ঊর্গসীত্যস্যাঙ্গিরস ঋষয়ঃ । য়জ্ঞো দেবতা । কৃধীত্যন্তস্য নিচৃদার্ষী জগতী ছন্দঃ । নিষাদঃ স্বরঃ । উচ্ছ্রয়স্বেত্যস্য সাম্নী ত্রিষ্টুপ্ ছন্দঃ । ধৈবতঃ স্বরঃ ॥
ঊর্গ॑স্যাঙ্গির॒সূ্যর্ণ॑ম্রদা॒ऽঊর্জং॒ ময়ি॑ ধেহি । সোম॑স্য নী॒বির॑সি॒ বিষ্ণোঃ॒ শর্মা॑সি॒ শর্ম॑ য়জ॑মান॒স্যেন্দ্র॑স্য॒ য়োনি॑রসি সুস॒স্যাঃ কৃ॒ষীস্কৃ॑ধি । উচ্ছ্র॑য়স্ব বনস্পতऽঊ॒র্ধ্বো মা॑ পা॒হ্যꣳহ॑স॒ऽআऽস্য য়॒জ্ঞস্যো॒দৃচঃ॑ ॥ ১০ ॥
পদার্থঃ- হে (বনস্পতে) প্রকাশনীয় বিদ্যাসকলের প্রচারকারী বিদ্বান্ মনুষ্য ! তুমি যে (অঙ্গিরসি) অগ্নি ইত্যাদি পদার্থ দ্বারা সিদ্ধ কৃত (ঊর্ণম্রদাঃ) আচ্ছাদানের প্রকাশ অথবা (ঊর্ক্) পরাক্রম তথা অন্নাদি করিবার শিল্পবিদ্যা (অসি) আছে অথবা যাহা (ঊর্জম্) পরাক্রম বা অন্নাদিকে ধারণ করে, যা (সোমস্য) উৎপন্ন পদার্থসমূহের (নীবিঃ) সংবরণকারিনী (অসি), (বিষ্ণোঃ) শিল্পবিদ্যায় ব্যাপক বুদ্ধি (য়জমানস্য) শিল্পক্রিয়ার জ্ঞাতা (ইন্দ্রস্য) পরমেশ্বর্য্যযুক্ত মনুষ্যের (শর্ম) সুখের (য়োনিঃ) নিমিত্ত (অসি) আছে, যাহা (অস্য) এই (উদৃচঃ) ঋচাগুলিকে প্রত্যক্ষকারী (য়জ্ঞস্য) শিল্পক্রিয়া-সাধ্য যজ্ঞের (শর্ম) সুখ কারিণী (অসি) হয় তাহাকে (ময়ি) শিল্পবিদ্যা জানিতে ইচ্ছুক আমাতে (আ ধেহি) সম্যক্ পূর্বক ধারণ করিয়া (সুমস্যাঃ) উত্তম-উত্তম ধান্য উৎপন্ন করিতে বা (কৃষীঃ) কৃষি অথবা আকর্ষণকারী ক্রিয়াগুলিকে (কৃধি) সিদ্ধ করিয়া (ঊর্ধ্বঃ) উপর স্থিত হওয়া (মা) আমাকে (উচ্ছয়স্ব) উত্তম ধান্যযুক্ত কৃষির সেবন করাও এবং (অংহসঃ) পাপ বা দুঃখ হইতে (পাহি) রক্ষা কর । যে বিমানাদি যানসকল ও যজ্ঞে (বনস্পতে) বৃক্ষের শাখা উচ্চে স্থাপন করা হয় উহাও (উচ্ছ্রয়স্ব) কাজে লাগাও ॥ ১০ ॥
ভাবার্থঃ- মনুষ্যদিগকে বিদ্বান্দিগের সামীপ্যে সাক্ষাৎকার ও প্রচার করিয়া সকল মনুষ্যকে সমৃদ্ধিযুক্ত করা উচিত ॥ ১০ ॥ [শত০ ৩।২।১।১৪-৩৫ ব্রহ্মণে মন্ত্র ব্যখ্যা রয়েছে]
এখন অনেক অর্থ সম্পন্ন অগ্নিকে জানিয়া তদ্দ্বারা কী কী উপকার লওয়া উচিত এই বিষয়ের উপদেশ পরবর্ত্তী মন্ত্রে করা হইয়াছে ॥
ব্রতং কৃণুতেত্যস্যাঙ্গিরস ঋষয়ঃ । অগ্নির্দেবতা । পূর্বস্য স্বরাড্ ব্রাহ্ম্যনুষ্টুপ্ ছন্দঃ । গান্ধারঃ স্বরঃ । য়ে দেবা ইত্যুত্তরস্যার্ষ্যুষ্ণিক্ ছন্দঃ । ঋষভঃ স্বরঃ ॥
ব্র॒তং কৃ॑ণুতা॒গ্নির্ব্রহ্মা॒গ্নির্য়॒জ্ঞো বন॒স্পতি॑র্য়॒জ্ঞিয়ঃ॑ । দৈবীং॒ ধিয়ং॑ মনামহে সুমৃডী॒কাম॒ভিষ্ট॑য়ে বর্চো॒ধাং য়॒জ্ঞবা॑হসꣳ সুতী॒র্থা নো॑ऽঅস॒দ্বশে॑ । য়ে দে॒বা মনো॑জাতা মনো॒য়ুজো॒ দক্ষ॑ক্রতব॒স্তে নো॒ऽবন্তু॒ তে নঃ॑ পান্তু॒ তেভ্যঃ॒ স্বাহা॑ ॥ ১১ ॥
পদার্থঃ- আমরা যাহা (ব্রহ্ম) ব্রহ্মপদবাচ্য (অগ্নিঃ) অগ্নি নামে প্রসিদ্ধ (অসৎ) আছে, যাহা (য়জ্ঞ) অগ্নিসংজ্ঞক এবং যাহা (বনস্পতিঃ) বনের পালক যজ্ঞ (অগ্নিঃ) অগ্নি নামক তাহারই উপাসনা করিয়া অথবা উহা হইতে উপকার লইয়া (অভিষ্টয়ে) [উণা০ ৪।২৪] ইষ্ট সিদ্ধি হেতু যাহা (সুতীর্থা) যদ্দ্বারা অত্যুত্তম দুঃখ হইতে তরণকারী বেদাধ্যায়নাদি তীর্থ প্রাপ্ত হইয়া থাকে, সেই (সুমৃডীকাম্) উত্তম সুখযুক্ত (বর্চোধাম্) [অষ্টা০বা০ ৬।১।৯৪] বিদ্যা বা দীপ্তি ধারণ করিতে তথা (দৈবীম্) দিব্যগুণ সম্পন্ন (ধিয়ম্) বুদ্ধি বা ক্রিয়াকে (মনামহে) [নিঘ০ ৩।১৯] জানি । (য়ে) যাহারা (দক্ষক্রতবঃ) [নিঘ০ ২।৯] শরীর, আত্মার বল, প্রজ্ঞা বা কর্ম দ্বারা যুক্ত (মনোজাতাঃ) বিজ্ঞান হইতে উৎপন্ন (মনোয়ুজঃ) সৎ-অসৎ জ্ঞানযুক্ত (দেবাঃ) বিদ্বান্গণ (বশে) প্রকাশযুক্ত কর্মে বর্ত্তমান অথবা যাহা হইতে (স্বাহা) বিদ্যাযুক্ত বাণী প্রাপ্ত হয় (তেভ্যঃ) তাহার নিকট পূর্বোক্ত প্রজ্ঞার (মনামহে) যাচনা করি (তে) তাহারা (নঃ) আমাদিগের (অবন্তু) বিদ্যা, উত্তম ক্রিয়া তথা শিক্ষাদিতে প্রবেশ করাক্ এবং (নঃ) আমাদিগকে নিরন্তর (পান্তু) রক্ষা করিতে থাকুক ॥ ১১ ॥
ভাবার্থঃ- মনুষ্যদিগকে, যাহার অগ্নি সংজ্ঞা, সেই ব্রহ্মকে জানিয়া এবং তাহার উপাসনা করিয়া উত্তম বুদ্ধি প্রাপ্ত করা উচিত । বিদ্বান্ লোকেরা যে বুদ্ধি দ্বারা যজ্ঞকে সিদ্ধ করেন তদ্দ্বারা শিল্পবিদ্যাকারক যজ্ঞ সিদ্ধ করিয়া বিদ্বান্দিগের সঙ্গ দ্বারা বিদ্যা প্রাপ্ত হইয়া স্বতন্ত্র ব্যবহারে সর্বদা থাকা উচিত । কেননা বুদ্ধি বিনা কোনও মনুষ্য সুখ বৃদ্ধি করিতে পারে না । এইজন্য বিদ্বান্ মনুষ্যদিগের উচিত যে, সকল মনুষ্যদিগের জন্য ব্রহ্মবিদ্যা ও পদার্থ বিদ্যা এবং বুদ্ধি শিক্ষা করিয়া অবিরত রক্ষা করুন এবং তাহারা রক্ষা প্রাপ্ত হওয়া মনুষ্য পরমেশ্বর বা বিদ্বান্দিগের উত্তম-উত্তম প্রিয় কর্মের আচরণ করিতে থাকুক ॥ ১১ ॥ এই মন্ত্র শত০ ৩।২।২।৭-১৮ ব্রাহ্মণে ব্যাখ্যা রয়েছে
