অথবানপ্রস্থ সন্ন্যাসবিধিং বক্ষ্যামঃ ব্রহ্মচর্য্যাশ্রমং সমাপ্য গৃহী ভবেৎ, গৃহীভূত্বাবনী ভবেদ্বনীভূত্বা প্রব্রজেৎ| শত০ কি১৪।
মানুষের উচিত, ব্রহ্মচর্যাশ্রম সমাপ্ত করিয়া গৃহস্থ হইয়া বানপ্রস্থ এবং বানপ্রস্থ হইয়া সন্ন্যাসী হইবে। অর্থাৎ ক্রমান্বয়ে ইহা আশ্রম বিধান।এবং গৃহাশ্রমে স্থিত্ব বিধিবৎ স্নাতকো দ্বিজঃ। বনে বসে নিয়তােয়থাবদ্বিজিতেন্দ্রিয়ঃ ॥১॥ গৃহস্থস্তু য়দা পশ্যে বলীপলিমাত্মনঃ। অপত্যস্যৈব চাপত্যং তদারণ্যং সমায়েৎ ॥ ২॥ সংত্যজ্য গ্রাম্যমাহারাং সর্বং চৈব পরিচ্ছদ। পুত্রে ভায়াং নিঃক্ষিপ্য বনং গচ্ছেৎসহৈব বা ॥৩॥ অগ্নিহােত্রং সমাদায় গৃহ্যং চাগ্নিপরিচ্ছদ। গ্রামাদরণ্যং নিঃসৃত্যনিবসেন্নিয়তেন্দ্রিয়ঃ ॥৪ মুন্যনৈৰ্বিবিধৈর্মেধ্যৈঃ শাকমূলফলেন বা। এতানেব মহায়জ্ঞান্নিবপেদ্বিধিপূর্বকম৷৫ | মনু।
অর্থ—এইরূপ স্নাতক অর্থাৎ ব্রহ্মচর্য পূর্বক গৃহাশ্রমের কৰ্ত্তা দ্বিজ অর্থাৎ ব্রাহ্মণ, ক্ষত্রিয় ও বৈশ্য গৃহাশ্রমে অবস্থান করিয়া নিশ্চিতাত্মা হইয়া যথাবৎ ইন্দ্রিয় সমূহকে জয় করিয়া বনে বাস করিবে || ১||
কিন্তু গৃহস্থের যখন মস্তকের কেশ শ্বেত ও চর্ম শিথিল হইবে এবং যখন পুত্রেরও পুত্র হইবে, তখন গৃহী বনে যাইয়া বাস করিবে। ২।
যাবতীয় গ্রাম্য আহাৰ্য্য বস্ত্রাদি এবং উৎকৃষ্ট বস্তু ত্যাগ করিয়া স্ত্রীকে পুত্রের নিকটে রাখিয়া অথবা নিজের সঙ্গে লইয়া বনে বাস করিবে৷৷ ৩৷৷
সাঙ্গোপাঙ্গো অগ্নিহােত্র সহকারে গ্রাম হইতে বহির্গত হইবে এবং দৃঢেন্দ্রিয় হইয়া অরণ্যে বাস করিবে। ৪।
নীবারাদি নানাবিধ অন্ন, সুন্দর সুন্দর তরীতরকারী ফল-মূল ফুল এবং কন্দাদি দ্বারা পূর্বোক্ত পঞ্চ মহাযজ্ঞকরিবে এবং তদ্বারা অতিথি সেবা ও স্বীয় জীবিকা নির্বাহ করিবে ৷৷ ৫৷৷
স্বাধ্যয়ে নিত্যয়ুক্ত স্যাদ্দাস্তো মৈত্রঃ সমাহিতঃ।। দাতা নিত্যমনাদাতা সর্বভূতানুকম্পকঃ ॥১॥ অপ্রয়ত্নঃ সুখাথেষুব্রহ্মচারী ধরাশয়ঃ। শরণেম্বনমশ্চৈব বৃক্ষমূলনিকেতনঃ ॥২॥ মনু
স্বাধ্যায় অর্থাৎ অধ্যয়ন-অধ্যাপনায় নিত্যযুক্ত, জিতাত্মা, সকলের মিত্র, ইন্দ্রিয়-দমনশীল, বিদ্যাদি দাতা এবং সকলের প্রতি দয়ালু হইবে, কাহারও নিকট কিছু গ্রহণ করিবে না। সর্বদা এইরূপ আচরণ করিবে ॥১ ||
শারীরিক সুখের জন্য অত্যধিক চেষ্টা করিবে না। ব্রহ্মচারী থাকিবে অর্থাৎ নিজ স্ত্রী সঙ্গে থাকা সত্ত্বেও তাহার সহিত বিষয়ভােগের চেষ্টা করিবে না, ভূমিতে শয়ন করিবে। নিজের আশ্রিত অথবা নিজ সামগ্রীর উপর মমতা করিবে না, বৃক্ষমূলে বাস করিবে । ২।
তপঃশ্রদ্ধে যে হু্যপবসন্ত্যরণ্যে শান্তাবিদ্বাংসে ভৈক্ষচয়াংচরন্তঃ। সূৰ্য্যদ্বারেণ তে বিরাজঃ প্রয়ান্তি য়ত্রামৃতঃ স পুরুষাে হ্যব্যয়াত্মা ॥১॥ মুন্ড০২। ১১ | যে সকল শান্ত বিদ্বান্ বানপ্রস্থাশ্রমবাসী তপস্যা, ধর্মানুষ্ঠান, সত্যনিষ্ঠা এবং ভিক্ষাচরণ সহকারে বনে বাস করেন, তাহারা যেস্থানে অবিনাশী, হানি লাভ রহিত, পূর্ণ পুরুষ পরমাত্মা আছেন, সেই স্থানে নির্মলচিত্ত হইয়া প্রাণদ্বার দিয়া সেই পরমাত্মাকে লাভ করিয়া আনন্দিত হন || ১||
অভ্যা দধামি সমিধমগ্নেব্রতপতে ত্বয়ি। ব্ৰতঞ্চ শ্রদ্ধাং চোপৈমীন্ধে ত্বা দীক্ষিতত অহম। ২। যর্জুবেদ অধ্যায় ২০।২৪
বানপ্রস্থের কৰ্ত্তব্য –“আমি অগ্নিতে হােমানুষ্ঠান পূৰ্ব্বক দীক্ষিত হইয়া ব্রত, সত্যাচরণ ও শ্রদ্ধাকে প্রাপ্ত হইব’–এই অভিলাষী হইয়া বানপ্রস্থ অবলম্বন করিবে। নানাবিধ তপশ্চৰ্য্যা, সৎসঙ্গ, যােগাভ্যাস এবং সুবিচার দ্বারা জ্ঞান ও পবিত্রতা লাভ করিবে। পরে সন্ন্যাস গ্রহণের ইচ্ছা হইলে স্ত্রীকে পুত্রের নিকট প্রেরণ করিবে।৷৷ ২৷৷
॥ ইতি সংক্ষেপে বানপ্রস্থবিধিঃ
অথ সন্ন্যাস বিধিঃ বনেয়ুচ বিহৃত্যৈবং তৃতীয়ং ভাগমায়ুষঃ।। চতুর্থমায়ুযাে ভাগং ত্যাক্কা সঙ্গা পরিব্রেজৎ | মনু
এইরূপে বনে আয়ুর তৃতীয় ভাগ অর্থাৎ পঞ্চাশৎ বর্য হইতে পঞ্চ সপ্ততি বর্ষ বয়স পর্যন্ত বানপ্রস্থ থাকিয়া আয়ুর চতুর্থ ভাগে সঙ্গত্যাগ করিয়া পরিব্রাট অর্থাৎ সন্নাসী হইবে।
প্রশ্ন - গৃহাশ্রম ও বানপ্রস্থাশ্রমে প্রবেশ না করিয়া সন্ন্যাসশ্রম করিলে পাপ হয় কি না? উত্তর - হয়, নাও হয়। প্রশ্ন - এই দুই প্রকারের কথা বলিতেছেন কেন?
