যজুর্বেদ অধ্যায় ৩২ - ধর্ম্মতত্ত্ব

ধর্ম্মতত্ত্ব

ধর্ম বিষয়ে জ্ঞান, ধর্ম গ্রন্থ কি , হিন্দু মুসলমান সম্প্রদায়, ইসলাম খ্রীষ্ট মত বিষয়ে তত্ত্ব ও সনাতন ধর্ম নিয়ে আলোচনা

धर्म मानव मात्र का एक है, मानवों के धर्म अलग अलग नहीं होते-Theology

সাম্প্রতিক প্রবন্ধ

Post Top Ad

স্বাগতম

22 September, 2023

যজুর্বেদ অধ্যায় ৩২

 

॥ ও৩ম্ ॥

॥ অথ দ্বাত্রিংশত্তমাऽধ্যায়ারম্ভঃ ॥
ও৩ম্ বিশ্বা॑নি দেব সবিতর্দুরি॒তানি॒ পরা॑ সুব । য়দ্ভ॒দ্রং তন্ন॒ ऽআ সু॑ব ॥ য়জুঃ৩০.৩
অথ পরমেশ্বরঃ কীদৃশ ইত্যাহ ॥
যজুর্বেদ অধ্যায় ৩২

এখন পরমেশ্বর কেমন এই বিষয়কে পরবর্ত্তী মন্ত্রে বলা হইয়াছে ॥

তদেবেত্যস্য স্বয়ম্ভু ব্রহ্ম ঋষিঃ । পরমাত্মা দেবতা । অনুষ্টুপ্ ছন্দঃ । গান্ধারঃ স্বরঃ ॥

তদে॒বাগ্নিস্তদা॑দি॒ত্যস্তদ্বা॒য়ুস্তদু॑ চ॒ন্দ্রমাঃ॑ ।

তদে॒ব শু॒ক্রং তদ্ ব্রহ্ম॒ তাऽআপঃ॒ স প্র॒জাপ॑তিঃ ॥ ১ ॥


পদার্থঃ–হে মনুষ্যগণ! (তৎ) তিনি সর্বজ্ঞ, সর্বব্যাপী, সনাতন, অনাদি, সচ্চিদানন্দ স্বরূপ, নিত্য, শুদ্ধ, বুদ্ধ, মুক্তস্বভাব, ন্যায়কারী, দয়ালু, জগৎস্রষ্টা, ধারণকর্ত্তা এবং সকলের অন্তর্য্যামী (এব) ই (অগ্নিঃ) জ্ঞানস্বরূপ এবং স্বয়ং প্রকাশিত হওয়ায় অগ্নি (তৎ) তিনি (আদিত্যঃ) প্রলয়ের সময় সকলকে গ্রহণ করে বলিয়া আদিত্য (তৎ) তিনি (বায়ুঃ) অত্যন্ত বলবান্ এবং সকলের ধর্ত্তা হওয়ায় বায়ু (তৎ) তিনি (চন্দ্রমাঃ) আনন্দস্বরূপ ও আনন্দকারক হওয়ায় চন্দ্রমা (তৎ, এব) তিনিই (শুক্রম্) শীঘ্রকারী বা শুদ্ধভাবের জন্য শুক্র (তৎ) তিনি (ব্রহ্ম) মহান্ হওয়ায় ব্রহ্ম (তাঃ) তিনি (আপঃ) সর্বত্র ব্যাপক হওয়ায় আপ (উ) এবং (সঃ) তিনি (প্রজাপতিঃ) সকল প্রজার স্বামী হওয়ায় প্রজাপতি, এইরকম তোমরা জান ॥ ১ ॥

ভাবার্থঃ–হে মনুষ্যগণ! যেমন ঈশ্বরের অগ্নি আদি গৌণ নাম, তদ্রূপ আরও ইন্দ্রাদি নাম আছে, তাহারই উপাসনা ফলবতী, এইরকম জানিবে ॥ ১ ॥

সর্ব ইত্যস্য স্বয়ম্ভু ব্রহ্ম ঋষিঃ । পরমাত্মা দেবতা । অনুষ্টুপ্ ছন্দঃ ।
গান্ধারঃ স্বরঃ ॥

সর্বে॑ নিমে॒ষা জ॑জ্ঞিরে বি॒দ্যুতঃ॒ পুর॑ুষা॒দধি॑ ।

নৈন॑মূ॒র্দ্ধ্বং ন তি॒র্য়্যঞ্চং॒ ন মধ্যে॒ পরি॑ জগ্রভৎ ॥ ২ ॥


পদার্থঃ–হে মনুষ্যগণ! যাহা (বিদ্যুতঃ) বিশেষ করিয়া প্রকাশমান (পুরুষাৎ) পূর্ণ পরমাত্মা হইতে (সর্বে) সকল (নিমেষাঃ) কলা কাষ্ঠাদি কালের অবয়ব (অধি, জজ্ঞিরে) অধিকতর উৎপন্ন হয়, সেই (এনম্) এই পরমাত্মাকে কেহই (ন) না (ঊর্ধবম্) উপরে, (ন) না (তির্য়ঞ্চম্) তির্য্যক, সকল দিকে অথবা নিম্নে এবং (ন) না (মধ্যে) মধ্যে (পরি, জগ্রভৎ) সব দিক দিয়া গ্রহণ করিতে পারে, তাহাকে তোমরা সেবন কর ॥ ২ ॥

ভাবার্থঃ–হে মনুষ্যগণ! যাহার রচনা হইতে সকল কালের অবয়ব উৎপন্ন হইয়াছে এবং যিনি উপরে, নিম্নে, মধ্যে, পিছনে, দূরে, সমীপে বলা যেতে পারে না, যিনি সর্বত্র পূর্ণ ব্রহ্ম তাহাকে যোগাভ্যাস দ্বারা জানিয়া আপনারা সকলে তাহার উপাসনা করুন ॥ ২ ॥

