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
তাই,পুরাণ বিকৃত এই যুক্তির গ্ৰহণযোগ্যতা নেই।
♦গীতা প্রেস থেকে প্রকাশিত, হিন্দী শিব পুরাণের কোটিরুদ্র সংহিতা ও নবভারত পাবলিশার্স থেকে প্রকাশিত
শিব পুরাণের,জ্ঞান সংহিতা থেকে শিব লিঙ্গ বলতে যে,শিবের লিঙ্গকেই বোঝায় তার প্রমাণ দিলাম:---
♦ দেবদারু বনে,শিবের ল্যাংটো হয়ে প্রবেশ ও ঋষিদের বৌদের সাথে কামাচার।
♦ঋষিদের অভিশাপে শিবের লিঙ্গ ছিন্ন হওয়া।
♦ আধুনিক রকেটের মতো,কাটা লিঙ্গ থেকে আগুন নির্গমন।
♦ পার্বতীর যোনিতে শিবের কাটা লিঙ্গের স্থাপন।
ভারতের সবচেয়ে বড়ো, তথাকথিত হিন্দু ধর্মগ্ৰন্থ ছাপানোর সংস্থা হলো,গীতা প্রেস।গীতা প্রেসের দ্বারা প্রকাশিত, হিন্দী শিবপুরাণের রেফারেন্স :---
💥শিব পুরাণ, কোটিরুদ্রসংহিতা_12 অধ্যায়ের_5 থেকে 47 শ্লোক।💥
•নবভারত পাবলিশার্সের প্রকাশিত শিব পুরাণের রেফারেন্স:---
♠শিব পুরাণ_জ্ঞানসংহিতা_42 অধ্যায়ের_5 থেকে 47 শ্লোক।♠
•••সূত উবাচ:----
পুরা দারুবনে যাতং যদরত্তন্ত দ্বিজন্মনাম্।
তদেব শ্রূয়তাং সম্যক্ কথয়ামি যথাশ্রুতম্ ॥ (5)
দারুনাম বনং শ্রেষ্ঠং তত্রাসন্ ঋষিসত্তমাঃ।
শিবভক্তাঃ সদা নিত্যং শিষধ্যানপরায়ণাঃ ।।(6)
ত্রিকালং শিবপূজাঞ্চ কুৰ্ব্বন্তি স্ম নিরন্তরম্।
স্তোতৈর্নানাবিধৈর্দেবং মন্ত্রৈর্বা ঋষিসত্তমাঃ।।(7)
এবং সেবাং প্রকুর্ব্বন্তো ধ্যানমার্গপরায়ণাঃ ।
তে কদাচিদ্বনে যাতাঃ সমিদাহরণায় চ।।(😎
এতস্মিন্নস্তরে সাক্ষাৎ শঙ্করো নীললোহিতঃ ।
বিরূপঞ্চম সমাস্থায় পরীক্ষার্থং সমাগতঃ ।।( 9)
দিগম্বরোহতিতেজস্বী
ভূতিভূষণভূষিতঃ ।
চেষ্টাঞ্চৈব কটাক্ষঞ্চ হস্তে লিঙ্গঞ্চ ধারয়ন্।।(10)
মনাংসি মোহয়ন্ স্ত্রীনামাজগাম হরো স্বয়ম্ ।
তং দৃষ্টা ঋষিপত্ন্যস্তাঃ পরং ত্রাসমুপাগতাঃ।।(11)
বিহ্বলা বিস্মিতাশ্চৈব সমাজগ্মু স্তথা পুনঃ।
আলিলিঙ্গুস্তথা চাস্যা করং ধৃত্বা তথাপরাঃ।।(12)
পরস্পরন্তু সংহর্ষাদগতঞ্চৈব দ্বিজন্মনাম্ ।
এতস্মিন্নেব সময়ে ঋষিবৰ্যাঃ সমাগমন্।। (13)
বিরুদ্ধং বৃত্তকং দৃষ্টা দুঃখিতাঃ ক্রোধমূৰ্চ্ছিতাঃ ।
তদা দুঃখমনুপ্রাপ্তাঃ কোহয়ং কোহয়ং তথাব্রুবন্ ।।(14)
যদা চ নোক্তবান্ কিঞ্চিৎ তদা তে পরমর্ষয়ঃ ।
উচুস্তং পরুষং তে বৈ বিরুদ্ধং ক্রিয়তে ত্বয়া।।(15)
ত্বদীয়ঞ্চৈব লিঙ্গঞ্চ পততাং পৃথিবীতলে।
ইত্যুক্তে তু তদা তৈস্তু লিঙ্গঞ্চ পাতিতং ক্ষণাৎ ।।(16)
তল্লিঙ্গঞ্চাগ্নিবৎ সৰ্ব্বং দদাহ যৎ পুরঃস্থিতম্ ।
যত্র যত্র চ তদ্‌যাতি তত্র তত্র দহেৎ পুনঃ।।(17)
পাতালে চ গতং তচ্চ স্বর্গে চাপি তথৈব চ।
ভূমৌ সৰ্ব্বত্র তদভ্রান্তং কুত্রাপি তৎ স্থিতং ন হি ।। (18)
লোকাশ্চ ব্যাকুলা জাতা ঋষয়স্তেহপি দুঃখিতাঃ।
ন শর্ম্ম লেভিরে কাপি দেবাশ্চ ঋষয়স্তথা ।। (19)
তে সর্ব্বে চ তদা দেবা ঋষয়ো যে চ দুঃখিতাঃ‌।
ন জ্ঞাতত্ত্ব শিবো যৈস্তু ব্রহ্মাণং শরণং যযুঃ ।।(20)
তত্র গত্বা তু তৎ সৰ্ব্বং কথিতং ব্রহ্মণে তদা।
ব্ৰহ্মা তদ্বচনং শ্ৰুত্বা প্রোবাচ ঋষিসত্তমান্ ।।(21)
••••ব্রহ্মোবাচ:---
জ্ঞাতারশ্চ ভবন্তো বৈ কুৰ্ব্বন্তি গর্হিতং পুনঃ।
অজ্ঞাতারো যথা কুর্য্যঃ কিং পুনঃ কথ্যতে তদা।।(22)
বিরুধ্যৈবং শিবং দেবাঃ কুশলং কঃ সমীহতে।
গৃহে সমাগতং দূরাতিথিং পরামৃষেৎ ॥ (23)
তস্যৈব সুকৃতং নাত্বা স্বীয়ঞ্চ দুষ্কৃতং পুনঃ।
সংস্থাপ্য চাতিথির্যাতি কিং পুনঃ শিবমেব চ।।(24)
যাবাল্লঙ্গং স্থিরং নৈব জগতাং ত্রিতয়ে শুভম্।
জায়তে ন তদা ক্বাপি সত্যমেতদ্বদাম্যহম্।।(25)
ভবদ্ভিশ্চ তথা কার্য্যং যথা স্বাস্থং ভবেদিহ।
ইত্যুক্তাস্তে প্রণম্যোচুঃ কিং কার্য্যং তৎ সমাদিশ।।(26)
ইত্যুক্তশ্চ তদা ব্রহ্মা তান্ প্রোবাচ তদা স্বয়ম্।
আরাধ্য গিরিজাং দেবীং প্রার্থয়ধ্বং শুভাং তদা।।(27)
যোনিরূপং ভবেচ্চেদ্বৈ তদা তৎ স্থিরতাং ভজেৎ।
তদা প্রসন্নাং তাং দৃষ্টা তদেবং কুরুতে পুনঃ।।(28)
শিবস্য শরণং গত্বা প্রার্থিতঃ শঙ্করস্তদা।
পূজিতঃ পরয়া ভক্ত্যা প্রসন্নঃ শঙ্করস্তদা।।(38)
পার্ব্বতীঞ্চ বিনা নান্যা লিঙ্গং ধারয়িতুং ক্ষমা।
তয়া ধৃতঞ্চ শান্তিঞ্চ গমিষ্যতি ন সংশয়ঃ।।(39)
গৃহীত্বা চৈব ব্রহ্মাণং গিরিজা প্রার্থিতা তদা।
প্রসন্নাং গিরিজাং কৃত্বা বৃষভধ্বজমেব চ।।(40)
পূর্ব্বোক্তঞ্চ বিধিং কৃত্বা স্থাপিতং লিঙ্গমুত্তমম্।
মন্ত্রোক্তেন বিধানেন দেবৈশ্চ ঋষিভিস্তদা।(41)
স্তবনৈঃ পূজনৈর্মন্ত্রৈঃ সন্তোষ্য বৃষভধ্বজম্।
স্থিতাঃ সম্যক্ পরং কৃত্বা সর্ব্বেষাং ধর্ম্মহেতবে।।(42)
শিবোহপি কৃপয়া যুত্তো হ্যব্রবীং পরমং বচঃ।
প্রসন্নং মাঞ্চ জানীত সুখং স্যাৎ সর্ব্বদা নৃণাম্।।(43)
ইত্যুক্তে চ তদা তেন প্রসন্নাঃ সর্ব্বদেবতাঃ।
ঋষয়শ্চ প্রণম্যৈব স্তুতা স্তুতা পুনঃপুনঃ।।(44)
ব্রহ্মণা বিষ্ণুনা চাপি রুদ্রেনৈব পুনস্তথা।
কৃতং সর্ব্বং সুখঞ্চাত্র তৈস্তদা চ দয়ালুভিঃ।।(45)
লোকানাং স্থাপিতে লিঙ্গে। কল্যাণঞ্চাভবৎ তদা।।(46)
বিশেষোহত্র কথং লভ্যেং শ্রূয়তামৃষিসত্তমাঃ।
রুদ্রেণ স্থাপিতং যচ্চ তল্লিঙ্গমিদমেব চ।।(47)
♦ অর্থ_সূতমুনি বললেন,
পূর্বে দেবদারু বনে,ঋষিদের সাথে যে ঘটনা ঘটেছিলো তা আমি বর্ণনা করছি, মনোযোগ দিয়ে শুনুন।
দেবদারু বনে,ঋষিরা নিজেদের স্ত্রীদের সাথে বাস করতেন,তাঁরা সবাই শিব ভক্ত ছিলেন।একদিন ঋষিরা,স্ত্রীদের রেখে,জঙ্গলে গেছিলেন কাঠ আদি আনতে।
তখন সেই সময়েই স্বয়ং মহাদেব,বিরূপ ধারণ করে, পরীক্ষা করার জন্য দেবদারু বনে চলে এলেন।অত্যন্ত তেজস্বী,সারা গায়ে ছাই মাখা, ল্যাংটো দেহধারী মহাদেব,তাঁর লিঙ্গ হাতে নিয়ে নানা ধরণের চোখের ইশারা ও ভাবভঙ্গী প্রদর্শন করছিলেন!
তাই দেখে, ঋষিদের স্ত্রীরা প্রথমে অত্যন্ত ভয় পেয়ে যান। এরপর তাঁরা অত্যন্ত কামার্ত হয়ে মহাদেবের কাছে আসেন।ঋষিদের স্ত্রীরা,কেউ মহাদেবকে বুকের মধ্যে জড়িয়ে ধরেন, কেউ তাঁর হাত ধরেন, এইভাবে পরম আনন্দে তাঁরা শিবের সাথে মিলিত হলেন।
ঠিক এই সময়ে,ঋষিরা জঙ্গল থেকে চলে আসেন,তাঁরা এই সমস্ত অসভ্যতা দেখে অত্যন্ত দুঃখে আর রাগে অত্যন্ত অধৈর্য হয়ে পড়েন। খুব দুঃখিত হৃদয়ে ঋষিরা বললেন,"এ কে,এ কে !! ?" কিন্তু মহাদেব কোনো উত্তর দিলেন না।
♦তখন ঋষিরা,সেই ল্যাংটো শিবকে বললেন, "রে দুরাচার !তুই ন্যায়-বিরুদ্ধ ও ধর্ম বিরুদ্ধ কর্ম করছিস!
তোর ওই লিঙ্গ এখনই ছিন্ন হয়ে মাটিতে পড়ে যাক!"
এই অভিশাপের ফলে,ওই ল্যাংটো শিবের লিঙ্গ,ছিন্ন হয়ে মুহূর্তের মধ্যে মাটিতে পড়ে।♦
তারপর,শিবের সেই ছিন্ন লিঙ্গটি আগুনের মতো জ্বলতে শুরু করে।ওই জ্বলন্ত লিঙ্গ,তার গতিপথের সমস্ত স্থান জ্বালাতে জ্বালাতে স্বর্গ,মর্ত্য,পাতালে দৌড়াতে শুরু করে।কোনো ভাবেই সেই লিঙ্গ শান্ত হতে চাইছিলো না।
এই জগৎ সংসার,যখন ভয়ে ব্যাকুল হয়ে যায় তখন দুঃখী হয়ে দেবতাদের সাথে ঋষিরা, ব্রহ্মার কাছে যান পরামর্শ করার জন্য।
ব্রহ্মাকে, প্রণাম করে তাঁরা সমস্ত ঘটনা বলেন।তাঁদের কথা শুনে ব্রহ্মা বলেন, মহাদেবের মতো, অতিথির সৎকার না করে,তোমরা খুব ভুল করে ফেলেছো। যতক্ষণ পর্যন্ত না এই লিঙ্গ স্থাপিত হচ্ছে ততক্ষণ ত্রিলোকে শান্তি স্থাপিত হবে না।তারপর ব্রহ্মা,লিঙ্গ কে স্থাপিত করার উপায় বের করলেন।তখন ব্রহ্মা বললেন হে দেবতাগণ! তোমরা পার্বতী কে প্রসন্ন করে শিবের প্রার্থনা করো , যদি পার্বতী যোনীরূপ ধারণ করে তাহলেই একমাত্র এই লিঙ্গ স্থির হবে।
••(5 থেকে 28 নং শ্লোক।)••
এই কথা শুনে ঋষি ও দেবতারা ব্রহ্মাকে প্রণাম করে,সারা বিশ্ব সংসারের সুখের যিনি কারণ,সেই শিবের শরণ গ্ৰহণ করেন।
♦তখন পরম ভক্তি ও প্রার্থনার দ্বারা পূজিত মহাদেব,প্রসন্ন হয়ে বললেন - হে দেবতাগণ! হে ঋষিগণ!তোমরা আমার কথা শোন!যদি আমার এই লিঙ্গ যোনিতে স্থাপিত হয় তাহলেই একমাত্র ত্রিলোকে সুখ হতে পারে।পার্বতী ছাড়া আর কোনো স্ত্রী, আমার এই লিঙ্গকে ধারণ করতে পারবে না।পার্বতীর যোনীতে যদি আমার লিঙ্গ ধারণ করানো হয় তাহলে খুব তাড়াতাড়ি,সবাই শান্তি প্রাপ্ত হবেন।♦
এই কথা শুনে, ঋষি ও দেবতাগণ প্রসন্ন হয়ে ব্রহ্মাকে সাথে নিয়ে পার্বতীর প্রার্থনা শুরু করলেন।পার্বতীকে প্রসন্ন করে,মহাদেবকেও প্রসন্ন করলেন তারপর সেই লিঙ্গ, যোনীতে স্থাপিত হলো।
তখন থেকেই এই জগতে শিবের লিঙ্গ ও তার সাথে ,পার্বতীর যোনী পূজার প্রচলন হয়।
(38-47 নং শ্লোক।)