উত্তর – দুই প্রকার নহে। যে বাল্যাবস্থায় বিরক্ত হইয়া বিষয়াসক্ত হয়, সে মহাপাপী, আর যে আসক্ত হয় না, সে মহা পুণ্যাত্মা সৎপুরুষ। য়দহরেব বিরজেত্তদহরেব প্রব্রজেদ্বনাদ্বা গৃহাদ্বা ব্রহ্মচয়াদেব প্রব্রজেৎ৷৷
| (এ অথর্ববেদীয়জাবালােপনিষদের বচন)। যেদিন বৈরাগ্য উৎপন্ন হইবে সেইদিন গৃহ বা বন হইতে সন্ন্যাস গ্রহণ করিবে (প্রথমপক্ষ)।
পূব্বেই ক্রমানুসারে সন্ন্যাসের পক্ষক্রম বলা হইয়াছে। আর ইহাতে বিকল্প এই যে, বানপ্রস্থ পালন না করিয়া গৃহস্থাশ্রম হইতেই সন্ন্যাস গ্রহণ করিবে (ইহা দ্বিতীয় পক্ষ)। আর তৃতীয় পক্ষ এই যে, পূর্ণ বিদ্বান, জিতেন্দ্রিয়, এবং বিষয়-ভােগের কামনা রহিত হইয়া পরােপকারের ইচ্ছায় যুক্ত পুরুষ ব্রহ্মচর্য আশ্রম হইতেই সন্ন্যাস গ্রহণ করিবে।
বেদেও “য়তয়ঃ, ব্রাহ্মণস্য, বিজানতঃ” ইত্যাদি বাক্যে সন্ন্যাসবিধি আছে কিন্তু নাবিরত দুশ্চরিতান্নাশান্তোসমাহিতঃ। নাশান্তমানসাে বাপি প্রজ্ঞানেনৈনমা প্লয়াৎ || কঠ বল্লী ২। ম০২৪ |
| যে ব্যক্তি দুরাচার হইতে বিরত হয় নাই, যাহার শান্তি নাই, যাহার আত্মা যােগী নহে এবং যাহার মন শান্ত নহে, সে ব্যক্তি সন্ন্যাস গ্রহণ করিয়াও প্রজ্ঞান দ্বারা পরমাত্মাকে প্রাপ্ত হয় না। অতএব :য়চ্ছেদ্বানসী প্রাজ্ঞস্তদ্যচ্ছে জ্ঞানআত্মনি। জ্ঞানমাত্মনি মহতি নিয়চ্ছেত্তদ্যচ্ছেচ্ছান্ত আত্মনি॥১॥ কঠ বল্লী ৩। ম০ ১৩।
বুদ্ধিমান সন্ন্যাসী বাক্য ও মনকে অধর্ম হইতে নিবৃত্ত করিয়া জ্ঞান ও আত্মাকে যুক্ত করিবে এবং সেই জ্ঞান-যুক্ত আত্মাকে পরমাত্মায় নিয়ােজিত করিবে। আর সেই বিজ্ঞানকে শান্তস্বরূপ আত্মাতে স্থির করিবে। | ১||
পরীক্ষ্য লােকান্ কর্মচিতাব্রাহ্মণাে নির্বেদমায়ান্নাস্তকৃতঃ কৃতেন। তদ্বিজ্ঞানার্থংস গুরুমেবাভিগচ্ছেৎসমিৎপাণিঃ শ্রোত্রিয়ং ব্রহ্মনিষ্ঠ৷ ২।
মু০ খণ্ড ২। ম০ ১২। সমস্ত লৌকিক ভােগকে কর্ম দ্বারা সঞ্চিত হইয়াছে দেখিয়া ব্রাহ্মণ অর্থাৎ সন্ন্যাসী বৈরাগ্য অবলম্বন করিবে। কারণ অকৃত অর্থাৎ যে পরমাত্মা কাহারও দ্বারা সৃষ্ট হন নাই তাহাকে কৃত অর্থাৎ কেবল কর্ম দ্বারা প্রাপ্ত হওয়া যায় না। এইজন্য কিছু অর্পণের অর্থ হস্তে লইয়া বেদবিৎ ও ব্রহ্মজ্ঞ গুরুর নিকট বিজ্ঞানের জন্য গমন করিয়া সকল সংশয় নিবৃত্ত করিবে। কিন্তু এই সব মানুষের সংসর্গ সৰ্ব্বদা পরিত্যাগ করিবে,
অবিদ্যায়ামন্তরে বর্তমানঃ স্বয়ং ধীরাঃ পণ্ডিতন্মন্যমানাঃ। জঙঘন্যামানাঃ পরিয়ন্তি মূঢ়া অন্ধৈনৈব নীয়মানায়থান্ধাঃ ॥১॥ অবিদ্যায়াং বহুধা বর্তমান বয়ং কৃতার্থা ইত্যভিমন্যন্তি বালাঃ। রকর্মিণােন প্রবেদয়ন্তি রাগাত্তেনাতুরাঃ ক্ষীণলােকশ্চ্যবন্তে৷ ২৷৷
মু ০ ১। খণ্ড ২। ম০ ৮ - ৯। যাহারা অবিদ্যার মধ্যে ক্রীড়া করে এবং নিজেদের ধীর ও পণ্ডিত মনে করে তাহারা নীচ গতি প্রাপ্ত হয়। সেই মূঢ়গণ, অন্ধ যেমন অন্ধের পশ্চাতে যাইয়া দুর্দশাগ্রস্ত হয়, সেইরূপ দুঃখ ভােগ করিয়া থাকে ॥১॥
যে সকল বালবুদ্ধি বহুধা অবিদ্যায় রত থাকিয়া নিজেদের কৃতার্থ মনে করে, যাহারা কেবল কর্মকাণ্ডে রত থাকে, তাহারা আসক্তি বশতঃ মােহগ্রস্ত হইয়া জানিতে ও জানাইতে পারে না। তাহারা আতুর হইয়া জন্মমরণরূপ দুঃখে নিমজ্জিত থাকে॥২॥ অতএব
বেদান্তবিজ্ঞানসু নিশ্চিতার্থাঃ সংন্যাসযােগাদ্যতয়ঃ শুদ্ধসত্বাঃ।। তে ব্রহ্মলােকেষু পরান্তকালে পরামৃতাঃ পরিমূচ্যন্তি সর্বে৷ ॥ মুণ্ড ৩। খ০২। ৬
যাঁহারা ‘বেদান্ত’ অর্থাৎ পরমেশ্বর প্রতিপাদক বেদমন্ত্রের অর্থজ্ঞান এবং তদনুকূল আচারে দৃঢ় নিশ্চয় এবং যাঁহারা সন্ন্যাস যােগ দ্বারা শুদ্ধান্তঃকরণ সন্ন্যাসী হন, তাহারা পরমেশ্বরে মুক্তিসুখ প্রাপ্ত হইয়া ভােগের পর মুক্তিসুখের সীমা শেষ হইলে সে স্থান হইতে নিষ্ক্রান্ত হইয়া পুনরায় সংসারে আগমন করেন। মুক্তি ব্যতীত দুঃখের নাশ হয় না।
