যজুর্বেদ অধ্যায় ২৫ - ধর্ম্মতত্ত্ব

ধর্ম্মতত্ত্ব

ধর্ম বিষয়ে জ্ঞান, ধর্ম গ্রন্থ কি , হিন্দু মুসলমান সম্প্রদায়, ইসলাম খ্রীষ্ট মত বিষয়ে তত্ত্ব ও সনাতন ধর্ম নিয়ে আলোচনা

धर्म मानव मात्र का एक है, मानवों के धर्म अलग अलग नहीं होते-Theology

সাম্প্রতিক প্রবন্ধ

Post Top Ad

স্বাগতম

22 September, 2023

যজুর্বেদ অধ্যায় ২৫

 

যজুর্বেদ পঁচিশতম অধ্যায়
॥ ও৩ম্ ॥
অথ পঞ্চবিংশোऽধ্যায় আরভ্যতে
ও৩ম্ বিশ্বা॑নি দেব সবিতর্দুরি॒তানি॒ পরা॑ সুব । 
য়দ্ভ॒দ্রং তন্ন॒ऽআ সু॑ব ॥ য়জুঃ৩০.৩ ॥

অথ কেন কিং কর্ত্তব্যমিত্যাহ ॥
এখন পঁচিশতম অধ্যায়ের আরম্ভ । ইহার প্রথম মন্ত্রে কাহাকে কী করা উচিত এই বিষয়কে বলা হইয়াছে ॥

শাদমিত্যস্য প্রজাপতির্ঋষিঃ । সরস্বত্যাদয়ো দেবতাঃ । পূর্বস্য ভুরিক্ছক্বরী ছন্দঃ । ধৈবতঃ স্বরঃ । আদিত্যানিত্যুত্তরস্য নিচৃদতিশক্বরী ছন্দঃ । পঞ্চমঃ স্বরঃ ॥

শাদং॑ দ॒দ্ভিরব॑কাং দন্তমূ॒লৈমৃর্দং॒ বর্স্বৈ॑স্তে॒ গাং দᳬষ্ট্রা॑ভ্যা॒ᳬসর॑স্বত্যাऽঅগ্রজি॒হ্বং জি॒হ্বায়া॑ऽ উৎসা॒দম॑বক্র॒ন্দেন॒ তালু॒ বাজ॒ꣳ হনু॑ভ্যাম॒পऽআ॒স্যে᳖ন॒ বৃষ॑ণমা॒ণ্ডাভ্যা॑মাদি॒ত্যাঁ শ্মশ্রু॑ভিঃ॒ পন্থা॑নং ভ্রূ॒ভ্যাং দ্যাবা॑পৃথি॒বী বর্ত্তো॑ভ্যাং বি॒দ্যুতং॑ ক॒নীন॑কাভ্যাᳬশু॒ক্রায়॒ স্বাহা॑ কৃ॒ষ্ণায়॒ স্বাহা॒ পার্য়া॑ণি॒ পক্ষ্মা॑ণ্যবা॒র্য়া᳖ऽই॒ক্ষবো॑ऽবা॒র্য়া᳖ণি॒ পক্ষ্মা॑ণি॒ পার্য়া॑ ই॒ক্ষবঃ॑ ॥ ১ ॥

পদ০-শাদম্। দদ্ভিরিতি দত্ऽভিঃ। অবকাম্। দন্তমূলৈরিতি দন্তऽমূলৈঃ। মৃদম্। বর্স্বৈঃ।তে। গাম্। দাংষ্ট্রাভ্যাম্। সরস্বত্যৈ। অগ্রজিহ্বমিত্যগ্রऽজিহ্বম্। জিহ্বায়াঃ। উত্সাদমিত্যুতऽসাদম্। অবক্রন্দেনেত্যবऽক্রন্দে। তালু। বাজম্। হনুভ্যামিতি।হনুऽভ্যাম্। অপঃ। আস্যেন। বৃষণম্। আণ্ডাভ্যাম্। আদিত্যান্। স্মস্রুভিরিতি শ্মশ্রুऽভিঃ। পন্থাানম্। ভ্রূভ্যাম্।দ্যাবাপৃথিবী ইতি দ্যাবাপৃথিবী। বর্ত্তোভ্যামিতি বর্ত্তঃऽভ্যাম্। বিদ্যুতমিতি বিऽদ্যুতম্। কনীনকাভ্যাম্। শুক্রায়। স্বাহা। কৃষ্ণায়। স্বাহা। পার্যাণি। পক্ষ্মাণি। অবার্য়াঃ। ইক্ষবঃ।

পদার্থঃ–হে উত্তম জ্ঞানাকাঙ্ক্ষী বিদ্যার্থীগণ! (তে) (দদ্ভিঃ) দাঁত দ্বারা (শাদম্) যাহাতে ছেদন করে সেই ব্যবহারকে (দন্তমূলৈঃ) দন্তমূল এবং (বসৈ্র্্বঃ) দন্তপৃষ্ঠ দ্বারা (অবকাম্) রক্ষাকারিণী (মৃদম্) মৃত্তিকাকে (দংষ্ট্রাভ্যাম্) মাড়ি দ্বারা (সরস্বত্যৈ) বিশেষ জ্ঞান যুক্তা বাণীর জন্য (গাম্) বাণীকে (জিহ্বায়াঃ) জিহ্বা দ্বারা (অগ্রজিহ্বম্) জিহ্বার অগ্রভাগকে (অবক্রন্দেন) বিকলতারহিত ব্যবহার দ্বারা (উৎসাদম্) যাহাতে উপরে স্থিত হয় সেই (তালু) তালুকে (হনুভ্যাম্) চিবুকের পার্শ্বের ভাগ দ্বারা (বাজম্) অন্নকে (আস্যেন) যদ্দ্বারা ভোজনাদি পদার্থকে আর্দ্র করিতে সেই মুখ দ্বারা (অপঃ) জলকে (আন্ডাভ্যাম্) বীর্য্যকে উত্তম প্রকার ধারণকারী অন্ড দ্বারা (বৃষণম্) বীর্য বর্ষণকারী অঙ্গকে (শ্মশ্রুভিঃ) মুখের চারিদিকে যে কেশ অর্থাৎ শ্বশ্রু তদ্দ্বারা (আদিত্যান্) মুখ্য বিদ্বান্দিগকে (ভ্রূভ্যাম্) নেত্র-গোলকের উপর যে ভ্রূ তদ্দ্বারা (পন্থানাম্) মার্গকে (বর্ত্তোভ্যাম্) যাতায়াতের দ্বারা (দ্যাবাপৃথিবী) সূর্য্য ও ভূমি তথা (কণীনকাভ্যাম্) তেজপূর্ণ কৃষ্ণ নেত্র গোলক তারকাগুলির দ্বারা (বিদ্যুতম্) বিদ্যুৎকে আমি বুঝি । তোমাকে (শুক্রায়) বীর্য্যের জন্য (স্বাহা) ব্রহ্মচর্য্য ক্রিয়া দ্বারা এবং (কৃষ্ণায়) বিদ্যা আকর্ষণ করিবার জন্য (স্বাহা) সুন্দর শীলযুক্ত ক্রিয়া দ্বারা (পার্য়াণি) পূর্ণ করিবার যোগ্য (পক্ষ্মাণি) যাহা সব দিক দিয়া গ্রহণ করা উচিত সেই সব কর্ম্ম অথবা নেত্রোর্ধ্বলোম সমূহ অথবা (অবার্য়াঃ) নদী আদির প্রথম দিকে হওয়ার (ইক্ষবঃ) ইক্ষুদন্ডগুলি অথবা (অবার্য়াণি) নদী আদির প্রথম তীরে জায়মান পদার্থ (পক্ষ্মাণি) সকল দিক্ দিয়া যাহার পরিগ্রহণ করিবে অথবা লোমাদি এবং (পার্য়াঃ) পালন করিবার যোগ্য (ইক্ষবঃ) ইক্ষু যাহা গুড়াদির নিমিত্ত সেই সব পদার্থ উত্তম প্রকার গ্রহণ করা উচিত ॥ ১ ॥

ভাবার্থঃ–অধ্যাপকগণ নিজের শিষ্যদিগের অঙ্গ সকলকে উপদেশ দ্বারা উত্তম প্রকার পুষ্ট করিয়া তথা আহার-বিহারের উত্তম বোধ, সমস্ত বিদ্যাসকলের প্রাপ্তি, অখণ্ডিত ব্রহ্মচর্য্যের সেবন এবং ঐশ্বর্য্যের প্রাপ্তি করাইয়া সুখযুক্ত করিবে ॥ ১ ॥

বাতমিত্যস্য প্রজাপতির্ঋষিঃ । প্রাণাদয়ো দেবতাঃ । ভুরগতিশক্বর্য়ৌ ছন্দসী । পঞ্চমৌ স্বরৌ ॥

বাতং॑ প্রা॒ণেনা॑পা॒নেন॒ নাসি॑কেऽউপয়া॒মমধ॑রে॒ণৌষ্ঠে॑ন॒ সদুত্ত॑রেণ প্রকা॒শেনান্ত॑রমনূকা॒শেন॒ বাহ্যং॑ নিবে॒ষ্যং মূ॒র্ধ্না স্ত॑নয়ি॒ত্নুং নি॑র্বা॒ধেনা॒শনিং ম॒স্তিষ্কে॑ণ বি॒দ্যুতং॑ ক॒নীন॑কাভ্যাং॒ কর্ণা॑ভ্যা॒ᳬশ্রোত্র॒ᳬশ্রোত্রা॑ভ্যাং॒ কর্ণৌ॑ তেদ॒নীম॑ধরক॒ণ্ঠেনা॒পঃ শু॑ষ্কক॒ণ্ঠেন॑ চি॒ত্তং মন্যা॑ভি॒রদি॑তিꣳ শী॒র্ষ্ণা নির্ঋ॑তিং॒ নির্জ॑র্জল্পেন শী॒র্ষ্ণা সং॑ক্রো॒শৈঃ প্রা॒ণান্ রে॒ষ্মাণ॑ᳬস্তু॒পেন॑ ॥ ২ ॥

পদার্থঃ–হে জানিবার ইচ্ছুকগণ! আমার উপদেশের গ্রহণ দ্বারা তুমি (প্রাণেন) প্রাণ ও (অপানেন) অপান দ্বারা (বাতম্) পবন ও (নাসিকে) নাসিকাছিদ্রগুলি এবং (উপয়ামম্) প্রাপ্ত নিয়মের (অধরেণ) নিম্নের (ওষ্ঠেন) ওষ্ঠ দ্বারা (উত্তরেণ) উপরের (প্রকাশেন) প্রকাশরূপ ওষ্ঠ দ্বারা (সদন্তরম্) মধ্যে বিদ্যমান মুখাদি স্থানকে (অনূকাশেন) অনুপ্রকাশিত অঙ্গ দ্বারা (বাহ্যম্) বাহিরের অঙ্গকে (মূর্ধ্না) মস্তক দ্বারা (নিবেষ্যম্) যাহা নিশ্চয়পূর্বক ব্যাপ্ত হওয়ার যোগ্য উহাকে (নির্বাধেন) নিরন্তর তাড়নার হেতু সহ (স্তনয়িত্নুম্) শব্দকারক (অশনিম্) বিদ্যুৎকে (মস্তিষ্কেণ) শিরের মজ্জাতন্তু সমূহ দ্বারা (বিদ্যুতম্) অতি প্রকাশমান বিদ্যুৎ কে (কনীনকাভ্যাম্) প্রদীপ্ত হইয়া (কর্ণাভ্যাম্) শ্রবণ-সাধক পবন দ্বারা (কর্ণৌ) যদ্দ্বারা শ্রবণ করে সেই কর্ণকে এবং (শ্রোত্রাভ্যাম্) যে গোলক ছিদ্র দ্বারা শ্রবণ করে তদ্দ্বারা (শ্রোত্রম্) শ্রবণেন্দ্রিয় এবং (তেদনীম্) শ্রবণ করিবার ক্রিয়া (অধরকণ্ঠেন) কণ্ঠের নিম্ন অংশ দ্বারা (অপঃ) জল (শুষ্ককণ্ঠেন) শুষ্ক কণ্ঠ দ্বারা (চিত্তম্) বিশেষ জ্ঞান সিদ্ধকারী অন্তঃকরণের বৃত্তিকে (মন্যাভিঃ) বিশেষ জ্ঞানের ক্রিয়াগুলির দ্বারা (অদিতিম্) অবিনাশী প্রজ্ঞাকে (শীর্ষ্×া) শির দ্বারা (নিরৃতিম্) ভূমিকে (নির্জর্জল্পেন) নিরন্তর জীর্ণ সর্ব প্রকার পরিপক্ব (শীর্ষ্×া) শির এবং (সংক্রোশৈঃ) সম্যক্ আহ্বান দ্বারা (প্রাণান্) প্রাণকে প্রাপ্ত হউক্ তথা (স্তুপেন) হিংসা দ্বারা (রেষ্মাণম্) হিংসক অবিদ্যাদি রোগের নাশ কর ॥ ২ ॥

ভাবার্থঃ–সকল মনুষ্যের উচিত যে, প্রথম অবস্থায় সমস্ত শরীরাদি সাধন দ্বারা শারীরিক ও আত্মিক বলকে উত্তম প্রকার সিদ্ধ করুক এবং অবিদ্যা কুশিক্ষা নিন্দিত স্বভাবযুক্ত রোগের সর্ব প্রকার হনন করুক ॥ ২ ॥

মশকানিত্যস্য প্রজাপতির্ঋষিঃ । ইন্দ্রাদয়ো দেবতাঃ । ভুরিক্কৃতিশ্ছন্দঃ । নিষাদঃ স্বরঃ ॥

শকা॒ন্ কেশৈ॒রিন্দ্র॒ᳬস্বপ॑সা॒ বহে॑ন॒ বৃহ॒স্পতি॑ꣳশকুনিসা॒দেন॑ কূ॒র্ম্মাঞ্ছ॒ফৈরা॒ক্রম॑ণᳬস্থূ॒রাভ্যা॑মৃ॒ক্ষলা॑ভিঃ ক॒পিঞ্জ॑লাঞ্জ॒বং জঙ্ঘা॑ভ্যা॒মধ্বা॑নং বা॒হুভ্যাং॒ জাম্বী॑লে॒নার॑ণ্যম॒গ্নিম॑তি॒রুগ্ভ্যাং॑ পূ॒ষণং॑ দো॒র্ভ্যাম॒শ্বিনা॒বꣳসা॑ভ্যাᳬরু॒দ্রꣳ রোরা॑ভ্যাম্ ॥ ৩ ॥


পদার্থঃ–হে মনুষ্যগণ! তোমরা (কেশৈঃ) শিরের কেশ দ্বারা (ইন্দ্রম্) ঐশ্বর্য্যকে (শকুনিসাদেন) যদ্দ্বারা পক্ষিকুলকে স্থির করায় সেই ব্যবহার দ্বারা (কূর্মান্) কচ্ছপ এবং (মশকান্) মশককে (স্বপসা) উত্তম কর্ম এবং (বহেন) প্রাপ্তি করানোর দ্বারা (বৃহস্পতিম্) বৃহৎ বাণীর স্বামী বিদ্বান্কে (স্থূরাভ্যাম্) স্থূল (ঋক্ষলাভিঃ) চলন এবং গ্রহণ করা আদি ক্রিয়াগুলির দ্বারা (কপিঞ্জলান্) কপিঞ্জল নামক পক্ষীদেরকে (জঙ্ঘাভ্যাম্) জঙ্ঘাগুলির দ্বারা (অধ্বানম্) মার্গ এবং (জবম্) বেগকে (অংসাভ্যাম্) ভুজদের মূল অর্থাৎ বগল (বাহুভ্যাম্) ভুজগুলি এবং (শফৈঃ) ক্ষুরগুলির দ্বারা (আক্রমণম্) আক্রমণকে (জাম্বীলেন) জামাদি ফল দ্বারা (অরণ্যম্) বন এবং (অগ্নিম্) অগ্নিকে (অতিরুগ্ভ্যাম্) অতীব রুচি প্রীতি ও ইচ্ছা দ্বারা (পূষণম্) পুষ্টিকে তথা (দোর্ভ্যাম্) ভুজদণ্ড দ্বারা (অশ্বিনৌ) প্রজা ও রাজাকে প্রাপ্ত হও এবং (রোরাভ্যাম্) কথন শ্রবণ দ্বারা (রুদ্রম্) রোদন করায় যে তাহাকে প্রাপ্ত হও ॥ ৩ ॥