ইহার অনুষ্ঠান করিয়া ভবিষ্যতে মনুষ্যদিগকে কী কী করা উচিত, এই বিষয়ের উপদেশ পরবর্ত্তী মন্ত্রে করা হইয়াছে ॥
শ্বাত্রা ইত্যস্যাঙ্গিরস ঋষয়ঃ । আপো দেবতাঃ । ভুরিগ্ ব্রাহ্ম্যনুষ্টুপ্ ছন্দঃ । গান্ধারঃ স্বরঃ ॥
শ্বা॒ত্রাঃ পী॒তা ভ॑বত য়ূ॒য়মা॑পোऽঅ॒স্মাক॑ম॒ন্তরু॒দরে॑ সু॒শেবাঃ॑ ।
তাऽঅ॒স্মভ্য॑ময়॒ক্ষ্মাऽ অ॑নমী॒বাऽ অনা॑গসঃ॒ স্বদ॑ন্তু দে॒বীর॒মৃতা॑ऽ ঋতা॒বৃধঃ॑ ॥ ১২ ॥
পদার্থঃ- হে মনুষ্যগণ ! শ্বত্রাঃ=[শ্বি, ত্রা] বৃদ্ধি বা রক্ষার কারণ [অষ্টা০ ৫।২।১২৭] যাহা আমরা (পীতাঃ) নিঘ০ ২।১০ পান করিয়াছি, (অস্মাকম্) মনুষ্যদিগের (অন্তঃ) মধ্য বা (উদরে) শরীরের ভিতর স্থিত (অস্মভ্যম্) মনুষ্যাদির জন্য (সুশেবাঃ) উত্তম সুখযুক্ত (অনমীবাঃ) জ্বরাদি রোগ-সমূহ হইতে রহিত (অয়ক্ষ্মা) ক্ষয়াদি রোগকারক দোষ হইতে রহিত (অনাগসঃ) পাপ-দোষ নিমিত্ত হইতে পৃথক (ঋতাবৃধঃ) ঋতস্য=যজ্ঞস্য- নিরুক্ত০ ৪।১৯ সত্য বৃদ্ধি করিবার অথবা (অমৃতাঃ) [অষ্টা০ ৬।১।১০৬] নাশরহিত অমৃত রসযুক্ত (দেবীঃ) দিব্যগুণ সম্পন্ন (আপঃ) প্রাণ বা জল (তাঃ) তাহা তোমরা (স্বদন্তু) সম্যক্ প্রকার সেবন করিতে থাক । ইহার অনুষ্ঠান করিয়া (য়ুয়ম্) তোমরা সকল মনুষ্য সুখ ভোগকারী (ভবত) নিত্য হও ॥ ১২ ॥
ভাবার্থঃ- মনুষ্যদিগকে বিদ্বান্দিগের সঙ্গ, উত্তম শিক্ষা দ্বারা বিদ্যা প্রাপ্ত করিয়া ভাল প্রকার পরীক্ষিত শুদ্ধ কৃত, শরীর ও আত্মার বল বৃদ্ধি করিবার এবং রোগ সকলকে দূর করিবার জলাদি পদার্থের সেবন করা উচিত কেননা বিদ্যা বা আরোগ্যতা বিনা কোনও মনুষ্য অবিরত কর্ম করিতে সক্ষম হইতে পারে না । এইজন্য এই কার্য্যের সর্বদা অনুষ্ঠান করা উচিত ॥ ১২ ॥
উক্ত মন্ত্র শত০ ৩।২।২।১৯ ব্রহ্মণে ব্যাখ্যা রয়েছে
ইয়ন্ত ইত্যস্যাঙ্গিরস ঋষয়ঃ । আপো দেবতা । ভুরিগার্ষী বৃহতী ছন্দঃ । মধ্যমঃ স্বরঃ ॥
ই॒য়ং তে॑ য়॒জ্ঞিয়া॑ ত॒নূর॒পো মু॑ঞ্চামি॒ ন প্র॒জাম্ ।
অ॒ꣳহো॒মুচঃ॒ স্বাহা॑কৃতাঃ পৃথি॒বীমা বি॑শত পৃথি॒ব্যা সং ভ॑ব ॥ ১৩ ॥
পদার্থঃ- হে বিদ্বান্ মনুষ্য ! যেমন (তে) তোমার (ইয়ম্) এই যে (য়জ্ঞিয়া) যজ্ঞের যোগ্য (তনূঃ) শরীর (অপঃ) জল, প্রাণ বা (প্রজাম্) প্রজাকে রক্ষা করে, যাহাকে তুমি ত্যাগ করনা । আমিও নিজের সেই শরীর ব্যতীত পূর্ণ আয়ু ভোগ করিয়া প্রমাদের মধ্যে (ন মুঞ্চামি) ত্যাগ করি না । হে মনুষ্যগণ । যেমন তোমরা (পৃথিব্যা) ভূমি সহ বৈভবযুক্ত হইয়া (অংহোমুচঃ) দুঃখ হইতে মুক্ত হইতে বা (স্বাহাকৃতাঃ) বাণী দ্বারা সিদ্ধ কৃত (অপঃ) জল ও (পৃথিবীম্) ভূমিকে (আবিশত) সম্যক্ প্রকার বিজ্ঞান দ্বারা প্রবেশ কর, আমি ইহার দ্বারা ঐশ্বর্য্যসহিত এবং ইহাতে প্রবিষ্ট হই সেইরূপ তোমরাও (সম্ভব) হও এবং প্রবেশ কর ॥ ১৩ ॥
ভাবার্থঃ- এই মন্ত্রে বাচকলুপ্তোপমালঙ্কার আছে । মনুষ্যদিগের উচিত যে, বিদ্যা দ্বারা পরস্পর পদার্থের মিশ্রণ ও সেবন করিয়া রোগরহিত শরীর তথা আত্মার রক্ষা করিয়া সুখী থাকা কর্ত্তব্য ॥ ১৩ ॥ শত০ ৩।২।২।২০-২১ ব্রাহ্মণে ব্যাখ্যা রয়েছে
অগ্নির গুণসকলের উপদেশ পরবর্ত্তী মন্ত্রে করা হইয়াছে ॥
অগ্নে ত্বমিত্যস্যাঙ্গিরস ঋষয়ঃ । অগ্নির্দেবতা । স্বরাডার্ষ্যুষ্ণিক্ ছন্দঃ । ঋষভঃ স্বরঃ ॥
অগ্নে॒ ত্বꣳ সু জা॑গৃহি ব॒য়ꣳ সু ম॑ন্দিষীমহি ।
রক্ষা॑ ণো॒ऽঅপ্র॑য়ুচ্ছন্ প্র॒বুধে॑ নঃ॒ পুন॑স্কৃধি ॥ ১৪ ॥
পদার্থঃ- (অগ্নে) যে অগ্নি (প্রবুধে) জাগিবার সময় (সুজাগৃহি) সম্যক্ প্রকার জাগ্রত করে বা যদ্দ্বারা (বয়ম্) জগতের কর্মানুষ্ঠানকারী আমরা (সুমন্দিষী মহি) আনন্দপূর্বক শয়ন করি । যাহা (অপ্রয়ুচ্ছন্) প্রমাদরহিত হইয়া (নঃ) প্রমাদ রহিত আমাদিগের (রক্ষ) রক্ষা তথা প্রমাদকারীদিগের ধ্বংস করে এবং যাহা (নঃ) আমাদিগের সহ (পুনঃ) বার বার এবম্বিধ (কৃধি) ব্যবহার করে, তাহার যুক্তি সহ সকল মনুষ্যকে সেবন করা উচিত ॥ ১৪ ॥
ভাবার্থঃ- মনুষ্যদিগের যে অগ্নি শয়ন করিবার, জাগৃত হইবার, বাঁচিবার তথা মরণের হেতু তাহা যুক্তি পূর্বক সেবন করা উচিত ॥ ১৪ ॥ শত০ ৩।২।২।২২ ব্রহ্মণে ব্যাখ্য়া রয়েছে
