যজুর্বেদ অধ্যায় ৩ - ধর্ম্মতত্ত্ব

ধর্ম্মতত্ত্ব

ধর্ম বিষয়ে জ্ঞান, ধর্ম গ্রন্থ কি , হিন্দু মুসলমান সম্প্রদায়, ইসলাম খ্রীষ্ট মত বিষয়ে তত্ত্ব ও সনাতন ধর্ম নিয়ে আলোচনা

धर्म मानव मात्र का एक है, मानवों के धर्म अलग अलग नहीं होते-Theology

সাম্প্রতিক প্রবন্ধ

Post Top Ad

স্বাগতম

01 August, 2023

যজুর্বেদ অধ্যায় ৩

 ॥ অথ তৃতীয়াধ্যায়ারম্ভঃ ॥

যজুর্বেদ তৃতীয় অধ্যায়

ও৩ম্ বিশ্বা॑নি দেব সবিতর্দুরি॒তানি॒ পরা॑ সুব । য়দ্ভ॒দ্রং তন্ন॒ऽআ সু॑ব ॥ য়জুঃ৩০.৩ ॥
অস্মিন্নধ্যায়ে ত্রিষষ্টির্মন্ত্রাঃ সন্তীতি বেদিতব্যম্ ॥
অথ ভৌতিকোऽগ্নিঃ ক্ব ক্বোপয়োক্তব্য ইত্যুপদিশ্যতে ॥

এখন তৃতীয় অধ্যায়ের প্রথম মন্ত্রে ভৌতিক অগ্নি কোন্ কোন্ কর্মে ব্যবহার করা উচিত, এই বিষয়ের উপদেশ পরবর্ত্তী মন্ত্রে করা হইয়াছে ॥

তত্র সমিধেত্যস্য প্রথমমন্ত্রস্যাঙ্গিরস ঋষিঃ । অগ্নির্দেবতা । গায়ত্রী ছন্দঃ । ষড্জঃ স্বরঃ ॥

স॒মিধা॒গ্নিং দু॑বস্যত ঘৃ॒তৈর্বো॑ধয়॒তাতি॑থিম্ ।

আऽস্মি॑ন্ হ॒ব্যা জু॑হোতন ॥ ১ ॥


পদার্থঃ- হে বিদ্বান্গণ! তোমরা (সমিধা) যে সব ইন্ধন দ্বারা ভাল প্রকার প্রকাশ হইতে পারে সেই সব কাষ্ঠ ঘৃতাদি দ্বারা (অগ্নিম্) ভৌতিক অগ্নিকে (বোধয়ত) উদ্দীপন অর্থাৎ প্রকাশিত কর তথা যেমন (অতিথিম্) অতিথিকে অর্থাৎ যাহার আসা-যাওয়ার অথবা নিবাসের কোনও দিন নিশ্চিত নহে সেই সন্ন্যাসীর সেবন কর, সেইরূপ অগ্নির (দুবস্যত) সেবন কর এবং (অস্মিন্) এই অগ্নিতে (হব্যা) সুগন্ধ কস্তুরী কেশরাদি, মিষ্ট গুড়, শক্করাদি, পুষ্ট ঘৃত, দুগ্ধাদি, রোগনাশক সোমলতা অর্থাৎ গুলঞ্চাদি ওষধি, এই চারি প্রকারের শাকল্যদিয়া (আজুহোতন) ভাল প্রকার হবন কর ॥ ১ ॥


ভাবার্থঃ- এই মন্ত্রে বাচক লুপ্তোপমালংকার আছে । যেমন গৃহস্থ মনুষ্য আসন, অন্ন, জল, বস্ত্র এবং প্রিয়বচনাদি দ্বারা উত্তম গুণযুক্ত সন্ন্যাসী ইত্যাদির সেবন করেন সেইরূপই বিদ্বান্দিগের যথাযোগ্য ইন্ধন, ঘৃত, জলাদি দ্বারা অগ্নি প্রজ্জ্বলিত করিয়া বায়ু, বর্ষাজলের শুদ্ধি অথবা যানবাহনাদির রচনা নিত্য করা উচিত ॥ ১ ॥


সুসমিদ্ধায়েত্যস্য সুশ্রুত ঋষিঃ । অগ্নির্দেবতা । গায়ত্রী ছন্দঃ । ষড্জঃ স্বরঃ ॥


সুস॑মিদ্ধায় শো॒চিষে॑ ঘৃ॒তং তী॒ব্রং জু॑হোতন ।

অ॒গ্নয়ে॑ জা॒তবে॑দসে ॥ ২ ॥


পদার্থঃ- হে মনুষ্যগণ ! তোমরা (সুসমিদ্ধায়) ভাল প্রকার প্রকাশরূপ (শোচিষে) শুদ্ধ কৃত দোষের নিবারণ করিতে (জাতবেদসে) অথবা সকল পদার্থে বিদ্যমান (অগ্নয়ে) রূপ, দাহ, প্রকাশ, ছেদনাদি গুণ স্বভাবযুক্ত অগ্নিতে (তীব্রম্) সকল দোষগুলি নিবারণ করিতে তীক্ষ্ম স্বভাব যুক্ত (ঘৃতম্) ঘৃত মিষ্টাদি পদার্থকে (জুহোতন) উত্তম প্রকার প্রক্ষিপ্ত কর ॥ ২ ॥


ভাবার্থঃ- মনুষ্যদিগকে এই প্রজ্জ্বলিত অগ্নিতে (তীব্রম্) শীঘ্র দোষ নিবারণ করিয়া অথবা শুদ্ধ কৃত পদার্থগুলি আহুতি দিয়া ইষ্ট সুখ সিদ্ধ করা উচিত ॥ ২ ॥


তং ত্বেত্যস্য ভারদ্বাজ ঋষিঃ । অগ্নির্দেবতা । গায়ত্রী ছন্দঃ । ষড্জঃ স্বরঃ ॥


তং ত্বা॑ স॒মিদ্ভি॑রঙ্গিরো ঘৃ॒তেন॑ বর্দ্ধয়ামসি।

বৃ॒হচ্ছো॑চা য়বিষ্ঠ্য ॥ ৩ ॥


পদার্থঃ- আমরা যে (অঙ্গিরঃ) পদার্থ প্রাপ্ত করাইতে বা (য়বিষ্ঠ্য) পদার্থগুলিকে ভেদ করিতে অতি বলবান (বৃহৎ) বৃহৎ তেজ যুক্ত অগ্নি (শোচ) প্রকাশ করি (ত্বা) তাহাকে (সমিদ্ভিঃ) কাষ্ঠাদি বা (ঘৃতেন) ঘৃত আদি দ্বারা (বর্দ্ধয়ামসি) বৃদ্ধি করি ॥ ৩ ॥