শিব লিঙ্গ নিয়ে,দেবী ভাগবত পুরাণের প্রমাণ দেবার আগে,"যেই রাম যেই কৃষ্ণ ইদানিং এই দেহে রামকৃষ্ণ", অবতার বরিষ্ঠ(বিবেকানন্দের ভাষায়) শ্রীশ্রী রামকৃষ্ণ পরমহংসের লিঙ্গ লীলার প্রমাণ দেখুন:--
♦শ্রীশ্রীরামকৃষ্ণ পরমহংসদেবের নিজের লিঙ্গকে শিব লিঙ্গ ভেবে পূজা ও লিঙ্গতে মুক্তা পড়ানো:---
•শ্রীরামকৃষ্ণ বলছেন, (ভক্তদের প্রতি)---"পরমহংসের স্বভাব ঠিক পাঁচ বছরের বালকের মতো। সব চৈতন্যময় দেখে ।
♦পরমহংসের আবার উন্মাদের অবস্থা হয়। যখন উন্মাদ হলো, শিবলিঙ্গ বোধে নিজের লিঙ্গ পূজা করতাম। জীবন্ত লিঙ্গ পূজা। একটা আবার মুক্তা পড়ানো হতো!! এখন আর পারি না।"♦
••তথ্যসূত্র_শ্রীশ্রীরামকৃষ্ণ কথামৃত_4র্থ ভাগ_পঞ্চদশ খন্ড_দ্বিতীয় পরিচ্ছেদ_পূর্বকথা জন্মভূমি দর্শন (1869-70)_বালক শিবরামের চরিত্র _সিহোড়ে হৃদয়ের বাড়ী দূর্গা পূজা_ঠাকুরের উন্মাদ কালে লিঙ্গপূজা।
••রামকৃষ্ণ পরমহংসও শিবের লিঙ্গ বলতে যৌনাঙ্গই বুঝতেন!!
♦এবার লিঙ্গ নিয়ে দেবী ভাগবতের প্রমাণ দেখুন :---
শম্ভোঃ পপাত ভুবি লিঙ্গমিদং প্রসিদ্ধং,
শাপেন তেন চ ভৃগোর্বিপিনে গতস্য।
তং যে নরা ভুবি ভজন্তি কপালিনন্তু,
তেষাং সুখং কথমিহাপি পরত্র মাতঃ!।।
•দেবীভাগবতম্-পঞ্চম স্কন্ধঃ_19 অধ্যায়_শ্লোক_19
♦অনুবাদঃ- হে মাতা!!
সতীর বিচ্ছেদের পর মহাদেব,বনের মধ্যে অবস্থিত ঋষিদের আশ্রমে গমন করলে,ভৃগু মুনির অভিশাপে, মহাদেবের লিঙ্গ মাটিতে ছিন্ন হয়ে পড়ে যায়,এই বিখ্যাত ঘটনা সবাই জানেন!!
অতএব,সেই শিব যিনি নিজের লিঙ্গ নিজেই রক্ষা করতে সমর্থ নন এবং যিনি মড়ার খুলি আদি অশুচি পদার্থ সমূহ ধারণ করেন সেই শিবকে যে মানুষেরা আরাধনা করেন,তাঁদের ইহকালে ও পরকালে কি সুখ লাভ হবে?
অর্থাৎ,যে শিব নিজের লিঙ্গ নিজেই রক্ষা করতে পারেন না তিনি তাঁর ভক্তদের কিভাবে রক্ষা করবেন?!!


♦ কূর্ম পুরাণের প্রমাণ (ব্রাহ্মী সংহিতা):---
•অনুবাদক_পঞ্চানন তর্করত্ন
♦ অনেকেই বলছেন,সংস্কৃতে লিঙ্গ শব্দের অর্থ, চিহ্ন।আমি তাঁদের বলতে চাই,পুরাণ লেখকগণ ও পুরাণ অনুবাদকগণ কি সংস্কৃত কম বুঝতেন নাকি?!!
শাক দিয়ে মাছ ঢাকার অপচেষ্টা!!
শিবের লিঙ্গ অর্থাৎ শিবের যৌনাঙ্গ!
এটাই সত্যি!♦
♦শিব ও নারীরূপী বিষ্ণুর দেবদারু বনে প্রবেশ।
♦ ঋষিদের দ্বারা শিবকে মারধর এবং শিবের, নিজেই, নিজের লিঙ্গ ছিন্ন করা!
কথং দারুবনং প্রাপ্তো ভগবান গোবৃষধ্বজঃ।
মোহয়ামাস বিপ্রেন্দ্রান্ সূত তদ্বত্তুমর্হসি।।(1)
•সূত উবাচ:----
পুরা দারুবনে রম্যে দেবসিদ্ধনিষেবিতে।
সপুত্রদারা মুনয়স্তপশ্চেরুঃ সহশ্রশঃ।।(2)
প্রবৃত্তং বিবিধং কর্ম প্রকুর্বাণা যথাবিধি।
যজন্তি বিবিধৈর্বজ্ঞৈস্তপস্তি চ মহর্ষয়ঃ।।
(3)
তেষাং প্রবৃত্তিবিস্ত-চেতসামধ শূলভৃৎ।
ব্যাখ্যাপয়ন্ সদা দোষং যযৌ দারুবনং হরঃ।।(4)
কৃত্বা বিশ্বগুরুং বিষ্ণুং পার্শ্বে দেবো মহেশ্বরঃ।
যযৌ নিবৃত্তবিজ্ঞানস্থাপনার্থঞ্চ শঙ্করঃ।।
(5)
আস্থায় বিপুলং বেষমুনবিংশতিবৎসরঃ।
লীলালসো মহাবাহুঃ পীনাঙ্গশ্চারুলোচনঃ।।(6)
চামীকরবপূঃ শ্রীমান পূর্ণচন্দ্রনিভাননঃ।
মত্তমাতঙ্গগমনো দিগ্বাসা জগদীশ্বরঃ।।(7)
জাতরূপময়ীং মালাং সর্বরত্নৈরলঙ্কতাম্।
দধানো ভগবানীশঃ সমাগচ্ছতি সম্মিতঃ।।(😎
যোহনস্তঃ পুরুষো যোনির্লোকানামব্যয়ো হরিঃ।।
স্ত্রীবেষং বিষ্ণুরাস্থায় সোহনুগচ্ছতি শূলিনম্।।(9)
সম্পূর্ণচন্দ্রবদনং পীনোন্নতপয়োধরম।
শুচিস্মিতং সুপ্রসন্নং রান্নু পুরকদ্বয়ম্।।(10)
সুপীতবসনং দিব্যং শ্যামলং চারুলোচনম্।
উদারহংসগমনং বিলাসি-সুমনোহরম্।।
(11)
এবং স ভগবানীশো দেবদারুবনং হরঃ।
চচার হরিণা সাদ্ধং মায়য়া মে হুয়ন জগৎ।।
(12)
দৃষ্টা চরন্তং বিশ্বেশং তত্র তত্র পিনাকিনম্।
মায়য়া মোহিতা নার্য্যো দেবতেবং
সমন্বয়ূঃ।।(13)
বিস্রন্ত বস্ত্রা ভরণাস্ত্যক্তা লজ্জাং পতিব্রতঃ।
সহৈব তেন কামার্ত্তা বিলাসিন্যশ্চরন্ত হি।।(14)
ঋষীকাং পুত্রকা যে সূর্যবানো জিতমানসাঃ।
অন্বগচ্ছন হৃষিকেশং সর্বে কামপ্রপীড়তা।।(15)
গায়ন্তি নৃত্যন্তি বিলাসযুক্তা।
নারীগণা নায়কমেকমীশম্।
দৃষ্টা সপত্নীকমতীবকান্ত-
মিষ্টং তথালিঙ্গিতমচরন্তি।।(16)
দৃষ্টা নারীকুলং রুদ্রং পুত্রানপি চ কেশবম্।
মোহয়ন্তং মুনিশ্রেষ্ঠাঃ কোপং সদাশিবে ভৃষণ।(21)
অতীব পরুষং বাক্যং প্রোচুর্দেবং রূপদ্দিনম্।
শেপুশ্চ শাপৈর্বিবিধৈর্মায়য়া তস্য মোহিতাঃ।।(22)
ইত্যুক্তা প্রযযৌ শ্রীমানুগৃহ্য পতিব্রতাম্।
তাড়য়াঞ্চক্রিরে দন্ডৈর্যষ্টিভির্মুষ্টিভিদ্বিজাঃ।।(39)
দৃষ্টা চরন্তং গিরিশং নগ্নং বিকৃতলক্ষণম্।
প্রোচুরেতদ্ভবান লিঙ্গমুপৎ টন্নতৃ দুর্মতে।।(40)
তানব্রবীন্মহাযোগী কবিষামীতি শঙ্করঃ।
বুষ্মাকং মামকে লিঙ্গে যদি দ্বেষোহভিজায়তে।।(41)
ইত্যুক্তোৎপাটয়ামাস ভগবান্ ভগনেত্রহা।
নাপশ্যংস্তৎক্ষণাচ্চেশং কেবং লিঙ্গমেব চ।।(42)
তদোৎপাতা বভূবুর্হি লোকানাং ভয়শংসিনঃ।
নারাজত সহস্রাংশুশ্চচাল পৃথিবী পুনঃ।
নিস্পভাশ্চ গ্ৰহঃ সর্বে চক্ষুভে চ মহোদধিঃ।।(43)
যদদৃষ্টং ভবতা তস্য লিঙ্গং ভূবি নিপাতিতম্।
তল্লিঙ্গানুকৃতীশস্য কৃত্বা লিঙ্গমনুত্তমম্।।(87)
পূজয়ধ্বং সপত্নীকাঃ সাদরং পুত্রসংযুতাঃ।
বৈদিকৈরেব নিয়মৈর্বিবিধৈব্রহ্মচারিণঃ।।(88)
♦কূর্ম পুরাণ _উপরিভাগ_37 অধ্যায়_শ্লোক_1-11,12-16,21-22,40-43, 87-88
♦অর্থ_ঋষিগণ বললেন,হে সূত!!
ভগবান বৃষভধ্বজ(শিব) কি কারণে দেবদারু বনে উপস্থিত হয়ে ব্রাহ্মণদের মোহিত করে ছিলেন?
•••সূত বললেন:---
অতীত কালে,দেবতা এবং সিদ্ধগণদের পছন্দের স্থান সুন্দর দেবদারু বনে হাজার হাজার মুনি ছেলে ও বৌদের সাথে তপস্যা করতেন।
দেবদারু বনে বসবাসকারী মুনিরা নানা রকম কর্ম করার উদ্দেশ্যে বিবিধ যজ্ঞ ও তপস্যা করতে লাগলেন।
তারপর কামনাতে আসক্ত এই সমস্ত মুনিগণের দোষ জানাবার জন্য এবং নিষ্কাম কর্মের প্রশংসা করার উদ্দেশ্যে ভগবান মহাদেব বিশ্বগুরু ভগবান বিষ্ণুর(দেবী রূপধারী) সঙ্গে দেবদারু বনে উপস্থিত হলেন।
উনিশ বছরের ল্যাংটো, মোটা যুবকের রূপ ধরে ধীরগতি,হাঁটু পর্যন্ত লম্বা হাত, রূপবান,সোনার গহনা ও মালা পড়ে মহাদেব দেবদারু বনে প্রবেশ করলেন।
অনন্ত, অবিনাশী, সর্ব জগতের সৃষ্টি কর্তা,বিষ্ণু, মেয়ের রূপ ধারণ করে মহাদেবের পশ্চাতে এলেন।
ভগবান বিষ্ণু অতীব সুন্দরী নারী রূপ ধারণ করেছিলেন।
সেই নারীর পূর্ণিমার চাঁদের মত সুন্দর মুখ,বড় বড় সুগঠিত স্তন,শ্যামল বর্ণ, সুন্দর চোখ,মিষ্টি ও পবিত্র হাসি ছিল অতীব মনোহর।
নারীরূপী বিষ্ণু পীত বস্ত্র পরিধান করেছিলেন এবং রাজহাঁসের মত গমনের সময় তাঁর পায়ের নূপুরের শব্দ পাওয়া যাচ্ছিল।(1-11)
•এইভাবে ভগবান মহেশ্বর নিজের মায়ার দ্বারা জগৎকে মোহিত করে নারী বেশধারী হরি বা বিষ্ণুর সাথে দেবদারু বনে বেড়াতে লাগলেন।
রূপবান মহাদেবকে ল্যাংটো অবস্থায় দেখে দেবদারু বনের মুনিদের পতিব্রতা স্ত্রীরা মুগ্ধ হয়ে ও কামের তাড়নায় লুন্ঠিত বেশ ও ভূষণ যুক্ত হয়ে বেশ্যাদের মতো সমস্ত লজ্জা ত্যাগ করে শিবের সাথে সাথে চলতে থাকলেন।
ঋষিদের জিতেন্দ্রিয় তরুণ ছেলেরাও কামার্ত হয়ে, নারীরূপী বিষ্ণুর পেছনে পেছনে চলতে লাগলো।
ঋষি পত্নীরা,মহেশ্বরের রূপে মুগ্ধ হয়ে বেশ্যাদের মতো,নাচ গান করছিল এবং কখনো কখনো মহাদেবকে জড়িয়েও ধরছিল।
এইদিকে মুনিদের ছেলেরা, নারীরূপী বিষ্ণুর সামনে নাচ গান করছিল, হাসছিল কেউ কেউ ভ্রূ দ্বারা ইঙ্গিত করছিল।(12-16)
•রুদ্র নারীদের ও কেশব পুত্রদের মুগ্ধ করছেন চোখের সামনে এই ধরণের কান্ড দেখে মুনিরা খুব রেগে গেলেন।
মহাদেবের মায়ায় মোহিত ঋষিরা,শিবকে অত্যধিক কু-বাক্য বললেন এবং তাঁকে অভিশাপ দিলেন।(21-22)
•অরুন্ধতীর ঘর থেকে যেই মহাদেব বের হলেন তৎক্ষণাৎ ঋষিরা চড় কিল,ঘুঁষি ও লাঠি দিয়ে মহাদেবকে মারধর করতে আরম্ভ করলেন।
♦তারপর ঋষিরা ল্যাংটো ও বিকৃত মানসিকতার শিবকে বললেন,ওরে দুর্মতি!তুই তোর এই লিঙ্গ উপড়ে ফেল।
শিব তখন বললেন,আমার লিঙ্গের প্রতি আপনার যখন এতই বিদ্বেষ তখন আমার লিঙ্গ আমি অবশ্যই উপড়ে ফেলছি,এই বলে শিব নিজের লিঙ্গ উপড়ে ফেললেন। ♦
কিন্তু নিমেষের মধ্যে ঋষিরা মহাদেব,লিঙ্গ ও বিষ্ণু কাউকেই দেখতে পেলেন না!
তারপরেই সমস্ত লোকে ভয়াবহ উৎপাত আরম্ভ হল। সূর্যের আলো নিভে গেল,পৃথিবীসহ সমস্ত গ্ৰহই কাঁপতে লাগলো।
(40-41-42-43)
•(ঋষিরা তখন ব্রহ্মার কাছে গেলেন।)
••ব্রহ্মা বললেন:---
মাটিতে পড়া শিবের যে ছিন্ন লিঙ্গ তোমরা দেখেছিলে সেই লিঙ্গের অনুরূপ একটি শিব-লিঙ্গ তৈরী করে ব্রহ্মচারী হয়ে, নিজেদের স্ত্রী ও পুত্রদের সাথে বৈদিক নিয়মে সেই লিঙ্গের পূজা করো। (87-88)


