স্বামী দয়ানন্দকৃত গ্রন্থ বেদ বিরুদ্ধ ও কাল্পনিক - ধর্ম্মতত্ত্ব

ধর্ম্মতত্ত্ব

ধর্ম বিষয়ে জ্ঞান, ধর্ম গ্রন্থ কি , হিন্দু মুসলমান সম্প্রদায়, ইসলাম খ্রীষ্ট মত বিষয়ে তত্ত্ব ও সনাতন ধর্ম নিয়ে আলোচনা

धर्म मानव मात्र का एक है, मानवों के धर्म अलग अलग नहीं होते-Theology

সাম্প্রতিক প্রবন্ধ

Post Top Ad

স্বাগতম

18 February, 2024

স্বামী দয়ানন্দকৃত গ্রন্থ বেদ বিরুদ্ধ ও কাল্পনিক

 

স্বামী দয়ানন্দকৃত গ্রন্থ বেদ বিরুদ্ধ ও কাল্পনিক

🍁 শাস্ত্রার্থ আরম্ভ 🍁
🔵 শ্রী পণ্ডিত মাধবাচার্য জী শাস্ত্রী -
স্বামী দয়ানন্দ সরস্বতী "সত্যার্থ প্রকাশে"র ভূমিকাতে আর ৭২ পৃষ্ঠাতে লিখেছেন যে - আমার মত হল বেদ, আর "ঋগ্বেদাদিভাষ্যভূমিকা"র মধ্যেও কেবল সংহিতা ভাগকে বেদ সংজ্ঞা স্বীকার করেছেন, তদনুসারে আর্য সমাজের দাবি হল - আমাদের মত মন্ত্র সংহিতাত্মক বেদের সর্বথা অনুকূল। কিন্তু আমার কথা হল স্বামী দয়ানন্দ কৃত গ্রন্থের মধ্যে এমন ধরণের বিষয় বিদ্যমান আছে যা না কেবল বেদ বিরুদ্ধ অপিতু আর্য সংস্কৃতির প্রতিকূল তথা মানব মর্যাদার বিরুদ্ধ, আর হিন্দুদের বলতে আর্য কিন্তু জীবনটা ঈশাই কিংবা নাস্তিক বানিয়ে দেওয়ার মতো। প্রমাণার্থ আমি কিছু প্রশ্ন উপস্থিত করবো, আশা করি মহাশয় বুদ্ধদেব জী সেগুলোকে বৈদিক সিদ্ধ করে দেখাবেন। যেমন - এটা সবাই জানে যে হিন্দুদের সবথেকে বড় ধার্মিক চিহ্ন হল "শিখা", বেদাদি শাস্ত্রের মধ্যে সন্ন্যাসাশ্রমীদের অতিরিক্ত বাকি সব হিন্দুর জন্য সর্বদা শিখা রাখা পরমাবশ্যক লেখা আছে, যথা - "য়শসে শ্রিয়ৈ শিখাম্" (য়জুর্বেদ ১৯/১২) তথা "সদোপবীতিনাভাব্যম্ সদাবদ্ধ শিখেন চ" (স্মৃতি) অর্থাৎ শিখা সর্বদা বেঁধে রাখা উচিত, ইতিহাসও একথার সাক্ষী দেয় যে য়বন কালে শিখা রক্ষার জন্য আমাদের লক্ষ- লক্ষ পূর্বজ হলদিঘাটি আর পানিপতের ময়দানে নিজেদের প্রাণ পর্যন্ত দিয়েছে। বিদেশি আক্রমণকারী ছলে, বলে আর হাজার রকমের প্রলোভন দেখিয়ে আমাদের এই চিহ্নকে নষ্ট করার জন্য সাতশো বছর ধরে পুরো চেষ্টা করে গেছে কিন্তু বিগত শতাব্দীর রক্ত রঞ্জিত ইতিহাস কানের মধ্যে আঙ্গুল ঢুকিয়ে চিৎকার করে বলছে যে আমাদের মস্তক কেটে ফেলা পছন্দ ছিল কিন্তু জীবিত থাকাতে নিজের শিখার কিছু কেশ শত্রুকে দিতে রাজি ছিল না, অস্তু! যে শিখার গুরুত্ব এত বড়, সেই শিখার বিষয়ে স্বামী দয়ানন্দ জী বেদাভিমানী হওয়ার ব্যর্থ দাবী করেও নিজের গ্রন্থ সত্যার্থ প্রকাশ ২৭২ পৃষ্ঠার