ন তস্যেত্যস্য স্বয়ম্ভু ব্রহ্ম ঋষিঃ । হিরণ্যগর্ভঃ পরমাত্মা দেবতা । নিচৃৎ পংক্তিশ্ছন্দঃ । পঞ্চমঃ স্বরঃ ॥

ন তস্য॑ প্রতি॒মাऽঅস্তি॒ য়স্য॒ নাম॑ ম॒হদ্যশঃ॑ ।

হি॒র॒ণ্য॒গ॒র্ভऽইত্যে॒ষ মা মা॑ হিꣳসী॒দিত্যে॒ষা য়স্মা॒ন্ন জা॒তऽইত্যে॒ষঃ ॥ ৩ ॥


পদার্থঃ– হে মনুষ্যগণ! (য়স্য) যাহার (মহৎ) পূজ্য বৃহৎ (য়শঃ) কীর্ত্তিকর ধর্ম্মকর্ম্ম আচরণই (নাম) নামস্মরণ, যিনি (হিরণ্যগর্ভঃ) সূর্য্য, বিদ্যুৎ আদি পদার্থের আধার (ইতি) এই প্রকার (এষঃ) অন্তর্য্যামী হওয়ায় প্রত্যক্ষ, যিনি (মা) আমাকে (মা, হিংসীৎ) তাড়না না করেন অথবা তিনি নিজের হইতে আমাকে বিমুখ না করেন (ইতি) এই প্রকার (এষা) এই প্রার্থনা বা বুদ্ধি এবং (য়স্মাৎ) সে কারণে (ন) না (জাতঃ) উৎপন্ন হইয়াছে (ইতি) এই প্রকার (এষঃ) এই পরমাত্মা উপাসনার যোগ্য । (তস্য) সেই পরমেশ্বরের (প্রতিমা) প্রতিমা-পরিমাণ, তাহার তুল্য অবধির সাধন প্রতিকৃতি, মূর্ত্তি বা আকৃতি (ন, অস্তি) নাই । অথবা দ্বিতীয় পক্ষ এই যে, (হিরণ্যগর্ভঃ) এই পঁচিশতম অধ্যায়ে ১০ মন্ত্র হইতে ১৩ মন্ত্র পর্য্যন্তর (ইতি) এই প্রকার (এষা) এই ঋচা দ্বাদশতম অধ্যায়ের ১০২ তম মন্ত্র এবং (য়স্মান্ন জাতঃ – ইত্যেষঃ) এই অষ্টম অধ্যায়ের ১৬, ৩৭ দুইটি মন্ত্রের অনুবাক (য়স্য) যে পরমেশ্বরের (নাম) প্রসিদ্ধ (মহৎ) মহতী (য়শঃ) কীর্ত্তি, (তস্য) তাহার (প্রতিমা) প্রতিবিম্ব (ন, অস্তি) নাই ॥ ৩ ॥

ভাবার্থঃ–হে মনুষ্যগণ! যিনি কখনও দেহধারী হন্ না, যাহার কোনও পরিমাণ সীমার কারণ নহে, যাহার আজ্ঞাপালনই নামস্মরণ, যিনি উপাসনা করা হইলে, নিজ উপাসকদের প্রতি অনুগ্রহ করেন, বেদের অনেক স্থলে যাহার মহত্ত্ব বলা হইয়াছে, যিনি মৃত্যু প্রাপ্ত হন না, বিকৃত হন্ না, না নষ্ট হন্, তাঁহারই উপাসনা নিরন্তর কর । ইহার ভিন্ন অন্য কাহারও উপাসনা করিলে, মহান্ পাপ দ্বারা যুক্ত হইয়া তোমরা দুঃখ-ক্লেশ দ্বারা নষ্ট হইয়া যাইবে ॥ ৩ ॥

এষ ইত্যস্য স্বয়ম্ভু ব্রহ্ম ঋষিঃ । আত্মা দেবতা । ভুরিক্ত্রিষ্টুপ্ ছন্দঃ ।
ধৈবতঃ স্বরঃ ॥

এ॒ষো হ॑ দে॒বঃ প্র॒দিশোऽনু॒ সর্বাঃ॒ পূর্বো॑ হ জা॒তঃ সऽ উ॒ গর্ভে॑ऽ অ॒ন্তঃ ।

সऽ এ॒ব জা॒তঃ স জ॑নি॒ষ্যমা॑ণঃ প্র॒ত্যঙ্ জনা॑স্তিষ্ঠতি স॒র্বতো॑মুখঃ ॥ ৪ ॥


পদার্থঃ–হে (জনাঃ) বিদ্বান্গণ! (এষঃ) এই (হ) প্রসিদ্ধ পরমাত্মা (দেবঃ) উত্তম স্বরূপ (সর্বাঃ) সকল দিশা এবং (প্রদিশঃ) বিদিশাকে (অনু) আনুকূল্য পূর্বক ব্যাপ্ত হইয়া (সঃ) (উ) তিনিই (গর্ভে) অন্তঃকরণের (অন্তঃ) মধ্যে (পূর্বঃ) প্রথম কল্পের আদিতে (হ) প্রসিদ্ধ (জাতঃ) প্রকাশ্যে আসিলেন (সঃ, এষ) তিনিই (জাতঃ) প্রসিদ্ধ হইলেন (সঃ) তিনি (জনিষ্যমাণঃ) আগামী কল্পে প্রথম প্রসিদ্ধিকে প্রাপ্ত হইবেন (সর্বতোমুখঃ) সব দিক দিয়া মুখাদি অবয়বযুক্ত অর্থাৎ মুখাদি ইন্দ্রিয়দিগের কর্ম্ম সর্বত্র করিয়া (প্রত্যঙ্) প্রত্যেক পদার্থকে প্রাপ্ত হইয়া (তিষ্ঠতি) অচল সর্বত্র স্থির, তিনিই তোমাদিগের উপাসনা করিবার এবং জানিবার যোগ্য ॥ ৪ ॥