ভাবার্থঃ–মনুষ্যদিগের উচিত যে, বহু উপায় দ্বারা উত্তম গুণগুলির প্রাপ্তি ও বিঘ্নকে নিবারণ করুক ॥ ৩ ॥

অগ্নেরিত্যস্য প্রজাপতির্ঋষিঃ । অগ্ন্যাদয়ো দেবতাঃ । স্বরাড্ধৃতিশ্ছন্দঃ । ঋষভঃ স্বরঃ ॥

অ॒গ্নেঃ প॑ক্ষ॒তির্বা॒য়োর্নিপ॑ক্ষতি॒রিন্দ্র॑স্য তৃ॒তীয়া॒ সোম॑স্য চতু॒র্থ্যদি॑ত্যৈ পঞ্চ॒মীন্দ্রা॒ণ্যৈ ষ॒ষ্ঠী ম॒রুতা॑ᳬসপ্ত॒মী বৃহ॒স্পতে॑রষ্ট॒ম্য᳖র্য়॒ম্ণো ন॑ব॒মী ধা॒তুর্দ॑শ॒মীন্দ্র॑স্যৈকাদ॒শী বর॑ুণস্য দ্বাদ॒শী য়॒মস্য॑ ত্রয়োদ॒শী ॥ ৪ ॥

পদার্থঃ–হে মনুষ্যগণ! (অগ্নেঃ) অগ্নির (পক্ষতিঃ) সব দিক দিয়া গ্রহণীয় ব্যবহারের মূল (বায়োঃ) পবনের (নিপক্ষতিঃ) নিশ্চিত বিষয়ের মূল (ইন্দ্রস্য) সূর্য্যের (তৃতীয়া) তিনকে পূরণ করিবার ক্রিয়া (সোমস্য) চন্দ্রমার (চতুর্থী) চারিকে পূরণকারিণী (অদিত্যৈ) অন্তরিক্ষের (পঞ্চমী) পঞ্চমী (ইন্দ্রানৈ) স্ত্রীর সমান বর্ত্তমান যাহা বিদ্যুৎরূপ অগ্নিশিখা তাহাকে (ষষ্ঠী) ষষ্ঠী (মরুতাম্) পবনদেরকে (সপ্তমী) সপ্তমী (বৃহস্পতেঃ) বৃহতের পালক মহত্তত্ত্বের (অষ্টমী) অষ্টমী (অর্য়ম্ণঃ) স্বামীদের সৎকারকারীদের (নবমী) নবমী (ধাতুঃ) ধারণকারীর (দশমী) দশমী (ইন্দ্রস্য) ঐশ্বর্য্যবানের (একাদশী) একাদশী (বরুণস্য) শ্রেষ্ঠ পুরুষের (দ্বাদশী) দ্বাদশী এবং (য়মস্য) ন্যায়াধীশ রাজার (ত্রয়োদশী) ত্রয়োদশী ক্রিয়া তোমাকে করা উচিত ॥ ৪ ॥

ভাবার্থঃ–হে মনুষ্যগণ! তোমাকে ক্রিয়ার বিশেষ জ্ঞান ও সাধন দ্বারা অগ্নি আদি পদার্থগুলির গুণকে জানিয়া সর্ব কার্য্য সাধন করা উচিত ॥ ৪ ॥

ইন্দ্রাগ্ন্যোরিত্যস্য প্রজাপতির্ঋষিঃ । ইন্দ্রাদয়ো দেবতাঃ । স্বরাড্বিকৃতিশ্ছন্দঃ । মধ্যমঃ স্বরঃ ॥

ই॒ন্দ্রা॒গ্ন্যোঃ প॑ক্ষ॒তিঃ সর॑স্বত্যৈ॒ নিপ॑ক্ষতির্মি॒ত্রস্য॑ তৃ॒তীয়া॒ऽপাং চ॑তু॒র্থী নির্ঋ॑ত্যৈ পঞ্চ॒ম্য᳕গ্নীষোম॑য়োঃ ষ॒ষ্ঠী স॒র্পাণা॑ᳬসপ্ত॒মী বিষ্ণো॑রষ্ট॒মী পূ॒ষ্ণো ন॑ব॒মী ত্বষ্টু॑র্দশ॒মীন্দ্র॑স্যৈকাদ॒শী বর॑ুণস্য দ্বাদ॒শী য়॒ম্যৈ ত্র॑য়োদ॒শী দ্যাবা॑পৃথি॒ব্যোর্দক্ষি॑ণং পা॒র্শ্বং বিশ্বে॑ষাং দে॒বানা॒মুত্ত॑রম্ ॥ ৫ ॥


পদার্থঃ–হে মনুষ্যগণ! যে (ইন্দ্রাগ্ন্যোঃ) পবন ও অগ্নির (পক্ষতিঃ) সব দিক দিয়া গ্রহণীয় ব্যবহারের মূল প্রথমা (সরস্বত্যৈ) বাণীর জন্য (নিপক্ষতিঃ) নিশ্চিত পক্ষের মূল দ্বিতীয়া (মিত্রস্য) মিত্রের (তৃতীয়া) তৃতীয়া (অপাং) জলের (চতুর্থী) চতুর্থী (নিরৃত্যৈ) ভূমির (পঞ্চমী) পঞ্চমী (অগ্নিষোময়োঃ) শীতোষ্ণকারক অগ্নি তথা জলের (ষষ্ঠী) ষষ্ঠী (সর্পাণাম্) সর্পদিগের (সপ্তমী) সপ্তমী (বিষ্ণোঃ) ব্যাপক ঈশ্বরের (অষ্টমী) অষ্টমী (পূষ্ণঃ) পোষকের (নবমী) নবমী (ত্বষ্টুঃ) প্রদীপ্তের (দশমী) দশমী (ইন্দ্রস্য) জীবের (একাদশী) একাদশী (বরুণস্য) শ্রেষ্ঠ জনের (দ্বাদশী) দ্বাদশী এবং (য়ম্যৈ) ন্যায়কারীর স্ত্রীর জন্য (ত্রয়োদশী) ত্রয়োদশী ক্রিয়া সেই সকলকে তথা (দ্যাবাপৃথিব্যোঃ) প্রকাশ ও ভূমির (দক্ষিণম্) দক্ষিণ (পার্শ্বম্) দিকে এবং (বিশ্বেষাম্) সব (দেবানাম্) বিদ্বান্দিগের (উত্তরম্) উত্তর দিককে তোমরা জানিয়া লও ॥ ৫ ॥

ভাবার্থঃ–মনুষ্যদিগের উচিত যে, এই সব উক্ত পদার্থগুলির বিশেষ জ্ঞানের জন্য অনেক ক্রিয়াগুলি করিয়া নিজ নিজ কর্ম্মকে সিদ্ধ করুক ॥ ৫ ॥

মরুতামিত্যস্য প্রজাপতির্ঋষিঃ । মরুতাদয়ো দেবতাঃ । নিচৃদতিধৃতিশ্ছন্দঃ । ষড্জঃ স্বরঃ ॥

ম॒রুতা॑ᳬস্ক॒ন্ধা বিশ্বে॑ষাং দে॒বানাং॑ প্রথ॒মা কীক॑সা রু॒দ্রাণাং॑ দ্বি॒তীয়া॑ऽऽদি॒ত্যানাং॑ তৃ॒তীয়া॑ বা॒য়োঃ পুচ্ছ॑ম॒গ্নীষোম॑য়ো॒র্ভাস॑দৌ॒ ক্রুঞ্চৌ॒ শ্রোণি॑ভ্যা॒মিন্দ্রা॒বৃহ॒স্পতী॑ऽঊ॒রুভ্যাং॑ মি॒ত্রাবর॑ুণাব॒ল্গাভ্যা॑মা॒ক্রম॑ণᳬস্থূ॒রাভ্যাং॒ বলং॒ কুষ্ঠা॑ভ্যাম্ ॥ ৬ ॥


পদার্থঃ–হে মনুষ্যগণ! (মরুতাম্) মনুষ্যদিগের (স্কন্ধাঃ) স্কন্ধ (বিশ্বেষাম্) সকল (দেবানাম্) বিদ্বান্দিগের (প্রথমা) প্রথম ক্রিয়া এবং (কীকসা) নিরন্তর শাসনগুলি (রুদ্রাণাম্) রুদ্র বিদ্বান্দিগের (দ্বিতীয়া) দ্বিতীয় তাড়নরূপ ক্রিয়া (আদিত্যানাম্) অখণ্ডিত ন্যায়কারী বিদ্বান্দিগের (তৃতীয়া) তৃতীয় ন্যায়ক্রিয়া (বায়োঃ) পবন সম্পর্কীয় (পুচ্ছম্) পশুপুচ্ছ অর্থাৎ যদ্দ্বারা পশু নিজের শরীরকে বায়ু দেয় (অগ্নীষোময়োঃ) অগ্নি ও জল সম্পর্কীয় (ভাসদৌ) যাহারা প্রকাশকে দিবে উহারা (ক্রুঞ্চৌ) কোন বিশেষ পক্ষী বা সারস (শ্রোণিভ্যাম্) কটি প্রদেশ দ্বারা (ইন্দ্রাবৃহস্পতী) পবন ও সূর্য্য (ঊরুভ্যাম্) ঊরু দ্বারা (মিত্রাবরুণৌ) প্রাণ ও উদান (অল্াভ্যাম্) পরিপূর্ণ গমনরত প্রাণীদের দ্বারা (আক্রমণম্) চলন তথা (কুষ্ঠাভ্যাম্) নিষ্কর্ষ এবং (স্থূরাভ্যাং) স্থূল পদার্থ দ্বারা (বলম্) বলকে তোমাকে সিদ্ধ করা উচিত ॥ ৬ ॥

ভাবার্থঃ–মনুষ্যদিগকে বাহুসকলে বল, নিজের অঙ্গের পুষ্টি, দুষ্টদিগকে তাড়না এবং ন্যায়ের প্রকাশাদি কর্ম্ম সর্বদা করা উচিত ॥ ৬ ॥

পূষণমিত্যস্য প্রজাপতির্ঋষিঃ । পূষাদয়ো দেবতাঃ । নিচৃদষ্টিশ্ছন্দঃ । মধ্যমঃ স্বরঃ ॥

পূ॒ষণং॑ বনি॒ষ্ঠুনা॑ন্ধা॒হীন্ৎস্থূ॑লগু॒দয়া॑ স॒র্পান্ গুদা॑ভির্বি॒হ্রুত॑ऽআ॒ন্ত্রৈর॒পো ব॒স্তিনা॒ বৃষ॑ণমা॒ণ্ডাভ্যাং॒ বাজি॑ন॒ꣳ শেপে॑ন প্র॒জাᳬরেত॑সা॒ চাষা॑ন্ পি॒ত্তেন॑ প্রদ॒রান্ পা॒য়ুনা॑ কূ॒শ্মাঞ্ছ॑কপি॒ণ্ডৈঃ ॥ ৭ ॥


পদার্থঃ–হে মনুষ্যগণ! তোমরা (বনিষ্ঠুনা) যাঞ্চা করিয়া (পূষণম্) পুষ্টিকারীকে (স্থূলগুদয়া) স্থূল গুদেন্দ্রিয়ের সঙ্গে বর্ত্তমান (অন্ধাহীন) অন্ধ সর্পগুলিকে (গুদাভিঃ) গুদেন্দ্রিয় সহ বর্ত্তমান (বিহ্রুতঃ) বিশেষ কুটিল (সর্পান্) সর্পগুলিকে (আন্ত্রৈঃ) অন্ত্র দ্বারা (অপঃ) জলকে (বস্তিনা) নাভির নিম্নভাগ দ্বারা (বৃষণম্) অণ্ডকোষকে (আণ্ডাভ্যাম্) অণ্ডাকার বৃষণ অবয়ব দ্বারা (বাজিনম্) অশ্বকে (শেপেন) লিঙ্গ ও (রেতস্য) বীর্য্য দ্বারা (প্রজাম্) সন্তানকে (পিত্তেন) পিত্ত দ্বারা (চাষান্) ভোজনকে (প্রদরান্) পেটের অঙ্গ সকলকে (পায়ুনা) গুদেন্দ্রিয় দ্বারা এবং (শকপিন্ডৈঃ) শক্তিগুলির দ্বারা (কূশ্মান্) তোমরা শাসনকে নিরন্তর গ্রহণ কর ॥ ৭ ॥

সংস্কৃতে মহর্ষি দয়ানন্দকৃত পদার্থঃ

पदार्थः (पूषणम्) पुष्टिकरम् (वनिष्ठुना) याचनेन (अन्धाहीन्) अन्धान् सर्पान् (स्थूलगुदया) स्थूलया गुदया सह (सर्पान्) (गुदाभिः) (विह्रुतः) विशेषेण कुटिलान् (आन्त्रैः) उदरस्थैर्नाडीविशेषैः (अपः) जलानि (वस्तिना) नाभेरधोभागेन (वृषणम्) वीर्याधारम् (आण्डाभ्याम्) अण्डाकाराभ्यां वृषणावयवाभ्याम् (वाजिनम्) अश्वम् (शेपेन) लिङ्गेन (प्रजाम्) सन्ततिम् (रेतसा) वीर्येण (चाषान्) भक्षणानि (पित्तेन) (प्रदरान्) उदरावयवान् (पायुना) एतदिन्द्रियेण (कूश्मान्) शासनानि। अत्र कशधातोर्मक्प्रत्ययोऽन्येषामपीति दीर्घश्च। (शकपिण्डैः) शक्तैः संघातैः॥७॥


ভাবার্থঃ–যাহার দ্বারা যে কর্ম্ম সিদ্ধ হয় সেই অঙ্গ বা পদার্থ দ্বারা সেই কর্ম্ম সিদ্ধ করা উচিত ॥ ৭ ॥

পুনঃ কস্য কস্য গুণাঃ পশুষু সন্তীত্যাহ ॥
পুনঃ কাহার কাহার গুণ পশুদের মধ্যে আছে এই বিষয়কে পরবর্ত্তী মন্ত্রে বলা হইয়াছে ॥

ইন্দ্রস্যেত্যস্য প্রজাপতির্ঋষিঃ । ইন্দ্রাদয়ো দেবতাঃ । নিচৃদভিকৃতিশ্ছন্দঃ । ঋষভঃ স্বরঃ ॥

ইন্দ্র॑স্য ক্রো॒ডোऽদি॑ত্যৈ পাজ॒স্যং᳖ দি॒শাং জ॒ত্রবোऽদি॑ত্যৈ ভ॒সজ্জী॒মূতা॑ন্ হৃদয়ৌপ॒শেনা॒ন্তরি॑ক্ষং পুরী॒ততা॒ নভ॑ऽউদ॒র্য়ে᳖ণ চক্রবা॒কৌ মত॑স্নাভ্যাং॒ দিবং॑ বৃ॒ক্কাভ্যাং॑ গি॒রীন্ প্লা॒শিভি॒রুপ॑লান্ প্লী॒হ্না ব॒ল্মীকা॑ন্ ক্লো॒মভি॑র্গ্লৌ॒ভির্গুল্মা॑ন্ হি॒রাভিঃ॒ স্রব॑ন্তীর্হ্র॒দান্ কু॒ক্ষিভ্যা॑ᳬসমু॒দ্রমু॒দরে॑ণ বৈশ্বান॒রং ভস্ম॑না ॥ ৮ ॥

