অবাক করার কিছু নিয়ম
মনে রাখবেন অপর ব্যক্তি হয়তো সম্পূর্ণ ভুল করতে পারে। তবে সে তা মনে করে না। এজন্য তাকে দোষ দেবেন না। যে কোন বোকাই এটা করতে পারে। তাকে শুধু বোঝার চেষ্টা করুন। একমাত্র বুদ্ধিমান, সহনশক্তিসম্পন্ন, আলাদা ধরনের মানুষই এটা চেষ্টা করে থাকেন।
অন্য ব্যক্তি যে–এরকমভাবে কাজ করে তার একটা কারণ আছে। সেই গোপন কারণটা খুঁজে বের করুন–তা হলেই তার এরকম ব্যবহারের কারণ বা হয়তো তার ব্যক্তিত্বের কথাটাই বুঝতে পারবেন।
দয়া করে সতোর মধ্য দিয়ে তার জায়গায় নিজেকে রাখুন।
আপনি যদি নিজেকে বলেন, ‘আমি যদি ওর জায়গায় থাকতাম তাহলে আমার অনুভূতি কেমন হতো বা কিভাবে চলতাম?’ এরকম করতে পারলে আপনি প্রচুর বিরক্তি আর সময় বাঁচাতে পারবেন। কারণ কারণটা খুঁজে পাওয়ার জন্য আগ্রহী হওয়ায় তার ফলের জন্য আমরা ততটা বিরক্ত হব না। আর তাছাড়াও এতে আপনি মানবিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে আপনার দক্ষতা প্রচুর বাড়াতে পারবেন।
কেনেথ এম. গুড তার হাউ টু টান পিপল ইনটু গোল্ড’ বইতে লিখেছেন, ‘এক মিনিট অপেক্ষা করে দেখুন আপনার নিজের কাজে আপনার উৎসাহ কতটা আছে। তুলনা করে দেখুন অন্য কোন ব্যাপারে আপনার উৎসাহ কতটা কম। এবার বুঝে দেখুন পৃথিবীতে অন্য যে কোন লোকই ঠিক এইরকমভাবে। তারপর লিঙ্কন আর রুজভেল্টের সঙ্গে আপনি আয়ত্ত করতে পারবেন যে মানুষের সঙ্গে ব্যবহার নির্ভর করে অপর লোকটির দৃষ্টিকোণ বুঝে নেবার আন্তরিকতার উপরেই।‘
বেশ কয়েক বছর ধরে আমি অবসর কাটাতে চেয়েছি আমার বাড়ির কাছাকাছি একটা পার্কে বেড়িয়ে আর ঘোড়ায় চড়ে। আগেকার কালের সেই গলদের মতই আমি একটা ওক গাছকে দারুণ ভালোবাসতাম, বলা যায় পুজো করতাম। তাই প্রত্যেক বছরে অপ্রয়োজনীয় আগুন লেগে ছোট ছোট গাছ পুড়ে যেতে দেখে আমি খুব কষ্ট পেতাম। এই আগুন অবশ্যই অসাবধানী ধূমপানকারীদের জন্য লাগতো না। এটা লাগতো ছোট ছোট ছেলেরা গাছের তলায় আগুন লাগিয়ে ডিম ভেজে খাওয়ার জন্যে। মাঝে মাঝে এই আগুন বিরাট আকার ধারণ করতো যে ফায়ার ব্রিগেডকে ডাকতে হতো মোকাবিলা করতে।
পার্কের একটা কোণে বোর্ডে অবশ্য লেখা ছিল যে, কেউ কোন আগুন জ্বাললে জরিমানা বা কারাদণ্ড হতে পারে। কিন্তু নোটিশটা পার্কের এমন জায়গায় টাঙানো ছিল যে ছেলেরা কেউই সেটা দেখতে পেত না। একজন ঘোড়সওয়ার পুলিশই পার্কে এসব তত্বাবধান করত। কিন্তু সে তার কর্তব্য তেমনভাবে গুরুত্ব সহকারে করত না আর আগুনও যথারীতি জ্বলতে থাকত প্রতি ঋতুতেই। একবার আমি আগুন লক্ষ্য করে পুলিশটির কাছে ছুটে গিয়ে তাকে আগুনের কতা বলে দমকলে খবর দেবার কথা বললাম। পুলিশটি অম্লানবদনে উত্তর দিল আগুন লাগলে খবর দেয়া তার কাজ নয়! আমি প্রায় মরিয়া হয়ে উঠলাম আর এরপর যখন ঘোড়ায় চড়ে বেড়াতাম ছেলেদের আগুন জ্বালতে দেখলেই তাদের তাড়া করতাম। আমি লজ্জিত ও গোড়ায় ছেলেদের দৃষ্টিকোণ থেকে ব্যাপারটা আমি দেখিনি। আমি স্বনিয়োজিত আইন রক্ষক হয়েই কাজ করতে চাইতাম। আগুন জ্বলতে দেখলে আমার মন এমনই খারাপ হয়ে উঠতো যে ঠিক করার বদলে ভুলই করে বসতাম। আমি কর্তৃত্ব ব্যঞ্জকস্বরে ছেলেদের সতর্ক করে বলতাম যে ঠিক করার বদলে ভুলই করে বসতাম। আমি কর্তৃত্ব ব্যঞ্জকস্বরে ছেলেদের সতর্ক করে বলতাম যে এজন্য তাদের জরিমানা আর জেলও হতে পারে। তাদের গ্রেপ্তারের ভয়ও দেখাতাম। আমি কেবল নিজের মনকেই হাল্কা করতে চাইতাম, তাদের মন বিচার করতাম না।
ফলাফল কি হলো? ছেলেরা কথা শুনতো–বেশ অসন্তুষ্ট হয়েই মেনে নিত। আমি পাহাড়ে ঘোড়ায় চড়ে উঠে গেলে আমার ধারণা তারা আবার আগুন জ্বারাতো আর বোধহয় সারা পার্কটাই পুড়িয়ে ছাই করতে চাইতো।
সময় কেটে চললে আমি আশা করলাম মানবিক সম্পর্ক নিয়ে আমার নতুন কিছু জ্ঞান সঞ্চয় হয়েছে। একটু কৌশলীও হই, আর অন্যের দৃষ্টিকোণ থেকে সব কিছু দেখতে অভ্যস্ত হলাম। এর ফলে হুকুম দেবার বদলে জ্বলন্ত আগুন দেখে এগিয়ে গিয়ে অনেকটা এইভাবে শুরু করতাম :
কি ছেলেরা, সময় ভালো কাটছে? আর কি রান্না হচ্ছে?… আমার ছেলে বয়েসে আমরাও আগুন ধরাতাম–এখনও অবশ্য ভালোবাসি। কিন্তু তোমরা বোধহয় জানো না বাগানে আগুন জ্বালানো খুবই বিপজ্জনক। আমি অবশ্য জানি, তোমরা কোন অনিষ্ট করতে চাও না। তবে অন্য ছেলেরা সেরকম সাবধানী নয়। ওরা তোমাদের আগুন জ্বালাতে দেখে আগুন জ্বালায় অথচ খাওয়ার পর নিভিয়ে যেতে ভুলে যায় আর সেটা শুকনো পাতায় লেগে সব গাছ পুড়িয়ে ফেলে। তবে আমি কোন হুকুম করে তোমাদের আনন্দ মাটি করতে আসিনি। আমি চাই তোমরা আনন্দ করো। তবে দেখ, তোমরা শুকনো পাতাগুলো এখনই আগুনের কাছ থেকে সরিয়ে নাও-আর যাওয়ার সময় ধুলোয় আগুনটা চাপা দিতে ভুল না। করবে তো এটা? এরপর যখন আনন্দ করতে চাইবে পাহাড়ের উপর যেখানে বালি আছে সেকানে ধরালে কেমন হয়? তাতে কোন ক্ষতিও হবে না …। এখানে আগুন জ্বালালে জেলও হতে পারে। তোমাদের ধন্যবাদ। আচ্ছা, এবার আসি। তোমরা স্ফুর্তি কর।
এ ধরনের কথায় কত তফাৎ ঘটে যায়। এর ফলে ছেলেরা সহযোগিতা করতে চায়। কোন বিরক্তি বা অসহিষ্ণুতা তাদের মধ্যে থাকে না। তাদের হুকুম করে বন্ধ করতে হয় না। কারণ তারা তাদের মুখ রক্ষা করতে পেরেছে। এতে তাদের মন ভালো থাকে, আমিও সেরকম থাকি কারণ আমি তাদের দৃষ্টিকোণ থেকে ব্যাপারটা দেখতে চেয়ে অবস্থাটা সামাল দিয়েছি।
.