কারণ :
ন বৈী সশরীরস্য সতঃ প্রিয়াপ্রিয়য়ােরপহতিরস্ত্যশরীরং বাব সন্তং ন প্রিয়াপ্রিয়ে স্পৃশতঃ ৷৷ ছান্দো
যে দেহধারী সে কখনও সুখ-দুঃখপ্রাপ্তি হইতে পৃথক থাকিতে পারে না। যখন অশরীরী জীবাত্মা শুদ্ধ হইয়া মুক্তি অবস্থায় সর্বত্রব্যাপক পরমেশ্বরের সহিত অবস্থান করে, তখন তাহার সাংসারিক সুখদুঃখ থাকে না। এইজন্য— ললাকৈষণায়াশ্চ বিত্তৈষণায়াশ্চ পুত্রেষণায়াশ্চোখায়াথ ভৈক্ষচয়ংচরন্তি।
শত০ কা০ ১৪ || লােক-প্রতিষ্ঠা বা লাভ, ঐশ্বৰ্যজনিত ভােগ-সম্মান এবং পুত্রাদির মােহ হইতে দূরে থাকিয়া সন্ন্যাসীগণ ভিক্ষুক হইয়া দিবারাত্র মােক্ষসাধনে তৎপর থাকেন। প্রাজাপত্যাং নিরূপ্যেষ্টিং তস্যাং সর্ববেদসং হুত্বা ব্রাহ্মণঃ প্ৰব্ৰজেৎ।১।।
যজুর্বেদ ব্রাহ্মণে। প্রাজাপত্যাং নিরূপ্যেষ্টিং সর্ববেদসদক্ষিণাম। আত্মন্যগ্নী সমারােপ্য ব্রাহ্মণঃ প্রব্রজে গৃহাৎ৷৷ ১। য়াে দত্বা সর্বভূতেভ্যঃ প্ৰব্ৰজত্যভয়ং গৃহাৎ। তস্য তেজোময়া লােকা ভবন্তি ব্রহ্মবাদিনঃ ॥৩॥ মনু ৷৷
প্রজাপতি অর্থাৎ পরমেশ্বর প্রাপ্তির জন্য ইষ্টি অর্থাৎ যজ্ঞ করিয়া তাহাতে যজ্ঞােপবীত শিখাদি চিহ্ন বিসর্জন করিবে। আহবনীয়াদি পাঁচ অগ্নিতে প্রাণ, অপান, ব্যান, উদান এবং সমান- এই পঞ্চ প্রাণে আরােপণ করিয়া ব্ৰহ্মবি ব্রাহ্মণ গৃহ হইতে নিষ্ক্রান্ত হইয়া সন্ন্যাসী হইবে।[১]
যিনি সর্বভূত অর্থাৎ প্রাণিমাত্রকে অভয়দান পূর্বক গৃহ হইতে বহির্গত হইয়া সন্নাসী হন, সেই ব্রহ্মবাদী অর্থাৎ পরমেশ্বর কর্তৃক প্রকাশিত বেদোক্ত ধর্ম ও বিদ্যার উপদেষ্টা সন্ন্যাসী আলােকময় অর্থাৎ মুক্তির আনন্দস্বরূপ লােক প্রাপ্ত হন। [২]
প্রশ্ন – সন্ন্যাসীদের ধর্ম কী?
উত্তর – পক্ষপাত রহিত ন্যায়াচরণ, সত্যগ্রহণ, অসত্যবৰ্জন, ঈশ্বরের বেদোক্ত আজ্ঞাপালন, পরােপকার এবং সত্যভাষণাদি লক্ষণযুক্ত ধর্ম, সকল আশ্রমবাসীরই অর্থাৎমনুষ্যমাত্রেরই একরূপ। কিন্তু সন্ন্যাসীর বিশেষ ধর্ম এই ঃ
দৃষ্টিপূতং ন্যসেৎ পাদং বস্ত্রপুতং জলং পিবেৎ। সত্যপুতং বদেদ্বাচং মনঃপূতং সমাচরেৎ | ১। ক্রুদ্ধ্যন্তংন প্রতিশ্রুধ্যেদাষ্টঃ কুশলং বদেৎ। সপ্তদ্বারাবকীণাংচন বাচমনৃতং বদেৎ। ২ আধ্যাত্মরতিরাসীননা নিরপেক্ষে নিরামিষঃ। আত্মনৈব সহায়েন সুখার্থী বিচরেদিহ৷৷ ৩৷ ক্লপ্তকেশনখশ্মশ্রুঃ পাত্রী দণ্ডী কুসুম্ভবান। বিচরেন্নিয়তাে নিত্যং সর্বভূতানপীডয়৷৷ ৪ | ইন্দ্রিয়াণাং নিরােধেন রাগদ্বেষক্ষয়েণ চ। অহিংসয়াচ ভূতানামমৃতত্বায় কল্পতে ||৫|| দুষিতাে পিচরেদ্ধর্মংয়ত্র তত্রাশ্রমে রতঃ। সমঃ সর্বেষু ভূতেষুন লিঙ্গং ধর্মকারণ৷৷ ৬ ৷৷
ফলং কতকবৃক্ষস্য অদ্যপ্যম্বু প্রসাদক। ন নামগ্ৰহণাদেব তস্য বারি প্রসীদতি। ৭ | প্রাণায়ামা ব্রাহ্মণস্য ত্রয়ােছপিবিধিবৎ কৃতাঃ। ব্যাহৃতিপ্রণবৈয়ুক্তা বিজ্ঞেয়ং পরমং তপঃ || ৮|| দহ্যন্তে স্বায়মানানাং ধাতুনাং হিয়থা মলাঃ। তথেন্দ্রিয়াণাংদহ্যন্তে দোষাঃ প্রাণস্য নিগ্রহাৎ। ৯। প্রাণায়ামের্দহেদ্দোষান্ ধারণাভিশ্চ কিন্বিষম্। প্রত্যাহারেণ সংসর্গান ধ্যানেনানীশ্বরান গুণান।১০ || উচ্চারচেষু ভূতেষুদুয়ােমকৃতাত্মভিঃ। ধ্যানয়ােগেন সংপশ্যে গতিমস্যান্তরাত্মনঃ ॥১॥ অহিংসয়েন্দ্রিয়াসঙ্গৈর্বৈদিকৈশ্চৈব কৰ্ম্মভিঃ। তপসশ্চরণৈশ্চোগ্রৈ সাধয়ন্তীহ তৎপদম্ ॥১২। য়দা ভাবেন ভবতি সর্বভাবেষু নিঃস্পৃহঃ। তদা সুখমবাপ্নোতি প্ৰেত্য চেহচ শাশ্বতম্ ॥১৩। চতুর্ভিরপি চৈবৈতৈর্নিতমাশ্রমিভিৰ্দিজৈঃ। দশ লক্ষণকো ধর্মঃ সেবিতব্যঃ প্ৰয়ত্নতঃ ॥১৪। ধৃতিঃ ক্ষমা দমােস্তেয়ং শৌচমিন্দ্রিয়নিগ্রহঃ। ধীর্বিদ্যা সত্যমক্রোধাে দশকং ধর্ম লক্ষণম৷১৫ | অনেন বিধিনা সর্বাংস্ত্যক্তা সঙ্গা শনৈঃশনৈঃ। সবর্ধন্দুবিনিমুক্তো ব্ৰহ্মণ্যেবাবতিষ্ঠতে৷৷ ১৬৷৷ মনু০ অ0 ৬।