ভাবার্থঃ–এই পূর্বোক্ত ঈশ্বর জগৎকে উৎপন্ন করিয়া প্রকাশিত হইয়াছেন, সর্ব দিকে ব্যাপ্ত হইয়া ইন্দ্রিয় ব্যতীত সকল ইন্দ্রিয়ের কর্ম সর্বত্র ব্যাপ্ত হওয়ায় সকল প্রাণিদিগের হৃদয়ে স্থির, তিনি ভূত, ভবিষ্যৎ কল্পে জগতের উৎপত্তির জন্য প্রথমে প্রকট হন্, তিনি ধ্যানশীল মনুষ্যের জানিবার যোগ্য, অন্যের জানিবার যোগ্য নহে ॥ ৪ ॥

য়স্মাদিত্যস্য স্বয়ম্ভু ব্রহ্ম ঋষিঃ । পরমেশ্বরো দেবতা । ভুরিক্ত্রিষ্টুপ্ ছন্দঃ । ধৈবতঃস্বরঃ ॥

য়স্মা॑জ্জা॒তং ন পু॒রা কিং চ॒নৈব য় আ॑ব॒ভূব॒ ভুব॑নানি॒ বিশ্বা॑ ।

প্র॒জাপ॑তিঃ প্র॒জয়া॑ সꣳররা॒ণস্ত্রীণি॒ জ্যোতী॑ᳬষি সচতে॒ স ষো॑ড॒শী ॥ ৫ ॥


পদার্থঃ–হে মনুষ্যগণ! (য়স্মাৎ) যে পরমেশ্বর হইতে (পুরা) পূর্বে (কিম্, চন) কিছুও (ন, জাতম্) উৎপন্ন হয় নাই । (য়ঃ) যিনি সব দিক (আবভূব) উত্তম প্রকারে বর্ত্তমান, যাহাতে (বিশ্বা) সকল (ভুবনানি) বস্তুগুলির আধার সমস্ত লোক-লোকান্তর বর্ত্তমান (সঃ, এব) তিনিই (ষোডশী) ষোল কলাযুক্ত (প্রজয়া) প্রজা সহ (সম্, ররাণঃ) সম্যক্ রমণ করিয়া (প্রজাপতিঃ) প্রজার রক্ষক অধিষ্ঠাতা (ত্রীণি) তিন (জ্যোতীংষি) তেজোময় বিদ্যুৎ, সূর্য্য, চন্দ্র রূপ প্রকাশ জ্যোতিগুলিকে (সচতে) সংযুক্ত করে ॥ ৫ ॥

ভাবার্থঃ–ঈশ্বর অনাদি এই কারণে তাহার পূর্বে কিছুও হইতে পারে না, তিনিই সকল প্রজাদিগের মধ্যে ব্যাপ্ত জীবের কর্ম্মকে লক্ষ্য করেন এবং তদনুযায়ী ফল প্রদান করিয়া ন্যায় করেন, যিনি প্রাণাদি ষোল বস্তুগুলির নির্মাণ করিয়াছেন, এই জন্য তিনি ষোডশী নামে অভিহিত (প্রাণ, শ্রদ্ধা, আকাশ, বায়ু, অগ্নি, জল, পৃথিবী, ইন্দ্রিয়, মন, অন্ন, বীর্য্য, তপ, মন্ত্র, কর্ম, লোক-লোকান্তর ও নাম) এইগুলি ষোডশ কলা প্রশ্নোপনিষদে আছে । এই সমস্ত ষোডশ বস্তুরূপ জগৎ পরমাত্মায় আছে, তিনিই রচনা করিয়াছেন এবং তিনিই পালন করেন ॥ ৫ ॥

য়েনেত্যস্য স্বয়ম্ভু ব্রহ্ম ঋষিঃ । পরমাত্মা দেবতা । নিচৃৎ ত্রিষ্টুপ্ ছন্দঃ । ধৈবতঃ স্বরঃ ॥

য়েন॒ দ্যৌরু॒গ্রা পৃ॑থি॒বী চ॑ দ্য্ঢা॒ য়েন॒ স্ব᳖ স্তভি॒তং য়েন॒ নাকঃ॑ ।

য়োऽ অ॒ন্তরি॑ক্ষে॒ রজ॑সো বি॒মানঃ॒ কস্মৈ॑ দে॒বায়॑ হ॒বিষা॑ বিধেম ॥ ৬ ॥


পদার্থঃ–হে মনুষ্যগণ! (য়েন) যে জগদীশ্বর (উগ্রা) তীব্র তেজযুক্ত (দ্যৌঃ) প্রকাশযুক্ত সূর্য্যাদি পদার্থ (চ) এবং (পৃথিবী) ভূমি (দৃঢা) দৃঢ় করিয়াছেন, (য়েন) যিনি (স্বঃ) সুখকে (স্তভিতম্) ধারণ করিয়াছেন, (য়েন) যিনি (নাকঃ) সকল দুঃখ হইতে রহিত মোক্ষ ধারণ করিয়াছেন, (য়ঃ) যিনি (অন্তরিক্ষে) মধ্যবর্ত্তী আকাশে বর্ত্তমান (রজসঃ) লোকসমূহের (বিমানঃ) বিবিধ মান করিয়া থাকেন সেই (কস্মৈ) সুখস্বরূপ (দেবায়) স্বয়ং প্রকাশমান, সকল সুখদাতা ঈশ্বরের জন্য আমরা (হবিষা) প্রেমভক্তিপূর্বক (বিধেম) সেবা করি বা প্রাপ্ত হই ॥ ৬ ॥