♦ স্কন্দ পুরাণের প্রথম প্রমাণ♦
♦ স্কন্দ পুরাণের তিন জায়গায় শিবের লিঙ্গ পতনের কাহিনী আছে।
নাগর খন্ডের দুই জায়গায় এবং মহেশ্বর খন্ডে।
♦স্কন্দ পুরাণের প্রথম গল্প:----
♦ঋষিদের অভিশাপে ল্যাংটো শিবের লিঙ্গ ছিন্ন হয়ে মাটিতে পড়া।
♦জগতের প্রলয় আরম্ভ এবং দেবতাদের দ্বারা শিবকে পুনরায় লিঙ্গ গ্ৰহণের অনুরোধ।
♦মহাদেব বললেন,আমার বৌ নেই তাই আমার লিঙ্গের কি প্রয়োজন?!!
♦ দেবতাদের দ্বারা শিবকে তাঁর ভবিষ্যত বৌয়ের সন্ধান দেওয়া।
♦শিবের পুনরায় লিঙ্গ গ্ৰহণ।
••সূত উবাচ,
আনর্ত্তবিষয়ে চান্তি বনং মুনিজনাশ্রয়ম্।
মনোজ্ঞং সর্ব্বাসত্ত্বানাং সর্ব্বর্ত্তুফলিতদ্রুমম।।(5)
সতীবিয়োগসন্তপ্তো ভ্রমমাণ ইতস্ততঃ।
তস্মিন্ বনে সমায়াতঃ সৌম্যসত্ত্বনিষেবিতে।।(10)
ততশ্চ ভগবান্ রুদ্রো দৃষ্ট্বাশ্রমপদং তদা।
মগ্নঃ কপালমাদায় ভিক্ষার্থং প্রবিবেশ সঃ।।(12)
অথ তস্য সমালোক্য রূপং গাত্রসমুদ্ভবম্।
অদৃষ্টপূর্ব্বং তাপস্যঃ সর্ব্বাঃ কামবশং গতাঃ।।(13)
গৃহকর্ম্ম পরিত্যজ্য গুরুগুশ্রূষণানি চ।
মিথঃ সম্ভাষণং চক্রূঃ স্থানেস্থানে চ তাঃ স্থিতাঃ।।(14)
একা সা কাপি ধন্যা বা চক্রে তস্যাবগৃহনম্।
বিশ্রদ্ধা সর্ব্বগাত্রেষু তাপসন্য মহাত্মানঃ।।(15)
তধান্যাঃ কৌতুকাবিষ্টা ধাবন্ত্যঃ সর্ব্বতো দিশম্।
দৃশ্যন্তে তং সমুদ্দিষ্ট বিস্তারিতবিলোচনাঃ।।(16)
কাশ্চিদর্দ্ধানুলিপ্তাঙ্গঃ কাশ্চিদেকাঞ্জিতেক্ষণাঃ।অর্দ্ধসংযমিতৈঃ কেশৈস্তধান্যাস্ত্যক্তবালকাঃ।।(17)
এবমালোক্যমানঃ স কামিনীতির্মহেশ্বরঃ।
বভ্রাম রাজমার্গেণ ভিক্ষাং দেহিতী কীর্ত্তয়ন্।(18)
অথ তে মুনয়ো দৃষ্ট্বা তং তথা বিগতাম্বরম্।
কামোদ্ভবকরং স্ত্রীণাং প্রোচুঃ কোপারুণেক্ষণাঃ।।(19)
যস্মাৎ পাপ ত্বয়াস্মাকশ্রামোহয়ং বিড়ম্বিতঃ।
তস্মাল্লিঙ্গং পতত্বাশু তবৈব বসুধাতলে।।(20)
এতস্মিন্নস্তরে ভূমৌ লিঙ্গং তস্য পপাত তৎ।
ভিত্ত্বাথ ধরণীপৃষ্ঠং পাতালং প্রবিবেশ হ।।(21)
সোহপি লিঙ্গপরিত্যক্তো লজ্জাযুক্তো মহেশ্বরঃ।
গর্ত্তাং গুব্বাং সমাশ্রিত্য ভ্রূণরূপঃ সমাবিশৎ।।(22)
অথ লিঙ্গস্য পাতেন ত্রৈলোক্যভয়শংসিনঃ।
উৎপাতা দারুণাস্তস্থূঃ সর্ব্বত্র দ্বিজসত্তমাঃ।।(23)
শীর্ষ্যন্তে গিরিশৃঙ্গাণি পতন্ত্যল্কা দিবাপি চ।
ত্যজন্তি সাগরাঃ সর্ব্বে মর্য্যাদাং চ শনৈঃ শনৈঃ।।(24)
অথ দেবগণাঃ সর্ব্বে ভয়সন্ত্রস্তমানসাঃ।
শত্রুবিষ্ণুমুখা জগ্মুর্ষত্র দেবঃ পিতামহঃ।।(25)
♠ব্রহ্মা দেবতাদের বললেন:---
ঋষিভিঃ পাতিতং লিঙ্গং দেব দেবস্য শৃলিনঃ।
শাপেনানর্ত্তকে দেশে কলত্রার্থে মহাত্মভিঃ।।(32)
তেনৈতদ্ব্যাকুলীভূতং ত্রৈলোক্যং সচরাচম্।
তস্মাদগচ্ছামহে তত্র যত্র দেবো মহেশ্বরঃ।।(33)
যেনাস্মদ্বচনাচ্ছীঘ্রং তল্লিঙ্গং নিদধাতি সঃ।
নো চেদ্ভবিষ্যতি ব্যক্তমকালে চাপি।
ত্রৈলোক্যস্যাপি কৃৎস্নস্য সত্যমেতময়োদিতম্।।(34)
♠এরপর, ব্রহ্মা,বিষ্ণু,আদিত্য,বসু,রুদ্র,বিশ্বদেব,অশ্বিনী কুমার সবাই মিলে মহাদেবকে বললেন :---
তস্মাৎ কুরু প্রসাদং নঃ সর্ব্বেবাঞ্চ নৃণাং বিভো।
সদ্ধারয় পুনর্লিঙ্গং স্বকীয়ং সুরসত্তম্।‌।(47)
নো চেজ্জগভ্রয়ং দেব নৃনং নাশমুপৈষ্যতি।
যদ্যেতদ্ভূতলে লিঙ্গং পতিতং স্থান্যতি প্রভো।।
(48)
♠মহাদেব বললেন:--
ময়া সতীবিয়োগার্ত্তিযুক্তেন সুরসত্তমাঃ।
লিঙ্গমেতৎ পরিত্যক্তং শাপব্যাজাদ্দ্বিজন্মনাম্।।।(50)
কোহলং পাতয়িতুং লিঙ্গং মমৈতদ্ভূবনত্রয়ে।
দেবো বা ব্রাহ্মণো বাপি বেত্থ বুস্বমপি স্ফুটম্।।(51)
তস্মান্নৈব ধরিস্যামি লিঙ্গমেতদ্ধরাতলাৎ।
কিমনেন করিধ্যামি ভার্য্যয়া পরিবর্জ্জিত।।(52)
দেবা উচুঃ।
তব কান্তা সতী নাম যা মৃতা প্রাক্ সুরোত্তম্।
সা জাতা মেনকাগর্ভে গৌরী নাম হিমাচলাৎ।।(53)
ভবিষ্যতি পুনর্ভার্য্যা তবৈব ত্রিপুরান্তক।
তস্মাল্লিঙ্গং সমাদায় কুরু ক্ষেমং দিবৌকসাম্।।(54)
দেবদেব উবাচ।
অদ্যপ্রভৃতি মে লিঙ্গং যদি দেবা দ্বিজাভয়ঃ।
পূজয়ন্তি প্রযত্নেন তর্হীদং ধারয়াম্যহম্।।(55)
ব্রহ্মোবাচ।
অহং তব স্বয়ং লিঙ্গং পূজয়িষ্যামি শঙ্কর।
তধান্যে বিবুধাঃ সর্ব্বে কিঃ পুনর্ভুবি মানবাঃ।।(56)
♦স্কন্দ পুরাণ(ষষ্ঠ ভাগ)_
নাগর খন্ড_প্রথম অধ্যায়_শ্লোক_5,10,12-25,32-33-34,47-48, 50-56
♦অনুবাদ _ সূত বললেন,
আনর্ত্ত নামক দেশে,এক বন ছিলো।
ফল-ফুল দ্বারা শোভিত সেই বনে, মুনিগণ এবং বিভিন্ন প্রাণীরা নির্ভয়ে বসবাস করতো।
একদিন ভগবান শঙ্কর,সতীর বিরহে কাতর হয়ে ঘুরতে ঘুরতে,এই বনে এসে উপস্থিত হলেন।
ভগবান রুদ্র,ল্যাংটো অবস্থায় হাতে মড়ার খুলি নিয়ে ঋষিদের আশ্রমে ভিক্ষা করতে এলেন।
ল্যাংটো শিবের অপূর্ব সুন্দর রূপ দেখে, আশ্রমে অবস্থিত ঋষিদের বৌরা, কামার্ত হয়ে গুরুজনদের সেবা ও গৃহকর্ম ছেড়ে দিয়ে বিভিন্ন স্থানে জটলা করে,শিবকে নিয়েই আলোচনা করতে লাগলো।
ঋষিদের বৌদের মধ্যে কেউ শিবকে জড়িয়ে ধরলো, কেউ তাঁকে দেখতেই থাকলো , কেউ কেউ সাজ পরিত্যাগ করে, কেউ নিজের শিশুদের ত্যাগ করে শিবের দিকে ছুটলো।
এইভাবে সমস্ত নারীদের দ্বারা দৃষ্ট হয়ে, ভগবান মহেশ্বর "ভিক্ষা দাও ভিক্ষা দাও" বলে রাজপথে ঘুরতে লাগলেন।
তারপর মুনিরা,শিবের এইরকম কাম উৎপাদক ল্যাংটো রূপ দেখে রেগে গিয়ে বললেন,--- রে পাপ!
যেহেতু তুমি আমাদের আশ্রমের শান্তি নষ্ট করেছো,তাই তোমার লিঙ্গ এখনই মাটিতে ছিন্ন হয়ে পড়ে যাক!!
মুনিগণ এই কথা বলা মাত্র,শিবের লিঙ্গ ছিন্ন হয়ে মাটিতে পড়ে গেলো এবং মাটি ভেদ করে,পাতালে প্রবেশ করলো।
লিঙ্গ পাতের পর, লজ্জায় ভগবান মহাদেব , গর্ভ প্রবেশের ন্যায় এক মহতী গুহায় প্রবেশ করলেন।
হে শ্রেষ্ঠ ব্রাহ্মণগণ!
শিবের লিঙ্গ পাতের ফলে স্বর্গ,মর্ত্য ও পাতালে নানারকম বিভীষিকাময় পরিস্থিতির সৃষ্টি হলো।
দিনের বেলাতেই উল্কাপাত হতে লাগলো, পর্বতদের মাথা ভেঙ্গে গেলো এবং সাগর ফুঁসতে থাকলো।
তখন ইন্দ্র আদি দেবতাগণ ভয় পেয়ে,পিতামহ ব্রহ্মার সাথে দেখা করতে গেলেন।
♣ব্রহ্মা দেবতাদের বললেন,
আনর্ত্ত দেশে, ঋষিদের অভিশাপের ফলে মহাদেবের লিঙ্গপাত হয়েছে তাই সমগ্ৰ জগতে এইরকম প্রলয় আরম্ভ হয়েছে।
অতএব,চলো,আমরা সবাই সেই মহাদেবের কাছেই যাই।
আমি তোমাদের সত্য বলছি,আমাদের অনুরোধে,মহাদেব যদি নিজের ছিন্ন লিঙ্গ পুনরায় স্ব-স্থানে স্থাপিত করেন, তবেই, এই জগতের মঙ্গল নাহলে অকালে প্রলয় হয়ে সমগ্ৰ জগৎ ধ্বংস হয়ে যাবে।
♣এরপর,----
ব্রহ্মা,বিষ্ণু,আদিত্য,বসু,রুদ্র,বিশ্বদেব, অশ্বিনীকুমার প্রভৃতি দেবতাগণ,মহাদেবের কাছে গমন করে বললেন,হে দেব!!
আপনি,আমাদের ও সমস্ত মানুষদের কল্যাণের জন্য, আপনার পতিত লিঙ্গ পুনরায় ধারণ করুন।
আপনার ছিন্ন লিঙ্গ যদি মাটিতে পড়ে থাকে,তাহলে স্বর্গ, মর্ত্য ,পাতাল সবকিছুই ধ্বংস হয়ে যাবে!!
♣মহাদেব বললেন,
হে দেবতাগণ!!
আমি সতীর বিচ্ছেদে অত্যন্ত দুঃখ পেয়ে,ব্রাহ্মণদের অভিশাপের অজুহাতে নিজের লিঙ্গ নিজেই ত্যাগ করেছি।না হলে,এই ত্রিভুবনে আমার লিঙ্গপাত করার ক্ষমতা কোনো দেবতা বা ব্রাহ্মণের নেই এইটা আপনারা সবাই জানেন!
♦আমার বৌ নেই তাই আমি লিঙ্গ নিয়ে কি করবো? সুতরাং, মাটিতে পড়ে থাকা ছিন্ন লিঙ্গ পুনরায় আমি আর গ্ৰহণ করবো না।♦
♣দেবতারা বললেন,
হে মহাদেব!!
আপনার মৃত স্ত্রী সতী,পুনরায় হিমালয় দ্বারা মেনকার গর্ভে,গৌরী নামে জন্মগ্রহণ করেছেন।এই গৌরীই, ভবিষ্যতে আপনার বৌ হবেন সুতরাং আপনি আপনার লিঙ্গ পুনরায় গ্ৰহণ করে আমাদের কল্যাণ করুন।
♣মহাদেব বললেন,
আজ থেকে যদি ব্রাহ্মণ ও দেবতারা ভক্তিভরে আমার এই লিঙ্গের পূজা করেন তবেই আমি পুনরায় আমার কাটা লিঙ্গ গ্ৰহণ করবো।
♣ব্রহ্মা বললেন,
হে শঙ্কর!
আমি ও দেবতারা যদি আপনার লিঙ্গ পূজা করি তাহলে পৃথিবীর মানুষেরাও
অবশ্যই আপনার লিঙ্গ পূজা করবে!