পদার্থঃ–হে মনুষ্যগণ! তোমাকে উত্তম যত্ন সহ (ইন্দ্রস্য) বিদ্যুতের (ক্রোডঃ) নিমজ্জন (অদিত্যৈ) পৃথিবীর জন্য (পাজস্যম্) অন্নদের মধ্যে যাহা উত্তম সেই (দিশাম্) দিশাগুলিকে (জত্রবঃ) সন্ধি অর্থাৎ তাহাদের একে অপরের সহিত মিলন (অদিত্যৈ) অখণ্ডিত প্রকাশ হেতু (ভসৎ) শিখা এই সব পদার্থ জানা উচিত তথা (জীমূতান্) মেঘগুলিকে (হৃদয়োপশেন) যাহা হৃদয়ে শয়ন করে সেই জীব দ্বারা (পুরীততা) হৃদয়স্থ নাড়ী দ্বারা (অন্তরিক্ষম্) হৃদয়ের অবকাশকে (উদর্য়েণ) উদরে হওয়া ব্যবহার দ্বারা (নভঃ) জল ও (চক্রবাকৌ) চক্রবাক্ পক্ষীদের সমান যে পদার্থ তাহাদেরকে (মতস্নাভ্যাম্) গলার উভয় দিকের ভাগ দ্বারা (দিবম) প্রকাশকে (বৃক্কাভ্যাম্) যে ক্রিয়াগুলির দ্বারা অবগুণের ত্যাগ হয় তদ্দ্বারা (গিরীন্) পর্বতগুলিকে (প্লাশিভিঃ) উত্তম ভোজনাদি ক্রিয়াগুলির দ্বারা (উপলান্) অন্য প্রকার মেঘসমূহকে (প্লীহ্না) হৃদয়স্থ প্লীহা অঙ্গ দ্বারা (বল্মীকান্) মার্গসকলকে (ক্লোমভিঃ) আর্দ্রতা এবং (গ্লোভিঃ) হর্ষ তথা গ্লানির দ্বারা (গুল্মান্) দক্ষিণ দিকে উদরে স্থিত যে পদার্থ উহাকে (হিরাভিঃ) বৃদ্ধি দ্বারা (স্রবন্তীঃ) নদী সকলকে (হ্রদান্) ক্ষুদ্র বৃহৎ জলাশয়কে (কুক্ষিভ্যাম্) কুক্ষি দ্বারা (সমুদ্রম্) উত্তম প্রকারে যেখানে জল গমন করে সেই সমুদ্রকে (উদরেণ) পেট এবং (ভস্মনা) দগ্ধ হওয়া পদার্থের যে শেষভাগ সেই ভস্ম হইতে (বৈশ্বানরম্) সকলের প্রকাশক অগ্নিকে তোমরা জানো ॥ ৮ ॥

ভাবার্থঃ–যে সব মনুষ্য বহু বিদ্যাবোধ প্রাপ্ত হইয়া সঠিক যথোচিত আহার ও বিহার দ্বারা সকল অঙ্গকে উত্তম প্রকার পুষ্ট করিয়া রোগের নিবৃত্তি করিবে তাহা হইলে তাহারা ধর্ম, অর্থ, কাম ও মোক্ষকে উত্তম প্রকার প্রাপ্ত হইবে ॥ ৮ ॥

পুনঃ কাহার দ্বারা কী হয়, এই বিষয়কে পরবর্ত্তী মন্ত্রে বলা হইয়াছে ॥

বিধৃতিমিত্যস্য প্রজাপতির্ঋষিঃ । পূষাদয়ো দেবতাঃ । ভুরিগত্যষ্টিশ্ছন্দঃ । গান্ধারঃ স্বরঃ ॥

বিধৃ॑তিং॒ নাভ্যা॑ ঘৃ॒তꣳরসে॑না॒পো য়ূ॒ষ্ণা মরী॑চীর্বি॒প্রুড্ভি॑র্নীহা॒রমূ॒ষ্মণা॑ শী॒নং বস॑য়া॒ প্রুষ্বা॒ऽ অশ্রু॑ভির্হ্রা॒দুনী॑র্দূ॒ষীকা॑ভির॒স্না রক্ষা॑ᳬসি চি॒ত্রাণ্যঙ্গৈ॒র্নক্ষ॑ত্রাণি রূ॒পেণ॑ পৃথি॒বীং ত্ব॒চা জু॑ম্ব॒কায়॒ স্বাহা॑ ॥ ঌ ॥


পদার্থঃ–হে মনুষ্যগণ! তোমরা (নাভ্যা) নাভি দ্বারা (বিধৃতিং) বিশেষ করিয়া ধারণকে (ঘৃতম্) ঘৃতকে (রসেন) রস দ্বারা (অপঃ) জলকে (য়ূষ্ণা) ক্বাথের রস দ্বারা (মরীচীঃ) কিরণগুলিকে (বিপ্রুড্ভিঃ) বিশেষ করিয়া পূরণ পদার্থ দ্বারা (নীহারম্) শিশিরকে (ঊষ্মণা) উষ্ণতা দ্বারা (শীনম্) ঘনীভূত ঘৃতকে (বসয়া) নিবাস হেতু জীবন দ্বারা (প্রুষ্বাঃ) যদ্দ্বারা সিঞ্চন করে সেই ক্রিয়াগুলিকে (অশ্রুভিঃ) অশ্রু দ্বারা (হ্রাদুনীঃ) শব্দের অপ্রকট উচ্চারণ ক্রিয়াসকলকে (দূষিকাভিঃ) বিকাররূপ ক্রিয়াগুলির দ্বারা (চিত্রাণি) চিত্র-বিচিত্র (রক্ষাংসি) পালন করিবার যোগ্য (অস্না) রুধিরাদি পদার্থকে (অঙ্গৈঃ) অঙ্গ এবং (রূপেণ) রূপ দ্বারা (নক্ষত্রাণি) তারাসকলকে এবং (ত্বচা) মাংস, রুধিরাদিকে আচ্ছাদনকারী চর্মাদি দ্বারা (পৃথিবীম্) পৃথিবীকে জানিয়া (জুম্বকায়) অতিবেগবানের জন্য (স্বাহা) সত্য বাণীর প্রয়োগ অর্থাৎ উচ্চারণ কর ॥ ঌ ॥

ভাবার্থঃ–মনুষ্যদিগকে ধারণাদি ক্রিয়াগুলির দ্বারা দুর্ব্যসন এবং রোগের নিবৃত্তি এবং সত্য ভাষণাদি ধর্মের লক্ষণগুলির বিচার করিয়া প্রবৃত্ত করা উচিত ॥ ঌ ॥

হিরণ্যগর্ভ ইত্যস্য প্রজাপতির্ঋষিঃ । হিরণ্যগর্ভো দেবতা । ত্রিষ্টুপ্ ছন্দঃ । ধৈবতঃ স্বরঃ ॥

হি॒র॒ণ্য॒গ॒র্ভঃ সম॑বর্ত্ত॒তাগ্রে॑ ভূ॒তস্য॑ জা॒তঃ পতি॒রেক॑ऽআসীৎ ।

স দা॑ধার পৃথি॒বীং দ্যামু॒তেমাং কস্মৈ॑ দে॒বায়॑ হ॒বিষা॑ বিধেম ॥ ১০ ॥


পদার্থঃ–হে মনুষ্যগণ! যেমন আমরা যে (হিরণ্যগর্ভঃ) সূর্য্যাদি তেজ যুক্ত পদার্থ যাহার ভিতর সে পরমাত্মা (জাতঃ) প্রাদুর্ভূত এবং (ভূতস্য) উৎপন্ন জগতের (একঃ) সহায়হীন এক (অগ্রে) ভূমি আদি সৃষ্টি হইতে প্রথমেও (পতিঃ) পালক (আসীৎ) এবং সকলের প্রকাশক (অবর্ত্তত) বর্ত্তমান (সঃ) সে (পৃথিবীম্) নিজ আকর্ষণ শক্তি বলে পৃথিবী (উত) এবং (দ্যাম) প্রকাশকে (সম্ দাধার) উত্তম প্রকার ধারণ করে তথা যে (ইমাম্) এই সৃষ্টিকে নির্মাণ করিয়া অর্থাৎ যিনি সৃষ্টি করিয়াছেন সেই (কস্মৈ) সুখদায়ক (দেবায়) প্রকাশমান পরমাত্মার জন্য (হবিষা) হোম করিবার যোগ্য পদার্থ দ্বারা (বিধেম) সেবনের বিধান করে সেইরূপ তোমরাও সেবনের বিধান কর ॥ ১০ ॥

ভাবার্থঃ–এই মন্ত্রে বাচকলুপ্তোপমালঙ্কার আছে । হে মনুষ্যগণ! যে পরমাত্মা নিজ সামর্থ্য বলে সূর্য্যাদি সমস্ত জগৎ নির্মাণ করিয়াছেন এবং ধারণ করিয়াছেন তাহারই উপাসনা করিতে থাক ॥ ১০ ॥

য়ঃ প্রাণত ইত্যস্য প্রজাপতির্ঋষিঃ । ঈশ্বরো দেবতা । ত্রিষ্টুপ্ ছন্দঃ । ধৈবতঃ স্বরঃ ॥

য়ঃ প্রা॑ণ॒তো নি॑মিষ॒তো ম॑হি॒ত্বৈক॒ऽইদ্রাজা॒ জগ॑তো ব॒ভূব॑ ।

য় ঈশে॑ऽঅ॒স্য দ্বি॒পদ॒শ্চতু॒॑ষ্পদঃ॒ কস্মৈ॑ দে॒বায়॑ হ॒বিষা॑ বিধেম ॥ ১১ ॥


পদার্থঃ–হে মনুষ্যগণ! যেমন আমরা (য়ঃ) যে সূর্য্য (প্রাণতঃ) শ্বাস গ্রহণকারী প্রাণী এবং (নিমিষতঃ) চেষ্টা করিতে থাকিয়া (জগতঃ) সংসারের (মহিত্বা) মহত্ত্ব দ্বারা (একঃ) সহায়হীন এক (ইৎ) ই (রাজা) প্রকাশক (বভূব) হয় (য়ঃ) তথা যে (অস্য) এই (দ্বিপদঃ) দুই পদ যুক্ত মনুষ্যাদি এবং (চতুষ্পদঃ) চারি পদযুক্ত গাভি আদি পশুরূপ জগতের (ঈশে) প্রকাশ করে সেই (কস্মৈ) সুখদায়ক (দেবায়) প্রকাশক জগদীশ্বরের জন্য (হবিষা) গ্রহণীয় পদার্থ বা ব্যবহারের দ্বারা (বিধেম) সেবন করি সেইরূপ তোমরাও অনুষ্ঠান করিতে থাক ॥ ১১ ॥

ভাবার্থঃ–এই মন্ত্রে বাচকলুপ্তোপমালঙ্কার আছে । সূর্য্য না থাকিলে স্থাবর বৃক্ষাদি এবং জঙ্গম মনুষ্যাদি জগৎ নিজ নিজ কর্ম্ম করিতে সক্ষম হইবে না । যিনি সর্বাপেক্ষা বৃহৎ, সকলের প্রকাশক এবং ঐশ্বর্য্য প্রাপ্তির হেতু সেই ঈশ্বর সকলকে যুক্তি সহ সেবন করিবার যোগ্য ॥ ১১ ॥

য়স্যেত্যস্য প্রজাপতির্ঋষিঃ । ঈশ্বরো দেবতা । স্বরাট্ পংক্তিশ্ছন্দঃ । পঞ্চমঃ স্বরঃ ॥

য়স্যে॒মে হি॒মব॑ন্তো মহি॒ত্বা য়স্য॑ সমু॒দ্রলস॒রয়া॑ স॒হাহুঃ ।

য়স্যে॒মাঃ প্র॒দিশো॒ য়স্য॑ বা॒হূ কস্মৈ॑ দে॒বায়॑ হ॒বিষা॑ বিধেম ॥ ॥ ১২ ॥


পদার্থঃ–হে মনুষ্যগণ! (য়স্য) যে সূর্য্যের (মহিত্বা) মহত্ত্ব দ্বারা (ইমে) এই সব (হিমবন্তঃ) হিমালয়াদি পর্বত আকর্ষিত ও প্রকাশিত (য়স্য) যাহার (সরয়া) স্নেহের (সহ) সহ (সমুদ্রম্) উত্তম প্রকার যাহাতে জল স্থির থাকে সেই অন্তরিক্ষকে (আহুঃ) বলে তথা (য়স্য) যাহার (ইমাঃ) এই দিশা এবং (য়স্য) যাহার (প্রদিশঃ) দিশা-বিদিশাকে (বাহূ) বাহুর সমান বর্ত্তমান বলে সেই (কস্মৈ) সুখরূপ (দেবায়) মনোহর সূর্য্যমণ্ডলের জন্য (হবিষা) হোম করিবার যোগ্য পদার্থ দ্বারা আমরা (বিধেম) হবনের বিধান করি এইরূপ তোমরাও বিধান কর ॥ ১২ ॥

ভাবার্থঃ–হে মনুষ্যগণ! যিনি সর্ববৃহৎ সকলের প্রকাশক এবং সকল পদার্থ দ্বারা রস গ্রহণকারী যাহার প্রতাপ দ্বারা দিশা ও বিদিশার বিভাগ হয়, সেই সূর্য্যলোক যুক্তি সহ সেবন করিবার যোগ্য ॥ ১২ ॥

য় আত্মদা ইত্যস্য প্রজাপতির্ঋষিঃ । পরমাত্মা দেবতা । নিচৃৎ ত্রিষ্টুপ্ ছন্দঃ । ধৈবতঃ স্বরঃ ॥

য়ऽআ॑ত্ম॒দা ব॑ল॒দা য়স্য॒ বিশ্ব॑ऽউ॒পাস॑তে প্র॒শিষং॒ য়স্য॑ দে॒বাঃ ।

য়স্য॑ ছা॒য়াऽমৃতং॒ য়স্য॑ মৃ॒ত্যুঃ কস্মৈ॑ দে॒বায়॑ হ॒বিষা॑ বিধেম ॥ ১৩ ॥


পদার্থঃ–হে মনুষ্যগণ! (য়ঃ) যে (আত্মদাঃ) আত্মদাতা এবং (বলদাঃ) বলদাতা (য়স্য) যাহার (প্রশিষম্) উত্তম শিক্ষাকে (বিশ্বে) সমস্ত (দেবাঃ) বিদ্বান্গণ (উপাসতে) উপাসনা করেন (য়স্য) যাহার সমীপ হইতে সব ব্যবহার উৎপন্ন হয় (য়স্য) যাহার (ছায়া) আশ্রয় (অমৃতম্) অমৃতস্বরূপ এবং (য়স্য) যাহার আজ্ঞা ভঙ্গ (মৃত্যুঃ) মরণতুল্য সেই (কস্মৈ) সুখরূপ (দেবায়) স্তুতির যোগ্য পরমাত্মার জন্য আমরা (হবিষা) হোম করিবার পদার্থ দ্বারা (বিধেম্) সেবার বিধান করি ॥ ১৩ ॥

ভাবার্থঃ–হে মনুষ্যগণ! যে জগদীশ্বরের উত্তম প্রশাসনে কৃত মর্য্যাদায় সূর্য্যাদি লোক নিয়ম সহ বর্ত্তমান, যে সূর্য্য ব্যতিরেকে জলের বর্ষা এবং অবস্থার নাশ হয় না সেই সবিতৃমণ্ডল যিনি নির্মাণ করিয়াছেন তাহারই উপাসনা সকলে মিলিয়া করি ॥ ১৩ ॥

আ ন ইত্যস্য প্রজাপতির্ঋষিঃ । য়জ্ঞো দেবতা । নিচৃজ্জগতী ছন্দঃ । নিষাদঃ স্বরঃ ॥

আ নো॑ ভ॒দ্রাঃ ক্রত॑বো য়ন্তু বি॒শ্বতোऽদ॑ব্ধাসো॒ऽঅপ॑রীতাসऽউ॒দ্ভিদঃ॑ ।

দে॒বা নো॒ য়থা॒ সদ॒মিদ্ বৃ॒ধেऽঅস॒ন্নপ্রা॑য়ুবো রক্ষি॒তারো॑ দি॒বেদি॑বে ॥ ১৪ ॥


পদার্থঃ–হে মনুষ্যগণ! যেমন (নঃ) আমাদিগকে (বিশ্বতঃ) সকল দিক দিয়া (ভদ্রাঃ) কল্যাণকারীগণ (অদব্ধাসঃ) যাহা বিনাশ প্রাপ্ত হয় নাই (অপরীতাসঃ) অন্যেরা যাহা ব্যাপ্ত করে নাই অর্থাৎ সকল কর্ম্ম হইতে উত্তম (উদ্ভিদঃ) যাহারা দুঃখ বিনাশ করে তাহারা (ক্রতবঃ) যজ্ঞ বা বুদ্ধি বল (আ, য়ন্তু) উত্তম প্রকার প্রাপ্ত হউক (যথা) যেমন (নঃ) আমাদিগের (সদম্) সেই সভাকে যাহাতে স্থিত হয়, প্রাপ্ত হইয়াছে (অপ্রায়ুবঃ) যাহাদের অবস্থা নষ্ট হয় না তাহারা (দেবাঃ) পৃথিবী আদি পদার্থের সমান বিদ্বান ব্যক্তি (ইৎ) ই (দিবে দিবে) প্রতিদিন (বৃধে) বৃদ্ধি হেতু (রক্ষিতারঃ) পালক (অসন্) হউক তদ্রূপ আচরণ কর ॥ ১৪ ॥