ভাবার্থঃ- মনুষ্যদিগকে যে সকল গুণে বলবান পূর্ব কথিত অগ্নি তাহা হোম ও শিল্পবিদ্যার সিদ্ধি হেতু কাষ্ঠ, ঘৃতাদি সাধন দ্বারা সেবন করিয়া নিরন্তর বৃদ্ধিযুক্ত করা উচিত ॥ ৩ ॥


উপ ত্বেত্যস্য প্রজাপতির্ঋষিঃ । অগ্নির্দেবতা । নিচৃদ্ গায়ত্রী ছন্দঃ । ষড্জঃ স্বরঃ ॥


উপ॑ ত্বাগ্নে হ॒বিষ্ম॑তীঘৃর্তাচী॒॑র্য়ন্তু হর্য়ত ।
জু॒ষস্ব॑ স॒মিধো॒ মম॑ ॥ ৪ ॥


পদার্থঃ- হে মনুষ্যগণ । যাহা (হর্য়্যত) প্রাপ্তির হেতু অথবা কামনার যোগ্য (অগ্নে) প্রসিদ্ধ অগ্নি (মম) যজ্ঞকারী আমার (সমিধঃ) কাষ্ঠ, ঘৃতাদি পদার্থকে (জুষস্ব) সেবন করে, যে প্রকার (তম্) সেই অগ্নিকে ঘৃতাদি পদার্থ (য়ন্তু) প্রাপ্ত হয় সেইরূপ তোমরা (হবিষ্মতী) শ্রেষ্ঠ হবিযুক্ত (ঘৃতাচীঃ) ঘৃতাদি পদার্থ দ্বারা সংযুক্ত আহুতি বা কাষ্ঠাদি সামগ্রী প্রতিদিন সঞ্চিত কর ॥ ৪ ॥


ভাবার্থঃ- মনুষ্যগণ যখন এই অগ্নিতে কাষ্ঠ, ঘৃতাদি পদার্থের আহুতি দান করে তখন সেই অগ্নি তাহাদেরকে অতি সূক্ষ্ম করিয়া বায়ু সহ দেশান্তর প্রাপ্ত করাইয়া দুর্গন্ধাদি দোষের নিবারণের দ্বারা সব প্রাণিদিগের সুখ দান করে, এমন সকল মনুষ্যগণের জানা উচিত ॥ ৪ ॥


ভূর্ভুবঃ স্বরিত্যস্য প্রজাপতির্ঋষিঃ । অগ্নিবায়ুসূর্য়্যা দেবতাঃ । ভূর্ভুবঃ স্বরিত্যস্য দৈবী বৃহতী ছন্দঃ । দ্যৌরিবেত্যস্য নিচৃদ্ বৃহতী ছন্দঃ । উভয়ত্র মধ্যমঃ স্বরঃ ॥


ভূর্ভুবঃ॒ স্ব᳕র্দ্যৌরি॑ব ভূ॒ম্না পৃ॑থি॒বীব॑ বরি॒ম্ণা ।
তস্যা॑স্তে পৃথিবি দেবয়জনি পৃ॒ষ্ঠে᳕ऽগ্নিম॑ন্না॒দম॒ন্নাদ্যা॒য়াऽऽ দ॑ধে ॥ ৫ ॥


পদার্থঃ- আমি (অন্নাদ্যায়) ভক্ষণীয় অন্নের জন্য (ভূম্না) বিভু অর্থাৎ ঐশ্বর্য্য দ্বারা (দ্যৌরিব) আকাশে সূর্য সমান (বরিম্না) ভাল ভাল গুণগুলি দ্বারা (পৃথিবীব) বিস্তৃত ভূমি তুল্য (তে) প্রত্যক্ষ বা (তস্যাঃ) অপ্রত্যক্ষ অর্থাৎ আকাশযুক্ত লোকে বসবাসকারী (দেবয়জনি) দেব অর্থাৎ বিদ্বান্গণ যেখানে যজ্ঞ করেন অথবা (পৃথিবী) ভূমির (পৃষ্ঠে) পৃষ্ঠোপরি (ভূঃ) ভূমি (ভুবঃ) অন্তরিক্ষ (স্বঃ) দিব অর্থাৎ প্রকাশস্বরূপ সূর্য্যলোক ইহাদের অন্তর্গত নিবাসকারী তথা (অন্নাদম্) যবাদি সকল অন্নাদি ভক্ষণকারী (অগ্নিম্) প্রসিদ্ধ অগ্নিকে (আদধে) স্থাপন করি ॥ ৫ ॥


ভাবার্থঃ- এই মন্ত্রে দুটি উপমালঙ্কার আছে । হে মনুষ্যগণ! ঈশ্বর দ্বারা ত্রিলোকের উপকার করিবার অথবা স্বীয় ব্যাপ্তি দ্বারা সূর্য্যপ্রকাশ সমান তথা উত্তমোত্তম গুণ সকল দ্বারা পৃথিবী সমান নিজ নিজ লোকে নিকটে নিবাসকারী রচিত অগ্নিকে কার্য্য সিদ্ধ হেতু যত্নপূর্বক ব্যবহার কর ॥ ৫ ॥


আয়মিত্যস্য সর্প্পরাজ্ঞী কদ্রূর্ঋষিঃ । অগ্নির্দেবতা । নিচৃদ্ গায়ত্রী ছন্দঃ । ষড্জঃ স্বর ॥


