পশুপতি শিব - ধর্ম্মতত্ত্ব

ধর্ম্মতত্ত্ব

ধর্ম বিষয়ে জ্ঞান, ধর্ম গ্রন্থ কি , হিন্দু মুসলমান সম্প্রদায়, ইসলাম খ্রীষ্ট মত বিষয়ে তত্ত্ব ও সনাতন ধর্ম নিয়ে আলোচনা

धर्म मानव मात्र का एक है, मानवों के धर्म अलग अलग नहीं होते-Theology

সাম্প্রতিক প্রবন্ধ

Post Top Ad

স্বাগতম

10 January, 2024

পশুপতি শিব

পশুপতি শিব

                                               মুখায় তে পশুপতে য়ানি চক্ষূম্ষি তে ভব।

ত্বচে রূপায় সম্দৃশে প্রতীচীনায় তে নমঃ।। (অথর্বঃ ১১|২|৫)

________"হে (পশুপতে) সমস্ত দৃশ্যমান প্রাণীদের রক্ষক! (ভব) হে সমস্ত সুখের উৎপাদক পরমেশ্বর! আমাদের যে (য়ানি চম্ক্ষূষি) জ্ঞানের সাধন আছে তার জন্য (ত্বচে) আমাদের ত্বচার জন্য (রূপায়) সৌন্দর্যের জন্য (সম্দৃশে) ভালো স্বাস্থ্যের জন্য (প্রতীচীনায়) আমাদের পশ্চাৎ অর্থাৎ পরোক্ষের মধ্যেও রক্ষা করার জন্য আর (মুখায়) মুখ তুল্য বিদ্বান ব্রাহ্মণদের রক্ষার জন্য (তে নমঃ) আপনাকে নমস্কার করছি।"

বিঃদ্রঃ চিত্রে যেমন পৌরাণিক পশুপতি শিব দেখানো হয়েছে তেমন বেদ মন্ত্রে নেই। এটা পৌরাণিক কাল্পনিক চিত্র।

য়জুর্বেদের (৪০|৮) মধ্যে ঈশ্বরের স্বরূপের উপর বিচার করা হয়েছে।

স পর্য়॑গাচ্ছু॒ক্রম॑কা॒য়ম॑ব্র॒ণম॑স্নাবি॒রꣳ শু॒দ্ধমপা॑পবিদ্ধম্ ।
ক॒বির্ম॑নী॒ষী প॑রি॒ভূঃ স্ব॑য়॒ম্ভূর্য়া॑থাতথ্য॒তোऽর্থা॒ন্ ব্য᳖দধাচ্ছাশ্ব॒তীভ্যঃ॒ সমা॑ভ্যঃ ॥

পদার্থঃ- হে মনুষ্যগণ ! যে ব্রহ্ম (শুক্রম্) শীঘ্রকারী সর্বশক্তিমান্ (অকায়ম্) স্থূল সূক্ষ্ম ও কারণশরীর রহিত (অব্রণম্) ছিদ্ররহিত এবং ছিদ্র করিবার যোগ্য নহে (অস্নাবিরম্) নাড়ি আদি সহ সম্বন্ধরূপ বন্ধন হইতে রহিত (শুদ্ধম্) অবিদ্যাদি দোষ হইতে রহিত হওয়ায় সর্বদা পবিত্র এবং (অপাপবিদ্ধম্) যিনি পাপযুক্ত, পাপকারী এবং পাপে প্রীতিকারী কখনও হয়না (পরি, অগাৎ) সব দিক দিয়া ব্যাপ্ত, যিনি (কবিঃ) সর্বজ্ঞ (মনীষী) সকল জীবদের মনোবৃত্তিকে জানেন (পরিভূঃ) দুষ্ট পাপীদেরকে তিরস্কারকারী এবং (স্বয়ম্ভুঃ) অনাদি স্বরূপ যাহার সংযোগ হইতে উৎপত্তি, বিয়োগ হইতে বিনাশ, মাতা, পিতা, গর্ভবাস, জন্ম, বৃদ্ধি ও মরণ হয় না সেই পরমাত্মা (শাশ্বতীভ্যঃ) সনাতন অনাদি স্বরূপ নিজ নিজ স্বরূপে উৎপত্তি ও বিনাশরহিত (সমাভ্যঃ) প্রজাদিগের জন্য (য়াথাতথ্যতঃ) যথার্থ ভাবপূর্বক (অর্থাৎ) বেদ দ্বারা সকল পদার্থকে (ব্যদধাৎ) বিশেষ করিয়া নির্মাণ করে । (সঃ) সেই পরমেশ্বর তোমাদের উপাসনা করিবার যোগ্য ॥