ভাবার্থঃ–সকল মনুষ্যদিগকে পরমেশ্বরের বিজ্ঞান এবং বিদ্বান্দিগের সঙ্গ দ্বারা বহু বুদ্ধি প্রাপ্ত হইয়া সকল দিক দিয়া ধর্মের আচরণ করিয়া নিত্য সকলের রক্ষক হওয়া উচিত ॥ ১৪ ॥

দেবানামিত্যস্য প্রজাপতির্ঋষিঃ । বিদ্বাংসো দেবতাঃ । জগতী ছন্দঃ । নিষাদঃ স্বরঃ ॥

দে॒বানাং॑ ভ॒দ্রা সু॑ম॒তির্ঋ॑জূয়॒তাং দে॒বানা॑ᳬরা॒তির॒ভি নো॒ নি ব॑র্ত্ততাম্ ।

দে॒বানা॑ᳬস॒খ্যমুপ॑ সেদিমা ব॒য়ং দে॒বা ন॒ऽআয়ুঃ॒ প্র তি॑রন্তু জী॒বসে॑ ॥ ১৫ ॥


পদার্থঃ–হে মনুষ্যগণ! যেমন (দেবানাম্) বিদ্বান্দিগের (ভদ্রা) কল্যাণকারিণী (সুমতিঃ) উত্তম বুদ্ধি আমাদিগকে এবং (ঋজুয়তাম্) কঠিন বিষয়কে সরল করিয়া (দেবানাম্) দানকারী বিদ্বান্দিগের (রাতিঃ) বিদ্যাদি পদার্থকে দান করা (নঃ) আমাদিগকে (অভি, নি, বর্ত্ততাম্) সব দিক দিয়া সিদ্ধ করুক, সমস্ত গুণে পূর্ণ করুক (বয়ম্) আমরা (দেবানাম্) বিদ্বান্দিগের (সখ্যম্) মিত্রতাকে (উপসেদিম) উত্তম প্রকার প্রাপ্ত হইব (দেবাঃ) বিদ্বান্গণ (নঃ) আমাদেরকে (জীবসে) বাঁচিবার জন্য (আয়ুঃ) যদ্দ্বারা প্রাণের ধারণ হয় সেই আয়ুর্দাকে (প্র, তিরন্তু) পূর্ণ ভোগ করিবে তদ্রূপ তোমাদের প্রতি ব্যবহার রাখুক ॥ ১৫ ॥

ভাবার্থঃ–সকল মনুষ্যদিগের উচিত যে, পূর্ণ শাস্ত্রবেত্তা বিদ্বান্দিগের সমীপ হইতে উত্তম বুদ্ধি লাভ করিয়া ব্রহ্মচর্য্য আশ্রম দ্বারা আয়ু বৃদ্ধি করাইয়া সর্বদা ধার্মিক লোকদের সহিত মিত্রতা রাখিবে ॥ ১৫ ॥

তান্পূর্বয়েত্যস্য প্রজাপতির্ঋষিঃ । বিশ্বেদেবা দেবতাঃ । জগতী ছন্দঃ । নিষাদঃ স্বরঃ ॥

তান্ পূর্ব॑য়া নি॒বিদা॑ হূমহে ব॒য়ং ভগং॑ মি॒ত্রমদি॑তিং॒ দক্ষ॑ম॒স্রিধ॑ম্ ।

অ॒র্য়॒মণং॒ বর॑ুণ॒ꣳ সোম॑ম॒শ্বিনা॒ সর॑স্বতী নঃ সু॒ভগা॒ ময়॑স্করৎ ॥ ১৬ ॥


পদার্থঃ–হে মনুষ্যগণ! যেমন (বয়ম্) আমরা (পূর্বয়া) পূর্ব স্বীকৃত (নিবিদা) বেদবাণী দ্বারা (দক্ষম্) দক্ষ (অর্য়মণম্) প্রজাপালক (অস্রিধম্) বিনাশ না করিবার যোগ্য (ভগম্) ঐশ্বর্য্যকারক (মিত্রম্) সকলের মিত্র (অদিতিম্) যাহার বুদ্ধি অখণ্ডিত সেই (বরুণম্) শ্রেষ্ঠ (সোমম্) ঐশ্বর্য্যবান্ তথা (অশ্বিনা) অধ্যাপক-উপদেশককে (হূমহে) পরস্পর স্পর্দ্ধা করিয়া কামনা করি । যেমন (সুভগা) সুন্দর ঐশ্বর্য্যবতী (সরস্বতী) সমস্ত বিদ্যা সমূহের দ্বারা পূর্ণ বেদবাণী (নঃ) আমাদের এবং তোমাদের জন্য (ময়ঃ) সুখকে (করৎ) করিবে তদ্রূপ (তান্) সেই সব উক্ত সজ্জনদিগকে তোমরাও কামনা কর ও সুখ কর ॥ ১৬ ॥

ভাবার্থঃ–এই মন্ত্রে বাচকলুপ্তোপমালঙ্কার আছে । মনুষ্যদিগের উচিত যাহা যাহা বেদোক্ত কর্ম্ম তাহার তাহারই অনুষ্ঠান করিবে । যেমন উত্তম বিদ্যার্থী অপরের সহিত প্রতিদ্বন্দিতা করিয়া বিদ্যার বৃদ্ধি করে সেইরূপ সকলকে বিদ্যা বৃদ্ধি করা উচিত । যেমন পরিপূর্ণ বিদ্যাযুক্ত মাতা নিজ সন্তানগণকে উত্তম শিক্ষা দিয়া, বিদ্যাসকলকে প্রাপ্ত করাইয়া, তাহাদের বিদ্যা বৃদ্ধি করে তদ্রূপ সকলকে সকলের জন্য সুখ প্রদান করিয়া সকলের বৃদ্ধি করা উচিত ॥ ১৬ ॥

কে কী করিবে এইবিষয়কে পরবর্ত্তী মন্ত্রে বলা হইয়াছে ॥

তন্ন ইত্যস্য গোতম ঋষিঃ । বায়ুর্দেবতা । ভুরিক্ ত্রিষ্টুপ্ ছন্দঃ । ধৈবতঃ স্বরঃ ॥

তন্নো॒ বাতো॑ ময়ো॒ভু বা॑তু ভেষ॒জং তন্মা॒তা পৃ॑থি॒বী তৎপি॒তা দ্যৌঃ ।

তদ্গ্রাবা॑ণঃ সোম॒সুতো॑ ময়ো॒ভুব॒স্তদ॑শ্বিনা শৃণুতং ধিষ্ণ্যা য়ু॒বম্ ॥ ১৭ ॥


পদার্থঃ–হে (অশ্বিনা) অধ্যাপক ও উপদেশকগণ! (ধিষ্ণ্যা) ভূমি সমান ধারকগণ (য়ুবম্) তোমরা উভয়ে আমরা যাহা পড়িয়াছি তাহাকে (শৃনুতম্) শ্রবণ কর যেমন (নঃ) আমাদিগের জন্য (বাতঃ) পবন (তৎ) সেই (ময়োভু) সুখদায়ক (ভেষজম্) ওষধির (বাতু) প্রাপ্তি করুক্ (তৎ) সেই ওষধিকে (মাতা) মান্য দাত্রী (পৃথিবী) বিস্তারযুক্ত ভূমি তথা (তৎ) তাহাকে (পিতা) পালনের হেতু (দ্যৌঃ) সূর্য্যমণ্ডল প্রাপ্ত করে তথা (তৎ) তাহাকে (সোমসুতঃ) ঔষধি ও ঐশ্বর্য্যকে উৎপন্ন করিবার এবং (ময়োভুবঃ) সুখের ভাবনাকারক (গ্রাবাণঃ) মেঘ প্রাপ্ত করে (তৎ) এই সমস্ত ব্যবহার তোমাদের জন্যও হউক ॥ ১৭ ॥

ভাবার্থঃ–যাহার পৃথিবীর সমান মাতা এবং সূর্য্যের সমান পিতা হয় সে সব দিক দিয়া কুশলী সুখী হইয়া সকলকে নীরোগ ও চতুর করে ॥ ১৭ ॥

ঈশ্বর কেমন এবং কীজন্য উপাসনার যোগ্য এইবিষয়কে পরবর্ত্তী মন্ত্রে বলা হইয়াছে ॥

তমীশানমিত্যস্য গোতম ঋষিঃ । ঈশ্বরো দেবতা । নিচৃজ্জগতী ছন্দঃ । নিষাদঃ স্বরঃ ॥

তমীশা॑নং॒ জগ॑তস্ত॒স্থুষ॒স্পতিং॑ ধিয়ঞ্জি॒ন্বমব॑সে হূমহে ব॒য়ম্ ।

পূ॒ষা নো॒ য়থা॒ বেদ॑সা॒মস॑দ্ বৃ॒ধে র॑ক্ষি॒তা পা॒য়ুরদ॑ব্ধঃ স্ব॒স্তয়ে॑ ॥ ১৮ ॥


পদার্থঃ–হে মনুষ্যগণ! (বয়ম্) আমরা (অবসে) রক্ষাদির জন্য (জগতঃ) চর ও (তস্থুষঃ) অচর জগতের (পতিম্) রক্ষক (ধিয়ংজিন্বম্) বুদ্ধিকে তৃপ্ত প্রসন্ন বা শুদ্ধকারী (তম্) সেই অখণ্ড (ঈশানম্) সকলকে বশে রাখে এমন সকলের স্বামী পরমাত্মার (হূমহে) স্তুতি করি তিনি (য়থা) যেমন (নঃ) আমাদের (বেদসাম্) ধন সমূহের (বৃধে) বৃদ্ধি হেতু (পূষা) পুষ্টিকর্ত্তা তথা (রক্ষিতা) রক্ষক (স্বস্তয়ৈ) সুখের জন্য (পায়ুঃ) সকলের রক্ষক (অদব্ধঃ) অহিংসক (অসৎ) হইবেন তদ্রূপ তোমরাও তাঁহার স্তুতি কর এবং তিনি তোমাদের জন্যও রক্ষাদি করিবেন ॥ ১৮ ॥

ভাবার্থঃ–সব বিদ্বান্গণ সকল মনুষ্যদিগের প্রতি এমন উপদেশ করিবেন যে, যে সর্বশক্তিমান নিরাকার সর্বত্র ব্যাপক পরমেশ্বরের উপাসনা আমরা করি তথা তাহাকে সুখ ও ঐশ্বর্য্যের বৃদ্ধিকারী জানি, তাহারই উপাসনা তোমরাও কর এবং তাহাকেই সকলের উন্নতিকারী জানিবে ॥ ১৮ ॥

 মনুষ্যদিগকে কাহার ইচ্ছা করা উচিত এই বিষয়কে পরবর্ত্তী মন্ত্রে বলা হইয়াছে ॥

স্বস্তি ন ইত্যস্য গোতম ঋষিঃ । ঈশ্বরো দেবতা । স্বরাড্বৃহতী ছন্দঃ । মধ্যমঃ স্বরঃ ॥

স্ব॒স্তি ন॒ऽইন্দ্রো॑ বৃ॒দ্ধশ্র॑বাঃ স্ব॒স্তি নঃ॑ পূ॒ষা বি॒শ্ববে॑দাঃ ।

স্ব॒স্তি ন॒স্তার্ক্ষ্যো॒ऽঅরি॑ষ্টনেমিঃ স্ব॒স্তি নো॒ বৃহ॒স্পতি॑র্দধাতু ॥ ১ঌ ॥


পদার্থঃ–হে মনুষ্যগণ! যিনি (বৃদ্ধশ্রবাঃ) বহু শ্রবণকারী (ইন্দ্রঃ) পরম ঐশ্বর্য্যবান্ ঈশ্বর (নঃ) আমাদের জন্য (স্বস্তি) উত্তম সুখ যাহা (বিশ্ববেদাঃ) সমস্ত জগতে বেদই যাহার ধন তিনি (পূষা) সকলের পুষ্টিদাতা (নঃ) আমাদিগের জন্য (স্বস্তি) সুখ যাহা (তাক্ষ্যৈঃ) অশ্বের সমান (অরিষ্টনেমিঃ) [নিঘ০ ১।১৪] সুখকে প্রাপ্ত করাইয়া (নঃ) আমাদিগের জন্য (স্বস্তি) উত্তম সুখ তথা যিনি (বৃহস্পতিঃ) মহতত্ত্বাদির স্বামী অথবা পালনকারী পরমেশ্বর (নঃ) আমাদের জন্য (স্বস্তি) উত্তম সুখকে (দধাতু) ধারণ করিবেন ॥ ১ঌ ॥

ভাবার্থঃ–মনুষ্যদিগের উচিত যে, যেমন নিজের সুখ চাহিবে তদ্রূপ অন্যদের জন্যও চাহিবে । যেমন কেহই নিজের জন্য দুঃখ চায় না তদ্রূপ অন্যদের জন্যও চাহিবে না ॥ ১ঌ ॥

পৃষদশ্বা ইত্যস্য গোতম ঋষিঃ । বিদ্বাংসো দেবতাঃ । জগতী ছন্দঃ । নিষাদঃ স্বরঃ ॥

পৃষ॑দশ্বা ম॒রুতঃ॒ পৃশ্নি॑মাতরঃ শুভং॒ য়াবা॑নো বি॒দথে॑ষু জগ্ম॑য়ঃ ।

অ॒গ্নি॒জি॒হ্বা মন॑বঃ॒ সূর॑চক্ষসো॒ বিশ্বে॑ নো দে॒বাऽঅব॒সাऽऽऽগ॑মন্নি॒হ ॥ ২০ ॥


পদার্থঃ–(পৃশ্নিমাতরঃ) যাহাদের মান্যদাতা অন্তরিক্ষ মাতার তুল্য সেই বায়ুসমূহের সমান (পৃষদশ্বাঃ) যাহাদের পুষ্টি আদি দ্বারা সিঞ্চিত অঙ্গযুক্ত অশ্ব, তাহারা (মরুতঃ) মনুষ্য তথা (বিদথেষু) সংগ্রামগুলিতে (শুভংয়াবানঃ) যাহারা উত্তম সুখ প্রাপ্ত হয় এবং (জগ্ময়ঃ) সঙ্গকারী (অগ্নিজিহ্বাঃ) [নিঘ০ ১।১১] যাহাদের অগ্নি সমান প্রকাশিত বাণী এবং (সূরচক্ষসঃ) যাহাদের ঐশ্বর্য্য বা প্রেরণায় দর্শন হয় এমন (বিশ্বে) সমস্ত (দেবাঃ) বিদ্বান্ (মনবঃ) ব্যক্তিসকল (অবসা) রক্ষাদি সহ বর্ত্তমান তাহারা (ইহ) এই সংসার বা এই সময়ে (নঃ) আমাদেরকে (মা, অগমন্) প্রাপ্ত হউন ॥ ২০ ॥

ভাবার্থঃ–এই মন্ত্রে বাচকলুপ্তোপমালঙ্কার আছে । মনুষ্যদিগকে বিদ্বান্দিগের সঙ্গ সর্বত্র প্রার্থনা করিবার যোগ্য । যেমন জগতে সব বায়ু আদি পদার্থ সব মনুষ্যদিগকে অথবা প্রাণীদের জীবনের হেতু তদ্রূপ এই জগতে চেতনাদের মধ্যে বিদ্বান্ আছে ॥ ২০ ॥

ভদ্রমিত্যস্য গোতম ঋষিঃ । বিদ্বাংসো দেবতাঃ । নিচৃৎ ত্রিষ্টুপ্ ছন্দঃ । ধৈবতঃ স্বরঃ ॥