আऽয়ং গৌঃ পৃশ্নি॑রক্রমী॒দস॑দন্ মা॒তরং॑ পু॒রঃ ।
পি॒তরং॑ চ প্র॒য়ন্ৎস্বঃ॑ ॥ ৬ ॥


পদার্থঃ- (অয়ম্) এই প্রত্যক্ষ (গৌঃ) গোলরূপী পৃথিবী (পিতরম্) পালনকারী (স্বঃ) সূর্য্যলোকের (পুরঃ) আগে-আগে অথবা (মাতরম্) স্বীয় যোনিরূপ জল সহ সহবর্ত্তমান (প্রয়ন্) প্রকৃষ্টরূপে গমনকারী (পৃশ্নিঃ) অন্তরিক্ষে অর্থাৎ আকাশে (অক্রমীৎ) চতুর্দ্দিকে (অসদৎ) স্বকক্ষ ভ্রমণ করে ॥ ৬ ॥




ভাবার্থঃ- মনুষ্যদিগের জানা উচিত যে, যদ্দ্বারা এই ভূগোল পৃথিবী জল ও অগ্নির নিমিত্ত দ্বারা উৎপন্ন অন্তরিক্ষ বা নিজ কক্ষ অর্থাৎ যোনিরূপ জল সহিত আকর্ষণরূপী গুণগুলি দ্বারা সকলের রক্ষাকারী সূর্য্যের চতুর্দিকে প্রতিমুহূর্তে ভ্রমণ করে, ইহার ফলে দিন রাত শুক্ল ও কৃষ্ণ পক্ষ, ঋতু ও অয়নাদি কাল বিভাগ ক্রমপূর্বক সম্ভব হয় ।


অন্তরিত্যস্য সর্পরাজ্ঞী কদ্রূর্ঋষিঃ । অগ্নির্দেবতা । বিরাড্ গায়ত্রী ছন্দঃ । ষড্জঃ স্বরঃ ॥


অ॒ন্তশ্চ॑রতি রোচ॒নাস্য প্রা॒ণাদ॑পান॒তী ।
ব্য॑খ্যন্ মহি॒ষো দিব॑ম্ ॥ ৭ ॥


পদার্থঃ- (অস্য) এই অগ্নির (প্রাণাৎ) ব্রহ্মাণ্ড ও শরীরের মধ্যে ঊর্ধ্বগমনশীল বায়ু হইতে (অপানতী) নিম্নগমনশীল বায়ুকে উৎপন্নকারী (রোচনা) দীপ্তি অর্থাৎ প্রকাশরূপী বিদ্যুৎ (অন্তঃ) ব্রহ্মাণ্ড ও শরীরের মধ্যে (চরতি) বিচরণ করে সে (মহিষঃ) স্বগুণ হইতে মহান্ অগ্নি (দিবম্) সূর্য্যলোককে (ব্যখ্যৎ) প্রকট করে ॥ ৭ ॥


ভাবার্থঃ- মনুষ্যদিগকে জানা উচিত যে, বিদ্যুৎ নামে বিখ্যাত সকল মনুষ্যদিগের অন্তঃকরণে নিবাসকারী যে অগ্নির কান্তি আছে সে প্রাণ ও অপানবায়ুর সহিত যুক্ত হইয়া প্রাণ, অপান, অগ্নি ও প্রকাশাদি চেষ্টা সকলের ব্যবহারকে প্রসিদ্ধ করে ॥ ৭ ॥


ত্রিꣳশদ্ধামেত্যস্য সর্পরাজ্ঞী কদ্রূর্ঋষিঃ । অগ্নির্দেবতা । গায়ত্রী ছন্দঃ । ষড্জঃ স্বরঃ ॥


ত্রি॒ꣳশদ্ধাম॒ বি রা॑জতি॒ বাক্ প॑ত॒ঙ্গায়॑ ধীয়তে ।
প্রতি॒ বস্তো॒রহ॒ দ্যুভিঃ॑ ॥ ৮ ॥


পদার্থঃ- মনুষ্যদিগকে যে অগ্নি (দ্যুভিঃ) প্রকাশাদিগুণগুলির দ্বারা (প্রতিবস্তোঃ) প্রতিদিন (ত্রিংশৎ) অন্তরিক্ষ, আদিত্য ও অগ্নিকে ছাড়িয়া পৃথিবী ইত্যাদি যে ত্রিশটি (ধাম) স্থান আছে তাহাদিগকে (বিরাজতি) প্রকাশিত করে সেই (পতঙ্গায়) চলিবারও চালাইবার ইত্যাদি গুণ দ্বারা প্রকাশযুক্ত অগ্নির জন্য (প্রতিবস্তোঃ) প্রতিদিন বিদ্বান্দিগকে (অহ) ভাল প্রকার (বাক্) বাণী (ধীয়তে) অবশ্য ধারণ করা উচিত ॥ ৮ ॥


ভাবার্থঃ- যে বাণী প্রাণযুক্ত শরীরে নিবাসকারী বিদ্যুৎ রূপ অগ্নি দ্বারা প্রকাশিত হয় তাহার গুণগুলির প্রকাশ হেতু বিদ্বান্দিগকে উপদেশ বা শ্রবণ নিত্য করা উচিত ॥ ৮ ॥


অগ্নিরিত্যস্য প্রজাপতির্ঋষিঃ । অগ্নিসূর্য়ৌ দেবতে । পংক্তিশ্ছন্দঃ । পঞ্চমঃ স্বরঃ । জ্যোতিরিত্যস্য য়াজুষী বৃহতী ছন্দঃ । মধ্যমঃ স্বরঃ ॥


অ॒গ্নির্জ্যোতি॒র্জ্যোতি॑র॒গ্নিঃ স্বাহা॒ সূর্য়ো॒ জ্যোতি॒র্জ্যোতিঃ॒ সূর্য়ঃ॒ স্বাহা॑ ।
অ॒গ্নির্বর্চো॒ জ্যোতি॒র্বর্চঃ॒ স্বাহা॒ সূর্য়ো॒ বর্চো॒ জ্যোতি॒র্বর্চঃ॒ স্বাহা॑ ।
জ্যোতিঃ॒ সূর্য়ঃ॒ সূর্য়ো॒ জ্যোতিঃ॒ স্বাহা॑ ॥ ঌ ॥