এর পরের বার কাউকে ওই আগুন নেভানোর কথা বলার বা অন্য কাজ করানোর আগে তাদের দৃষ্টিকোণ থেকে ব্যাপারটা একটু চোখ বন্ধ করে দেখে নিন। এটা করলেই ভালো নয় কি? নিজেকে প্রশ্ন করুন : ‘লোকটি একাজ করতে চায় কেন?’ এটা সত্যি যে এতে সময় লাগবে। তবে তাতে নতুন বন্ধু পাবেন আর ঝগড়া রেষারেষির বদলে ভালো ফলও লাভ হবে। এতে জুতোর তলাও ক্ষয় হবে কম।
হার্ভার্ড বিজনেস স্কুলের ডীন, ডনহ্যাস বলেছিলেন : কারও অফিসে গিয়ে তার সঙ্গে দেখা করার আগে অফিসের সামনের রাস্তায় দুঘন্টা পায়চারী করতে চাই, কিন্তু কোনো পরিষ্কার ধারণা না নিয়ে ঢুকতে চাই না। যেমন আমি কি বলবো তারই বা উত্তর কি হবে। যার কাছে যাবো তার দৃষ্টিভঙ্গী জেনে রাখাই শ্রেয়।
কথাটা এতই দামী যে বারবার সেটা মনে রাখা দরকার।
এই বইটি পড়ার পর যদি সর্বদা সবকিছু অন্যের দৃষ্টিকোণ থেকে দেখার অভ্যাস জন্মায় তাহলে এটা নিঃসন্দেহ যে আপনার জীবনে এটা হয়ে উঠবে একটা দি দর্শন আর সুন্দর কোন অভিজ্ঞতা।
তাই অন্যের বিরক্তি না জাগিয়ে মানুষকে যদি পরিবর্তন করতে চান তাহলে ৮ নম্বর নিয়ম হল : ‘আন্তরিকভাবে অপরের দৃষ্টিকোণ থেকেই সব কিছু দেখার চেষ্টা করুন।’
অষ্টাদশ পরিচ্ছেদ
যা সবাই আশা করে
আপনি কি এমন মন্ত্র জানতে চান না যাতে সব রকম তর্কাতর্কি বন্ধ হয়, শত্রুতা দূর হয়ে ভালো সম্পর্ক গড়ে ওঠে; আর অপর ব্যক্তি বেশ মনোযোগ দিয়ে আপনার সব কথা শোনে?
হ্যাঁ বলছেন তো? বেশ তাহলে ঠিক আছে। এবার এইভাবে শুরু করুন : ‘আপনার এরকম মনোভাবের জন্য আপনাকে কণামাত্রও দোষারোপ করছি না! আপনার জায়গায় আমি থাকলে একই রকম ভাবতাম।’
এ ধরনের উত্তর পেলে সবচেয়ে খিটখিটে বা খুঁতখুঁতে মানুষও বশ মানবে। আপনি যদি শতকরা একশ ভাগ আন্তরিকতা নিয়ে এটা বলেন যে তার জায়গায় থাকলে আপনার মনোভাবও একই রকম হতো সেটা সম্পূর্ণ সত্যিই হতো। বুঝিয়ে বলি ব্যাপারটা। অল ক্যাপোনের কথাটাই ধরুন। অল ক্যাপোনের মতই যদি আপনার শরীর, মেজাজ আর মন হতো, আর ধরুন তারই মতো পারিপার্শ্বিকতা আর অভিজ্ঞতাও আপনি পেয়েছেন। তাহলে আপনি ঠিক তারই মত হয়ে যেতেন–তারই মত সেখানে থাকতেন কারণ এই সব জিনিসই তাকে অল ক্যাপোন করে তুলতে পারে।
আপনি যে কোন ঝুমঝুমি বা র্যাটল সাপ নন তার একমাত্র কারণ হলো আপনার বাবা মা ঝুমঝুমি সাপ নন।
আপনি যা তার জন্য খুব বেশি কৃতিত্ব দাবি করতে পারেন না। আর মনে রাখবেন, যে লোক বিবেচনাহীন হয়ে আপনার কাছে আসতে পারে তার জন্যেও তার দোষ বেশি নয়। এমন কোন বেচারির জন্য দুঃখ বোধ করাই উচিত। তাকে সহৃদয়তা দেখানো দরকার। জন বি গাও রাস্তা দিয়ে কোন মাতালকে টলমলে অবস্থায় দেখলে বলতেন : ‘ওই দেখুন এক মাতাল, ইশ্বরের অসীম করুণাতেই আমি ওই রকম হইনি।‘
আগামীকালই যেসব লোকের মুখোমুখি হবেন তারা চারভাগের তিনভাগেই করুণা আর সমবেদনার প্রত্যাশী। তাদের যদি সেটা দেন তাহলে তারা আপনাকে ভালোবাসবে। আমি একবার লিটল উইমেনের লেখিকা লুইস মে অ্যালকট সম্পর্কে বেতারে একটা ভাষণ দিয়েছিলাম। স্বভাবতই আমি জানতাম তিনি ম্যাসাচুসেটসের কনকর্ডে বাস করা কালীন তার বিখ্যাত বইটি লেখেন। কিন্তু কি বলছি না ভেবেই বলে ফেলেছিলাম, আমি তার আদি বাড়ি নিউ হ্যাঁম্পশায়ারের কনকর্ডে গিয়েছিলাম। নিউ হ্যাঁম্পশায়ার কথাটা যদি একবার মাত্র বলতাম তাহলে মনে করার কারণ থাকত না। কিন্তু আমার দূর্ভাগ্য, আমি দুবারই সেটা বলেছিলাম। এরপরেই রাশি রাশি চিঠি আর টেলিগ্রাফ আসতে লাগলো। তার মধ্যে দারুণ জ্বালা ধরানো বাক্যবাণও ছিল। এসব পেয়ে আমার মাথা প্রায় ভন ভন করতে লাগল, যেন হাজারো মৌমাছির দংশন জ্বালা। কেউ কেউ আবার ব্যঙ্গ করেছে, কেউ বা অপমান।
একজন মহিলা যিনি কনকর্ডে ম্যাসাচুসেটসে জন্মেছিলেন, তখন তিনি ফিলাডেলফিয়ায় থাকতেন, আমার উপর তার মনের সব রাগ উজাড় করে দিয়েছিলেন। আমি যদি মিস অ্যালকটকে নিউ গিনির নরখাদিকা বলতাম তাহলেও বোধহয় তাঁর তত রাগ হতো না। তাঁর চিঠিটা পড়তে পড়তে তাই ভেবেছিলাম ভাগ্যিস এমন মহিলা আমার স্ত্রী নন। আমার ইচ্ছে হয়েছিল মহিলাকে লিখে জানাবো যে ভূগোলের জ্ঞান আমার না থাকতে পারে, তবে তার সাধারণ ভদ্রতাবোধটুকুও নেই। এই ভাবেই শুরু করব ভেবেছিলাম। তারপর জামার হাতা গুটিয়ে তার সম্পর্কে কি ভেবেছি সেটা লিখব স্থির করলাম। তবে সেটা করিনি, আমি নিজেকে সংযত করলাম। আমি বুঝলাম, যে কোন মাথা গরম বোকাই এমন করতে পারে–আর বেশির ভাগ বোকাই তা করবে।