♦স্কন্দ পুরাণের দ্বিতীয় প্রমাণ:--
♦ঋষিদের মারের ভয়ে,শিবের পলায়ন।
♦ঋষিদের অভিশাপে শিবের লিঙ্গ পতন।
♦লিঙ্গ পতনের ফলে,রক্তাক্ত অবস্থায় শিবের মাটিতে পড়ে যাওয়া।
♦ ঋষিদের ভয়ে কাটা লিঙ্গের পলায়ন।
♦শিবের কাটা লিঙ্গ থেকে হাজার বছরের জমানো বীর্যপাত হয়ে,সমগ্ৰ পৃথিবীতে বিস্তৃত হওয়া।
♦শিবের কাটা লিঙ্গের দৈর্ঘ্য এক যোজন(তের কিলোমিটার।)।
♦লিঙ্গের জল হতে নর্মদা নদীর উৎপত্তি।
♠গালব উবাচ:----
তস্যাস্তীরে মহেশোহপি কৃত্বা রূপং মনোহরম্।
কামালয়ং বাদ্যহন্তং কৃতপুন্ড্রং জটাধরম্।।9
স্বেচ্ছয়া মুনিগেহেষু দর্শয়ত্যঙ্গচাপলম্।
ক্বচিদগায়তি গীতানি ক্কচিন্নৃত্যতি চ্ছন্দতঃ।।10
স চ ক্রূধ্যতি হসতি স্ত্রীণাং মধ্যগতঃ ক্কচিৎ।
এবং বিচরতস্তস্য ঋষিপত্ন্যঃ সমন্ততঃ।।11
পত্যুঃ শুশ্রূষণং গেহে ত্যক্ত্বা কার্য্যাণ্যপি ক্ষণাৎ।
তমেব মনসা চক্রুঃ পতিরূপেণ মোহিতাঃ।।12
ভ্রমন্ত্যশ্চৈব হাস্যানি চক্রূস্তা অপি যোষিতঃ।
ততন্তু মুনয়ো দৃষ্ট্বা তাসাং দুঃশীলভাবনাম্।।13
চুক্রূধুর্ন্মুনয়ঃ সর্ব্বে রূপং তস্য মনোহরম্।
গৃহ্যতাং হন্যতামেষ কোহয়ং দুষ্ট উপাগতঃ।।14
ইতি তে গৃহ্য কাষ্ঠানি যদোপস্থে যষুস্তদা।
পলায়িতঃ স বহুধা ভয়াত্তেষাং মহাত্মনাম্।।15
যো জীবকলয়া বিশ্বং ব্যাপ্য তিষ্ঠতি দেহিনাম্।
ন জ্ঞায়তে ন চ গ্ৰাহ্যো ন ভেদ্যশ্চাপি জায়তে।।16
ন শেকুন্তে যদা সর্ব্বে গ্ৰহীতুং তং মহেশ্বরম্।
তদা শিবং প্রকুপিতা শেপুরিত্থং দ্বিজাতয়ঃ।।17
যস্মাল্লিঙ্গার্থমাগত্য হ্যাশ্রমাংশ্চোরবৎ কৃতম্।
পরদারাপহরণং তল্লিঙ্গং পততাং ভূবি।।18
সদ্য এব হি শাপং ত্বং দুষ্টং প্রাপ্নুহি তাপস।
এবমুক্তে স শাপাগ্নির্ব্বজ্ররূধরো মহান্।।19
তল্লিঙ্গং ধূর্জ্জটেশ্ছিত্ত্বা পাতয়ামাস ভূতলে।
রুধিরৌঘপরিব্যাপ্তো মুমোহ ভগবান বিভুঃ।।20
বেদনার্ত্তোজ্জ্বলবপুর্স্মহাশাপাভিভূত-ধীঃ।
তং তথা পতিতং দৃষ্ট্বা ত আজগ্মুর্স্মহর্ষয়।।21
♣♣♣ গালব উবাচ ♣♣♣
তস্মিংস্তু পতিতে লিঙ্গে যোজনায়ামবিস্তৃতে।
বিষাদার্ত্তা ঋষিগণাস্তত্রাজগ্মুঃ সহস্রশঃ।1
ব্যলোকয়ন্ত সর্ব্বত্র দৃষ্ট্বা তত্র মহেশ্বরম্।
নাসৌ দৃষ্টিপথে তেষাং বভূব ভয়বিহ্বলঃ।‌।2
বীর্য্যং বর্ষসহস্রাণি বহূন্যপি সুসঞ্চিতম্।
পৃথিবীং সকলাং ব্যাপ্য স্থিতং দদৃশিরে দ্বিজাঃ।।3
তদ্দৃষ্ট্বা সুমহল্লিঙ্গং রুধিরাক্তং জলৈঃ প্লুতম্।
ব্রাহ্মণাঃ সংশয়গতা দহ্যমানা বসুন্ধরা।।4
তল্লিঙ্গং তত্র সংস্থাপ্য চক্রুস্তাং নর্ম্মদাং নদীম্।
তজ্জলং নর্ম্মদারূপং লিঙ্গং চামরকন্টকম্।।5
♦ স্কন্দ পুরাণ(ষষ্ঠ অধ্যায়)_
নাগর খন্ড।
♠শ্লোক_1-21_অষ্টপঞ্চাশদধিক দ্বিশততম অধ্যায়।
♠শ্লোক_1-5_উনষষ্ট্যধিক দ্বিশততম অধ্যায়।
♦প্রথম অনুবাদ _(অষ্টপঞ্চাশদধিক দ্বিশততম অধ্যায়)
♣গালব বললেন,
যমুনা নদীর তীরে,মহাদেব খুব সুন্দর রূপ ধারণ করলেন।
নারীদের কাম জাগাবার মতো রূপ ধারণ করে,হাতে বাজনা নিয়ে,কপালে ফোঁটা কেটে, জটাধারী মহাদেব ঋষিদের আশ্রমে গমন করে নিজের ইচ্ছাতেই নিজের অঙ্গ দেখাতে লাগলেন।
কোথাও গান গেয়ে, কোথাও নেচে কোথাও মেয়েদের মাঝখানে কৃত্রিম রাগ দেখিয়ে হাসতে লাগলেন।
মহাদেবের, এইরকমভাবে ঘুরে বেড়ানোর ফলে, ঋষিদের বৌরা তাঁকেই নিজেদের বর ভেবে মোহিত হয়ে,নিজেদের স্বামী সেবা ও অন্যান্য কাজ ছেড়ে দিয়ে তাঁর সঙ্গে হাসতে হাসতে বেড়াতে লাগলেন।
নিজেদের বৌদের এইরকম কামার্ত অবস্থা দেখে ঋষিরা অত্যন্ত রেগে গেলেন।
ঋষিরা পরস্পরকে বললেন,
"এই শয়তানকে ধরো!!ধরে একে মেরে ফেলো!!
এই শয়তান কোথা থেকে এখানে এলো?!"
এই বলে ঋষিরা কাঠ হাতে নিয়ে ভগবান শঙ্করকে তাড়া করলেন।
ভগবান শঙ্কর, ঋষিদের ভয়ে ঐ জায়গা থেকে পালালেন।
ঋষিরা মহেশ্বরকে তাড়া করেও তাঁকে ধরতে পারলেন না, তাই তাঁরা রেগে গিয়ে শিবকে অভিশাপ দিলেন।
ঋষিরা বললেন, যেহেতু এই লিঙ্গ পরায়ণ লম্পট, চোরের মতো আমাদের বৌদের হরণ করছিলো তাই এই পাপাত্মার লিঙ্গ ছিন্ন হয়ে পড়ে যাক।
ঋষিদের এই কথা বলা মাত্র, অভিশাপরূপ আগুন মহাবজ্রের রূপ ধারণ করে,শিবের লিঙ্গ ছিন্ন করে মাটিতে ফেলে দিলো।
লিঙ্গ ছিন্ন হওয়াতে ভগবান শিব,অত্যন্ত বেদনা,জ্বালা ও দুঃখ পেয়ে রক্তাক্ত অবস্থায় মাটিতে পড়ে গেলেন।
♦ দ্বিতীয় অনুবাদ _(উনষষ্ট্যধিক দ্বিশততম অধ্যায়)
♣গালব বললেন,
যোজন পরিমিত(প্রায় তের কিলোমিটার দৈর্ঘ্য) শিবের লিঙ্গ মাটিতে ছিন্ন হয়ে পড়ে যাবার পরে, হাজার হাজার ঋষি অত্যন্ত দুঃখিত হৃদয়ে চারিদিকে দৃষ্টিপাত করতে লাগলেন কিন্তু লিঙ্গ আর দেখতে পেলেন না কারণ লিঙ্গ ভয় পেয়ে লুকিয়ে ছিলো!!
♦লিঙ্গের মধ্যে জমানো হাজার বছরের বীর্য সমগ্ৰ পৃথিবীতে বিস্তৃত হলো ঋষিদের চোখের সামনে।♦
পুনরায় ,জল ও রক্ত দ্বারা আচ্ছাদিত বিশাল লিঙ্গ দর্শন করে ঋষিদের মনে সংশয় উৎপন্ন হলো আর পৃথিবী দগ্ধ হলো।
♦ঋষিরা এই কাটা লিঙ্গকে ঐ স্থানে স্থাপন করে নর্মদা নদীর সৃষ্টি করলেন।
লিঙ্গ থেকে ক্ষরিত জল দ্বারাই নর্মদা নদীর সৃষ্টি এবং লিঙ্গ স্বয়ং অমর কন্টক হলেন।♦