পথে গমনকালে সন্ন্যাসী ইতস্ততঃ দৃষ্টিপাত না করিয়া নিম্নে ভূমির প্রতি দৃষ্টি রাখিবে। সর্বদা বস্ত্রদ্বারা ছাঁকিয়া জল পান করিবে, নিরন্তর সত্য কথাই বলিবে এবং সর্বদা মনে মনে বিচার করিয়া সত্য গ্রহণ ও অসত্য বৰ্জন করিবে। ১।
কোন স্থানে উপদেশ অথবা কথােপকথন কালে কেহ সন্ন্যাসীর প্রতি ক্রুদ্ধ হইলে অথবা তাহার নিন্দা করিলে, তৎপ্রতি ক্রোধ প্রকাশ না করিয়া তাহার কল্যাণার্থ উপদেশ প্রদান করা সন্ন্যাসীর কর্তব্য। মুখের এক, নাসিকার দুই, চক্ষুর দুই এবং কর্ণের দুই রন্ধ্রে বিকীর্ণ বাণীকে কোন কারণে মিথ্যা কখনও বলিবে না। ২।
স্বীয় আত্মা এবং পরমাত্মাতে স্থির নিরপেক্ষ থাকিয়া মদ্য-মাংসাদি বর্জন পূর্বক আত্মারই সাহায্যে সুখার্থী হইয়া এই সংসারে ধর্মোন্নতি ও বিদ্যোন্নতিজনক উপদেশাৰ্থ সর্বদা পৰ্যটন করিতে থাকিবে ৷৷ ৩৷৷
কেশ, নখ ছেদন এবং শ্মশ্রু ও গুম্ফ মুণ্ডিত করিবে, সুন্দর পাত্র ও দণ্ড ধারণ ও কুসুম্ভ প্রভৃতি দ্বারা রঞ্জিত বস্ত্র পরিধান পূর্বক নিশ্চিতাত্মা হইয়া ও কোন প্রাণীকে কষ্ট না দিয়া সর্বত্র বিচরণ করিবে । ৪||
ইন্দ্রিয়সমূহকে অধর্মাচরণ হইতে নিবৃত্ত করিয়া রাগদ্বেষ পরিত্যাগ পূর্বক সকল প্রাণীর প্রতি নির্বৈর থাকিয়া মােক্ষের জন্য সামর্থ্য বৃদ্ধি করিতে থাকিবে৷৷ ৫৷৷
কেহ সংসারে নিন্দা বা স্তুতি করিলে সন্ন্যাসী সকল আশ্রমস্থ মনুষ্য ও সকল প্রাণীর প্রতি পক্ষপাতশূন্য হইয়া স্বয়ং ধর্মাত্মা হইতে এবং অপরকে ধর্মাত্মা করিতে চেষ্টা করিবে সন্ন্যাসী। মনে মনে নিশ্চিতরূপে জানিবে যে, দণ্ড, কমণ্ডলু এবং কাষায় বস্ত্র প্রভৃতি চিহ্নধারণ ধর্মের কারণ নহে। মনুষ্যদিগকে সত্যোপদেশ ও বিদ্যাদান দ্বারা তাহাদের উন্নতি করাই সন্ন্যাসীর প্রধান কর্তব্য ৷৷ ৬ ৷৷ | যদি নির্মলীবৃক্ষের ফল পেষণ করিয়া অপরিষ্কৃত জলে নিক্ষেপ করিলে জল পরিষ্কৃত হয়, কিন্তু উহা নিক্ষেপ না করিয়া উহার নাম মাত্র উচ্চারণ বা শ্রবণ দ্বারা জল পরিষ্কৃত হইতে পারে না ॥৭ || | অতএব ব্রাহ্মণ অর্থাৎ ব্রহ্মবিৎ সন্ন্যাসীর কর্তব্য এই যে, তিনি ওস্কার সহিত সপ্তব্যাহৃতি দ্বারা বিধিপূর্বক যথাশক্তি প্রাণায়াম করিবেন। কিন্তু কদাপি তিনটির কম প্রাণায়াম করা উচিত নহে। ইহাই সন্ন্যাসীর পরম তপস্যা৷ ৮৷৷ | যেমন অগ্নিতে ধাতু উত্তপ্ত অথবা দ্রবীভূত করিলে উহার মল নষ্ট হইয়া যায়, সেইরূপ প্রাণের নিগ্রহ দ্বারা মন প্রভৃতি ইন্দ্রিয় সমূহের দোষ ভস্মীভূত হয়। ৯।
অতএব সন্ন্যাসীগণ প্রত্যহ প্রাণায়াম দ্বারা আত্মা, অন্তকরণ এবং ইন্দ্রিয় সমূহের দোষ, ধারণার দ্বারা পাপ, প্রত্যাহার দ্বারা সঙ্গদোষ এবং ধ্যান দ্বারা অনীশ্বর গুণ অর্থাৎ হর্ষ, শােক এবং অবিদ্যাদি জীবের দোষ ভস্মীভূত করিবেন। ১০৷৷
এই ধ্যানযােগ দ্বারা অযােগী অবিদ্বাদিগের পক্ষে দুর্জেয়, ক্ষুদ্র বৃহৎ সকল পদার্থে পরমাত্মার যে ব্যপ্তি এবং নিজ আত্মা অন্তর্যামী পরমাত্মার যে গতি তাহা দর্শন করিবেন৷১১৷
পূর্বোক্ত সন্ন্যাসীই প্রাণীদের প্রতি নির্বৈর ভাব, ইন্দ্রিয় বিষয় বর্জন, বেদোক্ত কর্ম এবং অত্যুগ্র তপশ্চর্যা দ্বারা সংসারে মােক্ষপদ লাভ করিতে ও করাইতে পারেন, অন্য কেহ পারে না। ১২।