জীব অগ্নি, বায়ু ইত্যাদি পদার্থ সকলের নিমিত্তের দ্বারা জাগিবার সময় অথবা অন্য জন্মে প্রসিদ্ধ মনাদি ইন্দ্রিয় প্রাপ্ত করে, এই বিষয়ের উপদেশ পরবর্ত্তী মন্ত্রে করা হইয়াছে ॥
পুনর্মন ইত্যস্যাঙ্গিরস ঋষয়ঃ । অগ্নির্দেবতা । ব্রাহ্মী বৃহতী ছন্দঃ । মধ্যমঃ স্বরঃ ॥
পুন॒র্মনঃ॒ পুন॒রায়ু॑র্ম॒ऽআऽগ॒ন্ পুনঃ॑ প্রা॒ণঃ পুন॑রা॒ত্মা ম॒ऽআऽগ॒ন্ পুন॒শ্চক্ষুঃ॒ পুনঃ॒ শ্রোত্রং॑ ম॒ऽআऽগ॑ন্ । বৈ॒শ্বা॒ন॒রোऽদ॑ব্ধস্তনূ॒পাऽঅ॒গ্নির্নঃ॑ পাতু দুরি॒তাদ॑ব॒দ্যাৎ ॥ ১৫ ॥
পদার্থঃ- যাহার সম্পর্ক বা কৃপাবলে (মে) আমাকে যাহা (মনঃ) বিজ্ঞানসাধক মন (আয়ুঃ) আয়ু (পুনঃ) পুনঃ পুনঃ (আগন্) প্রাপ্ত হয়, (মে) আমাকে (প্রাণঃ) শরীরের আধার প্রাণ (পুনঃ) আবার (আগন্) প্রাপ্ত হয় । (আত্মা) সকলের মধ্যে ব্যাপক সকলের মধ্যেকার সকল কথা জানেন যে পরমাত্মার বিজ্ঞান উহা (আগন্) প্রাপ্ত হয়, (মে) আমাকে (চক্ষুঃ) দেখিবার জন্য চক্ষু (পুনঃ) পুনরায় (আগন্) প্রাপ্ত হয় এবং (শ্রোত্রম্) শব্দকে গ্রহণকারী কর্ণ (আগন্) প্রাপ্ত হয়, সেই (অদব্ধঃ) হিংসা করিবার অযোগ্য (তনূপাঃ) শরীর বা আত্মার রক্ষাকারী এবং (বৈশ্বানরঃ) শরীর প্রাপ্তকারী (অগ্নিঃ) অগ্নি বা বিশ্বকে প্রাপ্তকারী ঈশ্বর (নঃ) আমাদিগকে (অবদ্যাৎ) নিন্দিত (দুরিতাৎ) পাপ হইতে উৎপন্ন দুঃখ বা দুষ্ট কর্ম হইতে (পাতু) পালন করিয়া থাকেন ॥ ১৫ ॥
ভাবার্থঃ- এই মন্ত্রে শ্লেষালঙ্কার আছে । যখন জীব শয়ন করিবার বা মরণাদি ব্যবহার প্রাপ্ত হয় তখন যে যে মনাদি ইন্দ্রিয় নাশ হইবার সমান হইয়া পুনরায় জাগিবার বা জন্মান্তরে যে সব কার্য্য করিবার সাধন প্রাপ্ত হয় সেই সব ইন্দ্রিয় যে বিদ্যুতাগ্নি ইত্যাদির সম্পর্ক, পরমেশ্বরের অস্তিত্ব বা ব্যবস্থা দ্বারা শরীর যুক্ত হইয়া কার্য্য করিতে সক্ষম হয় । সেই সম্যক্ প্রকার সেবন কৃত জঠরাগ্নি সকলের রক্ষা করে এবং যাহা উপাসনা কৃত জগদীশ্বর পাপরূপ কর্ম হইতে পৃথক করিয়া ধর্মে প্রবৃত্ত করিয়া পুনঃ পুনঃ মনুষ্য জন্ম প্রাপ্ত করাইয়া দুষ্টাচার বা দুঃখ হইতে পৃথক করিয়া ইহলোক বা পরলোকের সুখ প্রাপ্ত করান, তিনি কেন উপযুক্ত ও উপাস্য হইবেন না? ॥ ১৫ ॥ শত০ ৩।২।২।২৩ ব্রহ্মণে ব্যাখ্য়া রয়েছে
ত্বমগ্নে ব্রতপা ইত্যস্য বৎস ঋষিঃ । অগ্নির্দেবতা । ভুরিগার্ষী পংক্তিশ্ছন্দঃ । পঞ্চমঃ স্বরঃ ॥
ত্বম॑গ্নে ব্রত॒পাऽঅ॑সি দে॒বऽআ মর্ত্যে॒ষ্বা । ত্বং য়॒জ্ঞেষ্বীড্যঃ॑ ।
রাস্বেয়॑ৎসো॒মা ভূয়ো॑ ভর দে॒বো নঃ॑ সবি॒তা বসো॑র্দা॒তা বস্ব॑দাৎ ॥ ১৬ ॥
পদার্থঃ- হে (সোম) ঐশ্বর্য্য প্রদাতা (অগ্নে) জগদীশ্বর ! (ত্বম্) আপনি (মর্ত্যেষু) মনুষ্যদিগের মধ্যে (ব্রতপাঃ) সত্য ধর্মাচরণের রক্ষা (সবিতা) সকল জগৎকে উৎপন্ন কারী, (য়জ্ঞেষু) সৎকার বা উপাসনাদিতে (ঈড্যঃ) স্তুতির যোগ্য (নঃ) আমাদিগের জন্য (বসোঃ) ধন (দাতা) দানকারী (বসু) ধন (অদাৎ) দান করেন উহা (ইয়ৎ) প্রাপ্ত করিয়া আপনি (ভূয়ঃ) বারম্বার অত্যন্ত ধন (আরাস্ব) প্রদান করুন (আভর) সকল সুখের দ্বারা পোষণ করুন ॥ ১ ॥
(ত্বম্) যে (অগ্নে) অগ্নি (মর্তেষু) মরণ ধর্মযুক্ত মনুষ্যদিগের কার্য্যে (ব্রতপাঃ) নিয়মাচরণের পালন (দেবঃ) প্রকাশ করিবার (য়জ্ঞেষু) অগ্নিহোত্রাদি যজ্ঞে (ঈড্যঃ) অন্বেষণ করিবার যোগ্য (সোমঃ) ঐশ্বর্য্য প্রদান করিবার (সবিতা) জগৎকে প্রেরণা করিবার (দেবঃ) প্রকাশমান অগ্নি উহা (নঃ) আমাদিগের জন্য (বসোঃ) ধন (দাতা) প্রাপ্ত (ইয়ৎ) করাইয়া (ভূয়ঃ) অত্যন্ত (বসু) ধন (অদাৎ) দান করে এবং (আরাস্ব) ধন প্রদান করিবার নিমিত্ত হইয়া (আভর) সর্ব প্রকার সুখ ধারণ করে ॥ ১৬ ॥ শত০ ৩।২।২।২৪-২৫ ব্রহ্মণে ব্যাখ্যা রয়েছে
ভাবার্থঃ- এই মন্ত্রে শ্লেষালঙ্কার আছে । সকল মনুষ্যের উচিত যে, যেমন সত্যস্বরূপ সকল জগৎকে উৎপন্নকারী এবং সকল সুখ প্রদাতা জগদীশ্বরেরই উপাসনা করিয়া সুখী থাকে এই প্রকার কার্য্যসিদ্ধি হেতু অগ্নিকে সংপ্রযুক্ত করিয়া সকল সুখ প্রাপ্ত করুক ॥ ১৬ ॥
এষা ত ইত্যস্য বৎস ঋষিঃ । অগ্নির্দেবতা । আর্চী ত্রিষ্টুপ্ ছন্দঃ । ধৈবতঃস্বরঃ ॥
এ॒ষা তে॑ শুক্র ত॒নূরে॒তদ্বর্চ॒স্তয়া॒ সং ভ॑ব॒ ভ্রাজং॑ গচ্ছ ।
জূর॑সি ধৃ॒তা মন॑সা॒ জুষ্টা॒ বিষ্ণ॑বে ॥ ১৭ ॥
পদার্থঃ- হে (শুক্র) বীর্য্য পরাক্রম সম্পন্ন বিদ্বান্ পুরুষ । (তে) তোমার যে (বিষ্ণবে) পরমেশ্বর বা যজ্ঞ হেতু তুমি যাহাকে (ধৃতা) ধারণ করিয়াছ (তয়া) উহা দ্বারা তুমি (জুঃ) জ্ঞানী বা বেগযুক্ত হইয়া (এতৎ) এই (বর্চঃ) বিজ্ঞান ও তেজযুক্ত (সম্ভর) সম্পন্ন হইয়া সম্যক্ প্রকার বিজ্ঞান করিবার জন্য (তনুঃ) যে শরীর (অসি) আছে উহা দ্বারা তুমি (ভ্রাজস্) প্রকাশ (গচ্ছ) প্রাপ্ত ও (ধৃতা) ধারণ কৃত (মনসা) বিজ্ঞান দ্বারা পুরুষার্থ প্রাপ্ত হও ॥ ১৭ ॥
