গীতা ১০/৩৭ - ধর্ম্মতত্ত্ব

ধর্ম্মতত্ত্ব

ধর্ম বিষয়ে জ্ঞান, ধর্ম গ্রন্থ কি , হিন্দু মুসলমান সম্প্রদায়, ইসলাম খ্রীষ্ট মত বিষয়ে তত্ত্ব ও সনাতন ধর্ম নিয়ে আলোচনা

धर्म मानव मात्र का एक है, मानवों के धर्म अलग अलग नहीं होते-Theology

সাম্প্রতিক প্রবন্ধ

Post Top Ad

স্বাগতম

17 August, 2023

গীতা ১০/৩৭

গীতা ১০/৩৭


গীতা ১০/৩৭ শ্লোকের ভ্রান্তি নিবারণ-

বৃষ্ণীনাং বাসুদেবাऽস্মি পাণ্ডবানাং ধনঞ্জয়ঃ।

মুনীনামপ্যহং ব্যাসঃ কবীনামুশনাঃ কবিঃ।।


পদার্থ-( বৃষ্ণীনাম) বৃষ্ণী বংশের মধ্যে ( বাসুদেবঃ) বাসুদেব অর্থাৎ বাসুদেব পুত্র কৃষ্ণ হই। ( পাণ্ডবানাম্) পাণ্ডবদের মধ্যে ( দনঞ্জয়ঃ) অর্জুন হই ( মুনীনাম্) মুনিদের মধ্যে ( ব্যাসঃ) ব্যাস মুনি হই। ( কবীনাম্) কবিদের মধ্যে ( উশনাঃ) শুক্রাচার্য ( কবিঃ) কবি ( অপি) ও ( অহম্) আমি ( অস্মি) হই।

অর্থ-বৃষ্ণী বংশের মধ্যে বাসুদেব হই অর্থাৎ বাসুদেব পুত্র কৃষ্ণ হই। পাণ্ডবদের মধ্যে অর্জুন হই, মুনিদের মধ্যে ব্যাসমুনি হই। কবিদের মধ্যে শুক্রাচার্য কবিও আমি হই।

ভাবার্থ-পরমেশ্বরের বিভুতির বর্ণনা করতে গিয়ে শ্রীকৃষ্ণ মহারাজ স্বয়ংকেই বৃষ্ণী বংশের মধ্যে বাসুদেব পুত্র কৃষ্ণ বলােছেন এখানে তাও সিদ্ধ হয় যে যখন স্বয়ং যোগেশ্বর শ্রীকৃষ্ণ মহারাজ নিজেকে বাসুদের পুত্র বলেছেন এবং স্পষ্ট হয় যে ওই সেই নিরাকার পরমেশ্বরের সৃষ্টি রচনার নিয়মানুসারে বাসুদেব পিতা এবং দেবকী মাতা দ্বারা জন্ম প্রাপ্ত করেন তারপর এখানে কৃষ্ণ মহারাজ বেদেরই নিয়মকে সিদ্ধ করেছেন। বেদের নিয়ম হল যে পরমেশ্বর "অজ একপাত্" ( ঋগ্বেদ ৬/৫০/১৪) অর্থাৎ ঈশ্বর ( অজঃ) জন্ম না নেয়-শরীর ধারণ করেন না। তিনি ( একপাত্) তাঁর অপরীবর্তনশীল গুণ,কর্ম,স্বভাব সহিত এক ছিল,এক এবং একই থাকবেন তথা যাঁর এক পাদ অর্থাৎ এক অংশ মাত্র শক্তি থেকে এই সংসার উৎপন্ন হয়েছে। অতঃপর সেই ( অজঃ একপাত্) ঈশ্বরের জন্ম হয় না এবং এই প্রকার যোগেশ্বর শ্রীকৃষ্ণও এই বলেছেন , তিনি স্বয়ং ঈশ্বর নয় কিন্তু পিতা বাসুদেব এবং মাতা দেবকী দ্বারা বৃষ্ণীবংশে তার জন্ম হয়েছে এবং এই প্রকার শ্রীবৃষ্ণ মহারাজ যার মধ্যে ব্রহ্ম প্রকট হয় সেও পরমেশ্বরের এক বিভূতি।

পাণ্ডবদের বংশে ধনঞ্জয় অর্থাৎ অর্জুন উৎপন্ন হয়েছিলেন যিনি এক অত্যন্ত শুরবীর, পরাক্রমী, যজ্ঞকারী, ঋষি- মুনিদের সেবক, গুরু দ্রোণাচার্যের প্রিয় শিষ্য, এবং ইন্দ্র থেকেও অস্ত্রের বিদ্যা গ্রহণ করেন,গ্রহস্থেও ব্রহ্মচর্য ধারণ করেন,মহাবীরও পরমেশ্বরের এক বিভূতি হয়। এই প্রকার বেদের মননকারীর মধ্যে সেই সময়ের মুনিদের মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ মুনি ব্যাস হয়েছেন, যাকে এখানে পরমেশ্বরের বিভূতি বলেছেন। কবিদের মধ্যে শ্রেষ্ঠ কবির রূপে যিনি পরমেশ্বরের বিভূতি এখানে বলেছেন তিনি উশানা অর্থাৎ শুক্রাচার্য কবি হয়েছেন। আজও যদি কেউ সংসারে উপরে লিখিত বিভুতির ন্যায় গুণবান হয় তবে সেও ঈশ্বরের বিভূতিই বলা যায়। পরন্তু প্রশ্ন এই হয় যে, কেউ হয় বা না। কারণ আজ কঠোর ব্রহ্মচর্য ধারণ করে বেদের অধ্যয়ন, যজ্ঞ, নাম-জপ এবং অষ্টাঙ্গ যোগ বিদ্যার অভ্যাস করে ইন্দ্রিয়কে জয় করে সমাধি প্রাপ্ত করা এক দূর্লভ কার্য বলে প্রতিত হয়। আজ তাই বেদ বিরোধী ব্যক্তিরাও বন্যার মতো হয় যা এই সমাজের জন্য অতি হানিকারক,যার ফল- স্বরূপ সাংখ্যশাস্ত্রের মুনি কপিলের এই সূত্রে চেতনা বাণী দেন যে যখন জীবিত বেদের বিদ্বান্ যোগীজন পৃথিবীতে থাকবে না তখন পৃথিবীতে "ইতরথাऽন্ধপরম্পরা" ( সাংখ্য সূত্র ৩/৮১) অন্ধদের পরম্পরা স্থাপিত হবে অর্থাৎ বক্তাও বেদ থেকে অন্ধ এবং শ্রোতাও। সরকার এবং আমরা সকলকে এই স্থিতির উপর অবশ্য দৃষ্টি দেওয়া উচিত।। ( ভাষ্যকার-যোগাচার্য রামস্বরূপজী)

No comments:

Post a Comment

ধন্যবাদ

বৈশিষ্ট্যযুক্ত পোস্ট

যজুর্বেদ অধ্যায় ১২

  ॥ ও৩ম্ ॥ অথ দ্বাদশাऽধ্যায়ারম্ভঃ ও৩ম্ বিশ্বা॑নি দেব সবিতর্দুরি॒তানি॒ পরা॑ সুব । য়দ্ভ॒দ্রং তন্ন॒ऽআ সু॑ব ॥ য়জুঃ৩০.৩ ॥ তত্রাদৌ বিদ্বদ্গুণানাহ ...

Post Top Ad

ধন্যবাদ