যখন সন্ন্যাসী সকল ভাবে অর্থাৎ সকল পদার্থে নিস্পৃহ, নিরাকাঙ্খ এবং আভ্যন্তরিক ও বাহ্য ব্যবহারে পবিত্র থাকেন, তখনই তিনি এই দেহে ও মরণান্তে নিরন্তর সুখ প্রাপ্ত হন৷৷ ১৩ ||
অতএব ব্রহ্মচারী, গৃহস্থ, বানপ্রস্থ এবং সন্ন্যাসী যত্ন সহকারে নিম্নলিখিত দশ লক্ষণান্বিত ধর্ম পালন করিবেন ৷৷ ১৪ ||
প্রথম লক্ষ্মণ –(ধৃতিঃ) সর্বদা ধৈৰ্য্য অবলম্বন করা; দ্বিতীয়—(ক্ষমা) নিন্দা-স্তুতি, মান-অপমান এবং হানি-লাভাদি দুঃখের মধ্যেও সহিষ্ণু থাকা; তৃতীয় – (দমঃ) মনকে সর্বদা ধর্মে রত এবং অধর্ম হইতে বিরত রাখা অর্থাৎ অধর্ম করিবার ইচ্ছাও মনে উদিত না হওয়া, চতুর্থ—(অস্তেয়ম) চৌৰ্য্যত্যাগ অর্থাৎ অনুমতি ব্যতীত ছল, কপটতা, বিশ্বাসঘাতকতা বা অন্য কোন কাৰ্য্য বা বেদবিরুদ্ধ উপদেশ দ্বারা পরপদার্থ গ্রহণ করাকে চৌর্য্য বলে এবং চৌর্য্য পরিত্যাগ করাকেই সাহুকারী বলে, পঞ্চম—(শৌচম) রাগ, দ্বেষ এবং পক্ষপাত পরিত্যাগ করিয়া ভিতরের জল, ও মৃত্তিকা মার্জনাদি দ্বারা বাহিরের পবিত্রতা রক্ষা করা ঃ ষষ্ঠ – (ইন্দ্রিয় নিগ্রহঃ) ইন্দ্রিয় সমূহকে অধর্মাচরণ হইতে নিবৃত্ত করিয়া সর্বদা ধর্মপথে পরিচালনা করা; সপ্তম (ধীঃ) মাদকদ্রব্য ও অন্যান্য বুদ্ধিনাশক পদার্থ, কুসংসর্গ, আলস্য এবং প্রমাদ প্রভৃতি পরিত্যাগ করিয়া উৎকৃষ্ট পদার্থ সেবন এবং সৎসঙ্গ ও যােগাভ্যাস দ্বারা বুদ্ধির উন্নতি সাধন, অষ্টম – (বিদ্যা) পৃথিবী হইতে পরমেশ্বর পর্যন্ত (যাবতীয় পদার্থের) যথার্থজ্ঞান এবং ঐ পদার্থ সমূহের দ্বারা যথােচিত প্রয়ােজনের সিদ্ধি, আত্মা যেরূপ সেইরূপ মনে, যেরূপ মনে সেইরূপ বাক্যে যেরূপ বাক্যে সেইরূপ কর্মে আচরণ করা বিদ্যা,
ইহার বিপরীত অবিদ্যা। নবম (সত্য) যে পদার্থ যেরূপ তাহাকে সেইরূপ মনে করা, সেইরূপ বলা এবং সেইরূপ করা, দশম (অক্রোধঃ) ক্রোধাদি দোষ পরিত্যাগ করিয়া শান্তি প্রভৃতি গুণগ্রহণ—এই গুলি ধর্মের লক্ষণ। এই দশ লক্ষণ বিশিষ্ট পক্ষপাত রহিত ন্যায়াচরণরূপ ধর্ম পালন চারি আশ্রমবাসীরই কর্তব্য। এই বেদ্যোক্ত ধর্মানুসারে স্বয়ং চলা এবং অপরকেও বুঝাইয়া চালিত করা সন্ন্যাসীদের বিশেষ ধর্ম। ১৫ || | সন্ন্যাসী এই রূপে ধীরে ধীরে সমস্ত সঙ্গদোষ পরিত্যাগ করিয়া এবং হর্ষ-শােকাদি দ্বন্দ্ববিমুক্ত হইয়া ব্রহ্মেই অবস্থিত হন। গৃহস্থ প্রভৃতি সকল আশ্ৰমীকে সর্বপ্রকার ব্যবহার সম্বন্ধে সত্য নিশ্চয় করা এবং অধর্মাচরণ হইতে নিবৃত্ত ও সকল সংশয় ছিন্ন করিয়া সত্য ধর্মাচরণে প্রবৃত্ত করা সন্ন্যাসীদের প্রধান কর্তব্য৷৷ ১৬ ||
প্রশ্ন – সন্ন্যাস গ্রহণ কি কেবল ব্রাহ্মণেরই ধর্ম, না ক্ষত্রিয় প্রভৃতিরও ধর্ম?
উত্তর – ব্রাহ্মণেরই অধিকার, কারণ সকল বর্ণের মধ্যে যিনি পূর্ণ বিদ্বান, ধার্মিক এবং পরােপকার প্রিয় তঁহার নাম ব্রাহ্মণ। পূর্ণ বিদ্যা, ধর্ম, পরমেশ্বরের নিষ্ঠা এবং বৈরাগ্য ব্যতীত সন্ন্যাস গ্রহণ করিলে সংসারে বিশেষ উপকার হইতে পারে না। এইজন্য জনশ্রুতি আছে যে, কেবল মাত্র ব্রাহ্মণেরই সন্ন্যাসে অধিকার, অন্যের নহে। মনুরও এই প্রমাণ আছে --
এষ বােভিহিতাে ধর্মো ব্রাহ্মণস্য চতুর্বিধঃ।। পুণ্যোতক্ষয়ফলঃ প্ৰেত্য রাজধর্মং নিবােধত ৷ মনু ০
মনুমহারাজ বলিতেছেন,—“হে ঋষিগণ! এই চতুর্বিধ অর্থাৎ ব্রহ্মচর্য্য, গৃহস্থ, বানপ্রস্থ এবং সন্ন্যাস আশ্রম পালন করা ব্রাহ্মণের ধর্ম। বর্তমানে, পুণ্যস্বরূপ এবং দেহত্যাগের পর মুক্তিস্বরূপ অক্ষয় আনন্দপ্রদ এই সন্ন্যাস ধর্ম। ইহার পর আমার নিকট রাজধর্ম শ্রবণ কর। এতদ্বারা সিদ্ধ হইল যে, প্রধানতঃ ব্রাহ্মণেরই সন্ন্যাস গ্রহণের অধিকার এবং ক্ষত্রিয় প্রভৃতির জন্য ব্রহ্মচর্য্য আশ্রম।
প্রশ্ন - সন্ন্যাস-গ্রহণের প্রয়ােজন কী?