স্কন্দ পুরাণ (প্রথম খন্ড) _মহেশ্বর খন্ড_মাহেশ্বরখন্ডে-কেদারখন্ডম্_
ষষ্ঠ অধ্যায়_শ্লোক_1-25 ♦ অনুবাদ _ঋষিগণ বললেন, হে মহাভাগ! শিবকে ত্যাগ করে শিবের লিঙ্গ প্রতিষ্ঠা কিভাবে হলো সেই ঘটনা জানতে আমরা আগ্ৰহী। ঘটনাটি আমাদের কাছে বলুন। ♣ লোমশ বললেন, পুরোপুরি ল্যাংটো হয়ে বেদান্ত জ্ঞানী,এই বিশ্বের কর্তা,বেদ প্রতিষ্ঠাকারী,যোগেশ্বরদেরও পরম পুরুষ,ভগবান শম্ভু ভিক্ষার জন্য দেবদারু বনে ঘুরে বেড়াচ্ছিলেন। ভগবান শম্ভুর মাথার জটা খোলা অবস্থায় ছিলো। তিনি অণু হতেও সূক্ষ্ম, মহান হতেও মহীয়ান, সর্বভূতের অধিপতি ও মহানুভব পুরুষ। একদা ভগবান শঙ্কর দুপুর বেলায় ভিক্ষুক রূপে দেবদারু বনে ভিক্ষার উদ্দেশ্যে উপস্থিত হন। সেই সময় ঋষিরা সবাই স্নান করতে গেছিলেন, তাঁদের আশ্রমে শুধুমাত্র তাঁদের স্ত্রীগণ ছিলেন। ঋষিদের স্ত্রীরা ল্যাংটো শিবকে দেখে নিজেদের মধ্যে বলছিলেন ,এই অপূর্ব সুন্দর ভিখারিটা কে? চলো, এনাকে সবাই মিলে ভিক্ষা দিই। এই বলে,তাঁরা বাড়ী থেকে বিবিধ উৎকৃষ্ট উপকরণ এনে শিবকে ভিক্ষা দিলেন। একজন ঋষি পত্নী শিবের রূপ দেখে বিস্মিত হয়ে বললেন,হে মহামতে! আপনি কে? ভিখারী বেশে এখানে আসার কারণ কি?আমাদের পবিত্র আশ্রমে আপনি বসছেন না কেনো? উত্তরে শিব বললেন,হে সুকেশি! আমি স্বয়ং ঈশ্বর, তোমাদের এই পবিত্র আশ্রমে এসেছি। তখন,সেই ঋষির পত্নী বললেন, হে মহাভাগ! তুমি যদি ঈশ্বর হও, তাহলে নিশ্চয়ই তুমি কৈলাসপতি। কিন্তু, হে দেব! একা একা তুমি ভিক্ষা করছো কেনো? শিব বললেন,হে সুশ্রোণী! হে বিশালাক্ষি!হে ভামিনী! আমার বউ সতীর সাথে আমার ছাড়াছাড়ি হয়ে গেছে তাই আমি সবসময় ল্যাংটো হয়ে ঘুরে বেড়াই। আমার এই ভিক্ষাবৃত্তি সবসময় আমি সংকল্প রহিত হয়েই করে থাকি। আমার বউ,সেই সতী আর নেই। সতীকে ছাড়া অন্য কোনো নারীকে আমার ভালো লাগে না,এই কথা আমি তোমাকে সত্যই বলছি। এই কথা শুনে, পদ্ম ফুলের মতো চোখের অধিকারিনী, সেই ঋষি পত্নী বললেন,নারীদের স্পর্শ করে পুরুষেরা খুব সুখ অনুভব করে, এইরকম সুখের বিষয়কে আপনার মতোন জ্ঞানী ব্যক্তি ত্যাগ করলেন? কথোপকথনের পর,আশ্রমের সমস্ত নারীরা এসে চার ধরনের অন্ন,ছয় ধরনের খাদ্য ইত্যাদি উত্তম খাদ্য দিয়ে মহাদেবের ভিক্ষার ঝুলি ভর্তি করে দিলেন। এইবার, শিব যখন কৈলাস গমনের জন্য যাত্রা শুরু করলেন, তখন গৃহ-কাজ ছেড়ে সমস্ত ঋষিদের আনন্দিত বউয়েরা,শিবের পেছন পেছন চলতে থাকলেন। এর ফলে,আশ্রমে আর কোনো নারীই রইলেন না। এমন সময়ে,ঋষিরা স্নান করে আশ্রমে আসলেন। আশ্রম ফাঁকা দেখে তাঁরা নিজেদের মধ্যে আলোচনা করছিলেন এই বলে যে,আমাদের বউয়েরা কোথায়?কোনো লম্পট কি আমাদের বৌদের হরণ করে নিয়ে গেছে? এইসব বলতে বলতে,তাঁরা আশ্রমের চারদিকে নিজেদের বউদের খোঁজাখুঁজি করছিলেন। তারপর ঋষিরা দেখতে পেলেন,তাঁদের বউয়েরা শিবকে অনুসরণ করছেন! তখন শিবকে দেখে সমস্ত ঋষিরা রেগে গেলেন এবং শিবের সামনে গিয়ে বললেন,হে মহাদেব! বিষয় বিরক্ত মহাত্মা হয়ে, তোমার এইটা কি ধরনের কাজ? নিশ্চয়ই তুমি অন্যের বউ হরণকারী ব্যক্তি!! ঋষিদের এইরূপ অভিযোগ শুনেও শিব কোনো উত্তর না দিয়ে কৈলাসের দিকে চলতে থাকলেন। তাতেও ঋষিদের রাগ কমলো না!! ♦ঋষিগণ শিবকে এই বলে অভিশাপ দিলেন যে,"যেহেতু তুমি অবিনাশী মহাদেব হয়েও আমাদের বউদের হরণকারী এইজন্য এক্ষুনি তোমাকে নপুংসক হতে হবে। মুনিগণ এইরকম অভিশাপ দিলে,সঙ্গে সঙ্গে শিবের লিঙ্গ ছিন্ন হয়ে মাটিতে পড়ে গেলো।♦ শিবের লিঙ্গ ছিন্ন হয়ে মাটিতে পড়া মাত্রই দারুণ বেগে বড়ো হতে আরম্ভ করলো। ক্ষণকালের মধ্যেই শিবের কাটা লিঙ্গ,নীচে সাতটি পাতাল লোক,মধ্যে পৃথিবী, উপরে আকাশ,সমস্ত স্থান ঢেকে দিলো!!


