মনুস্মৃতি ৪/৮৬ - ধর্ম্মতত্ত্ব

ধর্ম্মতত্ত্ব

ধর্ম বিষয়ে জ্ঞান, ধর্ম গ্রন্থ কি , হিন্দু মুসলমান সম্প্রদায়, ইসলাম খ্রীষ্ট মত বিষয়ে তত্ত্ব ও সনাতন ধর্ম নিয়ে আলোচনা

धर्म मानव मात्र का एक है, मानवों के धर्म अलग अलग नहीं होते-Theology

সাম্প্রতিক প্রবন্ধ

Post Top Ad

স্বাগতম

18 March, 2024

মনুস্মৃতি ৪/৮৬

মনুস্মৃতি ৪/৮৬

দশ সুনাসহশ্রণি যে বাহয়তি সৌনিকঃ।

তেন তুল্যঃ স্মৃতো রাজা ঘোরসবতস্র প্রতিগ্রহঃ।। মনুস্মৃতি ৪/৮৬

এই-৪/৮০-৯১ শ্লোকগুলি নিম্নলিখিত কারণে প্রক্ষিপ্ত হয়েছে-মনু সর্বত্র বর্ণব্যবস্থার আধার কর্মকে মানতেন, জন্মকে নয়। কিন্তু (৪/৮০-৮১) শ্লোকগুলিতে জন্মমূলক বর্ণব্যবস্থার স্পষ্ট বোধ রয়েছে। মনুর অনুসারে শুদ্ধ হল এই, যে বুদ্ধিভিত্তিক কার্য করতে অসমর্থ হওয়াতে শারীরিক শ্রম করে। কিন্তু তার জন্য ধর্মাচরণের প্রতিষেধ নয়। মনু "ন ধর্মাত্ প্রতিষেধনম্" (১০/১২৬) এবং "অন্যাদপি পরম্ ধর্মম্" ( ২/২৩৮) বলা শূদ্রকেও ধর্মাচরণ করার পূর্ণ অধিকার দেওয়া হয়েছে। এবং ( ১২/৪২) তে স্পষ্ট লিখা যে ধর্মাচরণ না করে,সেই নুষ্য পাপাচরণে রত থাকে। মনু ইন্দ্রিয়াদির সংযম করা,অহিংস পালন করা, বেদাভ্যস করা,তপস্যা করাদি মানব ধর্ম মানতেন। বরং চারি বর্ণের জন্য যে বিবাহের বর্ণনা করেছেন এতে যজ্ঞাদি ধর্ম ক্রিয়ার মনু শূদ্রের জন্য ও দ্বিজদের সমানই বিধান করেছেন।

অতঃএব শূদ্রের ধর্মোপদেশ না করার কথা মনুসম্মত কদাপি না হতে পারে। এবং ( ৪/৮৪-৮৭) পর্যন্ত শ্লোকগুলিতে এমন রাজা থেকে দান গ্রহণের নিষেধ করা হয়েছে,যে ক্ষক্রিয় থেকে উৎপন্ন না হয়েছে। এই মান্যতাও জন্মমূলক হওয়াতে মনুর না হতে পারে। যে গুণ,কর্ম স্বভাবে ক্ষত্রিয় কর্মসম্পূর্ণ হন ,সে রাজা,সে জন্ম সূত্রে যেকোনও বর্ণের হন,তাঁর থেকে দান গ্রহণে কোন হানি নয়। কারণ করা ক্ষতিয় ধর্মের মধ্যে গন্য হয়।(৪/৮৫-৮৬ ) শ্লোকে রাজার নির্থক নিন্দা করা হয়েছে। যে রাজা ধার্মিক,ধর্ম দ্বারা প্রজার রক্ষা করেন,এবং ধর্মপূর্বক প্রজা থেকে কর গ্রহণ করেন,তাঁকে মনু ধর্মের রক্ষক ( ৭/১৭) বলেছেন।

মনু কি সেই রাজাকেই বেশ্যা, পতিতা, খুনি তথা অধিক থেকেও নিকৃষ্ট বলতে পারেন? অতঃএব রাজার নিন্দা যেখানে পক্ষপাতপূর্ণ তথা মিথ্যাই হয়। এবং ( ৪/৮৭-৯০) শ্লোকগুলিতে একুশ নরকের পরিগণনাও কপোল-কল্পিত হওয়াতে মিথ্যাই হয়। কারণ মনুর মান্যতার অনুসারে স্বর্গ-নরক কোন স্থান বিশেষ নয়। অন্যথা কর্ম পরিণতি স্বর্গ-নরকের অবশ্যই বর্ণ করেছেন। মনু "নরক" শব্দের প্রয়োগ "স্বর্গ" এর বিলোপ শব্দের রূপে প্রয়োগ করেছেন। এবং "স্বর্গ" কে লৌকিক সুখ তথা মোক্ষসুখের জন্য প্রযুক্ত করেছেন।

যখন মনু লিখেছেন- "দাবাধীনস্তথা স্বর্গঃ"( ১/২৮) তথা "স সন্ধার্যঃ প্রযত্নেন স্বর্গমক্ষয়মিচ্ছতা" ( ৩/৭৯) অর্থাৎ গ্রগস্থের সুখ স্ত্রী অধীন, তবে যেখানে "স্বর্গ" শব্দ সুখ বিশেষরই বাচক,স্থান বিশেষের নয়। একই প্রকার দুঃখ বিশেষ বাচক "নরক" শব্দ। যার ব্যাখ্যা নিরুক্তে এই প্রকারে আছে-"নরকং ন্যয়কং নীচৈর্গমনমিতি বা।। অর্ধাৎ মনুষ্যের অধোগতি হওয়াই নরক। মনু ১২তম অধ্যায়ে নিজ মান্যতা স্পষ্ট করেছেন যে,জীব কর্মানুসারে বিভিন্ন যোনিতে যায় মুখ- দুঃখ ভোগ করে। অতঃএব নরকাদির পরিগণনা অথবা মান্যতা মনুর কদাপি নয়। এটি পৌরাণিক যুগেই প্রবেশ করা মত। এবং এই শ্লোকের বিষয় বাহ্য হওয়াতেও প্রক্ষিপ্ত। এইগুলিতে বর্ণিত বিষয়ের ব্রত অথবা সতোগুণ বর্ধনে কোন সম্বন্ধ নেই। এই শ্লোগুলির বর্ণনা শৈলীও পক্ষপাতপূর্ণ, অতিরঞ্জিত তথা অযুক্তিযুক্ত। অতঃএব এই শ্লোক প্রক্ষিপ্ত-প্রমাণিত।। (ভাষ্য- পণ্ডিত রাজবীর শাস্ত্রী জী)

No comments:

Post a Comment

ধন্যবাদ

বৈশিষ্ট্যযুক্ত পোস্ট

যজুর্বেদ অধ্যায় ১২

  ॥ ও৩ম্ ॥ অথ দ্বাদশাऽধ্যায়ারম্ভঃ ও৩ম্ বিশ্বা॑নি দেব সবিতর্দুরি॒তানি॒ পরা॑ সুব । য়দ্ভ॒দ্রং তন্ন॒ऽআ সু॑ব ॥ য়জুঃ৩০.৩ ॥ তত্রাদৌ বিদ্বদ্গুণানাহ ...

Post Top Ad

ধন্যবাদ