ভাবার্থঃ- মনুষ্যদিগের উচিত যে, পরমেশ্বরের আজ্ঞা পালন করিয়া বিজ্ঞানযুক্ত মন দ্বারা শরীর বা আত্মার আরোগ্য বৃদ্ধি করিয়া যজ্ঞের অনুষ্ঠান করিয়া সুখী থাকে ॥ ১৭ ॥ উক্ত মন্ত্রের ব্যাখ্যা শত০ ৩।২।৪।৯-১১ ব্রহ্মণে রয়েছে
তস্যাস্ত ইত্যস্য বৎস ঋষিঃ । বাগ্বিদ্যুতৌ দেবতে । স্বরাডার্ষী বৃহতী ছন্দঃ । মধ্যমঃ স্বরঃ ॥
তস্যা॑স্তে স॒ত্যস॑বসঃ প্রস॒বে ত॒ন্বো᳖ য়॒ন্ত্রম॑শীয়॒ স্বাহা॑ ।
শু॒ক্রম॑সি চ॒ন্দ্রম॑স্য॒মৃত॑মসি বৈশ্বদে॒বম॑সি ॥ ১৮ ॥
পদার্থঃ- হে জগদীশ্বর ! (সত্যসবসঃ) সত্য ঐশ্বর্য্যযুক্ত বা জগতের নিমিত্ত কারণ রূপ (তে) আপনার (প্রসবে) উৎপন্ন কৃত সংসারে আপনার কৃপাবলে যে (স্বাহা) বাণী বা বিদ্যুৎ আছে (তস্যাঃ) তাহাদের উভয়ের সামীপ্যে বিদ্যা সহ যুক্ত আমি যাহা (শুক্রম্) শুদ্ধ (অসি) হয় (চন্দ্রম্) আহ্লাদকারক (অসি) হয় এবং (বৈশ্যদেবম্) সকল দেব অর্থাৎ বিদ্বান্া্দিগের সুখদাতা (অসি) হয় এবং (বৈশ্যদেবম্) সকল দেব অর্থাৎ বিদ্বানদিগের সুখদাতা (অসি) হয় (তৎ) সেই (যন্ত্রম্) সঙ্কোচন, বিকাশ, চালন, বন্ধন কারী যন্ত্রকে (অসীয়) প্রাপ্ত হই ॥ ১৮ ॥
ভাবার্থঃ- এই মন্ত্রে শ্লেষালঙ্কার আছে । মনুষ্যদিগের উচিত যে, ঈশ্বরের উৎপন্ন এই সৃষ্টিতে বিদ্যা দ্বারা কলাযন্ত্র সিদ্ধ করিয়া অগ্নি ইত্যাদি পদার্থ দ্বারা সম্যক্ প্রকার পদার্থ গ্রহণ করিয়া সকল সুখ প্রাপ্ত করুক ॥ ১৮ ॥ উক্ত মন্ত্রের ব্যাখ্যা শত০ ৩।২।৪।১২-১৫ ব্রহ্মণে রয়েছে
চিদসীত্যস্য বৎস ঋষিঃ । বাগ্বিদ্যুতৌ দেবতে । নিচৃদ ব্রাহ্মী পংক্তিশ্ছন্দঃ । পঞ্চমঃ স্বরঃ ॥
চিদ॑সি ম॒নাসি॒ ধীর॑সি॒ দক্ষি॑ণাসি ক্ষ॒ত্রিয়া॑সি য়॒জ্ঞিয়া॒স্যদি॑তিরস্যুভয়তঃশী॒র্ষ্ণী । সা নঃ॒ সুপ্রা॑চী॒ সুপ্র॑তীচ্যেধি মি॒ত্রস্ত্বা॑ প॒দি ব॑ধ্নীতাং পূ॒ষাऽধ্ব॑নস্পা॒ত্বিন্দ্রা॒য়াধ্য॑ক্ষায় ॥ ১ঌ ॥
পদার্থঃ- হে জগদীশ্বর ! (সত্যসবরঃ) সত্য ঐশ্বর্য্য যুক্ত (তে) আপনার (প্রসবে) উৎপন্ন সংসারে যাহা (চিৎ) বিদ্যা ব্যবহারকে চেতয়মানা করে, যাহা (মনা) জ্ঞান সাধন কারিণী (অসি) হয়, যাহা (ধীঃ) প্রজ্ঞাও কর্মের প্রাপ্ত কারিণী (অসি) হয়, যাহা (দক্ষিণা) বিজ্ঞান বিজয় প্রাপ্ত কারিণী (ক্ষত্রিয়া) রাজার পুত্র সমান ব্যবহার কারিণী (অসি) হয়, যাহা (য়জ্ঞিয়া) যজ্ঞ করিবার যোগ্য (অসি) হয় যাহা (উভয়তঃশীষ্ণ) উভয় প্রকারে শির সমান উত্তম গুণযুক্ত এবং (অদিতিঃ) নাশরহিত বাণী বা বিদ্যুৎ (অসি) হয় (সা) উহা (নঃ) আমাদিগের জন্য (সুপ্রাচী) পূর্বকাল ও (সুপ্রতীচী) পশ্চিম কালে সুখ প্রদান কারিণী (এধি) হয় যাহা, (পুষা) পুষ্টিকারিণী (মিত্রঃ) সকলের মিত্র হইয়া মনুষ্যত্বের জন্য (ত্বা) সেই বাণী ও বিদ্যুৎকে (পদি) প্রাপ্তি যোগ্য উত্তম ব্যবহারে (অধ্যক্ষায়) সম্যক্ প্রকার ব্যবহার দেখিতে (ইন্দ্রায়) পরমেশ্বর্য্যযুক্ত পরমাত্মা, অধ্যক্ষ ও শ্রেষ্ঠ ব্যবহারের জন্য (বধ্নীতাম্) বন্ধনযুক্ত করুন সুতরাং আপনি (অধ্বনঃ) ব্যবহার ও পরমার্থ সিদ্ধিকারী মার্গের মধ্যে (নঃ) আমাদিগের নিরন্তর (পাতু) রক্ষা করুন ॥ ১ঌ ॥
ভাবার্থঃ- এই মন্ত্রে শ্লেষালঙ্কার আছে এবং পূর্ব মন্ত্র হইতে (তে) (সত্যসবসঃ) (প্রসবে) এই তিন পদের অনুবৃত্তিও আইসে । মনুষ্যদিগকে যাহা বাহ্যাভ্যন্তরের রক্ষা করিয়া সকলের সহিত উত্তম বাণী বা বিদ্যুৎ দ্বারা ব্যবহার করে, সেই ভূত, ভবিষ্যৎ ও বর্ত্তমান কালে সুখ কারিণী এমন জানা উচিত । যে কোনও মনুষ্য প্রীতিপূর্বক পরমেশ্বর সভাধ্যক্ষ ও উত্তম কর্মে আজ্ঞা পালন হেতু সত্য বাণী ও উত্তম বিদ্যা গ্রহণ করে, সেই সকলের রক্ষা করিতে পারে ॥ ১ঌ ॥ উক্ত মন্ত্রের ব্যাখ্যা শত০ ৩।২।৪।১৬-২০ ব্রহ্মণে রয়েছে
অনু ত্বেত্যস্য বৎস ঋষিঃ । বাগ্বিদ্যুতৌ দেবতে । পূর্বার্দ্ধস্য সাম্নী জগতী ছন্দঃ । নিষাদঃ স্বরঃ । উত্তরার্দ্ধস্য ভুরিগার্ষ্যুষ্ণিক্ ছন্দঃ । ঋষভঃ স্বরঃ ॥
অনু॑ ত্বা মা॒তা ম॑ন্যতা॒মনু॑ পি॒তাऽনু॒ ভ্রাতা॒ সগ॒র্ভ্যোऽনু॒ সখা॒ সয়ূ॑থ্যঃ ।
সা দে॑বি দে॒বমচ্ছে॒হীন্দ্রা॑য়॒ সোম॑ꣳ রু॒দ্রস্ত্বাऽऽ ব॑র্ত্তয়তু স্ব॒স্তি সোম॑সখা॒ পুন॒রেহি॑ ॥ ২০ ॥