ভ॒দ্রং কর্ণে॑ভিঃ শৃণুয়াম দেবা ভ॒দ্রং প॑শ্যেমা॒ক্ষভি॑র্য়জত্রাঃ ।

স্থি॒রৈরঙ্গৈ॑স্তুষ্টু॒বাᳬস॑স্ত॒নূভি॒র্ব্য᳖শেমহি দে॒বহি॑তং॒ য়দায়ুঃ॑ ॥ ২১ ॥


পদার্থঃ–হে (য়জত্রাঃ) সঙ্গদাতা (দেবাঃ) বিদ্বান্গণ! আপনাদের সঙ্গ দ্বারা আমরা (কর্ণেভিঃ) কর্ণ দ্বারা (ভদ্রম্) যাহার দ্বারা সত্যতা জানা যায় সেই বচনকে (শৃনুয়াম) শুনিব (অক্ষভিঃ) চক্ষু দ্বারা (ভদ্রম্) কল্যাণকে (পশ্যেম) দেখিব (স্থিরৈঃ) দৃঢ় (অঙ্গৈঃ) অবয়ব দ্বারা (তুষ্টুবাংসঃ) স্তুতি করিয়া (তনূভিঃ) শরীরগুলি দ্বারা (য়ৎ) যাহা (দেবহিতম্) বিদ্বান্দিগের জন্য সুখকারী (আয়ুঃ) অবস্থা তাহাকে (বি, অশেমহি) উত্তম প্রকার প্রাপ্ত হইব ॥ ২১ ॥

ভাবার্থঃ–যে সব মনুষ্যগণ বিদ্বান্দিগের সঙ্গ দ্বারা বিদ্বান্ হইয়া সত্য শুনিবে, সত্য দেখিবে এবং জগদীশ্বরের স্তুতি করিবে তাহা হইলে তাহারা দীর্ঘায়ু হইবে । মনুষ্যদিগের উচিত যে, অসত্যের শ্রবণ করা, কুদর্শন করা, মিথ্যা স্তুতি, প্রার্থনা, প্রশংসা এবং ব্যভিচার কখনও করিবে না ॥ ২১ ॥ বিঃদ্রঃ এই মন্ত্র টি আর্যাভিবিনয় গ্রন্থে প্রয়োগ হয়েছে

আমাদের জন্য কে কী করিবে, এই বিষয়কে পরবর্ত্তী মন্ত্রে বলা হইয়াছে ॥

শতমিত্যস্য গোতম ঋষিঃ । বিদ্বাংসো দেবতাঃ । ত্রিষ্টুপ্ ছন্দঃ । ধৈবতঃ স্বরঃ ॥

শ॒তমিন্নু শ॒রদো॒ऽঅন্তি॑ দেবা॒ য়ত্রা॑ নশ্চ॒ক্রা জ॒রসং॑ ত॒নূনা॑ম্ ।

পু॒ত্রাসো॒ য়ত্র॑ পি॒তরো॒ ভব॑ন্তি॒ মা নো॑ ম॒ধ্যা রী॑রিষ॒তায়ু॒র্গন্তোঃ॑ ॥ ২২ ॥


পদার্থঃ–হে (দেবাঃ) বিদ্বান্গণ! আপনার (অন্তি) সমীপ স্থিত (নঃ) আমাদের (য়ত্র) [অষ্টধ্যায়ী ৬।৩।১৩৬] যে ব্যবহারে (তনূনাম্) শরীর সকলের (জরসম্) বৃদ্ধাবস্থা এবং (শতম্) শত (শরদঃ) বর্ষ পূর্ণ হউক সেই ব্যবহারকে (নু) শীঘ্র (চক্র) [অষ্টধ্যায়ী ৬।৩।১৩৫] কর (য়ত্র) যেখানে (পুত্রাসঃ) বৃদ্ধাবস্থাজন্য দুঃখ হইতে ত্রাতা পুত্রগণ (ইৎ)  (পিতরঃ) পিতার সমান বর্ত্তমান (ভবন্তি) হইয়া থাকে সেই (নঃ) আমাদিগের (গন্তোঃ) চলন এবং (আয়ুঃ) জীবনকে (মধ্যা) পূর্ণ অবস্থা ভোগ করিবার মধ্যে (মা, রীরিষৎ) নষ্ট করিও না ॥ ২২ ॥

ভাবার্থঃ–মনুষ্যগণকে সর্বদা দীর্ঘকাল অর্থাৎ আটচল্লিশ বর্ষ প্রমাণে ব্রহ্মচর্য্য সেবন করা উচিত । যাহাতে পিতা আদির বিদ্যমান থাকাকালীন পুত্র ও পিতা হইয়া যায় । অর্থাৎ তাহাদের ও সন্তান হইয়া যাইবে এবং যখন শতবর্ষ আয়ু ব্যতীত হইবে তখনই শরীরের বৃদ্ধাবস্থা হইবে । যদি ব্রহ্মচর্য্য সহ কমপক্ষে পঁচিশ বর্ষও ব্যতীত হয় তৎপশ্চাৎ অতিমৈথুন করিয়া যাহারা বীর্য্যের নাশ করে তাহারা রোগসহিত নির্বুদ্ধি হইয়া দীর্ঘায়ুসম্পন্ন কখনও হয় না ॥ ২২ ॥

কে আমাদের কোন্ কাজ করিবে না, এই বিষয়কে পরবর্ত্তী মন্ত্রে বলা হইয়াছে ॥

মা ন ইত্যস্য গোতম ঋষিঃ । মিত্রাদয়ো দেবতাঃ । নিচৃৎ ত্রিষ্টুপ্ ছন্দঃ ।ধৈবতঃ স্বরঃ ॥

মা নো॑ মি॒ত্রো বর॑ুণোऽঅর্য়॒মায়ুরিন্দ্র॑ऽঋভু॒ক্ষা ম॒রুতঃ॒ পরি॑খ্যন্ ।

য়দ্বা॒জিনো॑ দে॒বজা॑তস্য॒ সপ্তেঃ॑ প্রব॒ক্ষ্যামো॑ বি॒দথে॑ বী॒র্য়া᳖ণি ॥ ২৪ ॥


পদার্থঃ–হে বিদ্বান্গণ! যেমন (মিত্রঃ) প্রাণের সমান মিত্র (বরুণঃ) উদানের সমান শ্রেষ্ঠ (অর্য়মা) এবং ন্যায়াধীশের সমান নিয়মকারী (ইন্দ্রঃ) রাজা তথা (ঋভুক্ষাঃ) মহাত্মা (মরুতঃ) মনুষ্যগণ (নঃ) আমাদের (আয়ুঃ) জীবনকে (মা) না (পরিখ্যন্) বিনাশ করাইবেন, যাহাতে আমরা (দেবজাতস্য) দিব্যগুণ দ্বারা প্রসিদ্ধ (বাজিনঃ) বেগবান্ (সপ্তেঃ) অশ্বের সমান উত্তম বীর পুরুষের (বিদথে) যুদ্ধে (য়ৎ) যে সব (বীর্য়াণি) বলসমূহকে (প্রবক্ষ্যামঃ) বলি, তাহাদের বিনাশ করাইবেন না, সেইরূপ আপনারা উপদেশ করুন ॥ ২৪ ॥

ভাবার্থঃ–এই মন্ত্রে বাচকলুপ্তোপমালঙ্কার আছে । যেমন সকল মনুষ্য নিজের বলকে বৃদ্ধি করিতে চাহে তদ্রূপ অন্যকেও বল বৃদ্ধি করিবার ইচ্ছা করুক ॥ ২৪ ॥

পুনঃ মনুষ্য কী করিবে, এই বিষয়কে পরবর্ত্তী মন্ত্রে বলা হইয়াছে ॥

য়ন্নির্ণিজেত্যস্য গোতম ঋষিঃ । বিদ্বাংসো দেবতাঃ । নিচৃৎ ত্রিষ্টুপ্ ছন্দঃ । ধৈবতঃ স্বরঃ ॥

য়ন্নি॒র্ণিজা॒ রেক্ণ॑সা॒ প্রাবৃ॑তস্য রা॒তিং গৃ॑ভী॒তাং মু॑খ॒তো নয়॑ন্তি ।

সুপ্রা॑ঙ॒জো মেম্য॑দ্বি॒শ্বরূ॑পऽইন্দ্রাপূ॒ষ্ণোঃ প্রি॒য়মপ্যে॑তি॒ পাথঃ॑ ॥ ২৫ ॥


পদার্থঃ–(য়ৎ) যে মনুষ্য (নির্ণিজা) সুন্দররূপ এবং (রেক্ণসা) [নিঘ০ ২।১০] ধন দ্বারা (প্রাবৃতস্য) যুক্ত জনের (রাতিম্) দান বা (গৃভীতাম্) গৃহীত বস্তুকে (মুখতঃ) অগ্রতঃ (নয়ন্তি) প্রাপ্ত করায় তথা যাহা (মেম্যৎ) প্রাপ্ত হইয়া (সুপ্রাঙ্) উত্তম প্রকার জিজ্ঞাসাকারী (বিশ্বরূপঃ) সংসার যাহার রূপ সে (অজঃ) জন্ম ও মরণাদি দোষ হইতে রহিত অবিনাশী জীব (ইন্দ্রাপূষ্ণোঃ) বিদ্যুৎ ও পবন সম্পর্কীয় (প্রিয়ম্) মনোহর (পাথঃ) অন্নকে (অপ্যেতি) সর্ব দিক দিয়া প্রাপ্ত হয়, সেই সব মনুষ্য এবং সেই জীব সব আনন্দকে প্রাপ্ত করে ॥ ২৫ ॥

ভাবার্থঃ–যে সব মনুষ্য ধন প্রাপ্ত হইয়া উত্তম কর্ম্মে ব্যয় করে তাহারা সকল কামনাকে লাভ করে ॥ ২৫ ॥

কাহার সহিত কে পালন করিবার যোগ্য, এই বিষয়কে পরবর্ত্তী মন্ত্রে বলা হইয়াছে ॥

এষ ইত্যস্য গোতম ঋষিঃ । য়জ্ঞো দেবতা । নিচৃজ্জগতী ছন্দঃ । নিষাদঃ স্বরঃ ॥

এ॒ষ ছাগঃ॑ পু॒রোऽঅশ্বে॑ন বা॒জিনা॑ পূ॒ষ্ণো ভা॒গো নী॑য়তে বি॒শ্বদে॑ব্যঃ ।

অ॒ভি॒প্রিয়ং॒ য়ৎপু॑রো॒ডাশ॒মর্ব॑তা॒ ত্বষ্টেদে॑নꣳ সৌশ্রব॒সায়॑ জিন্বতি ॥ ২৬ ॥


পদার্থঃ–বিদ্বান্দিগের উচিত যে, (এষঃ) এই (পুরঃ) প্রথম (বিশ্বদেব্যঃ) সকল বিদ্বান্দিগের মধ্যে উত্তম (পূষ্ণঃ) পুষ্টিকারীদিগের (ভাগঃ) সেবনীয় (ছাগঃ) পদার্থসমূহকে ছিন্ন-ভিন্ন করে যে প্রাণী (বাজিনা) বেগবান্ (অশ্বেন) অশ্ব সহ (নীয়তে) প্রাপ্ত করা হয় এবং (য়ৎ) যাহা (অভিপ্রিয়ম্) সকল দিক দিয়া মনোহর (পুরোডাশম্) পুরোডাশ নামক যজ্ঞভাগকে (অর্বতা) পৌঁছাইয়া অশ্বসহ (ত্বষ্টা) পদার্থগুলির সূক্ষ্মকারী (এনম্) উক্ত ভাগকে (সৌশ্রবসায়) উত্তম কীর্ত্তিমান হইবার জন্য (ইৎ)  (জিন্বতি) পাইয়া প্রসন্ন হয় উহা সর্বদা পালনীয় ॥ ২৬ ॥

ভাবার্থঃ–যদি অশ্বাদি সহ অন্য অজাদি পশুসমূহকে বৃদ্ধি করিবে তাহা হইলে সেই সব মনুষ্য সুখের উন্নতি করিবে ॥ ২৬ ॥

বিষয়ঃ পুনঃ কেন কে কিং কুর্বন্তীত্যাহ ॥
পুনঃ কাহার দ্বারা কে কী করে, এই বিষয়কে পরবর্ত্তী মন্ত্রে বলা হইয়াছে ॥

য়দ্ধবিষ্যমিত্যস্য প্রজাপতির্ঋষিঃ । য়জ্ঞো দেবতা । ত্রিষ্টুপ্ ছন্দঃ । ধৈবতঃ স্বরঃ ॥


য়দ্ধ॑বি॒ষ্য᳖মৃতু॒শো দে॑ব॒য়ানং॒ ত্রির্মানু॑ষাঃ॒ পর্য়॑শ্বং॒ নয়॑ন্তি ।

অত্রা॑ পূ॒ষ্ণঃ প্র॑থ॒মো ভা॒গऽএ॑তি য়॒জ্ঞং দে॒বেভ্যঃ॑ প্রতিবে॒দয়॑ন্ন॒জঃ ॥ ২৭ ॥


পদার্থঃ–(য়ৎ) যে (মানুষাঃ) মনুষ্য (ঋতুশঃ) ঋতু ঋতুর যোগ্য (হবিষ্যম্) হোমে আহুতি দিবার পদার্থসমূহের জন্য হিতকারী (দেবয়ানম্) দিব্য গুণযুক্ত বিদ্বান্দিগের প্রাপ্ত করিবার সাধক (অশ্বম্) শীঘ্রগামী প্রাণীকে (ত্রিঃ) তিনবার (পরি, নয়ন্তি) সকল দিকে লইয়া যায় অথবা যাহা (অত্র) এই সংসারে (পূষ্ণঃ) পুষ্টিসম্পর্কীয় (প্রথমঃ) প্রথম (ভাগঃ) সেবনীয় (দেবেভ্যঃ) বিদ্বান্দিগের জন্য (য়জ্ঞম্) সৎকারকে (প্রতিবেদয়ন্) জানাইয়া (অজঃ) বিশেষ পশু অজ (এতি) প্রাপ্ত হয় সে সর্বদা রক্ষা করিবার যোগ্য ॥ ২৭ ॥

ভাবার্থঃ–যে সব মনুষ্য ঋতু ঋতুর প্রতি উহাদের গুণগুলির অনুকূল আহার-বিহার করে তথা অশ্ব ও অজাদি পশুদের সহিত সংগতি রাখিয়া কর্ম্ম করে তাহারা অত্যন্ত সুখ লাভ করে ॥ ২৭ ॥

পুনঃ মনুষ্য কী করিবে, এই বিষয়কে পরবর্ত্তী মন্ত্রে বলা হইয়াছে ॥

হোতেত্যস্য গোতম ঋষিঃ । য়জ্ঞো দেবতা । বিরাট্ ত্রিষ্টুপ্ ছন্দঃ । ধৈবতঃ স্বরঃ ॥

হোতা॑ধ্ব॒র্য়ুরাব॑য়াऽঅগ্নিমি॒ন্ধো গ্রা॑বগ্রা॒ভऽউ॒ত শᳬস্তা॒ সুবি॑প্রঃ ।

তেন॑ য়॒জ্ঞেন॒ স্ব᳖রঙ্কৃতেন॒ স্বি᳖ষ্টেন ব॒ক্ষণা॒ऽআ পৃ॑ণধ্বম্ ॥ ২৮ ॥


পদার্থঃ–হে মনুষ্যগণ! যেমন (হোতা) গ্রহণকর্ত্তা অথবা (আবয়াঃ) যদ্দ্বারা ভাল প্রকার যজ্ঞ, সঙ্গ ও দান করে সে অথবা (অগ্নিমিন্ধঃ) অগ্নি প্রদীপক অথবা (গ্রাবগ্রাভঃ) মেঘের গ্রহণকর্ত্তা অথবা (শংস্তা) প্রশংসাকারী (উত) এবং (সুবিপ্রঃ) যাহার সমীপ ভাল-ভাল বুদ্ধিমান সে (অধ্বর্য়ুঃ) অহিংসা যজ্ঞের কামনাকারী উত্তম জন যে (স্বরংকৃতেন) সুন্দর সুশোভিত কৃত (স্বিষ্টেন) সুন্দর ভাবপূর্বক চাহিবে এবং (য়জ্ঞেন) মিলিত যজ্ঞাদি উত্তম কর্ম্ম দ্বারা (বক্ষণাঃ) নদীগুলিকে পূর্ণ করে অর্থাৎ যজ্ঞ করিলে জল বর্ষা, সেই বর্ষায় হওয়া জল দ্বারা নদীগুলিকে পূরণ করে তদ্রূপ (তেন) সেই কর্ম্ম দ্বারা তোমরাও (আ, পৃনধ্বম্) উত্তম প্রকার সুখ ভোগ কর ॥ ২৮ ॥