উত্তর শরীরের মধ্যে যেমন মস্তকের প্রয়ােজন, সেইরূপ আশ্রম সমূহের মধ্যেও সন্ন্যাসের প্রয়ােজন। কারণ সন্ন্যাস ব্যতীত কখনও বিদ্যোতি ও ধর্মোন্নতি হইতে পারে না। অন্যান্য আশ্রমে বিদ্যাভ্যাস, গৃহকৃত্য এবং তপশ্চর্যাদি থাকা বশতঃ অবসর অতি অল্পই থাকে। পক্ষপাত পরিত্যাগ-পূর্বক কাৰ্য্য করা অন্য আশ্রমবাসীর পক্ষে দুষ্কর। সন্ন্যাসী যেমন সর্বতােভাবে মুক্ত হইয়া জগতের উপকার করেন সেইরূপ অন্য কোন আশ্রমবাসী করিতে পারে না। কারণ সত্যবিদ্যা দ্বারা পদার্থ বিজ্ঞানের উন্নতি সাধনে সন্ন্যাসীর যেরূপ অবকাশ থাকে, অন্য কোন আশ্রমবাসীর সেরূপ থাকে না। কিন্তু ব্রহ্মচর্য্য হইতে সন্ন্যাসী হইয়া সত্যেপদেশ দ্বারা জগতের যেরূপ উন্নতি করা যায়, গৃহস্থ অথবা বানপ্রস্থ আশ্রমের পর সন্ন্যাসী হইলে সেইরূপ করা যায় না।
প্রশ্ন – সন্ন্যাস গ্রহণ করা ঈশ্বরের অভিপ্রায় বিরুদ্ধ। কারণ, মনুষ্যসংখ্যাবৃদ্ধি পরমেশ্বরের অভিপ্রেত। গৃহস্থাশ্রম প্রতিপালন না করিলে তাহার দ্বারা সন্তানও হইবে না। যদি সন্ন্যাস আশ্রমই মুখ্য হয় এবং সকলে তাহা অবলম্বন করে, তবে মনুষ্যের মূলােচ্ছেদ হইবে।
উত্তর – আচ্ছা, বিবাহ করিয়াও অনেকের সন্তান হয় না, অথবা হইলেও শীঘ্র নষ্ট হইয়া যায়। তাহাও তবে ঈশ্বরের অভিপ্রায় বিরুদ্ধ হইল। যদি বল, ‘য়ত্নে কৃতে যদি ন সিধ্যতি কোত্রে দোষঃ। ইহা কোন কবির উক্তি। অর্থ – চেষ্টা সত্ত্বেও কাৰ্যসিদ্ধি না হইলে দোষ কী ? কোন দোষ নাই। তাহা হইলে আমি তােমাকে জিজ্ঞাসা করি যদি গৃহস্থাশ্রম পালন করিয়া বহু সন্তান জন্মে
এবং তাহারা পরস্পর বিরুদ্ধাচরণ ও বিবাদ করিয়া মরে, তবে কতদূর অনিষ্ট হইয়া থাকে। ভুল বুঝিবার জন্য অনেক স্থলে বিবাদ হইয়া থাকে। যখন সন্ন্যাসী এক বেদোক্তধর্মের উপদেশ দ্বারা পরস্পর প্রতি উৎপন্ন করাইবেন তখন লক্ষ লক্ষ মনুষ্য রক্ষা পাইবে এবং সহস্র সহস্র গৃহস্থের ন্যায় মনুষ্য বৃদ্ধি হইবে। আর, সকল মনুষ্য সন্ন্যাস গ্রহণ করিতেই পারে না। কারণ, বিষয়াসক্তি কখনও দুর হয় না। সন্ন্যাসীর উপদেশ অনুসারে যাঁহারা ধার্মিক হন, তাহারা সন্ন্যাসীর পুত্র তুল্য জানিবে।
| প্রশ্ন – সন্ন্যাসীগণ বলিয়া থাকেন আমাদের কোন কর্তব্য নাই। অন্ন বস্ত্র পাইয়া আনন্দে থাকিব। অবিদ্যারূপী সংসার লইয়া মাথা ঘামাইব কেন? নিজেকে ব্রহ্ম মানিয়া সন্তুষ্ট থাকিব এবং কেহ জিজ্ঞাসা করিলে তাহাকেও উপদেশ দিব যে তুমিও ব্রহ্মা, তােমাকে পাপপুণ্য কিছুই স্পর্শ করিতে পারে না, কারণ শীতােষ্ণ শরীর ক্ষুধা, তৃষ্ণা প্রাণের এবং সুখদুঃখ মনের ধর্ম। জগৎ মিথ্যা এবং জগতের যাবতীয় ব্যবহারও কল্পিত অর্থাৎ মিথ্যা। সুতরাং তাহাতে আবদ্ধ হওয়া বুদ্ধিমানের কার্য নহে। পাপপুণ্য যাহা কিছু সব দেহ ও ইন্দ্রিয়ের ধর্ম, আত্মার নহে। ইহারা এই সকল উপদেশ দিয়া থাকেন । কিন্তু আপনি কী বিলক্ষণ সন্ন্যাস ধর্ম বলিতেছেন। এক্ষণে কাহার কথা সত্য এবং কাহার কথা মিথ্যা মানিব?
উত্তর – সৎকর্ম করাও কি তাহাদের কর্তব্য নহে? দেখ, মনু লিখিয়াছেন, ‘বৈদিকৈশ্চৈব কর্মভিঃঅর্থাৎ বৈদিক কর্ম যাহা ধর্মসঙ্গত সত্য কর্ম, তাহা সন্ন্যাসীদেরও অবশ্য কর্তব্য। সন্ন্যাসীরা কি গ্রাসাচ্ছাদনাদি কর্মও পরিত্যাগ করিতে পারে ? যদি এই সকল পরিত্যাগ করা না যায়, তবে উত্তম কর্ম পরিত্যাগ করিলে তাহারাকি পতিতও পাপের ভাগী হইবে না? যদি তাহারা গৃহস্থদিগের নিকট হইতে অন্নবস্ত্রাদি গ্রহণ করে, কিন্তু তাহাদের কোন প্রত্যুপকার না করে তবে কি তাহারা মহাপাপী হইবে না? যেমন চক্ষু দ্বারা দর্শন এবং কর্ণ দ্বারা শ্রবণ না করিলে চক্ষু-কর্ণ বৃথা সেইরূপ সত্যোপদেশ ও বেদাদি সত্যশাস্ত্রের আলােচনা ও প্রচার না করিলে সন্ন্যাসীরা জগতে বৃথা ভার স্বরূপ হইয়া থাকে। আর যে ‘অবিদ্যারূপী সংসারে মাথা ঘামান’ ইত্যাদি কথা লেখা ও বলা হয়, যাহারা এইরূপ উপদেশ প্রদান করে তাহারা স্বয়ং মিথ্যাস্বরূপ পাপের বৃদ্ধিকারী পাপী। | শরীরাদি দ্বারা যে সকল কর্ম করা হয়, ঐ সকল আত্মারই কর্ম এবং ঐ সকলের ফলভােগীও আত্মা। যাহারা জীবকে ব্রহ্ম বলে, তাহারা অবিদ্যারূপ নিদ্রায় নিদ্রিত। কারণ জীব একদেশী ও অল্পজ্ঞ কিন্তু ব্ৰহ্ম নিত্য, বুদ্ধ এবং মুক্ত স্বভাবযুক্ত। জীব কখনও বদ্ধ ,কখনও মুক্ত থাকে। ব্রহ্ম সর্বব্যাপক বলিয়া তাহার কখনও অবিদ্যা অথবা ভ্রম হইতে পারে না। কিন্তু জীবের কখনও বিদ্যা, কখনও অবিদ্যা হইয়া থাকে। ব্রহ্ম কখনও জন্ম-মরণ জনিত দুঃখ প্রাপ্ত হয় না, কিন্তু জীব তাহা প্রাপ্ত হয়। অতএব তাহাদের ঐসকল উপদেশ মিথ্যা।।
প্রশ্ন – সন্ন্যাসী সর্বকর্ম-বিনাশী, তিনি অগ্নি ও ধাতু স্পর্শ করেন না। একথা সত্য, না অসত্য?
