যজুর্বেদ অধ্যায় ২৩ - ধর্ম্মতত্ত্ব

ধর্ম্মতত্ত্ব

ধর্ম বিষয়ে জ্ঞান, ধর্ম গ্রন্থ কি , হিন্দু মুসলমান সম্প্রদায়, ইসলাম খ্রীষ্ট মত বিষয়ে তত্ত্ব ও সনাতন ধর্ম নিয়ে আলোচনা

धर्म मानव मात्र का एक है, मानवों के धर्म अलग अलग नहीं होते-Theology

সাম্প্রতিক প্রবন্ধ

Post Top Ad

স্বাগতম

08 August, 2023

যজুর্বেদ অধ্যায় ২৩

 ॥ ও৩ম্ ॥

যজুর্বেদ তেইশতম অধ্যায়
অথ ত্রয়োবিংশোऽধ্যায়ারম্ভঃ

ও৩ম্ বিশ্বা॑নি দেব সবিতর্দুরি॒তানি॒ পরা॑ সুব । য়দ্ভ॒দ্রং তন্ন॒ऽআ সু॑ব ॥ য়জুঃ৩০.৩ ॥

অথেশ্বরঃ কিং করোতীত্যাহ ॥
এখন তেইশতম অধ্যায়ের আরম্ভ । তাহার প্রথম মন্ত্রে ঈশ্বর কী করে, এই বিষয়ে বলা হইয়াছে ॥

হিরণ্যগর্ভেত্যস্য প্রজাপতির্ঋষিঃ । পরমেশ্বরো দেবতা । ত্রিষ্টুপ্ ছন্দঃ । ধৈবতঃ স্বরঃ ॥

হি॒র॒ণ্য॒গ॒র্ভঃ সম॑বর্ত্ত॒তাগ্রে॑ ভূ॒তস্য॑ জা॒তঃ পতি॒রেক॑ऽআসীৎ ।

স দা॑ধার পৃথি॒বীং দ্যামু॒তেমাং কস্মৈ॑ দে॒বায়॑ হ॒বিষা॑ বিধেম ॥ ১ ॥


পদার্থঃ- হে মনুষ্যগণ ! যিনি (ভূতস্য) উৎপন্ন কার্য্যরূপ জগতের (অগ্রে) প্রথমে, (হিরণ্যগর্ভঃ) সূর্য্য, চন্দ্র, নক্ষত্রাদি জ্যোতি গর্ভরূপ যাঁহার ভিতরে, সেই সূর্য্যাদি কারণরূপ পদার্থে গর্ভসমান ব্যাপক স্তুতি করিবার যোগ্য (সমবর্ত্তত) উত্তম প্রকার বর্ত্তমান এবং এই সব জগতের (একঃ) একই (জাতঃ) প্রসিদ্ধ (পতিঃ) পালনকারী (আসীৎ) হয় (সঃ) তিনি (ইমাম্) এই (পৃথিবীম্) বিস্তারযুক্ত পৃথিবী (উত) এবং (দ্যাম্) সূর্য্যাদি লোক রচনা করিয়া ইহাদেরকে (দাধার) তিন কালে ধারণ করে সেই (কস্মৈ) সুখস্বরূপ (দেবায়) সুখদানকারী পরমাত্মার জন্য যেমন আমরা (হবিষা) সর্বস্ব দান করিয়া তাহার (বিধেম) পরিচর্য্যা সেবা করি সেইরূপ তোমরাও করিতে থাক ॥ ১ ॥ 

ভাবার্থঃ- এই মন্ত্রে বাচকলুপ্তোপমালঙ্কার আছে । যখন সৃষ্টি প্রলয় প্রাপ্ত হইয়া প্রকৃতিতে স্থির থাকে এবং পুনঃ উৎপন্ন হয়, তাহার অগ্নে যে এক জাগ্রত পরমাত্মা বর্ত্তমান থাকে, তখন সকল জীব মূর্ছাসম প্রাপ্ত হয় । তিনি কল্পের শেষে প্রকাশরহিত পৃথিবী আদি সৃষ্টি তথা প্রকাশ সহিত সূর্য্যাদি লোকের সৃষ্টির বিধান, ধারণ এবং সকল জীবের কর্ম্মানুকূল জন্ম দিয়া সকলের নির্বাহ হেতু সকল পদার্থের বিধান করেন, তিনিই সকলের উপাসনা করিবার যোগ্য দেব, ইহা জানা উচিত ॥ ১ ॥

উপয়ামগৃহীত ইত্যস্য প্রজাপতির্ঋষিঃ । পরমেশ্বরো দেবতা । নিচৃদাকৃতিশ্ছন্দঃ । পঞ্চমঃ স্বরঃ ॥

উ॒প॒য়া॒মগৃ॑হীতোऽসি প্র॒জাপ॑তয়ে ত্বা॒ জুষ্টং॑ গৃহ্ণাম্যে॒ষ তে॒ য়োনিঃ॒ সূর্য়্য॑স্তে মহি॒মা । য়স্তেऽহ॑ন্ৎসংবৎস॒রে ম॑হি॒মা স॑ম্ব॒ভূব॒ য়স্তে॑ বা॒য়াব॒ন্তরি॑ক্ষে মহি॒মা স॑ম্ব॒ভূব॒ য়স্তে॑ দি॒বি সূর্য়ে॑ মহি॒মা স॑ম্ব॒ভূব॒ তস্মৈ॑ । তে মহি॒ম্নে প্র॒জাপ॑তয়ে॒ স্বাহা॑ দে॒বেভ্যঃ॑ ॥ ২ ॥


পদার্থঃ- হে ভগবন্ জগদীশ্বর ! আপনি (উপয়ামগৃহীতঃ) যম যাহা যোগাভ্যাস সম্পর্কীয় কর্ম্ম, উহার সহিত সমীপে সাক্ষাৎ করিয়াছেন অর্থাৎ হৃদয়াকাশে প্রকট হইয়াছেন, সেই (জুষ্টম্) সেবা কৃত বা প্রসন্ন কৃত (ত্বা) আপনাকে (প্রজাপতয়ে) প্রজাপালনকারী রাজার রক্ষা হেতু আমি (গৃহ্ণামি) গ্রহণ করি যে (তে) আপনার (এষঃ) এই (য়োনিঃ) প্রকৃতি জগতের কারণ যে (তে) আপনার (সূর্য়ঃ) সূর্য্য মন্ডল (মহিমা) প্রশংসা রূপ তথা (য়ঃ) যাহা (তে) আপনার (অহন্) দিন ও (সংবৎসরে) বর্ষে নিয়ম বন্ধন দ্বারা (মহিমা) মহিমা (সম্বভূব) সম্ভাবিত, (য়ঃ) যাহা (তে) আপনার (বায়ৌ) পবন ও (অন্তরিক্ষে) অন্তরিক্ষে (মহিমা) মহিমা (সম্বভূব) প্রসিদ্ধ তথা (য়ঃ) যাহা (তে) আপনার (দিবি) বিদ্যুৎ অর্থাৎ সূর্য্যাদির প্রকাশ এবং (সূর্য়ে) সূর্য্যে (মহিমা) মহিমা (সম্বভূব) প্রত্যক্ষ (তস্মৈ) সেই (মহিম্নে, প্রজাপতয়ে) প্রজাপালনরূপ প্রশংসাকারী (তে) আপনার জন্য এবং (দেবেভ্যঃ) বিদ্বান্দিগের জন্য (স্বাহা) উত্তম বিদ্যাযুক্ত বুদ্ধি সকলের গ্রহণ করা উচিত ॥ ২ ॥

ভাবার্থঃ- হে মনুষ্যগণ ! যে পরমেশ্বরের মহিমাকে এই সব জগৎ প্রকাশ করে সেই পরমেশ্বরের উপাসনা ত্যাগ করিয়া এবং কাহারও উপাসনা তাহার স্থানে করা উচিত নহে এবং কেউ যদি বলে যে, পরমেশ্বর হওয়ার কী প্রমাণ আছে, তাহার প্রতি – যে এই জগৎ বর্ত্তমান, উহাই এখন পরমেশ্বরের প্রমাণ করায়, এই উত্তর দেওয়া উচিত ॥ ২ ॥

য়ঃ প্রাণত ইত্যস্য প্রজাপতির্ঋষিঃ । পরমেশ্বরো দেবতা । ত্রিষ্টুপ্ ছন্দঃ । ধৈবতঃ স্বরঃ ॥

য়ঃ প্রা॑ণ॒তো নি॑মিষ॒তো ম॑হি॒ত্বৈক॒ऽইদ্রাজা॒ জগ॑তো ব॒ভূব॑ ।

য়ऽঈশে॑ऽঅ॒স্য দ্বি॒পদ॒শ্চতু॒॑ষ্পদঃ॒ কস্মৈ॑ দে॒বায়॑ হ॒বিষা॑ বিধেম ॥ ৩ ॥


পদার্থঃ- হে মনুষ্যগণ ! যেমন আমরা (য়ঃ) যে (একঃ) এক (ইৎ) ই (মহিত্বা) স্বীয় মহিমা বলে (নিমিষতঃ) নেত্রাদি দ্বারা চেষ্টা করিতে থাকিয়া (প্রাণতঃ) প্রাণী রূপ (দ্বিপদঃ) দুই পদযুক্ত মনুষ্যাদি অথবা (চতুষ্পদঃ) চারি পদ যুক্ত গাভি আদি পশু-সম্পর্কীয় এই (জগতঃ) সংসারের (রাজা) অধিষ্ঠাতা (বভূব) হয় এবং (য়ঃ) যে (অস্য) এই সংসারের (ঈশে) সর্বোপরি স্বামী, সেই (কস্মৈ) আনন্দ স্বরূপ (দেবায়) অতিমনোহর পরমেশ্বরের (হবিষা) বিশেষ ভক্তিভাব পূর্বক (বিধেম) সেবা করি তদ্রূপ বিশেষ ভক্তি ভাবের আপনাদেরও বিধান করা উচিত ॥ ৩ ॥

ভাবার্থঃ- এই মন্ত্রে বাচকলুপ্তোপমালঙ্কার আছে । হে মনুষ্যগণ ! যিনি একই সব জগতের মহারাজাধিরাজ সমস্ত জগতের উৎপন্নকারী সকল ঐশ্বর্য্যযুক্ত মহাত্মা ন্যায়াধীশ, তাহারই উপাসনা দ্বারা তোমরা সবাই ধর্ম, অর্থ, কাম ও মোক্ষের ফলগুলিকে পাইয়া সন্তুষ্ট হও ॥ ৩ ॥

উপয়ামগৃহীত ইত্যস্য প্রজাপতির্ঋষিঃ । পরমেশ্বরো দেবতা । বিকৃতিশ্ছন্দঃ । মধ্যমঃ স্বরঃ ॥

উ॒প॒য়া॒মগৃ॑হীতোऽসি প্র॒জাপ॑তয়ে ত্বা॒ জুষ্টং॑ গৃহ্ণাম্যে॒ষ তে॒ য়োনি॑শ্চ॒ন্দ্রমা॑স্তে মহি॒মা । য়স্তে॒ রাত্রৌ॑ সংবৎস॒রে ম॑হি॒মা স॑ম্ব॒ভূব॒ য়স্তে॑ পৃথি॒ব্যাম॒গ্নৌ ম॑হি॒মা স॑ম্ব॒ভূব॒ য়স্তে॒ নক্ষ॑ত্রেষু চ॒ন্দ্রম॑সি মহি॒মা স॑ম্ব॒ভূব॒ তস্মৈং॑ তে মহি॒ম্নে প্র॒জাপ॑তয়ে দে॒বেভ্যঃ॒ স্বাহা॑ ॥ ৪ ॥


পদার্থঃ- হে জগদীশ্বর ! আপনি (উপয়ামগৃহীতঃ) সৎকর্ম অর্থাৎ যোগাভ্যাসাদি উত্তম কর্ম্ম দ্বারা স্বীকৃত (অসি) হন্, সেই (ত্বা, জুষ্টম্) সেবা কৃত আপনাকে (প্রজাপতয়ে) প্রজার পালক রাজার রক্ষার জন্য আমি (গৃহ্ণামি) গ্রহণ করি অর্থাৎ মনে ধারণা করি, যে (তে) আপনার সংসারে (এষঃ) এই (য়োনিঃ) জল বা যে (তে) আপনার জগতে (চন্দ্রমাঃ) চন্দ্রলোক (মহিমা) মহিমা বা যে (তে) আপনার (য়ঃ) যে (রাত্রৌ) রাত্রি ও (সংবৎসরে) বর্ষে (মহিমা) মহিমা (সম্বভূব) সম্ভব হইয়াছে, হয়ও হইবে (য়ঃ) যে (তে) আপনার সৃষ্টিতে (পৃথিব্যাম্) অন্তরিক্ষ বা ভূমি বা (অগ্নৌ) অগ্নিতে (মহিমা) মহিমা (সম্বভূব) সম্ভব হইয়াছে, হয় ও হইবে তথা যে (তে) আপনার সৃষ্টিতে (য়ঃ) যে (নক্ষত্রেষু) কারণ রূপে অবিনাশী লোক-লোকান্তরে এবং (চন্দ্রমসি) চন্দ্রলোকে (মহিমা) মহিমা (সম্বভূব) সম্ভব হইয়াছে, হয়ও হইবে, সেই (তে) আপনার (তস্মৈ) সেই (মহিম্নে) মহিমা (প্রজাপতয়ে) প্রজাপালক রাজা (দেবেভ্যঃ) এবং বিদ্বান্দিগের জন্য (স্বাহা) সত্যাচরণযুক্ত ক্রিয়ার আমাদিগকে অনুষ্ঠান করা উচিত ॥ ৪ ॥

ভাবার্থঃ- হে মনুষ্যগণ, যাহার মহিমা সামর্থ্য বলে সব জগৎ বিরাজমান, যাহার অনন্ত মহিমা এবং যাহার সিদ্ধি করিতে রচনা দ্বারা ভর্তি সমস্ত জগৎ দৃষ্টান্ত, তাহারই সকল মনুষ্য উপাসনা করিবে ॥ ৪ ॥

য়ুঞ্জন্তীত্যস্য প্রজাপতির্ঋষিঃ । পরমেশ্বরো দেবতা । গায়ত্রী ছন্দঃ । ষড্জঃ স্বরঃ ॥

য়ু॒ঞ্জন্তি॑ ব্র॒ধ্নম॑রু॒ষং চর॑ন্তং॒ পরি॑ ত॒স্থুষঃ॑ ।

রোচ॑ন্তেরোচ॒না দি॒বি ॥ ৫ ॥


পদার্থঃ- যে পুরুষ (পরি) সব দিক্ দিয়া (তম্থূষঃ) স্থাবর জীবদিগকে (চরন্তম্) প্রাপ্ত হইয়া বিদ্যুতের সমান বর্ত্তমান (অরুষম্) প্রাণীদিগের মর্মস্থল যাহাতে পীড়া হইলে প্রাণের বিয়োগ শীঘ্র হইয়া যায়, সেই সব স্থানগুলির রক্ষা করিবার জন্য স্থির হইয়া (ব্রধ্নম্) সর্বাপেক্ষা মহান্ সর্বোপরি বিরাজমান পরমাত্মাকে স্বীয় আত্মা সহ (য়ুঞ্জন্তি) যুক্ত করে, তাহারা (দিবি) সূর্য্যে (রোচনাঃ) কিরণগুলির সমান (রোচন্তে) পরমাত্মায় প্রকাশমান হয় ॥ ৫ ॥

ভাবার্থঃ- হে মনুষ্যগণ ! যেমন প্রত্যেক ব্রহ্মাণ্ডে সূর্য্য প্রকাশমান, সেইরূপ সর্ব জগতে পরমাত্মা প্রকাশমান । যাহারা যোগশাস্ত্র দ্বারা সেই অন্তর্যামী পরমেশ্বরকে স্বীয় আত্মা সহিত যুক্ত করে, তাহারা সব দিক দিয়া প্রকাশ প্রাপ্ত হয় ॥ ৫ ॥

য়ুঞ্জন্ত্যস্যেত্যস্য প্রজাপতির্ঋষিঃ । সূর্য়ো দেবতা । বিরাডগায়ত্রী ছন্দঃ । ষড্জঃ স্বরঃ ॥

য়ু॒ঞ্জন্ত্য॑স্য॒ কাম্যা॒ হরী॒ বিপ॑ক্ষসা॒ রথে॑ ।

শোণা॑ ধৃ॒ষ্ণূ নৃ॒বাহ॑সা ॥ ৬ ॥


পদার্থঃ- হে মনুষ্যগণ ! যেমন শিক্ষার্থী সজ্জন (কাম্যা) মনোহর (হরী) হরণশীল (বিপক্ষসা) বিবিধ প্রকারে ভালমত গৃহীত (শোণা) রক্তগুণবিশিষ্ট (ধৃষ্ণু) অতিপুষ্ট (নৃবাহসা) মনুষ্যদিগকে এক দেশ হইতে অন্য দেশে পোঁছাইবার জন্য সেই অশ্বগুলিকে (রথে) রথে (য়ুঞ্জন্তি) যুক্ত করে, সেইরূপ যোগী (অস্য) এই পরমেশ্বরের মধ্যে ইন্দ্রিয়, অন্তঃকরণ ও প্রাণগুলিকে যুক্ত করে ॥ ৬ ॥

ভাবার্থঃ- এই মন্ত্রে বাচকলুপ্তোপমালঙ্কার আছে । যেমন মনুষ্য সুশিক্ষিত অশ্বযুক্ত রথ দ্বারা এক স্থান হইতে অন্য স্থান শীঘ্র প্রাপ্ত হয় সেইরূপই বিদ্যা সজ্জনদিগের সঙ্গ ও যোগাভ্যাস দ্বারা পরমাত্মাকে শীঘ্র প্রাপ্ত হয় ॥ ৬ ॥

বিষয়ঃ পুনর্মনুষ্যঃ কস্য সঙ্গং কুর্য়্যাদিত্যাহ ॥
পুনঃ মনুষ্য কাহার সঙ্গ করিবে, এই বিষয়কে মন্ত্রে বলা হইয়াছে ।

য়দ্বাত ইত্যস্য প্রজাপতির্ঋষিঃ । ইন্দ্রো দেবতা । নিচৃদ্বৃহতী ছন্দঃ । মধ্যমঃ স্বরঃ ॥

য়দ্বাতো॑ऽঅ॒পোऽঅগ॑নীগন্প্রি॒য়ামিন্দ্র॑স্য ত॒ন্ব᳖ম্ ।

এ॒তᳬস্তো॑তর॒নেন॑ প॒থা পুন॒রশ্ব॒মা ব॑র্ত্তয়াসি নঃ ॥ ৭ ॥


পদার্থঃ- হে (স্তোতঃ) স্তুতি কারীগণ ! যেমন শিল্পীগণ (ইন্দ্রস্য) বিদ্যুতের (প্রিয়াম্) অতিসুন্দর (তন্বম্) বিস্তারযুক্ত শরীরকে (বাতঃ) পবনের সমান প্রাপ্ত হইয়া (য়ৎ) যে কলা যন্ত্ররূপী অশ্ব ও (অপঃ) জলকে (অগনীগন্) প্রাপ্ত হয়, তদ্রূপ (এতম্) এই (অশ্বম্) শীঘ্র গমনশীল কলাযন্ত্ররূপ অশ্বকে (অনেন) উক্ত বিদ্যুৎরূপ (পথা) মার্গ দ্বারা আপনি প্রাপ্ত হয়েন (পুনঃ) আবার (নঃ) আমাদিগকে (আ, বর্ত্তয়াসি) ভালমত ব্যবহার করেন অর্থাৎ ইতস্ততঃ লইয়া যান, সেই আপনাদের আমরা সৎকার করি ॥ ৭ ॥

ভাবার্থঃ- এই মন্ত্রে বাচকলুপ্তোপমালঙ্কার আছে । হে মনুষ্য ! যাহারা তোমাদিগকে সুমার্গে চালনা করে তাহাদের সঙ্গ দ্বারা তোমরা বায়ু ও বিদ্যুৎ ইত্যাদির দ্বারা বিদ্যা প্রাপ্ত হও ॥ ৭ ॥

বিষয়ঃ পুনর্বিদ্বাংসঃ কিং কুর্বন্তীত্যাহ ॥
এখন বিদ্বান্গণ কী করেন, এই বিষয়কে পরবর্ত্তী মন্ত্রে বলা হইয়াছে ।

বসব ইত্যস্য প্রজাপতির্ঋষিঃ । বায়্বাদয়ো দেবতাঃ । নিচৃদত্যষ্টিশ্ছন্দঃ । গান্ধারঃ স্বরঃ ॥