আমি তাই বোকাঁদের উপরে থাকব মনস্থ করলাম। তাই মহিলার শত্রুতা বোধকে দূর করে তার সাথে বন্ধুত্ব অর্জন করব ঠিক করলাম। এটা একটা চ্যালেঞ্জের মতই, একরম খেলতে আমার খুবই ভাল লাগে। নিজেকে তাই বললাম : ‘তার জায়গায় থাকলে আমিও বোধহয় একই আচরণ করতাম। তাই তার মনোভাবের সঙ্গে একাত্ম হতে চাইলাম। এরপর যখন ফিলাডেলফিয়ার গেলাম আমি তাকে টেলিফোনে ডাকলাম। কথাবার্তাটা আমাদের মধ্যে অনেকটা এই রকম হয় :
আমি : মিসেস অমুক, আপনি আমাকে কয়েক সপ্তাহ আগে একটা চিঠি লিখেছিলেন। তার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ জানাতে চাই।
তিনি (একটু কাটা কাটা মার্জিত কণ্ঠস্বর) : কার সঙ্গে কথা বলছি জানতে পারি কি?
আমি : আমি আপনার অপরিচিত। আমার নাম ডেল কার্নেগী। কয়েক রবিবার আগে রেডিওতে আমার অ্যালকট সম্পর্কে একটা কথিকা আপনি শুনেছেন। আমি তখন বোকার মতই বলেছিলাম তিনি নিউ হ্যাঁম্পশায়ারের কনকর্ডে বাস করতেন। এটা খুবই বোকার মত বলেছিলাম। তাই আমি ক্ষমা প্রার্থনা করতে চাই। আপনি যে সময় করে আমায় লিখেছেন তার জন্য আমি কৃতজ্ঞ।
তিনিঃ আমি দুঃখিত মিঃ কার্নেগী, আমার মেজাজ খারাপ হয়ে যাওয়ায় আমি ওই চিঠি লিখেছিলাম; আমারই ক্ষমা চাওয়া উচিত।
আমি : না! না! আমি ক্ষমা চাইবেন না, আমারই সেটা করা উচিত। যে কোন স্কুলের ছেলেও এমন ভুল করতো না আমি যা করেছি। পরের রবিবারে আমি রেডিওতে ভুলটা সংশোধন করেছি আর এখন আপনার কাছে ব্যক্তিগতভাবে ক্ষমা প্রার্থনা করতে চাই।
তিনিঃ আমি ম্যাসাচুস্টেসের কনকর্ডে জন্মেছিলাম। সেখানে আমাদের পরিবার প্রায় দুশ বছরের বাসিন্দা, আমাদের রাজ্য নিয়ে আমরা গর্বিত। মিস অ্যালকট নিউ হ্যাঁম্পশায়ারে জন্মেছিলেন বলায় আমার খুবই রাগ হয়। কিন্তু এই চিঠির জন্য অত্যন্ত লজ্জিত বোধ করছি।
আমি : আমি আপনাকে জানাতে চাই আপনি আমার দশভাগের এক ভাগও দুঃখিত নন। আমার ভুলে ম্যাসাচুস্টেসের ক্ষতি হয়নি, হয়েছে আমারই। আপনাদের মত শিক্ষিত মহিলারা কদাচিতই বেতারের কথিকা শুনে চিঠি লেখার সময় পান। আশাকরি ভবিষ্যতে এরকম বেতার কথিকায় আমার ভুল হলে সংশোধন করে দেবেন।
তিনি; আপনি যেভাবে আমার সমালোচনা গ্রহণ করেছেন তার জন্য আমি খুবই খুশি। আপনি লোক হিসেবে নিশ্চয়ই চমৎকার। আপনাকে আমি আরও ভালভাবে জানতে চাই।
অতএব তাঁর কাছে ক্ষমা চেয়ে আর তাঁর দৃষ্টিকোণের সঙ্গে একাত্ম হয়ে আমি তাঁকে মার্জনা প্রার্থী আর আমার সঙ্গে একাত্ম করতে সক্ষম হই। আমি এজন্য খুশি হই যে আমি অপমানের বদলে সদাশয়তা প্রদর্শন করেছি। আমাকে তার পছন্দ মত করে তোলায় আমি অপরিসীম আনন্দ পেয়েছিলাম, আর সেটা তাকে গোল্লায় যেতে বললে পেতাম না।
হোয়াইট হাউসে যারা অধিষ্ঠান করেন তাদের অনবরত মানুষের সঙ্গে ব্যবহারে সমস্যায় বিব্রত থাকতে হয়। প্রেসিডেন্ট ট্যাফটও এর ব্যতিক্রম ছিলেন না। তিনি তাঁর অভিজ্ঞতার মধ্যে দিয়ে লিখেছিলেন সহানুভূতির রাসায়নিক মূল্য কতটা হতে পারে, বিশেষত কড়া বিদ্রূপ মনোভাবের জ্বালা দূর করতে। ট্যাফট তাঁর লেখা ‘এথিকস ইন সার্ভিস’ বইটিতে বেশ মজাদার একটা ঘটনা বর্ণনা করেছেন যাতে দেখা যায় তিনি কিভাবে এক হতাশ আর উচ্চাকাঙ্ক্ষী মায়ের বিরক্তি দূর করেন।
ট্যাফট লিখেছিলেন, ‘ওয়াশিংটনের এক মহিলা, যার স্বামীর কিছু রাজনৈতিক প্রভাব ছিল, আমার কাছে প্রায় ৬ সপ্তাহ ধরে এসে তাঁর ছেলেকে বিশেষ কোন পদে নিয়োগ করার অনুরোধ জানাচ্ছিলেন। মহিলাটি বেশ কিছু সেনেটর আর কংগ্রেস সদস্যর সমর্থনও ভালোমত যোগাড় করে চাপ সৃষ্টি করছিলেন। কিন্তু পদটার জন্য কিছু প্রযুক্তি জ্ঞানের প্রয়োজন ছিল আর তাই ওই দপ্তরের প্রধানের কথা মত আমি অন্য একজনকে ওই পদে নিয়োগ করি। এরপর ওই মায়ের কাছ থেকে একটা চিঠি পেলাম, তাতে লেখা আমি নিতান্ত অকৃতজ্ঞ। কারণ সামান্য একটু অনুরোধ রক্ষা করে আমি এক মাকে খুশি করলাম না, যা আমি পারতাম। তিনি আরো অভিযোগ কররেন তিনি আমার হয়ে ভোট সংগ্রহ করতে প্রচুর খেটেছেন আর আমি এইভাবে তার প্রতিদান দিলাম!