উত্তর – না। সম্য নিত্যমান্তে য়স্মিন, য়দ বা সম্যঙ ন্যস্যন্তি দুঃখানি কমাণি য়েন স সন্ন্যাসঃ, স প্রশস্তো বিদ্যতে য়স্য স সন্ন্যাসী’ যাহা ব্রহ্মে আছে এবং যদ্দারা দুষ্ট কর্মসমূহ পরিত্যক্ত হয়, যিনি সেই উত্তম স্বভাব বিশিষ্ট তাঁহাকে সন্ন্যাসী বলে। অতএব যিনি উত্তম কর্ম করেন এবং কুকর্ম সমূহের নাশ করেন, তাহাকে সন্ন্যাসী বলে।।
প্রশ্ন – গৃহস্থও তাে অধ্যাপন ও উপদেশ করিয়া থাকে, তবে সন্ন্যাসীর প্রয়ােজন কী?
উত্তর – সকল আশ্রমবাসীই সত্যোপদেশ দান করিবে এবং শুনিবে। কিন্তু সন্ন্যাসীর যতদূর অবকাশ এবং পক্ষপাতশূন্যতা থাকে, গৃহস্থের ততদূর থাকে না। অবশ্য যাঁহারা ব্রাহ্মণ তাঁহাদের মধ্যে পুরুষদিগকে এবং স্ত্রীলােকেরা স্ত্রীলােকদিগকে সত্যোপদেশ ও বিদ্যাদান করিবে। সন্ন্যাসী ভ্রমণের অবকাশ যত পায় তত অবকাশ গৃহস্থ ব্রাহ্মণ কখনও পায় না। ব্রাহ্মণ বেদবিরুদ্ধ আচরণ করিলে সন্ন্যাসী তাহাকে নিয়ন্ত্রিত করে। অতএব সন্ন্যাসী হওয়া উচিত।
প্রশ্ন – একরাত্রিং বসেৎগ্রামে’ ইত্যাদি বচনানুসারে সন্ন্যাসীর পক্ষে কেবল মাত্র একস্থানে একরাত্রি বাস করা উচিত। অধিককাল বাস করা উচিত নহে।
উত্তর – এ কথাটি আংশিক উত্তম, কেননা সন্ন্যাসী একস্থানে বাস করিলে জগতের অধিক উপকার হইতে পারে না, তাহাতে স্থান বিশেষের প্রতি আসক্তি এবং রাগ, দ্বেষ অধিক হয়। কিন্তু একত্র থাকিলে যদি বিশেষ উপকার হয় তবে থাকিবে। উদাহরণ স্বরূপ জনক রাজার ভবনে চারি চারি মাসকাল পর্যন্ত পঞ্চশিখা প্রভৃতি এবং অন্যান্য সন্ন্যাসীরাও বহু বৎসর ধরিয়া বাস করিতেন। আর একত্র নিবাস না করা আধুনিক ভণ্ড সাম্প্রদায়িকগণ রচনা করিয়াছে। কেননা সন্ন্যাসী যদি কোন একস্থানে অধিক দিন থাকে তাহার ভণ্ডামী ধরা পড়িবে, সে অধিক উন্নতি করিতে পারিবে না।।
প্রশ্ন – যতীনাং কাঞ্চনং দদাত্তাম্বুলং ব্রহ্মচারিণাম। চৌরাণামভয়ং দদ্যাৎসনরাে নরকং ব্ৰজেৎ ॥ (লঘু পারাশর স্মৃতি) এই শ্লোকের অর্থ এই যে, সন্ন্যাসীকে সুবর্ণ দান করিলে দাতা নরকগামী হইবেন।
উত্তর – ইহাও বর্ণাশ্রমবিরােধী, সাম্প্রদায়িক ও স্বার্থপর পৌরাণিকদেরই কল্পিত। কারণ সন্ন্যাসী ধন প্রাপ্ত হইলে তাহাদের মতের প্রচুর খণ্ডন করিবেন, তাহাতে তাহাদের ক্ষতি হইবে, আর সন্ন্যাসী তাহাদের অধীনে থাকিবেন না। ভিক্ষাদান প্রভৃতি তাহাদের অধীনে থাকিলে সন্ন্যাসী শঙ্কিত থাকিবেন। যদি মূখ স্বার্থপর ব্যক্তিদের দান দেওয়া উত্তম মনে করা হয়, তবে বিদ্বান ও পরােপকারী সন্ন্যাসীদের দান করিলে কোন দোষ হইতে পারে না।
দেখ মনু বলিয়াছেন ঃবিবিধানি চ রত্নানি বিবিক্তেপপাদয়েৎ | মনু০১১
নানাবিধ রত্ন ও সুবর্ণ প্রভৃতি ধন (বিবিক্ত) অর্থাৎ সন্ন্যাসীকে দান করিবে, এবং ঐ শ্লোকও নিরর্থক। কেননা তদনুসারে সন্ন্যাসীকে সুবর্ণদান করিলে যদি যজমান নরকে যায় তাহা হইলে তাে রৌপ্য, মুক্তা, হীরা প্রভৃতি দান করিলে সে স্বর্গে যাইবে।
প্রশ্ন – পণ্ডিত মহাশয় এই শ্লোক পাঠে ভুল করিয়াছেন। ইহা এইরূপ হইবে, “য়তিহস্তে ধনং দদ্যাৎ”, অর্থাৎ যে ব্যক্তি সন্ন্যাসীর হস্তে ধন দেয় সে নরকে যায়।
উত্তর – এই বচন (কোনাে) মূখের কপােল কল্পিত। কারণ যদি হস্তে দান করিলে দাতা নরকে যায় তাহা হইলে পায়ের উপর অথবা গাঁঠরী বাঁধিয়া দিলে স্বর্গ যাইবে, এইরূপ কল্পনা মানিবার যােগ্য নহে। অবশ্য বলা যাইতে পারে, যদি সন্ন্যাসী যােগক্ষেম অপেক্ষা অধিক ধন রাখে, তবে তাহারা তস্করাদি দ্বারা উৎপীড়িত ও মােহগ্রস্ত হইবে, কিন্তু বিদ্বান ব্যক্তি কখনও অনুচিত ব্যবহার করেন না এবং মােহগ্রস্ত হন না। কারণ, তাঁহারা গৃহাশ্রমে অথবা ব্রহ্মচর্যাশ্রমে সমস্ত ভােগ করিয়াছেন অথবা সমস্ত দেখিয়া লইয়াছেন। যাঁহারা ব্রহ্মচর্য্য হইতে সন্ন্যাস গ্রহণ করেন, তাহারা পূর্ণ বৈরাগ্যবান্ বলিয়া কখনও কোন বিষয়ে আসক্ত হন না।।