পদার্থঃ- হে মনুষ্য ! যেমন (রুদ্রঃ) পরমেশ্বর অথবা ৪৪ (চুয়াল্লিশ) বর্ষ পর্যন্ত অখন্ড ব্রহ্মচর্য্যাশ্রম সেবন দ্বারা পূর্ণ বিদ্যাযুক্ত বিদ্বান্ (ত্বা) তোমাকে যে বাণী বা বিদ্যুৎ তথা (সোমম্) উত্তম পদার্থসমূহ এবং (স্বস্তি) নিঘ০ ৫।৫ সুখকে (ইন্দ্রায়) পরমেশ্বরের প্রাপ্তি হেতু (আবর্ত্তয়তু) প্রবৃত্ত করেন এবং যাহা (সা) সেই (সোমসখা) বিদ্যা প্রকাশযুক্ত বাণী ও (দেবি) দিব্যগুণযুক্ত বিদ্যুৎ (দেবম্) উত্তম ধর্মাত্মা বিদ্বান্কে প্রাপ্ত হয় । সেইরূপ উহাকে তুমি (পুনঃ) বারবার (অচ্ছ) সম্যক্ প্রকার (ইহি) প্রাপ্ত হও এবং ইহাকে গ্রহণ করিবার জন্য (ত্বা) তোমাকে (মাতা) উৎপন্নকারিণী জননী (অনুমন্যতাম্) অনুমতি অর্থাৎ আজ্ঞা প্রদান করুন, এই প্রকার (পিতা) উৎপন্নকারী জনক (সগর্ভ্যঃ) [অষ্টা০ ৪।৪।১১৪] তুল্য গর্ভে জাত (ভ্রাতা) [নিরুক্ত ১।৩] ভাই এবং (সয়ুথ্যঃ) সমূহে থাকা (সখা ) মিত্র ইহারা সকলে প্রসন্নতাপূর্বক আজ্ঞা প্রদান করুক । উহাকে তুমি (পুনরেহি) অত্যন্ত পুরুষার্থ করিয়া বার-বার প্রাপ্ত হও ॥ ২০ ॥
ভাবার্থঃ- এই মন্ত্রে বাচকলুপ্তোপমালঙ্কার আছে । প্রশ্ন – মনুষ্যদিগকে কী প্রকার পরস্পর ব্যবহার করা উচিত? উত্তর – যেমন ধর্মাত্মা, বিদ্বান্, মাতা, পিতা, ভাই, মিত্রাদি সদ্ ব্যবহারে প্রবৃত্ত হয় । সেইরূপ পুত্রাদি এবং যেমন বিদ্বান্ ধার্মিক পুত্রাদি ধর্মযুক্ত ব্যবহার করিবে সেইরূপ মাতা-পিতাদিকেও ব্যবহার করা উচিত ॥ ২০ ॥ উক্ত মন্ত্রের ব্যাখ্যা শত০ ৩।২।৪।২০-২১ ব্রহ্মণে রয়েছে
বস্বীত্যস্য বৎস ঋষিঃ । বাগ্বিদ্যুতৌ দেবতে । বিরাডার্ষী বৃহতী ছন্দঃ । মধ্যমঃ স্বরঃ ॥
বস্ব্য॒স্যদি॑তিরস্যাদি॒ত্যাসি॑ রু॒দ্রাসি॑ চ॒ন্দ্রাসি॑ ।
বৃহ॒স্পতি॑ষ্ট্বা সু॒ম্নে র॑ম্ণাতু রু॒দ্রো বসু॑ভি॒রা চ॑কে ॥ ২১ ॥
পদার্থঃ- হে বিদ্বন্ মনুষ্য । যেমন যে (বস্বী) অগ্নি ইত্যাদি বিদ্যা সম্পর্কীয়, যাহার সেবা ২৪ (চব্বিশ) বর্ষ পর্য্যন্ত ব্রহ্মচর্য্য পালনকারীগণ করিয়াছে, (অসি) যাহা (অদিতিঃ) প্রকাশকারক (অসি) হয়, যাহা (রুদ্রা) প্রাণবায়ু সম্পর্ক যুক্ত এবং যাহার ৪৪ (চুয়াল্লিশ) বর্ষ ব্রহ্মচর্য্য পালনকারী প্রাপ্ত হইয়াছে সেইরূপ (অসি), যাহা (আদিত্যা) সূর্য্যবৎ সর্ব বিদ্যার প্রকাশকারিণী, যাহার গ্রহণ ৪৮ (আটচল্লিশ) বর্ষ পর্যন্ত ব্রহ্মচর্য্যসেবী মনুষ্যগণেরা করিয়াছে সেইরূপ (অসি), যাহা (চন্দ্রা) আহ্লাদকারিণী (অসি) হয়, যাহাকে (বৃহস্পতিঃ) সর্বোত্তম (রুদ্রঃ) দুষ্টদিগকে রোদনকারী পরমেশ্বর বা বিদ্বান্ (সুম্নে) সুখে (রম্ণাতু) রমণযুক্ত করেন এবং যে (বসুভিঃ) পূর্ণবিদ্যাযুক্ত মনুষ্যদিগের সহ বর্ত্তমান বাণী বা বিদ্যুতের (আচকে) নিঘ০২।৬ নির্মাণ বা ইচ্ছা করে অথবা যাহার আমি ইচ্ছা করি সেইরূপ তুমিও (ত্বা) উহাকে (রম্ণাতু) রমণযুক্ত বা ইহাকে সিদ্ধ করিবার ইচ্ছা কর ॥ ২১ ॥
ভাবার্থঃ- এই মন্ত্রে শ্লেষ ও বাচকলুপ্তোপমালঙ্কার আছে । যেমন বাণী, বিদ্যুৎ ও প্রাণ, পৃথিবী ইত্যাদি এবং বিদ্বান্দিগের সহিত বর্ত্তমান অনেক ব্যবহার সিদ্ধির হেতু এবং যাহাদিগের সেবা জিতেন্দ্রিয়াদি ধর্মসেবনপূর্বক বিদ্বান্গণ করিয়াছেন সেইরূপ বাণী ও বিদ্যুৎ মনুষ্যদিগকে বিজ্ঞানপূর্বক ক্রিয়াগুলির দ্বারা সংপ্রযুক্ত অনেক সুখ উৎপন্ন কারিণী হইয়া থাকে ॥ ২১ ॥ উক্ত মন্ত্রের ব্যাখ্যা শত০ ৩।২।১।১-২ ব্রহ্মণে রয়েছে
অদিত্যাস্ত্বেত্যস্য বৎস ঋষিঃ । বাগ্বিদ্যুতৌ দেবতে । ব্রাহ্মী পংক্তিশ্ছন্দঃ । পঞ্চমঃ স্বরঃ ॥
অদি॑ত্যাস্ত্বা মূ॒র্দ্ধন্না জি॑ঘর্মি দেব॒য়জ॑নে পৃথি॒ব্যাऽইডা॑য়াস্প॒দম॑সি ঘৃ॒তব॒ৎ স্বাহা॑ । অ॒স্মে র॑মস্বা॒স্মে তে॒ বন্ধু॒স্ত্বে রায়ো॒ মে রায়ো॒ মা ব॒য়ꣳ রা॒য়স্পোষে॑ণ॒ বি য়ৌ॑ষ্ম॒ তোতো॒ রায়ঃ॑ ॥ ২২ ॥
পদার্থঃ- হে বিদ্বান্ মনুষ্য ! তুমি যেমন (দেবয়জনে) বিদ্বান্দিগের যজন বা দানে এই (আদিত্যাঃ) অন্তরিক্ষ (পৃথিব্যাঃ) ভূমি ও (ইডায়াঃ) বাণীকে (স্বাহা) সম্যক্ প্রকার যজ্ঞকারিণী ক্রিয়ার মধ্যে যাহা (মূর্দ্ধন্) সকলের ঊপর বর্ত্তমান (ঘৃতবৎ) পুষ্টি কারী ঘৃতের তুল্য (পদম্) জানিবার বা প্রাপ্ত হইবার যোগ্য পদবী (অসি) আছে অথবা যাহাকে আমি (আ জিঘর্মি) প্রদীপ্ত করি সেইরূপ (ত্বা) উহাকে প্রদীপ্ত কর এবং যাহা (অস্মে) আমাদিগের মধ্যে বিভূতি রমণ করে উহা তোমাদের মধ্যেও (রমস্ব) রমণ করুক । যাহাকে আমি রমণ করি উহাকে তুমিও (রমস্ব) রমণ কর । যে (অস্মে) আমাদিগের (বন্ধুঃ) ভাই সে (তে) তোমারও হউক, যে (রায়ঃ) বিদ্যাদি ধনসমূহ (ত্বে) তোমার মধ্যে আছে উহা (মে) আমার মধ্যে হউক, যে (তোতঃ) জানিবার প্রাপ্ত করিবার যোগ্য (রায়ঃ) বিদ্যাধন আমার মধ্যে আছে উহা তোমার মধ্যেও হউক (রায়ঃ) তোমার ও আমার সমৃদ্ধি সে সব সকলের সুখের জন্য হউক এই প্রকার জানিয়া, নিশ্চয় করিয়া বা অনুষ্ঠান করিয়া তুমি (বয়ম্) আমরা এবং সকলেরা (রায়স্পোষেণ) ধনের পুষ্টি হইতে (মা বিয়ৌষ্ম) বিচ্যুত না হই ॥ ২২ ॥