♦ পদ্ম পুরাণের প্রমাণ♦
♣ ভৃগু মুনির কৈলাসে গমন।
♣ মহাদেবের, পার্বতীর সাথে যৌন মিলনে মত্ত থাকা।
♣ ভৃগুর অভিশাপ প্রদান ও এর ফলে মহাদেবের আকার যোনী-লিঙ্গের মতো হওয়া।
♣ তামসিক মহাদেব ব্রাহ্মণদের পূজনীয় নয়।
♣ জগতে যাঁরা শিবের ভক্ত তাঁরা পাষন্ড ও বেদ বিরোধী।
♠দিলীপ উবাচ ।
কথিতং ভবতা ব্রহ্মন্ সৰ্ব্বধৰ্ম্মমশেষতঃ।
সামান্যঞ্চ বিশিষ্টঞ্চ স্বরূপং পরজীবয়োঃ ॥1
স্বৰ্গাপবগৌ কথিতৌ সাধনঞ্চ তয়োরপি।
ধন্যোহস্ম্যহং দ্বিজশ্রেষ্ঠ ত্বৎপ্রসাদাৎ সদা গুরো ॥2
একমন্যং দ্বিজশ্রেষ্ঠ পৃচ্ছামি ত্বাং কুতুহলাৎ ।
কথয়স্ব যথাতথ্যমপি বাৎসল্যগৌরবাৎ ॥3
মহাভাগবতশ্রেষ্ঠো রুদ্রস্ত্রিপুরহন্তৃকঃ । কৰ্ম্মাদ্বিগর্হিতং রূপং প্রাপ্তবান্ সহ ভাৰ্য্যয়া ॥4
যোনিলিঙ্গস্বরূপঞ্চ কথং স্যাৎ সুমহাত্মনঃ । পঞ্চবক্ত্রশ্চতুৰ্ব্বাহুঃ শূলপাণিস্ত্রিলোচনঃ ॥5
কথং বিগর্হিতং রূপং প্রাপ্তবান্ দ্বিজপুঙ্গব।
এতৎ সৰ্ব্বং সমাচক্ষ্ব মিত্রাবরুণমন্দন ॥6
♠বসিষ্ঠ উবাচ ।
শৃণু রাজন্ প্রবক্ষ্যামি যন্মাং পৃচ্ছসি গৌরবাৎ।
বিশুদ্ধহৃদয়ে পুংসাং বুদ্ধিঃ শ্রেয়সি জায়তে ॥7
স্বায়ম্ভুবো মনুঃ পূর্ব্বং মন্দরে পর্ব্বতোত্তমে।
জগাম মুনিভিঃ সার্দ্ধং দীৰ্ঘসত্ৰমনুত্তমম্ ॥ 8
তস্মিন্ সমাগতাঃ সৰ্ব্বে মুনয়ঃ শংসিতব্রতাঃ ।
নানাশাস্ত্রবিদঃ শ্রেষ্ঠা বালসূৰ্য্যানলপ্রভাঃ।। 9
সৰ্ব্ববেদবিদো বিপ্ৰাঃ সর্ব্বধর্ম্মপরায়ণাঃ ॥10
বৰ্ত্তমানে মহাসত্রে মুনয়ঃ ক্ষীণকল্মষাঃ। অম্বেষ্টুং দেবতাতত্ত্বং মিথঃ।। 11
প্রোচুস্তপোধনাঃ।
বিপ্ৰাণাং বেদবিদুষাং কঃপূজ্যো দেবতাবরঃ।।12
ব্রহ্মবিষ্ণুমহেশানাং কঃ স্তুতো মুক্তিদো নৃণাম্ ।
কস্য পাদোদকং সেব্যং ভুক্তোচ্ছিষ্টঞ্চ পাবনম্ কোহুব্যয়ঃ পরমং ধাম পরমাত্মা সনাতনঃ ।।13
কস্য প্রসাদং তীৰ্থঞ্চ পিতৃণাঃ তৃপ্তিদং ভবেৎ।
তেষাং সমুপবিষ্টানামিতি বাদো মহানভূৎ।
রুদ্রমেকমিতি প্রোচুঃ কেচিদত্র মহৰ্ষয়ঃ ॥ 14
ব্রহ্মৈব পূজ্য ইত্যন্যে বদন্তি মুনিসত্তমাঃ।
সূর্য্য এবাত্মনাং পূজ্য,
ইত্যন্যে প্রাহুরুত্তমাঃ।।15
যোহসৌ সৰ্ব্বগতঃ শ্ৰীমান শ্রীপতিঃপুরুষোত্তমঃ |
অব্যয়ঃ পুণ্ডরীকাক্ষো বাসুদেবঃ পরাৎপরঃ।।16
অনাদিনিধনো বিষ্ণুঃ স এব পরমেশ্বরঃ।
সম্পূজ্যো দেবতাশ্রেষ্ঠ ইত্যন্যে চোচিরে দ্বিজাঃ।।17
তেষাং বিবদতাং তত্র মনুঃ। স্বায়ম্ভূবোঽব্রবীৎ।।
শুদ্ধসত্ত্বময়ো যোঽসৌ কল্যাণগুণবান প্রভুঃ ।
পুণ্ডরীকেক্ষণঃ শ্রীমান্ শ্রীপতিঃ পুরুষোত্তমঃ।।18
বিপ্রাণাং বেদবিদুষামেক এবার্চ্চিতঃ প্রভুঃ ।
বিপ্রাণাং নেতরে পূজ্যা রজস্তমোবিমিশ্রিতাঃ।।19
ইতি তথ্য বচঃ শ্রুত্বা সৰ্ব্ব এর মহর্ষয়ঃ । ভৃগুং তপোনিধিং বিপ্রং পোচুঃ প্রাঞ্জলয়স্তথা।।20
♠ঋষয়: উচুঃ।
অস্মাকং সংশয়ং ছেত্তুং ত্বং সমর্থোহসি সুব্রত।
ব্রহ্মবিষ্ণুমহেশানামন্তিকং ব্রজ সুব্রত ॥ 21
গত্বা তেষাং সমীপস্তু তথা দৃষ্ট্বা তু বিগ্ৰহান্।
শুদ্ধসত্ত্বগুণং তেষাং যস্মিন্ সংবিদ্যতে মুনে ॥22
স এব পূজ্যো বিপ্ৰাণাং নেতরস্তু কদাচন ।
শুদ্ধসত্ত্বময়ঃ সাক্ষাদব্রহ্মণ্যঃ স ভবিষ্যতি ॥ 23
তীর্থপ্রসাদবাঁল্লোকে বিপ্রাণাং স ভবিষ্যতি ।
দেবতানাং পিতৃণাঞ্চ তস্যোচ্ছিষ্টং সুপাবনম্ ॥ 24
তস্মাদযাহি মুনিশ্রেষ্ঠ বিবুধানাং নিবাসনম্ ।
ক্ষিপ্রং কুরু মুনিশ্রেষ্ঠ সৰ্ব্বলোকহিতং প্রভো ॥25
এবমুক্তস্ততম্ভূর্ণং কৈলাসং মুনিসত্তমঃ । জগাম বামদেবেন যত্রাস্তে বৃষভধ্বজঃ ॥ 26
গৃহদ্বারমুপাগম্য শঙ্করস্য মহাত্মনঃ । শূলহস্তং মহারৌদ্রং নন্দিং দৃষ্ট্বাব্রবীদ্দ্বীজঃ ॥27
সম্প্রাপ্তোহহং ভৃগুর্বিপ্রো হরং দ্রষ্টুংসুরোত্তমম্।
নিবেদয়স্য মাং শীঘ্রং শঙ্করায় মহাত্মনে ॥ 28
তস্য তদ্বচনং শ্রুত্বা নন্দী সর্ব্বগণেশ্বরঃ ।
উবাচ পরুষং বাক্যং মহর্ষিমমিতৌজসম্ ॥29
অসান্নিধ্যং প্রভোস্তস্য দেব্যা ক্রীড়তি শঙ্কর: ।
নিবর্ত্তস্ব মুনিশ্রেষ্ঠ যদি জীবিতুমিচ্ছসি ॥30
এবং নিরাকৃতস্তেন তত্রাতিষ্ঠন্মহাতপাঃ। বহুনি দিবসান্যস্মিন্ গৃহদ্বারি মহেশিতুঃ ॥ 31
নারীসঙ্গমমত্তোহুসৌ যস্মান্মামবমন্যতে।
যোনিলিঙ্গস্বরূপং বৈ তস্মাত্তস্য ভবিষ্যতি ॥32
ব্রাহ্মণং মাবজানাতি তমসা সমুপাগতঃ।
অব্ৰহ্মণ্যত্বমাপন্নো হ্যপূজ্যোহসৌ দ্বিজন্মনাম্ ॥33
তস্মাদন্নং জলং পুষ্পং তস্মৈ দত্তং হবিস্তথা ৷
নির্ম্মাল্যমস্য তৎসৰ্ব্বং ভবিষ্যতি ন সংশয়ঃ ॥ 34
এবং শপ্ত্বা মহাতেজাঃ শঙ্করং লোকপূজিতম্ ৷
উবাচ গণমত্যুগ্রং নন্দিং শূলধরং নৃপ ॥ 35
রুদ্রভক্তাশ্চ যে লোকে ভস্মলিঙ্গাস্থিধারিণঃ।
তে পাষন্ডত্বমাপন্না বেদবাহ্যা ভবন্তু বৈ।।36
♦ পদ্ম পুরাণ_উত্তর খন্ড_
পঞ্চপঞ্চাশদধিক দ্বিশততম অধ্যায়_শ্লোক_1-36
♦ অনুবাদ _
♣ মহারাজ দিলীপ বললেন,
হে ব্রহ্মণ!দ্বিজশ্রেষ্ঠ!
হে মিত্রাবরুণ নন্দন!হে গুরুদেব!
আপনার কৃপায় ধর্মের স্বরূপ আমি জেনে ধন্য হয়েছি। কিন্তু অন্য একটি বিষয় আমার জানতে
খুব ইচ্ছা করছে।
ত্রিপুরের ধ্বংসকারী,পাঁচ মাথা,তিন চোখ ও চারহাত বিশিষ্ট, ত্রিশূলধারী শ্রেষ্ঠ দেবতা হলেন মহাদেব।
সেই মহাদেব নিজের বৌয়ের সাথে কিভাবে এইরকম নিন্দনীয় রূপ পেলেন?সেই মহাত্মা রুদ্রের,যোনী-লিঙ্গরূপ কিভাবে হলো?
আপনার সন্তানকে এই বিষয়ে বিস্তৃতভাবে বলুন!
♣ বশিষ্ঠ বললেন,
হে রাজন!আপনি যা জিজ্ঞাসা করছেন তাই জানাচ্ছি কারণ মানুষের পবিত্র হৃদয়েই উৎকৃষ্ট বুদ্ধি জন্মায়।
অতীতে, স্বায়ম্ভুব মনু উত্তম দীর্ঘসত্র অনুষ্ঠান করার জন্য অনেক মুনিকে সঙ্গে নিয়ে শ্রেষ্ঠ পর্বত মন্দরে গমন করেছিলেন।
সেখানে বেদজ্ঞ, ধর্ম পালনকারী,অতি পুণ্যবান শ্রেষ্ঠ ব্রাহ্মণগণ এবং মুনিগণ এসেছিলেন।
মহাযজ্ঞ আরম্ভ হলে, দেবতাদের তত্ত্ব নির্ণয়ের জন্য,তাঁরা পরস্পরের মধ্যে আলোচনা করতে লাগলেন!!
তাঁরা জিজ্ঞাসা করলেন ব্রহ্মা,বিষ্ণু, মহেশ্বরের মধ্যে কোন দেব শ্রেষ্ঠ এবং বেদজ্ঞ ব্রাহ্মণগণ দ্বারা পূজনীয়?
কোন দেব, মানুষকে মুক্তি প্রদান করেন?কার চরণামৃত খেতে হবে এবং কোন দেবতার এঁটো খাদ্য পবিত্র?কেই বা অবিনাশী,পরম আশ্রয়,সনাতন দেবতা?কার প্রসাদ এবং স্থান পিতৃগণের তৃপ্তির কারণ?
কোন দেবতা শ্রেষ্ঠ এই নিয়ে মুনিগণের মধ্যে মহা বিতর্ক আরম্ভ হলো।
কেউ বললেন,ব্রহ্মা শ্রেষ্ঠ,কারও মতে সূর্য পূজনীয়, কিছু ব্রাহ্মণদের মতে বিষ্ণুই একমাত্র ঈশ্বর।
মুনিগণেরা এই বিষয়ে বিবাদ সৃষ্টি করলে,স্বায়ম্ভুব মনু বললেন যে,যিনি শুদ্ধসত্ত্ব,শ্রীমান,শ্রীপতি, কল্যাণকারী ও পুরুষোত্তম একমাত্র তিনিই বেদজ্ঞ ব্রাহ্মণগণের পূজনীয় তাছাড়া রজগুন,তমগুন মিশ্রিত দেবগণ ব্রাহ্মণদের পূজনীয় নন।
এই কথা শুনে, মহর্ষি তপোনিধি হাত জোড় করে ভৃগু মুনিকে বললেন-----
হে সুব্রত!
একমাত্র আপনিই পারেন,আমাদের সংশয় দূর করতে। সুতরাং, আপনি ব্রহ্মা,বিষ্ণু ও মহেশ্বরের কাছে গমন করে তাঁদের স্বরূপ জানুন।এই তিন দেবতার মধ্যে যাঁর শুদ্ধ সত্ত্বগুণ আছে, তিনিই একমাত্র ব্রাহ্মণদের পূজনীয় হবেন এবং তাঁর উচ্ছিষ্টই সবার জন্য পরম প্রাপ্তি হবে।
তাই,হে মুনি!
আপনি তিন দেবতার বাসস্থানে গমন করে আমাদের সমস্যার সমাধান করুন এবং সবার মঙ্গল সাধন করুন।
মুনিগণের কথা শুনে,বানদেবকে সঙ্গে নিয়ে শ্রেষ্ঠ মুনি ভৃগু তাড়াতাড়ি শিবের নিবাস কৈলাসে গমন করলেন এবং মহাদেবের ঘরের দরজার সামনে, ত্রিশূল হাতে দাঁড়িয়ে থাকা ভয়ংকর নন্দীকে বললেন মহাদেবকে দর্শনের জন্য এখানে এসেছি।তুমি তাড়াতাড়ি মহাদেবের কাছে, আমার আসার সংবাদ দাও।
এই কথা শুনে,শিব-অনুচরদের প্রধান নন্দী গম্ভীর স্বরে বললেন,"প্রভুর(শিব) এখন সময় নেই।তিনি এখন দেবীর সাথে যৌন মিলন করছেন"।
হে,মুনি শ্রেষ্ঠ!
যদি বাঁচতে চাও তাহলে এখান থেকে চলে যাও।
মহাতপস্বী ভৃগু, নন্দীর দ্বারা বাধাপ্রাপ্ত হয়েও অনেক দিন মহাদেবের দরজার সামনেই থাকলেন।
♦এরপর, ভৃগু মুনি অভিশাপ দিয়ে বললেন যে, যেহেতু এই মহাদেব নারীর সাথে যৌন মিলনে লিপ্ত থেকে আমাকে অবজ্ঞা করেছেন সেই কারণে এনার আকার যোনী-লিঙ্গস্বরূপ হবে।♦
আমি ব্রাহ্মণ, কিন্তু, ভমোভাবাপন্ন হয়ে মহাদেব আমাকে অবজ্ঞা করলেন,
তাই তিনি অব্রহ্মণ্য হয়ে,ব্রাহ্মণদের
অপূজ্য হবেন।তাই,শিবকে দেওয়া অন্ন,জল,ফুল,হবি আদি নির্মাল্য স্বরূপ হবে,এতে কোনো সন্দেহই নেই।
♦মহাতেজী ভৃগু মুনি পূজনীয় শঙ্করকে এইরূপ অভিশাপ দিয়ে, ত্রিশূলধারী, ভয়ংকর দর্শন নন্দীকেও অভিশাপ দিলেন,এই জগতে যারা রুদ্র ভক্ত,ছাই মাখে ও মড়ার হাড় ধারণ করে তারা সবাই পাষন্ড ও বেদ বিরোধী হবে।♦