‘এ ধরনের কোন চিঠি পেলে প্রথমেই আপনার যা মনে হবে তা হলো ওই রকম চিঠির লেখককে বেশ কড়া ভাষায় জবাব দেওয়া, বিশেষতঃ এরকম অনধিকার চর্চার জন্য। আপনি হয়তো চিঠিটা লিখেও ফেলবেন। কিন্তু আপনি বুদ্ধিমান হলে সেটা আপাততঃ ড্রয়ারে রেখে দেবেন। তারপর দুদিন পরে যখন আবার বের করবেন তখন আর পাঠাতে চাইবেন না। ঠিক এই পথই আমিও নিয়েছিলাম। এরপর আমি মাথা ঠাণ্ডা করে এ অবস্থায় যা লেখা উচিত সেই ভাবেই ভদ্রমহিলাকে লিখে জানালাম যে পদটি পূরণে আমার ব্যক্তিগত কোন হাত ছিল না যেহেতু এর জন্য প্রযুক্তি জ্ঞান দরকার। তাই দপ্তরের প্রস্তাবই আমাকে গ্রহণ করতে হয়। আমি আরও জানালাম আমি আশা করি তার ছেলে যে কাজ করছেন তাতেই উন্নতি করবেন। এতে মহিলা কিছুটা ধাতস্থ হন আর চিঠিতে আমাকে জানান যে ওই চিঠি লেখার জন্য তিনি দুঃখিত।
‘ব্যাপারটার ওখানেই সমাপ্তি ঘটেনি। এর কিছুদিন পরে আমি আবার একটা চিঠি পেলাম এবার মহিলার স্বামীর কাছ থেকে। অবশ্য হাতের লেখাটা আগের মতই ছিল। তাতে ভদ্রলোক লিখেছেন, হতাশায় ভেঙে পড়ে স্নায়বিক রোগে তাঁর স্ত্রী শয্যাশায়ী আর সম্ভবতঃ তাঁর পাকস্থলীতে ক্যান্সার হয়েছে। এক্ষেত্রে তাঁর স্ত্রীর স্বাস্থ্যের কারণেই ওই চাকরিতে প্রথমজনকে বাতিল করে তার ছেলেকে দেয়া যায় কিনা? আমাকে আবার একটা চিঠি লিখতে হলো, এবার তার স্বামীকে। আমি লিখলাম যে আশাকরি রোগটা ওইরকম মারাত্মক হবে না আর তাঁর স্ত্রীর কঠিন রোগের জন্য আমি সমব্যাথী। আমি জানালাম প্রথম নামটি বাতিল করা সম্ভব নয়।
‘ওই চিঠি লেখার দুদিনের মধ্যে হোয়াইট হাউসে একটা সঙ্গীতের আসর বসানো হয় প্রথম যে দুজন মিসেস ট্যাফট আর আমাকে সম্ভাষণ জানালো তারা ওই স্বামী-স্ত্রী। যদিও স্ত্রীর নাকি সাংঘাতিক রোগ!’
এস. হুরক হলেন আমেরিকার এক নম্বর সঙ্গীত সংগঠনকারী। প্রায় বিশ বছর ধরে তিনি শিল্পীদের নিয়ে কাজ করছেন–তাঁদের মধ্যে ছিলেন এইসব বিখ্যাত শিল্পীরা, যেমন চ্যালিয়াপিন, ইসাডোরা ডানকান আর পাভলোভা। মিঃ হুরক আমায় বলেন যে খেয়ালী শিল্পীদের নিয়ে চলতে গিয়ে তাঁর অভিজ্ঞতা হলো,এই সব শিল্পীদের জন্য দরকার সহানুভূতি–একমাত্র সহানুভূতি দেখিয়েই এই সব খেয়ালীদের এড়ানো যায়।
তিন বছর যাবৎ তিনি ছিলেন ফিওডোর চ্যালিয়াপিনের সঙ্গীত সংগঠক। চ্যালিয়াপিন ছিলেন খ্যাতিমান শিল্পী, তাঁর মত কেউই গান গেয়ে মাতিয়ে তুলতে পারেনি। তবু চ্যালিয়াপিন ছিলেন সব সময় একটা সমস্যা। ঠিক যেন একেবারে কোন দুষ্টু ছেলে। চ্যালিযানপিন কেমন ছিলেন সেটা মিঃ হুক নিজেই বলেন : ‘সব দিক দিয়েই সে অতি জঘন্য।’
উদাহরণ দিলেই ব্যাপারটা বোঝা যাবে। চ্যালিয়াপিন হয়তো যেদিন গাইবার কথা সেদিন দুপুরের দিকে মিঃ হুরকের কাছে ফোন করে বললেন, ‘আমার দারুণ শরীর খারাপ। আমার গলা ফুলে ঢোল। আজ রাতে গান গাওয়া অসম্ভব।’
মিঃ হুরক কি তা শুনে তর্ক জুড়ে দিতেন? মোটেই না। তিনি জানতেন এভাবে কখনও এই সব শিল্পীদের দিয়ে কাজ করানো যায় না। বরং তিনি বেশ সহানুভূতি নিয়ে হোটেলে ছুটে গিয়ে বলতেন : ‘কি দুঃখের কথা! বেচারি! অবশ্যই আপনার পক্ষে গান গাওয়া সম্ভব নয়। আমি এখনই অনুষ্ঠান বাতিল করছি। এতে অবশ্য আপনার কয়েক হাজার ডলার ক্ষতি হবে, তা যাক, আপনার খ্যাতির পক্ষে তা কিছুই না।’
চ্যালিয়াপিন তাতে দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলতেন : ‘একবার বিকেলের দিকে এসো দেখা যাক কেমন থাকি।’
পাঁচটার সময় মিঃ হুরক আবার হোটেলে ছুটলেন সেই সহানুভূতি নিয়ে। আবার তিনি অনুষ্ঠান বাতিল করতে চাইলেন। আবারও চ্যালিয়াপিন দীর্ঘশ্বাস ফেলে বললেন, আরও পরে একবার এসো। তখন হয়তো ভালো হয়ে যেতে পারি।
সাড়ে সাতটায় সময় চ্যালিয়াপিন গান গাইতে রাজী হলেন তবে একটা শর্তে, মিঃ হুরককে ঘোষণা করতে হবে তাঁর গলা আজ ভালো নেই। মিঃ হুরক মিথ্যে করে বলতেন তাই করবেন। কারণ তিনি জানতেন এছাড়া তাকে স্টেজে নামানো যাবে না।
ডঃ আর্থার আই. গেটস তাঁর এডুকেশনাল সাইকোলজিতে বলেছেন : সারা পৃথিবীর মানুষই সহানুভূতির কাঙাল। শিশু আগ্রহ নিয়ে তার আঘাত দেখাতে চায় বা ইচ্ছে করে কাটাকুটি করে বাবা মার সহানুভূতি আকর্ষণ করে। বয়স্করাও তাই করে … তাদের আঘাত, দুর্ঘটনা বা রোগের কথা বাড়িয়েই বলতে চায়। উদ্দেশ্য সহানুভূতি আকর্ষণ। নিজেকে করুণা করা প্রায় সব মানুষের মধ্যেই আছে।