বস॑বস্ত্বাঞ্জন্তু গায়॒ত্রেণ॒ ছন্দ॑সা রু॒দ্রাস্ত্বা॑ঞ্জন্তু॒ ত্রৈষ্টু॑ভেন॒ ছন্দ॑সাদি॒ত্যাস্ত্বা॑ঞ্জন্তু॒ জাগ॑তেন॒ ছন্দ॑সা । ভূর্ভুবঃ॒ স্ব᳕র্লাজী৩ঞ্ছাচী৩ন্যব্যে॒ গব্য॑ऽএ॒তদন্ন॑মত্ত দেবাऽএ॒তদন্ন॑মদ্ধি প্রজাপতে ॥ ৮ ॥


পদার্থঃ- হে (প্রজাপতে) প্রজাগণের পালক রাজন্ ! (বসবঃ) প্রথম শ্রেণির বিদ্বান্ (গায়ত্রেণ) গায়ত্রী ছন্দ দ্বারা বলিবার যোগ্য (ছন্দসা) স্বচ্ছন্দ অর্থ দ্বারা যে (ত্বা) আপনাকে (অঞ্জন্তু) কামনা করে (রুদ্রাঃ) মধ্যম শ্রেণির বিদ্বান্ (ত্রৈষ্টুভেন) ত্রিষ্টুপ্ছন্দ দ্বারা প্রকাশিত (ছন্দসা) স্বচ্ছন্দ অর্থ দ্বারা যে (ত্বা) আপনাকে (অঞ্জন্তু) কামনা করে অথবা (আদিত্যাঃ) উত্তম শ্রেণীর বিদ্বান্ (জাগতেন) জগতী ছন্দ দ্বারা প্রকাশিত (ছন্দসা) স্বচ্ছন্দ অর্থ দ্বারা যে (ত্বা) আপনাকে (অজন্তু) কামনা করে, সুতরাং আপনি (এতৎ) এই (অন্নম্) অন্নকে (অদ্ধি) ভক্ষণ করুন । হে (দেবাঃ) বিদ্বান্গণ ! তোমরা (য়ব্যে) যবের ক্ষেত্রে উৎপন্ন (গব্যে) গাভির দুগ্ধ, দধি ইত্যাদি উত্তম পদার্থে মিশ্রিত (এতম্) এই (অন্নম্) অন্নকে (অত্ত) ভক্ষণ কর তথা (লাজীন্) স্ব স্ব শ্রেণীতে গমনরত (শাচীন্) প্রকট (ভূঃ) এই প্রত্যক্ষ লোক (ভুবঃ) অন্তরিক্ষস্থ লোক এবং (স্বঃ) প্রকাশে স্থির সূর্য্যাদি লোককে প্রাপ্ত হও ॥ ৮ ॥

ভাবার্থঃ- যে সব বিদ্বান্ অঙ্গ ও উপাঙ্গ দ্বারা যুক্ত চারি বেদকে মনুষ্যদিগকে অধ্যাপন করেন, তাঁহারা ধন্যবাদের পাত্র হইয়া থাকেন ॥ ৮ ॥

অথ বিদ্বাংসঃ কিং কিং প্রষ্টব্যা ইত্যাহ ॥
এখন বিদ্বান্দিগকে কী কী জিজ্ঞাসা করা উচিত, এই বিষয়কে পরবর্ত্তী মন্ত্রে বলা হইয়াছে ॥

কঃ স্বিদিত্যস্য প্রজাপতির্ঋষিঃ । জিজ্ঞাসুর্দেবতা । নিচৃদনুষ্টুপ্ ছন্দঃ । গান্ধারঃ স্বরঃ ॥

কঃ স্বি॑দেকা॒কী চর॑তি॒ কऽউ॑ স্বিজ্জায়তে॒ পুনঃ॑ ।

কিᳬস্বি॑দ্ধি॒মস্য॑ ভেষ॒জং কিম্বা॒বপ॑নং ম॒হৎ ॥ ঌ ॥


পদার্থঃ- হে বিদ্বান্গণ ! আমরা তোমাকে এই জিজ্ঞাসা করি যে, (কঃ স্বিৎ) কে (একাকী) একাকী (চরতি) বিচরণ করে (উ) এবং (কঃ, স্বিৎ) কে (পুনঃ) বারবার (জায়তে) প্রকট হয় (কিম্, স্বিৎ) কী (হিমস্য) শীতের (ভেষজম্) ওষধ এবং (কিম্) কী (উ) তো (মহৎ) বৃহৎ (আবপনম্) বীজ বপন করিবার স্থান ॥ ঌ ॥

ভাবার্থঃ- উক্ত প্রশ্নসমূহের উত্তর পরবর্ত্তী মন্ত্রে বলা হইয়াছে, ইহা জানা উচিত । মনুষ্যদিগের উচিত যে, সর্বদা এই প্রকার প্রশ্ন করিতে থাকে ॥ ঌ ॥

অথ পূর্বোক্তপ্রশ্নানামুত্তরাণ্যাহ ॥
এখন পশ্চাতের মন্ত্রে কথিত প্রশ্নসমূহের উত্তর বলিতেছি ।

সূর্য়্য ইত্যস্য প্রজাপতির্ঋষিঃ । সূর্য়ো দেবতা । অনুষ্টুপ্ ছন্দঃ । গান্ধারঃ স্বরঃ ॥

সূর্য়॑ऽএকা॒কী চ॑রতি চ॒ন্দ্রমা॑ জায়তে॒ পুনঃ॑ ।

অ॒গ্নির্হি॒মস্য॑ ভেষ॒জং ভূমি॑রা॒বপ॑নং ম॒হৎ ॥ ১০ ॥


পদার্থঃ- হে জিজ্ঞাসু মনুষ্যগণ ! (সূর্য়্যঃ) সূর্য্য (একাকী) সাহায্য ব্যতিরেকে স্বীয় কক্ষে (চরতি) চলে, (পুনঃ) পুনঃ এই সূর্য্যের আলোকে (চন্দ্রমাঃ) চন্দ্রলোক (জায়তে) প্রকাশিত হয় (অগ্নিঃ) অগ্নি (হিমস্য) শীতের (ভেষজম্) ঔষধ (ভূমিঃ) পৃথিবী (মহৎ) বিরাট্ (আবপনম্) বপনের স্থান ইহাকে তোমরা জানো ॥ ১০ ॥

ভাবার্থঃ- এই সংসারে সূর্য্যলোক নিজ আকর্ষণ শক্তি দ্বারা নিজেরই কক্ষে বর্ত্তমান এবং তাহারই প্রকাশে চন্দ্রাদি লোক প্রকাশিত হয় । অগ্নির সমান শীত নিবারক বস্তু এবং পৃথিবী তুল্য বৃহৎ ক্ষেত্র নেই । ইহা মনুষ্যদিগের জানা উচিত ॥ ১০ ॥

পুনঃ প্রশ্নানাহ ॥
পুনরায় প্রশ্নগুলিকে পরবর্তী মন্ত্রে বলা হইয়াছে ॥

কাস্বিদিত্যস্য প্রজাপতির্ঋষিঃ । জিজ্ঞাসুর্দেবতা । অনুষ্টুপ্ ছন্দঃ । গান্ধারঃ স্বরঃ ॥

কা স্বি॑দাসীৎ পূ॒র্বচি॑ত্তিঃ॒ কিᳬস্বি॑দাসীদ্ বৃ॒হদ্বয়ঃ॑ ।

কা স্বি॑দাসীৎ পিলিপ্পি॒লা কা স্বি॑দাসীৎ পিশঙ্গি॒লা ॥ ১১ ॥


পদার্থঃ- হে বিদ্বান্গণ ! আমরা তোমাদের নিকট জিজ্ঞাসা করি যে, (কা, স্বিৎ) কে (পূর্বচিত্তিঃ) স্মরণের প্রথম বিষয় (আসীৎ) হইয়াছে? (কিম্ স্বিৎ) কে (বৃহৎ) বৃহৎ (বয়ঃ) উড়নশীল পক্ষী (আসীৎ) আছে? (কা, স্বিৎ) কে (পিলিপ্পিলা) আর্দ্র চিক্কণ বস্তু (আসীৎ) তথা (কা, স্বিৎ) কে (পিশঙ্গিলা) প্রকাশরূপকে নিগরণকারী বস্তু (আসীৎ) আছে ॥ ১১ ॥

ভাবার্থঃ- এই মন্ত্রের উত্তর পরবর্ত্তী মন্ত্রে দেওয়া হইয়াছে । যাহারা বিদ্বান্দিগকে জিজ্ঞাসা করিবে না, তাহারা স্বয়ং বিদ্বান্ নয় ॥ ১১ ॥

অথ প্রাক্প্রশ্নোত্তরাণ্যাহ ॥
এখন গত প্রশ্নগুলির উত্তর দেওয়া হইতেছে ॥

দ্যৌরাসীদিত্যস্য প্রজাপতির্ঋষিঃ । বিদ্যুদাদয়ো দেবতাঃ । নিচৃদনুষ্টুপ্ ছন্দঃ । গান্ধারঃ স্বরঃ ॥

দ্যৌরা॑সীৎ পূ॒র্বচি॑ত্তি॒রশ্ব॑ऽআসীদ্ বৃ॒হদ্বয়ঃ॑ ।

অবি॑রাসীৎ পিলিপ্পি॒লা রাত্রি॑রাসীৎ পিশঙ্গি॒লা ॥ ১২ ॥


পদার্থঃ- হে জানিতে ইচ্ছুক ব্যক্তিগণ ! (পূর্বচিত্তিঃ) প্রথম স্মৃতির বিষয় (দ্যৌঃ) দিব্যগুণদাতা বর্ষা (আসীৎ) আছে । (বৃহৎ) বৃহৎ (বয়ঃ) উড়নশীল (অশ্বঃ) মার্গগুলি ব্যাপ্ত হইবার পক্ষীতুল্য অগ্নি (আসীৎ) আছে, (পিলিপ্পিলা) বর্ষা দ্বারা আর্দ্র, চিক্কণ শোভায়মান (অবিঃ) অন্নাদি হইতে রক্ষাদি উত্তমগুণ প্রকটকারী পৃথিবী (আসীৎ) আছে এবং (পিশঙ্গিলা) প্রকাশরূপকে নিগরণ অর্থাৎ অন্ধকারকারী (রাত্রিঃ) রাত্রি (আসীৎ) আছে, ইহা তোমরা জান ॥ ১২ ॥

ভাবার্থঃ- হবন ও সূর্য্য রূপাদি অগ্নির তাপ দ্বারা সকল গুণযুক্ত অন্নাদি দ্বারা সংসারের স্থিতি নিমিত্ত বৃষ্টি উৎপন্ন হয় । সেই বৃষ্টি দ্বারা সকল ওষধি আদি উত্তম পদার্থ যুক্ত পৃথিবী হয় এবং সূর্য্যরূপ অগ্নি দ্বারাই প্রাণীদিগের বিশ্রাম হেতু রাত্রি হয় ॥ ১২ ॥

অথ বিদ্বদ্ভির্মনুষ্যাঃ ক্ব য়োজনীয়া ইত্যাহ ॥
এখন বিদ্বান্দিগকে মনুষ্যগণ কোথায় যুক্ত করিবে, এই বিষয়কে পরবর্ত্তী মন্ত্রে বলা হইয়াছে ॥

বায়ুরিত্যস্য প্রজাপতির্ঋষিঃ । ব্রহ্মাদয়ো দেবতাঃ । ভুরিগতিজগতী ছন্দঃ । নিষাদঃ স্বরঃ ॥

বা॒য়ুষ্ট্বা॑ পচ॒তৈর॑ব॒ত্বসি॑তগ্রীব॒শ্ছাগৈ॑র্ন্য॒গ্রোধ॑শ্চম॒সৈঃ শ॑ল্ম॒লিবৃর্দ্ধ্যা॑ । এ॒ষ স্য রা॒থ্যো বৃষা॑ প॒ড্ভিশ্চ॒তুর্ভি॒রেদ॑গন্ব্র॒হ্মাऽকৃ॑ষ্ণশ্চ নোऽবতু॒ নমো॒ऽগ্নয়ে॑ ॥ ১৩ ॥


পদার্থঃ- হে বিদ্যার্থীগণ ! (পচতৈঃ) উত্তম প্রকার পাক দ্বারা (বায়ুঃ) স্থুল কার্য্যরূপ বায়ু (ছাগৈঃ) ছেদন-ক্রিয়া দ্বারা (অসিতগ্রীবঃ) কৃষ্ণ শিখা যুক্ত অগ্নি ও (চমসৈঃ) মেঘ দ্বারা (ন্যগ্রোধঃ) বটবৃক্ষ (বৃদ্ধ্যা) উন্নতি সহ (শল্মলিঃ) বৃক্ষবিশেষ (ত্বা) তোমাকে (অবতু) রক্ষা করুক যাহা (এষঃ) এই (রাথ্যঃ) সড়কে চলিতে কুশল ও (বৃষা) সুখবর্ষাকারী (স্যঃ) সে (চতুর্ভিঃ, ষড্ভিঃ, ইৎ) যদ্দ্বারা গমন করে, সেই চারি পদ দ্বারা তোমাকে (আऽগন্) প্রাপ্ত হউক (চ) তথা যাহা (অকৃষ্ণঃ) অবিদ্যারূপ অন্ধকার হইতে পৃথক (ব্রহ্মা) চারি বেদের জ্ঞাতা উত্তম বিদ্বান্ (নঃ) আমাদিগকে সব গুণে (অবতু) পৌঁছাক, সেই (অগ্নয়ে) বিদ্যা দ্বারা প্রকাশমান চারি বেদকে পাঠ করা বিদ্বানের জন্য (নমঃ) অন্ন দেওয়া উচিত ॥ ১৩ ॥

ভাবার্থঃ- হে মনুষ্যগণ ! পবন শ্বাসাদি চালাইবার দ্বারা, অগ্নি অন্ন ইত্যাদি পরিপাক দ্বারা, সূর্য্য মণ্ডল, বর্ষা, বৃক্ষ ফলাদি, অশ্বাদি গমন ও বিদ্বান্ শিক্ষা দ্বারা তোমার রক্ষা করেন, তাহাদেরকে তোমরা জানো এবং বিদ্বান্দিগের সৎকার কর ॥ ১৩ ॥

পুনর্বিদ্বাংসঃ কিং কুর্য়ুরিত্যাহ ॥
পুনঃ বিদ্বান্গণ কী করিবে, এই বিষয় পরবর্ত্তী মন্ত্রে বলা হইয়াছে ॥

সꣳশিতো রশ্মিনেত্যস্য প্রজাপতির্ঋষিঃ । ব্রহ্মা দেবতা । নিচৃদনুষ্টুপ্ ছন্দঃ । গান্ধারঃ স্বরঃ ॥

সꣳশি॑তো র॒শ্মিনা॒ রথঃ॒ সꣳশি॑তো র॒শ্মিনা॒ হয়ঃ॑ ।

সꣳশি॑তো অ॒প্স্ব᳖সু॒জা ব্র॒হ্মা সোম॑পুরোগবঃ ॥ ১৪ ॥


পদার্থঃ- যাহা মনুষ্যগণের দ্বারা (রশ্মিনা) কিরণ সমূহের দ্বারা (রথঃ) আনন্দকে সিদ্ধকারী যান (সংশিতঃ) উত্তম প্রকার সূক্ষ্ম কারীগর দ্বারা নির্মিত (রশ্মিনা) লাগামের দড়ি ইত্যাদি দ্বারা (হয়ঃ) অশ্ব (সংশিতঃ) ভালমত চলিতে তীক্ষ্ম অর্থাৎ উত্তম ক্রিয়া তথা (অপ্সু) প্রাণসকলে (অপ্সুজাঃ) যাহা প্রাণবায়ু রূপে সঞ্চারকারী পবন বা বাষ্প (সোমপুরোগবঃ) ওষধি সকলের বোধ এবং ঐশ্বর্য্যের যোগ যাহা হইতে প্রথমে প্রাপ্ত হওয়ার যোগ্য সে (ব্রহ্মা) বড় যোগী বিদ্বান্ (সংশিতঃ) অতিপ্রশংসিত করা হউক তাহা হইলে কী কী সুখ প্রাপ্ত হইবে না? ॥ ১৪ ॥

ভাবার্থঃ- যে সব মনুষ্য পদার্থ সমূহের বিশেষ জ্ঞান দ্বারা বিদ্বান্ হয় তাহারা অন্যদেরকে বিদ্বান্ করিয়া প্রশংসা প্রাপ্ত করুক ॥ ১৪ ॥

অথ জিজ্ঞাসবঃ কীদৃশা ভবেয়ুরিত্যাহ ॥
এখন অধ্যয়নকারী বা উত্তম বিদ্যা-বোধ কামনাকারী কেমন হইবে, এই বিষয়কে পরবর্ত্তী মন্ত্রে বলা হইয়াছে ॥

স্বয়মিত্যস্য প্রজাপতির্ঋষিঃ । বিদ্বান্ দেবতা । বিরাডনুষ্টুপ্ ছন্দঃ । গান্ধারঃ স্বরঃ ॥

স্ব॒য়ং বা॑জিঁস্ত॒ন্বং᳖ কল্পয়স্ব স্ব॒য়ং য়॑জস্ব স্ব॒য়ং জু॑ষস্ব ।

ম॒হি॒মা তে॒ऽন্যেন॒ ন স॒ন্নশে॑ ॥ ১৫ ॥


পদার্থঃ- হে (বাজিন্) বোধ কামনাকারী তুমি (স্বয়ম্) স্বয়ং (তন্বম্) নিজের শরীরকে (কল্পয়স্ব) সমর্থ কর (স্বয়ং) উত্তম বিদ্বান্দিগের সঙ্গে (য়জস্ব) সঙ্গ দাও এবং (স্বয়ম্) স্বয়ং তাহাদেরকে (জুষস্ব) সেবা কর যাহাতে (তে) তোমার (মহিমা) মহিমা, তোমার প্রতাপ (অন্যেন) অন্যদের সহ (ন) না (সংনশ) নষ্ট হয় ॥ ১৫ ॥

ভাবার্থঃ- অগ্নি স্বয়ং প্রকাশিত হয়, স্বয়ং সঙ্গ দেয় তথা স্বয়ং সেবা প্রাপ্ত হয় । যাহারা বোধ কামনাকারী স্বয়ং পুরুষার্থ যুক্ত হইয়া থাকে, তাহাদের প্রতাপ, মহিমা কখনও নষ্ট হয় না ॥ ১৫ ॥

অথ মনুষ্যাঃ কীদৃশা ভবেয়ুরিত্যাহ ॥
এখন মনুষ্য কেমন হইবে, এই বিষয়কে পরবর্ত্তী মন্ত্রে বলা হইয়াছে ॥

ন বা ইত্যস্য প্রজাপতির্ঋষিঃ । সবিতা দেবতা । বিরাড্জগতী ছন্দঃ । নিষাদঃ স্বরঃ ॥

ন বাऽউ॑ऽএ॒তন্ম্রি॑য়সে॒ ন রি॑ষ্যসি দে॒বাঁ২ऽইদে॑ষি প॒থিভিঃ॑ সু॒গেভিঃ॑ ।

য়ত্রাস॑তে সু॒কৃতো॒ য়ত্র॒ তে য়॒য়ুস্তত্র॑ ত্বা দে॒বঃ স॑বি॒তা দ॑ধাতু ॥ ১৬ ॥


পদার্থঃ- হে বিদ্যার্থী ! (য়ত্র) যেখানে (তে) সেই সব (সুকৃতঃ) ধর্মাত্মা যোগী বিদ্বান্ (আসতে) বসেন এবং সুখ (য়য়ুঃ) লাভ করেন অথবা (য়ত্র) যেখানে (সুগেভিঃ) সুখ দ্বারা যাওয়ার যোগ্য (পথিভিঃ) মার্গ দ্বারা তুমি (দেবান্) দিব্য উত্তম উত্তম গুণ বা বিদ্বান্দিগকে (এষি) প্রাপ্ত হয় এবং যেখানে (এতৎ) এই পূর্বোক্ত সকল বৃত্তান্ত (উ) তো বর্ত্তমান এবং স্থির থাকা তুমি (ন) না (ম্রিয়সে) নষ্ট হও (ন, বৈ) না (রিষ্যসি) অপরের নাশ করিবে (তত্র) সেখানে (ইৎ)  (ত্বা) তোমাকে (সবিতা) সমস্ত জগৎ উৎপাদক পরমেশ্বর (দেবঃ) যেহেতু প্রকাশমান, সেই (দধাতু) স্থাপন করিবে ॥ ১৬ ॥

ভাবার্থঃ- যে সকল মনুষ্য নিজ নিজ রূপকে জানিবে তাহারা অবিনাশীভাবকে জানিতে পারিবে, যাহারা ধর্মযুক্ত মার্গ দিয়া চলিবে, তাহারা উত্তম কর্মকর্ত্তাদিগের আনন্দ পাইবে, যাহারা পরমাত্মার সেবা করিবে তাহারা জীবদিগকে সত্যমার্গে স্থাপন করিবে ॥ ১৬ ॥