মধ্যে আদেশ দিয়েছেন যে - "উষ্ণ দেশ হলে শিখা সহিত সম্পূর্ণ ছেদন করে দেওয়া উচিত, কারণ মাথায় কেশ থাকলে উষ্ণতা অধিক হয় আর তাতে বুদ্ধি কমে যায়।" কৃপা করে বলুন স্বামী জীর এই আদেশ কোন বেদ মন্ত্রের অনুকূল? তথা এটাও প্রকট করুন শীত-উষ্ণের প্রভাব তো স্ত্রী-পুরুষ উভয়ের উপর সমান রূপে পড়ে, ভারত হল উষ্ণ দেশের মধ্যে একটা, বিশেষ করে বাংলা, মাদ্রাজ আর নিজাম প্রান্ত তো আরও অধিক উষ্ণ, এমন অবস্থায় স্বামী জীর আজ্ঞানুসারে এতদ্ প্রান্তীয় না কেবল পুরুষ সমাজী অপিতু তাদের শ্রীমতীদেরও মুণ্ডন করা আবশ্যক। (জনতার মধ্যে হাসি) সেই মুণ্ডিত মস্তক আর্য সমাজন মহিলা সমুদায়ের কল্পিত চিত্রের উপর একটু ধ্যান তো দিন যে এই দৃশ্যটা কত ভয়ংকর দেখতে হবে!
🟠 শ্রী পণ্ডিত বুদ্ধদেব জী বিদ্যালঙ্কার -
সজ্জনগণ! আমার বড় আশা ছিল যে আজকের শাস্ত্রার্থে পণ্ডিত জী কোনো সৈদ্ধান্তিক গম্ভীর প্রশ্ন উপস্থিত করবেন কিন্তু প্রশ্ন শোনার পর বিদিত হল যে সেই সহস্র বারের মতো এদিক-সেদিক থেকে শোনা কথা পেশ করেছেন, নিজের সম্পূর্ণ সময়ের মধ্যে কেবল একটা প্রশ্ন করেছেন, বা বলতে পারেন যেমন-তেমন করে নিজের সময়কে পূরণ করেছেন। তো পণ্ডিত জীর এই প্রশ্নের উত্তরটা শুনুন! সেটা পণ্ডিত জীকে পূর্বে কয়েকশ বার দেওয়া হয়েছিল, কিন্তু তাতে ওনার কি, ওনাকে তো কিছু না কিছু বলতে হবে, যদি না বলেন তাহলে ওনাকে কে পাত্তা দিবে? শিখা কাটার উপর পণ্ডিত জীর আপত্তি আছে, অথচ আচার্য উব্বট যিনি ওনারই মাননীয় আচার্য হন, কি বলেছেন? পণ্ডিত জী যে বেদ মন্ত্র বলেছেন, উব্বট তার ভাষ্য করে বলেছেন যে - "বিগত শিখা সর্ব মুণ্ডা" বিগত শিখার অর্থ হল সম্পূর্ণ মাথা শিখা সহিত ন্যাড়া হওয়া। এরপর ওনার দ্বিতীয় আচার্য মহীধর জী বলেছেন যে - "বিগতাশিখা য়েষাম্ তম্ বিশিখা, শিখা রহিতা, মুণ্ডিতমুণ্ডা" অর্থাৎ যার শিখা নেই সে বিশিখা, শিখা রহিত ন্যাড়া মস্তক ওয়ালা, এখানেও শিখা কাটা আছে। পণ্ডিত জী! আপনি নিজের ঘরকে তো দেখেন নি, আগে নিজের ঘরের আবর্জনাকে পরিষ্কার করুন, অন্যের স্বচ্ছ সুন্দর ঘরে আপনি নোংরা খুঁজছেন। স্বামী দয়ানন্দ জী কোথাও শিখা কেটে ফেলার কথা বলেন নি, কেবল বিশেষ কিছু সময় বা আপাত স্থিতিতে বলেছেন, আর সেখানে "উষ্ণদেশ" শব্দ নেই বরং "অতি উষ্ণ" আছে। আপনি গ্রন্থ পড়েন না, আমি আশা করবো আপনি এরপর কোনো সৈদ্ধান্তিক, গম্ভীর বিষয়ের উপর প্রশ্ন তুলবেন যাতে এই বসে থাকা শ্রোতাগণ কিছু লাভ নিতে পারে।