অর্থাৎ- "স পর্য়গাত্"- সেই ঈশ্বর সর্বত্র ব্যাপক। "অকায়ম্"- সেই ঈশ্বর স্থূল, সূক্ষ্ম তথা কারণ শরীর হতে রহিত। "অব্রণম্"- সেই পরমাত্মা অচ্ছেদ্য, অবিকারী সত্তা। "অস্নাবিরম্"- সেই পরমাত্মা জীবাত্মার মতো নস-নাড়ির বন্ধনে কখনও আসে না। "শুদ্ধম্"- অবিদ্যা আদি দোষে গ্রস্থ না হওয়ার কারণে সর্বদা পবিত্র। "মনীষী"- তিনি সমস্ত জীবের মনোবৃত্তিকেও জানেন। "স্বয়ম্ভূ"- তাঁর কোনো কারণ নেই, যা অনাদি স্বরূপ অর্থাৎ সেই ঈশ্বর জন্ম-মরণ তথা বৃদ্ধি-ক্ষয় হতে রহিত, ইত্যাদি বিষয়ের উপর বিচার করে মহর্ষি ব্যাসজী য়োগ ভাষ্যতে ঈশ্বরকে "সদৈব মক্তঃ" বলেছেন।

ভাবার্থঃ- হে মনুষ্যগণ ! যিনি অনন্ত শক্তিযুক্ত অজন্মা, নিরন্তর, সদা যুক্ত, ন্যায়কারী, নির্মল, সর্বজ্ঞ, সকলের সাক্ষী, নিয়ন্তা, অনাদিস্বরূপ ব্রহ্ম কল্পের আরম্ভে জীবদেরকে স্বকথিত বেদ হইতে শব্দ, অর্থ এবং তাহার সম্বন্ধকে জানাইবার বিদ্যার উপদেশ না করেন তাহা হইলে কেহই বিদ্বান্ হইবে না এবং না ধর্ম, অর্থ, কাম ও মোক্ষের ফল ভোগ করিতে সক্ষম হয়, এইজন্য এই ব্রহ্মের সর্বদা উপাসনা কর ॥

গীতার ৯।১১ নং শ্লোকে মূর্তিপূজকদের মূঢ় (মূর্খ) বলে ধিক্কার করা হয়েছে
"অবজানন্তি মাম্ মূঢ়া মানুষীম্ তনু মাশ্রিতম্।।" (গীতাঃ ৯|১১)
অর্থাৎ - পরমেশ্বরের স্বরূপকে না জেনে মূর্খ ব্যক্তি ভগবানের অপমান করে, তারা ভগবানকে শরীরধারী ভেবে পূজো করে। আর উপাসনার সত্য পদ্ধতির নির্দেশ করে গীতার মধ্যে লেখা আছে -
"সর্বদ্বারাণি সংযম্য মনো হৃদি নিরুধ্য চ।" (গীতাঃ ৮|১২)
"ওমিত্যেকাক্ষরম্ ব্রহ্ম ব্যাহরন্মামনুস্মরন্।।" (গীতাঃ ৮|১৩)
অর্থাৎ - নেত্র আদি সমস্ত ইন্দ্রিয়কে ব্রহ্ম বিষয় দিয়ে থামিয়ে রেখে, মনকে হৃদয়স্থ, জীবাত্মা-পরমাত্মার মিলন কেন্দ্রের মধ্যে পরমাত্মার ভক্তিতে লাগিয়ে "ও৩ম্" শব্দের উচ্চারণ করার সঙ্গে পরমেশ্বরের ধ্যান করবে।

No comments:

Post a Comment

ধন্যবাদ

বৈশিষ্ট্যযুক্ত পোস্ট

ব্রহ্মচর্যের সাধনা ভোজন

  নবম ভাগ ভোজন ভূমিকা - "ধর্মার্থকামমোক্ষাণামারোগ্যম্ মূলমুত্তমম্" . ধর্ম-অর্থ-কাম আর মোক্ষ এই পুরুষার্থচতুষ্টয় হল মানব জীবনের উ...

Post Top Ad

ধন্যবাদ