ভাবার্থঃ–এই মন্ত্রে বাচকলুপ্তোপমালঙ্কার আছে । যে সব মনুষ্য সুগন্ধি আদি দ্বারা উত্তম ভাবে রচিত হোম করিবার যোগ্য পদার্থসমূহকে অগ্নিতে আহুতি দ্বারা বায়ু ও বর্ষা জলাদি পদার্থগুলিকে শুদ্ধ করিয়া নদী নদাদি জলকে শুদ্ধ করে তাহারা সর্বদা সুখ ভোগ করে ॥ ২৮ ॥

য়ূপব্রস্কা ইত্যস্য গোতম ঋষিঃ । য়জ্ঞো দেবতা । ভুরিক্ ত্রিষ্টুপ্ ছন্দঃ । ধৈবতঃ স্বরঃ ॥

য়ূ॒প॒ব্র॒স্কাऽউ॒ত য়ে য়ূ॑পবা॒হাশ্চ॒ষালং॒ য়েऽঅ॑শ্বয়ূ॒পায়॒ তক্ষ॑তি ।

য়ে চার্ব॑তে॒ পচ॑নꣳ স॒ম্ভর॑ন্ত্যু॒তো তেষা॑ম॒ভিগূ॑র্ত্তির্ন্নऽইন্বতু ॥ ২ঌ ॥


পদার্থঃ–(য়ে) যাহারা (য়ূপব্রস্কাঃ) যজ্ঞ স্তম্ভের ছেদক নির্মাতা (উত) এবং (য়ে) যাহারা (য়ূপবাহাঃ) যজ্ঞস্তম্ভের বাহক (অশ্বয়ূপায়) অশ্বকে বন্ধন হেতু (চষালম্) স্তম্ভের অংশকে (তক্ষতি) কর্ত্তন, বাছাই করে (য়ে, চ) এবং যাহারা (অর্বতে) অশ্বের জন্য (পচনম্) যাহাতে পাক করা হয় সেই কর্ম্মকে (সম্ভরন্তি) উত্তম প্রকার ধারণ করে বা পুষ্ট করে (উতো) এবং যাহারা উত্তম চেষ্টা করে (তেষাম্) তাহাদের (অভিগূর্ত্তিঃ) সর্ব প্রকারে উদ্যম (নঃ) আমাদিগকে (ইন্বতু) ব্যাপ্ত ও প্রাপ্ত হউক ॥ ২ঌ ॥

ভাবার্থঃ–যে সব কারুশিল্পী অশ্ব বন্ধন করিবার ইত্যাদি কর্ম্মের কাষ্ঠ দ্বারা বিশেষ বস্তু নির্মাণ করে এবং যে সব বৈদ্য অশ্বাদি পশুদিগের ওষধি এবং তাহাদের সাজসজ্জার সামগ্রী সংগ্রহ করে তাহারা সর্বদা উদ্যম করিয়া আমাদিগকে প্রাপ্ত হইবে ॥ ২ঌ ॥

উপ প্রাগাদিত্যস্য গোতম ঋষিঃ । বিদ্বাংসো দেবতাঃ । ত্রিষ্টুপ্ ছন্দঃ । ধৈবতঃ স্বরঃ ॥

উপ॒ প্রাগা॑ৎ সু॒মন্মে॑ऽধায়ি॒ মন্ম॑ দে॒বানা॒মাশা॒ऽউপ॑ বী॒তপৃ॑ষ্ঠঃ ।

অন্বে॑নং॒ বিপ্রা॒ऽঋষ॑য়ো মদন্তি দে॒বানাং॑ পু॒ষ্টে চ॑কৃমা সু॒বন্ধু॑ম্ ॥ ৩০ ॥


পদার্থঃ–যিনি (সুমৎ) স্বয়ং (দেবানাম্) বিদ্বান্দিগের (বীতপৃষ্ঠঃ) যাঁহার পশ্চাৎ অংশ ব্যাপ্ত সেই উত্তম ব্যবহার (অধায়ি) ধারণ করিয়াছে অথবা যদ্দ্বারা ইহাদের এবং (মে) আমার (মন্ম) বিজ্ঞানকে তথা (আশাঃ) দিক্-দিগন্তরকে (উপ, প্র, জগাৎ) প্রাপ্ত হউক অথবা যাহা (এনম্) এই প্রত্যক্ষ ব্যবহারের (অনু) অনুকূল (দেবানাম্) বিদ্বান্দিগের মধ্যে (পুষ্টে) পুষ্ট বলবান্ ব্যক্তির নিমিত্ত (ঋষয়ঃ) মন্ত্রের অর্থজ্ঞাতা সকল (বিপ্রাঃ) ধীরবুদ্ধি পুরুষ (উপ, মদন্তি) সমীপ হইয়া আনন্দ প্রাপ্ত হইয়া থাকেন সেই (সুবন্ধুম্) সুন্দর শোভনীয় ভ্রাতাদিগকে আমরা (চকৃম্) [অষ্টাধ্যায়ী ৬।৩।১১৪] উৎপন্ন করি ॥ ৩০ ॥

ভাবার্থঃ–যাহারা বিদ্বান্দিগের নিকট হইতে উত্তম জ্ঞান লাভ করিয়া ঋষি হয় তাহারা সকলকে বিজ্ঞান দিয়া পুষ্ট করে, যাহারা পরস্পর একে-অপরের উন্নতি করিয়া পরিপূর্ণ কর্ম্মযুক্ত হইয়া থাকে তাহারা জগৎ হিতৈষী হইয়া থাকে ॥ ৩০ ॥

য়দ্বাজিন ইত্যস্য গোতম ঋষিঃ । য়জ্ঞো দেবতা । ত্রিষ্টুপ্ ছন্দঃ । ধৈবতঃ স্বরঃ ॥

য়দ্বা॒জিনো॒ দাম॑ স॒ন্দান॒মর্ব॑তো॒ য়া শী॑র্ষ॒ণ্যা᳖ রশ॒না রজ্জু॑রস্য ।

য়দ্বা॑ ঘাস্য॒ প্রভৃ॑তমা॒স্যে॒ তৃণ॒ꣳ সর্বা॒ তা তে॒ऽঅপি॑ দে॒বেষ্ব॑স্তু ॥ ৩১ ॥


পদার্থঃ–হে বিদ্বান্! (বাজিনঃ) প্রশস্ত বেগযুক্ত (অস্য) এই (অর্বতঃ) বলবান্ অশ্বের (য়ৎ) যাহা (দাম) উদরবন্ধন এবং (সংদানম্) সম্মুখের পশ্চাতের পাদাদি বন্ধনের রজ্জু অথবা (য়া) যাহা (শীর্ষণ্যা) শিরে (রশনা) মুখে ব্যাপ্ত (রজ্জুঃ) রজ্জু আদি (য়ৎ, বা) অথবা যাহা (অস্য) এই অশ্বের (আস্যে) মুখে (তৃণম্) দুর্বা, ঘাস আদি বিশেষ তৃণ (প্রভৃতম্) উত্তমতাপূর্বক ধৃত (তা) তাহারা (সর্বা) সকল পদার্থ (তে) তোমার জন্য হউক এবং সেই উক্ত সমস্ত বস্তু (ঘ)  (দেবেষু) বিদ্বান্দিগের মধ্যে (অপি)  (অস্তু) হউক ॥ ৩১ ॥

ভাবার্থঃ–যে সব মনুষ্য অশ্বদের সুশিক্ষা প্রদান করিয়া উহাদের সকল অঙ্গ সকলের বন্ধন সুন্দর সুন্দর তথা ভোজ্য পেয়র শ্রেষ্ঠ পদার্থ এবং উত্তম উত্তম ঔষধ করে তাহারা শত্রুদিগকে জিতিয়া লওয়া কর্ম্ম উত্তম রূপে সাধিত করে ॥ ৩১ ॥

কীভাবে কে রক্ষা করিবার যোগ্য, এই বিষয়কে পরবর্ত্তী মন্ত্রে বলা হইয়াছে ॥

য়দশ্বস্যেত্যস্য গোতম ঋষিঃ । য়জ্ঞো দেবতা । নিচৃৎ ত্রিষ্টুপ্ ছন্দঃ । ধৈবতঃ স্বরঃ ॥

য়দশ্ব॑স্য ক্র॒বিষো॒ মক্ষি॒কাশ॒ য়দ্বা॒ স্বরৌ॒ স্বধি॑তৌ রি॒প্তমস্তি॑ ।

য়দ্ধস্ত॑য়োঃ শমি॒তুর্য়ন্ন॒খেষু॒ সর্বা॒ তা তে॒ऽঅপি॑ দে॒বেষ্ব॑স্তু ॥ ৩২ ॥


পদার্থঃ–হে মনুষ্যগণ! (য়ৎ) যে (মক্ষিকা) মক্ষিকা (ক্রবিষঃ) গমনরত (অশ্বস্য) আশুগামী অশ্বের (আশ) ভোজন করে অর্থাৎ কিছু মল-রুধিরাদি খায় (বা) অথবা (য়ৎ) যে (স্বরৌ) স্বর (স্বধিতৌ) বজ্র সমান বর্ত্তমান অথবা (শমিতুঃ) যজ্ঞকারীর (হস্তয়োঃ) হস্তে (য়ৎ) যে বস্তু (রিপ্তম্) প্রাপ্ত এবং (য়ৎ) যাহা (নখেষু) নখগুলিতে প্রাপ্ত (অস্তি) আছে (তাঃ) সেগুলি (সর্বাঃ) সকল পদার্থ (তে) তোমাদের হউক তথা এই সমস্ত ব্যবহার (দেবেষু) বিদ্বান্দিগের মধ্যে (অপি)  (অস্তু) হউক ॥ ৩২ ॥

ভাবার্থঃ–মনুষ্যদিগকে এমন অশ্বশালায় অশ্ব বন্ধন করা উচিত যেখানে ইহাদের রুধির আদি মক্ষিকা ইত্যাদি পান করিতে না পারে । যেমন যজ্ঞকারীর হস্তে লিপ্ত হবিকে প্রক্ষালনাদি দ্বারা বিসর্জন করে তদ্রূপ অশ্বাদি পশুসকলের শরীরে লিপ্ত ধূলি আদিকে নিত্য ধৌত করিবে ॥ ৩২ ॥

য়দূবধ্যমিত্যস্য গোতম ঋষিঃ । য়জ্ঞো দেবতা । নিচৃৎ ত্রিষ্টুপ্ ছন্দঃ । ধৈবতঃ স্বরঃ ॥

য়দূব॑ধ্যমু॒দর॑স্যাপ॒বাতি॒ য়ऽআ॒মস্য॑ ক্র॒বিষো॑ গ॒ন্ধোऽঅস্তি॑ ।

সু॒কৃ॒তা তচ্ছ॑মি॒তারঃ॑ কৃণ্বন্তূ॒ত মেধ॑ꣳ শৃত॒পাকং॑ পচন্তু ॥ ৩৩ ॥


পদার্থঃ–হে মনুষ্যগণ! (উদরস্য) পেটের কোষ্ঠ হইতে যে (ঊবধ্যম্) মলীন মল (অপবাতি) বাহির হয় এবং (য়ঃ) যাহাতে (আমস্য) অপরিপক্ব (ক্রবিষঃ) ভক্ষিত পদার্থের (গন্ধঃ) গন্ধ (অস্তি) আছে (তৎ) তাহাকে (শমিতারঃ) শান্তিকারী অর্থাৎ আরামদায়ী (সুকৃতা) উত্তম সিদ্ধ (কৃবন্তু) করিবে (উত) এবং (মেধম্) পবিত্র (শৃতপাকম্) যাহার সুন্দর পাক হয় (পচন্তু) রন্ধন করিবে ॥ ৩৩ ॥

ভবার্থঃ–যাহারা যজ্ঞ করিতে ইচ্ছুক তাহারা দুর্গন্ধযুক্ত পদার্থ ত্যাগ করিয়া সুগন্ধি আদি যুক্ত সুন্দরতা পূর্বক রন্ধন করিয়া অগ্নিতে হোম করে, তাহারা জগতের হিতাকাঙ্ক্ষী হইয়া থাকে ॥ ৩৩ ॥

য়ত্তে গাত্রাদিত্যস্য গোতম ঋষিঃ । য়জ্ঞো দেবতা । ভুরিক্ ত্রিষ্টুপ্ ছন্দঃ ।ধৈবতঃ স্বরঃ ॥

য়ত্তে॒ গাত্রা॑দ॒গ্নিনা॑ প॒চ্যমা॑নাদ॒ভি শূলং॒ নিহ॑তস্যাব॒ধাব॑তি ।

মা তদ্ভূম্যা॒মাऽऽ শ্রি॑ষ॒ন্মা তৃণে॑ষু দে॒বেভ্য॒স্তদু॒শদ্ভ্যো॑ রা॒তম॑স্তু ॥ ৩৪ ॥


পদার্থঃ–হে মনুষ্য! (নিহতস্য) নিশ্চয়পূর্বক শ্রমকৃত (তে) তোমার (অগ্নিনা) অন্তঃকরণ রূপ তেজ দ্বারা (পচ্যমানাৎ) পচ্যমান (গাত্রাৎ) অঙ্গ দ্বারা (য়ৎ) যে (শূলম্) শীঘ্র বোধের হেতু বচন (অভি, অবধাবতি) চতুর্দ্দিক হইতে বাহির হয় (তৎ) উহা (ভূম্যাম্) ভূমির উপর (মা, আ, শ্রিষৎ) আসেনা তথা (তৎ) উহা (তৃণেষু) তৃণোপরি (মা) আসে না কিন্তু উহা (উশদ্ভ্যঃ) সৎপুরুষ (দেবেভ্যঃ) বিদ্বান্দিগের জন্য (রাতম্) প্রদত্ত (অস্তু) হউক ॥ ৩৪ ॥

ভাবার্থঃ–হে মনুষ্যগণ! জ্বরাদি ও অঙ্গহানি হইলে পীড়িত ব্যক্তি দিগকে বৈদ্যজনের দ্বারা নীরোগ করান উচিত কেননা সেই সব বৈদ্যজনের দ্বারা যে ঔষধ প্রদত্ত হয় উহা রুগীদের জন্য হিতকারী হয় ॥ ৩৪ ॥

য়ে বাজিনমিত্যস্য গোতম ঋষিঃ । বিশ্বেদেবা দেবতাঃ । স্বরাট্ ত্রিষ্টুপ্ ছন্দঃ । ধৈবতঃ স্বরঃ ॥

য়ে বা॒জিনং॑ পরি॒পশ্য॑ন্তি প॒ক্বং য়ऽঈ॑মা॒হুঃ সু॑র॒ভির্নির্হ॒রেতি॑ । 
য়ে চার্ব॑তো মাᳬসভি॒ক্ষামু॒পাস॑তऽউ॒তো তেষা॑ম॒ভিগূ॑র্ত্তির্নऽইন্বতু ॥ ৩৫ ॥

পদার্থঃ–(য়ে) যাহারা (অর্বতঃ) অশ্বের (মাংসভিক্ষাম্) মাংসযাচনা করিবার (উপাসতে) উপাসনা করে (চ) এবং যাহারা অশ্বকে (ঈম্) প্রাপ্ত মারিবার যোগ্য (আহুঃ) বলে তাহাদেরকে (নিঃ, হর) নিরন্তর হরণ কর, দূরে পৌঁছাইয়া দাও, (য়ে) যাহারা (বাজিনম্) বেগবান অশ্বকে (পক্বম্) পরিপক্ব শিখাইয়া (পরিপশ্যন্তি) সকল দিক দিয়া লক্ষ্য করে (উতো) এবং (তেষাম্) তাহাদের (সুরভিঃ) উত্তম সুগন্ধ এবং (অভিগূর্ত্তিঃ) সব দিক দিয়া উত্তম (নঃ) আমাদেরকে (ইন্বতু) প্রাপ্ত হউক, তাহাদের উত্তম কর্ম্ম আমাদের প্রাপ্ত হউক (ইতি) এই ভাবে দূরে পৌঁছাইয়া দাও ॥ ৩৫ ॥