অতএব যদি অপরকে স্বমতে আনতে চান ৯ নম্বর নিয়ম হল :
অপরের প্রতি সহানুভূতি প্রকাশ করুন।
উনবিংশ পরিচ্ছেদ
সকলের পছন্দসই আবেদন
আমি আমেরিকার মিসৌরীতে জেসি জেমসের খামারের কাছে মানুষ হয়েছিলাম। কিয়ারশীতে জেসি জেমসের খামার ঘুরেও আমি দেখেছি। সেখানে জেসি জেমসের ছেলে এখনও বাস করেন।
তার স্ত্রী আমাকে অনেক কাহিনী শুনিয়ে বলেছেন জেসি কেমন করে ট্রেন লুট করতেন আর ব্যাঙ্ক ডাকাতি করে সেইসব টাকা পয়সা আশে পাশের চাষীদের মধ্যে বিলিয়ে দিতেন যাতে তারা বন্ধকী সম্পত্তি উদ্ধার করতে পারে।
জেসি জেমস নিজেকে একজন আদর্শবাদী বলে ভাবতেন, ঠিক যেমন ডাচ শুলজ, ‘দুই বন্দুক’ ক্রাউলে আর অল ক্যাপোন দুই প্রজন্ম পরে ভেবেছে। আসল কথাটা হলো আপনি যাকেই দেখুন–এমন কি আয়নায় যাকে দেখবেন তারই নিজের সম্পর্কে বেশ একটা উঁচু ধারণা আছে। সে নিজের সম্পর্কে ভাবতে চায় সে চমৎকার আর নিঃস্বার্থ।
জে, পিয়েরপন্ট মর্গ্যান তাঁর এক বিশ্লেষণে বলেছিলেন যে কোন মানুষের কাজ করার পিছনে দুটো কারণ কাজ করে। একটা যা শুনতে ভালো আর একটা আসল।
লোকটি কিন্তু আসল কারণটাই ভাবে। এটা বলার অপেক্ষা রাখে না। কিন্তু আমাদের প্রত্যেকেই আদর্শবাদী হওয়ায় যেটা বা যে উদ্দেশ্য শুনতে ভালো লাগে সেটাই ভাবতে চাই। অতএব মানুষকে পরিবর্তিত করতে হলে মহত্তর উদ্দেশ্যের কাছেই আবেদন রাখতে হবে।
ব্যবসায় কাজ করা কি অতি বেশি রকম আদর্শবাদী কাজ বলে মনে হয়? দেখা যাক। পেনসিলভানিয়ার গ্লেনডেনের ফ্যারেল-মিচেল কোম্পানীর হ্যাঁমিলটন জে. মিচেলের কথাই ধরুন। মিঃ ফ্যারেলের একজন অসন্তুষ্ট ভাড়াটে বাড়ি ছেড়ে দেবার ভয় দেখাচ্ছিলেন। ভাড়াটের মেয়াদ এখনও চার মাস ছিল, ভাড়া ছিল মাসে পঞ্চান্ন ডলার। তা সত্ত্বেও তিনি নোটিশ দেন শর্ত থাকা সত্ত্বেও। এই সব ভাড়াটে আমার বাড়িতে সারা শীতকালেই বাস করেছে-এই সময়টা বছরের সবচেয়ে খরচ সাপেক্ষ, মিঃ ঘটনাটা এইভাবেই আমার ক্লাসে বর্ণনা করেন। আমি তাই জানতাম আগামী শীতের আগে আর ভাড়া দিতে পারবো না। আমি বুঝলাম দুশ কুড়ি ডলার জলে যেতে বসেছে–বিশ্বাস করুন আমি অন্ধকার দেখলাম।
সাধারণত এমন হলে আমি ওই ভাড়াটেকে উপদেশ দিতাম লীজের চুক্তি আর শর্ত আবার পড়তে। আমি তাকে জানাতাম তিনি চলে গেলে তাকে পুরো টাকাই দিতে হবে–আর আমি আদায় করার চেষ্টা করব।
যাই হোক কোন রকম গোলমাল না করে আমি অন্য পথ ধরবো ঠিক করলাম। আমি এখনও বিশ্বাস করি না আপনি চলে যেতে চান। এই ভাড়া খাটানোর ব্যাপারে আমার বহু বছরের অভিজ্ঞতায় আমি মানব চরিত্র বেশ বুঝতে শিখেছি আর আমি প্রথমেই বুঝতে পেরেছি আপনি এক কথার মানুষ। আসলে, আমি এতই নিশ্চিত যে বাজি ধরতেও আমি রাজি।
এখন আমার প্রস্তাব হলো, আপনার মতটা কটা দিন চাপা রেখে আর একবার ভাবুন। এরপর আপনি যদি আজ থেকে মাসের প্রথমে যখন ভাড়া নেওয়া হয় তখন আসেন আর আমায় বলেন আপনি চলে যেতে চান তাহলে ধরে নেব আপনার মতটাই ঠিক। আপনি চলে যেতে চান। তাহলে বুঝবো আপনার কথাটাই ঠিক আর আমার ধারণা ভুল। তবে আমি এখনও বিশ্বাস করি যে আপনি এক কথার মানুষ আর চুক্তি মেনে চলবেন। তাছাড়া চুক্তি অনুসারে আমরা হয় মানুষ না হয় বাদরবেছে নেবার ব্যাপারটা আমাদেরই।
যাই হোক নতুন মাস পড়লে ঐ ভদ্রলোক স্বয়ং এসে তার ভাড়া দিয়ে গেলেন। তিনি আর তার স্ত্রী, দুজনে আলোচনা করে থেকে যাওয়াই ঠিক করেন। তারা ঠিক করেন সম্মানের কাজ হলো লীজের চুক্তিটা মেনে চলা।
প্রয়াত লর্ড নর্থক্লিফ জীবিতকালে একবার সংবাদপত্রে তাঁর একটা ছবি প্রকাশ হলো। যেটা তিনি চাননি। তিনি সম্পাদককে একটা চিঠি লেখেন। তাতে তিনি কি লিখেছিলেন : দয়া করে আমার ঐ ছবি আর ছাপবেন না, আমার ওটা পছন্দ নয়। না, তিনি মানুষের মহত্ত্বের আর মাকে ভালবাসার নীতির কাছে আবেদন রেখেছিলেন, তিনি লেখেন : দয়া করে আমার এই ছবি আর ছাপবেন না, ওটা আমার মায়ের পছন্দ নয়।
জন ডি, রকফেলার (ছোট) যখন তার ছেলেমেয়েদের ছবি কাগজে ছাপতে দেয়া পছন্দ করতেন না তখন তিনি হৃদয়ের কাছে আবেদন রাখতেন। তিনি কখনই বলতেন না, আমি চাই না ওদের ছবি ছাপা হোক।’ তিনি যা চাইতেন তা হলো ছেলেমেয়েদের যাতে ক্ষতি না হয়। তিনি বলেছিলেন : আপনারা তো জানেন, ছেলেরা কেমন। আপনাদের নিজেদেরও তো ছেলেমেয়ে আছে। আপনারা নিশ্চয়ই জানেন তাদের বেশি প্রচার করা ক্ষতিকর।
