অশুদ্ধমিতি চেৎ, ন, শব্দাৎ॥ (ব্রহ্মসূত্র-৩/১/২৫)
(অশুদ্ধম্-ইতি চেৎ) যদি ইষ্ট আদি কর্মকারী অনুশয়ী জীবাত্মাসমূহ চন্দ্রলোকে অবরোহণ করে অন্যাধিষ্ঠিত ধান্য আদিতেও নিবাসিত হয় = সমাবিষ্ট হয় তবে সেই ধান্য আদি কাটলে, রন্ধন করলে অশুদ্ধ অভক্ষ্য হয়ে যাবে হিংসাদোষের মাধ্যমে, যদি এমনটা বলা হয় তবে (ন) তা অশুদ্ধ অভক্ষ্য হবে না (শব্দাৎ) শব্দপ্রমাণ দ্বারা, আগম দ্বারা = বেদ প্রমাণ দ্বারা [কেননা] বেদে এসবের ভক্ষণের বিধান আছে - "ত্যক্তেন ভুঞ্জীথাঃ" (যজু০ ৪০/১) ত্যাগের মাধ্যমে ভোগ করো, "রসমোষধীনাম্" (অথর্ব০ ৪/২৭/৩) = ঔষধীসমূহের রসপান করা, তাদের অন্ন খাওয়া উচিত,ঔষধিকে নিংড়ে পিষেই তার রস বের করতে হবে, "অহং দাশুষে বিভজামি ভোজনম্ " (ঋ০ ১০/৪৮/১) = আমি দানকর্তার জন্যে ভোজন প্রদান করি, ঔষধি থেকে প্রস্তুতকৃত অন্ন ভোজন হয়। "ময়া সোহন্নমত্তি য়ো বিপশ্যতি যঃ প্রাণিতি য় ঈ শৃণোত্যুক্তম্।।" (ঋ০ ১০/১২৫/৪)= সে আমার প্রদত্ত অন্ন আহার করে, যে দর্শন করে, প্রাণ নেয়, শ্রবণ করে। অতএব ঔষধি-বনস্পতিসমূহতে আগত অনুশায়ী জীবাত্মাদের প্রতি হিংসা হয় না কারণ তাদের সেখানে অধিষ্ঠানতা তন্ময়তা ভোগাত্মা নয়, কেবলমার্গমাত্রতা যাত্রিতা মাত্র।
এই সূত্রের শাঙ্করভাষ্যে প্রকরণরহিত যজ্ঞপ্রসঙ্গ আনা হয়েছে যে "শাস্ত্রাচ্চ হিংসানুগ্রহাদ্যাত্মকো জ্যোতিষ্টোমো ধর্ম ইত্যবধারিতঃ কথমশুদ্ধ ইতি শক্যতে বক্তুম্।......" অগ্নিষ্টোমীয়ং পশুমালভতে" ইতি শাস্ত্রম্" (শাঙ্করভাষ্যম্) অর্থাৎ শাস্ত্র দ্বারা হিংসা ও দয়া আদি স্বরূপকে ধারণকারী জ্যোতিষ্টোম যজ্ঞই ধর্ম এটা নিশ্চয় করা হয়েছে, কিভাবে অশুদ্ধ বলা হবে, কেননা " অগ্নিষ্টোমীয় পশুকে বধ করা হবে " ইহা শাস্ত্রবচন। শাঙ্করভাষ্যের এই কথন এস্থলে অযুক্ত, কারণ এস্থল যজ্ঞে পশুহিংসা দোষ প্রসঙ্গের আশঙ্কার স্থান নয়, পূর্বসূত্র " অন্যাধিষ্ঠিতেষু পূর্ববদভিলাপাৎ" - তে ধান্য আদি ঔষধি-বনস্পতির প্রসঙ্গ চলতেছে, তাদের মধ্যেই হিংসাদোষপ্রসঙ্গের আশঙ্কা যুক্ত। স্বমতের বিরুদ্ধ যজ্ঞপক্ষও শঙ্করস্বামী ঘোষিত করেছে? শঙ্করভাষ্যে সূত্রের অনর্থ করে ফেলা হয়েছে॥
ভাষ্যকার : স্বামী ব্রহ্মমুনি পরিব্রাজক, বিদ্যামার্তণ্ড
No comments:
Post a Comment
ধন্যবাদ