🔵 শ্রী পণ্ডিত মাধবাচার্য জী শাস্ত্রী -
সত্যার্থ প্রকাশের মধ্যে লেখা আছে যে - "প্রসূতার দুধ ছয় দিন পর্যন্ত শিশুকে পান করাবে তারপর ধাই পান করাবে..." প্রসূতা স্ত্রী দুধ পান করাবে না, এই আজ্ঞা কোন বেদ মন্ত্রের অনুকূল? বেদের মধ্যে তো এর প্রতিকূল স্পষ্ট শব্দে বলে দেওয়া হয়েছে যে "শিশুর জন্য তার মায়ের দুধই হল পরম পুষ্টি কারক", দেখুন বেদের মধ্যে বলা হয়েছে - "উৎসম্ জুষস্ব মধুমন্ত মর্বন" (১৭/৯৭) এটা নিঃসন্দেহে বলা যেতে পারে যে স্বামী জীর এই আজ্ঞা ঈশাইদের নকল।
🟠 শ্রী পণ্ডিত বুদ্ধদেব জী বিদ্যালঙ্কার -
স্বামী দয়ানন্দ জী যে ছয় দিন লিখেছেন সেটা ঠিকই লিখেছেন, ইতিহাসের মধ্যে অনেক প্রমাণ পাওয়া যায় যেখানে ধাইয়ের উল্লেখ আছে, তারা কি সবাই ঈশাই ছিল? পণ্ডিত জী একটু চিন্তা ভাবনা করে কথা বলুন। বেদের বচন করে আপনি বলেছেন যে - বেদ মায়ের দুধকে পুষ্টিকারক বলেছে, তো আমি কখন বলেছি বা স্বামী দয়ানন্দ জী কখন বলেছেন যে মায়ের দুধ বিষ হয় বা হানিকারক হয়! আপনি না তো ইতিহাস পড়েছেন আর না বেদ শাস্ত্র! যদি কোথাও গুরু চরণে বসে পড়ে নিতেন তাহলে এইরকম উল্টোপাল্টা করতেন না।
🔵 শ্রী পণ্ডিত মাধবাচার্য জী শাস্ত্রী -
সত্যার্থ প্রকাশের মধ্যে লেখা আছে যে - "স্তনের ছিদ্রে ঔষুধ লেপে নিবে যাতে দুধ স্রবিত না হতে পারে, এমনটা করলে দ্বিতীয় মাসে পুনরায় যুবতী হয়ে যাবে, তথা স্ত্রী য়োনি সংকোচ, শোধন আর পুরুষ বীর্যস্তম্ভন করবে", বলুন এই অশ্লীল বর্ণনা কোন বেদ মন্ত্রের মধ্যে উল্লেখ আছে? বেদ তো ঈশ্বরীয় জ্ঞানের ভাণ্ডার, স্বামী জী বেদের নামে এই ধরণের কোকশাস্ত্রীয় নোংরা কথা লিখে কলঙ্কিত করেছেন।
🟠 শ্রী পণ্ডিত বুদ্ধদেব জী বিদ্যালঙ্কার -
সব গৃহস্থ জানে যে যখন স্ত্রীর বাচ্চা জন্ম হয় তো সেই সময় তার প্রায় সব অঙ্গ শিথিল পড়ে যায় তথা সে অতীব নীর্বল হয়, এইজন্য প্রসবের অনন্তর আয়ুর্বেদ শাস্ত্রের মধ্যে এইরকম অনেক প্রকারের চিকিৎসা লেখা আছে, যা প্রয়োগ করলে প্রসূতার সেইসব অঙ্গ পুনঃ দৃঢ় হয়ে যায় আর সেগুলো আগের মতো পুষ্ট হয়। স্বামী দয়ানন্দ জীও তাঁর গ্রন্থ সত্যার্থ প্রকাশের মধ্যে প্রসূতার জন্য সেই ধরণের ঔষধী সেবনের শিক্ষাই দিয়েছেন। যা লাগিয়ে দিলে অঙ্গ তার পূর্বের স্থিতিতে আসে, এতে খারাপের কি আছে? বেদের মধ্যেও স্পষ্ট লেখা আছে যে - "বিষ্ণুর্য়োনিম্ কল্পয়তু" অর্থাৎ য়োনি সমর্থ গর্ভ ধারণের যোগ্য দৃঢ় হয়ে যাওয়া উচিত। জানি না পণ্ডিত জী কি ধরণের বিষয়ের উপর কি শঙ্কা করেন! আপনি যদি চরক আর সুশ্রুত পড়তেন তাহলে এই রকম অজ্ঞানীর মতো কথা বলতেন না।