সাইরাস এইচ কে, কার্টিস মেইনের যে দরিদ্র ছেলেটি তার উল্কাগতি জীবনে লক্ষ লক্ষ টাকা করেছিলেন ‘দি স্যাটারডে ইভনিং পোস্ট’ আর ‘লেডিজ হোম জার্নালের মালিক হয়ে–তিনিও গোড়ায় যখন শুরু করেন তখন অন্যান্য কাগজের মত লেখার জন্য টাকা দিতে পারতেন না। শুধু টাকার জন্য বড় বড় লেখকদের দিয়ে তিনি লেখাতে পারতেন না। তাই তিনি তাদের হৃদয়ের কাছেই আবেদন রাখতেন। যেমন একটা উদাহরণ দিচ্ছি–তিনি অমর সাহিত্যিক লিটল উইমেনের লেখিকা লুইশা মে অ্যালক্ট যখন তাঁর খ্যাতির মধ্যগগনে তাঁকে দিয়েও লেখাতে পেরেছিলেন। তিনি সেটা করতে পেরেছিলেন, অ্যালক্টের পছন্দ মত প্রিয় দাঁতব্য প্রতিষ্ঠানে একশ ডলার দান করে।
ঠিক এখানেই সন্দিহান মানুষেরা বলতে পারেন : ‘ওহ্ এধরনের কথা নর্থক্লিফ বা রকফেলার মত অর্থবান বা ভাবপ্রবণ উন্নাসিকের পক্ষে ঠিক আছে। তবে যে সব কাঠখোট্টা শক্ত মানুষের কাছ থেকে ভাড়া আদায় করতে হয় তাদের কাছে এর কদর কতটা সেটাই দেখার বিষয়।’
আপনি হয়তো ঠিক। এ ব্যাপারে এটা চলবে না–আর সবক্ষেত্রেই যে কাজ হবে তাও ঠিক নয়। তবে এখন যে ফল পাচ্ছেন তাতে যদি সন্তুষ্ট থাকেন তাহলে বদলাবার চেষ্টা করবেন কেন? আর যদি সন্তুষ্ট না হন তাহলে পরীক্ষা করে দেখতে দোষ কী?
যাই হোক, আমার একজন প্রাক্তন ছাত্র জেমস এল, টমাসের বলা সত্য কাহিনী পড়তে ভালোই লাগবে।
গল্পটা এর রকম।
কোন মোটর গাড়ি কোম্পানির ছয়জন ক্রেতা গাড়ি সাফাই বা সারানোর টাকা দিতে অস্বীকার করে। কেউই পুরো বিল ভুল তা বলেনি, তবে তারা প্রত্যেকেই দাবি জানায় কোন একটা দাবি ভুল। প্রত্যেক ক্ষেত্রেই প্রত্যেকে প্রতিটি অংশে সই করেছিল, তাই কোম্পানী জানতো বিল ঠিকই ছিল–আর তারা তাই বলে দেয়। এটাই ছিল প্রথম ভুল।
কোম্পানির টাকা আদায়কারী দপ্তর পাওনা টাকা আদায় করতে এই পথ নেয়। আপনার কি ধারণা তারা সফল হয়?
১। তারা প্রত্যেক খরিদ্দারের কাছে সোজাসুজি গিয়ে জানায় তারা টাকা আদায় করতে এসেছে, সেটা অনেক দিন বাকি পড়ে আছে।
২। তারা পরিষ্কার করে জানায় কোম্পানী সম্পূর্ণ ঠিক আর ক্রেতা অর্থাৎ তারা সম্পূর্ণ ভুল।
৩। তারা আরও জানালো, কোম্পানী গাড়ির ব্যাপারে যা জানার তার চেয়ে অনেক বেশি জানে। তাহলে তর্কাতর্কির ব্যাপার কোথায়?
৪। ফলাফল : তারা তর্ক করতে শুরু করে।
এই পথের কোনটায় কি ক্রেতা খুশি হলো আর পাওনাও মিটে যায়? সেটা নিজেই বুঝতে পারবেন।
আসলে এর ফলে অবস্থাটা এমন পর্যায়ে এসে দাঁড়ায় যে কোম্পানি প্রায় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার মনস্থ করে। ঠিক তখনই ব্যাপারটা কোম্পানীর জেনারেল ম্যানেজারের নজরে আসে। ম্যানেজার ওই ব্যাপারে খোঁজ নেন। তিনি জানতে পারলেন ক্রেতারা সবাই অতীতে তাদের পাওয়া ঠিক মতই মিটিয়ে দিয়েছেন। অতএব কোথাও কোন ভুল হয়েছে–আর সে ভুল আদায় পদ্ধতির মধ্যে আছে। অতএব তিনি জেমস এল. টমাসকে ডেকে টাকাটা আদায়ের দায়িত্ব দিলেন।
মিঃ টমাস নিচের পদ্ধতি গ্রহণ করেন।
১। প্রত্যেক ক্রেতার কাছে প্রথম যাওয়ার পর মি. টমাস বলেছেন, আমার মনে ছিল এ বিলটা অনেকদিনের পাওনা–আর আমাদের কথাই সম্পূর্ণ ঠিক। তবে আমি সে সম্পর্কে একটা কথাও বলিনি। আমি জানালাম আমি জানতে এসেছি কোম্পানি কি করেছে আর কি করেনি।
২। আমি আরও পরিষ্কার করে বললাম ক্রেতার মতামত আর বক্তব্য না শুনে আমি কোন মতামত দেব না। আমি আরও জানালাম কোম্পানী কোন দাবীই নির্ভুল এ কথা বলতে চায় না।
৩। আমি জানালাম তিনি গাড়ি সম্বন্ধে আমার চেয়েও অভিজ্ঞ।
৪। আমি তাকে কথা বলতে দিলাম আর সহানুভূতির সঙ্গে শুনলাম তিনি যা চান।
৫। এরপর ক্রেতা যখন কিছু যুক্তি মানার অবস্থায় এলেন তখন আমি সব ব্যাপারটি তার সামনে রাখলাম আর জানালাম ব্যাপারটা ঠিক মত চালনা করা হয়নি। আমি প্রথমে বললাম, আপনাকে আমি জানাতে চাই যে আমাদের লোক আপনার বিরক্তি উৎপাদন করেছে। তাই আমি ক্ষমা প্রার্থনা করছি। আপনার কথা শুনে আমি আনন্দিত। আমি আপনার কাছে ওই বিল সম্বন্ধে একটা নিবেদন রাখতে চাই। আমি অনুরোধ করতে চাই এটা দেখে যদি মনে করেন ঠিক দিয়ে দেবেন। আপনি যা বলবেন তাই হবে।’