ভাবার্থঃ–এই মন্ত্রে বাচকলুপ্তোপমালঙ্কার আছে । মনুষ্যদিগকে সত্যবিদ্যা, ধর্ম দ্বারা সংস্কারিত বাণী বা শিল্পবিদ্যা দ্বারা সংপ্রযুক্ত বিদ্যুতাদি বিদ্যা সকল মনুষ্যের জন্য উপদেশ বা গ্রহণ এবং সুখ-দুঃখের ব্যবস্থাকেও তুল্যই জানিয়া সকল এশ্বর্য্যকে পরোপকারে সংযুক্ত করা উচিত এবং কোনও মনুষ্যকে এমন ব্যবহার কদাপি করা উচিত নয় যাহাতে কাহারও বিদ্যা, ধন ইত্যাদি ঐশ্বর্য্যের ক্ষতি হয় ॥ ২২ ॥ [শত০ ৩।৩।১।৪-১১ ব্রাহ্মণে ব্যাখ্যা রয়েছে]
সমখ্য ইত্যস্য বৎস ঋষিঃ । বাগ্বিদ্যুতৌ দেবতে । আস্তারপংক্তিশ্ছন্দঃ । পঞ্চমঃ স্বরঃ ॥
সম॑খ্যে দে॒ব্যা ধি॒য়া সং দক্ষি॑ণয়ো॒রুচ॑ক্ষ॒সা । মা ম॒ऽআয়ুঃ॒ প্র মো॑ষী॒র্মোऽঅ॒হং তব॑ বী॒রং বি॑দেয়॒ তব॑ দেবি সং॒দৃশি॑ ॥ ২৩ ॥
পদার্থঃ–হে বিদ্বান্ মনুষ্য । যেমন (অহম্) আমি (দক্ষিণয়া) জ্ঞানসাধক অজ্ঞান নাশক (উরুচক্ষসা) বহু ব্যক্ত বচন বা দর্শনযুক্ত (দেব্যা) দেদীপ্যমান (ধিয়া) প্রজ্ঞা বা কর্ম দ্বারা (তব) সেই (দেবি) সর্বোৎকৃষ্ট গুণযুক্ত বাণী বা বিদ্যুতের (সংদৃশি) সম্যক্ প্রকার দেখিবার যোগ্য ব্যবহারে জীবনকে (সমখ্যে) কথন দ্বারা প্রকট করিতেছি সে (মে) আমার (আয়ুঃ) জীবনকে (মা প্রমোষীঃ) নাশ করে না, উহাকে আমি অবিদ্যা দ্বারা (মো) নষ্ট না করি (তব) হে সকলের মিত্র ! অন্যায়পূর্বক আপনার (বীরম্) শূরবীরকে (মা সংবিদেয়) প্রাপ্ত না হই, সেইরূপ তুমিও পূর্বোক্ত সকল অন্যায় হইতে আমার শূরবীরগণকে দূরে রাখ ॥ ২৩ ॥
ভাবার্থঃ–এই মন্ত্রে বাচক লুপ্তোপমাললঙ্কার আছে । মনুষ্যদিগের কর্ত্তব্য এই যে, শুদ্ধ কর্ম বা প্রজ্ঞা দ্বারা বাণী বা বিদ্যুতের বিদ্যা গ্রহণ করিয়া আয়ু বৃদ্ধি করে এবং বিদ্যাদি উত্তম উত্তম গুণে স্বীয় সন্তান ও বীরগণকে সম্পাদন করিয়া সর্বদা সুখী থাকে ॥ ২৩ ॥
[শত০ ৩।৩।১।১২ ব্রাহ্মণে ব্যাখ্যা রয়েছে]
কী প্রতিপাদন হেতু জ্ঞানের আকাঙক্ষাকারী বিদ্বান্দিগকে জিজ্ঞাসা করিবে, এই বিষয়ের উপদেশ পরবর্ত্তী মন্ত্রে করা হইয়াছে ॥
এষ ত ইত্যস্য বৎস ঋষিঃ । য়জ্ঞো দেবতা । পূর্বস্য ব্রাহ্মী জগতী ছন্দঃ । নিষাদঃ স্বরঃ ॥ অন্ত্যস্য দশাক্ষরস্য য়াজুষী পংক্তিশ্ছন্দঃ । পঞ্চমঃ স্বরঃ ॥
এ॒ষ তে॑ গায়॒ত্রো ভা॒গऽইতি॑ মে॒ সোমা॑য় ব্রূতাদে॒ষ তে॒ ত্রৈষ্টু॑ভো ভা॒গऽইতি॑ মে॒ সোমা॑য় ব্রূতাদে॒ষ তে॒ জাগ॑তো ভা॒গऽইতি॑ মে॒ সোমা॑য় ব্রূতাচ্ছন্দোনা॒মানা॒ᳬসা॑ম্রাজ্যং গ॒চ্ছেতি॑ মে॒ সোমা॑য় ব্রূতাদাস্মা॒কো᳖ऽসি শু॒ক্রস্তে॒ গ্রহ্যো॑ বি॒চিত॑স্ত্বা॒ বি চি॑ন্বন্তু ॥ ২৪ ॥
ভাবার্থঃ–হে বিদ্বান্ মনুষ্য । তুমি কে, এই যজ্ঞের (গায়ত্রঃ) বেদস্থ গায়ত্রী ছন্দযুক্ত মন্ত্র সমূহ দ্বারা প্রতিপাদিত (ভাগঃ) সেবন যোগ্য অংশ (ইতি) এই ভাবে বিদ্বান্ দিগের নিকটে জিজ্ঞাসা কর । যেমন সেই বিদ্বান্ (তে) তোমাকে সেই যজ্ঞের এই প্রত্যক্ষ অংশ (ইতি) এইভাবে (সোমায়) পদার্থ বিদ্যা সম্পাদনকারী (সে) আমার জন্য (ব্রূতাৎ) বলুন । তুমি কে এই যজ্ঞের (তৈষ্টুভঃ) ত্রিষ্টুপ্ ছন্দ দ্বারা প্রতিপাদিত (ভাগঃ) অংশ (ইতি) এই প্রকার বিদ্বান্দিগের নিকট জিজ্ঞাসা কর । যেমন তিনি (তে) তোমাকে সেই যজ্ঞের (এষঃ) এই অংশ (ইতি) এই প্রকার প্রত্যক্ষতা পূর্বক সমাধান (সোমায়) উত্তম রস সম্পাদনকারী (মে) আমার জন্য (ব্রূতাৎ) বলুন । তুমি কে এই যজ্ঞের (জাগতঃ) জগতী ছন্দ দ্বারা কথিত (ভাগঃ) অংশ (ইতি) এই প্রকার আপ্তের নিকট জিজ্ঞাসা কর । যেমন তিনি (তে) তোমাকে সেই যজ্ঞের (এষঃ) এ প্রসিদ্ধ অংশ (ইতি) এই প্রকার (সোমায়) পদার্থ বিদ্যা সম্পাদনকারীগণ (মে) আমার জন্য উত্তরে (ব্রূতাৎ) বলুন । যেমন আপনি (ছন্দোনামানাম্) উষ্ণিক্ ইত্যাদি ছন্দের মধ্যে কথিত যজ্ঞের উপদেশে (সান্ত্রাজোম্) ভাল প্রকার রাজ্য (গচ্ছ) প্রাপ্ত ইউন (ইতি) এই প্রকার (সোমায়) ঐশ্বর্য্যযুক্ত (মে) আমার জন্য সার্বভৌম রাজ্য প্রাপ্ত হওয়ার উপায় (ব্রূতাৎ) বলুন এবং যে কারণে আপনি (আস্মাকঃ) আমাদিগের (শুক্রঃ) পবিত্রকারী উপদেশক (অসি) আছেন সেইরূপ আমি (তে) আপনার (গ্রহ্যঃ) গ্রহণ করিবার যোগ্য (বিচিতঃ) উত্তম উত্তম ধনাদি দ্রব্য ও গুণ দ্বারা সংযুক্ত শিষ্য হই । আপনি আমাকে সকল গুণ দ্বারা বৃদ্ধি করুন এই কারণে আমি (ত্বা) আপনাকে বুদ্ধিযুক্ত করি এবং সকল মনুষ্য (ত্বা) আপনি বা এই যজ্ঞ তথা আমাকে (বিচিন্বন্তু) বুদ্ধিযুক্ত করুন ॥ ২৪ ॥