লেখাঃ সাগর বেদবাদীর ফেসবুক পোষ্ট থেকে নেওয়া

শাস্ত্রে ঈশ্বরের লিঙ্গ বা চিহ্ন নিয়ে কি বলা হয়েছে বিচার করলে দেখা যায়
যজুর্বেদ ৩২|৩ মন্ত্রে পরমাত্মার স্বরূপ কেমন
ন তস্য॑ প্রতি॒মাऽঅস্তি॒ য়স্য॒ নাম॑ ম॒হদ্যশঃ॑ ।
হি॒র॒ণ্য॒গ॒র্ভऽইত্যে॒ষ মা মা॑ হিꣳসী॒দিত্যে॒ষা য়স্মা॒ন্ন জা॒তऽইত্যে॒ষঃ ॥
[যজুর্বেদ ৩২|৩]
(ন) না (তস্য) তার (প্রতিমা) প্রতিমা (অস্তি) হয় (যস্য) যার (নাম) নাম (মহৎ) মহান (যশঃ) কীর্তিকর। (হিরণ্যগর্ভ) জ্যোতিষ্কমণ্ডলের আধার (ইতি) এইরূপ (এষ) এই পরমাত্মা। (মা মা হিংসীৎ) "আমাকে তোমা হতে বিমুখ করোনা", (ইত্যেষা) এইরূপে এই পরমাত্মার কাছে প্রার্থণা করতে হয়। (যস্মাত্) যার অপেক্ষা (ন জাত) অধিক প্রসিদ্ধ কিছুই নেই (ইতি) এইপ্রকার (এষ) এই পরমাত্মার স্বরূপ।
এইটি বেদের অত্যন্ত প্রসিদ্ধ মন্ত্রগুলোর একটি। এই মন্ত্রে স্পষ্টভাবেই ঘোষণা করা হচ্ছে, সেই অনন্ত পরমেশ্বরকে কোনো প্রতিমায় ব্যক্ত করা সম্ভব না। কিছু ভাষ্যকার প্রতিমা শব্দ দ্বারা এখানে মূর্তি, ছবি এই অর্থগুলো গ্রহণ করেছেন। আবার কিছু ভাষ্যকার প্রতিমা শব্দ দ্বারা এখানে সাদৃশ্য, উপমা, তূলনা এই অর্থগুলো গ্রহণ করেছেন।
তবে এই ভাষ্যগুলো ছাড়াও আর্য সমাজের ভাষ্যই এখানে অত্যন্ত নিরপেক্ষ। কেননা আর্যসমাজের বিদ্বানদের করা প্রায় সকল ভাষ্যেই প্রতিমা শব্দটি দ্বারা এখানে সম্ভাব্য সকল অর্থকেই স্বীকার করা হয়েছে।
মহর্ষি দয়ানন্দ সরস্বতী ভাষ্য করছেন, "পরমেশ্বরের প্রতিমা অর্থাৎ পরিমাপ, সাদৃশ্য, তুলনা, প্রতিকৃতি বা আকৃতি নেই।"
হরিশরণ সিদ্ধালংকারও একইরকমভাবে ভাষ্য করছেন, "সেই প্রভুর মূর্তি, পরিমাপ, সাদৃশ্য, তুল্যতা নেই।"
ড. তুলসীরাম শর্মা অনুবাদ করছেন, "There is none and nothing like Him, no picture, no icon, no simile, no metaphor."
এভাবে আর্য সমাজের অন্যান্য সকল বেদ-উপনিষদ ভাষ্যেই অনুরূপ অনুবাদ পাওয়া যায়। এছাড়া পূর্ববর্তী পুরাণবাদী ভাষ্যকারগণও এরূপ উভয় অর্থকেই স্বীকার করেছেন। মহিধর ও উব্বট দুজনেই প্রায় একইপ্রকার অর্থ করেছেন যে, সেই পুরুষের প্রতিমা ও প্রতিমানভূত কোনো বস্তু নেই।
এই মন্ত্রটির অনুবাদ আবার অনেকে শঙ্করাচার্যের উপনিষদ্ ভাষ্য হতে দেখিয়ে থাকে। অথচ শঙ্করাচার্য তার সেই উপনিষদ্ ভাষ্যেই [মুন্ডকোপনিষদ্ ২|১|২] এ "অমূর্তঃ পুরুষঃ" এর ভাষ্য করেছেন, " অমূর্তঃ সর্বমূর্তিবর্জিত পুরুষ" অর্থাৎ সেই পুরুষ সর্বমূর্তিবর্জিত। অর্থাৎ পরমেশ্বরের যে কোনো মূর্তি হয়না তা শঙ্করাচার্যের উপনিষদভাষ্যেও স্পষ্টতই স্বীকার করা হয়েছে।
তথাপি যজুর্বেদের উক্ত মন্ত্রে যারা প্রতিমা দ্বারা প্রতিমা বা মূর্তি অর্থকে মানেনা তাদের দাবি পরমেশ্বরের প্রতিমা বানানো অবশ্যই সম্ভব। তাই এখানে প্রতিমা দ্বারা প্রতিমা অর্থ নেওয়া যাবেনা। কিন্তু আসলেই কি বেদ, উপনিষদ্, গীতা, দর্শনাদি বৈদিক শাস্ত্রে প্রতিপাদিত সেই পরমেশ্বরের কোনো মূূর্তি বানানো যায়? নিচে এই বিষয়েই আলোচনার চেষ্টা করব।
১) সনাতনধর্মে পরমাত্মা অসীম (সাম ৩৩৫), অনন্ত (ঋক্ ৪|১|৭)।
তদন্তরস্য সর্বস্য তদু সর্বস্যাস্য বাহতঃ। [যজুর্বেদ ৪০|৫]
(তত্) সেই ব্রহ্ম (অস্য সর্বস্য) এই সমস্তকিছুর (অন্তঃ) ভেতরে (তত্ উ) সেই ব্রহ্মই (সর্বস্যাস্য) এই সমস্তকিছুর (বাহতঃ) বাহিরে।
যিনি সমস্ত চরাচর জগতে ব্যাপ্ত হয়ে তা অতিক্রম করেও অনন্তব্যাপী একটি মানবাকৃতির প্রতিমাতে কি সেই অসীম পরমেশ্বরকে ব্যক্ত করা যায়?
পরমেশ্বরের সেই অনন্ত স্বরূপের বিষয়ে বেদে বলা হচ্ছে, " যতটা বিশাল আকাশ ও পৃথিবী তাদের বিস্তারে, যতদূর জলধারা প্রবাহমান, যতদূর প্রকাশ বিদ্যমান, যতদূর সমস্ত দিক-উপদিক বিস্তৃত এই সমস্ত অপেক্ষাও পরমেশ্বর অনেক বিশাল, তিনি সর্বদাই মহান।[অথর্ব ৯|২|২০,২১] "
বিশাল আকাশ, পৃথিবী, সমস্ত দিক-উপদিকও যার বিশালতার কাছে অতি নগণ্য সেই পরমেশ্বরের অপার স্বরূপকে সামান্য কোনো মূর্তি-ছবিতে ব্যক্ত করার ক্ষমতা কারো আছে কি?
সমস্ত জগত তারই মহিমা, তিনি এই সমস্ত জগত অপেক্ষাও অনেক বিশাল। [যজু ৩১|৩]।
ব্রহ্ম শব্দের অর্থই বিশাল। "তার অপেক্ষা বিশাল কিছুই নেই [ঋগ্বেদ ৪|৩০|১]। "
শুধুমাত্র এই জগতের বিশালতাকেই আমরা কল্পনাতেও ধারণ করতে অপারগ। আর যেই ব্রহ্মের বিশালতার কাছে এই সমস্ত জগতও তুচ্ছ কোন মূর্তি, ছবি বা আকারে সেই অনন্ত ব্রহ্মকে ব্যক্ত করা যাবে?
বেদে আরো বলা হচ্ছে,
যদ্দ্যাব ইন্দ্র তে শতং শতং ভূমীরুত স্যুঃ। ন ত্বা বজ্রিন্সহস্রম্ সূর্যা অনু ন জাতমষ্ট রোদসী।।
[সামবেদ ২৭৮]
(ইন্দ্র) হে সর্বৈশ্বর্যময়, (যত্) যদি (তে) আপনার (দ্যাবঃ) এই আকাশ (শতম্) শতসংখ্যক হয় (উত্) এবং (ভূমিঃ শতম্ স্যুঃ) যদি পৃথিবীও শতসংখ্যক হয় (ন ত্বা অনু) তা আপনার সমান হবে না। (বজ্রিন্) হে ওজস্বী ব্রহ্ম, (সহস্রম্ সূর্যাঃ) সহস্র সূর্যও আপনার সমান না। (জাতম্) সমস্ত সৃষ্টিতে নিজ মহিমা দ্বারা প্রকট আপনাকে (রোদসী) সমস্ত দ্যুলোক- পৃথিবী (ন অষ্ট) ব্যাপ্ত করতে পারে না।
শত পৃথিবী, শত আকাশও যার সমান না কোন মূর্তি সেই অনন্ত পরমাত্মার সমান হবে? একটা মানুষের মতো দেখতে মূূর্তি বানিয়ে দিলেই কি তা সেই অনন্ত পরমাত্মার মূূর্তি হয়ে যায়?
২) এমন কোন আকার বা শরীর আছে যা পরমেশ্বরের সেই অসীম স্বরূপকে নিজের মধ্যে ধারণ করবে? কোনোকিছুর আকার আছে মানেই হলো তার একটা সীমানা বা বাউন্ডারি আছে। যেহেতু পরমেশ্বর অসীম তাই তার কোনো আকার বা শরীর হতে পারেনা। কেননা আপনি পরমেশ্বরকে কোনো আকার দিলেন মানে আপনি তাকে সেই আকার বা শরীরের মধ্যে সীমাবদ্ধ করে দিচ্ছেন। অনন্ত অপার পরমেশ্বরকে কোনো আকার বা রূপে আবদ্ধ করা যায় না।
অতএব, যেই পরমেশ্বর নিরাকার (যজু৪০|৮), অরূপ(শ্বেতা৩|১০) তার কীভাবে কোনো প্রতিমা বানানো যেতে পারে?
৩) আলোচ্য মন্ত্রাংশের অর্থ হিসেবে আপনি বলছেন, " পরমেশ্বরের সদৃশ কিছু নেই", "পরমেশ্বরের সাথে তূলনা করার মতো কিছু নেই "। এই অর্থগুলো আর্য সমাজও স্বীকার ও একইসাথে মনন করে।
পরমেশ্বরের সদৃশ কিছু হতে পারেনা যদি আপনি তা বিশ্বাস করেন তাহলে কীভাবে কোনো মূর্তি বানিয়ে সেই মূর্তির রূপ বা আকারকে পরমেশ্বরের সদৃশ বলে মানছেন?
যদি পরমেশ্বরের সাথে তূলনা করার মতো কিছুই না থাকে তাহলে কোনো জড় মূর্তির রূপ বা আকারকে আপনি কীভাবে পরমেশ্বরের সাথে তূলনা করছেন?