🔵 শ্রী পণ্ডিত মাধবাচার্য জী শাস্ত্রী -
আর্য সমাজের সংস্কার বিধি অনুসারে কন্যার বিবাহের তিথি আগে থেকে নিশ্চিত করা যাবে না কারণ স্বামী জী বলেছেন যে "যখন কন্যা রজস্বলা হওয়ার পর শুদ্ধ হয়ে যাবে তখন যেদিন গর্ভাধানের রাত্রি নিশ্চিত করা হয়েছে তারমধ্যে বিবাহ করার জন্য প্রথমেই সামগ্রী আদি রাখা উচিত", দেখুন সংস্কার বিধি ১২৯ পৃষ্ঠা, তো রজস্বলা হওয়ার সঠিক তিথি আগে থেকে জানা যায় না, দুই-চার দিন আগে-পিছে হওয়ার প্রায়শঃ সম্ভাবনা হতে পারে, এর অতিরিক্ত স্বামী জী বিবাহ সংস্কার সমাপ্ত হতেই তৎকাল শ্বশুরের ঘরে অথবা জনবাসে গর্ভাধান করার লজ্জাপূর্ণ আজ্ঞা দিয়েছেন। দয়া করে বলুন একথা কোন বেদের অনুকূল? আমি দাবি করে বলছি যে এইকথা যেমন বেদের বিরুদ্ধ তেমনই সংস্কৃতি আর সভ্যতার বিরুদ্ধ।
🟠 শ্রী পণ্ডিত বুদ্ধদেব জী বিদ্যালঙ্কার -
স্বামী দয়ানন্দ জী এই ধরণের ভাষা কোথাও লেখেন নি যেটা আপনি ব্যাখ্যা করলেন, আর যদি লিখে থাকেন তাহলে কোথায় লেখা আছে আপনি সেটা দেখিয়ে দিন। স্বামী জী তো রজস্বলা হয়ে যাওয়ার পর পূর্ণ যৌবনাবস্থাপন্ন কন্যার বিবাহের শিক্ষা দিয়েছেন আর বেদও এর সমর্থন করে, দেখুন - "ব্রহ্মচর্য়্যেণকন্যা য়ুবানম্ বিন্দতে পতিম্", পণ্ডিত জী! বাল্যবিবাহের কারণে ভারত গারত হয়ে গেছে। আজ সংসারের সব সভ্য মানুষ বাল্যবিবাহের প্রতিকূল, তাই স্বামী জীও বাচ্চাদের বিবাহ না হোক এইজন্য পূর্ণ যৌবন প্রাপ্ত হওয়ার পরেই বিবাহের আজ্ঞা দিয়েছেন। কম বয়সে বিবাহ হলে কি কি ভয়ংকর পরিণাম হতে পারে, সেটা সবাই জানে। আর যখন বিবাহের উদ্দেশ্যই হল সন্তানোৎপত্তি করা তখন এতে লজ্জার কি আছে?
🔵 শ্রী পণ্ডিত মাধবাচার্য জী শাস্ত্রী -
সংস্কার বিধির ১৪৯ পৃষ্ঠাতে লেখা আছে যে "বিবাহের মধ্যে অগ্নি পরিক্রমা করার সময় অর্থাৎ অগ্নির চারিদিকে ঘোরার সময় বর কন্যার অতিরিক্ত একজন লট্টবন্ধ যুবক জলের ঘড়া হাতে তুলে তাদের সঙ্গে পরিক্রমা করবে", একথা না কেবল বেদের প্রতিকূল বরং একাধিক পুরুষের সঙ্গে পরিক্রমা করার কারণে হিন্দু সভ্যতারও সম্পূর্ণ বিরুদ্ধ।
🟠 শ্রী পণ্ডিত বুদ্ধদেব জী বিদ্যালঙ্কার -