ভাবার্থঃ–এই মন্ত্রে বাচকলুপ্তোপামালঙ্কার আছে । মনুষ্যগণ বিদ্বান্দিগের নিকট জিজ্ঞাসা করিয়া সকল বিদ্যার গ্রহণ করিবে তথা বিদ্বান্গণ এই বিদ্যাসকলের যথাবৎ গ্রহণ করাইবেন । পরস্পর অনুগ্রহ করিলে বা করাইলে সকল বৃদ্ধি প্রাপ্ত হইয়া বিদ্যা ও চক্রবর্ত্তী প্রভৃতি রাজ্য সেবন করিবে ॥ ২৪ ॥ [শত০ ৩।৩।২।৪-৮ ব্রাহ্মণে উক্ত মন্ত্রের ব্যাখ্যা রয়েছে]
পরবর্ত্তী মন্ত্রে ঈশ্বর, রাজসভা এবং প্রজাদের গুণের উপদেশ করা হইয়াছে ॥
অভি ত্যমিত্যস্য বৎস ঋষিঃ । সবিতা দেবতা । পূর্বস্য ব্রাহ্মী জগতী ছন্দঃ । নিষাদঃ স্বরঃ ॥ সুক্রতুরিত্যুত্তরস্য ভুরিগার্ষী গায়ত্রী ছন্দঃ । ষড্জঃ স্বরঃ ॥
অ॒ভি ত্যং দে॒বꣳ স॑বি॒তার॑মো॒ণ্যোঃ᳖ ক॒বিত্র॑ôতু॒মর্চা॑মি স॒ত্যস॑বꣳ রত্ন॒ধাম॒ভি প্রি॒য়ং ম॒তিং ক॒বিম্ । ঊ॒র্ধ্বা য়স্যা॒মতি॒র্ভাऽঅদি॑দ্যু॒ত॒ৎ সবী॑মনি॒ হির॑ণ্যপাণিরমিমীত সু॒ক্রতুঃ॑ কৃ॒পা স্বঃ॑ । প্র॒জাভ্য॑স্ত্বা প্র॒জাস্ত্বা॑ऽনু॒প্রাণ॑ন্তু প্র॒জাস্ত্বম॑নু॒প্রাণি॑হি ॥ ২৫ ॥
পদার্থঃ– (য়স্য) যে সচ্চিদানন্দাদিলক্ষণযুক্ত পরমেশ্বর, ধার্মিক সভাপতি ও প্রজাজনের (সবীমনি) উৎপন্ন সংসারে (ঊদ্ধর্বা) উত্তম (অমতিঃ) নিঘ০ ৩।৭ স্বরূপ (ভাঃ) প্রকাশমান (অদিদ্যুতৎ) প্রকাশিত হইয়াছে, যাহার (কৃপা) করুণা (স্বঃ) সুখ প্রদান করে (হিরণ্যপাণিঃ) শত০ ৪।৩।৪।২১ যিনি সূর্য্যাদি জ্যোতি ব্যবহারে উত্তম গুণ কর্ম সকলকে যুক্ত করিয়াছেন (সুক্রতুঃ) যিনি উত্তম প্রজ্ঞা বা কর্মযুক্ত ঈশ্বর, সভাস্বামী ও প্রজাজন (স্বঃ) নিরু০ ৫।৪ সূর্য্য ও সুখকে (অভিমীত) স্থাপিত করিয়াছেন (ত্বম্) সেই (ওণ্যোঃ) নিঘ০ ৩।৩০ দ্যাবাপৃথিবী বা (সবিতারম্) অগ্নি ইত্যাদিকে উৎপন্ন ও সংপ্রয়োগ করিবার তথা (কবিক্রতুম্) নিরুক্ত ১২।১৩ সর্বজ্ঞ বা কবিক্রতু (রত্মধাম্) রমণীয় রত্নকে ধারণ করিবার (সত্যসবম্) সত্য ঐশ্বর্য্যযুক্ত (প্রিয়ম্) প্রীতিকারক (মতিম্) বেদাদি শাস্ত্র বা বিদ্বান্দিগের মানিবার যোগ্য (কবিম্) বেদ বিদ্যার উপদেশকারী তথা (দেবম্) সুখদাতা পরমেশ্বর, সভাধ্যক্ষ ও প্রজাজনের (অর্চামি) আমি পূজন করি বা যে (ত্বা) আপনাকে (প্রজাভ্যঃ) উৎপন্ন সৃষ্টি দ্বারা পূজিত করি । সেই আপনার সৃষ্টিতে (প্রজা) মনুষ্যাদি (অনুপ্রাণন্তু) আয়ুর ভোগ করে (ত্বম্) এবং আপনি কৃপা করিয়া (প্রজাঃ) প্রজার উপর জীবদিগের অনুকুল (অনুপ্রাণিহি) অনুগ্রহ করুন ॥ ২৫ ॥
ভাবার্থঃ–এই মন্ত্রে শ্লেষালঙ্কার আছে । মনুষ্যদিগকে সকল জগৎ উৎপন্নকারী নিরাকার, সর্বব্যাপী, সর্বশক্তিমান, সচ্চিদানন্দাদি লক্ষণযুক্ত পরমেশ্বর, ধার্মিক সভাপতি এবং প্রজাজন সমূহেরই সৎকার করা উচিত । তদ্ভিন্ন অন্য কাহাকেও নহে । বিদ্বান্ মনুষ্যদিগের কর্ত্তব্য যে, প্রজা-পুরুষদিগের সুখ হেতু এই পরমেশ্বরের স্তুতি, প্রার্থনোপাসনা এবং শ্রেষ্ঠ সভাপতি তথা ধার্মিক প্রজাজনের সৎকারের উপদেশ নিত্য করিবে যাহাতে সকল মনুষ্য তাঁহার আজ্ঞানুকূল সর্বদা ব্যবহার করুক এবং যেমন প্রাণে সকল জীবের প্রতি প্রীতি থাকে সেইরূপ পূর্বোক্ত পরমেশ্বর প্রভৃতিতেও অত্যন্ত প্রেম করিবে ॥ ২৫ ॥ [শত০ ৩।৩।২।১২।-১৯ ব্রাহ্মণে মন্ত্রের ব্যাখ্যা রয়েছে]
মনুষ্যদিগকে কী কী সাধন করিয়া যজ্ঞকে সিদ্ধ করা উচিত, এই বিষয়ের উপদেশ পরবর্ত্তী মন্ত্রে করা হইয়াছে ॥
শুক্র ত্বেত্যস্য বৎস ঋষিঃ । য়জ্ঞো দেবতা । ভুরগ্ব্রাহ্মী পংক্তিশ্ছন্দঃ । পঞ্চমঃ স্বরঃ ॥
শু॒ক্রং ত্বা॑ শু॒ক্রেণ॑ ক্রীণামি চ॒ন্দ্রং চ॒ন্দ্রেণা॒মৃত॑ম॒মৃতে॑ন । স॒গ্মে তে॒ গোর॒স্মে তে॑ চ॒ন্দ্রাণি॒ তপ॑সস্ত॒নূর॑সি প্র॒জাপ॑তে॒র্বর্ণঃ॑ পর॒মেণ॑ প॒শুনা॑ ক্রীয়সে সহস্রপো॒ষং পু॑ষেয়ম্ ॥ ২৬