পদার্থঃ- (অগ্নিঃ) পরমেশ্বর (স্বাহা) সত্য কথনকারী বাণীকে (জ্যোতিঃ) যিনি বিজ্ঞান প্রকাশের সহিত যুক্ত করিয়া সকল মনুষ্যের জন্য বিদ্যা প্রদান করেন এই ভাবে (অগ্নিঃ) যিনি প্রসিদ্ধ অগ্নি (জ্যোতিঃ) শিল্পবিদ্যা সাধনগুলির প্রকাশকে প্রদান করেন । (সূর্য়ঃ) যিনি চরাচর সকল জগতের আত্মা পরমেশ্বর (জ্যোতিঃ) সকলের আত্মায় প্রকাশ বা জ্ঞান তথা সকল বিদ্যার উপদেশ করেন, (স্বাহা) মনুষ্য যেমন তাহার হৃদয়ে জানে সেইরূপ বলিবে এবং যিনি (সূর্য়ঃ) স্বীয় প্রকাশ দ্বারা প্রেরণার হেতু সূর্য্যলোক (জ্যোতিঃ) মূর্ত্তিমান দ্রব্যের প্রকাশ করেন, (অগ্নিঃ) যিনি সকল বিদ্যার প্রকাশ দানকারী পরমেশ্বর মনুষ্যদিগের জন্য (বর্চ্চঃ) সকল বিদ্যার অধিকরণ চারি বেদকে প্রকট করেন এবং যিনি (জ্যোতিঃ) বিদ্যুৎরূপে শরীর বা ব্রহ্মাণ্ডে নিবাসকারী অগ্নি (বর্চ্চঃ) বিদ্যা ও বৃষ্টির হেতু (সূর্য়ঃ) যিনি সকল বিদ্যার প্রকাশক জগদীশ্বর সকল মনুষ্যদিগের জন্য (স্বাহা) বেদবাণী দ্বারা (বর্চ্চঃ) সকল বিদ্যার প্রকাশ এবং (জ্যোতিঃ) বিদ্যুৎ, সূর্য্য প্রসিদ্ধ ও অগ্নিনামের তেজ প্রকাশ করেন এবং যিনি (সূর্য়ঃ) সূর্য্যলোকও (বর্চ্চঃ) শরীর ও আত্মার বলকে প্রকাশ করেন এবং যিনি (সূর্য়ঃ) প্রাণবায়ু (বর্চ্চঃ) সকল বিদ্যার প্রকাশক জ্ঞান বৃদ্ধি করান এবং (জ্যোতিঃ) প্রকাশস্বরূপ জগদীশ্বর ভাল প্রকার হবনকৃত পদার্থগুলিকে স্বীয় রচিত পদার্থে নিজ শক্তি দ্বারা সর্বত্র বিস্তার করেন সেই পরমাত্মা সকল মনুষ্যের উপাস্য দেব এবং ভৌতিক অগ্নি কার্য্য সিদ্ধির সাধন ॥ ঌ ॥

ভাবার্থঃ- স্বাহা শব্দের অর্থ নিরুক্তকারের রীতি অনুযায়ী এই মন্ত্রে গ্রহণ করা হইয়াছে । অগ্নি অর্থাৎ ঈশ্বর সামর্থ্য পূর্বক কারণ দ্বারা অগ্নি ইত্যাদি সব জগৎকে উৎপন্ন করিয়া প্রকাশিত করিয়াছেন । তন্মধ্যে অগ্নি স্বীয় প্রকাশ দ্বারা স্বয়ং অথবা অন্য সকল পদার্থের প্রকাশ করে এবং পরমেশ্বর বেদ দ্বারা সব বিদ্যার প্রকাশ করেন । এইরূপ অগ্নি ও সূর্য্যও শিল্পবিদ্যার প্রকাশ করে ॥ ঌ ॥

সজূরিত্যস্য প্রজাপতির্ঋষিঃ । পূর্বার্দ্ধস্যাগ্নিরুত্তরার্দ্ধস্য সূর্য়শ্চ দেবতে । পূর্বার্দ্ধস্য গায়ত্র্যুত্তরার্দ্ধস্য ভুরিগ্ গায়ত্রী চ ছন্দঃ । ষড্জঃ স্বরঃ ॥


স॒জূর্দে॒বেন॑ সবি॒ত্রা স॒জূ রাত্র্যেন্দ্র॑বত্যা । জু॒ষা॒ণোऽঅ॒গ্নির্বে॑তু॒ স্বাহা॑ । স॒জূর্দে॒বেন॑ সবি॒ত্রা স॒জূরু॒ষসেন্দ্র॑বত্যা । জু॒ষা॒ণঃ সূর্য়ো॑ বেতু॒ স্বাহা॑ ॥ ১০ ॥


পদার্থঃ- (অগ্নিঃ) যে ভৌতিক অগ্নি (দেবেন) সর্বজগতের জ্ঞানদাতা অথবা (সবিতা) সর্ব জগতের উৎপন্নকারী ঈশ্বরের উৎপন্ন করা জগৎ সহ (সজূঃ) তুল্য বর্ত্তমান (জূষাণঃ) সেবন করিতে অথবা (ইন্দ্রবত্যা) বহু বিদ্যুৎ যুক্ত (রাত্রা) অন্ধকার রূপ রাত্রি সহ (স্বাহা) বাণী সেবন করিতে থাকিয়া (বেতু) সকল পদার্থে ব্যাপ্ত হয়, সেইরূপ (সূর্য়ঃ) যে সূর্য্যলোক (দেবেন) সকলের প্রকাশক অথবা (সবিত্রা) সকলের অন্তর্য্যামী পরমেশ্বরের উৎপন্ন বা ধারণ করা জগৎ সহ (সজূঃ) তুল্য বর্ত্তমান (জুষাণঃ) সেবন করিতে অথবা (ইন্দ্রবত্যা) সূর্য্যপ্রকাশ যুক্ত (উষসা) দিনের প্রকাশ হেতু প্রাতঃকাল সহ (স্বাহা) অগ্নিতে হোমকৃত আহুতির (জুষাণঃ) সেবন করিতে থাকিয়া ব্যাপ্ত হইয়া হবনকৃত পদার্থকে (বেতু) দেশ-দেশান্তরে পৌঁছাইয়া দেয়, তাহা দ্বারা সকল ব্যবহার সিদ্ধ করিবে ॥ ১০ ॥