ভাবার্থঃ–হে মনুষ্যগণ! যিনি সমস্ত জগতের ধর্ত্তা, সকল সুখদাতা, মুক্তির সাধক, আকাশের তুল্য ব্যাপক পরমেশ্বর, তাঁহারই ভক্তি কর ॥ ৬ ॥

য়ং ক্রন্দসীত্যস্য স্বয়ম্ভু ব্রহ্ম ঋষিঃ । পরমাত্মা দেবতা । নিচৃচ্ছক্বরী ছন্দঃ ।
ধৈবতঃ স্বরঃ ॥

য়ং ক্রন্দ॑সী॒ऽ অব॑সা তস্তভা॒নেऽ অ॒ভ্যৈক্ষে॑তাং॒ মন॑সা॒ রেজ॑মানে ।

য়ত্রাধি॒ সূর॒ऽ উদি॑তো বি॒ভাতি॒ কস্মৈ॑ দে॒বায়॑ হ॒বিষা॑ বিধেম ।

আপো॑ হ॒ য়দ্ বৃ॑হ॒তীর্য়শ্চি॒দাপঃ॑ ॥ ৭ ॥


পদার্থঃ–হে মনুষ্যগণ! (য়ম্) যে পরমাত্মাকে প্রাপ্ত অর্থাৎ তাহার অধিকারে নিবাসকারী (তস্তভানে) সকলকে ধারণকারী (রেজমানে) চলায়মান (ক্রন্দসী) স্বগুণ দ্বারা প্রশংসা করিবার যোগ্য সূর্য্য ও পৃথিবী লোক (অবসা) রক্ষাদি দ্বারা সকলকে ধারণ করে, (য়ত্র) যে ঈশ্বরে (সূরঃ) সূর্য্য লোক (অধি, উদিতঃ) অধিকতর উদয়কে প্রাপ্ত হইয়াছে (য়ৎ) যাহা (বৃহতীঃ) বৃহৎ (আপঃ) ব্যাপ্ত জল (হ)  (য়ঃ) এবং যা কিছু (চিৎ)  (আপঃ) আকাশ, তাহাকেও (বিভাতি) বিশেষ করিয়া প্রকাশিত করতঃ প্রকাশক হয়, সেই ঈশ্বরকে অধ্যাপক ও উপদেশক (মনসা) বিজ্ঞান দ্বারা (অভি, ঐক্ষেতাম্) আভিমুখ্য করিয়া দেখে, সেই (কস্মৈ) সুখসাধক (দেবায়) শুদ্ধস্বরূপ পরমাত্মার জন্য (হবিষা) গ্রহণীয় যোগাভ্যাস দ্বারা আমরা (বিধেম) সেবা করিয়া থাকি, তাহাকে তোমরাও ভজনা কর ॥ ৭ ॥

ভাবার্থঃ–হে মনুষ্যগণ! যে সকল দিক দিয়া ব্যাপক পরমেশ্বরে সূর্য্য, পৃথিবী আদি লোক ভ্রমণ করিতে দেখে, যিনি প্রাণ ও আকাশকেও ব্যাপ্ত করিয়াছেন সেই স্বীয় আত্মায় স্থিত ঈশ্বরের তোমরা উপাসনা কর ॥ ৭ ॥

বেন ইত্যস্য স্বয়ম্ভু ব্রহ্ম ঋষিঃ । পরমাত্মা দেবতা । নিচৃৎ ত্রিষ্টুপ্ ছন্দঃ ।
ধৈবতঃ স্বরঃ ॥

বে॒নস্তৎপ॑শ্য॒ন্নিহি॑তং॒ গুহা॒ সদ্যত্র॒ বিশ্বং॒ ভব॒ত্যেক॑নীডম্ ।

তস্মি॑ন্নি॒দꣳ সং চ॒ বি চৈ॑তি॒ সর্ব॒ꣳ সऽ ওতঃ॒ প্রোত॑শ্চ বি॒ভূঃ প্র॒জাসু॑ ॥ ৮ ॥


পদার্থঃ–হে মনুষ্যগণ! (য়ত্র) যাহাতে (বিশ্বম্) সকল জগৎ (একনীডম্) এক আশ্রয়যুক্ত (ভবতি) হয় (তৎ) সেই (গুহা) বুদ্ধি বা গুপ্ত কারণে (নিহিতম্) স্থিত (সৎ) নিত্য চেতন ব্রহ্মকে (বেনঃ) পন্ডিত বিদ্বান্ ব্যক্তি (পশ্যৎ) জ্ঞানদৃষ্টি দ্বারা দেখে, (তস্মিন্) তাহাতে (ইদম্) এই (সর্বম্) সকল জগৎ (সম্, এতি) প্রলয় সময়ে সঙ্গত হয় (চ) এবং উৎপত্তি সময়ে (বি) পৃথক স্থুলরূপ (চ) ও হয় (সঃ) তিনি (বিভুঃ) বিবিধ প্রকার ব্যাপ্ত হইয়া (প্রজাষু) প্রজাদিগের মধ্যে (ওতঃ) ঊর্ধ্বতন্তুতে যেমন বস্ত্র (চ) তথা (প্রোতঃ) তির্য্যক তন্তুতে যেমন বস্ত্র তদ্রূপ ওতপ্রোত হইয়া আছেন তিনিই সকলের উপাসনা করিবার যোগ্য ॥ ৮ ॥