ভাবার্থঃ–যাহারা অশ্বাদি উত্তম পশুদের মাংস খাইতে ইচ্ছুক তাহাদেরকে রাজাদি শ্রেষ্ঠ পুরুষগণ নিরুদ্ধ করিবে যাহাতে মনুষ্যদিগের উদ্যম সিদ্ধ হয় ॥ ৩৫ ॥

য়ন্নীক্ষণমিত্যস্য গোতম ঋষিঃ । য়জ্ঞো দেবতা । ভুরিক্ পংক্তিশ্ছন্দঃ । পঞ্চমঃ স্বরঃ ॥

য়ন্নীক্ষ॑ণং মাঁ॒স্পচ॑ন্যাऽউ॒খায়া॒ য়া পাত্রা॑ণি য়ূ॒ষ্ণऽআ॒সেচ॑নানি ।
ঊ॒ষ্ম॒ণ্যা᳖ऽপি॒ধানা॑ চরূ॒ণাম॒ঙ্কাঃ সূ॒নাঃ পরি॑ ভূষ॒ন্ত্যশ্ব॑ম্ ॥ ৩৬ ॥

পদার্থঃ–(য়া) যাহা (ঊষ্মন্যা) গরমে উত্তম (অপিধানা) আচ্ছাদন (আসেচনানি) এবং সেচন করিবার (পাত্রাণি) পাত্র অথবা (য়ৎ) যাহা (মাংস্পচন্যাঃ) মাংস যাহাতে রন্ধন করা হয় সেই (উখায়াঃ) স্থালীর (নীক্ষণম্) নিকৃষ্ট দর্শন বা (চরূণাম্) পাত্রগুলির (অঙ্কাঃ) লক্ষণকৃত (সূনাঃ) প্রসিদ্ধ পদার্থ তথা (য়ূষ্ণঃ) বর্দ্ধকের (অশ্বম্) অশ্বকে (পরি, ভূষন্তি) সব দিক্ দিয়া সুশোভিত করে সেগুলি সবস্বীকার করিবার যোগ্য ॥ ৩৬ ॥

ভাবার্থঃ–যদি কোন অশ্বাদি উপকারী পশু এবং উত্তম পক্ষীদের মাংস খাইবে, তাহা হইলে তাহাদেরকে যথাপরাধ অবশ্যই দণ্ড দেওয়া উচিত ॥ ৩৬ ॥

মনুষ্যকে মাংস খাওয়া উচিত নহে, এই বিষয়কে পরবর্ত্তী মন্ত্রে বলা হইয়াছে ॥

মা ত্বেত্যস্য গোতম ঋষিঃ । বিদ্বাংসো দেবতাঃ । স্বরাট্ পংক্তিশ্ছন্দঃ । পঞ্চমঃ স্বরঃ ॥

মা ত্বা॒গ্নির্ধ্ব॑নয়ীদ্ ধূ॒মগ॑ন্ধি॒র্মোখা ভ্রাজ॑ন্ত্য॒ভি বি॑ক্ত॒ জঘ্রিঃ॑ ।
ই॒ষ্টং বী॒তম॒ভিগূ॑র্ত্তং॒ বষ॑ট্কৃতং॒ তং দে॒বাসঃ॒ প্রতি॑ গৃভ্ণ॒ন্ত্যশ্ব॑ম্ ॥ ৩৭ ॥

পদার্থঃ–হে মনুষ্যগণ! যেমন (দেবাসঃ) বিদ্বান্গণ যে (ইষ্টম্) আকাঙ্ক্ষিত (বীতম্) প্রাপ্ত (অভিগূর্তম্) চতুর্দ্দিক হইতে যাহাতে কৃত উদ্যম (বষট্কৃতম্) এমন ক্রিয়া দ্বারা সিদ্ধ (অশ্বম্) বেগবান্ অশ্বকে (প্রতি গৃভ্ণন্তি) প্রতীতিপূর্বক গ্রহণ করিয়া তাহাকে তুমি (অভি) সব দিক দিয়া (বিক্ত) জান, (ত্বা) তাহাকে (ধূমগন্ধিঃ) ধূম্রে গন্ধ যাহার সেই (অগ্নিঃ) অগ্নি (মা) না (ধ্বনয়ীৎ) শব্দ করিবে বা (তম্) তাহাকে (জঘ্রিঃ) যদ্দ্বারা কোন বস্তুর ঘ্রাণ লই সেই (ভ্রাজন্তী) প্রকাশমান (উখা) স্থালী (মা) না হিংসা উৎপন্ন করুক ॥ ৩৭ ॥

ভাবার্থঃ–হে মনুষ্যগণ! যেমন বিদ্বান্গণ মাংসাহারীদের নিবৃত্ত করিয়া অশ্বাদি পশুদের বৃদ্ধি এবং রক্ষা করেন সেইরূপ তোমরাও কর এবং অগ্নি আদির বিঘ্ন হইতে পৃথক রাখ ॥ ৩৭ ॥

নিক্রমণমিত্যস্য গোতম ঋষিঃ । য়জ্ঞো দেবতা । ভুরিক্ পংক্তিশ্ছন্দঃ । পঞ্চমঃ স্বরঃ 

নি॒ক্রম॑ণং নি॒ষদ॑নং বি॒বর্ত্ত॑নং॒ য়চ্চ॒ পড্বী॑শ॒মর্ব॑তঃ ।
য়চ্চ॑ প॒পৌ য়চ্চ॑ ঘা॒সিং জ॒ঘাস॒ সর্বা॒ তা তে॒ऽঅপি॑ দে॒বেষ্ব॑স্তু ॥ ৩৮ ॥

পদার্থঃ–হে বিদ্বান্! যে (তে) তোমার (অর্বতঃ) অশ্বের (নিক্রমণম্) বাহির হওয়া (নিষদনম্) বসা (বিবর্ত্তনম্) বিশেষ করিয়া ব্যবহার করা (চ) এবং (য়ৎ) যে (পড্বীশম্) পিছনের পায়ের উপর দাঁড়াইয়া থাকে (য়ৎ, চ) এবং যে এই (পপৌ) পান করে (য়ৎ, চ) এবং যে (ঘাসিম) ঘাস (জঘাস) খায় (তাঃ) সেই সব (সর্বা) সকল কর্ম্ম যুক্তি সহ হউক এবং এই সমস্ত (দেবেষু) দিব্য উত্তম গুণীদের মধ্যে (অপি)  (অস্তু) হউক ॥ ৩৮ ॥

ভাবার্থঃ–হে মনুষ্যগণ! আপনারা অশ্বাদি পশুসমূহকে উত্তম শিক্ষা তথা ভক্ষ্য-পেয় পদার্থ দেওয়ায় নিজের সব কার্য্যকে সিদ্ধ করিতে থাকুন ॥ ৩৮ ॥

য়দশ্বায়েত্যস্য গোতম ঋষিঃ । বিদ্বাংসো দেবতাঃ । বিরাট্ পংক্তিশ্ছন্দঃ । পঞ্চমঃ স্বরঃ ॥

য়দশ্বা॑য়॒ বাস॑ऽউপস্তৃ॒ণন্ত্য॑ধীবা॒সং য়া হির॑ণ্যান্যস্মৈ ।
স॒ন্দান॒মর্ব॑ন্তং॒ পড্বী॑শং প্রি॒য়া দে॒বেষ্বা য়া॑ময়ন্তি ॥ ৩ঌ ॥

পদার্থঃ–হে মনুষ্যগণ! তোমরা (অস্মৈ) এই (অশ্বায়) অশ্বের জন্য (য়ৎ) যে (বাসঃ) বস্ত্র (অধীবাসম্) উপরে স্থাপন করিবার বস্ত্র (সন্দানম্) শিরোবন্ধনাদি এবং (য়াঃ) যে সব (হিরণ্যানি) সুবর্ণ নির্মিত আভূষণগুলিকে (উপস্তৃণন্তি) আচ্ছাদন কর অথবা যে (পড্বীশম্) পদ দ্বারা প্রবেশ করে এবং (অর্বন্তম্) গমনশীল অশ্বকে (আ, য়াময়ন্তি) উত্তম প্রকার নিয়মে রাখ সেই সব পদার্থ ও কর্ম্ম (দেবেষু) বিদ্বান্দিগের মধ্যে (প্রিয়া) প্রীতিদায়ক হউক ॥ ৩ঌ ॥

ভাবার্থঃ–যে মনুষ্য অশ্বাদি পশুগুলির যথাবৎ রক্ষা করিয়া উপকার লইবে তাহা হইলে বহু কার্য্যের সিদ্ধি দ্বারা উপকারযুক্ত হইবে ॥ ৩ঌ ॥

য়ত্ত ইত্যস্য গোতম ঋষিঃ । য়জ্ঞো দেবতা । নিচৃৎ ত্রিষ্টুপ্ ছন্দঃ । ধৈবতঃ স্বরঃ ॥

য়ত্তে॑ সা॒দে মহ॑সা॒ শূকৃ॑তস্য॒ পার্ষ্ণ্যা॑ বা॒ কশ॑য়া বা তু॒তোদ॑ ।
স্রু॒চেব॒ তা হ॒বিষো॑ऽঅধ্ব॒রেষু॒ সর্বা॒ তা তে॒ ব্রহ্ম॑ণা সূদয়ামি ॥ ৪০ ॥

পদার্থঃ–হে বিদ্বন্! (তে) আপনার (সাদে) বসিবার স্থানে (মহসা) মহত্ত্ব দ্বারা (বা) অথবা (শূকৃতস্য) শীঘ্র শিক্ষিত অশ্বের (কশয়া) চাবুক দ্বারা (য়ৎ) যে কারণ (পার্ষ্×্যা) পাষি্র্× আদি স্থান (বা) অথবা শ্রেণিতে যে উত্তম তাড়নাদি কর্ম্ম বা (তুতোদ) সাধারণ তাড়না দেওয়া (তা) সেই সবকে (অধ্বরেষু) যজ্ঞে (হবিষঃ) হোম-যোগ্য পদার্থ সম্পর্কীয় (স্রুচেব) যেমন স্রুচা প্রেরণা দেয় তদ্রূপ কর (তা) সেই (সর্বা) সব কর্ম্ম (তে) তোমার জন্য (ব্রহ্মণা) ধন দ্বারা (সূদয়ামি) প্রাপ্ত করি ॥ ৪০ ॥

ভাবার্থঃ–এই মন্ত্রে বাচকলুপ্তোপমালঙ্কার আছে । যেমন যজ্ঞের সাধনগুলির দ্বারা হোম-যোগ্য পদার্থসকলকে প্রেরণা দান করে তদ্রূপ অশ্বাদি পশুসকলকে সুশিক্ষার রীতি দ্বারা প্রেরণা দিবে ॥ ৪০ ॥

চতুস্ত্রিংশদিত্যস্য গোতম ঋষিঃ । য়জ্ঞো দেবতা । ত্রিষ্টুপ্ ছন্দঃ । ধৈবতঃ স্বরঃ ॥

চতু॑স্ত্রিꣳশদ্বা॒জিনো॑ দে॒বব॑ন্ধো॒র্বঙ্ক্রী॒রশ্ব॑স্য॒ স্বধি॑তিঃ॒ সমে॑তি ।
অচ্ছি॑দ্রা॒ গাত্রা॑ ব॒য়ুনা॑ কৃণোতু॒ পর॑ুষ্পরুরনু॒ঘুষ্যা॒ বি শ॑স্ত ॥ ৪১ ॥


পদার্থঃ–হে মনুষ্যগণ! যেমন অশ্বারোহী স্ফূর্তিযুক্ত ব্যক্তি (দেববন্ধোঃ) যাহার বিদ্বান্ বন্ধুর সমান সেই (বাজিনঃ) বেগবান্ (অশ্বস্য) অশ্বের (চতুস্ত্রিংশৎ) চৌত্রিশ (বঙ্ক্রীঃ) কুটিল গতি কে (সম্, এতি) উত্তম প্রকার প্রাপ্ত হয় এবং (অচ্ছিদ্রা) ছিদ্ররহিত (গাত্রা) অঙ্গ এবং (বয়ুনা) উত্তম জ্ঞানকে (কৃণোতু) করিবে তদ্রূপ তাহার (পরুষ্পরুঃ) প্রত্যেক মর্মস্থানকে (অনুঘুষ্য) আনুকুল্যের সহিত ঘোষণা করিয়া (স্বধিতিঃ) বজ্র সমান বর্ত্তমান তোমরা রোগগুলিকে (বি, শস্ত) বৈশিষ্ট্য দ্বারা ছিন্ন-ভিন্ন কর ॥ ৪১ ॥

ভাবার্থঃ–হে মনুষ্যগণ! যেমন অশ্বের শিক্ষক চতুর ব্যক্তি চৌত্রিশ চিত্র বিচিত্র গতিগুলিকে অশ্ব পর্যন্ত লইয়া যায় এবং বৈদ্যগণ প্রাণিদিগকে নীরোগ করে তদ্রূপ অন্যান্য পশুদিগের রক্ষা দ্বারা উন্নতি করা উচিত ॥ ৪১ ॥

কী প্রকার পশুকে শিক্ষা দিবে, এই বিষয়কে পরবর্ত্তী মন্ত্রে বলা হইয়াছে ॥

একস্ত্বষ্টুরিত্যস্য গোতম ঋষিঃ । য়জমানো দেবতা । স্বরাট্ পংক্তিশ্ছন্দঃ । পঞ্চমঃ স্বরঃ ॥

এক॒স্ত্বষ্টু॒রশ্ব॑স্যা বিশ॒স্তা দ্বা য়॒ন্তারা॑ ভবত॒স্তথ॑ऽঋ॒তুঃ ।
য়া তে॒ গাত্রা॑ণামৃতু॒থা কৃ॒ণোমি॒ তাতা॒ পিণ্ডা॑নাং॒ প্র জু॑হোম্য॒গ্নৌ ॥ ৪২ ॥

পদার্থঃ–হে মনুষ্যগণ! যেমন (একঃ) একাকী (ঋতুঃ) বসন্তাদি ঋতু (ত্বষ্টুঃ) শোভায়মান (অশ্বস্য) অশ্বের (বিশস্তা) বিশেষ করিয়া রূপাদির পার্থক্যকারী হয় অথবা যে (দ্বা) দুই (য়ন্তারা) নিয়মকারী (ভবতঃ) হইয়া থাকে (তথা) সেইরূপ (য়া) যে (তে) তোমাদের (গাত্রাণাম্) অঙ্গসকল বা (পিণ্ডানাম্) পিণ্ডসমূহের (ঋতুথা) ঋতু সম্পর্কীয় পদার্থগুলিকে আমি (কৃণোমি) করি (তাতা) সেই সব কে (অগ্নৌ) অগ্নিতে (প্র, জুহোমি) হোম করি ॥ ৪২ ॥

ভাবার্থঃ–এই মন্ত্রে বাচকলুপ্তোপমালঙ্কার আছে । যেমন অশ্বের শিক্ষক প্রত্যেক ঋতুতে অশ্বকে উত্তম শিক্ষা দেয় তদ্রূপ গুরু বিদ্যার্থীদেরকে ক্রিয়া করা শিখায় অথবা যেমন অগ্নিতে পিণ্ডের হোম করিয়া বায়ুর শুদ্ধি করে তদ্রূপ বিদ্যারূপী অগ্নিতে অবিদ্যারূপ ভ্রম সকলকে হোমের আত্মার শুদ্ধি করিয়া থাকে ॥ ৪২ ॥

মনুষ্যদিগকে আত্মাদি পদার্থ কীভাবে শুদ্ধ করা উচিত এই বিষয়কে পরবর্ত্তী মন্ত্রে বলা হইয়াছে ॥