অথ কে পশব ইত্যাহ ॥
এখন পশুকে, এই বিষয়ে পরবর্ত্তী মন্ত্রে বলা হইয়াছে ॥

অগ্নিরিত্যস্য প্রজাপতির্ঋষিঃ । অগ্ন্যাদয়ো দেবতাঃ । অগ্নিরিত্যস্য বায়ুরিত্যস্য সূর্য় ইত্যস্য চ সর্বেষাং পংক্তিশ্ছন্দঃ । সর্বত্র পঞ্চমঃ স্বরঃ ॥


অ॒গ্নিঃ প॒শুরা॑সী॒ৎ তেনা॑য়জন্ত॒ সऽএ॒তং লো॒কম॑জয়॒দ্ য়স্মি॑ন্ন॒গ্নিঃ স তে॑ লো॒কো ভ॑বিষ্যতি॒ তং জে॑ষ্যসি॒ পিবৈ॒তাऽঅ॒পঃ । বা॒য়ুঃ প॒শুরা॑সী॒ৎ তেনা॑য়জন্ত॒ সऽএ॒তং লো॒কম॑জয়॒দ্ য়স্মি॑ন্ বা॒য়ুঃ স তে॑ লো॒কো ভ॑বিষ্যতি॒ তং জে॑ষ্যসি॒ পিবৈ॒তাऽঅ॒পঃ । সূর্য়ঃ॑ প॒শুরা॑সী॒ৎ তেনা॑য়জন্ত॒ সऽএ॒তং লো॒কম॑জয়॒দ্ য়স্মি॒ন্ৎসূর্য়্যঃ॒ স তে॑ লো॒কো ভ॑বিষ্যতি॒ তং জে॑ষ্যসি॒ পিবৈ॒তাऽঅ॒পঃ ॥ ১৭ ॥

পদার্থঃ- হে বিদ্যাবোধ কামনাকারী পুরুষ ! (য়স্মিন্) যে দেখিবার যোগ্য লোক-লোকান্তরে (সঃ) সে (অগ্নিঃ) অগ্নি (পশুঃ) দেখিবার যোগ্য (আসীৎ) আছে (তেন) তদ্দ্বারা যে প্রকার যজ্ঞকারী (অয়জন্ত) যজ্ঞ করিবে সেই প্রকার তুমি যজ্ঞ কর যেমন (সঃ) সেই বিদ্বান্ (এতম্) এই (লোকম্) দেখিবার যোগ্য স্থানকে (অজয়ৎ) জয় করে সেইরূপ ইহাকে জয় কর যদি (তম) তাহাকে (জেষ্যসি) জিতিবে তাহা হইলে সে (অগ্নিঃ) অগ্নি (তে) তোমার (লোকঃ) দেখিবার যোগ্য (ভবিষ্যতি) হইবে ইহাতে তুমি (এতাঃ) এই যজ্ঞ দ্বারা শুদ্ধ কৃত (অপঃ) জলকে (পিব) পান কর (য়স্মিন্) যাহাতে (সঃ) সে (বায়ুঃ) পবন (পশুঃ) দেখিবার যোগ্য (আসীৎ) আছে এবং যাহাতে যজ্ঞ কর্মকারী (অয়জন্ত) যজ্ঞ করিবে (তেন) তদ্দ্বারা তুমি যজ্ঞ কর যেমন (সঃ) সে বিদ্বান্ (এতম্) এই বায়ুমন্ডলের থাকার (লোকম্) লোককে (অজয়ৎ) জিতিবে সেইরূপ তুমি জয় কর যাহা (তম্) তাহাকে (জেষ্যসি) জিতিবে তাহা হইলে সে (বায়ুঃ) পবন (তে) তোমার (লোকঃ) দেখিবার যোগ্য (ভবিষ্যতি) হইবে ইহাতে তুমি (এতাঃ) এই সব (অপঃ) যজ্ঞ দ্বারা শুদ্ধকৃত প্রাণরূপী পবনগুলিকে (পিব) ধারণ কর (য়স্মিন্) যন্মধ্যে সে (সূর্য়্যঃ) সূর্য্যমন্ডল (পশুঃ) দেখিবার যোগ্য (আসীৎ) আছে (তেন) তদ্দ্বারা (অজয়ন্ত) যজ্ঞ কর্মকারী যজ্ঞ করিবে যেমন (সঃ) সেই বিদ্বান্ (এতম্) এই সূর্য্য মণ্ডলের স্থির থাকার (লোকম্) লোককে (অজয়ৎ) জিতিয়া লয় তদ্রূপ তুমিও জয়কর, তুমি যদি (তম্) তাহাকে (জেষ্যসি) জিতিবে তাহা হইলে (সঃ) সে (সূর্য়ঃ) সূর্য্যমণ্ডল (তে) তোমার (লোকঃ) দেখিবার যোগ্য (ভবিষ্যতি) হইবে ইহাতে তুমি (এতাঃ) যজ্ঞ দ্বারা শুদ্ধকৃত (অপঃ) সংসারে ব্যাপ্ত হওয়া সূর্য্য প্রকাশকে (পিব) গ্রহণ কর ॥ ১৭ ॥

ভাবার্থঃ- হে মনুষ্যগণ ! সকল যজ্ঞে অগ্নি ইত্যাদিকেই পশু জানিবে কিন্তু প্রাণী এই যজ্ঞে বধ যোগ্য নহে, না হোম করিবার যোগ্য, যাহারা এমন জানিয়া সুগন্ধী ইত্যাদি উত্তম উত্তম পদার্থগুলিকে ভালমত নির্মাণ করিয়া অগ্নি হোম করে তাহারা পবন ও সূর্য্যকে প্রাপ্ত হইয়া বর্ষার দ্বারা তথা হইতে মুক্ত হইয়া ওষধি, প্রাণ, শরীর ও বুদ্ধিকে ক্রমপূর্বক প্রাপ্ত হইয়া সকল প্রাণীকে আনন্দ দান করে । এই যজ্ঞকর্মকারী পুণ্যের আধিক্যে পরমাত্মাকে প্রাপ্ত হইয়া সৎকারযুক্ত হইয়া থাকে ॥ ১৭ ॥ [এই মন্ত্রের যোজনা অধ্যায় ৬।১০ এর সাথে যুক্ত করে দেখুন]

পুনর্মনুষ্যৈঃ কিং কিং বিজ্ঞেয়মিত্যাহ ॥
পুনঃ মনুষ্যদিগকে কী কী জানা উচিত, এই বিষয়কে পরবর্ত্তী মন্তে বলা হইয়াছে ।

অথ প্রাণায়েত্যস্য মন্ত্রস্য প্রজাপতির্ঋষিঃ । প্রাণাদয়ো দেবতাঃ । বিরাড্জগতী ছন্দঃ । নিষাদঃ স্বরঃ ॥

প্রা॒ণায়॒ স্বাহা॑পা॒নায়॒ স্বাহা॑ ব্যা॒নায়॒ স্বাহা॑ ।

অম্বে॒ऽঅম্বি॒কেऽম্বা॑লিকে॒ ন মা॑ নয়তি॒ কশ্চ॒ন ।

সস॑স্ত্যশ্ব॒কঃ সুভ॑দ্রিকাং কাম্পীলবা॒সিনী॑ম্ ॥ ১৮ ॥


পদার্থঃ হে (অম্বে) মাতা (অম্বিকে) পিতামহী (অম্বালিকে) প্রপিতামহী (কশ্চন) 
কেউ (অশ্বকঃ) অশ্বসমান শীঘ্রগামী ব্যক্তি যে (কাম্পীলবাসিনীম্) সুখগ্রাহী মনুষ্য কে বাসকারিণী (সুভদ্রিকাম্) উত্তম কল্যাণকারিণী লক্ষ্মীকে গ্রহণ করিয়া (সমস্তি) শয়ন করে সে (মা) আমাকে (ন) না (নয়তি) নিজের বশে আনে । অতএব, আমি (প্রাণায়) প্রাণের পোষণ হেতু (স্বাহা) সত্যবাণী (অপানায়) দুঃখ নিবারণ হেতু (স্বাহা) সুশিক্ষিত বাণী এবং (ব্যানায়) সকল শরীরে ব্যাপ্ত হওয়া স্বীয় আত্মার জন্য (স্বাহা) সত্য বাণীকে যুক্ত করি ॥ ১৮ ॥

ভাবার্থঃ- হে মনুষ্যগণ ! যেমন মাতা, পিতামহী, প্রপিতামহী নিজ নিজ সন্তানদিগকে সুশিক্ষা প্রদান করে, সেইরূপ তোমাদেরকেও স্বীয় সন্তানকে শিক্ষিত করা উচিত । ধনের স্বভাব এই যে, যেখানে ইহা একত্রিত হয়, সেখানে তাহাদেরকে নিদ্রালু, আলসী ও কর্মহীন করিয়া দেয়, সুতরাং ধন পাইয়াও মনুষ্যকে পুরুষার্থই করা উচিত ॥ ১৮ ॥

विषय
प्राण आदि शक्तियों का उपयोग, राज्यलक्ष्मी और वसुधा का वीरभोग्या होना।कम्पीलवासिनी सुभद्रिका और सोने वाले अश्वक का रहस्य । पक्षान्तर में पतिवरा कन्या तथा अध्यात्म में स्पष्ट विवरण।

भावार्थ:- ( प्राणाय, अपानाय, व्यानाय स्वाहा ) प्राण, अपान और व्यान इन तीनों मुख्य शरीर के प्राणों को उत्तम रीति से प्रयोग करो और उनको उत्तम सामर्थ्य प्राप्त हो । सामर्थ्यवान् पुरुष के न होने से राजा से रहित राज्यलक्ष्मी कहती है हे (अम्बे) मातः पृथिवि ! हे (अम्बिके) मातः पृथिवि ! हे (अम्बालिके) मातः पृथिवि ! (अश्वकः) कुत्सित राजा को (ससस्ति) आलस्य और अज्ञान में पड़ा सोता है । ( सुभद्विकाम् ) उत्तम सुखसम्पदा से युक्त ( काम्पीलवासिनीम् ) सुन्दर सुखप्रद, शोभाजनक वस्त्रों से ढकी सुन्दरी स्त्री के समान ( काम्पोलवासिनीम् ) सुखों के बांधने हारे पति, राष्ट्रपति को अपने ऊपर बसाने में समर्थ (मा) मुझको (क: चन) कोई भी वीरजन ( न नयति) प्राप्त करता । कुत्सित आचरण वाला राजा मुझ राज्यलक्ष्मी को क्या भोग कर सकता है ? वीरभोग्या वसुन्धरा । 'काम्पीलवासिनीम्’— काम्पीलनगरे हि सुभगा सुरूपा विदग्धा स्त्रियो भवन्तीत्युवटः । तथैव च महीधरः । काम्पीलशब्देन वस्त्रविशेष उच्यते तं वस्ते आच्छादयति इति काम्पीलवासिनी इति सायणस्तैत्तिरीय संहिताभाष्ये । का० ७। ४। १९ ॥ शृङ्गारार्थं विचित्रदुकूलवखोपेते इति सायणः । तै० ब्रा० भाष्ये का० ३ । ९ । ६ ॥ कं सुखं पीलयति बध्नाति गृह्णाति इति कंपीलः | स्वार्थे अण् । तं वासयितुं शीलमस्यास्ताम् लक्ष्मीम् । इति दयानन्दः स्वभाष्ये । कं सुखं पीलयति बध्नाति इति कम्पीलः, अथवा कं प्रजापति पीड़यति । डो लत्वं छान्दसम् । सुखेन बध्नाति आश्लिष्यति यः सः पतिः प्रियतमः । तं वासयितुं शीलमस्याः खियाः राजलक्ष्म्याः वा । सा काम्पीलवासिनी । अथवा कामेन प्रेम्णा यथाकामं वा पीडयति आश्लिव्यति यः स काम्पीलः । अलोपो लत्वं च छान्दसम् । पृषोदरादित्वात् साधुः । तं वासयति तदधीनं वा बसति या सा काम्पीलवासिनी स्त्री । तत्सादृश्याच्च राजलक्ष्मीः । वेदे नगर विशेषाप्रसिद्धेरुवटमहीधरौ न समीचीनौ । स्वयंवरा कन्या का माता आदि बूढ़ी स्त्रियों से ऐसा कहना कि हे माता ! क्षुद्र पुरुष तो आलस्य में सोते असावधान रहते हैं । मुझ कल्याणी को कोई वैसा पुरुष न प्राप्त करे, बहुत उपयुक्त है । उस पक्ष में योजना नीचे लिखे प्रकार से है । हे ( अम्बे अम्बालिके अम्बिके ) माता ! हे दादी ! हे परदादी ! (अश्वकः ससस्ति) क्षुद्र पुरुष प्राय: आलस्य किया करता है । वह ( सुभद्रिकाम् ) उत्तम कल्याण लक्षणों से युक्त ( काम्पीलवासिनीम् ) शुभ, सुखप्रद पति के पास रहने योग्य ( माम् ) मुझको (क: चन) वैसा कोई भी (न नयति) न ले जावे | इससे अगले १९ - ३१ तक १२ मन्त्र राष्ट्र की प्रजा और राजा के प्रबल, दुर्बल और समबल के परस्पर भोग्य-भोक्तरूप बर्ताव का वर्णन करते हैं और श्लेप से गृहपति और गृहपत्नी के परस्पर रहस्य का भी वर्णन करते हैं। यहां विशेषतः प्रथम पक्ष मुख्य है क्योंकि शतपथ और तैत्तिरीय ब्राह्मण दोनों में उस पक्ष को लेकर ही व्याख्यान है और अश्वमेध का प्रकरण भी उसी अर्थ को पुष्ट करता है । व्याख्यान अध्यात्म में - हे (अम्बे) जगत् के माता स्वरूप परमात्मन् ! सबको परमोपदेश देने वाली शक्ते ! (अश्वकः ससस्ति) कुत्सित विषयों का भोक्ता मनुष्य प्रमाद में पड़ा सोता है । और ( माम् ) मुझ पुरुष या आत्मा को ( शुभद्विकां काम्पीलवासिनीम् ) अति कल्याणकारिणी एवं परम सुखमय ब्रह्म में रहने वाली ब्रह्मविद्या के पास ( मा कश्चन न नयति) कोई नहीं ले जाता । यजुर्वेद संहिता भाषा भाष्य (पं. जयदेव शर्मा)

পুনর্মনুষ্যৈ কীদৃশঃ পরমাত্মোপাসনীয় ইত্যাহ ॥
পুনঃ মনুষ্যদিগকে কেমন পরমাত্মার উপাসনা করা উচিত, এই বিষয়কে পরবর্ত্তী মন্ত্রে বলা হইয়াছে ॥

গণানাং ত্বেত্যস্য প্রজাপতির্ঋষিঃ । গণপতির্দেবতা । শক্বরী ছন্দঃ । ধৈবতঃ স্বরঃ ॥

গ॒ণানাং॑ ত্বা গ॒ণপ॑তিꣳহবামহে প্রি॒য়াণাং॑ ত্বা প্রি॒য়প॑তিꣳহবামহে নিধী॒নাং ত্বা॑ নিধি॒পতি॑ꣳ হবামহে বসো মম । আऽহম॑জানি গর্ভ॒ধমা ত্বম॑জাসি গর্ভ॒ধম্ ॥ ১ঌ ॥


পদার্থঃ- হে জগদীশ্বর ! আমরা (গণানাম্) গণগুলির মধ্যে (গণপতিম্) গণগুলির পালক (ত্বা) আপনাকে (হবামহে) স্বীকার করি (প্রিয়াণাম্) অতিপ্রিয় সুন্দরদের মধ্যে (প্রিয়পতিম্) অতিপ্রিয় সুন্দরদের পালনকারী (ত্বা) আপনার (হবামহে) প্রশংসা করি (নিধীনাম্) বিদ্যাদি পদার্থগুলির পুষ্টিকারীদের মধ্যে (নিধিপতিম্) বিদ্যাদি পদার্থের রক্ষক (ত্বা) আপনাকে (হবামহে) স্বীকার করি । (বসো) পরমাত্মন্ ! যে আপনার মধ্যে সকল প্রাণী বসবাস করে সুতরাং আপনি (মম) আমার ন্যায়াধীশ হউন, যে (গর্ভধম্) গর্ভ সমান সংসারকে ধারণকারিণী প্রকৃতির ধারক (ত্বম্) আপনি (আ, অজাসি) জন্মাদি দোষরহিত ভালমত প্রাপ্ত হয়, সেই (গর্ভধম্) প্রকৃতির ধর্ত্তা আপনাকে (অহম্) আমি (আ, অজানি) ভালমত জানি ॥ ১ঌ ॥

ভাবার্থঃ- হে মনুষ্যগণ ! যিনি সব জগতের রক্ষা, কাম্য সুখের বিধান, ঐশ্বর্য্যের ভালমত দান, প্রকৃতির পালন এবং সব বীজের বিধান করেন, সেই জগদীশ্বরের উপাসনা সকলে কর ॥ ১ঌ ॥

অথ রাজপ্রজাজনাঃ পরস্পরং কথং বর্ত্তেরন্নিত্যাহ ॥
এখন রাজা ও প্রজা পরস্পরে কীভাবে ব্যবহার করিবে এই বিষয়কে পরবর্ত্তী মন্ত্রে বলা হইয়াছে ॥

তা উভাবিত্যস্য প্রজাপতির্ঋষিঃ । রাজপ্রজে দেবতে । স্বরাডনুষ্টুপ্ ছন্দঃ । গান্ধারঃ স্বরঃ ॥

তাऽউ॒ভৌ চ॒তুরঃ॑ প॒দঃ স॒ম্প্রসা॑রয়াব স্ব॒র্গে লো॒কে প্রোর্ণু॑বাথাং॒ বৃষা॑ বা॒জী রে॑তো॒ধা রেতো॑ দধাতু ॥ ২০ ॥


পদার্থঃ- হে রাজা ও প্রজা ! তোমরা (উভা) উভয়ে (তৌ) প্রজা-রাজা যেমন (স্বর্গে) সুখে পরিপূর্ণ (লোকে) দেখিবার যোগ্য ব্যবহার বা পদার্থে (চতুরঃ) চারি ধর্ম, অর্থ, কাম ও মোক্ষ (পদঃ) যাহা পাওয়ার যোগ্য তাহাকে (প্রোর্ণুবাথাম্) প্রাপ্ত হও তদ্রূপ ইহাদের আমরা অধ্যাপক ও উপদেশক উভয়ে (সংপ্রসারয়াব) বিস্তার করি যেমন (রেতোধাঃ) আলিঙ্গন্ অর্থাৎ অপরের সহিত মিলনকে ধারণ করিবার এবং (বৃষা) দুষ্টদিগের সামর্থ্য বর্ষণ করিবার অর্থাৎ তাহাদের শক্তিকে প্রতিহতকারী (বাজী) বিশেষ জ্ঞানবান্ রাজা-প্রজাগণদের মধ্যে (রেতঃ) স্বীয় পরাক্রমকে স্থাপন করুক সেইরূপ প্রজা (দধাতু) স্থাপন করুক ॥ ২০ ॥

ভাবার্থঃ- এই মন্ত্রে বাচকলুপ্তোপমালঙ্কার আছে । যে রাজা তথা প্রজা ও পুত্রের সমান নিজের ব্যবহার বজায় রাখিবে, তাহা হইলে ধর্ম, অর্থ, কাম ও মোক্ষ ফলের সিদ্ধির যথাবৎ জ্ঞান হয় যেমন রাজা প্রজার সুখ ও বলকে বৃদ্ধি করাইবে সেইরূপ প্রজাও সুখও বলের উন্নতি করিবে ॥ ২০ ॥

পুনা রাজ্ঞা দুষ্টাচারাঃ সম্যগ্দণ্ডনীয়া ইত্যাহ ॥
পুনঃ রাজা দুষ্টাচারী প্রাণীকে ভালমত দন্ড দিবে, এই বিষয়কে পরবর্ত্তী মন্ত্রে বলা হইয়াছে

উৎসক্থ্যা ইত্যস্য প্রজাপতির্ঋষিঃ । ন্যায়াধীশো দেবতা । ভুরিগ্গায়ত্রী ছন্দঃ । ষড্জঃ স্বরঃ ॥

উৎস॑ক্থ্যা॒ऽঅব॑ গু॒দং ধে॑হি॒ সম॒ঞ্জিং চা॑রয়া বৃষন্ ।

য় স্ত্রী॒ণাং জী॑ব॒ভোজ॑নঃ ॥ ২১ ॥


পদার্থঃ- হে (বৃষন্) শক্তিমান ! (য়ঃ) যে (স্ত্রীণাম্) নারীদের মধ্যে (জীবভোজনঃ) প্রাণীদের মাংসখাদক, ব্যভিচারী পুরুষ বা পুরুষদের মধ্যে উক্ত প্রকারের ব্যভিচারিণী নারী বর্ত্তমান হয়, সেই পুরুষ ও নারীকে বন্ধন করিয়া (উৎসক্থ্যাঃ) উপরের দিকে পদ ও নীচের দিকে মাথা রাখিয়া তাড়না করিবে এবং নিজের প্রজার মধ্যে (অব, গুদম্) উত্তম সুখকে (ধেহি) ধারণ কর এবং (অজিম্) নিজের প্রসিদ্ধ ন্যায়কে (সচারয়) ভালমত চালাও ॥ ২১ ॥ [ স্বামী-স্ত্রীর পক্ষে তৈ০ স০ ৭।৩।১৭ দেখুন ]