ভাবার্থঃ- হে মনুষ্যগণ ! যে ভৌতিক অগ্নি ঈশ্বর রচনা করিয়াছেন তাহা ইহারই সত্তা বলে নিজ নিজ রূপ ধারণ করিয়া দীপকাদি রূপে রাত্রির ব্যবহার সিদ্ধ করে । এইরূপ যে প্রাতঃকালকে প্রাপ্ত হইয়া সকল মূর্ত্তিমান দ্রব্য সকলকে প্রকাশ দান করিতে সক্ষম সেই কর্ম সিদ্ধি করা দরকার, এইরূপ জানিবে ॥ ১০ ॥


উপেত্যস্য গোতম ঋষিঃ । অগ্নির্দেবতা । পিপীলিকামধ্যা নিচৃদ্গায়ত্রী ছন্দঃ । ষড্জঃ স্বরঃ ॥


উ॒প॒প্র॒য়ন্তো॑ऽঅধ্ব॒রং মন্ত্রং॑ বোচেমা॒গ্নয়ে॑ ।
আ॒রেऽঅ॒স্মে চ॑ শৃণ্ব॒তে ॥ ১১ ॥


পদার্থঃ- (অধ্বরম্) ক্রিয়াময় যজ্ঞকে (উপপ্রয়ন্তঃ) সম্যক্ প্রকার জানিয়া আমরা (অস্মে) আমাদের (আরে) দূরে অথবা (চ) নিকটে (শৃণ্বতে) যথার্থ সত্যাসত্য শ্রবণকারী (অগ্নয়ে) বিজ্ঞানস্বরূপ অন্তর্য্যামী যে পরমেশ্বর আছে ইহারই জন্য (মন্ত্রম্) জ্ঞান প্রাপ্ত করাইবার মন্ত্রকে (বোচেম্) নিত্য উচ্চারণ বা বিচার করি ॥ ১১ ॥

ভাবার্থঃ- মনুষ্যদিগকে বেদমন্ত্র সহ ঈশ্বরের স্তুতি অথবা যজ্ঞের অনুষ্ঠান করিয়া যে ঈশ্বর ভিতরে বাইরে সর্বত্র ব্যাপ্ত হইয়া সকল ব্যবহার শ্রবণ করেন অথবা জানিয়া বর্ত্তমান আছেন এই কারণে তাহা হইতে ভয় করিয়া অধর্ম করার ইচ্ছাও করা উচিত নহে । যখন মনুষ্য পরমাত্মাকে জানে তখন সমীপস্থ এবং যখন জানেনা তখন দূরস্থ এইরূপ নিশ্চয় জানিবে ॥ ১১ ॥


অগ্নির্মূর্দ্ধেত্যস্য বিরূপ ঋষিঃ । অগ্নির্দেবতা । নিচৃদ্গায়ত্রী ছন্দঃ । ষড্জঃ স্বরঃ ॥


অ॒গ্নির্মূ॒র্দ্ধা দি॒বঃ ক॒কুৎপতিঃ॑ পৃথি॒ব্যাऽঅ॒য়ম্ ।
অ॒পাᳬরেতা॑ᳬসি জিন্বতি ॥ ১২ ॥


পদার্থঃ- (অয়ম্) এই কার্য্য কারণ হইতে প্রত্যক্ষ (ককুৎ) সর্ববৃহৎ (মূর্দ্ধা) সর্বোপরি বিরাজমান (অগ্নিঃ) জগদীশ্বর (দিবঃ) প্রকাশমান সূর্য্যাদি লোক এবং (পৃথিব্যাঃ) প্রকাশরহিত পৃথিবী ইত্যাদি লোকান্তরের (পতিঃ) পালয়িতা (অপাম্) প্রাণিদিগের (রেতাংসি) বীর্য্যের (জিন্বাত) রচনাকে জানেন তাঁহাকেই পূজ্য মানিবে ॥ ১ ॥ (অয়ম্) এই অগ্নি (ককুৎ) সর্ব পদার্থ হইতে বৃহৎ (দিবঃ) প্রকাশমান পদার্থগুলির (মূর্দ্ধা) ঊপর বিরাজমান (পৃথিব্যাঃ) প্রকাশরহিত পৃথিবী ইত্যাদি লোক লোকান্তরের (পতিঃ) পালনের হেতু হইয়া (অপাম্) জলের (রেতাংসি) বীর্য্যকে (জিন্বতি) প্রাপ্ত করে ॥ ২ ॥ ১২ ॥


ভাবার্থঃ- এই মন্ত্রে শ্লেষালঙ্কার আছে । যে জগদীশ্বর প্রকাশ বা অপ্রকাশরূপ দুই প্রকারের জগৎ অর্থাৎ প্রকাশবান্ সূর্য্য ইত্যাদি এবং প্রকাশ রহিত পৃথিবী ইত্যাদি লোকসমূহের রচনা করিয়া পালন করতঃ প্রাণে বল ধারণ করেন এবং যিনি ভৌতিক অগ্নি পৃথিবী ইত্যাদি জগতের পালনের হেতু হইয়া বিদ্যুৎ জঠরাদি রূপে প্রাণ বা জল সমূহের বীর্যকে উৎপন্ন করেন ॥ ১২ ॥


উভা বামিন্দ্রাগ্নী ইত্যস্য ভরদ্বাজ ঋষিঃ । ইন্দ্রাগ্নী দেবতে । বিরাট্ ত্রিষ্টুপ্ ছন্দঃ । ধৈবতঃ স্বরঃ ॥


উ॒ভা বা॑মিন্দ্রাগ্নীऽআহু॒বধ্যা॑ऽউ॒ভা রাধ॑সঃ স॒হ মা॑দ॒য়ধ্যৈ॑ ।
উ॒ভা দা॒তারা॑বি॒ষাᳬর॑য়ী॒ণামু॒ভা বাজ॑স্য সা॒তয়ে॑ হুবে বাম্ ॥ ১৩ ॥