মা ত্বেত্যস্য গোতম ঋষিঃ । আত্মা দেবতা । নিচৃৎ ত্রিষ্টুপ্ ছন্দঃ । ধৈবতঃ স্বরঃ ।

মা ত্বা॑ তপৎ প্রি॒য়ऽআ॒ত্মাপি॒য়ন্তং॒ মা স্বধি॑তিস্ত॒ন্ব᳕ऽআ তি॑ষ্ঠিপত্তে ।
মা তে॑ গৃ॒ধ্নুর॑বিশ॒স্তাতি॒হায়॑ ছি॒দ্রা গাত্রা॑ণ্য॒সিনা॒ মিথূ॑ কঃ ॥ ৪৩ ॥

পদার্থঃ–হে বিদ্বান্ (তে) আপনার যে (প্রিয়ঃ) প্রীতি বা আনন্দদায়ক সেই (আত্মা) স্বরূপ আত্মতত্ত্বও (অপিয়ন্তম্) নিশ্চয় পূর্বক প্রাপ্ত হইয়া (ত্বা) আপনাকে (অতিহায়) অত্যন্ত ত্যাগ করিয়া (মা, তপৎ) সন্তাপকে প্রাপ্ত হয় না (স্বধিতিঃ) বজ্র (তে) আপনার (তন্বঃ) শরীরের মধ্যে (মা, আতিষ্ঠিপৎ) স্থিত করাইবে না আপনার (ছিদ্রা) ছিন্ন-ভিন্ন (গাত্রাণি) অঙ্গসকলকে (অবিশস্তা) অবিচ্ছেদক এবং (গৃধুঃ) কাঙ্ক্ষিত ব্যক্তি (মা) স্থিত করাইবে না তথা (অসিনা) তলোয়ার দ্বারা (মিথূ) পরস্পর না (কঃ) চেষ্টা করিবে ॥ ৪৩ ॥

ভাবার্থঃ–সকল মনুষ্যদিগের উচিত যে, নিজ নিজ আত্মাকে শোকে মগ্ন করিবে না, কাহারও উপর বজ্র ত্যাগ করিবে না এবং কাহারও উপকার নষ্ট করিবে না ॥ ৪৩ ॥


মনুষ্যদের কেমন রথ নির্মাণ করা দরকার, এই বিষয়কে পরবর্ত্তী মন্ত্রে বলা হইয়াছে ॥

ন বাऽউ॑ऽএ॒তান্ম্রি॑য়সে॒ ন রি॑ষ্যসি দে॒বাঁ২ऽইদে॑ষি প॒থিভিঃ॑ সু॒গেভিঃ॑ ।
হরী॑ তে॒ য়ুঞ্জা॒ পৃষ॑তীऽঅভূতা॒মুপা॑স্থাদ্ বা॒জী ধু॒রি রাস॑ভস্য ॥ ৪৪ ॥

পদার্থঃ– হে বিদ্বান্! যদি (এতৎ) এই পূর্বোক্ত বিজ্ঞানকে প্রাপ্ত কর তাহা হইলে (ন) না তুমি (ম্রিয়সে) মর (ন) না (বৈ)  (রিষ্যতি) মার কিন্তু (সুগেভিঃ) সুগম (পথিভিঃ) মার্গ দ্বারা (দেবান্) বিদ্বান্গণ (ইৎ) ইকে (এষি) প্রাপ্ত হও যদি (তে) আপনার (পৃষতী) স্থূল শরীরযুক্ত (য়ুঞ্জা) যোগ করিবার অশ্ব (হরী) উপস্থিতকারী (অভূতাম্) হয় (উ) (বাজী) বেগবান্ এক অশ্ব (রাসভস্য) অশ্বজাতির সহিত সম্পর্ক রক্ষাকারী খচ্চরের (ধুরি) ধারণার নিমিত্ত (উপ, অস্থাৎ) উপস্থিত হয় ॥ ৪৪ ॥

ভাবার্থঃ– যেমন বিদ্যা দ্বারা উত্তম প্রকার যাহার প্রয়োগ করা হইয়াছে সেই পবন, জল ও অগ্নি দ্বারা যুক্ত রথে স্থিত হইয়া মার্গকে সুখপূর্বক গমন করে সেইরূপ আত্মজ্ঞান দ্বারা নিজের স্বরূপকে নিত্য জানিয়া মরণ ও হিংসার ভয়কে বর্জন করিয়া দিব্য সুখগুলি প্রাপ্ত হও ॥ ৪৪ ॥

কীসের দ্বারা রাজ্যের উন্নতি হইবে, এই বিষয়কে পরবর্ত্তী মন্ত্রে বলা হইয়াছে ॥

সু॒গব্যং॑ নো বা॒জী স্বশ্ব্যং॑ পু॒ꣳসঃ পু॒ত্রাঁ২ऽউ॒ত বি॑শ্বা॒পুষ॑ꣳ র॒য়িম্ । 
অ॒না॒গা॒স্ত্বং নো॒ऽঅদি॑তিঃ কৃণোতু ক্ষ॒ত্রং নো॒ऽঅশ্বো॑ বনতাᳬহ॒বিষ্মা॑ন্ ॥ ৪৫ ॥

পদার্থঃ–যিনি (নঃ) আমাদের (বাজী) অশ্ব (সুনব্যম্) সুন্দর গাভিদের জন্য সুখস্বরূপ (স্বশ্ব্যম্) উত্তম অশ্বগুলির মধ্যে প্রসিদ্ধ কর্মকে করেন অথবা যে বিদ্বান্ (পুং সঃ) পুংস্ত্বযুক্ত পুরুষকার সম্পন্ন (পুত্রান্) পুত্রসকল (উত) এবং বিশ্বাপুষম্) সমগ্র পুষ্টিকর (রয়িম্) ধনকে প্রাপ্ত হয় অথবা যেমন (অদিতিঃ) কারণরূপে অবিনাশী ভূমি (নঃ) আমাদের জন্য (অনাগাস্ত্বম্) অপরাধরহিত করে সেইরূপ আপনি (কৃণোতু) করিবেন অথবা যেমন (হবিষ্মান্) প্রশংসিত সুখ প্রদান করা যাহাতে আছে সেই (অশ্বঃ) ব্যাপ্তিশীল প্রাণী (নঃ) আমাদিগের (ক্ষত্রম্) রাজ্যকে (বনতাম্) সেবন করিবে তদ্রূপ আপনি সেবা করিতে থাকুন ॥ ৪৫ ॥

ভাবার্থঃ–এই মন্ত্রে বাচকলুপ্তোপমালঙ্কার আছে । যাহারা জিতেন্দ্রিয় ও ব্রহ্মচর্য্য দ্বারা বীর্য্যবান্ অশ্বসদৃশ অমোঘবীর্য্য পুরুষকার হইতে ধন প্রাপ্ত ন্যায় দ্বারা রাজ্যকে উন্নতি দিবে, তাহারা সুখী হইবে ॥ ৪৫ ॥

ইমা নু কমিত্যস্য গোতম ঋষিঃ । বিশ্বেদেবা দেবতাঃ । ভুরিক্শক্বরী ছন্দঃ ।
ধৈবতঃ স্বরঃ ॥

ই॒মা নু কং॒ ভুব॑না সীষধা॒মেন্দ্র॑শ্চ॒ বিশ্বে॑ চ দে॒বাঃ ।
আ॒দি॒ত্যৈরিন্দ্রঃ॒ সগ॑ণো ম॒রুদ্ভি॑র॒স্মভ্যং॑ ভেষ॒জা ক॑রৎ ।
য়॒জ্ঞং চ॑ নস্ত॒ন্বং᳖ চ প্র॒জাং চা॑দি॒ত্যৈরিন্দ্রঃ॑ স॒হ সী॑ষধাতি ॥ ৪৬ ॥

পদার্থঃ–হে মনুষ্যগণ! যেমন (ইন্দ্রঃ) পরমৈশ্বর্য্যবান রাজা (চ) এবং (বিশ্বে) সমস্ত (দেবাঃ) বিদ্বান্গণ (চ)  (ইমা) এই সমস্ত (ভুবনা) লোক-লোকান্তরকে ধারণ করে সেইরূপ আমরা (কং) সুখকে (নু) শীঘ্র (সীষধাম্) সিদ্ধ করি অথবা যেমন (সগণঃ) নিজের সহচারী আদি গণ সহ বর্ত্তমান (ইন্দ্রঃ) সূর্য্য (আদিত্যৈঃ) মাস সহ বর্ত্তমান সমস্ত লোকসমূহকে প্রকাশিত করে সেইরূপ (মরুদ্ভিঃ) মনুষ্যদিগের সহিত বৈদ্যগণ (অস্মভ্যাম্) আমাদিগের জন্য (ভেষজা) ওষধিসকল (করৎ) করুক্ যেমন (আদিত্যৈঃ) উত্তম বিদ্বান্দিগের (সহ) সহ (ইন্দ্রঃ) পরমৈশ্বর্য্যবান্ সভাপতি (নঃ) আমাদিগের (য়জ্ঞম্) বিদ্বান্দিগের সৎকারাদি উত্তম কর্ম্ম (চ) এবং (তন্বম্) শরীর (চ) এবং (প্রজাম্) সন্তানাদিকে (চ)  (সীষধাতি) সিদ্ধ করে সেইরূপ আমরাও সিদ্ধ করি । ৪৬ ॥

ভাবার্থঃ–এই মন্ত্রে বাচকলুপ্তোপমালঙ্কার আছে । যে সব মনুষ্য সূর্য্যতুল্য নিয়মপূর্বক ব্যবহার রাখিয়া শরীরকে নিরোধ এবং আত্মাকে বিদ্বান্ করিয়া তথা পূর্ণ ব্রহ্মচর্য্য পালন করিয়া স্বয়ম্বরবিধি দ্বারা হৃদয়ের প্রিয়তমা স্ত্রীকে স্বীকার করিয়া তাহাতে সন্তান উৎপন্ন করিয়া এবং সুশিক্ষা দিয়া বিদ্বান্ করে তাহারা ধনপতি হয় ॥ ৪৬ ॥

অগ্নে ত্বমিত্যস্য গোতম ঋষিঃ । অগ্নির্দেবতা । শক্বরী ছন্দঃ । ধৈবতঃ স্বরঃ ॥

অগ্নে॒ ত্বং নো॒ऽ অন্ত॑মऽউ॒ত ত্রা॒তা শি॒বো ভ॑বা বরূ॒থ্যঃ᳖ ।
বসু॑র॒গ্নির্বসু॑শ্রবা॒ऽঅচ্ছা॑ নক্ষি দ্যু॒মত্ত॑মꣳ র॒য়িং দাঃ॑ ॥ ৪৭ ॥

পদার্থঃ–হে (অগ্নে) বেদবেত্তা অধ্যাপনা ও উপদেশকারী বিদ্বান্ আপনি (অগ্নিঃ) অগ্নির সমান (নঃ) আমাদিগের (অন্তমঃ) সমীপস্থ (ত্রাতা) রক্ষক (শিবঃ) কল্যাণকারী (উত) এবং (বরূথ্যঃ) গৃহগুলিতে উত্তম (বসুশ্রবাঃ) যাহার শ্রবণে বহু ধন এবং (বসুঃ) বিদ্যাসকলে বাসকারী এমন (ভব) হউন যাহা (দ্যুমত্তমম্) অতীব প্রকাশবান্ (রয়িম্) ধন আমাদিগের জন্য (অচ্ছ, দাঃ) ভালমত প্রদান করুন তথা আমাদেরকে (নক্ষি) প্রাপ্ত হউন, সুতরাং (ত্বম্) আপনি আমাদিগের সৎকার পাওয়ার যোগ্য ॥ ৪৭ ॥

ভাবার্থঃ–মনুষ্যদিগের উচিত যে, সকলের উপকারী বেদাদি শাস্ত্রের জ্ঞাতা অধ্যাপক উপদেশক বিদ্বান্দিগের সদা সৎকার করিবে এবং সেই সব সৎকার প্রাপ্ত বিদ্বান্ লোকও সকলের জন্য উত্তম উপদেশাদি ভাল ভাল গুণ ও ধনাদি পদার্থগুলিকে সর্বদা দিবে যাহাতে পরস্পর প্রীতি ও উপকার দ্বারা মহান সুখ লাভ হয় ॥ ৪৭ ॥

তন্ত্বেত্যস্য গোতম ঋষিঃ । বিদ্বান্ দেবতা । স্বরাড্ বৃহতী ছন্দঃ । মধ্যমঃ স্বরঃ ॥

তং ত্বা॑ শোচিষ্ঠ দীদিবঃ সু॒ম্নায়॑ নূ॒নমী॑মহে॒ সখি॑ভ্যঃ ।
স নো॑ বোধি শ্রু॒ধী হব॑মুরু॒ষ্যা ণো॑ অঘায়॒তঃ সম॑স্মাৎ ॥ ৪৮ ॥

পদার্থঃ–হে (শোচিষ্ঠ) উত্তম গুণসমূহ দ্বারা প্রকাশমান (দীদিবঃ) বিদ্যাদি গুণসকল দ্বারা শোভাযুক্ত বিদ্বান্! আপনি (নঃ) আমাদিগকে (বোধি) বোধ করান (তম্) সেই (ত্বা) আপনাকে (সুম্নায়) সুখ ও (সখিভ্যঃ) মিত্রদিগের জন্য (নূনম্) নিশ্চয়পূর্বক আমরা (ঈমহে) যাঞ্চা করি (সঃ) সেই আপনি (নঃ) আমাদিগের (হবম্) আহ্বানকে (শ্রুধি) শ্রবণ করুন এবং (সমস্মাৎ) অধর্মতুল্য গুণকর্ম স্বভাব যুক্ত (অঘায়তঃ) আত্মার অধম আচরণকারী দুষ্ট ডাকাইত চোর লম্পট হইতে আমাদের (উরুষ্য) রক্ষা করুন ॥ ৪৮ ॥

भावार्थ

ভাবার্থঃ–বিদ্যার্থীগণ অধ্যাপকদিগের প্রতি এমন বলিবে যে, আমরা যাহা পড়িয়াছি, আপনারা তাহা পরীক্ষা করুন এবং আমাদিগকে দুষ্ট আচরণ হইতে পৃথক রাখুন যাহাতে আমরা সকলের সহিত মিত্র সমান ব্যবহার রাখি ॥ ৪৮ ॥


এই অধ্যায়ে সংসারের পদার্থসকলের গুণের বর্ণনা, পশু আদি প্রাণিদেরকে শেখানো, পালন করা, নিজ-অঙ্গ রক্ষা, পরমেশ্বরের প্রার্থনা, যজ্ঞের প্রশংসা, বুদ্ধি দান, ধর্মে ইচ্ছা, অশ্বের গুণ বলা, তাহার চাল-চলন শেখান, আত্মার জ্ঞান এবং ধন-প্রাপ্তি হওয়ার স্থান বলা হইয়াছে । ইহাতে এই অধ্যায়ে কথিত অর্থের গত অধ্যায়ে কথিত অর্থ সহ একতা জানা উচিত ।


ইতি শ্রীমৎপরমহংসপরিব্রাজকাচার্য়াণাং পরমবিদুষাং শ্রীয়ুতবিরজানন্দসরস্বতীস্বামিনাং শিষ্যেণ পরমহংসপরিব্রাজকাচার্য়েণ শ্রীমদ্দয়ানন্দসরস্বতীস্বামিনা নির্মিতে সুপ্রমাণয়ুক্তে সংস্কৃতার্য়্যভাষাভ্যাং বিভূষিতে

য়জুর্বেদভাষ্যে পঞ্চবিংশোऽধ্যায়ঃ সমাপ্তঃ ॥

No comments:

Post a Comment

ধন্যবাদ

বৈশিষ্ট্যযুক্ত পোস্ট

যজুর্বেদ অধ্যায় ১২

  ॥ ও৩ম্ ॥ অথ দ্বাদশাऽধ্যায়ারম্ভঃ ও৩ম্ বিশ্বা॑নি দেব সবিতর্দুরি॒তানি॒ পরা॑ সুব । য়দ্ভ॒দ্রং তন্ন॒ऽআ সু॑ব ॥ য়জুঃ৩০.৩ ॥ তত্রাদৌ বিদ্বদ্গুণানাহ ...

Post Top Ad

ধন্যবাদ