ভাবার্থঃ- হে রাজন্ ! যাহারা বিষয় সেবায় রমণ করিয়া থাকে বা সেইরূপ স্ত্রী ব্যভিচারকে বৃদ্ধি করায়, তাহাদিগকে প্রবল দন্ড দ্বারা শিক্ষা দেওয়া উচিত ॥ ২১ ॥

পুনস্তমেব বিষয়মাহ ॥
পুনঃ সেই বিষয়কে পরবর্ত্তী মন্ত্রে বলা হইয়াছে ॥

য়কাসকাবিত্যস্য প্রজাপতির্ঋষিঃ । রাজপ্রজে দেবতে । বিরাডনুষ্টুপ্ ছন্দঃ । গান্ধারঃ স্বরঃ ॥

য়॒কাস॒কৌ শ॑কুন্তি॒কাহল॒গিতি॒ বঞ্চ॑তি ।
আহ॑ন্তি গ॒ভে পসো॒ নিগ॑ল্গলীতি॒ ধার॑কা ॥ ২২ ॥

পদার্থঃ- যে (গভে) প্রজায় রাজা নিজের (পসঃ) রাজ্যকে (আহন্তি) জানুক বা প্রাপ্ত হউক সে (ধারকা) সুখকে ধারণকারিণী প্রজা (নিগল্লীতি) নিরন্তর সুখকে নিগরণ করে বলিয়া বর্ত্তমান হয় এবং যদ্দ্বারা (য়কা) যে (অসকৌ) এই প্রজা (শকুন্তিকা) ছোট পক্ষীর সমান দুর্বল, এই জন্য এই প্রজাকে (আহলম্) উত্তম প্রকার যাহা হল দ্বারা ভূমি বিলিখন করে তাহার প্রাপক অর্থাৎ হল দ্বারা কর্ষিত ভূমি হইতে করগ্রহীতা রাজা (বঞ্চতীতি) এমনভাবে ধন গ্রহণ করে যাহাতে প্রজা সুখ প্রাপ্ত হয় ॥ ২২ ॥

ভাবার্থঃ- এই মন্ত্রে বাচকলুপ্তোপমালঙ্কার আছে । যদি রাজা ন্যায়পূর্বক প্রজার রক্ষা না করে এবং প্রজা হইতে কর গ্রহণ করে তাহা হইলে যেমন প্রজা নষ্ট হয় সেইরূপ রাজাও নষ্ট হয় । যদি বিদ্যা ও বিনয় দ্বারা প্রজার ভালমত রক্ষা করে তাহা হইলে রাজা ও প্রজা সব দিক দিয়া বৃদ্ধি প্রাপ্ত হয় ॥ ২২ ॥

পুনস্তমেব বিষয়মাহ ॥
পুনঃ সেই বিষয়কে পরবর্ত্তী মন্ত্রে বলা হইয়াছে ॥

য়কোऽসকাবিত্যস্য প্রজাপতির্ঋষিঃ । রাজপ্রজে দেবতে । বৃহতী ছন্দঃ । মধ্যমঃ স্বরঃ ॥

য়॒কো᳖ऽস॒কৌ শ॑কুন্ত॒কऽআ॒হল॒গিতি॒ বঞ্চ॑তি ।

বিব॑ক্ষতऽইব তে॒ মুখ॒মধ্ব॑র্য়ো॒ মা ন॒স্ত্বম॒ভি ভা॑ষথাঃ ॥ ২৩ ॥


পদার্থঃ- হে (অধ্বর্য়ৌ) যজ্ঞ সমান আচরণকারী রাজা ! (ত্বম্) তুমি (নঃ) আমাদের প্রতি (মা, অভিভাষথাঃ) মিথ্যা কথা বলিও না এবং (বিবক্ষত ইব) বহু গল্প বলা মনুষ্যের মুখ সদৃশ (তে) তোমার (মুখম্) মুখ না হয় । যদি এই প্রকার (য়কঃ) যে (অসকৌ) এই রাজা গল্প করিবে তাহা হইলে (শকুন্তকঃ) দুর্বল পক্ষীর সমান (আহলক্) ভালমত উচ্ছিন্ন যেমন হয় (ইতি) এই প্রকার (বঞ্চতি) প্রতারিত হইবে ॥ ২৩ ॥

ভাবার্থঃ- এই মন্ত্রে বাচকলুপপ্তোপমালঙ্কার আছে । রাজা কখনও মিথ্যা প্রতিজ্ঞাকারী এবং কটুবচন না বলে তথা কাহাকেও বঞ্চনা করিবে না, রাজা যদি অন্যায় করে তাহা হইলে স্বয়ং প্রজাদিগের দ্বারা প্রতারিত হইবে ॥ ২৩ ॥

পুনস্তমেব বিষয়মাহ ॥
পুনঃ সেই বিষয়কে পরবর্ত্তী মন্ত্রে বলা হইয়াছে ॥

মাতা চেত্যস্য প্রজাপতির্ঋষিঃ । ভূমিসূর্য়ৌ দেবতে । নিচৃদনুষ্টুপ্ ছন্দঃ । গান্ধারঃ স্বরঃ ॥

মা॒তা চ॑ তে পি॒তা চ॒ তেऽগ্রং॑ বৃ॒ক্ষস্য॑ রোহতঃ ।

প্রতি॑লা॒মীতি॑ তে পি॒তা গ॒ভে মু॒ষ্টিম॑তꣳসয়ৎ ॥ ২৪ ॥


পদার্থঃ- হে রাজন্ ! যদি (তে) আপনার (মাতা) পৃথিবী তুল্য সহনশীল মানকারিণী মাতা (চ) এবং (তে) আপনার (পিতা) সূর্য্যের সমান তেজস্বী পালনকারী পিতা (চ)  (বৃক্ষস্য) ছেদন করিবার যোগ্য সংসার রূপ বৃক্ষের রাজ্যের (অগ্রম্) মুখ্য শ্রী শোভা বা লক্ষ্মীর উপর (রোহতঃ) আরূঢ় হয় (তে) আপনার (পিতা) পিতা (গভে) প্রজায় (মুষ্টিম্) মুষ্টি দ্বারা ধন গ্রহণকারী রাজ্যকে, ধন লইয়া (অর্তসয়ৎ) প্রকাশিত করে, তাহা হইলে আমি (ইতি) এই প্রকার প্রজা (প্রতিলামি) ভালমত সেই রাজার সঙ্গে প্রীতি করি ॥ ২৪ ॥

ভাবার্থঃ- এই মন্ত্রে বাচকলুপ্তোপমালঙ্কার আছে । যে মাতা-পিতা, পৃথিবী ও সূর্য্য তুল্য ধৈর্য্য ও বিদ্যা দ্বারা প্রকাশকে প্রাপ্ত ন্যায়পূর্বক রাজ্যের পালন করিয়া উত্তম লক্ষ্মী বা শোভা প্রাপ্ত হইয়া রাজাকে সুশোভিত করিয়া স্বীয় পুত্রকে রাজনীতি সহ যুক্ত করিবে, তাহারা রাজ্য করিবার যোগ্য হয় ॥ ২৪ ॥

পুনর্মাতাপিতরৌ কীদৃশৌ ভবেতামিত্যাহ ॥
পুনঃ মাতা-পিতা কেমন হইবে, এই বিষয়কে পরবর্ত্তী মন্ত্রে বলা হইয়াছে ॥

মাতা চেত্যস্য প্রজাপতির্ঋষিঃ । ভূমিসূর্য়্যৌ দেবতে । অনুষ্টুপ্ ছন্দঃ । গান্ধারঃ স্বরঃ ॥

মা॒তা চ॑ তে পি॒তা চ॒ তেऽগ্রে॑ বৃ॒ক্ষস্য॑ ক্রীডতঃ ।

বিব॑ক্ষতऽইব তে॒ মুখং॒ ব্রহ্ম॒ন্মা ত্বং ব॑দো ব॒হু ॥ ২৫ ॥


পদার্থঃ- হে (ব্রহ্মন্) চারি বেদের জ্ঞাতা সজ্জন ! যে (তে) সূর্য্যের সমান তেজস্বী আপনার (মাতা) পৃথিবী সমান মাতা (চ) এবং যে (তে) আপনার (পিতা) পিতা (চ)  (বৃক্ষস্য) সংসাররূপ রাজ্য মধ্যে (অগ্রে) বিদ্যা ও রাজ্যের শোভায় (ক্রীডতঃ) রমণ করে সেই (তে) আপনার (বিবক্ষত ইব) বহু কথা আকাঙ্ক্ষাকারী মনুষ্যের মুখের সমান (মুখম্) মুখ আছে, তদ্দ্বারা (ত্বম্) তুমি (বহু) বহু (মা) না (বদঃ) বলিও ॥ ২৫ ॥

ভাবার্থঃ- যে মাতা-পিতা সুশীল ধর্মাত্মা লক্ষ্মীবান্ কুলীন হয় তাহার দ্বারা শিক্ষিত হইয়া পুত্র প্রমাণযুক্ত মিতভাষী হইয়া কীর্ত্তি প্রাপ্ত হইয়া থাকে ॥ ২৫ ॥

পুনা রাজপুরুষঃ কামুৎকৃষ্টাং কুর্য়ুরিত্যাহ ॥
পুনঃ রাজপুরুষ কাহার উন্নতি করিবে, এই বিষয়কে পরবর্ত্তী মন্ত্রে বলা হইয়াছে ॥

ঊর্ধ্বমিত্যস্য প্রজাপতির্ঋষিঃ । শ্রীর্দেবতা । অনুষ্টুপ্ ছন্দঃ । গান্ধারঃ স্বরঃ ॥

ঊ॒র্ধ্বামে॑না॒মুচ্ছ্রা॑পয় গি॒রৌ ভা॒রꣳ হর॑ন্নিব ।

অথা॑স্যৈ॒ মধ্য॑মেধতাᳬশী॒তে বাতে॑ পু॒নন্নি॑ব ॥ ২৬ ॥


পদার্থঃ- হে রাজন্ ! (গিরৌ) পর্বতোপরি (ভারম্) ভার (হরন্নিব) পৌঁছানোর সমান (এনাম্) এই রাজ্যলক্ষ্মীযুক্ত (ঊর্ধ্বাম্) উত্তম শ্রেণিযুক্ত প্রজাকে (উচ্ছ্রাপয়) সর্বদা অধিক অধিক উন্নতি করিতে থাকুন (অথ) এখন (অস্যৈ) এই প্রজার (মধ্যম্) মধ্যভাগ লক্ষ্মীকে পাইয়া (শীতে) শীতল (বাতে) পবনে (পুনন্নিব) কৃষি কর্মকারীদের ক্রিয়া দ্বারা যেমন অন্নাদি শুদ্ধ হয় অথবা পবনের যোগ দ্বারা জল স্বচ্ছ হয়, সেইরূপ আপনি (এধতাম্) বৃদ্ধি প্রাপ্ত হউন ॥ ২৬ ॥

ভাবার্থঃ- এই মন্ত্রে দুইটি উপমালঙ্কার আছে । রাজা যেমন কোন ভারবাহী নিজ শির বা পিঠের উপর ভার উঠাইয়া পর্বতোপরি চড়িয়া সেই ভারকে উপরে স্থাপন করে সেইরূপ লক্ষ্মীর উন্নতি উপস্থিত করাইয়া বা যেমন কৃষিকর্মকারী ভূষি আদিকে অন্ন হইতে পৃথক করিয়া সেই অন্নকে খাইয়া বৃদ্ধি পায় সেইরূপ সত্য ন্যায় দ্বারা সত্যাসত্যকে পৃথক করিয়া ন্যায়কারী রাজা নিত্য বৃদ্ধি পায় ॥ ২৬ ॥

পুনস্তমেব বিষয়মাহ ॥
পুনঃ সেই বিষয়কে পরবর্ত্তী মন্ত্রে বলা হইয়াছে ॥

ঊর্ধ্বমেনমিত্যস্য প্রজাপতির্ঋষিঃ । শ্রীর্দেবতা । অনুষ্টুপ্ ছন্দঃ । গান্ধারঃ স্বরঃ ॥

ঊ॒র্ধ্বমে॑ন॒মুচ্ছ্র॑য়তাদ্ গি॒রৌ ভা॒রꣳ হর॑ন্নিব ।

অথা॑স্য॒ মধ্য॑মেজতু শী॒তে বাতে॑ পু॒নন্নি॑ব ॥ ২৭ ॥


পদার্থঃ- হে প্রজাস্থ বিদ্বান্ ! আপনি (গিরৌ) পর্বতোপরি (ভারম্) ভারকে (হরন্নিব) পৌঁছাইবার সমান (এনম্) এই রাজার (ঊর্ধ্বম্) সব ব্যবহারের অগ্রগামী (উচ্ছ্রয়তাৎ) উন্নতিযুক্ত করিবে (অথ) ইহার অনন্তর যেমন (অস্য) এই রাজ্যে (মধ্যম্) মধ্যভাগ লক্ষ্মী প্রাপ্ত হইয়া (শীতে) শীতল (বাতে) বায়ুতে (পুনন্নিব) শুদ্ধ থাকিয়া অন্নাদির সমান (এজতু) উত্তম কর্ম্মে চেষ্টা করিতে থাকুন ॥ ২৭ ॥

ভাবার্থঃ- এই মন্ত্রে দুইটি উপমালঙ্কার আছে । যেমন সূর্য্য মেঘমন্ডলে জলের ভারকে পৌঁছাইয়া দেয় এবং সেখান হইতে বর্ষণ করিয়া সকলকে উন্নতি প্রদান করে, সেইরূপ প্রজা রাজপুরুষদিগকে উন্নতি দিবে এবং অধর্মের আচরণকে ভয় করিবে ॥ ২৭ ॥

পুনস্তমেব বিষয়মাহ ॥
পুনঃ সেই বিষয়কে পরবর্ত্তী মন্ত্রে বলা হইয়াছে ॥

য়দস্যা ইত্যস্য প্রজাপতির্ঋষিঃ । প্রজাপতির্দেবতা । নিচৃদনুষ্টুপ্ ছন্দঃ । গান্ধারঃ স্বরঃ ॥

য়দ॑স্যাऽঅꣳহু॒ভেদ্যাঃ॑ কৃ॒ধু স্থূ॒লমু॒পাত॑সৎ ।

মু॒ষ্কাবিদ॑স্যাऽএজতো গোশ॒ফে শ॑কু॒লাবি॑ব ॥ ২৮ ॥


পদার্থঃ- (য়ৎ) যে রাজা বা রাজপুরুষ (অস্যাঃ) এই (অংহুভেদ্যাঃ) অপরাধের বিনাশকারক প্রজার (কৃধু) অল্প ও (স্থূলম্) বহু কর্মকে (উপাতসৎ) সুশোভিত করে, তাহারা উভয়ে (অস্যাঃ) ইহার (এজতঃ) কর্ম করায় এবং তাহারা স্বয়ং (গোশফে) গাভি ইত্যাদির খুর দ্বারা ভূমিতে হওয়া গর্ত্তে (শকুলাবিব) ছোট ছোট দুইটি মৎস্যের সমান (মুষ্কৌ, ইৎ) প্রজা হইতে প্রাপ্ত করে চুরি করিতে কম্পমান হয় ॥ ২৮ ॥

ভাবার্থঃ- এই মন্ত্রে উপমালঙ্কার আছে । যেমন একে অপরের সহিত প্রীতি সম্পন্ন মৎস্য ছোট জলাশয়ে নিরন্তর বাস করে, তদ্রূপ রাজা ও রাজপুরুষ অল্প করের লাভে ন্যায়পূর্বক প্রীতি সহ ব্যবহার করিবে এবং যদি দুঃখ দুরীভূতকারী প্রজার কমবেশী উত্তম কর্ম্মের প্রশংসা করে তাহা হইলে তাহারা উভয়ে প্রজাদিগকে প্রসন্ন করিয়া নিজের মধ্যে তাহাদিগের সহিত প্রীতি বৃদ্ধি করুক ॥ ২৮ ॥

য়দ্দেবাস ইত্যস্য প্রজাপতির্ঋষিঃ । বিদ্বাংসো দেবতা । অনুষ্টুপ্ ছন্দঃ । গান্ধারঃ স্বরঃ ॥

য়দ্দে॒বাসো॑ ল॒লাম॑গুং॒ প্র বি॑ষ্টী॒মিন॒মাবি॑ষুঃ ।

স॒ক্থ্না দে॑দিশ্যতে॒ নারী॑ স॒ত্যস্যা॑ক্ষি॒ভুবো॑ য়থা ॥ ২ঌ ॥


পদার্থঃ- হে রাজন্ ! (য়থা) যেমন (সত্যস্য) সত্য (অক্ষিভুবঃ) চক্ষুর সম্মুখে প্রকট প্রত্যক্ষ ব্যবহারের মধ্যে বর্ত্তমান (দেবাসঃ) বিদ্বান্গণ (সক্থ্না) জঙ্ঘা বা অন্য নিজের শরীরের অঙ্গ দ্বারা (নারী) নারীর সমান (য়ৎ) যাহা (বিষ্টীমিনম্) যাহাতে সুন্দর অত্যন্ত আর্দ্র পদার্থ বিদ্যমান (ললামগুম্) এবং যদ্দ্বারা মনোবাঞ্ছিত ফল প্রাপ্ত হয় এমন ন্যায়কে (প্রাবিষুঃ) ব্যাপ্ত হউন বা যেমন শাস্ত্রবেত্তা বিদ্বান্ সত্যের (দেদিশ্যতে) নিরন্তর উপদেশ করিবেন সেইরূপ স্বয়ং আচরণ কর ॥ ২ঌ ॥

ভাবার্থঃ- এই মন্ত্রে উপমালঙ্কার আছে । যেমন শরীরের অঙ্গ দ্বারা স্ত্রী-পুরুষ লক্ষ্য করা হয় সেইরূপ প্রত্যক্ষাদি প্রমাণ দ্বারা সত্য লক্ষ্য করা হয় । সেই সত্য দ্বারা বিদ্বান্গণ যেমন পাইবার যোগ্য কোমলতাকে পায় সেইরূপ এবং রাজা প্রজার স্ত্রী-পুরুষ বিদ্যা দ্বারা নম্রতা প্রাপ্ত হইয়া সুখ অন্বেষণ করুক ॥ ২ঌ ॥

পুনঃ স রাজা কথমাচরেদিত্যাহ ॥
পুনঃ সেই রাজা কেমন আচরণ করিবে, এই বিষয় পরবর্ত্তী মন্ত্রে বলা হইয়াছে ॥

য়দ্ধরিণ ইত্যস্য প্রজাপতির্ঋষিঃ । রাজা দেবতা । নিচৃদনুষ্টুপ্ ছন্দঃ । গান্ধারঃ স্বরঃ ॥

য়দ্ধ॑রি॒ণো য়ব॒মত্তি॒ ন পু॒ষ্টং প॒শু মন্য॑তে ।

শূ॒দ্রা য়দর্য়॑জারা॒ ন পোষা॑য় ধনায়তি ॥ ৩০ ॥


পদার্থঃ- (য়ৎ) যে রাজা (হরিণঃ) হরিণ যেমন (য়বম্) ক্ষেত্রে উৎপন্ন যবাদিকে (অত্তি) আহার করে সেইরূপ (পুষ্টম্) পুষ্ট (পশু) দেখিবার যোগ্য স্বীয় প্রজাকে (ন) না (মন্যতে) মানে অর্থাৎ প্রজাকে হৃষ্ট পুষ্ট না দেখিয়া, ভক্ষণ করে সে (য়ৎ) যে (অর্য়্যজারা) স্বামী বা বৈশ্য কুলকে অবস্থা হইতে বৃদ্ধকারিণী দাসী (শূদ্রা) শূদ্রের স্ত্রী সদৃশ (পোষায়) পুষ্টি হেতু (ন) না (ধনায়তি) নিজ ধনের কামনা করে ॥ ৩০ ॥

ভাবার্থঃ- যে রাজা পশুর সমান ব্যাভিচারে বর্ত্তমান প্রজার পুষ্টি করে না সে ধনাঢ্য শূদ্রকুলের স্ত্রী যে জারকর্ম করিতে থাকা দাসী, তাহার সমান রুগী হইয়া স্বীয় পুষ্টির বিনাশ করিয়া ধনহীনতা দ্বারা দরিদ্র হইয়া মরে, ইহাতে রাজা কখনও ঈর্ষা ও ব্যভিচারের আচরণ করিবে না ॥ ৩০ ॥

পুনঃ স রাজা কেন হেতুনা নশ্যতীত্যাহ ॥
পুনঃ সেই রাজা কী হেতু নষ্ট হয়, এই বিষয়কে পরবর্ত্তী মন্ত্রে বলা হইয়াছে ।