‘তিনি কি বিল ঠিক করে দেন? অবশ্যই। অন্য সব ক্রেতারা কি টাকাটা দিয়ে দেন? হ্যাঁ ছ’জনের মধ্যে পাঁচ জনই ১৫০ থেকে ৪০০ ডলার দিয়ে দেন। একজন কিছুই দেবেন না সাফ বলেছেন। আসল কথাটা হলো দুবছরে আমরা তাদের আবার নতুন গাড়ি বিক্রি করি।’
‘অভিজ্ঞতা আমায় শিখিয়েছে, মিঃ টমাস বলেছেন যে, যখন ক্রেতাদের সম্বন্ধে কোন কিছু জানা যায় সেখানে ধরে নিতে হবে সে সৎ, সত্যবাদী আর দাম মিটিয়ে দিতে উদগ্রীব।
অতএব আপনি যদি অপরকে আপনার মতে আনতে চান তাহলে দশ নম্বর নিয়ম হলো :
‘অপরের মহত্বের প্রতি আবেদন রাখুন।‘
বিংশ পরিচ্ছেদ
চলচ্চিত্র এটা করে, রেডিও যা করে আপনিও করেন না কেন
কয়েক বছর আগে দি ফিলাডেলফিয়া ইভনিং বুলেটিনের বিরুদ্ধে একটা অত্যন্ত দুরভিসন্ধিমূলক নিন্দার গুজব ছড়িয়ে পড়েছিল। বেশ ঈর্ষামূলক গুজব ছড়ানো হচ্ছিল। বিজ্ঞাপনদাতাদের বলা হচ্ছিল যে ঐ কাগজে বড় বেশি রকম বিজ্ঞাপন থাকে আর খবর খুবই কম থাকে। এ কাগজ তাই আর পাঠকদের কাছে পছন্দ নয়। দ্রুত কোন ব্যবস্থা গ্রহণ জরুরি। তাই এই গুজব বন্ধ করতে হবে।
কিন্তু কীভাবে?
এটা এইভাবে করা হয়।
বুলেটিন দৈনিক কাগজ থেকে সব পড়ার বিষয়বস্তু নিয়ে একসঙ্গে করে একটা বই হিসেবে বের করে। বইটির নাম দেয়া হয় একদিন’। তাতে ছিলো ৩০৭ পাতা-এর দাম হতে পারতো প্রায় দু ডলার! তা সত্ত্বেও বুলেটিন সমস্ত খরব আর বিজ্ঞাপন একসঙ্গে যে বই বের করলো তার দাম দু ডলার না রেখে রাখা হলো দু সেন্ট।
এই বই ছাপার ফলে নাটকীয়ভাবে প্রমাণ করা গেল বুলেটিনে পাঠ্যবস্তু অনেকটাই থাকে। এতে বক্তব্য আরও পরিষ্কারভাবে বলা হয়েছিল, বলা হয়েছিল আরও সুন্দরভাবে আর নাটকীয়ভাবে, বক্তৃতা বা সংখ্যাতত্ত্ব দিয়ে এমন করা যেত না।
এ যুগটাই হলো নাটকীয়তায় ভরা যুগ। কেবল সত্য প্রচার করে কাজ হয় না। সত্যকে স্পষ্ট, আগ্রহের আর নাটকীয় করতে হবে। আপনার দরকার ওস্তাদী। সিনেমায় এরকম করা হয়। রেডিও এটা করে। তাই মনোযোগ আকর্ষণ করতে গেলে আপনাকেও তাই করতে হবে।
যে সব দোকানদার কাঁচের শোকেস প্রদর্শনের কাজে দক্ষ তারা নাটকীয়তার ক্ষমতা জানেন। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, যে কোম্পানী ইঁদুর মারার বিষ তৈরি করে সেজন্য তারা তাদের শোকেসে দুটো জ্যান্ত ইঁদুর প্রদর্শন করায় এতে তাদের বিক্রি পাঁচ গুণ বেড়ে যায়।
জেমস বি. বয়ন্টন, দি আমেরিকান উইকলির জনৈক কর্তাব্যক্তি। তার একটা মার্কেট রিপোর্ট বানানো দরকার ছিল। তিনি কাজ করতে গিয়ে নানা বাধার সামনে পড়েন। শেষ অবধি তাঁর কাজের পদ্ধতি বদল করার ফলেই তিনি সফল হতে পারেন অপরকে তিনি তর্ক না করে স্বমতে আনেন।
অতএব অপরকে স্বমতে আনতে চাইলে ১১নং নিয়ম হল :
আপনার ভাবনাকে নাটকীয় করে তুলুন।
যখন অন্য কিছুতে কাজ হয় না, এটা চেষ্টা করুন
চার্লস শোয়াবের কারখানার একজন ম্যানেজার ছিল, তাঁর কর্মচারিরা ঠিকমত কাজ করত না।
শোয়াব তাই জানতে চাইলেন : ‘এটা কি রকম ব্যাপার যে আপনার মত পাকা লোকও কারখানার উৎপাদন ঠিক মত করাতে পারছেন না?
‘তা জানি না’ লোকটি জবাব দিল, ‘আমি সকলকে চাপ দিচ্ছি, নানাভাবে চেষ্টা করছি, ভয়ও দেখিয়েছি, চাকরি খতম করতে চেয়েছি। কিন্তু কিছুতেই কাজ হয়নি। ওরা উৎপাদন করছে না।’
তখন দিনের কাজ শেষ হয়ে রাতের শিফট শুরু হতে চলেছে।
‘আমাকে এক টুকরো চকখড়ি দিন তো।’ শোয়াব বললেন। তারপর কাছাকাছি থাকা কর্মীটির দিকে তাকিয়ে বললেন, আজকের শিফটে কত উৎপাদন করেছ?
‘ছয়।’
আর কোন কথা না বলে শোয়ব মেঝের বুকে বড় করে একটা ‘ছয়’ সংখ্যা লিখে চলে গেলেন।
রাত্রে শিফট শুরু হলে কর্মীরা ‘ছয়’ সংখ্যাটা দেখে এর মানে জানতে চাইল।
‘বড় কর্তা এসেছিলেন, দিনের শিফটের কর্মীটি জানাল। তিনি জানতে চান আমরা কত উৎপাদন করেছি এবং তিনি চকখড়ি দিয়ে ওটা লেখেন।‘
পরদিন সকালে শোয়াব এসে দেখলেন রাতের শিফটের কর্মীরা ৬ সংখ্যাটা মুছে বড় করে একটা ‘৭’ লিখে গেছে।
পরের দিন, দিনের শিফটের কর্মীরা কাজ করতে এসে বড় আকারে লেখা ‘৭’ কথাটা লক্ষ্য করলো। ওঃ তাহলে রাতের শিফট মনে করে তারা দিনের শিফটের চেয়ে ভালো? বেশ ওরা রাতের শিফটকে কিছু শিক্ষা দিতে তৈরি হল। তারা যাওয়ার সময় মেঝের বড় অক্ষরে ‘১০’ সংখ্যাটি লিখে যায়। ঘটনা গড়িয়ে চললো।
যে মিলটি এতদিন উৎপাদন হ্রাসের সমস্যায় ভুগছিল, তাতে এখন থেকে অন্য মিলের তুলনায় উৎপাদন ঢের বেশি হতে লাগল।
এক্ষেত্রে কৌশলটি কী?