ভাবার্থঃ–হে মনুষ্যগণ! বিদ্বানই যাহাকে বুদ্ধি বল দ্বারা জানে, যাহা সব আকাশাদি পদার্থের আধার, প্রলয় সময়ে সব জগৎ যাহাতে লীন হয় এবং উৎপত্তি সময়ে যাহা হইতে বাহির হয় এবং যে ব্যাপ্ত ঈশ্বর ব্যতীত কোনও বস্তু খালি নয়, তাহাকে ছাড়িয়া কোন অন্যকে উপাস্য জানিবে না ॥ ৮ ॥

পদার্থঃ (বেনঃ) ব্রহ্মজ্ঞানী ব্যক্তি (তৎ) সেই ব্রহ্মকে যিনি (গুহানিহিতম্) বুদ্ধিরূপী গুহাতে  স্থিত তথা (সৎ) তিন কালে বর্তমান, নিত্য, তাঁকে (পশ্যৎ) প্রত্যক্ষ অনুভব করেন। (যত্র) যেই ব্রহ্মে (বিশ্বম্ ) সারা সংসার (এক নীড়ম্ ) এক আশ্রয়কে (ভবতি) প্রাপ্ত হয়, (তস্মিন্) সেই ব্রহ্মে (ইদম্ সর্বম্) এই সমস্ত জগৎ (সম্ এতি চ) প্রলয়কালে সংগত হয় অর্থাৎ লীন হয় এবং উৎপত্তিকালে (বিএতি চ) পৃথক স্থূল রূপকেও প্রাপ্ত হয়। (সঃ) সেই জগদীশ (বিভূঃ) বিবিধ প্রকার ব্যাপ্ত হয়ে (প্রজাসু) প্রজাদের মধ্যে ( ওতঃ প্রোতঃ চ) ওতপ্রোত।

ভাবার্থঃ ব্রহ্মজ্ঞানী ব্যক্তি সেই ব্রহ্মকে নিজের বুদ্ধিরূপী গুহাতে স্থিত দেখেন, যে ব্রহ্ম সত্য হওয়ার কারণে নিত্য, ত্রিকালে অবধ্য এবং সকল সংসারের আশ্রয়। এই জগৎ প্রলয়কালে যাঁর মধ্যে লীন হয় এবং উৎপত্তিকালে যাঁর থেকে প্রকট হয়ে স্থূলরূপকে প্রাপ্ত হয় এবং নির্মিত সকল জগতে যিনি ব্যাপ্ত, সেই ব্রহ্মকেই ব্রহ্মজ্ঞানী জানেন এবং অনুভব করে কৃতার্থ হন।।১৫।। [অচ্যুতানন্দ সরস্বতী]

প্র তদিত্যস্য স্বয়ম্ভু ব্রহ্ম ঋষিঃ । বিদ্বান্ দেবতা । নিচৃৎ ত্রিষ্টুপ্ ছন্দঃ ।
ধৈবতঃ স্বরঃ ॥

প্র তদ্বো॑চেদ॒মৃতং॒ নু বি॒দ্বান্ গ॑ন্ধ॒র্বো ধাম॒ বিভৃ॑তং॒ গৃহা॒ সৎ ।

ত্রীণি॑ প॒দানি॒ নিহি॑তা॒ গুহা॑স্য॒ য়স্তানি॒ বেদ॒ স পি॒তুঃ পি॒তাऽস॑ৎ ॥ ঌ ॥


পদার্থঃ–হে মনুষ্যগণ! (য়ঃ) যে (গন্ধর্ব) বেদবাণীর ধারক (বিদ্বান্) পন্ডিত (গুহা) বুদ্ধিতে (বিভৃতম্) বিশেষ ধারণ কৃত (অমৃতম্) নাশরহিত (ধাম) মুক্তির স্থান (তৎ) সেই (সৎ) নিত্য চেতন ব্রহ্মের (নু) শীঘ্র (প্র, বোচেৎ) গুণ-কর্ম-স্বভাবের সহিত উপদেশ করিবে এবং যে (অস্য) এই অবিনাশী ব্রহ্মের (গুহা) জ্ঞানে (নিহিতা) স্থিত (পদানি) জানিবার যোগ্য (ত্রীণি) তিন উৎপত্তি, স্থিতি, প্রলয় অথবা ভূত, ভবিষ্যৎ, বর্ত্তমান কাল, (তানি) তাহাদেরকে (বেদ) জানে (সঃ) সে (পিতুঃ) স্বীয় পিতা বা সর্বরক্ষক ঈশ্বরের (পিতা) জ্ঞান দাতা বা আস্তিকত্ব দ্বারা রক্ষক (অসৎ) হউক ॥ ঌ ॥

ভাবার্থঃ–হে মনুষ্যগণ! যে সব বিদ্বান্গণ ঈশ্বরের মুক্তি সাধক বুদ্ধিস্থ স্বরূপের উপদেশ করিবেন, সঠিক পদার্থগুলির এবং ঈশ্বরের গুণ, কর্ম, স্বভাবকে জানিবেন, তাঁহারা আয়ুতে বড় পিতাদিকেও রক্ষার যোগ্য হইয়া থাকেন, এইরকম জানিবে ॥ ঌ ॥

স ন ইত্যস্য স্বয়ম্ভু ব্রহ্ম ঋষিঃ । পরমাত্মা দেবতা । নিচৃৎ ত্রিষ্টুপ্ ছন্দঃ ।
ধৈবতঃ স্বরঃ ॥