য়দ্ধরিণ ইত্যস্য প্রজাপতির্ঋষিঃ । রাজপ্রজে দেবতে । অনুষ্টুপ্ ছন্দঃ । গান্ধারঃ স্বরঃ ॥

য়দ্ধ॑রি॒ণো য়ব॒মত্তি॒ ন পু॒ষ্টং ব॒হু মন্য॑তে ।

শূ॒দ্রো য়দর্য়া॑য়ৈ জা॒রো ন পোষ॒মনু॑ মন্যতে ॥ ৩১ ॥


পদার্থঃ- (য়ৎ) যে (শূদ্রঃ) মূর্খ দিগের কুলে জন্মগ্রহণ করা মূর্খ ব্যক্তি (অর্য়্যায়ৈ) নিজ স্বামী অর্থাৎ যাহার সেবক তাহার অথবা বৈশ্যকুলের স্ত্রীর অর্থ (জারঃ) জার অর্থাৎ ব্যভিচার দ্বারা নিজের অবস্থা নাশকারী হয় সে যেমন (পোষম্) পুষ্টির (ন) না (অনুমন্যতে) অনুমান রাখিত (য়ৎ) যে রাজা (হরিণঃ) হরিণ যেমন (যরম্) উৎপন্ন যবাদিকে (অত্তি) ভক্ষণ করে তদ্রূপ (পুষ্টম্) ধন-সন্তান, স্ত্রী, সুখ-ঐশ্বর্য্যাদি দ্বারা পুষ্ট নিজের প্রজাকে (বহু) অধিক (ন) না (মন্যতে) মানে সে সব দিক দিয়া ক্ষীণ, নষ্ট ও ভ্রষ্ট হয় ॥ ৩১ ॥

ভাবার্থঃ- এই মন্ত্রে বাচকলুপ্তোপমালঙ্কার আছে । যে রাজা ও রাজপুরুষ পরস্ত্রী, বেশ্যাগমন হেতু পশু সদৃশ ব্যবহার করে উহাকে সকল বিদ্বান্ শূদ্র সমান জানে । যেমন শূদ্র মূর্খ শ্রেষ্ঠদিগের কুলে ব্যভিচারী হইয়া সকলকে বর্ণসংকর করিয়া দেয় তদ্রূপ ব্রাহ্মণ, ক্ষত্রিয় ও বৈশ্য শূদ্রকুলে ব্যভিচার করিয়া বর্ণসংকরের নিমিত্ত হইয়া নাশ প্রাপ্ত হয় ॥ ৩১ ॥

পুনঃ স রাজা কস্যেব কিং বর্দ্ধয়েদিত্যাহ ॥
পুনঃ সে রাজা কাহার সমান কী বৃদ্ধি করিবে, এই বিষয়কে পরবর্ত্তী মন্ত্রে বলা হইয়াছে ॥

দধিক্রাব্ণ ইত্যস্য প্রজাপতির্ঋষিঃ । রাজা দেবতা । অনুষ্টুপ্ ছন্দঃ । গান্ধারঃ স্বরঃ ॥

দ॒ধি॒ক্রাব্ণো॑ऽঅকারিষং জি॒ষ্ণোরশ্ব॑স্য বা॒জিনঃ॑ ।

সু॒র॒ভি নো॒ মুখা॑ কর॒ৎপ্র ণ॒ऽআয়ূ॑ᳬষি তারিষৎ ॥ ৩২ ॥


পদার্থঃ- হে রাজন্ ! যেমন আমি (দধিক্রাব্ণঃ) যাহা ধারকপোষকদের প্রাপ্ত হয় (বাজিনঃ) বহু বেগযুক্ত (জিষ্ণোঃ) জয়শীল এবং (অশ্বস্য) শীঘ্রগামী, সেই অশ্বের সমান পরাক্রমকে (অকারিষম্) করিব সেইরূপ আপনি (নঃ) আমাদিগের (সুরভি) সুগন্ধিযুক্ত (মুখা) মুখের তুল্য পরাক্রমকে (প্র, করৎ) ভালমত করুন এবং (নঃ) আমাদের (আয়ূংষি) আয়ুসকলকে (তারিষৎ) তাহাদেরকে অবধি পার করিয়া দিন ॥ ৩২ ॥

ভাবার্থঃ- যেমন অশ্বশিক্ষক অশ্বদিগকে পরাক্রমের রক্ষার নিয়মে বলিষ্ঠ ও সংগ্রামে বিজয়নিমিত্ত করে সেইরূপ অধ্যাপকও উপদেশক কুমার ও কুমারীদেরকে পূর্ণ ব্রহ্মচর্য্যের সেবন দ্বারা বিদ্বান্ – বিদুষী করিয়া তাহাদেরকে শরীর ও আত্মা বল হেতু প্রবৃত্ত করাইয়া বহু আয়ু যুক্ত এবং অতিযুদ্ধ করিতে কুশল করুক ॥ ৩২ ॥

পুনস্তমেব বিষয়মাহ ॥
পুনঃ সেই বিষয়কে পরবর্ত্তী মন্ত্রে বলা হইয়াছে ॥

গায়ত্রীত্যস্য প্রজাপতির্ঋষিঃ । বিদ্বাংসো দেবতাঃ । উষ্ণিক্ ছন্দঃ । ঋষভঃ স্বরঃ ॥

গা॒য়॒ত্রী ত্রি॒ষ্টুব্জগ॑ত্যনু॒ষ্টুপ্প॒ঙ্ক্ত্যা স॒হ ।

বৃ॒হ॒ত্যু᳕ষ্ণিহা॑ ক॒কুপ্সূ॒চীভিঃ॑ শম্যন্তু ত্বা ॥ ৩৩ ॥


পদার্থঃ- হে বিদ্বন্ ! যে বিদ্বান্ (পংক্ত্যা) বিস্তারযুক্ত পঙ্ক্তি ছন্দের (সহ) সঙ্গে যে (গায়ত্রী) গানকারীকে ত্রাণ করিতে থাকিয়া গায়ত্রী (ত্রিষ্টুপ্) আধ্যাত্মিক ও আধিভৌতিক ও আধিদৈবিক এই তিন দুঃখের অবরোধকারী ত্রিষ্টুপ্ (জগতী) জগতের সমান বিস্তীর্ণ অর্থাৎ বিস্তৃত জগতী (অনুষ্টুপ্) যাহাতে পিছন হইতে সংসারের দুঃখকে অবরোধ করে সেই অনুষ্টুপ্ তথা (উষ্ণিহা) যাহাতে প্রাতঃ সময়ের বেলাকে প্রাপ্ত করে সেই উষ্ণিহা ছন্দের সহিত (বৃহতী) মহদ্ অর্থযুক্তা বৃহতী (ককুপ্) ললিত পদের অর্থ যুক্ত ককুপ্ছন্দ (সূচীভিঃ) সূচীর দ্বারা যেমন বস্ত্র সেলাই করা হয় সেইরূপ (ত্বা) তোমাকে (শম্যন্তু) শান্তিযুক্ত করিবে অথবা সকল বিদ্যা গুলির বোধ করাইবে তাহার তুমি সেবন কর ॥ ৩৩ ॥

ভাবার্থঃ- যে বিদ্বান্ গায়ত্রী আদি ছন্দের অর্থকে বলিয়া মনুষ্যকে বিদ্বান্ করে এবং সূঁচ দ্বারা বিদীর্ণ বস্ত্র সেলাই করিবে তাহা হইলে পৃথক পৃথক মত যুক্ত কে সত্যের সহিত মিলন করিয়া দেয় এবং তাহাদেরকে ঐক্যমতে স্থাপন করে, তাহারা জগতের কল্যাণকারী হইয়া থাকে ॥ ৩৩ ॥

পুনর্বিদ্বাংসঃ কিং কুর্য়ুরিত্যাহ ॥
পুনঃ বিদ্বান্গণ কী করিবে, এই বিষয়কে পরবর্ত্তী মন্ত্রে বলা হইয়াছে ॥

দ্বিপদা ইত্যস্য প্রজাপতির্ঋষিঃ । প্রজা দেবতা । নিচৃদনুষ্টুপ্ ছন্দঃ । গান্ধারঃ স্বরঃ ॥

দ্বিপ॑দা॒ য়াশ্চতু॑ষ্পদা॒স্ত্রিপ॑দা॒ য়াশ্চ॒ ষট্প॑দাঃ ।

বিচ্ছ॑ন্দা॒ য়াশ্চ॒ সচ্ছ॑ন্দাঃ সূ॒চীভিঃ॑ শম্যন্তু ত্বা ॥ ৩৪ ॥


পদার্থঃ- যে বিদ্বান্ (সূচীভিঃ) অনুসন্ধান সাধিকা ক্রিয়া গুলির দ্বারা (য়াঃ) যে (দ্বিপদাঃ) দুই দুই পদযুক্ত অথবা যে (চতুষ্পদঃ) চারি চারি পদযুক্ত অথবা (ত্রিপদাঃ) তিন পদযুক্ত (চ) এবং (য়াঃ) যে (ষট্পদাঃ) ছয় পদযুক্ত, যে (বিচ্ছন্দাঃ) বহুবিধ পরাক্রমযুক্ত (চ) এবং (য়াঃ) যে (সচ্ছন্দাঃ) এমন যে, যাহাতে একপ্রকারে ছন্দ সেই সব ক্রিয়া (ত্বা) তোমাকে গ্রহণ করাইয়া (শম্যন্তু) শান্তি সুখ প্রাপ্ত করাইবে তাহাদের তুমি নিত্য সেবন কর ॥ ৩৪ ॥

ভাবার্থঃ- যে বিদ্বান্ মনুষ্যদিগকে ব্রহ্মচর্য্য নিয়ম দ্বারা বীর্য্যবৃদ্ধি করাইয়া নীরোগ, জিতেন্দ্রিয় ও বিষয়াসক্তি হইতে রহিত করিয়া ধর্মযুক্ত ব্যবহারে চালনা করেন তাহারা সকলের পূজ্য অর্থাৎ সৎকার করিবার যোগ্য হয় ॥ ৩৪ ॥

পুনর্বিদ্বাংসঃ কীদৃশা ভবেয়ুরিত্যাহ ॥

পুনঃ বিদ্বান্ কেমন হইবে, এই বিষয়কে পরবর্ত্তী মন্ত্রে বলা হইয়াছে ॥

মহানাম্ন্য ইত্যস্য প্রজাপতির্ঋষিঃ । প্রজা দেবতা । ভুরিগুষ্ণিক্ ছন্দঃ । ঋষভঃ স্বরঃ ॥

ম॒হানা॑ম্ন্যো রে॒বত্যো॒ বিশ্বা॒ আশাঃ॑ প্র॒ভূব॑রীঃ ।

মৈঘী॑র্বি॒দ্যুতো॒ বাচঃ॑ সূ॒চীভিঃ॑ শম্যন্তু ত্বা ॥ ৩৫ ॥


পদার্থঃ- হে জ্ঞান কামনা কারী (সূচীভিঃ) সন্ধানকারিণী ক্রিয়াদের দ্বারা যাহা (মহানাম্ন্যঃ) বড় নামযুক্ত (রেবত্য) বহু প্রকারের ধন এবং (প্রভূবরীঃ) প্রভূতার সহিত যুক্ত (বিশ্বাঃ) সমস্ত (আশাঃ) দিক্গুলির সমান (মৈঘীঃ) বা মেঘের গর্জন (বিদ্যুতঃ) যে বিদ্যুৎ তাহাদের সমান (বাচঃ) বাণী (ত্বা) তোমাকে (শম্যন্তু) শান্তিযুক্ত করিবে তাহাদের তুমি গ্রহণ কর ॥ ৩৫ ॥

ভাবার্থঃ- এই মন্ত্রে বাচকলুপ্তোপমালঙ্কার আছে । যাহাদের বাণী দিক্ তুল্য সকল বিদ্যায় ব্যাপ্ত হয় এবং মেঘে স্থিত বিদ্যুতের সমান অর্থ প্রকাশকারী সেই সব বিদ্বান্গণ শান্তিপূর্বক জিতেন্দ্রিয়তা প্রাপ্ত হইয়া মহাকীর্ত্তিযুক্ত হয় ॥ ৩৫ ॥

অথ কন্যাঃ কিয়দ্ ব্রহ্মচর্য়ং কুর্য়ুরিত্যাহ ॥
এখন কন্যা কত ব্রহ্মচর্য্য করিবে, এই বিষয়কে পরবর্ত্তী মন্ত্রে বলা হইয়াছে ॥

নার্য় ইত্যস্য প্রজাপতির্ঋষিঃ । স্ত্রিয়ো দেবতাঃ । ভুরিগুষ্ণিক্ ছন্দঃ । ঋষভঃ স্বরঃ ॥

নার্য়॑স্তে॒ পত্ন্যো॒ লোম॒ বি চি॑ন্বন্তু মনী॒ষয়া॑ ।

দে॒বানাং॒ পত্ন্যো॒ দিশঃ॑ সূ॒চীভিঃ॑ শম্যন্তু ত্বা ॥ ৩৬ ॥


পদার্থঃ- হে বিদুষ্যধ্যাপিকা ! যে কুমারী (মনীষয়া) তীক্ষ্ম বুদ্ধি দ্বারা (তে) তোমার (লোম্) অনুকূল আজ্ঞাকে (বিচিন্বন্তু) একত্রিত করিবে তাহারা (দেবানাম্) বিদ্বান্দিগের (নার্য়্য, পত্ন্যঃ) বিদুষী স্ত্রী হয় । হে কুমারী ! যে সব পন্ডিতদিগের (পত্ন্যঃ) বিদুষী স্ত্রী হইয়া (সূচীভিঃ) অনুসন্ধান ক্রিয়াগুলির দ্বারা (দিশঃ) দিকগুলির সমান শুদ্ধ পাকবিদ্যা পড়িয়াছে তাহারা (ত্বা) তোমাকে (শম্যন্তু) শান্তিও জ্ঞান দিক ॥ ৩৬ 

ভাবার্থঃ- যে কন্যা প্রথম অবস্থায় ষোল বর্ষের অবস্থা হইতে চব্বিশ বর্ষের অবস্থা পর্য্যন্ত ব্রহ্মচর্য্য দ্বারা বিদ্যা উত্তম শিক্ষা প্রাপ্ত হইয়া নিজ সদৃশ পুরুষদিগের পত্নী হয় তাহারা দিক্গুলির সমান উত্তম প্রকাশযুক্ত কীর্ত্তিসম্পন্ন হয় ॥ ৩৬ ॥

পুনস্তাঃ কীদৃশো ভবেয়ুরিত্যাহ ॥
পুনঃ তাহারা কেমন হইবে, এই বিষয়কে পরবর্ত্তী মন্ত্রে বলা হইয়াছে ॥

রজতা ইত্যস্য প্রজাপতির্ঋষিঃ । স্ত্রিয়ো দেবতাঃ । অনুষ্টুপ্ ছন্দঃ । গান্ধারঃ স্বরঃ ॥

র॒জ॒তা হরি॑ণীঃ॒ সীসা॒ য়ুজো॑ য়ুজ্যন্তে॒ কর্ম॑ভিঃ ।

অশ্ব॑স্য বা॒জিন॑স্ত্ব॒চি সিমাঃ॑ শম্যন্তু॒ শম্য॑ন্তীঃ ॥ ৩৭ ॥


পদার্থঃ- যেমন স্বয়ংবর বিবাহ হওয়া বিবাহিতা স্ত্রী (বাজিনঃ) প্রশংসিত বলযুক্ত (অশ্বস্য) উত্তম গুণে ব্যাপ্ত স্বীয় পতির (ত্বচি) আচ্ছাদনে (য়ুজ্যন্তে) সংযুক্ত করা হয় অর্থাৎ পতিকে বস্ত্রাচ্ছাদনাদি সেবায় লাগানো হয়, তদ্রূপ (কর্মভিঃ) ধর্মযুক্ত ক্রিয়াগুলির দ্বারা (রজতাঃ) অনুরাগ অর্থাৎ প্রীতি-প্রাপ্ত (হরিণীঃ) যাহার প্রশংসিত ক্রিয়া স্বীকার করিতে হয় সেই সব (সীসাঃ) প্রেমযুক্তা (য়ুজঃ) সাবধান চিত্ত উচিত কর্ম্মকারিণী (শম্যন্তীঃ) শান্তি প্রাপ্ত হয় বা প্রাপ্ত করিতে থাকিয়া বা (সিমাঃ) প্রেমবদ্ধা স্ত্রী নিজ হৃদয় হইতে প্রিয় পতিসকলকে প্রাপ্ত হইয়া (শম্যন্তু) আনন্দ ভোগ করুক ॥ ৩৭ ॥

ভাবার্থঃ- হে মনুষ্যগণ ! যে বিদ্যা ও সুশিক্ষাযুক্ত স্বয়ং বিবাহ-প্রাপ্ত স্ত্রী পুরুষ স্বেচ্ছায় এক অন্যের সহিত প্রীতি কৃত বিবাহ করে, তাহারা লাবণ্য অর্থাৎ অত্যন্ত সৌন্দর্য্য গুণ ও উত্তম স্বভাবযুক্ত সন্তানদিগকে উৎপন্ন করিয়া সদা আনন্দযুক্ত হয় ॥ ৩৭ ॥

অথাऽধ্যাপকাऽধ্যেতারঃ কীদৃশঃ স্যুরিত্যাহ ॥
এখন অধ্যেতা ও অধ্যাপক কেমন হইবে, এই বিষয়কে পরবর্ত্তী মন্ত্রে বলা হইয়াছে ।

কুবিদঙ্গেত্যস্য প্রজাপতির্ঋষিঃ । সভাসদো দেবতাঃ । নিচৃৎ ত্রিষ্টুপ্ ছন্দঃ । ধৈবতঃ স্বরঃ ॥

কু॒বিদ॒ঙ্গ য়ব॑মন্তো॒ য়ব॑ঞ্চি॒দ্যথা॒ দান্ত্য॑নুপূ॒র্বং বি॒য়ূয়॑ ।

ই॒হেহৈ॑ষাং কৃণুহি॒ ভোজ॑নানি॒ য়ে ব॒র্হিষো॒ নম॑ऽউক্তিং॒ য়জ॑ন্তি ॥ ৩৮ ॥


পদার্থঃ- হে (অঙ্গ) মিত্র ! (কুবিৎ) বহু বিজ্ঞানযুক্ত তুমি (ইহেহ) এই ব্যবহারে (এষাম্) এই সব মনুষ্যদিগের দ্বারা (য়থা) যেমন (য়বমন্তঃ) বহু যবাদি অন্ন যুক্ত কৃষিকারী (য়বম্) যবাদি শস্যের সমূহকে ভূষি ইত্যাদি হইতে (বিয়ূয়) পৃথক করিয়া (চিৎ) এবং (অনুপূর্বম্) ক্রমপূর্বক (দান্তি) ছেদন করে তাহাদের এবং (য়ে) যাহারা (বর্হিষঃ) জল বা (নমউক্তিম্) অন্ন সম্পর্কীয় বচনকে (য়জন্তি) বলিয়া সৎকার করে তাহাদের (ভোজনানি) ভোজন কে (কৃণুহি) কর ॥ ৩৮ ॥

ভাবার্থঃ- এই মন্ত্রে উপমালঙ্কার আছে । হে অধ্যেতাও অধ্যাপকগণ ! তোমরা যেমন কৃষিজীবী একে অন্যের জমিকে পালাক্রমে কর্ত্তন কর এবং ভূষি হইতে অন্নকে পৃথক করিয়া অন্যদেরকে ভোজন করাইয়া তারপর স্বয়ং ভোজন কর তদ্রূপ এখানে বিদ্যার ব্যবহারে নিষ্কপট ভাবপূর্বক বিদ্যার্থীদের বিদ্যাবুদ্ধি করিয়া একে অন্যের পানাহার দ্বারা সৎকার করিয়া সকলে আনন্দভোগ করুক ॥ ৩৮ ॥

পুনরধ্যাপকা বিদ্যার্থিনাং কীদৃশীং পরীক্ষাং গৃহ্ণীয়ুরিত্যাহ ॥
পুনঃ অধ্যাপক বিদ্যার্থীদিগের কেমন পরীক্ষা লইবে, এই বিষয়কে পরবর্ত্তী মন্ত্রে বলা হইয়াছে ॥

কস্ত্বা ছ্যতীত্যস্য প্রজাপতির্ঋষিঃ । অধ্যাপকো দেবতা । ভুরিগ্গায়ত্রী ছন্দঃ । ষড্জঃ স্বরঃ ॥