পণ্ডিত জী! শাস্ত্রার্থের ময়দানে আসার পূর্বে অন্ততঃ কিছু প্রস্তুতি অবশ্যই করে নিবেন, একটা অন্তত উচিত প্রশ্ন করুন নাকি এইভাবেই সময় কাটিয়ে দিবেন? পণ্ডিত জী! বরও একটা রাজার সমান হয়, যেমন রাজার অঙ্গরক্ষক হয় তেমনই আগুনে যেন কোনো ঝুলে থাকা বস্ত্র পড়ে না যায় তথা ঘড়া আদি কোনো বুড়ো তো নিয়ে চলতে পারবে না, যুবকই বহন করে চলতে পারবে, সেটা সঙ্গে নিয়ে তার রক্ষার্থে চললে তাতে কোন পাহাড়টা ভেঙে পড়বে? বিবাহ তো বরেরই হচ্ছে, কন্যাও তার সঙ্গে যাবে নাকি জলের ঘড়া হাতে বহন কারীর সঙ্গে যাবে! আপনি নিজেদের কথা বলুন, যখন আপনারা কন্যার মুখ ঢেকে স্বয়ং দুই পণ্ডিত জী যেকথা বরকে দিয়ে বলা উচিত কিন্তু সেটা বর পক্ষের পণ্ডিত বলে তথা যেকথা কন্যাকে দিয়ে বলা উচিত তাকে কন্যা পক্ষের পণ্ডিত বলে, সেইসময় এমন মনে হয় যেন বর-কন্যার বিবাহ নয় বরং দুই পৌরাণিক পণ্ডিতের বিবাহ হচ্ছে (জনতার মধ্যে প্রচণ্ড হাসি)। একটু বুদ্ধিমানের কথা বলুন আর সৈদ্ধান্তিক প্রশ্ন করুন।
🔵 শ্রী পণ্ডিত মাধবাচার্য জী শাস্ত্রী -
সংস্কার বিধির মধ্যে লেখা আছে যে বর-বধূ বিবাহের পূর্বে সম্মিলিত স্নান করার সময় পরস্পর একে অপরের মূত্রেন্দ্রিয়কে - "ইমম্ তে উপস্থম্ মধুনা সম্সৃজামি" ইত্যাদি মন্ত্র বলে সংযুক্ত হোক লেখা আছে। বলুন এই জঘন্ন কার্যকলাপ কোন বেদের অনুকূল?
🟠 শ্রী পণ্ডিত বুদ্ধদেব জী বিদ্যালঙ্কার -
পণ্ডিত জী! যে শব্দ আপনি বললেন, আপনি কি ঠিক সেটাই যেমনটা-তেমন সংস্কার বিধির মধ্যে দেখাতে পারবেন? (একথা শুনে মাধবাচার্য জী এদিক-সেদিক দেখলেন)... বলুন, আগে বলুন তারপরই আমি শাস্ত্রার্থ আগে নিয়ে যাবো, নিজের পাশে বসে থাকা বিদ্বানদের জিজ্ঞেস করুন, হতে পারে এরাই আপনাকে বলে দিবেন যে এই শব্দ সংস্কার বিধির অমুক পৃষ্ঠার মধ্যে বিদ্যমান আছে...আর যদি না বলতে পারেন তাহলে মিথ্যা কথা বলে কেন মানুষকে ভ্রমে ফেলছেন? সেখানে তো স্বামী জী পরিষ্কার ভাবে লিখেছেন যে স্নান করে শুদ্ধ হয়ে বর-বধূ বিবাহ সংস্কারে সম্মিলিত হবে। পণ্ডিত জী! আপনি কি এক মাস ধরে স্নান না করেই পণ্ডিতানীর সঙ্গে বিবাহ করতে বসেছিলেন? (চতুর্দিকে হাসি...) আপনি স্নান করার মধ্যেও কেন খারাপ দেখেন? আপনি কি বেদের মধ্যে দেখাতে পারবেন যে স্নান করা উচিত না অথবা শুদ্ধ থাকা উচিত না? তাহলে আমি আজই নিজের পরাজয় স্বীকার করে নিবো।
🔵 শ্রী পণ্ডিত মাধবাচার্য জী শাস্ত্রী -
সংস্কার বিধির ৫৫ পৃষ্ঠাতে লেখা আছে যে পতিকে নিজের স্ত্রীর মাথায় তেল দিয়ে নিজের হাত দিয়ে কপালের সিঁথি বের করে জুটি বাঁধা উচিৎ। এই ধরণের নির্লজ্জ চেষ্টা প্রায়শঃ কামুক ব্যক্তিরা করে কিন্তু স্বামী জী এই ধরণের আদেশ বেদের নামে দিয়ে তার বদনাম করেছেন। বলুন এই লীলা কোন বেদের মধ্যে উল্লেখ আছে?