বেদাদি শাস্ত্রে অসংখ্য জায়গায় বলা হয়েছে পরমেশ্বরের সদৃশ বা তার সাথে তূল্য কিছু হতে পারে না।
দেবীসুক্তে পরমাত্মা বলছেন, "আরভামাণা ভুবনানি বিশ্বা। পরো দিবা পর এনা পৃথিব্যা। [ঋক্ ১০|১২৫|৮] অর্থাৎ আমিই নিখিল জগতের নির্মাণ করি। আমি আকাশের অতীত, এই পৃথিবীর অতীত।"
"তার সদৃশ কিছু না আছে পৃথিবীতে, না আছে আকাশে। না জন্মেছে, না জন্মাবে। [ঋক্ ৭|৩২|২৩]"
"হে পরমেশ্বর! না এরূপ কিছু আছে যেরূপ আপনি। [ঋক্ ৪|৩০|১] "
এই জগতে যদি সেই অনন্ত পরমেশ্বরের সদৃশ কিছু না থাকে তাহলে কেন প্রতিমা তৈরি করে জাগতিক রূপ, আকারে তাকে ব্যক্ত করা হয়?
উপনিষদে ঋষিগণের বাক্যে যিনি জ্ঞাত - অজ্ঞাত সমস্তকিছুরই অতীত[কঠ ২|১|১০] সামান্য একটা মানবাকৃতির মূর্তি বানিয়ে দিলেই কি সেই সর্বেশ্বরের প্রতিমা হয়ে যায়?
যিনি পরম [ঋক্ ১|১৬৪|৩৯], যার সদৃশ কিছুই নেই [ঋক্ ১|৫২|১৩] কেন কোনো প্রতিমা বানিয়ে বলা হয় তা সেই পরমেশ্বরের সদৃশ?
৪) যেই পরমেশ্বর সমস্ত জাগতিক পরিমাপের অতীত [অথ ১০|৭|৩৯] কোন পরিমাপে তার মূর্তি নির্মিত হবে?
৫) নৈব চ তস্য লিঙ্গম্। [শ্বেতাশ্বতর ৬|৯]
(তস্য) তার (লিঙ্গম্) কোনো চিন্হবিশেষও (ন এব) নেই।
ন প্রতীকে ন হি সঃ।। [বেদান্তদর্শন ৪|১|৪]
(ন প্রতীকে ন হি সঃ) প্রতীক = মূর্তি আদি জড়ের মাঝে পরমাত্ম-বুদ্ধি করা উচিত না, কেননা তা পরমাত্মা নয়।
বৈদিক শাস্ত্রে বলা হয়েছে কোনো চিন্হবিশেষেও সেই অনন্ত পরমেশ্বরকে ব্যক্ত করা যায় না। এই শাস্ত্রবাক্যগুলোর অর্থ নিয়ে কিন্তু কারো কোনো দ্বিমত নেই। তাহলে যেই পরমেশ্বরের কোনো চিন্হবিশেষও তৈরি করা সম্ভব না তার প্রতিমা কীভাবে তৈরি করা যাবে?
৬) যারা এরূপ কোনো আকৃতি, প্রতিমা, বস্তু বা স্থানেই পরমাত্মা বিশেষভাবে বিদ্যমান বলে মনে করে তাদের বিষয়ে উপনিষদে এসেছে,
যদ্ এবেহ তদ্ অমুত্র যদ্ অমুত্র তদন্বিহ।
মৃত্যো স মৃত্যুমাপ্নোতি য ইহ নানেব পশ্যতি।।
[কঠোপনিষদ ২|১|১০]
(যৎ) যেই ব্রহ্ম (ইহ) এখানে (তৎ এব) সেই ব্রহ্মই (অমুত্র) ওখানেও, (যৎ) যেই ব্রহ্ম (অমুত্র) ওখানে (তৎ) সেই ব্রহ্ম (ইহ অনু) এখানেও একইভাবেই বিদ্যমান। (যঃ) যেই ব্যাক্তি (ইহ) এই ব্রহ্মতে (নানা ইব) নানাত্ব (পশ্যতি) দর্শন করে (সঃ) সে (মৃত্যোঃ) মৃত্যু হতে (মৃত্যুম্) মৃত্যুকে (আপ্নোতি) প্রাপ্ত হয়।
গীতাতেও বলা হচ্ছে,
সমং সর্বেষু ভূতেষু তিষ্ঠন্তং [গীতা ১৩|২৭]
(সর্বেষু ভূতেষু) তিনি সর্বভূতে (সমং) সমভাবে (তিষ্ঠন্তং) স্থিত।
তাই তিনি যে কোনো আকৃতি, প্রতিমা, বস্তু বা স্থানেই বিশেষভাবে বিদ্যমান আছেন এমনটা নয়। তিনি নিখিল ব্রহ্মান্ড ও তার পরেও যাকিছু সমস্ততে এক অদ্বিতীয় স্বরূপেই পূর্ণ হয়ে আছেন। যারা কোনো বিশেষ আকৃতি, প্রতিমা, বস্তু বা স্থানেই কেবল তাকে দর্শন করার চেষ্টা করে তারা সেই পরমাত্মার প্রকৃত স্বরূপকে উপলব্ধি করতে পারেনা এবং সেই অজ্ঞানতাবশত মৃত্যু হতে মৃত্যুকে অর্থাৎ জন্ম-মৃত্যুর এই সংসারচক্রে আবদ্ধ হয়ে থাকে।
৭) যারা মূর্তি-পূজা করে তারা পরমেশ্বরকে কোনো মানবাকৃতি বা তাদের কল্পিত কোনো বিশেষ রূপেই চিন্তন করে। অথচ পরমেশ্বর স্বয়ং রূপ,শরীর বা আকারাদির অতীত হয়েও তার রূপ বা শরীর বিশ্বময়। কেননা পরমেশ্বরই জগতের সমস্ত রূপের স্রষ্টা [অথ ১৩|১|১১], তাই জগতের সমস্ত রূপও তারই। আবার আত্মা যেরূপে শরীরে প্রবিষ্ট হয়ে থাকে তেমনি পরমেশ্বর সমস্ত ভূতে প্রবিষ্ট হয়ে আছেন [যজু ৪০|৫,৬], সমস্ত রূপে প্রবিষ্ট হয়ে আছেন [ঋক্ ৯|২৫|৪]।
তাই উপনিষদে বলা হচ্ছে,
"পরমেশ্বর সমস্ত ভূতেই প্রবিষ্ট হয়ে আছেন, সমস্ত ভূতই তার শরীর [বৃহদারণ্যক ৩|৭|১৫]। " এভাবে বলা হচ্ছে, "পৃথিবী, অগ্নি, বায়ু, জল, অন্তরিক্ষ, দ্যুলোক, সূর্য, চন্দ্র, তারকারাজি, দিকসমূহ, আকাশ, অন্ধকার, তেজ সমস্তকিছুর মধ্যে তিনি বিদ্যমান। এই সমস্তকিছুই তার শরীর [বৃহ ৩|৭|৩-১৪]। "
তাই পরমেশ্বরকে কোনো বিশেষ আকার, শরীর বা রূপেই কল্পনা করা ভ্রান্তমত ব্যতিত কিছুই না। বরং তার দ্বারা ব্যাপ্ত জগতের প্রতিটা বস্তুই তার শরীর, এই সমস্ত জগতই তার শরীর। সমস্ত জগতময় তার রূপ।
পবিত্র বেদেও একইভাবেই সেই নিরাকার পরমাত্মার স্বরূপ বর্ণনা করা হচ্ছে,
যস্য ভূমিঃ প্রমান্তরিক্ষমুত্ উদরম্। দিবং যশ্চক্রে মূর্ধানং তস্মৈ জ্যষ্ঠায ব্রহ্মণে নমঃ॥
[অথর্ববেদ ১০|৭|৩২]
(ভূমিঃ) ভূমি (যস্য) যার (প্রমা) পাদমূল (উত) ও (অন্তরিক্ষম্) অন্তরিক্ষ (উদরম্) যার উদর (দিবম্) এই দ্যুলোক (মূর্ধানম্) যার মস্তক (যঃ চক্রে) যিনি একে রচনা করেছেন (তস্মৈ জ্যেষ্ঠায়) সেই সব থেকে মহান, ( ব্রহ্মণে) সব থেকে বিশাল পরমাত্মাকে (নমঃ) নমস্কার করি।
যস্য সূর্যশ্চক্ষুশ্চন্দ্রমাশ্চ পুনর্ণবঃ। অগ্নিং যশ্চক্র আস্যং তস্মৈ জ্যেষ্ঠায় ব্রহ্মণে নমঃ॥
[অথর্ববেদ ১০|৭|৩৩]
(পুনর্ণব) পুনঃপুনঃ নবীন (সূর্যঃ চ চন্দ্রমাঃ) এই সূর্য ও চন্দ্রমা (যস্য) যার (চক্ষুঃ) নয়ন। (অগ্নিম্) প্রকাশ (আস্যম্) যার বদন। (যঃ) যিনি (চক্রে) একে রচনা করেছেন। (তস্মৈ) সেই (জ্যেষ্ঠায়) সব থেকে মহান, (ব্রহ্মণে) সব থেকে বিশাল পরমাত্মাকে (নমঃ) নমস্কার করি।
অর্থাৎ একজন প্রকৃত ঈশ্বরভক্ত পরমেশ্বরকে কেবল কোনো বিশেষ আকার বা রূপেই চিন্তন করে না। বরং তার স্রষ্টাকে সে খুঁজে পায় সমস্ত সৃষ্টির মাঝেই। অনন্ত অপার পরমেশ্বর সমস্ত জগতে প্রবিষ্ট হয়ে আছেন, এই সমস্ত জগতই যেন তার শরীর। ওই সূর্য ও চন্দ্রমা যেন তারই দুইটি চোখ, দীপ্তি যেন তার বদন, দ্যূলোক তার মস্তক, অন্তরিক্ষ তার উদর, এই ভূমি যেন তারই পাদমূল। অর্থাৎ এই নিখিল জগতই তার রূপ, এই সমস্ত সৃষ্টির মধ্য দিয়েই রূপহীন তার রূপ ব্যক্ত হয়। এভাবে প্রতিটা বস্তুতেই একজন ঈশ্বরভক্ত পরমেশ্বরের বিভূতি খুঁজে পায়। সমস্ত জগতময় তার সেই বিশ্বরূপকে উপলব্ধি না করে যারা কোনো প্রতিমা বানিয়ে পরমেশ্বরকে কেবল কোনো বিশেষ আকার বা রূপেই কল্পনা করতে চায়, তারা পরমেশ্বরের প্রকৃত স্বরূপকে উপলব্ধি করতে পারেনা।

No comments:

Post a Comment

ধন্যবাদ

বৈশিষ্ট্যযুক্ত পোস্ট

যজুর্বেদ অধ্যায় ১২

  ॥ ও৩ম্ ॥ অথ দ্বাদশাऽধ্যায়ারম্ভঃ ও৩ম্ বিশ্বা॑নি দেব সবিতর্দুরি॒তানি॒ পরা॑ সুব । য়দ্ভ॒দ্রং তন্ন॒ऽআ সু॑ব ॥ য়জুঃ৩০.৩ ॥ তত্রাদৌ বিদ্বদ্গুণানাহ ...

Post Top Ad

ধন্যবাদ