নিজ নিজ মতেরই প্রশংসা করে এবং মিথ্যা প্রপঞ্চে আবদ্ধ হইয়া স্বার্থের জন্য অপরকেও স্ব স্ব মতে আবদ্ধ করে। সংশােধনের কথা দূরে থাকুক তৎপরিবর্তে তাহারা সংসারকে বিভ্রান্ত। করাইয়া অধােগতি প্রাপ্ত করায় ও স্বীয় প্রয়ােজন সিদ্ধ করে। এই কারণে ইহাদিগকে সন্ন্যাস আশ্রমে গণ্য করা যাইতে পারে না। কিন্তু ইহারা যে পাকা স্বাথাশ্রয়ী তাহাতে কোন সন্দেহ নাই। যাঁহারা স্বয়ং ধর্মপথে চলে, সমস্ত সংসারকে চালিত করেন, যাঁহারা নিজে এবং সব। জগৎকে ইহলােক অর্থাৎ বর্তমান জন্মে এবং পরলােকে অর্থাৎ পরজন্মে স্বর্গ অর্থাৎ সুখভােগ করেন ও সুখভােগ করান, সেই সব ধর্মাত্মারাই সন্ন্যাসী ও মহাত্মা।
সন্ন্যাস আশ্রমের শিক্ষা বিষয় সংক্ষেপে লিখিত হইল। অতঃপর রাজপ্রজাধর্ম-বিষয় লিখিত হইবে।
ইতি শ্রীমদ্দয়ানন্দ সরস্বতী স্বামীকৃতে সত্যার্থ প্রকাশে সূভাষাবিভূষিতে বানপ্রসন্ন্যাসাশ্রমবিষয়ে
পঞ্চমঃ সমুল্লাসঃ সম্পূর্ণঃ ৷৷ ৫৷৷
প্রশ্ন—লােকে বলে যে, শ্রাদ্ধে যদি সন্ন্যাসী আসে ও যদি তাহাকে ভােজন করান যায় তবে শ্রাদ্ধানুষ্ঠানদাতার পিতৃপুরুষ পলায়ন করেন এবং নরকে পতিত হন।
উত্তর - প্রথমতঃ মৃত পিতরগণের আগমন এবং অনুষ্ঠিত শ্রাদ্ধ পিতরদিগের নিকট পৌছান অসম্ভব। বেদ ও যুক্তিবিরুদ্ধ বলিয়া ইহা মিথ্যা। ইহা ছাড়া যখন আগমনই হইল না তখন পলাইবে কে?যখন পরমেশ্বরের ব্যবস্থায় পাপপুণ্যানুসারে জীবগণ মৃত্যুর পর জন্মলাভ করে তখন তাহাদের আগমন কীরূপে সম্ভব হইতে পারে। অতএব ইহাও উদর-পরায়ণ পৌরাণিক ও বৈরাগীদের মিথ্যা কল্পনা। অবশ্য ইহা সত্য যে, যে স্থানে গমন করিবেন, সে স্থানে এই মৃতক শ্রাদ্ধ করা বেদাদিশাস্ত্র বিরুদ্ধ বলিয়া ছল-প্রতারণা দূরে পলায়ন করে।
প্রশ্ন – ব্রহ্মচর্য্য হইতে সন্ন্যাস গ্রহণ করিলে তাহা পালন করা কঠিন হইবে। কাম নিরােধ করা অতি কঠিন। অতএব, গৃহাশ্রম ও বানপ্রস্থ আশ্রম সমাপ্ত করিয়া বৃদ্ধাবস্থায় সন্ন্যাস গ্রহণ করাই শ্রেয়।
উত্তর – যিনি সন্ন্যাস পালনে ও ইন্দ্রিয় নিরােধে অসমর্থ, তিনি ব্রহ্মচর্য হইতে সন্ন্যাস গ্রহণ করিবেন না। কিন্তু যিনি সমর্থ তিনি গ্রহণ করিবেন না কেন? যিনি বিষয়ভােগের দোষ ও বীৰ্য্যসংরক্ষণের গুণ জানেন, তিনি কখনও তাহাতে আসক্ত হন না, তাহার বীৰ্য্য বিচার রূপ অগ্নির ইন্ধন সদৃশ অর্থাৎ তাহাতেই ব্যয়িত হইয়া যায়। রােগীর জন্য চিকিৎসক ও ঔষধের প্রয়ােজন, নীরােগের জন্য নহে। এইরূপ যে পুরুষ বা নারীর উদ্দেশ্য বিদ্যোন্নতি, ধর্মোন্নতি ও সমস্ত জগতের উন্নতি করা, তিনি বিবাহ করিবেন না। পঞ্চশিখ প্রভৃতি পুরুষ এবং গার্গী প্রভৃতি নারী এইরূপ ছিলেন। অতএব যাঁহারা অধিকারী তাহাদের সন্ন্যাসী হওয়া উচিত, অনধিকারী সন্ন্যাস গ্রহণ করিলে নিজেও ডুবিবেন এবং অপরকে ও ডুবাইবেন। যেমন “সম্রাট” চক্রবর্তী রাজা, সেইরূপ সন্ন্যাসী “পরিব্রাট”। প্রত্যুত রাজা স্বদেশে অথবা নিজ আত্মীয় স্বজনদের মধ্যে সম্মানিত হইয়া থাকেন, কিন্তু সন্ন্যাসী সর্বত্র পূজা পাইয়া থাকেন।
বিদ্বত্ত্বং চ নৃপত্বং চ নৈব তুল্যং কদাচন। স্বদেশে পূজ্যতে রাজা বিদ্বান্ সর্বত্র পূজ্যতে৷৷ ১।
| ইহা চাণক্য নীতিশাস্ত্রের শ্লোক। বিদ্বান এবং রাজা কখনও সমান হইতে পারেন না, কারণ রাজা কেবল নিজ রাজ্যেই মান সম্মান লাভ করেন, কিন্তু বিদ্বানের সম্মান ও খ্যাতি প্রতিপত্তি সর্বত্র। সুতরাং বিদ্যাভ্যাস, সুশিক্ষা গ্রহণ এবং বলবান্ হইবার জন্য ব্রহ্মচর্য আশ্রম; সর্ববিধ সদনুষ্ঠানের জন্য গৃহস্থাশ্রম, বিচার, জ্ঞান,বিজ্ঞান, ও তপশ্চরণের জন্য বানপ্রস্থাশ্রম এবং বেদাদি সত্যাশাস্ত্রের প্রচার; ধর্মাচরণ গ্রহণ, দুষ্ট-ব্যবহার বর্জন, সত্যোপদেশ প্রদান এবং সকলের সংশয় দূরীকরণ ইত্যাদির জন্য সন্ন্যাস আশ্রম। কিন্তু যাঁহারা সন্ন্যাস আশ্রমের মুখ্য কর্ম সত্যেপদেশ দান প্রভৃতি করেন না, তাহারা পতিত ও নরকগামী হন। অতএব সত্যোপদেশ দান, সংশয় নিরাকরণ, বেদাদি সত্যশাস্ত্রের এবং যত্ন পূর্বক বেদ্যোক্ত ধর্মপ্রচার দ্বারা জগতের উন্নতি সাধন করা সন্ন্যাসীর কর্তব্য। | প্রশ্ন – সন্ন্যাসী ছাড়া বৈরাগী, গোঁসাই এবং খাখী প্রভৃতি সন্ন্যাস আশ্রমে পরিগণিত হইবে
কিনা?
উত্তর – না, কারণ তাহাদের মধ্যে সন্ন্যাসের একটিও লক্ষণ নাই। তাহারা বেদবিরুদ্ধ মার্গে চলে এবং বেদ অপেক্ষা স্ব স্ব সম্প্রদায়ের আচার্য্য বাক্যকেই অধিক মান্য করে। তাহারা
No comments:
Post a Comment
ধন্যবাদ