পদার্থঃ- যে (উভা) দুই (দাতারৌ) সুখ দেওয়ার হেতু (ইন্দ্রাগ্নী) বায়ু ও অগ্নি (বাম্) তাহাদিগকে (আহুবধ্যৈ) গুণ জানিবার জন্য আমি (হুবে) গ্রহণ করি । (রাধসঃ) উত্তম সুখযুক্ত রাজ্যাদি ধনের ভোগ (সহ) সহ (মাদয়ধ্যৈ) আনন্দের জন্য (বাম্) সেই (উভা) উভয়কে (হুবে) গ্রহণ করি এবং (ইষাম্) সকলকে ইষ্ট (রয়ীণাম্) অত্যন্ত উত্তম চক্রবর্তী রাজ্যাদি ধন অথবা (বাজস্য) অত্যন্ত উত্তম অন্নের (সাতয়ে) ভাল প্রকার ভোগ করিবার জন্য (উভৌ) সেই দুইকে (হুবে) গ্রহণ করি ॥ ১৩ ॥


ভাবার্থঃ- যে মনুষ্যগণ ঈশ্বরের সৃষ্টিতে অগ্নি ও বায়ুর গুণ জ্ঞাত হইয়া কার্য্যে সংপ্রযুক্ত করিয়া নিজ নিজ কার্য্যকে সিদ্ধি করে তাহারা সকলে ভূগোলের রাজ্যাদি ধন প্রাপ্ত হইয়া আনন্দ করে, অন্য মনুষ্য নহে ॥ ১৩ ॥


অয়ং ত ইত্যস্য দেববাতভরতাবৃষী । অগ্নির্দেবতা । নিচৃদনুষ্টুপ্ ছন্দঃ । গান্ধারঃ স্বরঃ ॥


অ॒য়ং তে॒ য়োনি॑র্ঋ॒ত্বিয়ো॒ য়তো॑ জা॒তোऽঅরো॑চথাঃ ।
তং জা॒নন্ন॑গ্ন॒ऽআরো॒হাথা॑ নো বর্দ্ধয়া র॒য়িম্ ॥ ১৪ ॥


পদার্থঃ- হে (অগ্নে) জগদীশ্বর ! (তে) আপনার সৃষ্টিতে যাহা (ঋত্বিয়ঃ) প্রত্যেক ঋতুতে প্রাপ্তি করাইবার যোগ্য অগ্নি এবং যাহা বায়ু হইতে (জাতঃ) প্রসিদ্ধ হইয়া (আরোচথাঃ) সর্ব প্রকার প্রকাশ করে অথবা যাহা সূর্য্যাদি রূপে প্রকাশযুক্ত লোকসমূহের (আরোহ) উন্নতিকে সর্ব দিক দিয়া বৃদ্ধি করিতে থাকে এবং যাহা (নঃ) আমাদের (রয়িম্) রাজ্যাদি ধন বৃদ্ধি করে (তম্) সেই অগ্নিকে (জানন্) জানিয়া আপনি তাহা দ্বারা (নঃ) আমাদের (রয়িম্) সকল ভূগোলের রাজ্য ইত্যাদির সঙ্গে যুক্ত ধন (বর্দ্ধয়) বৃদ্ধিযুক্ত করুন ॥ ১৪ ॥


ভাবার্থঃ- যাহা সর্ব কালে যথাবৎ ব্যবহার করার যোগ্য অথবা যাহা বায়ুর নিমিত্ত হইতে উৎপন্ন তথা যাহা অনেক কার্য্যের সিদ্ধিরূপ কারণ দ্বারা সকলকে সুখ প্রদান করে সেই অগ্নিকে যথাবৎ তাহার ব্যবহার করিয়া সকল কার্য্যের সিদ্ধি করা উচিত ॥ ১৪ ॥


অয়মিহেত্যস্য বামদেব ঋষিঃ । অগ্নির্দেবতা । ভুরিক্ ত্রিষ্টুপ্ ছন্দঃ । ধৈবতঃ স্বরঃ ॥


অ॒য়মি॒হ প্র॑থ॒মো ধা॑য়ি ধা॒তৃভি॒র্হোতা॒ য়জি॑ষ্ঠোऽঅধ্ব॒রেষ্বীড্যঃ॑ ।
য়মপ্ন॑বানো॒ ভৃগ॑বো বিরুরু॒চুর্বনে॑ষু চি॒ত্রং বি॒ভ্বং᳖ বি॒শেবি॑শে ॥ ১৫ ॥


পদার্থঃ- (অপ্নবানঃ) বিদ্যা সন্তান অর্থাৎ বিদ্যা পড়াইয়া বিদ্বান্ করিয়া দেওয়ার (ভৃগবঃ) যজ্ঞবিদ্যা জ্ঞাতা বিদ্বান্গণ (ইহ) এই সংসারে (বনেষু) ভাল প্রকার সেবনীয় (অধ্বরেষু) উপাসনা অগ্নিহোত্র হইতে লইয়া অশ্বমেধ পর্য্যন্ত এবং শিল্পবিদ্যাময় যজ্ঞে (বিশেবিশে) প্রজা-প্রজার প্রতি (বিভ্বম্) ব্যাপ্ত স্বভাব বা (চিত্রম্) আশ্চর্য্য গুণযুক্ত (য়ম্) যে ঈশ্বর ও অগ্নির (বিরুরুচুঃ) বিশেষ করিয়া প্রকাশিত করে (অয়ম্) সেই (ধাতৃভিঃ) যজ্ঞক্রিয়া ধারণকারী বিদ্বান্ লোকদিগকে (ঈড্যঃ) খোঁজ করিবার যোগ্য (প্রথমঃ) যজ্ঞক্রিয়ার আদি সাধন (হোতা) যজ্ঞের গ্রহণকারী (য়জিষ্ঠঃ) উপাসনা ও শিল্পবিদ্যার হেতু তাহাকে (ইহ) এই সংসারে (ধায়ি) ধারণ করি ॥ ১৫ ॥


ভাবার্থঃ- এই মন্ত্রে শ্লেষালঙ্কার আছে । বিদ্বান্গণ যজ্ঞের সিদ্ধি হেতু মুখ্য করিয়া উপাস্যদেব ও সাধন ভৌতিক অগ্নিকে গ্রহণ করিয়া এই সংসারে প্রজাদের সুখ সর্বদা সিদ্ধ করিবে ॥ ১৫ ॥


অস্য প্রত্নামিত্যস্যাऽবৎসার ঋষিঃ । অগ্নির্দেবতা । গায়ত্রী ছন্দঃ । ষড্জঃ স্বরঃ ॥


অ॒স্য প্র॒ত্নামনু॒ দ্যুত॑ꣳ শু॒ক্রং দু॑দুহ্রে॒ऽঅহ্র॑য়ঃ ।
পয়ঃ॑ সহস্র॒সামৃষি॑ম্ ॥ ১৬ ॥