🟠 শ্রী পণ্ডিত বুদ্ধদেব জী বিদ্যালঙ্কার -
সবাই জানে যে পতি-পত্নীর মধ্যে কোনো ভেদ থাকে না, তাই যদি স্বামী জী এটা লিখেও দেন তাতে কি এমন অনর্থ হয়ে গেছে? পতি-পত্নী একে অপরকে পরিষ্কার দেখতে পছন্দ করে, স্বাস্থ্যের দৃষ্টিতেও নিজেকে স্বচ্ছ রাখা উচিত। এইসব বিধান সূত্রগ্রন্থেরও অনুকূল, সেটা সনাতন ধর্মের শাস্ত্রগুলোতেও বিদ্যমান আছে, পণ্ডিত জী কি একথা নিজের গ্রন্থের মধ্যে দেখেন নি, নাকি সেখানে নিজের গ্রন্থ পড়ার সময় চোখের মোতি বেরিয়ে এসেছিল? (জনতার মধ্যে হাসি)
🔵 শ্রী পণ্ডিত মাধবাচার্য জী শাস্ত্রী -
সংস্কার বিধির মধ্যে লেখা আছে যে "খিচুড়িতে পুষ্কল ঘৃত ঢেলে গর্ভিণী স্ত্রী নিজের প্রতিবিম্ব সেই ঘীয়ের মধ্যে দেখবে তথা সেই সময় পতি স্ত্রীকে জিজ্ঞেস করবে যে "কিম্ পশ্যসি" স্ত্রী উত্তর দিবে "প্রজাম্ পশ্যামি" তখন সেই খিচুড়ি খাবে", এই ছায়া-দানকে খেয়ে ফেলার লীলা কোন-কোন বেদ মন্ত্রের অনুকূল? এর অতিরিক্ত নিজের মুখের প্রতিবিম্ব দেখার পরেও এইভাবে মিথ্যা কথা বলার বিধান যে "আমি এরমধ্যে নিজের সন্তানকে দেখছি" স্বামী জীর নৈতিক পতন। আশা করি মহাশয় জী আমার এই প্রশ্নের উত্তর দিয়ে কৃপা করবেন, একে পূর্বের প্রশ্নের মতো উপহাস করে উড়িয়ে দিবেন না।
🟠 শ্রী পণ্ডিত বুদ্ধদেব জী বিদ্যালঙ্কার -
প্রায়শঃ দেখা যায় যে স্ত্রীদের ঘৃত দুগ্ধ আদি পৌষ্টিক পদার্থ খাওয়ার মধ্যে রুচি কম হয়, সেটা বিশেষ করে গর্ভবতী স্ত্রীদের। তারা টকঝাল পদার্থ বেশি পছন্দ করে আর তারা পৌষ্টিক পদার্থের তো সামনেও যায় না, অথচ সেই অবস্থায় পৌষ্টিক পদার্থ তাদের জন্য অত্যন্ত আবশ্যক আর এইরকম অবস্থায় তাদের ঘৃত আদি দেওয়াটা আবশ্যক। তার মাধ্যমে স্বামী জী যদি খিচুড়ি বলে দেন তাহলে এতে দোষের কি আছে? কিন্তু পণ্ডিত জীকে তো কিছু না কিছু বলতেই হবে, সেই কথার সার হোক বা না হোক। আমি পণ্ডিত জীর সব কথার উত্তর দিয়েছি। এইভাবে এই শাস্ত্রার্থের তৃতীয় দিবস শান্তি পূর্বক ব্যতীত হল।
🍁 শাস্ত্রার্থ সমাপ্ত 🍁


No comments:

Post a Comment

ধন্যবাদ

বৈশিষ্ট্যযুক্ত পোস্ট

যজুর্বেদ অধ্যায় ১২

  ॥ ও৩ম্ ॥ অথ দ্বাদশাऽধ্যায়ারম্ভঃ ও৩ম্ বিশ্বা॑নি দেব সবিতর্দুরি॒তানি॒ পরা॑ সুব । য়দ্ভ॒দ্রং তন্ন॒ऽআ সু॑ব ॥ য়জুঃ৩০.৩ ॥ তত্রাদৌ বিদ্বদ্গুণানাহ ...

Post Top Ad

ধন্যবাদ