পদার্থঃ–যেমন (সগ্মে) পৃথিবী সহ বর্ত্তমান যজ্ঞে (তপসঃ) প্রতাপযুক্ত অগ্নি বা তপস্বী অর্থাৎ ধর্মাত্মা বিদ্বানের (তনূঃ) শরীর (অসি) আছে, উহাকে শিল্পবিদ্যা বা সত্যোপদেশের সিদ্ধির অর্থ (পশুনা) বিক্রীত গাভি আদি পশুগুলি করিয়া ধনাদি সামগ্রী দ্বারা গ্রহণ করিয়া (প্রজাপতেঃ) প্রজাপালন হেতু সূর্য্যের (বর্ণঃ) স্বীকার করিবার যোগ্য তেজ (ক্রীয়সে) ক্রয় হয় সেই (সহস্রপোষম্) অসংখ্য পুষ্টি প্রাপ্ত হইয়া আমি (পুষেয়ম্) পুষ্ট হই । হে বিদ্বান্ মনুষ্য! (তে) আপনার যে (গোঃ) পৃথিবীর রাজ্য সকাশে (চন্দ্রানি) সূবর্ণাদি ধাতু প্রাপ্ত, সেইগুলি (অস্মে) আমাদিগের জন্যও হউক যেমন আমি (পরমেন) উত্তম (শুক্রেণ) শুদ্ধ ভাব সহ (শুক্রম্) শুদ্ধিকারক যজ্ঞ (চন্দ্রেন) সুবর্ণ দ্বারা (চন্দ্রম্) নিঘ০ ১।২ সুবর্ণ এবং (অমৃতেন) নাশরহিত বিজ্ঞান দ্বারা (অমৃতম্) মোক্ষ সুখকে (ক্রীণামি) গ্রহণ করি সেইরূপ তুমিও (ত্বা) উহা গ্রহণ কর ॥ ২৬ ॥
ভাবার্থঃ–মনুষ্যদিগের কর্ত্তব্য যে, শরীর মন, বাণী ও মন দ্বারা পরমেশ্বরের উপাসনাদি লক্ষণযুক্ত যজ্ঞের নিরন্তর অনুষ্ঠান করিয়া অসংখ্য অতুল পুষ্টি প্রাপ্ত করুক ॥ ২৬ ॥ [শত০ ৩।৩।৩।৬-৯ ব্রহ্মণে মন্ত্রের ব্যাখ্যা রেয়েছে]
মনুষ্যদিগকে বিদ্বান্ মনুষ্য সহ এবং বিদ্বান্কে সকল মনুষ্যদিগের সঙ্গে কীভাবে ব্যবহার করা উচিত, এই বিষয়ের উপদেশ পরবর্ত্তী মন্ত্রে করা হইয়াছে ॥
মিত্রো ন ইত্যস্য বৎস ঋষিঃ । বিদ্বান্ দেবতা । ভুরিগ্ব্রাহ্মী পংক্তিশ্ছন্দঃ । পঞ্চমঃ স্বরঃ ॥
মি॒ত্রো ন॒ऽএহি॒ সুমি॑ত্রধ॒ऽইন্দ্র॑স্যো॒রুমা বি॑শ॒ দক্ষি॑ণমু॒শন্নু॒শন্ত॑ꣳ স্যো॒নঃ স্যো॒নম্ । স্বান॒ ভ্রাজাঙ্ঘা॑রে॒ বম্ভা॑রে॒ হস্ত॒ সুহ॑স্ত॒ কৃশা॑নবে॒তে বঃ॑ সোম॒ক্রয়॑ণা॒স্তান্ র॑ক্ষধ্বং॒ মা বো॑ দভন্ ॥ ২৭ ॥
পাদার্থঃ–হে (স্বান) উপদেশ করিতে (ভ্রাজ) প্রকাশ প্রাপ্ত হইতে (অঙ্ঘারে) ছলের শত্রু (বম্ভারে) বিচার বিরোধীদিগের শত্রু (হস্ত) প্রসন্ন (সুহস্ত) সম্যক্ প্রকার হস্তক্রিয়া জানিতে এবং (কৃশানো) দুষ্টদিগকে কৃশ করিতে (সুমিত্রধঃ) উত্তম মিত্রদিগকে ধারণ করিতে (মিত্রঃ) সকলের মিত্র (স্যোনঃ) সুখের (উশন্) কামনাকারী সভাধ্যক্ষ ! আপনি (নঃ) আমাদিগকে (আ ইহি) সম্যক্ প্রকার প্রাপ্ত হউন তথা (দক্ষিণম্) উত্তম অঙ্গযুক্ত (উরুস) বহু উত্তম পদার্থ সহ যুক্ত ও স্বীকার করিবার যোগ্য (উশংতম্) কামনা করিবার যোগ্য (স্যোনম্) সুখকে (আবিশ) প্রবেশ করুন । হে সভাধ্যক্ষগণ! (এতে) যে (ইন্দ্রস্য) পরমেশ্বর্য্যযুক্ত সভাধ্যক্ষ বিদ্বানের (সোমক্রয়ণাঃ) সোম অর্থাৎ উত্তম পদার্থ সকলের ক্রয়কারী প্রজা ও ভৃত্যাদি মনুষ্য (বঃ) তোমাদিগের রক্ষা করুক এবং আপনারও তাঁহার (রক্ষধ্বম্) রক্ষা সর্বদা করিতে থাকুন । যেমন সেই সব শত্রুগণ (তান্) সেই (বঃ) তোমাদিগের হিংসা করিতে সক্ষম (মা দভন্) না হয় সেইরূপই সম্যক্ প্রীতি সহ পরস্পর মিলিয়া ব্যবহার কর ॥ ২৭ ॥
ভাবার্থঃ–রাজ্য ও প্রজাপুরুষ দিগের উচিত যে পরস্পর প্রীতি, উপকার ও ধর্মযুক্ত ব্যবহারে যথাবৎ ব্যবহার করিয়া, শত্রুদিগের নিবারণ করিয়া, অবিদ্যা বা অন্যায়রূপ অন্ধকারের নাশ এবং চক্রবর্তী রাজ্যাদি পালন করিয়া সর্বদা আনন্দে থাকে ॥ ২৭ ॥ [শত০ ৩।৩।৩।১০-১২ ব্রহ্মণে মন্ত্রের ব্যাখ্যা রয়েছে]
পরি মাগ্ন ইত্যস্য বৎস ঋষিঃ । অগ্নির্দেবতা । পূর্বার্দ্ধস্য সাম্নী বৃহতী ছন্দঃ । মধ্যমঃ স্বরঃ । উত্তরার্দ্ধস্য সাম্ন্যুষ্ণিক্ ছন্দঃ । ঋষভঃ স্বরঃ ॥
পরি॑ মাগ্নে॒ দুশ্চ॑রিতাদ্ বাধ॒স্বাऽऽ মা॒ সুচ॑রিতে ভজ ।
উদায়ু॑ষা স্বা॒য়ুষোদ॑স্থাম॒মৃতাঁ॒২ऽঅনু॑ ॥ ২৮ ॥
পদার্থঃ–হে (অগ্নে) জগদীশ্বর ! আপনি কৃপা করিয়া যে কর্ম দ্বারা আমি (স্বায়ুষা) উত্তমতাপূর্বক প্রাণ ধারণকারী (আয়ুষা) জীবন দ্বারা (অমৃতান্) জীবন্মুক্ত ও মোক্ষ প্রাপ্ত বিদ্বান্ অথবা মোক্ষরূপী আনন্দ (উদস্থাম) সম্যক প্রকার প্রাপ্ত হই তদ্দ্বারা (মা) আমাকে সংযুক্ত করিয়া (দুশ্চরিতাৎ) দুষ্টাচরণ হইতে (উদ্বাধস্ব) পৃথক করিয়া (মা) আমাকে (সুচরিতে) উত্তম-উত্তম ধর্মাচরণযুক্ত ব্যবহারে (অন্বাভজ) সম্যক্ প্রকার স্থাপন করুন ॥ ২৮ ॥
ভাবার্থঃ–মনুষ্যদিগের কর্ত্তব্য যে, অধর্ম ত্যাগ করিবার এবং ধর্ম গ্রহণ করিবার জন্য প্রেম পূর্বক প্রার্থনা করিবে কেননা প্রার্থনা করিলে পরমাত্মা শীঘ্র অধর্ম হইতে ছাড়াইয়া ধর্মেই প্রবৃত্ত করাইয়া দেন পরন্তু সকল মনুষ্যগণকে এটা করা অবশ্য দরকার যে, যতক্ষণ জীবন ততক্ষণ ধর্মাচরণেই থাকিয়া সংসার বা মোক্ষরূপী সুখকে সর্ব প্রকারে সেবন করিবে ॥ ২৮ ॥ [উক্ত মন্ত্র শত০ ৩।৩।১৩-১৪ ব্রাহ্মণে ব্যাখ্যা রয়েছে]
No comments:
Post a Comment
ধন্যবাদ