চার্লস্ শোয়বের নিজের কথাতেই শুনুন।
‘কাজ করাতে হলে প্রথমে প্রয়োজন কিছু প্রতিযোগিতার মনোভাব আনা। টাকা আয় বা আদায় করার কথা বলছি না, বরং অন্যকে হারানোর মনোভাব। অন্যকে হারানোর ইচ্ছা! একটা প্রতিদ্বন্দ্বিতা! মানুষ প্রতিযোগিতা ভালোবাসে।
প্রতিযোগিতার মনোভাব না থাকলে থিয়োডোর রুজভেল্ট কখনই আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হতে পারতেন না। কিউবা থেকে ফিরে আসার পর তিনি সবেমাত্র নিউইয়র্ক রাজ্যের গভর্ণর হন। বিরোধীরা দেখতে পেলেন রুজভেল্ট ওই রাজ্যের একজন আইনসম্মত অধিবাসী নন। রুজভেল্ট ভয় পেয়ে মনোনয়ন প্রত্যাহার করতে চাইলেন। এবার টমাস কলিয়ার কাজে নামলেন। তিনি আচমকা থিয়োডোর রুজভেল্টকে চিৎকার করে বললেন সান জুয়ান পাহাড়ের বীর কি কোন কাপুরুষ?
রুজভেল্ট লড়াই করতে মনস্থ করলেন-এরপরের ঘটনা তো ইতিহাস। এই চ্যালেঞ্জ তার জীবনকেই শুধু বদলে দেয়নি বরং এতে জাতির জীবনেও একটা ছাপ পড়েছিল।
চার্লস্ শোয়াব প্রতিযোগিতার দারুণ ক্ষমতার কথা জানতেন। এই রকমই আবার জানতেন অলস্মিথও।
অলস্মিথ যখন নিউ ইয়র্কের গভর্ণর ছিলেন তখন তাকে কঠিন কাজে নামতে হয়। পশ্চিম ডেভিন আইল্যাণ্ডের সবচেয়ে জঘন্য জেলখানা সিংসিং-এ জঘন্য সমস্ত কাণ্ড কারখানা চলেছিল। অত্যন্ত কুৎসিত কাজের গুজবও ছড়াচ্ছিল। স্মিথের দরকার ছিল সিংসিংকে শাসনে রাখার জন্য একজন কড়া প্রকৃতির মানুষ। কিন্তু কে সেই লোক। তিনি নিউ হ্যাঁম্পটনের লুইস ই. লজকে ডেকে পাঠালেন।
‘সিংসিং কারাগারের দায়িত্ব নিতে কেমন লাগবে?’ লজকে প্রশ্ন করলেন বেশ ঠাট্টার আমেজেই স্মিথ। ‘ওখানে একজন অভিজ্ঞ মানুষ দরকার।‘
লজ বেশ অতলে তলিয়ে গেলেন। সিংসিংয়ের বিপদের কথা তার জানা ছিল। কাজটা রাজনীতির সঙ্গে জড়িত, রাজনীতির নানা মতও তাতে থাকবে। ওয়ার্ডেনরা সেখানে টিকতে পারেনি। তারা এসেছে আর গেছে। শেষজন টেকে মাত্র তিন সপ্তাহ, তার ভবিষ্যত রয়েছে। এ ঝুঁকি নেওয়া যায়?
এর পর স্মিথ ওই ইতস্তত ভাব দেখে হেসে বললেন, আপনার যেতে ভয় লাগছে। এর জন্যে আপনাকে দোষ দিচ্ছি না। জায়গাটা কঠিন ঠাঁই। বেশ শক্ত মানুষই ওখানে চাই।
হুঁ স্মিথ তাহলে একটা চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিচ্ছেন, তাই না? লজ তাই কোন শক্ত মানুষের কাজটাই নিয়ে দেখবেন ভাবলেন।
অতএব তিনি সেখানে গেলেন আর টিকেও গেলেন। তিনি হয়ে গেলেন জীবিত কারারক্ষীদের মধ্যে সবচেয়ে খ্যাতিমান পুরুষ। তাঁর লেখা বই ‘সিংসিং কারাগারে কুড়ি বছর লক্ষ লক্ষ কপি বিক্রি হয়েছে। বেতারে তিনি ভাষণ দেন, তার কারাগারের অভিজ্ঞতা নিয়ে বহু চলচ্চিত্র অনুপ্রাণিত হয়েছে। তাছাড়া অপরাধীদের সংশোধনে তার সংস্কারগুলি কারা সংস্কারে প্রেরণা জুগিয়েছে।
ফায়ার স্টোন নামের বিখ্যাত রবার প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠাতা হার্ভে এম. ফায়ারষ্টোন একবার বলেন, শুধু মাইনে দিয়ে বিখ্যাত আর ভালো মানুষদের ধরে রাখা যায় না। আমার মনে হয় একটা খেলোয়াড়ী বৃত্তিই আসল…।
এটাই প্রত্যেক সফল মানুষ ভালোবাসেন : খেলা। আত্মপ্রকাশের সুযোগ। নিজের ক্ষমতা প্রকাশ করে বিজয়ী হওয়া। নানারকম খেলার এটাই মূল কথা : প্রতিযোগিতায় বিজয়ী হওয়া, বিজয়ী হওয়ার আকাঙক্ষা। আত্ম গুরুত্বের এটাই পথ।
অতএব আপনি যদি শক্তিশালী মানুষদের জয় করতে চান তাদের স্বমতে আনতে চান ১২নং নিয়ম হলো :
‘একটা চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিন।‘
অল্পকথায় অপরকে স্বমতে আনার বারোটি পথ :
১: তর্কে জেতার সব সেরা উপায় হলো তর্কে যোগ না দেওয়া।
২: অপরের মতামতের প্রতি শ্রদ্ধা দেখান। কখনও অপরের ভুল ধরবেন না।
৩ : আপনার ভুল হলে আন্তরিকতার সঙ্গে তার স্বীকার করুন।
৪ : বন্ধুত্বপূর্ণ পথে শুরু করুন।
৫: অপরকে হ্যাঁ বলতে দিন।
৬: অন্যকেই বেশি কথা বলতে দিন।
৭: অপরকে ভাবতে দিন মতলবটি তারই।
৮ : আন্তরিকতার সঙ্গে অপরের দৃষ্টিভঙ্গি থেকে দেখুন।
৯ : অন্যের ধারণার প্রতি আন্তরিক হোন।
১০: অপরের মহত্বের প্রতি আবেদন রাখুন।
১ : আপনার ভাবনায় নাটকীয়তা আনুন।
১২: চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিন।
No comments:
Post a Comment
ধন্যবাদ