পদার্থঃ- (অহ্রয়ঃ) সকলবিদ্যাকে ব্যাপ্ত করাইবার বিদ্বান্গণ (অস্য) এই ভৌতিকাগ্নির (সহস্রসাম্) অসংখ্য কার্য্যকে দিবার বা (ঋষিম্) কার্য্য সিদ্ধি প্রাপ্তির হেতু (প্রত্নাম্) প্রাচীন অনাদিস্বরূপ হইতে নিত্য বর্ত্তমান (দ্যুতম্) কারণে থাকার দীপ্তিকে জানিয়া (শুক্রম্) শুদ্ধ কার্য্য সিদ্ধ করিবার (পয়ঃ) জলকে (অনুদুদুহ্রে) সম্যক্ প্রকার পূরণ করে অর্থাৎ অগ্নিতে হবনাদি করিয়া বৃষ্টি দ্বারা সংসারকে পূরণ করে ॥


ভাবার্থঃ- মনুষ্যদিগকে যেমন গুণসহিত অগ্নির কারণরূপ বা অনাদিত্ব হইতে নিত্যত্ব জানা আবশ্যক সেই রূপ জগতের অন্যান্য পদার্থেরও কারণরূপ হইতে অনাদিত্ব জানা উচিত । ইহাকে জানিয়া কার্য্যে উপযুক্ত করিয়া সকল ব্যবহার সিদ্ধি করা উচিত ॥ ১৬ ॥


তনূপা ইত্যস্যাऽবৎসার ঋষি । অগ্নির্দেবতা । ত্রিষ্টুপ্ ছন্দঃ । ধৈবতঃ স্বরঃ ॥


ত॒নূ॒পাऽঅ॑গ্নেऽসি ত॒ন্বং᳖ মে পাহ্যায়ু॒র্দাऽঅ॑গ্নে॒ऽস্যায়ু॑র্মে দেহি বর্চো॒দাऽঅ॑গ্নেऽসি॒ বর্চো॑ মে দেহি । অগ্নে॒ য়ন্মে॑ ত॒ন্বা᳖ऽঊ॒নং তন্ম॒ऽআপৃ॑ণ ॥ ১৭ ॥


পদার্থঃ- হে (অগ্নে) জগদীশ্বর ! (য়ৎ) যে কারণে আপনি (তনূপাঃ) সব মূর্ত্তিমান পদার্থের শরীরের রক্ষাকর্ত্তা (অসি) হন । এইজন্য আপনি (মে) আমার (তন্বম্) শরীরের (পাহি) রক্ষা করুন । হে (অগ্নে) পরমেশ্বর । আপনি (আয়ূর্দাঃ) সকলের আয়ু প্রদাতা (অসি) হন সেইরূপ (মে) আমার জন্য (আয়ুঃ) পূর্ণ আয়ু অর্থাৎ শতবর্ষ পর্য্যন্ত জীবন (দেহি) দান করুন । হে (অগ্নে) সর্ববিদ্যাময় ঈশ্বর ! যেমন আপনি (বর্চ্চোদাঃ) সকল মনুষ্যদিগের বিজ্ঞানদাতা (অসি) হন, সেইরূপ (সে) আমার জন্যও সঠিক গুণ জ্ঞানপূর্বক (বর্চ্চঃ) পূর্ণ বিদ্যা (দেহি) দান করুন । (অগ্নে) সকল কামনা পূরণকারী পরমেশ্বর ! (মে) আমার (তন্বাঃ) শরীরে (য়ৎ) যত (ঊনম্) বুদ্ধি, বল ও শৌর্য্যাদি গুণকর্ম আছে (তৎ) সেইসব অঙ্গ (মে) আমার (আপৃণ) সম্যক্ পূর্বক পূরণ করুন ॥ ১ ॥ (অগ্নে) এই ভৌতিকাগ্নি (য়ৎ) যেমন (তনূপাঃ) পদার্থগুলির রক্ষার হেতু (অসি) হয় সেইরূপ জঠরাগ্নি রূপে (মে) আমার (তন্বম্) শরীরের (পাহি) রক্ষা করে (অগ্নে) যেমন জ্ঞানের নিমিত্ত এই অগ্নি (আয়ুর্দাঃ) সকলের জীবনের হেতু (অসি) হয় সেইরূপ (মে) আমার জন্যও (আয়ুঃ) জীবন হেতু ক্ষুধা ইত্যাদি গুণগুলি প্রদান করে (অগ্নে) এই অগ্নি যেমন (বর্চ্চোদাঃ) বিজ্ঞান প্রাপ্তির হেতু (অসি) হয় সেইরূপ (মে) আমার জন্যও (বর্চ্চঃ) বিদ্যা প্রাপ্তির নিমিত্ত বুদ্ধি বলাদি (দেহি) প্রদান করে তথা (অগ্নে) যে কামনাপূরণ করিবার জন্য ভৌতিকাগ্নি উহা (য়ৎ) যত (মে) আমার (তন্বাঃ) শরীরে বুদ্ধি ইত্যাদি সামর্থ্য (ঊনম্) কম (তৎ) ততগুণ (আপূণ) পূরণ করে ॥ ২ ॥ ১৭ ॥


ভাবার্থঃ- এই মন্ত্রে শ্লেষালঙ্কার আছে । যে কারণে পরমেশ্বর এই সংসারে সকল প্রাণিদিগের জন্য শরীরের আয়ু নিমিত্ত বিদ্যার প্রকাশ এবং সকল অঙ্গের পূর্ণতা রচনা করিয়াছেন, ইহার ফলে সকল পদার্থ নিজ নিজ স্বরূপ ধারণ করে । এই প্রকার পরমেশ্বরের সৃষ্টিতে প্রকাশাদি গুণবান হওয়ায় এই অগ্নিও সকল পদার্থের পালনের মুখ্য সাধন ॥ ১৭ ॥