কস্ত্বাऽऽ ছ্য॑তি॒ কস্ত্বা॒ বি শা॑স্তি॒ কস্তে॒ গাত্রা॑ণি শম্যতি ।

কऽউ॑ তে শমি॒তা ক॒বিঃ ॥ ৩ঌ ॥


পদার্থঃ-হে পঠনশীল বিদ্যার্থী ! (ত্বা) তোমাকে (কঃ) কে (আছ্যতি) ছেদন করে (কঃ) কে (ত্বা) তোমাকে (বিশাস্তি) উত্তম শেখায় (কঃ) কে (তে) তোমার (গাত্রাণি) অঙ্গসকলকে (শম্যতি) শান্তি দেয় এবং (কঃ) কে (উ) তাহা হইলে (তে) তোমার (শমিতা) যজ্ঞকারী (কবিঃ) সমস্ত শাস্ত্রকে জানিয়া পঠন-পাঠন করায় ॥ ৩ঌ ॥

ভাবার্থঃ- অধ্যাপকগণ বিদ্যার্থীদের প্রতি এমন পরীক্ষায় জিজ্ঞাসা করিবে যে, কে তোমাদের পড়িতে বিঘ্ন করায়, কে তোমাদের পড়িবার জন্য উপদেশ দেয়, কে অঙ্গসমূহের শুদ্ধি ও যোগ্য চেষ্টাকে জানে, কে অধ্যাপক, কী পড়িবার যোগ্য – এমন এমন জিজ্ঞাসা করিবে, উত্তম বিদ্যার্থীদিগের উৎসাহ দিয়া দুষ্ট স্বভাবযুক্তদের ধিক্কার দিয়া বিদ্যার উন্নতি করাইবে ॥ ৩ঌ ॥

পুনঃ স্ত্রীপুরুষাঃ কথং বর্ত্তেরন্নিত্যাহ ॥
পুনঃ স্ত্রী পুুরুষ কীভাবে নিজের ব্যবহার করিবে, এই বিষয়কে পরবর্ত্তী মন্ত্রে বলা হইয়াছে ॥

ঋতব ইত্যস্য প্রজাপতির্ঋষিঃ । প্রজা দেবতা । অনুষ্টুপ্ ছন্দঃ । গান্ধারঃ স্বরঃ ॥

ঋ॒তব॑স্তऽঋতু॒থা পর্ব॑ শমি॒তারো॒ বি শা॑সতু ।

সং॒ব॒ৎস॒রস্য॒ তেজ॑সা শ॒মীভিঃ॑ শম্যন্তু ত্বা ॥ ৪০ ॥


পদার্থঃ- হে বিদ্যার্থী ! যেমন (তে) তোমার (ঋতবঃ) বসন্তাদি ঋতু (ঋতুথা) ঋতু ঋতু গুণগুলির দ্বারা (পর্ব) পালন করিয়া (শমিতারঃ) তদ্রূপ পঠন-পাঠন রূপ যজ্ঞে শমদমাদি গুণগুলির প্রাপ্তিকারক অধ্যাপক অধ্যয়নকারীদেরকে (বি, শাসতু) বৈশিষ্ট্য পূর্বক উপদেশ করিবে (সংবৎসরস্য) এবং সংবতের (তেজসা) জল (শমীভিঃ) এবং কর্ম্ম দ্বারা (ত্বা) তোমাকে (শম্যন্তু) শান্তি প্রদান করিবে, তাহাদের তুমি সর্বদা সেবা কর ॥ ৪০ ॥

ভাবার্থঃ- এই মন্ত্রে বাচকলুপ্তোপমালঙ্কার আছে । যেমন ঋতু ক্রমপূর্বক নিজের নিজের চিহ্নগুলি প্রাপ্ত হয়, তদ্রূপ স্ত্রীপুরুষ ক্রমপূর্বক ব্রহ্মচর্য্য, গৃহস্থের ধর্ম, বানপ্রস্থ বনে থাকিয়া তপ করিয়া এবং সন্ন্যাস আশ্রম করিয়া ব্রাহ্মণ ও ব্রাহ্মণী পড়াইবে, ক্ষত্রিয় ও ক্ষত্রিয়া প্রজার রক্ষা করিবে, বৈশ্য ও বৈশ্যা কৃষি আদির উন্নতি করিবে এবং শূদ্র শূদ্রা উক্ত ব্রাহ্মণাদির সেবা করিতে থাকিবে ॥ ৪০ ॥

অথ বালকেষু মাত্রাদয়ঃ কথং বর্ত্তেরন্নিত্যাহ ॥
এখন বালকদের সঙ্গে মাতাদি কেমন ব্যবহার করিবে, এই বিষয়কে পরবর্ত্তী মন্ত্রে বলা হইয়াছে ॥

অর্দ্ধমাসা ইত্যস্য প্রজাপতির্ঋষিঃ । প্রজা দেবতা । অনুষ্টুপ্ ছন্দঃ ।
গান্ধারঃ স্বরঃ ॥

অ॒র্দ্ধ॒মা॒সাঃ পরূ॑ᳬষি তে॒ মাসা॒ऽআ চ্ছ্য॑ন্তু॒ শম্য॑ন্তঃ ।

অ॒হো॒রা॒ত্রাণি॑ ম॒রুতো॒ বিলি॑ষ্টꣳ সূদয়ন্তু তে ॥ ৪১ ॥


পদার্থঃ- হে বিদ্যার্থীগণ ! (অহোরাত্রাণি) দিন রাত্রি (অর্দ্ধমাসাঃ) কৃষ্ণ শুক্ল পক্ষ এবং (মাসাঃ) চৈত্রাদি মাস যেমন আয়ু কর্ত্তন করে সেইরূপ (তে) তোমার (পরূংষি) কঠোর বচনকে (শম্যন্তঃ) শান্তি দিয়া (মরুতঃ) উত্তম মনুষ্ট দুষ্ট কর্মের (আচ্ছ্যন্তু) বিনাশ করিবে এবং (তে) তোমার (বিলিষ্টম্) অল্প কুব্যসনকেও দূর করিবে ॥ ৪১ ॥

ভাবার্থঃ- এই মন্ত্রে বাচকলুপ্তোপমালঙ্কার আছে । যে মাতা-পিতা অধ্যাপক ও উপদেশক তথা অতিথিগণ বালকদের দুষ্ট গুণগুলিকে নিবৃত্ত না করে তাহা হইলে তাহারা শিষ্ট অর্থাৎ উত্তম কখনও হইবে না ॥ ৪১ ॥

অথাধ্যাপকাদয়ঃ কথং বর্ত্তেরন্নিত্যাহ ॥
এখন অধ্যাপকাদি সজ্জন কেমন ব্যবহার করিবে, এই বিষয়কে পরবর্ত্তী মন্ত্রে বলা হইয়াছে ॥

দৈব্যা ইত্যস্য প্রজাপতির্ঋষিঃ । অধ্যাপকো দেবতা । ভুরিগুষ্ণিক্ ছন্দঃ । ঋষভঃ স্বরঃ ॥

দৈব্যা॑ऽঅধ্ব॒র্য়ব॒স্ত্বাऽऽ চ্ছ্য॑ন্তু॒ বি চ॑ শাসতু ।

গাত্রা॑ণি পর্ব॒শস্তে॒ সিমাঃ॑ কৃণ্বন্তু॒ শম্য॑ন্তীঃ ॥ ৪২ ॥


পদার্থঃ- হে বিদ্যার্থী বা বিদ্যার্থিনী । (দৈব্যাঃ) বিদ্বান্দিগের মধ্যে কুশল (অধ্বর্য়বঃ) নিজের রক্ষারূপ যজ্ঞের কামনাকারী অধ্যাপক, উপদেশকগণ (ত্বা) তোমাকে (বি, শাসতু) বিশেষ উপদেশ দিবে (চ) এবং (তে) তোমার দোষের (আ, ছ্যন্তু) বিনাশ করিবে (পর্বশঃ) সন্ধি সন্ধি দ্বারা (গাত্রাণি) অঙ্গ সকলের পরীক্ষা করিবে (সিমাঃ) প্রেমাবদ্ধ (শম্যন্তীঃ) দুষ্ট স্বভাবকে দূর করিয়া মাতাদি সতী স্ত্রীগণও এমনই শিক্ষা (কৃণ্বন্তু) করিবে ॥ ৪২ ॥

ভাবার্থঃ- অধ্যাপক, উপদেশক ও অতিথিগণ যখন বালকদেরকে শিক্ষা দিবেন তখন দোষগুলি বিনাশ করিয়া তাহাদেরকে বিদ্যা প্রাপ্তি করাইবে । এইরূপ অধ্যাপিকা ও উপদেশিকা স্ত্রীও কন্যাদের প্রতি আচরণ করিবে এবং বৈদ্যক শাস্ত্রের রীতি অনুযায়ী শরীরের অঙ্গ সকলের উত্তম প্রকার পরীক্ষা করিয়া ঔষধ দিবে ॥ ৪২ ॥

পুনরধ্যাপকাদয়ঃ কীদৃশা ভবেয়ুরিত্যাহ ॥
পুনঃ অধ্যাপকাদি কেমন হইবে, এই বিষয়কে পরবর্ত্তী মন্ত্রে বলা হইয়াছে ॥

দ্যৌরিত্যস্য প্রজাপতির্ঋষিঃ । রাজা দেবতা । অনুষ্টুপ্ ছন্দঃ । গান্ধারঃ স্বরঃ ॥

দ্যৌস্তে॑ পৃথি॒ব্য᳕ন্তরি॑ক্ষং বা॒য়ুশ্ছি॒দ্রং পৃ॑ণাতু তে ।

সূর্য়॑স্তে॒ নক্ষ॑ত্রৈঃ স॒হ লো॒কং কৃ॑ণোতু সাধু॒য়া ॥ ৪৩ ॥


পদার্থঃ- হে অধ্যায়নকারিণীও অধ্যাপনকারিণী স্ত্রী ! যেমন (দ্যৌঃ) প্রকাশরূপ বিদ্যুৎ (পৃথিবী) ভূমি (অন্তরিক্ষম্) আকাশ (বায়ুঃ) পবন (সূর্য়্যঃ) সূর্য্যলোক ও (নক্ষত্রৈঃ) নক্ষত্রগণের (সহ) সহ চন্দ্রলোক (তে) তোমার (ছিদ্রম্) প্রত্যেক ইন্দ্রিয়কে (পৃণাতু) সুখ দিবে (তে) তোমার ব্যবহারকে প্রতিপন্ন করিবে, (তে) তোমার (সাধুয়া) উত্তম সত্য (লোকম্) দেখিবার যোগ্য লোককে (কৃণোতু) প্রতিপন্ন করুক ॥ ৪৩ ॥

ভাবার্থঃ- এই মন্ত্রে বাচকলুপ্তোপমালঙ্কার আছে । যেমন পৃথিবী আদি সুখদাতা এবং সূর্য্যাদি পদার্থ প্রকাশকারী হয় সেইরূপ অধ্যাপনকারী এবং উপদেশকারীগণ অথবা অধ্যাপিকা ও উপদেশিকা স্ত্রী সকলকে সত্য মার্গে স্থাপন করিয়া বিদ্যার আলোকে উৎপন্ন করিবে ॥ ৪৩ ॥

পুনর্মাত্রাদিভিঃ কিং কর্ত্তব্যমিত্যাহ ॥
পুনঃ মাতাদিকে কী করা উচিত, এই বিষয়কে পরবর্ত্তী মন্ত্রে বলা হইয়াছে ॥

শন্ত ইত্যস্য প্রজাপতির্ঋষিঃ । রাজা দেবতা । উষ্ণিক্ ছন্দঃ । ঋষভঃ স্বরঃ ॥

শং তে॒ পরে॑ভ্যো॒ গাত্রে॑ভ্যঃ॒ শম॒স্ত্বব॑রেভ্যঃ ।

শম॒স্থভ্যো॑ ম॒জ্জভ্যঃ॒ শম্ব॑স্তু ত॒ন্বৈ᳕ তব॑ ॥ ৪৪ ॥


পদার্থঃ- হে বিদ্যা কামনাকারী ! যেমন পৃথিবী আদি তত্ত্ব (তব) তোমার (তন্বৈ) শরীরের জন্য (শম্) সুখহেতু (অস্তু) হউক অথবা (পরেভ্যঃ) অত্যন্ত উত্তম (গাত্রেভ্যঃ) অঙ্গসমূহের জন্য (শম্) সুখ (উ) এবং (অবরেভ্যঃ) উত্তম হইতে নূ্যন মধ্য তথা নিকৃষ্ট অঙ্গ সমূহের জন্য (শম্) সুখ রূপ (অস্তু) হউক এবং (অস্থভ্যঃ) অস্থি (মজ্জভ্যঃ) এবং শরীরের মজ্জা হেতু (শম্) সুখের জন্য হউক সেইরূপ স্বীয় উত্তম গুণ-কর্ম ও স্বভাব দ্বারা অধ্যাপক গণ (তে) তোমার জন্য সুখকারী হউক ॥ ৪৪ ॥

ভাবার্থঃ- এই মন্ত্রে বাচকলুপ্তোপমালঙ্কার আছে । যেমন মাতা, পিতা, অধ্যাপক ও উপদেশকদের নিজ সন্তানদিগের পুষ্ট অঙ্গ ও পুষ্ট ধাতু হউক যাহাতে অন্যের কল্যাণ করিবার যোগ্য হয় সেইরূপ পড়ান ও উপদেশ করা উচিত ॥ ৪৪ ॥

অথ বিদুষঃ প্রতি প্রশ্না এবং কর্ত্তব্যা ইত্যাহ ॥
এখন বিদ্বান্দিগের প্রতি প্রশ্ন এমন করা উচিত, এই বিষয়কে পরবর্ত্তী মন্ত্রে বলা হইয়াছে ॥

কঃ স্বিদিত্যস্য প্রজাপতির্ঋষিঃ । জিজ্ঞাসুর্দেবতা । নিচৃদনুষ্টুপ্ ছন্দঃ । গান্ধারঃ স্বরঃ ॥

কঃ স্বি॑দেকা॒কী চ॑রতি॒ কऽউ॑ স্বিজ্জায়তে॒ পুনঃ॑ ।

কিᳬস্বি॑দ্ধি॒মস্য॑ ভেষ॒জং কিম্বা॒বপ॑নং ম॒হৎ ॥ ৪৫ ॥


পদার্থঃ–হে বিদ্বান্! এই সংসারে (কঃ, স্বিৎ) কে (একাকী) একাকী (চরতি) চলে বা প্রাপ্ত হয় (উ) এবং (কঃ, স্বিৎ) কে (পুনঃ) পুনঃ পুনঃ (জায়তে) উৎপন্ন হয় (কিং, স্বিৎ) কে (হিমস্য) শীতের (ভেষজম্) ঔষধ (কিম্, উ) এবং কী (মহৎ) বৃহৎ (আবপনম্) উত্তম প্রকার সকল বীজ বপন করার আধার, এই সবকে আপনি বলুন ॥ ৪৫ ॥

ভাবার্থঃ–বিনা সাহায্যে কে ভ্রমণ করে, কে পুনঃ পুনঃ উৎপন্ন হয়, শীতের নিবৃত্তিকারী কে এবং বৃহৎ উৎপত্তির স্থান কী–এই সব প্রশ্নের সমাধান পরবর্ত্তী মন্ত্রে জানা উচিত ॥ ৪৫ ॥

পুনঃ পূর্বোক্তপ্রশ্নোত্তরাণ্যাহ ॥
পুনঃ পূর্বোক্ত প্রশ্নগুলির উত্তরকে পরবর্ত্তী মন্ত্রে বলা হইয়াছে ॥

সূর্য়্য ইত্যস্য প্রজাপতির্ঋষিঃ । সূর্য়াদয়ো দেবতাঃ । অনুষ্টুপ্ ছন্দঃ । গান্ধারঃ স্বরঃ ॥

সূর্য়্য॑ऽএকা॒কী চ॑রতি চ॒ন্দ্রমা॑ জায়তে॒ পুনঃ॑ ।

অ॒গ্নির্হি॒মস্য॑ ভেষ॒জং ভূমি॑রা॒বপ॑নং ম॒হৎ ॥ ৪৬ ॥


পদার্থঃ–হে জিজ্ঞাসু, জানার ইচ্ছাকারী পুরুষ! (সূর্য়্য) সূর্য্যলোক (একাকী) একাকী (চরতি) স্বপরিধিতে ভ্রমণ করে । (চন্দ্রমা) আনন্দ দাতা চন্দ্র (পুনঃ) পুনঃ পুনঃ (জায়তে) প্রকাশিত হয় (অগ্নিঃ) পাবক (হিমস্য) শীতের (ভেষজম্) ঔষধ এবং (মহৎ) বৃহৎ (আবপনম্) উত্তম প্রকার বপন করার আধার, যাহাতে সকল বস্তু বপন করে (ভূমিঃ) উহা ভূমি ॥ ৪৬ ॥

ভাবার্থঃ–হে বিদ্বান্গণ! সূর্য্য নিজের পরিধিতে ভ্রমণ করে। চন্দ্রাদি লোক সেই সূর্য্যের প্রকাশ হইতে প্রকাশিত হয় । অগ্নিই শীতের নাশক এবং সকল বীজের বপন করিবার বৃহৎ ক্ষেত্র ভূমিই, এমন তোমরা জান ॥ ৪৬ ॥

পুনঃ প্রশ্নানাহ ॥
পুনঃ প্রশ্নগুলিকে পরবর্ত্তী মন্ত্রে বলা হইয়াছে ॥

কিং স্বিদিত্যস্য প্রজাপতির্ঋষিঃ । জিজ্ঞাসুর্দেবতা । অনুষ্টুপ্ ছন্দঃ ।
গান্ধারঃ স্বরঃ ॥

কিꣳস্বি॒ৎ সূর্য়॑সমং॒ জ্যোতিঃ॒ কিꣳস॑মু॒দ্রস॑ম॒ꣳসরঃ॑ ।

কিꣳস্বি॑ৎ পৃথি॒ব্যৈ বর্ষী॑য়ঃ॒ কস্য॒ মাত্রা॒ ন বি॑দ্যতে ॥ ৪৭ ॥


পদার্থঃ–হে বিদ্বন্! (কিং, স্বিৎ) কে (সূর্য়সমম্) সূর্য্য সম (জ্যোতিঃ) প্রকাশস্বরূপ (কিম্) কে (সমুদ্রসমম্) সমুদ্র সমান (সরঃ) যাহাতে জল প্রবাহিত হয় বা আসা যাওয়া করে এমন জলাশয় (কিং, স্বিৎ) কে (পৃথিব্যৈ) পৃথিবী হইতে (বর্ষীয়ঃ) অতি বড় এবং (কস্য) কাহার (মাত্রা) যদ্দ্বারা ওজন হয় সেই পরিমাণ (ন) নেই (বিদ্যতে) বিদ্যমান ॥ ৪৭ ॥

ভাবার্থঃ–আদিত্যের তুল্য তেজস্বী, সমুদ্রের সমান জলাধার এবং ভূমি হইতে, বড় কে এবং কাহার পরিমাণ নেই, এই চারটি প্রশ্নের উত্তর পরবর্ত্তী মন্ত্রে জানিতে হইবে ॥ ৪৭ ॥

অথৈতেষামুত্তরাণ্যাহ ॥
এখন উক্ত প্রশ্নগুলির উত্তরকে পরবর্ত্তী মন্ত্রে বলা হইয়াছে ॥

ব্রহ্মেত্যস্য প্রজাপতির্ঋষিঃ । ব্রহ্মাদয়ো দেবতাঃ । অনুষ্টুপ্ ছন্দঃ ।
গান্ধারঃ স্বরঃ ॥

ব্রহ্ম॒ সূর্য়॑সমং॒ জ্যোতি॒র্দ্যৌঃ স॑মু॒দ্রস॑ম॒ꣳসরঃ॑ ।

ইন্দ্রঃ॑ পৃথি॒ব্যৈ বর্ষী॑য়া॒ন্ গোস্তু মাত্রা॒ ন বি॑দ্যতে ॥ ৪৮ ॥


পদার্থঃ–হে জ্ঞান কামনাকারী ব্যক্তি! তুমি (সূর্য়্যসমম্) সূর্য্যের সমান (জ্যোতিঃ) স্বপ্রকাশস্বরূপ (ব্রহ্ম) সর্বাপেক্ষা বৃহৎ অনন্ত পরমেশ্বর (সমুদ্রসমম্) সমুদ্র সমান (সরঃ) জলাশয় (দৌঃ) অন্তরিক্ষ (পৃথিব্যৈ) পৃথিবী হইতে (বর্ষীয়ান্) বৃহৎ (ইন্দ্রঃ) সূর্য্য এবং (গো) বাণীর (তু) নিশ্চয়ই (মাত্রা) মান-পরিমাণ (ন) নেই (বিদ্যতে) বিদ্যমান, ইহা জানো ॥ ৪৮ ॥

ভাবার্থঃ–কেহই, স্বয়ং প্রকাশমান যে ব্রহ্ম, তাহার সমান জ্যোতি বিদ্যমান নয় অথবা সূর্য্যের প্রকাশ দ্বারা যুক্ত মেঘের সমান জল স্থিত হওয়ার স্থান অথবা সূর্য্যমন্ডল তুল্য লোকেশ বা বাণী তুল্য ব্যবহারকে প্রতিপন্নকারী কোন পদার্থ হয় না, ইহার নিশ্চয় সকলে করুক ॥ ৪৮ ॥