স নো॒ বন্ধু॑র্জনি॒তা স বি॑ধা॒তা ধামা॑নি বেদ॒ ভুব॑নানি॒ বিশ্বা॑ ।

য়ত্র॑ দে॒বাऽ অ॒মৃত॑মানশা॒নাস্তৃ॒তীয়ে॒ ধাম॑ন্ন॒ধ্যৈর॑য়ন্ত ॥ ১০ ॥


পদার্থঃ–হে মনুষ্যগণ! (য়ত্র) যে (তৃতীয়ে) জীব ও প্রকৃতি হইতে বিলক্ষণ (ধামন্) আধাররূপ জগদীশ্বরে (অমৃতম্) মোক্ষ সুখকে (আনশানাঃ) প্রাপ্ত হইয়া (দেবাঃ) বিদ্বান্গণ (অধ্যৈরয়ন্ত) সর্বত্র স্বীয় ইচ্ছাপূর্বক বিচরণ করেন, যিনি (বিশ্বা) সমস্ত (ভুবনানি) লোক-লোকান্তরসকল এবং (ধামানি) জন্ম, স্থান, নামকে (বেদ) জানেন, (সঃ) সেই পরমাত্মা (নঃ) আমাদের (বন্ধুঃ) ভ্রাতা মান্য সহায়ক (জনিতা) জনয়িতা (সঃ) তিনি (বিধাতা) সকল পদার্থ ও কর্মফলের বিধান করেন, ইহা নিশ্চয় কর ॥ ১০ ॥

ভাবার্থঃ–হে মনুষ্যগণ! যে শুদ্ধ স্বরূপ পরমাত্মায় যোগিরাজ বিদ্বান্গণ মুক্তিসুখ প্রাপ্ত হইয়া আনন্দ করেন, তাঁহাকেই সর্বজ্ঞ, সর্বোৎপাদক এবং সর্বদা সাহায্যকারী মানা উচিত, অন্যকে নহে ॥ ১০ ॥

পরীত্যেত্যস্য স্বয়ম্ভু ব্রহ্ম ঋষিঃ । পরমাত্মা দেবতা । নিচৃৎত্রিষ্টুপ্ ছন্দঃ ।
ধৈবতঃস্বরঃ ॥

প॒রীত্য॑ ভূ॒তানি॑ প॒রীত্য॑ লো॒কান্ প॒রীত্য॒ সর্বাঃ॑ প্র॒দিশো॒ দিশ॑শ্চ ।

উ॒প॒স্থায়॑ প্রথম॒জামৃ॒তস্যা॒ত্মনা॒ऽऽত্মান॑ম॒ভি সং বি॑বেশ ॥ ১১ ॥


পদার্থঃ–হে বিদ্বন্! যে (ভূতানি) প্রাণিদিগকে (পরীত্য) সকল দিকদিয়া ব্যাপ্ত হইয়া (লোকান্) পৃথিবী সূর্য্যাদি লোককে (পরীত্য) সকল দিক দিয়া ব্যাপ্ত হইয়া (চ) এবং উপর নীচে (সর্বাঃ) সব (প্রদিশঃ) আগ্নেয়াদি উপদিশা তথা (দিশঃ) পূর্বাদি দিকগুলিকে (পরীত্য) সব দিক দিয়া ব্যাপ্ত হইয়া (ঋতস্য) সত্যের (আত্মানম্) স্বরূপ বা অধিষ্ঠানকে (অভি, সম্ বিবেশ) সম্মুখতা দ্বারা সম্যক প্রবেশ করেন, (প্রথমজাম) প্রথম কল্লাদিতে উৎপন্ন চারিবেদ রূপ বাণীকে (উপস্থায়) পড়িয়া বা সম্যক্ সেবন করিয়া (আত্মনা) স্বীয় শুদ্ধস্বরূপ বা অন্তঃকরণ দ্বারা সেই ঈশ্বরকে প্রাপ্ত করুন ॥ ১১ ॥

ভাবার্থঃ–হে মনুষ্যগণ! তোমরা ধর্মের আচরণ, বেদ ও যোগের অভ্যাস তথা সৎসঙ্গাদি কর্ম্মের দ্বারা শরীরের পুষ্টি এবং আত্মা তথা অন্তঃকরণের শুদ্ধিকে সম্পাদন করিয়া সর্বত্র অভিব্যাপ্ত পরমাত্মাকে প্রাপ্ত হইয়া সুখী হও ॥ ১১ ॥
 
পরীত্যস্য স্বয়ম্ভু ব্রহ্ম ঋষিঃ । পরমাত্মা দেবতা । ত্রিষ্টুপ্ ছন্দঃ ।
ধৈবতঃস্বরঃ ॥

পরি॒ দ্যাবা॑পৃথি॒বী স॒দ্যऽ ই॒ত্বা পরি॑ লো॒কান্ পরি॒ দি॒শঃ পরি॒ স্বঃ᳖ ।

ঋ॒তস্য॒ তন্তুং॒ বিত॑তং বি॒চৃত্য॒ তদ॑পশ্য॒ৎ তদ॑ভব॒ৎ তদা॑সীৎ ॥ ১২ ॥


পদার্থঃ–হে মনুষ্যগণ! যে পরমেশ্বর (দ্যাবাপৃথিবী) সূর্য্য ও ভূমিকে (সদ্যঃ) শীঘ্র (ইত্বা) প্রাপ্ত হইয়া (পরি, অপশ্যৎ) সব দিক দিয়া লক্ষ্য করেন, যিনি (লোকান্) দর্শনীয় সৃষ্টিস্থ ভূগোলসমূহকে শীঘ্র প্রাপ্ত হইয়া (পরি, অভবৎ) সকল দিক দিয়া প্রকট হন, যিনি (দিশা) পূর্বাদি দিকগুলিকে শীঘ্র প্রাপ্ত হইয়া (পরি, আসীৎ) সব দিক দিয়া বিদ্যমান, যিনি (স্বঃ) সুখকে শীঘ্র প্রাপ্ত করাইয়া (পরি) সব দিক দিয়া লক্ষ্য করেন, যিনি (ঋতস্য) সত্যের (বিততম্) বিস্তৃত (তন্তুম্) কারণকে (বিচৃত্য) বিবিধ প্রকারে বন্ধন করিয়া (তৎ) সেই সুখকে দেখেন যদ্দ্বারা (তৎ) সেই সুখ হইয়াছে এবং যদ্দ্বারা (তৎ) সেই বিজ্ঞান হইয়াছে তাহাকে যথাবৎ জানিয়া উপাসনা কর ॥ ১২ ॥