শিবো নামাসীত্যস্য নারায়ণ ঋষিঃ । রুদ্রো দেবতা । ভুরিগ্জগতী ছন্দঃ । নিষাদঃ স্বরঃ॥


শি॒বো নামা॑সি॒ স্বধি॑তিস্তে পি॒তা নম॑স্তেऽঅস্তু॒ মা মা॑ হিꣳসীঃ । 

নি ব॑র্ত্তয়া॒ম্যায়ু॑ষে॒ऽন্নাদ্যা॑য় প্র॒জন॑নায় রা॒য়স্পোষা॑য় সুপ্রজা॒স্ত্বায়॑ সু॒বীর্য়া॑য় ॥ ৬৩ ॥


পদার্থঃ- হে জগদীশ্বর এবং উপদেশকারী বিদ্বান্ ! আপনি (স্বধিতি) অবিনাশী হওয়ায় বজ্রময় (অসি) হন্, যাহা (তে) আপনার (শিবঃ) সুখস্বরূপ বিজ্ঞানের প্রদানকারী (নাম) নাম (অসি) হয়, সুতরাং আপনি আমার (পিতা) পালক (অসি) হন, (তে) আপনার জন্য আমার (নমঃ) সৎকারপূর্বক নমস্কার (অস্তু) বিদিত হউক তথা আপনি (মা) আমাকে (মা) না (হিংসী) অল্পমৃত্যুর সহিত যুক্ত করুন এবং আমি আপনাকে (আয়ুষে) আয়ু ভোগ করিবার (অন্নাদ্যায়) অন্নাদি ভোগ করিবার (সুপ্রজাস্ত্বায়) উত্তম-উত্তম পুত্রাদি বা চক্রবর্ত্তী রাজ্যাদি প্রাপ্ত হওয়ার (সুবীর্য়্যায়) উত্তম শরীর আত্মার বল-পরাক্রম হওয়ার এবং (রায়্যস্পাষায়) বিদ্যা বা সুবর্ণাদি ধনের পুষ্টির জন্য (বর্ত্তয়ামি) ব্যবহার করি এবং ব্যবহার করাইয়া থাকি । এইপ্রকার ব্যবহার করিলে সকল দুঃখ হইতে মুক্ত করাইয়া স্বীয় আত্মায় উপাস্যরূপ দ্বারা নিশ্চয় করিয়া অন্তর্য্যামিরূপ আপনার আশ্রয় করিয়া সকলের মধ্যে বিদ্যমান থাকি ॥ ৬৩ ॥


ভাবার্থঃ- কোনও মনুষ্য মঙ্গলময় সকলের পালক পরমেশ্বরের আজ্ঞাপালন ব্যতীত ইহলোক ও পরলোকে সুখ প্রাপ্ত করিতে সক্ষম হয় না । কদাপি কোনও মনুষ্যকে নাস্তিক পক্ষ লইয়া ঈশ্বরের অনাদর করা উচিত নহে । যে নাস্তিক হইয়া ঈশ্বরের অনাদর করে তাহার সর্বত্র অনাদর হইয়া থাকে । অতএব, সকল মনুষ্যকে আস্তিক বুদ্ধি দ্বারা ঈশ্বরের উপাসনা করা কর্তব্য ॥ ৬৩ ॥


এই তৃতীয় অধ্যায়ে অগ্নিহোত্রাদি যজ্ঞের বর্ণন, অগ্নির স্বভাব বা অর্থের প্রতিপাদন, পৃথিবীর ভ্রমণ লক্ষণ, অগ্নি শব্দ দ্বারা ঈশ্বর বা ভৌতিক অর্থের প্রতিপাদন, অগ্নিহোত্রের মন্ত্রের প্রকাশ, ঈশ্বরের উপস্থান, অগ্নির স্বরূপকথন, ঈশ্বরের প্রার্থনা, উপাসনা বা এই দুইয়ের ফল, ঈশ্বরের স্বভাব প্রতিপাদন, সূর্য্যের কিরণগুলির কার্য্যের বর্ণন, নিরন্তর উপাসনা, গায়ত্রী মন্ত্রের প্রতিপাদন, যজ্ঞের ফল প্রকাশ, ভৌতিক অগ্নির অর্থ প্রতিপাদন, গৃহস্থাশ্রমের আবশ্যক কার্য্যের অনুষ্ঠান ও লক্ষণ, ইন্দ্র ও পবনের কার্য্য বর্ণন, পুরুষার্থের আবশ্যকীকরণ, পাপ হইতে নিবৃত্ত হওয়া, যজ্ঞের সমাপ্তি আবশ্যকীকরণ, সত্যপূর্বক দান-প্রদানের ব্যবহার করা, বিদ্বান্ বা ঋতুর স্বভাব বর্ণন, চারি প্রকার অন্তঃকরণের লক্ষণ, রুদ্র শব্দের অর্থ প্রতিপাদন, তিন শত বর্ষ অবশ্যই আয়ুর সম্পাদন করা এবং ধর্ম দ্বারা আয়ু ইত্যাদি পদার্থ গ্রহণের বর্ণনা করা হইযাছে । ইহার দ্বারা দ্বিতীয় অধ্যায়ের অর্থ সহ এই তৃতীয় অধ্যায়ের অর্থ সঙ্গতি জানা উচিত ॥ ৬৩ ॥


ইতি শ্রীমৎপরিব্রাজকাচার্য়্যেণ শ্রীয়ুত মহাবিদুষাং বিরজানন্দ সরস্বতীস্বামিনাং
শিষ্যেণ দয়ানন্দসরস্বতী স্বামিনা বিরচিতে সংস্কৃতার্য়্যভাষাভ্যাং বিভূষিতে
সুপ্রমানয়ুক্তে য়জুর্বেদ ভাষ্যে তৃতীয়োऽধ্যায়ঃ পূর্ত্তিমগাৎ ॥





No comments:

Post a Comment

ধন্যবাদ

বৈশিষ্ট্যযুক্ত পোস্ট

যজুর্বেদ অধ্যায় ১২

  ॥ ও৩ম্ ॥ অথ দ্বাদশাऽধ্যায়ারম্ভঃ ও৩ম্ বিশ্বা॑নি দেব সবিতর্দুরি॒তানি॒ পরা॑ সুব । য়দ্ভ॒দ্রং তন্ন॒ऽআ সু॑ব ॥ য়জুঃ৩০.৩ ॥ তত্রাদৌ বিদ্বদ্গুণানাহ ...

Post Top Ad

ধন্যবাদ