পুনঃ প্রশ্নানাহ ॥
পুনঃ প্রশ্নগুলিকে পরবর্ত্তী মন্ত্রে বলা হইয়াছে ॥

পৃচ্ছামীত্যস্য প্রজাপতির্ঋষিঃ । প্রষ্টৃসমাধাতারৌ দেবতে । নিচৃৎ ত্রিষ্টুপ্ ছন্দঃ । গান্ধারঃ স্বরঃ ॥

পৃ॒চ্ছামি॑ ত্বা চি॒তয়ে॑ দেবসখ॒ য়দি॒ ত্বমত্র॒ মন॑সা জ॒গন্থ॑ ।

য়েষু॒ বিষ্ণু॑স্ত্রি॒ষু প॒দেষ্বেষ্ট॒স্তেষু॒ বিশ্বং॒ ভুব॑ন॒মা বি॑বেশাঁ৩ ॥ ৪ঌ ॥


পদার্থঃ–হে (দেবসখ) বিদ্বান্দিগের মিত্র! (য়দি) যদি (ত্বম্) তুমি (অত্র) এখানে (মনসা) অন্তঃকরণ দ্বারা (জগন্থ) প্রাপ্ত হও তাহা হইলে (ত্বা) তোমাকে (চিতয়ে) চেতনের জন্য (পৃচ্ছামি) জিজ্ঞাসা করি, যে (বিষ্ণুঃ) ব্যাপক ঈশ্বর (য়েষু) যে (ত্রষু) তিন প্রকারের (পদেষু) প্রাপ্ত হওয়ার যোগ্য জন্ম, নাম ও স্থানে (ত্রষ্টঃ) উত্তম প্রকার ইষ্ট (তেষু) তন্মধ্যে ব্যাপ্ত (বিশ্বম্) সম্পূর্ণ (ভুবনম্) পৃথিবী আদি লোক-লোকান্তরকে (আ, বিবেশ) ভালমত প্রবেশ করিতেছে সেই পরমাত্মাকে তোমার নিকট জিজ্ঞাসা করি ॥ ৪ঌ ॥

ভাবার্থঃ–হে বিদ্বান্! যাহা চেতনাস্বরূপ সর্বব্যাপী, পূজা, উপাসনা, প্রশংসা, স্তুতি করিবার যোগ্য পরমেশ্বর, তাহাকে আমার জন্য উপদেশ কর ॥ ৪ঌ ॥

অথৈতেষামুত্তরাণ্যাহ ॥
এখন উক্ত প্রশ্নগুলিরউত্তর পরবর্ত্তী মন্ত্রে দেওয়া হইয়াছে ॥

অপীত্যস্য প্রজাপতির্ঋষিঃ । ঈশ্বরো দেবতা । নিচৃৎ ত্রিষ্টুপ্ ছন্দঃ ।
ধৈবতঃ স্বরঃ ॥

অপি॒ তেষু॑ ত্রি॒ষু প॒দেষ্ব॑স্মি॒ য়েষু॒ বিশ্বং॒ ভুব॑নমাবি॒বেশ॑ ।

স॒দ্যঃ পর্য়ে॑মি পৃথি॒বীমু॒ত দ্যামেকে॒নাঙ্গে॑ন দি॒বোऽঅ॒স্য পৃ॒ষ্ঠম্ ॥ ৫০ ॥


পদার্থঃ–হে মনুষ্যগণ! যে জগতের রচয়িতা ঈশ্বর আমি (য়েষু) যে (ত্রিষু) তিন (পদেষু) প্রাপ্ত হইবার যোগ্য জন্ম-নাম-স্থানে (বিশ্বম্) সমস্ত (ভুবনম্) জগৎ (আবিবেশ) সব দিক দিয়া প্রবেশকে প্রাপ্ত হইতে ছে, (তেষু) সেই সব জন্ম, নাম ও স্থানে (অপি) ও আমি ব্যাপ্ত (অস্মি) আছি । (অস্য) এই (দিবঃ) প্রকাশমান সূর্য্যাদি লোকের (পৃষ্ঠম্) উপরের অংশ (পৃথিবীম্) ভূমি বা অন্তরিক্ষ (উত) এবং (দ্যাম্) সমস্ত প্রকাশকে (একেন) এক (অঙ্গেন) অতি মনোহর প্রাপ্ত হওয়ার যোগ্য ব্যবহার বা দেশ হইতে (সদ্যঃ) শীঘ্র (পরি, এমি) সব দিক দিয়া প্রাপ্ত আছি, সেই আমার উপাসনা তোমরা সবাই করিতে থাক ॥ ৫০ ॥

ভাবার্থঃ–যেমন সকল জীবের প্রতি ঈশ্বর উপদেশ করেন যে, আমি কার্য্য কারণাত্মক জগতে ব্যাপ্ত আছি, আমার ছাড়া একটা পরমাণুও অব্যাপ্ত নয় । সুতরাং যেখানে জগৎ নেই, সেখানেও আমি অনন্ত স্বরূপে পরিপূর্ণ । এই যে অতি বিস্তারযুক্ত জগৎকে আপনারা দেখেন উহা আমার সম্মুখে একটা অনুমাত্রও নহে, এই কথাটি তদ্রূপ বিদ্বান্ সকলকে জানাইবেন ॥ ৫০ ॥

অথেশ্বরবিষয়ে প্রশ্নাবাহ ॥
এখন ঈশ্বর বিষয়ে দুইটি প্রশ্ন করিতেছি ॥

কেষ্বন্ত ইত্যস্য প্রজাপতির্ঋষিঃ । পুরুষেশ্বরো দেবতা । পংক্তিশ্ছন্দঃ ।
পঞ্চমঃ স্বরঃ ॥

কেষ্ব॒ন্তঃ পুর॑ুষ॒ऽআ বি॑বেশ॒ কান্য॒ন্তঃ পুর॑ুষে॒ऽঅর্পি॑তানি ।

এ॒তদ্ ব্র॑হ্ম॒ন্নুপ॑ বল্হামসি ত্বা॒ কিᳬস্বি॑ন্নঃ॒ প্রতি॑ বোচা॒স্যত্র॑ ॥ ৫১ ॥


পদার্থঃ–হে (ব্রহ্মন্) বেদজ্ঞবিদ্বান্! (কেষু) কাহার মধ্যে (পুরুষঃ) সর্বত্র পূর্ণ পরমেশ্বর (অন্তঃ) ভিতর (আ, বিবেশ) প্রবেশ করিতেছে এবং (কানি) কে (পুরুষে) পূর্ণ ঈশ্বরে (অন্তঃ) ভিতর (অর্পিতানি) স্থাপন করিয়াছে? যে জ্ঞান দ্বারা আমরা (উপ, বল্হামসি) প্রধান হই (এতৎ) এই (ত্বা) আপনাকে জিজ্ঞাসা করি উহা (কিং, স্বিৎ) কী (অত্র) এই সম্পর্কে (নঃ) আমাদের (প্রতি) প্রতি (বোচাসি) বলুন ॥ ৫১ ॥

ভাবার্থঃ–ইতর মনুষ্যদিগের উচিত যে, চারি বেদের জ্ঞাতা বিদ্বান্দিগকে এমন জিজ্ঞাসা করিবে যে, হে বেদজ্ঞ বিদ্বান্! পূর্ণ পরমেশ্বর কাহার মধ্যে প্রবিষ্ট এবং কে ইহার অন্তর্গত? এই কথা আপনাকে জিজ্ঞাসা করিয়াছি । যথার্থপূর্বক বলুন যাহার জ্ঞান দ্বারা আমরা উত্তম পুরুষ হই ॥ ৫১ ॥

পূর্বমন্ত্রোক্তপ্রশ্নয়োরুত্তরমাহ ॥
পূর্ব মন্ত্রে কথিত প্রশ্নগুলির উত্তর পরবর্ত্তী মন্ত্রে বলা হইয়াছে ॥

পঞ্চস্বন্ত ইত্যস্য প্রজাপতির্ঋষিঃ । পরমেশ্বরো দেবতা । বিরাট্ ত্রিষ্টুপ্ ছন্দঃ ।
ধৈবতঃ স্বরঃ ॥

প॒ঞ্চস্ব॒ন্তঃ পুর॑ুষ॒ऽআ বি॑বেশ॒ তান্য॒ন্তঃ পুর॑ুষে॒ऽঅর্পি॑তানি ।

এ॒তত্ত্বাত্র॑ প্রতিমন্বা॒নোऽঅ॑স্মি॒ ন মা॒য়য়া॑ ভব॒স্যুত্ত॑রো॒ মৎ ॥ ৫২ ॥


পদার্থঃ– হে জিজ্ঞাসু পুরুষ! (পঞ্চসু) পঞ্চভূত বা তাহাদের সূক্ষ্ম মাত্রায় (অন্তঃ) মধ্যে (পুরুষঃ) পূর্ণ পরমাত্মা (আ, বিবেশ) স্বীয় ব্যাপ্তি দ্বারা উত্তম প্রকার প্রাপ্ত হইতেছে (তানি) সেগুলি পঞ্চভূত বা তন্মাত্রা (পুরুষে) পূর্ণ পরমাত্মা পুরুষের (অন্তঃ) মধ্যে (অর্পিতানি) স্থাপিত করিয়াছেন (এতৎ) এবং (অত্র) এই জগতে (ত্বা) আপনাকে (প্রতিমন্বানাঃ) প্রত্যক্ষ জানিয়া আমি সমাধান-কর্ত্তা (অস্মি) আছি যাহা (মায়য়া) উত্তম বুদ্ধি দ্বারা যুক্ত তুমি (ভবসি) হও তাহা হইলে (মৎ) আমা অপেক্ষা (উত্তরঃ) উত্তর সমাধানকর্ত্তা কেহই (ন) নেই, ইহা তুমি জান ॥ ৫২ ॥

ভাবার্থঃ–পরমেশ্বর উপদেশ করেন যে, হে মনুষ্যগণ! আমার উপর কেহই নাই । আমিই সকলের আধার, সকলের মধ্যে ব্যাপ্ত হইয়া ধারণ করি । আমার ব্যাপ্ত হওয়ায় সকল পদার্থ নিজ নিজ নিয়মে স্থিত । হে সকলের উত্তম যোগী বিদ্বান্গণ! আপনারা আমার এই বিজ্ঞানকে জানাও ॥ ৫২ ॥

পুনঃ প্রশ্নানাহ ॥
পুনঃ পরবর্ত্তী মন্ত্রে প্রশ্নগুলি বলা হইতেছে ॥

কা স্বিদিত্যস্য প্রজাপতির্ঋষিঃ । প্রষ্টা দেবতা । অনুষ্টুপ্ ছন্দঃ ।
গান্ধারঃ স্বরঃ ।

কা স্বি॑দাসীৎ পূ॒র্বচি॑ত্তিঃ॒ কিᳬস্বি॑দাসীদ্ বৃ॒হদ্বয়ঃ॑ ।

কা স্বি॑দাসীৎ পিলিপ্পি॒লা কা স্বি॑দাসীৎ পিশঙ্গি॒লা ॥ ৫৩ ॥


পদার্থঃ–হে বিদ্বন্! এই জগতে (কা, স্বিৎ) কে (পূর্বচিত্তিঃ) পূর্ব অনাদি সময়ে সঞ্চিত হওয়ার (আসীৎ) আছে? (কিং, স্বিৎ) কী (বৃহৎ) বৃহৎ (বয়ঃ) উৎপন্ন স্বরূপ (আসীৎ) আছে? (কা, স্বিৎ) কে (পিলিপ্পিলা) আদ্রীভূত চিক্কন (আসীৎ) আছে এবং (কা, স্বিৎ) কে (পিশঙ্গিলা) অবয়বগুলি কে ভিতরে করিয়া (আসীৎ) আছে, ইহা আপনার নিকট জিজ্ঞাসা করি ॥ ৫৩ ॥

ভাবার্থঃ–এই মন্ত্রে চারটি প্রশ্ন, তাহার সমাধান পরবর্ত্তী মন্ত্রে দেখা উচিত ॥ ৫৩ ॥

পূর্বপ্রশ্নানামুত্তরাণ্যাহ ॥
পূর্ব মন্ত্রের প্রশ্নগুলির উত্তর পরবর্ত্তী মন্ত্রে প্রশ্নগুলি বলা হইতেছে ॥

দ্যৌরাসীদিত্যস্য প্রজাপতির্ঋষিঃ । সমাধাতা দেবতা । নিচৃদনুষ্টুপ্ ছন্দঃ ।
গান্ধারঃ স্বরঃ ॥

দ্যৌরা॑সীৎ পূ॒র্বচি॑ত্তি॒রশ্ব॑ऽআসীদ্ বৃ॒হদ্বয়ঃ॑ ।

অবি॑রাসীৎ পিলিপ্পি॒লা রাত্রি॑রাসীৎ পিশঙ্গি॒লা ॥ ৫৪ ॥


পদার্থঃ–হে জিজ্ঞাসু মনুষ্য! (দ্যৌঃ) বিদ্যুৎ (পূর্বচিত্তিঃ) প্রথম সঞ্চয় (আসীৎ) আছে (অশ্বঃ) মহত্তত্ত্ব (বৃহৎ) বৃহৎ (বয়ঃ) উৎপত্তিস্বরূপ (আসীৎ) আছে (অবিঃ) রক্ষাকারিণী প্রকৃতি (পিলিপ্পিলা) আর্দ্র চিক্কন (আসীৎ) আছে (রাত্রিঃ) রাত্রির সমান বর্ত্তমান প্রলয় (পিশঙ্গিলা) সব অবয়বকে ভক্ষণকারী (আসীৎ) আছে, ইহা তুমি জান ॥ ৫৪ ॥

ভাবার্থঃ–হে মনুষ্যগণ! যাহা অতিসূক্ষ্ম বিদ্যুৎ উহা প্রথম পরিণাম্, মহত্তত্বরূপ দ্বিতীয় পরিণাম এবং প্রকৃতি সকলের মূল কারণ পরিণাম রহিত এবং প্রলয় সব স্থূল জগতের বিনাশ রূপ, ইহা জানা দরকার ॥ ৫৪ ॥

পুনঃ প্রশ্নানাহ ॥
পুনঃ পরবর্ত্তী মন্ত্রে প্রশ্ন বলা হইতেছে ॥

কা ঈমিত্যস্য প্রজাপতির্ঋষিঃ । প্রষ্টা দেবতা । অনুষ্টুপ্ ছন্দঃ ।
গান্ধারঃ স্বরঃ ॥

কাऽঈম॑রে পিশঙ্গি॒লা কাऽইং॑ কুরুপিশঙ্গি॒লা ।

কऽই॑মা॒স্কন্দ॑মর্ষতি॒ কऽইং॒ পন্থাং॒ বি স॑র্পতি ॥ ৫৫ ॥


পদার্থঃ–(অরে) হে বিদুষী স্ত্রী! (কা, ঈম্) কে বার বার (পিশঙ্গিনা) রূপের আবরণকারিণী (কা, ঈম্) কে বার বার (কুরুপিশঙ্গিলা) যবাদি অন্নসমূহের অবয়ব ভক্ষণকারিণী (কঃ, ঈম্) কে বার বার (আস্কন্দম্) বিচিত্র চলনকে (অর্ষতি) প্রাপ্ত হয় এবং (কঃ) কে (ঈম্) জলের (পন্থাম্) মার্গকে (বি, সর্পতি) বিশেষ বিস্তার করিয়া চলে ॥ ৫৫ ॥

ভাবার্থঃ–কাহার দ্বারা রূপের আবরণ এবং কাহার দ্বারা কৃষি আদির বিনাশ হয়, কে শীঘ্র দৌড়ায় ও কে মার্গে বিস্তার করিয়া চলে, এই চারটি প্রশ্ন ইহার উত্তর পরবর্ত্তী মন্ত্রে জান ॥ ৫৫ ॥

পূর্বপ্রশ্নানামুত্তরাণ্যাহ ॥
পূর্ব মন্ত্রে কথিত প্রশ্নগুলির উত্তর পরবর্ত্তী মন্ত্রে বলা হইয়াছে ॥

অজার ইত্যস্য প্রজাপতির্ঋষিঃ । সমাধাতা দেবতা । স্বরাডুষ্ণিক্ ছন্দঃ ।
ঋষভঃ স্বরঃ ॥

অ॒জারে॑ পিশঙ্গি॒লা শ্বা॒বিৎকু॑রুপিশঙ্গি॒লা ।

শ॒শऽআ॒স্কন্দ॑মর্ষ॒ত্যহিঃ॒ পন্থাং॒ বি স॑র্পতি ॥ ৫৬ ॥


পদার্থঃ–(অরে) হে মনুষ্যগণ! (অজা) জন্মরহিত প্রকৃতি (পিশঙ্গিলা) বিশ্বের রূপকে প্রলয় সময়ে নিগীরণকারী (শ্বাবিৎ) সজারু (কুরুপিশঙ্গিলা) কৃত জমি আদির অবয়বের নাশ করে (শশঃ) খরগোশ তুল্য বেগযুক্ত কৃষি আদিতে শুকিয়ে দেওয়া বায়ু (আস্কন্দম্) উত্তম প্রকার লম্ফ দিয়া চলে অর্থাৎ এক পদার্থ হইতে অন্য পদার্থকে শীঘ্র (অর্ষতি) প্রাপ্ত হয় এবং (অহিঃ) মেঘ (পন্থাম্) মার্গে (বি, সর্পতি) বিবিধ প্রকারে যায়, ইহা তুমি জান ॥ ৫৬ ॥

ভাবার্থঃ–হে মনুষ্যগণ! যে প্রকৃতি সব কার্য্যরূপ জগতের প্রলয়কারিণী কার্য্যকারণ রূপ স্বীয় কার্য্যকে নিজের মধ্যে লয়কারিণী, যে সজারু খেতাদির বিনাশ করে, যে বায়ু খরগোশের সমান চলিয়া সকলকে শুষ্ক করে এবং যে মেঘ সর্প সমান পৃথিবীর উপর দিয়া গমন করে, সেই সকলকে জান ॥ ৫৬ ॥

পুনঃ প্রশ্নানাহ ॥
পুনঃ পরবর্ত্তী মন্ত্রে প্রশ্ন বলা হইতেছে ॥

কত্যস্যেত্যস্য প্রজাপতির্ঋষিঃ । প্রষ্টা দেবতা । নিচৃৎ ত্রিষ্টুপ্ ছন্দঃ ।
ধৈবতঃ স্বরঃ ॥

কত্য॑স্য বি॒ষ্ঠাঃ কত্য॒ক্ষরা॑ণি॒ কতি॒ হোমা॑সঃ কতি॒ধা সমি॑দ্ধঃ ।

য়॒জ্ঞস্য॑ ত্বা বি॒দথা॑ পৃচ্ছ॒মত্র॒ কতি॒ হোতা॑রऽঋতু॒শো য়॑জন্তি ॥ ৫৭ ॥


পদার্থঃ–হে বিদ্বন্! (অস্য) এই (য়জ্ঞস্য) সংযোগ হইতে উৎপন্ন সংসাররূপ যজ্ঞের (কতি) কত (বিষ্ঠাঃ) বিশেষ করিয়া সংসার রূপ যজ্ঞ যন্মধ্যে স্থিত হয়, তাহারা (কতি) কত ইহার (অক্ষরাণি) জলাদি সাধন (কতি) কত (হোমাসঃ) নেওয়া-দেওয়ার যোগ্য পদার্থ (কতিধা) কত প্রকারে (সমিদ্ধঃ) জ্ঞানাদির প্রকাশক পদার্থ সমিধরূপ (কতি) কত (হোতারঃ) হোতা অর্থাৎ আদান-প্রদানাদি ব্যবহারের কর্ত্তা (ঋতুশঃ) বসন্তাদি প্রত্যেক ঋতুতে (য়জন্তি) সঙ্গতি করে এই প্রকার (অত্র) এই বিষয়ে (বিদথা) বিজ্ঞান সমূহকে (ত্বা) আপনার নিকট আমি (পৃচ্ছম্) জিজ্ঞাসা করি ॥ ৫৭ ॥

ভাবার্থঃ–এই জগৎ কোথায় স্থিত, কত ইহার উৎপত্তির সাধন, কত ব্যাপারের যোগ্য বস্তু, কত প্রকারের জ্ঞানাদি প্রকাশক বস্তু এবং কত ব্যবহারকারী আছে, এই পাঁচটি প্রশ্নের উত্তর পরবর্ত্তী মন্ত্রে জানিয়া লইতে হইবে ॥ ৫৭ ॥

পূর্বপ্রশ্নানামুত্তরাণ্যাহ ॥
পূর্ব মন্ত্রে কথিত প্রশ্নগুলির উত্তর পরবর্ত্তী মন্ত্রে বলা হইয়াছে ॥