ভাবার্থঃ–যে সব মনুষ্য পরমেশ্বরেরই ভজন করে এবং তাঁহার দ্বারা রচিত সৃষ্টিকে সুখের জন্য উপযোগে আনে তাহারা এই লোক, পরলোক ও বিদ্যা দ্বারা উৎপন্ন সুখকে শীঘ্র প্রাপ্ত হইয়া নিরন্তর আনন্দিত হয় ॥ ১২ ॥

সদসস্পতিমিত্যস্য মেধাকাম ঋষিঃ । ইন্দ্রো দেবতা । ভুরিগ্গায়ত্রী ছন্দঃ ।
ষড্জঃ স্বরঃ ॥

সদ॑স॒স্পতি॒মদ্ভু॑তং প্রি॒য়মিন্দ্র॑স্য॒ কাম্য॑ম্ ।

স॒নিং মে॒ধাম॑য়াসিষ॒ꣳ স্বাহা॑ ॥ ১৩ ॥


পদার্থঃ–হে মনুষ্যগণ! আমি (স্বাহা) সত্য ক্রিয়া বা বাণী দ্বারা যে (সদসঃ) সভা, জ্ঞান, ন্যায় বা দন্ডের (পতিম্) রক্ষক (অদ্ভুতম্) আশ্চর্য্য গুণ, কর্ম, স্বভাবযুক্ত (ইন্দ্রস্য) ইন্দ্রিয়দের স্বামী জীবের (কাম্যম্) কাম্য (প্রিয়ম্) প্রীতির বিষয়, প্রসন্নকারী বা প্রসন্নরূপ পরমাত্মার উপাসনা এবং সেবা করিয়া (সনিম্) সত্য-অসত্যের যদ্দ্বারা সম্যক্ বিভাগ করা হয় সেই (মেধাম্) উত্তম বুদ্ধিকে (অয়াসিষম্) প্রাপ্ত হইব, সেই ঈশ্বরের সেবা করিয়া এই বুদ্ধিকে তোমরাও প্রাপ্ত হও ॥ ১৩ ॥

ভাবার্থঃ–যে সব মনুষ্য সর্বশক্তিমান্ পরমাত্মার সেবন করে তাহারা সকল বিদ্যাগুলিকে প্রাপ্ত করিয়া শুদ্ধ বুদ্ধি দ্বারা সকল সুখ লাভ করিয়া থাকে ॥ ১৩ ॥

মনুষ্যদিগকে ঈশ্বরের নিকট বুদ্ধির যাচনা করা প্রয়োজন, এই বিষয়কে বলা হইতেছে ॥

য়ামিত্যস্য মেধাকাম ঋষিঃ । পরমাত্মা দেবতা । নিচৃদনুষ্টুপ্ ছন্দঃ । গান্ধারঃ স্বরঃ ॥

য়াং মে॒ধাং দে॑বগ॒ণাঃ পি॒তর॑শ্চো॒পাস॑তে ।

তয়া॒ মাম॒দ্য মে॒ধয়াऽগ্নে॑ মে॒ধাবি॑নং কুরু॒ স্বাহা॑ ॥ ১৪ ॥


পদার্থঃ–হে (অগ্নে) স্বয়ং প্রকাশরূপ হওয়ায় বিদ্যাজ্ঞাপক ঈশ্বর বা অধ্যাপক বিদ্বান্! (দেবগণঃ) বহু বিদ্বান্ (চ) এবং (পিতরঃ) রক্ষক জ্ঞানীগণ (য়াম্) যে (মেধাম্) বুদ্ধি বা ধনকে (উপাসতে) প্রাপ্ত হইয়া সেবন করেন (তথা) সেই (মেধয়া) বুদ্ধি বা ধন দ্বারা (মাম্) আমাকে (অদ্য) আজ (স্বাহা) সত্যবাণী দ্বারা (মেধাবিনম্) প্রশংসিত বুদ্ধি বা ধনসম্পন্ন (কুরু) করুন ॥ ১৪ ॥

ভাবার্থঃ–মনুষ্যগণ পরমেশ্বরের উপাসনা এবং আপ্ত বিদ্বানের সম্যক্ সেবা করিয়া শুদ্ধ বিজ্ঞান ও ধর্ম দ্বারা হওয়া ধনকে প্রাপ্ত হওয়ার ইচ্ছা করিবে এবং অন্যান্যকেও এইরূপ প্রাপ্ত করাইবে ॥ ১৪ ॥

মেধামিত্যস্য মেধাকাম ঋষিঃ । পরমেশ্বরবিদ্বাংসৌ দেবতে । নিচৃদ্ বৃহতী ছন্দঃ । মধ্যমঃ স্বরঃ ॥