ষডস্যেত্যস্য প্রজাপতির্ঋষিঃ । সমিধা দেবতা । নিচৃৎ ত্রিষ্টুপ্ ছন্দঃ ।
ধৈবতঃ স্বরঃ ॥

ষড॑স্য বি॒ষ্ঠাঃ শ॒তম॒ক্ষরা॑ণ্যশী॒তির্হোমাঃ॑ স॒মিধো॑ হ তি॒স্রঃ ।

য়॒জ্ঞস্য॑ তে বি॒দথা॒ প্র ব্র॑বীমি স॒প্ত হোতা॑রऽঋতু॒শো য়॑জন্তি ॥ ৫৮ ॥


পদার্থঃ–হে জিজ্ঞাসুগণ! (অস্য) এই (য়জ্ঞস্য) সঙ্গত জগতের (ষট্) ছয় ঋতু (বিষ্ঠাঃ) বিশেষ স্থিতির আধার (শতম্) অসংখ্য (অক্ষরাণি) জলাদি উৎপত্তির সাধন, (অশীতিঃ) অসংখ্য (হোমাঃ) আদান-প্রদানের যোগ্য বস্তু (তিস্রঃ) আধ্যাত্মিক, আধিদৈবিক, আধিভৌতিক তিন (হ) প্রসিদ্ধ (সমিধঃ) জ্ঞানাদির প্রকাশক বিদ্যা (সপ্ত) পাঁচ প্রাণ, মন ও আত্মা সাত (হোতারঃ) আদান-প্রদানাদি ব্যবহারের কর্ত্তা (ঋতুশঃ) প্রতি বসন্তাদি ঋতুতে (য়জন্তি) সঙ্গত হয়, সেই জগতের (বিদধা) বিজ্ঞানগুলিকে (তে) তোমার জন্য আমি (প্রব্রবীমি) বলি ॥ ৫৮ ॥

ভাবার্থঃ–হে জ্ঞানকামীগণ! যে জগৎরূপ যজ্ঞে ছয়টি ঋতু স্থিতির সাধক, অসংখ্য জলাদি বস্তু ব্যবহার সাধক বহু ব্যবহারের যোগ্য পদার্থ এবং সকল প্রাণী অপ্রাণী হোতাদি সঙ্গত হয় এবং যাহাতে জ্ঞানাদির প্রকাশিত তিন প্রকারের বিদ্যা, সেই যজ্ঞকে তোমরা জান ॥ ৫৮ ॥

পুনঃ প্রশ্নানাহ ॥
পুনরায় পরবর্ত্তী মন্ত্রে প্রশ্নগুলিকে বলিতেছে ।

কোऽঅস্যেত্যস্য প্রজাপতির্ঋষিঃ । প্রষ্টা দেবতা । নিচৃৎ ত্রিষ্টুপ্ ছন্দঃ ।
ধৈবতঃ স্বরঃ ।

কোऽঅ॒স্য বে॑দ॒ ভুব॑নস্য॒ নাভিং॒ কো দ্যাবা॑পৃথি॒বীऽঅ॒ন্তরি॑ক্ষম্ ।

কঃ সূর্য়॑স্য বেদ বৃহ॒তো জ॒নিত্রং॒ কো বে॑দ চ॒ন্দ্রম॑সং য়তো॒জাঃ ॥ ৫ঌ ॥


পদার্থঃ–হে বিদ্বন্! (অস্য) এই (ভুবনস্য) সকলের আধারভূত সংসারের (নাভিম্) বন্ধনের স্থান মধ্যভাগকে (কঃ) কে (বেদ) জানে (কঃ) কে (দ্যাবাপৃথিবী) সূর্য্য ও পৃথিবী তথা (অন্তরিক্ষম্) আকাশকে জানে (কঃ) কে (বৃহতঃ) বৃহৎ (সূর্য়স্য) সূর্যমন্ডলের (জনিত্রম্) উপাদান বা নিমিত্ত কারণকে (বেদ) জানে এবং যে (য়তোজাঃ) যাহা হইতে উৎপন্ন হইয়াছে সেই চন্দ্র উৎপাদককে এবং(চন্দ্রমাসম্) চন্দ্রলোককে (কঃ) কে (বেদ) জানে, ইহার সমাধান করুন ॥ ৫ঌ ॥

ভাবার্থঃ–হে জগতের ধারণকর্ত্তা বন্ধন, ভূমি, সূর্য্য, অন্তরিক্ষ, মহান সূর্য্যের কারণ ও চন্দ্রমা যাহা হইতে উৎপন্ন হইয়াছে তাহাকে কে জানে–এই চারটি প্রশ্নগুলির উত্তর পরবর্ত্তী মন্ত্রে আছে–ইহা জানা উচিত ॥ ৫ঌ ॥

পূর্বপ্রশ্নানামুত্তরাণ্যাহ ॥
পূর্ব মন্ত্রে কথিত প্রশ্নগুলির উত্তর পরবর্ত্তী মন্ত্রে বলা হইয়াছে ॥

বেদাহমিত্যস্য প্রজাপতির্ঋষিঃ । সমাধাতা দেবতা । ত্রিষ্টুপ্ ছন্দঃ ।
ধৈবতঃ স্বরঃ ॥

বেদা॒হম॒স্য ভুব॑নস্য॒ নাভিং॒ বেদ॒ দ্যাবা॑পৃথি॒বীऽঅ॒ন্তরি॑ক্ষম্ ।

বেদ॒ সূর্য়॑স্য বৃহ॒তো জ॒নিত্র॒মথো॑ বেদ চ॒ন্দ্রম॑সং য়তো॒জাঃ ॥ ৬০ ॥


পদার্থঃ–হে জিজ্ঞাসু পুরুষ! (অস্য) এই (ভুবনস্য) সকলের অধিকরণ জগতের (নাভিম্) বন্ধনের স্থান কারণরূপ মধ্যভাগ পরব্রহ্মকে (অহম্) আমি (বেদ) জানি তথা (দ্যাবাপৃথিবী) প্রকাশিত ও অপ্রকাশিত লোকসমূহ এবং (অন্তরিক্ষম্) আকাশকেও (বেদ) আমি জানি (বৃহতঃ) বৃহৎ (সূর্য়্যস্য) সূর্য্যলোকের (জনিত্রম্) উপাদান তৈজস কারণ এবং নিমিত্তকারণ ব্রহ্মকে (বেদ) আমি জানি (অথো) ইহার পর (য়তোজাঃ) যে পরমাত্মা হইতে উৎপন্ন চন্দ্র সেই পরমাত্মাকে তথা (চন্দ্রমসম্) চন্দ্রকে (বেদ) আমি জানি ॥ ৬০ ॥

ভাবার্থঃ–বিদ্বান্ উত্তর দিবে যে, হে জিজ্ঞাসু পুরুষ! এই জগতের বন্ধন অর্থাৎ স্থিতির কারণ প্রকাশিত অপ্রকাশিত মধ্যস্থ আকাশ এই তিন লোকের কারণ ও সূর্য্য-চন্দ্রের উপাদান ও নিমিত্তকারণ এই সকল কে আমি জানি, ব্রহ্মই এই সকলের নিমিত্তকারণ ও প্রকৃতি উপাদান কারণ ॥ ৬০ ॥

পুনঃ প্রশ্নানাহ ॥
পুনঃ পরবর্ত্তী মন্ত্রে প্রশ্নগুলি বলা হইতেছে ॥

পৃচ্ছামীত্যস্য প্রজাপতির্ঋষিঃ । প্রষ্টা দেবতা । নিচৃৎ ত্রিষ্টুপ্ ছন্দঃ ।
ধৈবতঃ স্বরঃ ॥

পৃ॒চ্ছামি॑ ত্বা॒ পর॒মন্তং॑ পৃথি॒ব্যাঃ পৃ॒চ্ছামি॒ য়ত্র॒ ভুব॑নস্য॒ নাভিঃ॑ ।

পৃ॒চ্ছামি॑ ত্বা॒ বৃষ্ণো॒ऽঅশ্ব॑স্য॒ রেতঃ॑ পৃ॒চ্ছামি॑ বা॒চঃ প॑র॒মং ব্যো॑ম ॥ ৬১ ॥


পদার্থঃ–হে বিদ্বান্ ব্যক্তি! আমি (ত্বা) আপনাকে (পৃথিব্যাঃ) পৃথিবীর (অন্তম্, পরম্) পরভাগ অবধিকে (পৃচ্ছামি) জিজ্ঞাসা করি, (য়ত্র) যেখানে এই (ভুবনস্য) লোকের (নাভিঃ) মধ্য আকর্ষণ দ্বারা বন্ধন করে তাহাকে (পৃচ্ছামি) জিজ্ঞাসা করি, যে (বৃষ্ণঃ) সেচনকর্ত্তা (অশ্বস্য) বলবান্ পুরুষের (রেতঃ) পরাক্রম তাহাকে (পৃচ্ছামি) জিজ্ঞাসা করি এবং (বাচঃ) তিন বেদরূপ বাণীর (পরমম্) উত্তম (ব্যোম) আকাশ রূপ স্থানকে (ত্বা) আপনার নিকট জিজ্ঞাসা করি, আপনি উত্তর দিন ॥ ৬১ ॥

ভাবার্থঃ–পৃথিবীর সীমা কী, জগতের আকর্ষণ দ্বারা বন্ধনে কে, বলবান্ ব্যক্তির পরাক্রম এবং বাণীর পারঙ্গত কে–এই চারটি প্রশ্নের উত্তর পরবর্ত্তী মন্ত্রে জানা উচিত ॥ ৬১ ॥

পূর্বপ্রশ্নানামুত্তরাণ্যাহ ॥
পূর্ব মন্ত্রে কথিত প্রশ্নগুলির উত্তর পরবর্ত্তী মন্ত্রে বলা হইয়াছে ॥

ইয়মিত্যস্য প্রজাপতির্ঋষিঃ । সমাধাতা দেবতা । বিরাড্ ত্রিষ্টুপ্ ছন্দঃ ।
ধৈবতঃ স্বরঃ ॥

ই॒য়ং বেদিঃ॒ পরো॒ऽঅন্তঃ॑ পৃথি॒ব্যাऽঅ॒য়ং য়॒জ্ঞো ভুব॑নস্য॒ নাভিঃ॑ ।

অ॒য়ꣳ সোমো॒ বৃষ্ণো॒ऽঅশ্ব॑স্য॒ রেতো॑ ব্র॒হ্মায়ং বা॒চঃ প॑র॒মং ব্যো॑ম ॥ ৬২ ॥


পদার্থঃ–হে জিজ্ঞাসু ব্যক্তি! (ইয়ম্) এই (বেদিঃ) মধ্যরেখা (পৃথিব্যা) ভূমির (পরঃ) পরভাগের (অন্তঃ) সীমা, (অয়ম্) এই প্রত্যক্ষ গুণযুক্ত (য়জ্ঞঃ) সকলের পূজনীয় পরমেশ্বর (ভুবনস্য) সংসারের (নাভিঃ) নিয়ত স্থিতির বন্ধন, (অয়ম্) এই (সোমঃ) ওষধিসমূহের মধ্যে উত্তম অংশুমান্ আদি সোম, (বৃষ্ণঃ) পরাক্রমকর্ত্তা (অশ্বস্য) বলবান্ ব্যক্তির (রেতঃ) পরাক্রম এবং (অয়ম্) এই (ব্রহ্মা) চারি বেদের জ্ঞাতা (বাচঃ) তিন বেদরূপ বাণীর (পরমম্) উত্তম (ব্যোম্) স্থান, তুমি ইহাকে জান ॥ ৬২ ॥

ভাবার্থঃ–হে মনুষ্যগণ! যে এই ভূগোলের মধ্যরেখাকে জানিবে, সে উপরের ভূমির অন্তকে প্রাপ্ত করিয়া ব্যাসসংজ্ঞক হয় । ইহাই ভূমির সীমা । সকল লোকদের মধ্য আকর্ষণকর্ত্তা জগদীশ্বর । সকল প্রাণিদিগকে পরাক্রমকর্ত্তা ওষধিসকল মধ্যে উত্তম অংশুমান্ আদি সোম এবং বেদপারগ পুরুষ বাণীর পারঙ্গত হয়, ইহা তুমি জান ॥ ৬২ ॥

ঈশ্বরঃ কীদৃশ ইত্যাহ ॥
ঈশ্বর কেমন এই বিষয়কে পরবর্ত্তী মন্ত্রে বলা হইয়াছে ॥

সুভূরিত্যস্য প্রজাপতির্ঋষিঃ । সমাধাতা দেবতা । বিরাডনুষ্টুপ্ ছন্দঃ ।
গান্ধারঃ স্বরঃ ॥

সু॒ভূঃ স্ব॑য়॒ম্ভূঃ প্র॑থ॒মো᳕ऽন্তর্ম॑হত্য᳖র্ণ॒বে ।

দ॒ধে হ॒ গর্ভ॑মৃ॒ত্বিয়ং॒ য়তো॑ জা॒তঃ প্র॒জাপ॑তিঃ ॥ ৬৩ ॥


পদার্থঃ–হে জিজ্ঞাসু ব্যক্তি! (য়তঃ) যে জগদীশ্বর হইতে (প্রজাপতিঃ) বিশ্বের রক্ষক সূর্য্য (জাতঃ) উৎপন্ন হইয়াছে এবং যে (সুভূঃ) সুন্দর বিদ্যমান (স্বয়ম্ভূঃ) যে স্বয়ং প্রসিদ্ধ উৎপত্তি, নাশরহিত (প্রথমঃ) সকলের পূর্বে জগদীশ্বর (মহতি) অত্যন্ত বিস্তৃত (অর্ণবে) জলের সঙ্গে সম্বদ্ধ সংসারের (অন্তঃ) মধ্যে (ঋত্বিয়ম্) সময়ানুকূল প্রাপ্ত (গর্ভম্) বীজকে (দধে) ধারণ করে (হ) সকলে তাহার উপাসনা করিবে ॥ ৬৩ ॥

ভাবার্থঃ–যদি মনুষ্যগণ সূর্য্যাদি লোকের উত্তম কারণ প্রকৃতিকে এবং সেই প্রকৃতিতে উৎপত্তির শক্তিকে ধারণকারী পরমাত্মাকে জানিবে, তাহারা এই জগতে বিস্তৃত সুখ যুক্ত হইবে ॥ ৬৩ ॥

ঈশ্বরঃ কথমুপাস্য ইত্যাহ ॥
ঈশ্বরের উপাসনা কীভাবে করা উচিত, এই বিষয়কে পরবর্ত্তী মন্ত্রে বলা হইয়াছে ॥

হোতা য়ক্ষদিত্যস্য প্রজাপতির্ঋষিঃ । ঈশ্বরো দেবতা । বিরাডুষ্ণিক্ ছন্দঃ ।
ঋষভঃ স্বরঃ ॥

হোতা॑ য়ক্ষৎ প্র॒জাপ॑তি॒ꣳ সোম॑স্য মহি॒ম্নঃ ।

জু॒ষতাং॒ পিব॑তু॒ সোম॒ꣳ হোত॒র্য়জ॑ ॥ ৬৪ ॥


পদার্থঃ–হে (হোতঃ) দানদাতা ব্যক্তি! যেমন (হোতা) গ্রহীতা পুরুষ (সোমস্যঃ) সকল ঐশ্বর্য্যের সহিত যুক্ত (মহিম্নঃ) মহিমা হওয়ায় (প্রজাপতিম্) বিশ্বের পালক স্বামীর (য়ক্ষৎ) পূজা করিবে বা তাহাকে (জুষতাম্) সেবন দ্বারা প্রসন্ন করিবে এবং (সোমম্) সকল উত্তম ওষধিসকলের রসকে (পিবতু) পান করিবে, তদ্রূপ তুমি (য়জু) তাহার পূজা কর এবং উত্তম ওষধির রস পান কর ॥ ৬৪ ॥

ভাবার্থঃ–এই মন্ত্রে বাচকলুপ্তোপমালঙ্কার আছে । হে মনুষ্যগণ! যেমন বিদ্বান্গণ এই জগতে রচনাদি বিশেষ চিহ্ন দ্বারা পরমাত্মার মহিমাকে জানিয়া ইহার উপাসনা করে সেইরূপই তোমরাও ইহার উপাসনা কর । যেমন এই সব বিদ্বান্ প্রীতিপূর্বক পথ্য পদার্থসমূহের সেবন করিয়া নীরোগ হয়, সেইরূপ তোমরাও হও ॥ ৬৪ ॥

পুনস্তমেব বিষয়মাহ ॥
পুনঃ সেই বিষয়কে পরবর্ত্তী মন্ত্রে বলা হইয়াছে ।

প্রজাপতে নেত্যস্য প্রজাপতির্ঋষিঃ । ঈশ্বরো দেবতা । বিরাট্ ত্রিষ্টুপ্ ছন্দঃ ।
ধৈবতঃ স্বর ॥

প্রজা॑পতে॒ ন ত্বদে॒তান্য॒ন্যো বিশ্বা॑ রূ॒পাণি॒ পরি॒ তা ব॑ভূব ।

য়ৎকা॑মাস্তে জুহু॒মস্তন্নো॑ऽঅস্তু ব॒য়ꣳ স্যা॑ম॒ পত॑য়ো রয়ী॒ণাম্ ॥ ৬৫ ॥


পদার্থঃ–হে (প্রজাপতে) সকল প্রজার রক্ষক স্বামিন্ ঈশ্বর! কেহই (স্বৎ) আপনার হইতে (অন্যঃ) ভিন্ন (তা) সেই সব (এতানি) এই পৃথিব্যাদি ভূতসকল তথা (বিশ্বা) সকল (রূপাণি) স্বরূপযুক্ত বস্তুগুলির উপর (ন) নয় (পরি, বভূব) বলবান, (য়ৎকামাঃ) যে যে পদার্থের কামনাযুক্ত হইয়া (বয়ম্) আমরা আপনার (জুহুমঃ) প্রশংসা করি (তৎ) সেই সেই কামনার যোগ্য বস্তু (নঃ) আমাদেরকে (অস্তু) প্রাপ্ত হউক (তে) আপনার কৃপাবলে আমরা (রয়ীণাম্) বিদ্যা সুবর্ণাদি ধনগুলির (পতয়ঃ) রক্ষক, স্বামী (স্যাম) হইব ॥ ৬৫ ॥

ভাবার্থঃ–পরমেশ্বর হইতে উত্তম, বড়, ঐশ্বর্য্যযুক্ত, সর্বশক্তিমান পদার্থ কেহই নাই, তাহার তুল্যও কেহ নাই । যে সকলের আত্মা, সকলের রচয়িতা, সমস্ত ঐশ্বর্য্যের দাতা ঈশ্বর তাহার ভক্তিবিশেষ এবং স্বীয় পুরুষার্থ দ্বারা এই লোকের ঐশ্বর্য্য ও যোগাভ্যাসের সেবন দ্বারা পরলোকের সামর্থ্যকে আমরা প্রাপ্ত হইব ॥ ৬৫ ॥

এই অধ্যায়ে পরমাত্মার মহিমা, সৃষ্টির গুণ, যোগপ্রশংসা, প্রশ্নোত্তর, সৃষ্টির পদার্থগুলির প্রশংসা, রাজা-প্রজার গুণ, শাস্ত্রাদির উপদেশ, পঠন-পাঠন, স্ত্রী-পুরুষদিগের পরস্পর গুণ, পুনঃ প্রশ্নোত্তর, ঈশ্বরের গুণ, যজ্ঞের ব্যাখ্যা এবং রেখাগণিত আদির বর্ণনা করা হইয়াছে । ইহাতে এই অধ্যায়ের অর্থের পূর্ব অধ্যায়ের অর্থ সহিত সঙ্গতি জানা উচিত ॥

ইতি শ্রীমৎপরমহংসপরিব্রাজকাচার্য়াণাং পরমবিদুষাং শ্রীয়ুতবিরজানন্দসরস্বতীস্বামিনাং শিষ্যেণ পরমহংসপরিব্রাজকাচার্য়েণ শ্রীমদ্দয়ানন্দসরস্বতীস্বামিনা নির্মিতে সুপ্রমাণয়ুক্তে সংস্কৃতার্য়্যভাষাভ্যাং বিভূষিতে য়জুর্বেদভাষ্যে ত্রয়োবিংশোऽধ্যায়ঃ সমাপ্তঃ ॥

No comments:

Post a Comment

ধন্যবাদ

বৈশিষ্ট্যযুক্ত পোস্ট

যজুর্বেদ অধ্যায় ১২

  ॥ ও৩ম্ ॥ অথ দ্বাদশাऽধ্যায়ারম্ভঃ ও৩ম্ বিশ্বা॑নি দেব সবিতর্দুরি॒তানি॒ পরা॑ সুব । য়দ্ভ॒দ্রং তন্ন॒ऽআ সু॑ব ॥ য়জুঃ৩০.৩ ॥ তত্রাদৌ বিদ্বদ্গুণানাহ ...

Post Top Ad

ধন্যবাদ