মে॒ধাং মে॒ বর॑ুণো দদাতু মে॒ধাম॒গ্নিঃ প্র॒জাপ॑তিঃ ।

মে॒ধামিন্দ্র॑শ্চ বা॒য়ুশ্চ॑ মে॒ধাং ধা॒তা দ॑দাতু মে॒ স্বাহা॑ ॥ ১৫ ॥


পদার্থঃ–হে মনুষ্যগণ! যেমন (বরুণঃ) অতি শ্রেষ্ঠ পরমেশ্বর বা বিদ্বান্ (স্বাহা) ধর্মযুক্ত ক্রিয়া দ্বারা (মে) আমার জন্য (মেধাম্) শুদ্ধ বুদ্ধি বা ধনকে (দদাতু) প্রদান করিবে, (অগ্নিঃ) বিদ্যা দ্বারা প্রকাশিত (প্রজাপতিঃ) প্রজার রক্ষক (মেধাম্) বুদ্ধিকে প্রদান করিবে, (ইন্দ্রঃ) পরম ঐশ্বর্য্যবান্ (মেধাম্) বুদ্ধিকে প্রদান করিবে (চ) এবং (বায়ুঃ) বলদাতা বলবান্ (মেধাম্) বুদ্ধিকে প্রদান করিবে (চ) এবং (ধাতা) সকল সংসার বা রাজ্যের ধারক ঈশ্বর বা বিদ্বান্ (মে) আমার জন্য বুদ্ধি ধনকে (দদাতু) প্রদান করিবে তদ্রূপ তোমাদিগকে প্রদান করিবে ॥ ১৫ ॥

ভাবার্থঃ–মনুষ্য যেমন নিজের জন্য গুণ, কর্ম, স্বভাব ও সুখ চাহে তদ্রূপ অন্যদের জন্য চাহিবে । যেমন নিজের উন্নতির কামনা কর সেইরূপ পরমেশ্বর ও বিদ্বান্দের নিকট হইতে অন্যান্যদের উন্নতির জন্য প্রার্থনা করিবে । কেবল প্রার্থনাই করিবে না কিন্তু সত্য আচরণও করিবে । যখন যখন বিদ্বান্দিগের নিকটে যাইবে তখন তখন সকলের কল্যাণ হেতু প্রশ্ন ও উত্তর করিতে থাকিবে ॥ ১৫ ॥

ইদং ম ইত্যস্য শ্রীকাম ঋষিঃ । বিদ্বদ্রাজানৌ দেবতে । অনুষ্টুপ্ ছন্দঃ । গান্ধারঃ স্বরঃ ॥

ই॒দং মে॒ ব্রহ্ম॑ চ ক্ষ॒ত্রং চো॒ভে শ্রিয়॑মশ্নুতাম্ ।

ময়ি॑ দে॒বা দ॑ধতু॒ শ্রিয়॒মুত্ত॑মাং॒ তস্যৈ॑ তে॒ স্বাহা॑ ॥ ১৬ ॥


পদার্থঃ–হে পরমেশ্বর ! আপনার কৃপা এবং হে বিদ্বান্! আপনার পুরুষার্থ বলে (স্বাহা) সত্যাচরণ রূপ ক্রিয়া দ্বারা (মে) আমার (ইদম্) এইগুলি (ব্রহ্ম) বেদ, ঈশ্বরের বিজ্ঞান বা তাহার জ্ঞাতা পুরুষ (চ) এবং (ক্ষত্রম্) রাজ্য, ধনুর্বেদ বিদ্যা এবং ক্ষত্রিয়কুল (চ) ও এই (উভে) উভয়ে (শ্রিয়ম্) রাজ্যের লক্ষ্মীকে (অশ্নুতাম্) প্রাপ্ত হউক, যেমন (দেবাঃ) বিদ্বান্গণ (ময়ি) আমার নিমিত্ত (উত্তমাম্) অতিশ্রেষ্ঠ (শ্রিয়ম্) শোভা বা লক্ষ্মীকে (দধতু) ধারণ করিবে । হে জিজ্ঞাসু ব্যক্তি, (তে) তোমার জন্যও (তস্যৈ) সেই শ্রী হেতু আমরা প্রযত্ন করিব ॥ ১৬ ॥

ভাবার্থঃ–এই মন্ত্রে বাচকলুপ্তোপমালঙ্কার আছে । যে সকল মনুষ্য পরমেশ্বরের আজ্ঞাপালন এবং বিদ্বান্দিগের সেবা সৎকার দ্বারা সকল মনুষ্যদিগের মধ্যে ব্রাহ্মণ, ক্ষত্রিয়কে সুন্দর শিক্ষা, বিদ্যাদি সদ্গুণ দ্বারা সংযুক্ত এবং সকলের উন্নতির বিধান করিয়া স্বীয় আত্মার তুল্য সকলের সহিত ব্যবহার করিবে তাহারা সকলের পূজনীয় হইবে ॥ ১৬ ॥


এই অধ্যায়ে পরমেশ্বর, বিদ্বান্ ও বুদ্ধি তথা ধনের প্রাপ্তির উপায়গুলির বর্ণনা হওয়ায় এই অধ্যায়ে কথিত অর্থের পূর্ব অধ্যায়ে কথিত অর্থ সহ সঙ্গতি জানা উচিত ॥


ইতি শ্রীমৎপরমহংসপরিব্রাজকাচার্য়াণাং পরমবিদুষাং শ্রীয়ুতবিরজানন্দসরস্বতীস্বামিনাং শিষ্যেণ পরমহংসপরিব্রাজকাচার্য়েণ শ্রীমদ্দয়ানন্দসরস্বতীস্বামিনা নির্মিতে সুপ্রমাণয়ুক্তে সংস্কৃতার্য়্যভাষাভ্যাং বিভূষিতে
য়জুর্বেদভাষ্যে দ্বাত্রিংশোऽধ্যায়ঃ পূর্ত্তিমগমৎ ॥


















No comments:

Post a Comment

ধন্যবাদ

বৈশিষ্ট্যযুক্ত পোস্ট

ঋগ্বেদ ১/২৫/১৮

  আজীগর্ত্তি শুনঃশেপ ঋষিঃ। বরুণঃ ( বিদ্বান্) দেবতা। গায়ত্রী-ছন্দঃ। ষড়জ-স্বরঃ।। দর্শ নু বিশ্বদর্শতম্ দর্শ রথমধি ক্ষমি। এতা জুষত মে গিরঃ।। ঋগ্...

Post Top Ad

ধন্যবাদ